আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত0%

আল মুরাজায়াত লেখক:
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ: ইতিহাস

আল মুরাজায়াত

লেখক: আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ:

ভিজিট: 62161
ডাউনলোড: 8046

পাঠকের মতামত:

আল মুরাজায়াত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 133 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 62161 / ডাউনলোড: 8046
সাইজ সাইজ সাইজ
আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত

লেখক:
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বাংলা

ت

১০। তালিদ ইবনে সুলাইমান কুফী আ রাজ

ইবনে মুঈন তাঁর নাম উল্লেখ করে বলেছেন, তিনি উসমানের নিন্দা করায় উসমানের গোত্র ও বংশের লোকজন ও দাসরা তীর নিক্ষেপ করে তাঁর পা ভেঙ্গে দেয়।

আবু দাউদ বলেছেন, সে রাফেযী এবং হযরত আবু বকর ও উমরের নিন্দা করত। এসব জানার পরও আহমাদ ও ইবনে নুমাইর তাঁর নিকট হাদীস শিক্ষা করেছেন এবং সেসব হাদীস হতে প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। আহমাদ বলেছেন, তালিদ শিয়া মতাদর্শী কিন্তু তাঁর হাদীসানুযায়ী আমল করতে কোন অসুবিধা নেই। যাহাবী তাঁর মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে তাঁর সম্পর্কে বিভিন্ন আলেমের মন্তব্য এনেছেন যেমনটি আমরা বর্ণনা করেছি। তিনি তাঁর নামের পাশে সাংকেতিক চি হ্ন তিরমিযী লিখেছেন অর্থাৎ তিরমিযী তাঁর সূত্রে আতা ইবনে সায়িব এবং আবদুল মালিক ইবনে উমাইর হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

ث

১১। সাবিত ইবনে দিনার (আবু হামযাহ্ সুমালী বলে খ্যাত)

তিনি যে শিয়া ছিলেন এ বিষয়টি দিবালোকের মত পরিষ্কার ও উজ্জ্বল। যাহাবী বর্ণনা করেছেন, আবু হামযাহর উপস্থিতিতে উসমানের নাম উঠলে জিজ্ঞাসা করতেন : উসমান কে? এ প্রশ্নের উদ্দেশ্য এটিই ছিল যে,উসমানের প্রতি তাঁর উপেক্ষার দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটান। যাহাবী আরো বলেছেন, সুলায়মানী আবু হামযাহকে রাফেজী বলে উল্লেখ করেছেন,তাঁর নামের পার্শ্বে সাংকেতিক তিরমিযী ব্যবহার করেছেন কারণ তিরমিযীতে তাঁর সনদে ও সূত্রে হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

আবু নাঈম ও ওয়াকী তাঁর থেকে হাদীস গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর হাদীস হতে দলিল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। তিরমিযী তাঁর সূত্রে আব্বাস,শা বী এবং তাঁদের সমসাময়িক আরো দু জন রাবী হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি ১৫০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।

১২। সুয়াইর ইবনে ফাখিতাহ আবু জাহম কুফী (উম্মে হানী বিনতে আবু তালিবের দাস)

যাহাবী তাঁর মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে তাঁর নাম এনেছেন এবং ইউনুস ইবনে আবু ইসাহাক সূত্রে বর্ণনা করেছেন,তিনি রাফেজী ছিলেন। এতদ্সত্ত্বেও সুফিয়ান ও শো বাহ তাঁর নিকট হাদীস শিক্ষা করেছেন। সহীহ তিরমিযীর মতে তিনি আবদুল্লাহ্ ইবনে উমার এবং যাইদ ইবনে আরকাম হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি ইমাম বাকির (আ.)-এর সমসাময়িক এবং তাঁর খাদিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আমর ইবনে জারকাযী,ইবনে কাইস মাছির এবং সালত ইবনে বাহরামের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন ঘটনা বর্ণিত হয়েছে তা আমাদের দাবীর পক্ষে প্রমাণ।

ج

১৩। জাবির ইবনে ইয়াযীদ ইবনে হারিস জো ফী কুফী

যাহাবী তাঁর মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে তাঁর নাম উল্লেখ করে বলেছেন, তিনি একজন শিয়া আলেম এবং সুফিয়ান হতে বর্ণনা করেছেন,তিনি জাবিরকে বলতে শুনেছেন যে,নবীর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা আলী (আ.)-এর নিকট স্থানান্তরিত হয়েছে,এভাবে আলী হতে ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনের মাধ্যমে ইমাম সাদিক (আ.) সে জ্ঞান লাভ করেছেন। জাবির ইমাম সাদিক (আ.)-এর সমকালীন ছিলেন। যাহাবী যুহাইর হতে বর্ণনা করেছেন যে,তিনি শুনেছেন,জাবের বলতেন, আমি পঞ্চাশ হাজার হাদীস জানি যা কাউকে বলি নি। একদিন একটি হাদীস বর্ণনা করে বললেন, এটি ঐ পঞ্চাশ হাজার হাদীসের একটি। যাহাবী তাঁর মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে তাঁর অবস্থা বর্ণনা করে বলেছেন, যখনই জাবির কোন হাদীস বর্ণনা করতেন তখন বলতেন : নবীগণের প্রতিনিধিদের মধ্যে সর্বোত্তম প্রতিনিধি একথা বলেছেন। যাহাবী ইবনে আদী হতে জাবির সম্পর্কে বলেছেন,যে কারণে জাবিরের বিষয়ে আপত্তি উত্থাপিত হয়েছে তন্মধ্যে তিনি রাজআ ত বা মৃতদের পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় বিশ্বাস করতেন।

যাহাবী তাঁর মিযানুল ই তিদালে যায়েদা হতে বর্ণনা করেছেন,জাবির জো ফী রাফেজী ছিলেন ও প্রথম তিন খলীফার নিন্দা করতেন। তদুপরি নাসায়ী ও আবু দাউদ তাঁর হতে হাদীস বর্ণনা করে বিভিন্ন স্থানে দলিল হিসাবে পেশ করতেন। এজন্য সহীহ নাসায়ী ও আবু দাউদ শরীফের নামাযের সাহু সিজদার অধ্যায়ে তাঁর বর্ণিত হাদীস দেখতে পারেন।

শো বা,আবু আওয়ানাহ ও আরো অনেকেই তাঁর নিকট হাদীস শিক্ষা করেছেন।

যাহাবী তাঁর মিযান গ্রন্থে সাংকেতিকভাবে আবু দাউদ ও তিরমিযী তাঁর নামের পাশে লিখেছেন এটি বোঝানোর জন্য যে,আবু দাউদ ও তিরমিযীর সনদে তিনি অন্যতম হাদীস বর্ণনাকারী। তিনি সুফিয়ান হতে বর্ণনা করেছেন, জাবির জো ফী হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে একজন সতর্ক,খোদাভীরু ও পরহেজগার ব্যক্তি ছিলেন। সুফিয়ান আরো বলেছেন, আমি তাঁর ন্যায় পরহেজগার ব্যক্তি কাউকে দেখি নি।

শো বা বলেছেন, জাবির একজন সত্যবাদী মানুষ। যখনই তিনি আমাকে খবর দেয়া হয়েছে , আমাকে বলা হয়েছে বা আমি বলতে শুনেছি এভাবে হাদীস বর্ণনা করতেন তখন হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বলে পরিগণিত হতেন।

ওয়াকী বলেছেন, সকল কিছুতেই সন্দেহ করতে পারো কিন্তু এ বিষয়ে সন্দেহ করো না যে,জাবির জো ফী একজন সত্যবাদী ও নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণনাকারী।

ইবনে আবদুল হাকীম ইমাম শাফেয়ীকে বলতে শুনেছেন, আবু সুফিয়ান সাওরী শো বাকে বলেছেন : যদি জাবির জো ফীকে খারাপ কিছু বল বা তার নিন্দা কর,তবে আমিও তোমাকে ছাড়বো না।

জাবির ১২৭ বা ১২৮ হিজরীতে এ নশ্বর ধরাধাম ত্যাগ করেন। মহান আল্লাহর রহমত তাঁর ওপর বর্ষিত হোক।

১৪। জাবির ইবনে আবদুল হামিদ দ্বাবি কুফী

ইবনে কুতাইবা তাঁর মা আরিফ গ্রন্থে তাঁকে শিয়া বলেছেন। যাহাবী তাঁর মিযান গ্রন্থে তাঁর নামের পার্শে যে সাংকেতিক চি হ্ন ব্যবহার করেছেন তার অর্থ সিহাহ সিত্তাহর সকল লেখকই তাঁর হাদীস হতে দলিল-প্রমাণ উপস্থাপন করতেন এবং তাঁর হাদীসের ওপর নির্ভর করতেন। যাহাবী তাঁর প্রশংসা করে বলেছেন, তিনি রেই শহরের একজন আলেম এবং সত্যবাদী। তাঁর হাদীস সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য এবং তিনি একজন নির্ভরযোগ্য রাবী এ বিষয়টির ব্যাপারে সকলের ঐকমত্য রয়েছে।

তিনি আ মাশ,মুগীরাহ্,মানসুর,ইসমাঈল ইবনে আবু খালিদ এবং আবু ইসাহাক শায়বানী হতে যেসকল হাদীস বর্ণনা করেছেন তা সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে লিপিবদ্ধ হয়েছে। এছাড়া এ দুই হাদীসগ্রন্থে তিনি কুতাইবা ইবনে সাঈদ,ইয়াহিয়া ইবনে ইয়াহিয়া এবং উসমান ইবনে আবি শাইবা হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন,তা অধ্যয়ন করতে পারেন। ১৮৭ হিজরীতে ৭৭ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।

১৫। জা ফর ইবনে যিয়াদ আহমার কুফী

আবু দাউদ তাঁর কথা বলেছেন, সত্যবাদী ও শিয়া মতাবলম্বী। জাওযাজানী তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, শিয়া মতাবলম্বী হওয়ায় তিনি পথচ্যুত। ইবনে আদী বলেছেন, তিনি একজন সৎ কর্মশীল ও পুণ্যবান ব্যক্তি। তাঁর প্রপৌত্র হুসাইন ইবনে আলী ইবনে জা ফর ইবনে যিয়াদ বলেছেন, আমার প্রপিতা জা ফর খোরাসানের শিয়াদের প্রধান ছিলেন।

আবু জা ফর দাওয়ানেকী নির্দেশ দিয়েছিল তাঁকে বন্দী করে তার নিকট উপস্থিত করার জন্য। তাই একদল শিয়াসহ তাঁকে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও গলায় বেড়ী পড়িয়ে তার নিকট নেয়া হয়। দাওয়ানেকী তাঁকে আমৃত্যু মাটির নীচের একটি বন্দীশালায় আবদ্ধ করে রাখে।

ইবনে উয়াইনাহ্,ওয়াকি,আবু গাসসান মাহদী,ইয়াহিয়া ইবনে বিশর হারিরী ও ইবনে মাহদী তাঁর থেকে হাদীস শিক্ষা করেছেন। সুতরাং তিনি এদের শিক্ষক ছিলেন।

ইবনে মুঈন ও অন্যরা তাঁকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। আহমাদ বলেছেন, তিনি হাদীস বর্ণনার যোগ্যতার অধিকারী।

যাহাবী তাঁর মিযান গ্রন্থে উপরোক্ত বিষয়গুলো এনেছেন। তিনি তাঁর নামের পার্শ্বে তিরমিযী ও নাসায়ী সাংকেতিকভাবে লিখেছেন এটি বোঝানোর জন্য যে,তাঁরা তাঁর হাদীসকে প্রামাণ্য মনে করতেন। বায়ান ইবনে বিশর,আতা ইবনে সায়েব এবং তাঁদের সমকালীন অনেকের হতে তাঁর বর্ণিত হাদীস সহীহ তিরমিযী ও নাসায়ীতে এসেছে। তিনি ১৬৭ হিজরীতে মারা যান।

১৬। জা ফর ইবনে সুলাইমান দ্বাবয়ী বাসরী (আবু সুলাইমান)

ইবনে কুতাইবা তাঁর মা আরিফ গ্রন্থের ২০৬ পৃষ্ঠায় তাঁকে শিয়া হাদীসবিদগণের মধ্যে এনে তাঁকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। আহমাদ ইবনে মিকদাম তাঁকে রাফেজী বলেছেন। ইবনে আদী তাঁকে শিয়া হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, তাঁর থেকে হাদীস গ্রহণকে আমি ত্রুটি বলে মনে করি না,কারণ তাঁর হাদীস উপেক্ষা করার মত নয়,বরং তাঁর হাদীস বর্ণনা প্রশংসার যোগ্য এবং সেগুলো গ্রহণ করা উচিত।

আবু তালিব বলেছেন, আহমাদকে বলতে শুনেছি,জা ফর ইবনে সুলাইমান দ্বাবয়ী র হাদীস বর্ণনায় সমস্যা নেই এবং তা গ্রহণযোগ্য। তখন তাঁকে বলা হলো : সুলাইমান ইবনে হারব বলেন : জা ফরের হাদীস লিপিবদ্ধ করা উচিত নয়। জবাবে তিনি বলেন : না,তিনি এরূপ কথা বলেন নি। জা ফরের সমস্যা শুধু এটিই যে,সে শিয়া এবং আলীর প্রশংসায় প্রচুর হাদীস বর্ণনা করেছে।

ইবনে মুঈন বলেন, আবদুর রাজ্জাক হতে এমন কিছু শুনেছি যাতে করে তাঁর মাজহাব সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পেরেছি। আবদুর রাজ্জাককে প্রশ্ন করলাম : আপনার শিক্ষকগণ মুয়াম্মার,ইবনে জারীহ,আউজাই,মালিক ও সুফিয়ান সকলেই সুন্নী ছিলেন। আপনি আহলে বাইতের পথকে কার থেকে শিক্ষা করেছেন? তিনি জবাব দিলেন : আমি জা ফর ইবনে সুলাইমান দ্বাবয়ীকে একজন জ্ঞানী ও হেদায়েতপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে পেয়েছি এবং তাঁর থেকেই শিয়া মাজহাবের শিক্ষা গ্রহণ করেছি।

কিন্তু মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর মুকাদ্দামী ইবনে মুঈনের বিপরীত ধারণা পোষণ করতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জা ফর আবদুর রাজ্জাক হতে শিয়া মাজহাব শিক্ষা করেছেন। এজন্য মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাককে অভিশাপ দিয়ে বলতেন, হায়! আবদুর রাজ্জাক যদি মরতো! কারণ সেই জা ফরকে বিভ্রান্ত করেছে ও শিয়া মাজহাব গ্রহণ করিয়েছে।

আকিলী সাহল ইবনে আবি খাদূসাহ্ হতে বর্ণনা করেছেন, জা ফর ইবনে সুলাইমানকে বললাম : শুনলাম হযরত আবু বকর ও উমরকে আপনি কটু ভাষায় সম্ভাষণ করেন। জবাবে বললেন : অবশ্যই না,তবে তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করি।

ইবনে হাইয়ান তাঁর সিকাহ্ গ্রন্থে জারির ইবনে ইয়াযীদ ইবনে হারুন থেকে বর্ণনা করেছেন, আমার পিতা আমাকে জা ফর দ্বাবয়ীর নিকট প্রেরণ করে বলতে বললেন : আমার পিতার নিকট খবর পৌঁছেছে আপনি হযরত আবু বকর ও উমরকে কটু ভাষায় সম্ভাষণ করেন। তিনি বললেন : না। তবে আমি তাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করি। সুতরাং বোঝা যায় তিনি রাফেযী ছিলেন।

যাহাবী তাঁর মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে তাঁর সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা যা বললাম তাই লিখেছেন,অতঃপর স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, দ্বাবয়ী শিয়া আলেমদের মধ্যে একজন দুনিয়াবিমুখ জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন। যাহাবীর বর্ণনামতে মুসলিম তাঁর সহীহ মুসলিমে তাঁর হাদীসকে ভিত্তি করে প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন ও এমন হাদীসও বর্ণনা করেছেন যা শুধু তাঁর থেকেই বর্ণিত হয়েছে।

যেসকল হাদীস তিনি সাবিত বানানী,জা দ ইবনে উসমান,আবু ইমরান জওনী,ইয়াযীদ ইবনে রাশ্ক ও সায়ীদ জারিরি হতে বর্ণনা করেছেন এবং যেসকল হাদীস কুতান ইবনে নুছাইর,ইয়াহিয়া ইবনে ইয়াহিয়া,কুতাইবা,মুহাম্মদ ইবনে উবাইদা ইবনে হিসাব,ইবনে মাহদী ও মুসাদ্দাদ তাঁর থেকে বর্ণনা করেছেন তা সহীহ মুসলিমে দেখতে পারেন।

তিনিই রাসূল (সা.) হতে ইয়াযীদ রাশ্ক,মাতরাফ ও ইমরান ইবনে হুসাইন সূত্রে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) এক সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন ও যার প্রধান হিসেবে আলী (আ.)-কে মনোনীত করেন। অতঃপর সৈন্যবাহিনীর এক অংশ আলীর বিরুদ্ধে রাসূলের নিকট অভিযোগ করে। তখন রাসূল (সা.) বলেন : আলী সম্পর্কে তোমরা কি বলতে চাও? আলী আমা হতে এবং আমিও আলী হতে,সে আমার পর সকল মুমিনের নেতা ও অভিভাবক। এ হাদীসটি নাসায়ী তাঁর হাদীসগ্রন্থে এনেছেন। ইবনে আদী তাঁর নাসায়ী শরীফের সহীহ হাদীসসমূহের তালিকায় তা লিপিবদ্ধ করেছেন এবং যাহাবীও জা ফর দ্বাবয়ীর অবস্থা ও পরিচয় বর্ণনা করতে গিয়ে তাঁর মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে বিষয়টিকে সত্যায়ন করেছেন।

তিনি ১৭৮ হিজরীর রজব মাসে ইন্তেকাল করেন। আল্লাহ্ তাঁকে রহম করুন।

১৭। জামিই ইবনে উমাইরা ইবনে সা লাবা কুফী (তাইমী তাইমুল্লাহ্)

মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে তাঁর পরিচয় পর্বে আবু হাতেম তাঁকে যেরূপ বর্ণনা করেছেন তা হলো : তিনি কুফার অধিবাসী,হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে সৎ,একজন প্রকৃত শিয়া ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি।(*১৮)

ইবনে হাব্বান বলেছেন (যেমনটি মিযান গ্রন্থে এসেছে) তিনি রাফেযী। আমার মতে যেহেতু আলা ইবনে সালিহ,সাদাকাত ইবনুল মুসান্না এবং হাকীম ইবনে জুবাইর তাঁর থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন,তাই তিনি এদের শিক্ষক ছিলেন।

সুনান গ্রন্থসমূহে তাঁর বর্ণিত তিনটি হাদীস রয়েছে। যাহাবীর বর্ণনা মতে তিরমিযী তাঁকে উত্তম বলেছেন এবং তাঁর প্রশংসা করেছেন।

জামিই ইবনে উমাইরা তাবেয়ীনের অন্তর্ভুক্ত। তিনি হযরত আয়েশা এবং ইবনে উমর হতে হাদীস শুনেছেন। ইবনে উমর হতে তিনি যেসকল হাদীস বর্ণনা করেছেন তার অন্যতম হলো : রাসূলকে অনন্তর বলতে শুনেছি,আলীকে বলতেন,أنت أخي في الدّنيا و الآخرة অর্থাৎ তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে আমার ভাই।