আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত0%

আল মুরাজায়াত লেখক:
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ: ইতিহাস

আল মুরাজায়াত

লেখক: আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ:

ভিজিট: 62099
ডাউনলোড: 8040

পাঠকের মতামত:

আল মুরাজায়াত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 133 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 62099 / ডাউনলোড: 8040
সাইজ সাইজ সাইজ
আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত

লেখক:
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বাংলা

তথ্যসূত্র

১। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ৮৭

২। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ৯৭।

৩। নাহজুল বালাগাহ্,বাণী ২৩৯ (সুবহি সালিহ্)।

৪।  নাহজুল বালাগাহ্,বাণী ৯৪ (সুবহি সালিহ্)

৫। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ১৫৪।

৬। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ১৪৭।

৭। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ৪।

৮। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ১০৫।

৯। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ১০৯।

১০। নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা নং ১৪৪।

১১। নাহজুল বালাগাহ্,১৯০ নং খুতবার অংশ।

১২। আস-সাওয়ায়েক-ইবনে হাজার,পৃষ্ঠা ১৪২।

১৩। আস-সাওয়ায়েক-ইবনে হাজার,পৃষ্ঠা ১৩৭।

১৪। সূরা আলে ইমরান : ১০৫।

১৫। আস-সাওয়ায়েক,১১শ অধ্যায়,পৃষ্ঠা ৯০।

১৬। এই হাদীসটি তিরমিযী ও নাসায়ী হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ আনসারী হতে এবং মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানজুল উম্মাল গ্রন্থে এ দুই গ্রন্থ হতে (প্রথম খণ্ড,৪৪ পৃঃ) বর্ণনা করেছেন।

১৭। এই হাদীসটি তিরমিযী হযরত যাইদ ইবনে আরকাম হতে নকল করেছেন এবং কানজুল উম্মালেও প্রথম খণ্ডের ৪৪ পৃষ্ঠায় এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

১৮। এই হাদীসটি মুসনাদে আহমাদ যাইদ ইবনে সাবিত হতে দুইভাবে বর্ণিত হয়েছে। প্রথমটি ৫ম খণ্ডের ১৮২ নং পৃষ্ঠায় এবং দ্বিতীয়টি ৫ম খণ্ডের ১৮৯ নং পৃষ্ঠায়। কানজুল উম্মাল,হাদীস নং ৮৭৩।

১৯। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৪৮ নং পৃষ্ঠায় এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, বুখারী ও মুসলিম হাদীস সহীহ হওয়ার যে শর্ত বলেছেন সে শর্তানুসারে এই হাদীস সহীহ বলে গণ্য।”যাহাবীও তাঁর তালখিসে মুসতাদরাক’গ্রন্থে তা স্বীকার করেছেন।(*১০)

২০। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল এই হাদীসটি তাঁর মুসনাদের ৩য় খণ্ডের ১৭ ও ২৬ পৃষ্ঠায় হযরত আবু সাঈদ খুদরী হতে এবং ইবনে আবি শাইবাহ্,আবু ইয়ালী ও ইবনে সা দ আবু সাঈদ থেকে তা বর্ণনা করেছেন। আর এটিই কানযুল উম্মাল ১ম খণ্ডের ৪৭ পৃষ্ঠার ৯৪৫ নং হাদীস।

২১। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাকের ৩য় খণ্ডের ১০৯ পৃষ্ঠায় হাদীসটি সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন এবং বুখারী ও মুসলিম তা রেওয়ায়েত না করলেও তাঁদের প্রস্তাবিত শর্তানুসারে হাদীসটিকে তিনি সহীহ বলেছেন। হাদীসটি তিনি যাইদ ইবনে আরকাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

২২। এ হাদীসটি তাবরানী তাঁর আরবাইনাল আরবাইন’গ্রন্থে এবং আল্লামাহ্ সুয়ূতী তাঁর ইহ্ইয়াউল মাইয়্যেত’গ্রন্থে এনেছেন।

২৩। ইবনে হাজার হাইতামী তাঁর আসসাওয়েকুল মুহরাকাহ্’গ্রন্থের ৯ম অধ্যায়ের ৭৫ পৃষ্ঠায় চল্লিশটি বিভিন্ন হাদীসের পর এ হাদীসটি এনেছেন।

২৪। সাওয়ায়েকুল মুহরাকাহ্ গ্রন্থের ১১ অধ্যায়ের ৮৯ নং পৃষ্ঠার শেষে সূরা সাফফাতের ২৪ নং আয়াতের তাফসীরে তিনি এ কথা বলেছেন।

২৫। সূরা হা মীম সিজদা : ৪২।

২৬। আস-সাওয়ায়েক,রাসূলের ওসিয়ত অধ্যায়,১৩৫ পৃষ্ঠা। সুতরাং এখন তাঁকে প্রশ্ন করুন তবে কেন আবুল হাসান আশা আরীকে দীনের মৌলিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে এবং চার মাজহাবের ইমামগণকে ফিকাহর ক্ষেত্রে নবীর আহলে বাইত হতে প্রাধান্য দান করেন?

কিরূপে নবী (সা.)-এর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে আলী ইবনে আবি তালিবকে (যিনি ব্যতীত  সূরা তওবা প্রচারের অধিকার অন্য কাউকে আল্লাহ্ দান করেন নি) অন্যদের পরে স্থান দেন? কিরূপে মুকাতিল ইবনে সুলাইমানের  মত মুর্জিয়া যে আল্লাহর দৈহিক অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিল এমন ব্যক্তির তাফসীরকে আহলে বাইতের ইমামগণের চেয়ে অগ্রগামী মনে করেন?

২৭। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাকের ৩য় খণ্ডের ১৫১ পৃষ্ঠায় হযরত আবু যার থেকে এটি বর্ণনা করেছেন।

২৮। তাবরানী তাঁর আরবাইন’গ্রন্থের ২১৬ পৃষ্ঠায় আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করেছেন।

২৯। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে ইবনে আব্বাস থেকে এ হাদীসটি রেওয়ায়েত করেছেন।

৩০। আস-সাওয়ায়েক,১১ পৃষ্ঠা,৭ম আয়াতের তাফসীর।

৩১। উপরোক্ত গ্রন্থের ১৪৩ পৃষ্ঠায় রাসূল (সা.)-এর মৃত্যুর পর তাঁর আহলে বাইতের ওপর আপতিত বিপদাপদের বর্ণনা দানের পর এ কথাটি বলেছেন।

৩২। আস-সাওয়ায়েক,১১ অধ্যায়,৯১ পৃষ্ঠা।

৩৩। এখন আমার প্রশ্ন এসব জানার পরও তিনি কেন দীনের মৌলিক ও শাখাগত বিষয়ে আহলে বাইতের অনুসরণ করেন নি?

৩৪। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃষ্ঠা ২১৭,হাদীস নং ৩৭১৯; মুসনাদে আহমাদের ৫ম খণ্ডের ৯৪ পৃষ্ঠায়ও এ হাদীস শুধু একটি শব্দের পার্থক্যসহ এসেছে। হাফিয আবু নাঈমও হাদীসটি তাঁর হুলইয়া’গ্রন্থের ৪৪৯ পৃষ্ঠায় মুসনাদে আহমাদ থেকে নকল করেছেন।

৩৫। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃষ্ঠা ১৫৫,হাদীস নং ২৫৭৮ এবং মুনতাখাবুল কানযুল উম্মালের ৫ম খণ্ডের ফুটনোটে মুসনাদে আহমাদ হতে এ হাদীসটি এসেছে। এ হাদীসটির সনদে ইয়াহিয়া ইবনে ইয়ালা মুহারেবীর কারণে ইবনে হাজার হাদীসটিকে যাঈফ বললেও ইয়াহিয়া ইবনে ইয়ালা সকল রিজালশাস্ত্রবিদের মতে নির্ভরযোগ্য এবং বুখারী,মুসলিম ও যাহাবী তাঁর থেকে নকলকৃত হাদীসকে সহীহ বলেছেন।

৩৬। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাকের ৩য় খণ্ডের ১২৮ পৃষ্ঠায় এ হাদীসটি এনেছেন এবং বলেছেন এ হাদীসটি সহীহ,অথচ বুখারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেন নি। তাবরানী তাঁর কাবীর গ্রন্থে এবং আবু নাঈম তাঁর ফাজায়েলুস্ সাহাবায় হাদীসটি এনেছেন। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃঃ ১৫৫,হাদীস নং ২৫৭৭ এবং মুসনাদে আহমাদ,৫ম খণ্ড,পৃঃ ৩২।

৩৭। তাবরানী তাঁর কাবীর গ্রন্থে এবং ইবনে আসাকির তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে এ হাদীসটি এনেছেন। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৪ পৃষ্ঠার ২৫৭১ নং হাদীস।

৩৮। তাবরানী তাঁর কাবীর গ্রন্থে মুহাম্মদ ইবনে আবি আবদুহ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে আম্মার ইবনে ইয়াসির তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর পিতামহ হযরত আম্মার হতে এটি বর্ণনা করেছেন। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠার ২৫৭৬ নং হাদীস।

৩৯। ইবনে হাজার(( وَ قُفُوْهُمْ إِنَّهُمْ مَسْئُوْلُوْنَ আয়াতটির তাফসীরে (আস-সাওয়ায়েক গ্রন্থের ৯০ পৃষ্ঠায়) এ হাদীসটি এনেছেন ও মোল্লা তাঁর আস-সিরাহ্ গ্রন্থে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন।

৪০। ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের চতুর্থ মাকসাদের ১০৫ পৃষ্ঠায় সূরা শুরার ২৩ নং আয়াতের তাফসীরে এ হাদীসটি এনেছেন।

৪১। তাবরানী হাদীসে সাকালাইনের সঙ্গে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন এবং ইবনে হাজার তাঁর আস-সাওয়ায়েক গ্রন্থের ১১ অধ্যায়ের ৮৯ পৃষ্ঠায়( وَ قُفُوْهُمْ إِنَّهُمْ مَسْئُوْلُوْنَ ) আয়াতটির তাফসীরে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৪২। অনেক হাদীস লেখক হযরত আবু যার হতে এ হাদীসটি মারফু সূত্রে বর্ণনা করেছেন। যেমন ইমাম আস-সাব্বান,শেখ ইউসুফ নাবাহানী,আশশারাফুল মুয়াইয়াদ,পৃষ্ঠা ৩১।

৪৩। তাবরানী তাঁর আওসাতে সুয়ূতী তাঁর ইহ্ইয়াউল মাইয়্যেত’নাবাহানী তাঁর আরবাইনাল আরবাইনে’এবং ইবনে হাজার তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থে এ হাদীসটি এনেছেন। কারো কর্মই আমাদের অধিকারের প্রতি সচেতনতা ও সম্মান প্রদর্শন ব্যতীত ফলদান করবে না’কথাটির প্রতি চিন্তা করুন।

৪৪। কাজী আয়াজ আশ-শিফা’গ্রন্থের ৪০ পৃষ্ঠায় আহলে বাইতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন প্রকৃতপক্ষে নবীরই প্রতি সম্মান প্রদর্শন’এ যুক্তির সপক্ষে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এখানে নবীর আহলে বাইতের পরিচিতি লাভ শুধু তাঁদের নাম জানা নয়,বরং রাসূলের পর তাঁরাই যে উলিল আমর (দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ) এ বিষয়ে বিশ্বাস রাখা ও তদনুযায়ী আমল করা। কারণ রাসূল (সা.) নিজেই বলেছেন, যে কেউ এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলো সে জানে না তার ইমামকে,তাহলে সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল।”

৪৫। যদি তাঁরা আল্লাহর পক্ষ হতে নির্বাচিত না হতেন তবে তাঁদের ভালবাসা ও অনুসরণের বিষয়ে এরূপ প্রশ্ন করা হত না। এ হাদীসটি ইবনে আব্বাস হতে নির্ভরযোগ্য সূত্রে তাবরানী,সুয়ূতী ও নাবাহানী বর্ণনা করেছেন।

৪৬। সা লাবী তাঁর তাফসীর গ্রন্থে সূরা শুরার ২৩ নং আয়াতের তাফসীরে জারীর ইবনে আবদুল্লাহ্ বাজালী হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তদ্রুপ যামাখশারীও তাঁর তাফসীরে এ বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন।

৪৭। মোল্লা তাঁর মাকাসাদের আস-সাওয়ায়েক’অধ্যায়ে ১৪ নং আয়াতের তাফসীরে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৪৮। এ হাদীসটি আবদুল গণী ইবনে সা দ তাঁর ইজাহুল ইশকাল’গ্রন্থে এনেছেন। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৯৬ পৃষ্ঠায় ৬০৫০ নং হাদীস হিসেবে এটি এসেছে।

৪৯। এ দু টি কবিতার পঙ্ক্তি শাফেয়ী নবী পরিবারের প্রশংসায় বলেছেন যা ইবনে হাজার তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৮৮ পৃষ্ঠায় সূরা আহযাবের ৫৬ নং আয়াতের তাফসীরে এনেছেন। নাবাহানী তাঁর আশ-শারাফুল মুওয়াইয়াদ’গ্রন্থের ৯৯ পৃষ্ঠায় এটি বর্ণনা করেছেন।

৫০। সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, হে আহলে বাইত! আল্লাহ্ চান তোমাদেরকে পাপ ও পঙ্কিলতা হতে মুক্ত এবং নিষ্কলুষ ও পবিত্র করতে।’এই আয়াতকে আয়াতে তাতহীর বলা হয়।

৫১। এ বৈশিষ্ট্য ও শ্রেষ্ঠত্ব মহান আল্লাহ্ তাঁদেরই দান করেছেন এবং বলেছেন, বলুন! আমি তোমাদের হতে কোন প্রতিদান চাই না আমার নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা ছাড়া এবং যে কেউ সৎ কর্ম (তাঁদের প্রতি ভালবাসা পোষণ) করবে তার আমলকে বাড়িয়ে দেয়া হবে।”(সূরা শুরা :২৩)

৫২। সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর গ্রন্থে আবান ইবনে তাগলিবের সূত্রে ইমাম সাদিক (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রজ্জু বলতে আমাদের আহলে বাইতকে বুঝানো হয়েছে।” ইমাম শাফেয়ী এ সত্যকে কবিতার মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন-

لِما رأيت النّاس قد ذهبت بِهم

مذاهبهم في أبْحر الغيّ و الجهل

যখন লক্ষ্য করলাম মানুষ মাজহাবের বিষয়ে গোমরাহীর সমুদ্রে নিমজ্জমান

ركبت على اسم الله في سفن النجا

وهم اهل بيت المصطفى خاتم الرسول

আমি আল্লাহর নামে মুক্তির তরণীতে আরোহণ করলাম যা শেষ নবীর আহলে বাইত

و امسكت حبل الله وهو ولائهم

كما قد امرنا بالتمسك بالحبل

আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরলাম যা তাঁদের বেলায়েতের রজ্জু যেরূপ তা আঁকড়ে ধরার জন্য নির্দেশিত হয়েছি।

৫৩। ইমাম বাকির ও ইমাম সাদিক (আ.) সব সময় বলতেন, সিরাতুল মুস্তাকীম বলতে সত্যপন্থী ইমামদের এবং সুবুল বলতে বিভ্রান্ত নেতাদের বোঝানো হয়েছে যারা তোমাদের আল্লাহর পথ হতে দূরে সরিয়ে দেয়।”

৫৪। সিকাতুল ইসলাম কুলাইনী সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন বুরাইদ আজালী ইমাম বাকির (আ.)-কে প্রশ্ন করলেন এ আয়াতটির অর্থ কি? ইমাম বাকির (আ.) সূরা নিসার ৫১-৫৩ আয়াতের যে ব্যাখ্যা দান করেন তার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো- তুমি কি তাদেরকে দেখ নি যারা কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়েছে,যারা মান্য করে প্রতিমা ও শয়তানকে এবং কাফিরদেরকে বলে,এরা মুসলমানদের তুলনায় অধিকতর সরল সঠিক পথে রয়েছে। এরা সেই সমস্ত লোক যাদের ওপর স্বয়ং আল্লাহ্পাক লানত করেছেন। বস্তুত আল্লাহ্ যার ওপর লানত করেন তুমি তার কোন সাহায্যকারী খুঁজে পাবে না। তাদের কাছে কি হুকুমত ও রাজত্বের (ইমামত ও খেলাফতের) কোন অংশ রয়েছে? যদি এরূপ হত (তারা রাজত্ব পেত) তাহলে মানুষকে কোন অংশই দান করত না। নাকি যা কিছু আল্লাহ্ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে দান করেছেন সে বিষয়ের জন্য মানুষকে (নবী ও তাঁর আহলে বাইতকে) তারা হিংসা করে এবং আমরাই সেই ব্যক্তিবর্গ,যে ইমামত ও নেতৃত্ব আমাদের দেয়া হয়েছে সে কারণে আমাদের হিংসা করা হয়। অবশ্যই আমি ইবরাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হিকমত দান করেছিলাম আর তাদেরকে দান করেছিলাম বিশাল রাজ্য। কোরআন বলছে, তাদের মধ্যে নবী,রাসূল ও ইমাম প্রেরণ করেছি।”অন্যরা আলে ইবরাহীমের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিকে কবুল করলেও কেন আলে মুহাম্মদের ক্ষেত্রে তা কবুল করে না? (যেরূপ নামাযের দরূদে আহলে সুন্নাহ্ আলে ইবরাহীমকে যা দান করা হয়েছিল তদ্রুপ যেন আলে মুহাম্মদকেও দান করা হয় তার জন্য দোয়া করে থাকে)। অতঃপর তাদের কেউ তাঁকে মান্য করেছে আবার কেউ তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে রয়েছে।

৫৫। সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর গ্রন্থে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ আনসারী হতে বর্ণনা করেছেন,যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলো তখন আলী (আ.) বললেন, আমরা (আহলে বাইত) সেই ব্যক্তিবর্গ যারা জানে (আহলুয যিকর)।”অন্যান্য ইমাম হতেও এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। আল্লামাহ্ বাহরাইনী তাঁর গায়াতুল মারাম গ্রন্থের ৩৫ অধ্যায়ে এ সম্পর্কে বিশাধিক সহীহ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৫৬। ইবনে মারদুইয়া বর্ণনা করেছেন এখানে রাসূলের বিরোধিতা’র অর্থ আলী (আ.)-এর মর্যাদার বিরোধিতা ও সত্য প্রকাশিত হবার পর’অর্থ আলী (আ.)-এর প্রতিনিধিত্ব ও মর্যাদার বিষয় জানার পর।

আয়াশী তাঁর তাফসীরে একই ভাবার্থের কয়েকটি হাদীস এনেছেন। মুমিনদের পথ বলতে যে আহলে বাইতের ইমামদের পথ তা আহলে বাইতের ইমামদের হতে সহীহ ও মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।

৫৭। সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীরে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন,এই আয়াত নাযিল হবার পর রাসূল (সা.) তাঁর হাতকে আলী (আ.)-এর বুকে রাখলেন ও বললেন, আমি ভয় প্রদর্শনকারী ও আলী হেদায়েতকারী। হে আলী! হেদায়েতপ্রাপ্তগণ তোমার মাধ্যমেই হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে।”

৫৮। সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর’গ্রন্থে সূরা ফাতিহার তাফসীরে ইবনে বুরাইদা হতে নকল করেছেন যে, সিরাতুল মুস্তাকীম’বলতে মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর বংশধরদের পথকে বুঝানো হয়েছে। ওয়াকি ইবনে জাররাহ্,সুফিয়ান সাওরী,সা দী,আসবাত ও মুজাহিদ হতে ও এরা সকলেই ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন, আমাদের সরল সঠিক পথে হেদায়েত কর’অর্থ মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরদের দিকে।

৫৯। সকল তাফসীরকার এ বিষয়ে একমত যে,এই আয়াতটি আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর শানে অবতীর্ণ হয়েছে,যখন তিনি রুকুরত অবস্থায় সদকা দান করেন। নাসায়ী তাঁর সহীহ নাসায়ীতে আবদুল্লাহ্ ইবনে সালাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে,সূরা মায়েদার এ আয়াতটি আলী ইবনে আবি তালিবের শানে নাযিল হয়েছে।

৬০। ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের একাদশ অধ্যায়ের উপরোক্ত আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ করেছেন, সাবেত বানানী বলেছেন : আয়াতেاهتدى অর্থ মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইতের বেলায়েত ও অভিভাবকত্বের মাধ্যমে হেদায়েত প্রাপ্ত হওয়া।” ইবনে হাজার ইমাম বাকির (আ.) হতেও উপরোক্ত অর্থের তাফসীর বর্ণনা করেছেন। অতঃপর ইমাম বাকির (আ.) হতে যারা তাঁদের বেলায়েতের মাধ্যমে হেদায়েত পেয়েছে কেবল তারাই যে মুক্তি পাবে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসে ইমাম বাকির (আ.) হারিস ইবনে ইয়াহিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, হে হারিস! তুমি কি লক্ষ্য কর নি,মহান আল্লাহ্ কোন ব্যক্তির তওবা,সৎ কর্ম ও ঈমানকে গ্রহণের জন্য আমাদের বেলায়েতকে স্বীকার ও আমাদের প্রকৃত পরিচয় জানাকে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন,নতুবা সেসব কোন ফলদান করবে না।” অতঃপর আলী (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, যদি কেউ তওবা করে,ঈমান আনে ও সৎ কর্ম করে কিন্তু আমাদের আহলে বাইতের অভিভাবকত্বের দিকে হেদায়েতপ্রাপ্ত না হয়,তবে এ কর্ম তার কোন প্রয়োজনই পূরণ করবে না।”

৬১। এর জন্য তাফসীরে সাফী ও তাফসীরে আলী ইবনে ইবরাহীমে ইমাম বাকির (আ.),ইমাম সাদিক (আ.) ও ইমাম রেযা (আ.) হতে যে বর্ণনা এসেছে তার প্রতি লক্ষ্য করুন। তদুপরি আল্লামাহ্ বাহরাইনীর গায়াতুল মারাম’গ্রন্থে আহলে সুন্নাহর হাদীসসমূহ হতে বর্ণনাটি এসেছে।

৬২। সূরা বাকারা : ২০৮। আল্লামাহ্ বাহরাইনী তাঁর গায়াতুল মারাম’গ্রন্থে ২২৪ নং অধ্যায়ে ১২ নং হাদীসে বলেছেন, এই আয়াত আলী (আ.) ও আহলে বাইতের অন্যান্য ইমামদের সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। হযরত আলী (আ.) হতে কয়েকটি সূত্রে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।”

৬৩। আল্লামাহ্ বাহরাইনী তাঁর গায়াতুল মারাম’গ্রন্থের ৪৮ অধ্যায়ে আহলে সুন্নাহ্ সূত্রে তিনটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যাতে নাঈম’বলতে রাসূল (সা.),আলী (আ.) ও আহলে বাইতের বেলায়েতকে বুঝানো হয়েছে।

৬৪। সূরা মায়েদাহ্ : ৬৭। অনেক হাদীসশাস্ত্রবিদই এ হাদীসটি গাদীরে খুমে আলী (আ.) সম্পর্কে নাযিল হয়েছে বলে মনে করেন। সূরা মায়েদাহর এ আয়াতের শানে নুযূলে আবু সাঈদ খুদরী হতে সা লাবী ও ওয়াকেদী তাঁদের তাফসীরে দু টি সূত্রে এবং হামূয়ানী শাফেয়ী তাঁর ফারায়েদুস সামতাইন গ্রন্থে অনেকগুলো সূত্রে আবু হুরাইরা (রা.) হতে ও আবু নাঈম তাঁর নুযূলুল কোরআন’গ্রন্থে আবু রাফে,আ মাশ ও আতিয়ার সূত্রে হাদীসটি এনেছেন। গায়াতুল মারাম’৯টি সূত্রে আহলে সুন্নাহর হাদীস গ্রন্থ হতে এবং আহলে বাইতের সূত্রে ৮টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

৬৫। গায়াতুল মারাম’গ্রন্থের ৩৯ ও ৪০ অধ্যায়ে রাসূল (সা.) হতে ৬টি নির্ভরযোগ্য হাদীস আহলে সুন্নাহ্ হতে বর্ণনা করা হয়েছে।

৬৬। সা লাবী তাঁর তাফসীরে ঘটনাটি বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। আল্লামাহ্ মিসরী শাবলানজী তাঁর নুরুল আবছার’গ্রন্থের ৭১ পৃষ্ঠায় হযরত আলী (আ.)-এর বাণী বর্ণনায় এ ঘটনাটি এনেছেন। তদ্রুপ হালাবী তাঁর সীরাত গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে বিদায় হজ্বের ঘটনা বর্ণনায় এবং হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থে সূরা মা আরিজের তাফসীরে ঘটনাটি এনেছেন। মুসতাদরাক,২য় খণ্ড,পৃষ্ঠা ৫০২।

৬৭। আস-সাওয়ায়েক। দায়লামী আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করেছেন,রাসূল (সা.) বলেছেন, তারা আলীর বেলায়েত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”ওয়াহেদী উপরোক্ত আয়াতের বিষয়ে বর্ণনা করেছেন, আলী (আ.) ও আহলে বাইতের নেতৃত্বকে মানার বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে এবং আরো বলেছেন, আল্লাহ্ তাঁর নবীকে নির্দেশ দিয়েছেন মানুষকে এটি বোঝানোর জন্য যে,তিনি তাঁর নবুওয়াতের দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিদান হিসেবে তাঁর আহলে বাইতের প্রতি মহব্বত ও ভালবাসা পোষণ করা ছাড়া আর কিছু চান না এবং কিয়ামতে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে যে,রাসূল যেমনটি নির্দেশ দিয়েছেন তেমনটি তারা করেছে কিনা। যদি না করে থাকে তবে তার শাস্তি তাদের পেতে হবে। ইবনে হাজারের আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ১১ অধ্যায়ে এ আয়াতটিকে আহলে বাইতের শানে অবতীর্ণ আয়াতসমূহের অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৬৮। এ বিষয়ে হাফিয আবু নাঈম তাঁর হুলইয়া গ্রন্থে এবং সা লাবী,হাকিম নিশাবুরী ও বারকী তাঁদের তাফসীরসমূহে যা বলেছেন তাই যথেষ্ট। হুসাইনী ও অন্যান্যরাও আহলে সুন্নাহ্ হতে এটি বর্ণনা করেছেন। তাবারসী তাঁর মাজমায়ুল বায়ান’-এ হযরত আলী (আ.) হতে এটি বর্ণনা করেছেন। বাহরাইনীর গায়াতুল মারাম’গ্রন্থে এসেছে-এ আয়াতের তেলাওয়াতে রোগমুক্তি ঘটে।

৬৯। সূরা আনফাল,আয়াত নং ৩৩ ও সূরা বাকারার ৩৭ নং আয়াতের তাফসীরে ইবনে মাগাযেলী শাফেয়ী ইবনে আব্বাসের সূত্রে রাসূল (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন,ঐ বাক্যগুলো যার মাধ্যমে আদমের তওবা গৃহীত হয় তা হলো আদম (আ.) হযরত মুহাম্মদ (সা.),আলী,ফাতিমা,হাসান ও হুসাইন (আ.)-এর উসিলায় ক্ষমা চান।

৭০। ইবনে হাজারের আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থে উপরোক্ত আয়াতের তাফসীরে (আহলে বাইতের শানে ৭ম আয়াত) একাদশ অধ্যায়ে তিনি এ বিষয়ে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

৭১। ইবনে হাজার আহলে বাইত সম্পর্কিত আয়াতের অন্যতম বলে উক্ত আয়াতকে উল্লেখ করেছেন এবং আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের একাদশ অধ্যায়ে তা আলোচনা করেছেন। ইবনে মাগাযেলী শাফেয়ী ইমাম বাকির (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন,তিনি বলেছেন, আমরা সেই ব্যক্তিবর্গ যাদের প্রতি হিংসা করা হয়েছে।” গায়াতুল মারাম’গ্রন্থের ৬০ ও ৬১ অধ্যায়ে এ সম্পর্কিত ৩০টি নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে।

৭২। সিকাতুল ইসলাম কুলাইনী সহীহ সনদে ইমাম সাদিক (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন,তিনি বলেছেন, আমরা সেই ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ্ যাদের আনুগত্যকে মানুষের ওপর ফরয করেছেন,আমরাই জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিবর্গ এবং আমাদের প্রতিই অন্যরা বিদ্বেষ পোষণ করে। আল্লাহ্ বলেছেন, নাকি মানুষকে (নবী পরিবারকে) যে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে সে কারণে তারা তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে।”

৭৩। সূরা আ রাফ ৪৬। সা লাবী তাঁর তাফসীর গ্রন্থে উপরোক্ত আয়াতের তাফসীরে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন,আ রাফ সিরাত হতে উঁচু ও উত্থিত একটি স্থান যেখানে আলী,হামযাহ্,জা ফর তাইয়্যার ও আব্বাস বসবেন এবং তাঁরা তাঁদের বন্ধুদের শ্বেত শুভ্র চেহারা এবং শত্রুদের কালিমাযুক্ত চেহারা দেখে সনাক্ত করবেন।

হাকিম নিশাবুরী তাঁর নিজস্ব সনদে আলী (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, আমরা পুনরুত্থান দিবসে বেহেশত ও দোযখের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকব,অতঃপর আমাদের যারা সাহায্য করেছে তাদের মুখমণ্ডল দেখে চিনবো ও বেহেশতে প্রবেশ করাবো এবং আমাদের শত্রুদেরও তাদের মুখাবয়ব দেখে চিনবো। অন্য একটি সূত্রে হযরত সালমান ফারসী হতে বর্ণিত হয়েছে,রাসূল (সা.) বলেছেন, হে আলী! তুমি ও তোমার সন্তানগণ আমার স্থলাভিষিক্ত ও প্রতিনিধি যারা আ রাফে অবস্থান করবে।”

উপরোক্ত হাদীসের সমর্থনকারী অপর একটি হাদীস যা দারে কুতনী’এবং আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ২য় পর্বের ৯ম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে,উমর যখন খলীফা নির্বাচনের জন্য ৬ সদস্যের শুরা গঠন করলেন,আলী তাঁদের উদ্দেশ্যে যে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন সেখানে বলেছেন, তোমাদের মধ্যে আমি ব্যতীত এমন কোন ব্যক্তি আছে কি যাকে উদ্দেশ্য করে রাসূল (সা.) বলেছেন : তুমি কিয়ামতে বেহেশত ও দোযখের স্থান বণ্টনকারী? তারা বলল : আল্লাহর কসম না।”

ইবনে হাজার বলেন এ কথার অর্থ ব্যাখ্যা করে ইমাম রেযা (আ.) বলেন, নবী (সা.) আলী (আ.)-কে বলেছেন : তুমি বেহেশত ও দোযখের বণ্টনকারী। কিয়ামত দিবসে তুমি জাহান্নামকে উদ্দেশ্য করে বলবে : এটি আমার লোক এবং এটি তোমার।”ইবনে হাজার ইবনে আমাক হতে বর্ণনা করেছেন, হযরত আবু বকর আলীকে বলেন : নবী করিম (সা.) হতে শুনেছি কেউ সিরাতের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারবে না যতক্ষণ না আলী (আ.) তার অনুমতি দেয়।”

৭৪। সূরা আহযাব : ২৩। ইবনে হাজার তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৫ম পর্বের ৯ম অধ্যায়ে আলী (আ.)-এর শাহাদাতের আলোচনায় বলেছেন, আলী (আ.)-কে একবার মিম্বারে এ আয়াতের অর্থ জিজ্ঞেস করা হলো। জবাবে তিনি বললেন : হে আল্লাহ্! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন। প্রকৃতই এই আয়াতটি আমার চাচা হামযাহ্,চাচাত ভাই উবাইদা ইবনে হারেস ইবনে আবদুল মুত্তালিব এবং আমার সম্পর্কে নাযিল হয়েছে,উবাইদা বদর যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন,হামযাহ্ উহুদে শহীদ হয়েছেন এবং আমি সেই রাসূলের উম্মতের সেই কঠোরতম হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তির প্রতিক্ষায় রয়েছি যে আমার শ্মশ্রুকে রঙ্গিন করবে। এ বিষয়টি আমার ভাই ও বন্ধু আবুল কাসেম ইবনে আবদুল্লাহ্ (মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) অনুমোদন করেছেন। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থে এবং তাবারসী তাঁর মাজমায়ুল বায়ান’-এ আমর ইবনে সাবেত ও আবু ইসহাকের সূত্রে আলী (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, এই আয়াত আমাদের শানে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আমি এর জন্য প্রতীক্ষমাণ,এজন্য আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত নই।”

৭৫। সূরা নূর : ৩৬ ও ৩৭। মুজাহিদ ও ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান তাঁদের তাফসীর গ্রন্থে সূরা জুমআর একাদশ আয়াতের তাফসীরে ইবনে আব্বাস হতে নকল করেছেন, যখন তারা ব্যবসায়ের সুযোগ দেখে,তোমাকে একা ফেলে রেখে যায়’আয়াতটির শানে নুযূল এরূপ,দাহিয়া কালবী জুমআর দিন সিরিয়া হতে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে আনা খাদ্র-দ্রব্য নিয়ে ফিরে এসেছিলেন এবং জিত পাথরের নিকট পৌঁছার পর ঢোল পিটিয়ে নিজের আগমনবার্তা ঘোষণা করলেন। সকলেই তাঁর ব্যবসায়ী কাফেলা দেখার জন্য রাসূলকে ফেলে চলে গেল। শুধু আলী,ফাতিমা,হাসান,হুসাইন,আবু যার,সালমান ও মিকদাদ রাসূলের সঙ্গে ছিলেন। রাসূল (সা.) বললেন : আল্লাহ এ মসজিদের দিকে লক্ষ্য করে এ ব্যক্তিদের দেখে মদীনার মানুষদের আজাব দান হতে বিরত হলেন। নতুবা যেরূপ লুত জাতির ওপর পাথর বর্ষিত হয়েছিল সেরূপ আজাব নাযিল হত। তখনই আল্লাহ্পাক মসজিদে বিদ্যমান ব্যক্তিবর্গের প্রশংসায় সূরা নূরের উপরোক্ত আয়াত নাযিল করেন।

৭৬। সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর’-এ আনাস বিন মালিক এবং ইয়াযীদ সূত্রে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) যখন এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন তখন আবু বকর উঠে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলেন : ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ঐ ঘর কি আলী ও ফাতেমার ঘর? রাসূল (সা.) বললেন : ঘরগুলোর মধ্যে ঐ ঘরটি সর্বোত্তম।”

৭৭।مثل نوره كمشكاة আয়াতটি সম্পর্কে ইবনে মাগাযেলী শাফেয়ী তাঁর মানাকিব গ্রন্থে আলী ইবনে জা ফর হতে বর্ণনা করেছেন, ইমাম কাযেম (আ.)-কে প্রশ্ন করলাম উপরোক্ত আয়াতে  مشكاة (কুলঙ্গি),مصباح (প্রদীপ) ও  زجاجة (কাঁচের পাত্র) বলতে কি বুঝানো হয়েছে? তিনি বলেন : মিশকাহ্ হলো ফাতিমা (আ.),মিসবাহ ইমাম হাসান ও হুসাইন (আ.) এবং যুজাজাহ্ বা কাঁচের পাত্র যা উজ্জ্বল নক্ষত্র তাও ফাতিমা,কারণ বিশ্বের নারীদের মধ্যে তিনি প্রজ্জ্বলিততম তারকা যা পবিত্র বৃক্ষ হযরত ইবরাহীম (আ.) থেকে আলো গ্রহণ করেছে,পূর্বমুখীও নয় আবার পশ্চিমমুখীও নয় অর্থাৎ ইহুদীও নন বা নাসারাও নন। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হবার নিকটবর্তী’এর অর্থ তাঁর অস্তিত্ব থেকেই জ্ঞান বিচ্ছুরিত হয়। জ্যোতির ওপর জ্যোতি অর্থাৎ এক ইমামের আগমনের পরেই অপর ইমামের আগমন। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা নিজের নূরের দিকে পথ দেখান অর্থাৎ তাঁরা হেদায়েত করবেন তাদের,যারা তাঁদের (আহলে বাইতের) বেলায়েত ও নেতৃত্বকে মেনে নেবে।

৭৮। সূরা ওয়াকেয়া : ১০। ইবনে হাজার আসকালানী আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থে (২৯ পর্বের ৯ম অধ্যায়ে) এবং দায়লামী তাঁর হাদীসগ্রন্থে হযরত আয়েশা হতে এবং তাবরানী ও ইবনে মারদুইয়া ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন : তিন ব্যক্তি অগ্রবর্তীদলের অন্তর্ভুক্ত। মূসার অগ্রবর্তী দলের প্রধান ইউশা ইবনে নূন,ঈসার অগ্রবর্তীদের প্রধান হলেন সাহেব ইয়াসিন এবং মুহাম্মদের উম্মতের অগ্রগামী ব্যক্তি হলো আলী ইবনে আবী তালিব।”মুওয়াফ্ফাক ইবনে আহমাদ এবং ইবনে মাগাযেলীও ইবনে আব্বাসের সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৭৯। সূরা নিসা : ৬৯। ইবনে নাজ্জার ইবনে আব্বাসের সূত্রে রাসূল (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন, সত্যপন্থীগণ (সত্যপন্থীদের নেতা) ৩ জন।

আলে ফিরআউনের মুমিন ব্যক্তি (হিযকিল),সাহেব ইয়াসিন (হাবীব নাজ্জার) এবং আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)। (আস-সাওয়ায়েক,২য় পর্ব,৯ম অধ্যায়,৩০ নং হাদীস)। আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের একই অধ্যায়ের ৩১ নং হাদীসে এবং হাফিজ আবু নাঈম এবং ইবনে আসাকীর তাঁদের ইতিহাস গ্রন্থে ইবনে আবি লাইলী থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন : তিন জন ব্যক্তি হলেন সত্যপন্থী-আলে ইয়াসিনের মুমিন ব্যক্তি (হাবীব নাজ্জার) যিনি বলেছিলেন : হে আমার জাতি! আল্লাহর প্রেরিত রাসূলদের অনুসরণ কর ও ফিরআউন বংশের মুমিন ব্যক্তি হিযকিল যিনি বলেছিলেন : তোমরা কি ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করতে চাও যে বলে : আমার রব আল্লাহ্ এবং আলী ইবনে আবী তালিব তাঁদের হতে উত্তম সেই সিদ্দীকে আকবার ও ফারুকে আযম”,যেমনটি নির্ভরযোগ্য ও মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।

৮০। মুওয়াফ্ফাক ইবনে আহমাদ,আবু বকর ইবনে মারদুইয়ার সূত্রে আলী হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন : মুসলিম উম্মাহ্ ৭৩ ফির্কায় বিভক্ত হবে,তাদের মধ্যে একটি দল ব্যতীত সকলেই জাহান্নামী হবে এবং উপরোক্ত আয়াত আমার এবং আমার অনুসারীদের ব্যাপারেই নাযিল হয়েছে যারা মুক্তিপ্রাপ্ত দল।”

৮১। সূরা হাশর : ২০।

শেখ তুসী তাঁর আমালী’গ্রন্থে নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলী (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করে বললেন : তারাই বেহেশতী যারা আমার আনুগত্য করে ও আমার পর আলীর নেতৃত্বকে মেনে নেয় এবং তার আনুগত্য স্বীকার করে। রাসূলকে প্রশ্ন করা হলো জাহান্নামবাসী কারা? তিনি বললেন : যারা তার নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ,তার প্রতি দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ও তার সঙ্গে যুদ্ধ করে।”মরহুম শেখ সাদুক (রহঃ)-ও আলী (আ.) হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আবুল মুওয়াইয়াদ ও মুওয়াফ্ফাক ইবনে আহমাদ ও হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ আনসারী হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন : আমার প্রাণ যার মুষ্টাবদ্ধ সেই প্রভুর শপথ,আলী ও তার অনুসারীরা কিয়ামতের দিন সফলকাম হবে।”

৮২। সোয়াদ : ২৮। এ আয়াতের তাফসীরের জন্য দেখুন তাফসীরে আলী ইবনে ইবরাহীম অথবা গায়াতুল মারাম’(আল্লামাহ্ বাহরাইনী),৮১ ও ৮৩ অধ্যায়।

৮৩। জাসিয়াহ্ : ২১। যখন বদর যুদ্ধে হযরত হামযাহ্ (রা.),হযরত আলী (আ.) ও হযরত উবায়দা (হাশিমী বংশোদ্ভূতরা) উতবা,শায়বা ও ওয়ালিদ (উমাইয়্যা) এ তিনজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধে লিপ্ত হন তখন মহান আল্লাহ্ প্রথম তিনজনকে ঈমানদার ও সৎ কর্মশীল এবং পরবর্তী তিন ব্যক্তিকে দুষ্কর্মকারী বলে অভিহিত করে উপরোক্ত আয়াত নাযিল করেন বলে সহীহ হাদীসে এসেছে।

৮৪। সূরা বাইয়্যেনাহ্ : ৭। ইবনে হাজার আসকালানী বলেছেন, এই আয়াত আহলে বাইতের শানে নাযিল হয়েছে।”তিনি তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ১১ অধ্যায়ে আহলে বাইতের ফজীলত বর্ণনাকালে এ হাদীসটি এনেছেন। ফুসূলুল মুহিম্মা’গ্রন্থের ৭ম অধ্যায়ের ৩৯ পৃষ্ঠায় এ আয়াতের আলোচনায় আমরা সংশ্লিষ্ট হাদীসসমূহ বর্ণনা করেছি। তা দেখুন।

৮৫। সূরা হজ্ব : ১৯। বুখারী সূরা হজ্বের উপরোক্ত আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে ৩য় খণ্ডের ১০৭ পৃষ্ঠায় বলেছেন, আলী (রা.) বলেন : আমি সর্বপ্রথম ব্যক্তি যে কিয়ামতের দিন আল্লাহ্পাকের সম্মুখে বিচারের প্রার্থী হয়ে উপস্থিত হব।”কাইস ইবনে ইবাদ বলেছেন, এই আয়াত বদরের যুদ্ধে আলী এবং তাঁর দুই সহযোগী হামযাহ্ ও উবাইদা এবং শাইবা ও তার দুই বন্ধু উতবা ও ওয়ালিদ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।”একই পৃষ্ঠায় হযরত আবু যর গিফারী (রা.) হতে বর্ণনা করা হয়েছে যে,তিনি আল্লাহর শপথ করে বলতেন, এই আয়াত আলী ও তাঁর দুই বন্ধু এবং উতবা ও তার দুই সহযোগী সম্পর্কে বদরের যুদ্ধে নাযিল হয়েছে।”(সহীহ বুখারী,প্রকাশক দারু ইয়াহইয়াউত তুরাসিল আরাবী,২য় খণ্ড,৬ষ্ঠ পাঠ,পৃষ্ঠা ১২৩)

৮৬। সিজদাহ্ : ১৮ ও ১৯। সন্দেহাতীতভাবে এ আয়াত আমীরুল মুমিনীন আলী ও ওয়ালিদ ইবনে উকবা ইবনে আবি মুয়ীত সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। মুফাসসির ও হাদীস শাস্ত্রবিদগণ এটিকে সমর্থন করেছেন। আবুল হাসান আলী ইবনে আহমাদ ওয়াহেদী এ আয়াতের অর্থ ও শানে নুযূল বর্ণনা করে সাঈদ ইবনে যুবাইর হতে এবং তিনি ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন, ওয়ালিদ ইবনে উকবা হযরত আলীকে বলল : আমার তরবারী তোমার তরবারী হতে ধারালো,জিহ্বা তোমা হতে প্রশস্ত এবং সৈন্যবাহিনী অধিক শক্তিশালী। হযরত আলী তাকে বললেন : তুমি ফাসিক।”তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় ও আলী (আ.)-কে মুমিন ও ওয়ালিদকে ফাসিক বলে উল্লেখ করা হয়।

৮৭। তওবা : ১৯। এ আয়াতটি হযরত আলী,তাঁর চাচা আব্বাস এবং তালহা ইবনে শায়বা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। একবার তালহা গর্ব করে বললেন, আমি কাবার রক্ষণাবেক্ষণকারী,কাবার চাবি আমার হাতেই থাকে।”হযরত আব্বাস বললেন, আমি হাজীদের পানি পান করাই ও খেদমত করি,তাই আমি শ্রেষ্ঠ। হযরত আলী বললেন, আপনারা কি বলছেন,আমি আপনাদের সবার হতে ছয় মাস পূর্বে রাসূলের সঙ্গে নামায পড়েছি এবং তাঁর সঙ্গে জিহাদ করেছি।”তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ওয়াহেদী এ আয়াতের অর্থ ও শানে নুযূল বর্ণনা করতে গিয়ে হাসান বসরী,শাবী ও কুরতুবী হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ ইবনে সিরিন ও মুররাহ্ হামাদানী বর্ণনা করেছেন, হযরত আলী তাঁর চাচা আব্বাসকে বললেন : কেন হিজরত করে রাসূলের সঙ্গে মিলিত হচ্ছেন না? আব্বাস বললেন : হিজরতের থেকে উত্তম কাজ কি আমি করছি না? আমি হাজীদের পানি পান করাই ও কাবা ঘরের মেরামতের কাজ করি। আমি কি হিজরত হতে উত্তম কাজ করছি না? তখন উপরোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়।

৮৮। সূরা বাকারা : ২০৭। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ৪র্থ পৃষ্ঠায় হযরত ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন, আলী (আ.) তাঁর জীবনকে রাসূলের জন্য বিকিয়ে দিয়েছেন (হিজরতের রাত্রিতে রাসূলের পোষাক পরিধান করে তাঁর বিছানায় শয়ন করে মৃত্যুর অপেক্ষায় ছিলেন)।”হাকিম,বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত হাদীসের বিশুদ্ধতার শর্ত অনুযায়ী এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন যদিও তাঁরা এ হাদীসটি বর্ণনা করেন নি। যুহরী তাঁর তালখিসুল মুসতাদরাকে হাদীসটির সত্যতাকে স্বীকার করেছেন। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাকের ঐ পৃষ্ঠাতেই হযরত আলী ইবনুল হুসাইন (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজের জীবনকে বিক্রি করেন তিনি আলী ইবনে আবি তালিব,কারণ তিনি রাসূলের বিছানায় শয়ন করেছিলেন।”অতঃপর আলী (আ.) সম্পর্কে একটি কবিতা পাঠ করেন যার প্রথমে বলা হয়েছে-

وقيت بنفسي خير من وطئ الحصا

و من طاف بالبيت العتيق و بالحجر

নিজের জীবনের বিনিময়ে পৃথিবীর ওপর বিচরণকারী শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যিনি কাবাকে তাওয়াফ করেছেন ও হাজরে আসওয়াদকে স্পর্শ করেছেন তাঁর জীবনকে রক্ষা করেছি।