আক্বায়েদ শিক্ষা (দ্বিতীয় খণ্ড)

আক্বায়েদ শিক্ষা (দ্বিতীয় খণ্ড)0%

আক্বায়েদ শিক্ষা (দ্বিতীয় খণ্ড) লেখক:
: মুহাম্মদ মাঈন উদ্দিন
প্রকাশক: আহলে বাইত (আ.) বিশ্ব সংস্থা,কোম,ইরান
বিভাগ: নবুয়্যত

আক্বায়েদ শিক্ষা (দ্বিতীয় খণ্ড)

লেখক: আয়াতুল্লাহ্ মুহাম্মদ তাকী মিসবাহ্ ইয়াযদী
: মুহাম্মদ মাঈন উদ্দিন
প্রকাশক: আহলে বাইত (আ.) বিশ্ব সংস্থা,কোম,ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 14817
ডাউনলোড: 3097

পাঠকের মতামত:

বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 32 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 14817 / ডাউনলোড: 3097
সাইজ সাইজ সাইজ
আক্বায়েদ শিক্ষা (দ্বিতীয় খণ্ড)

আক্বায়েদ শিক্ষা (দ্বিতীয় খণ্ড)

লেখক:
প্রকাশক: আহলে বাইত (আ.) বিশ্ব সংস্থা,কোম,ইরান
বাংলা

১৮তম পাঠ

ইমামের নিয়োগ

পূর্ববর্তী পাঠে আমরা আলোচনা করেছি যে,পবিত্র ইমামের নির্বাচন ব্যতীত,নবুয়্যতের পরিসমাপ্তি প্রভুর প্রজ্ঞার পরিপন্থী। প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজনীন ও চিরন্তন ধর্ম ইসলামের পরিপূর্ণতা এর সাথে সম্পর্কিত যে,মহানবী (সা.)-এর পর তার এমন সকল যোগ্য উত্তরসুরিগণ নির্বাচিত হবেন,যারা নবুয়্যত ও রিসালাত ব্যতীত মহানবী (সা.)-এর সকল ঐশী মর্যাদার অধিকারী হবেন।

এ বিষয়টিকে পবিত্র কোরানের আয়াতসমূহ এবং শিয়া সুন্নী উৎসর তাফসিরে বর্ণিত অসংখ্য রেওয়ায়েতের মাধ্যমে প্রমাণ করা যায় ।

উদাহরণস্বরূপ সূরা মায়িদাহর তৃতীয় আয়াতটির কথা উল্লেখ করা যায় যেখানে বলা হয়েছে :

) الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا(

আজ তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম।

এ আয়তটি মহানবী (সা.)-এর পরলোক গমনের কয়েক মাস পূর্বে বিদায় হজ্জের সময় অবতীর্ণ হয়েছে বলে মোফাসসিরগণের মধ্যে মতৈক্য বিদ্যমান। ইসলামের কোন ক্ষতি করতে গিয়ে কাফেররা হতাশ হয়ে পড়েছে এ কথাটির ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে উল্লেখিত আয়াতটির পূর্বেই। যথা

) الْيَوْمَ يَئِسَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ دِينِكُمْ(…

আজ কাফিররা তোমাদের দ্বীনের বিরুদ্ধাচরণে হতাশ হয়েছে ...

অতঃপর গুরুত্ব সহকারে বলা হয়েছে যে,আজ তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ এবং আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম। উপরোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার স্থান,কাল ও পাত্রের উপর বর্ণিত অসংখ্য রেওয়ায়েতের আলোকে সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে,এ পরিপূর্ণতা (اکمال ) ও সম্পূর্ণতা (اتمام ),যা ইসলামের ক্ষতি করতে কাফেরদের হতাশার সাথে সংশ্লিষ্ট তা মহানবী (সা.)-এর উত্তরসুরি নির্বাচনের মাধ্যমে বাস্তব রূপ লাভ করেছে। কারণ ইসলামের শত্রুদের প্রত্যাশা ছিল মহানবী (সা.)-এর পরলোকগমণের পর (যেহেতু তার কোন পুত্র সন্তান ছিল না) ইসলামের কোন পৃষ্ঠপোষক থাকবে না এবং ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে বিলুপ্তিতে পতিত হবে। কিন্তু তার উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হওয়ায় ইসলাম ধর্ম এর পরিপূর্ণতা ও ঐশী অনুগ্রহের সম্পূর্ণতায় পৌছেছে। ফলে কাফেরদের সকল আশা ভস্মীভূত হয়েছে।১২৮

আর এর ঘটনাপ্রবাহ ছিল এরূপ : মহানবী (সা.) বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পথে গাদীরে খুম নামক স্থানে সকল হাজীদেরকে একত্রিত করলেন এবং বিস্তারিত বক্তব্য দেয়ার পর উপস্থিত লোকদেরকে বিজ্ঞাসা করলেন :

الست اولی بکم من انفسکم

ওহে আমি কি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের উপর বিলায়াত প্রাপ্ত নই?১২৯

সকলেই একবাক্যে ইতিবাচক জবাব প্রদান করল। অতঃপর আলী (আ.)-এর বাহু ধরে তাকে সকল মানুষের সম্মুখে উঁচু করে প্রদর্শন করলেন এবং বললেন :

من کنت مولاه فعلی مولاه

আমি যার মাওলা,আলীও তার মাওলা।

এভাবে ঐশী বিলায়তকে হযরত আলী (আ.)-এর জন্যে মহানবী (সা.) ঘোষণা করলেন। অতঃপর উপস্থিত সকলেই তার [আলী (আ.)] আনুগত্য স্বীকার করলেন। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় খলিফাও আমীরুল মু মিনিন আলী (আ.)-এর আনুগত্য স্বীকারোত্তর অভিনন্দন জানাতে গিয়ে বলেছিলেন :

بخّ بخّ لک یا علیّ اصبحت مولای و مولی کلّ مومن و مومنة

হে আলী,তোমাকে অভিনন্দন ! অভিনন্দন ! (আজ থেকে) তুমি আমার মাওলা হয়ে গেলে এবং মাওলা হলে সকল মু মিন নর-নারীরও।১৩০

আর এ দিনেই এ আয়তটি অবতীর্ণ হয়েছিল :

) الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا(

আজ তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম আর তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম।

মহানবী (সা.) তাকবীর দিলেন এবং বললেন :

تمام نبوتی و تمام دین الله و لایة علی بعدی

আমার পরে আলীর বেলায়াতই হচ্ছে আল্লাহর দ্বীনের পূর্ণতা এবং আমার নবুয়্যতীর পূর্ণতা স্বরূপ।

এছাড়া আহলে সুন্নাতের কোন কোন মনীষীও (حموینی ) বর্ণনা করেছেন যে,আবু বকর ও ওমর জাবিরের নিকট চেয়েছিল রাসূলকে (সা.) জিজ্ঞাসা করতে যে,এ বিলায়াত কি একমাত্র আলীর জন্যেই নির্ধারিত? হযরত (সা.) বললেন : বিশেষকরে আলী এবং কিয়ামত পর্যন্ত আমার ওয়াসিগণের জন্যেই নির্ধারিত। অতঃপর ওয়াসি কারা এ প্রশ্নের উত্তরে বললেন :

علیّ اخی و وزیری و وارثی و وصیّی و خلیفتی فی امّتی و ولیّ کلّ مومن من بعدی ثمّ ابنی الحسن ثمّ ابنی الحسین ثمّ تسعة من ولد ابنی الحسین واحد القران معهم و هم مع القران لا یفارقونه و لا یفارقهم حتّی یردوا علیّ الحوض

আলী (আ.) আমার ভাই,উজির,উত্তরাধিকারী,ওয়াসি এবং আমার উম্মতের জন্যে খলিফা ও আমার পর মু মিনগণের অভিভাবক। অতঃপর হাসান (আ.) অতঃপর হুসাইন (আ.) অতঃপর হুসাইনের (আ.) সন্তানগণের মধ্য থেকে নয়জন,উত্তর উত্তর ওয়ালী হবেন। কোরান তাদের সাথে এবং তারাও কোরানের সাথে। আর এ কোরান তাদের নিকট থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না এবং তারাও এ কোরান থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না,যতক্ষণ পর্যন্ত না হাউজে কাওছারে আমাদের সাথে মিলিত হবে।১৩১

বিভিন্ন রেওয়ায়েত থেকে যতটুকু জানা যায়,তাতে দেখা যায় মহানবী (সা.) পূর্বেই আলী (আ.)-এর ইমামতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে আদিষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এতে সন্ত্রস্ত ছিলেন যে,হয়ত মানুষ এ বিষয়টিকে হযরত (সা.)-এর ব্যক্তিগত মতামত বলে মনে করবে এবং একে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাবে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি যথাযথ সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন,যাতে এ ঘোষণার জন্যে উপযুক্ত ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়। ফলে নিম্নলিখিত আয়াতটি অবতীর্ণ হয় :

) يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ(

হে রাসূল ! তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর;যদি না কর তবে তো তুমি তার বার্তা প্রচার করলে না। আল্লাহ তোমাকে মানুষ হতে রক্ষা করবেন। (সুরা মায়িদাহ -৬৭ )১৩২

এ বিষয়টির প্রচারের আবশ্যকতার উপর গুরুত্বারোপ করতঃ (যে এ বিষয়টি অন্যান্য সকল বাণীর মতই এবং এর প্রচার না করা সমস্ত রিসালাতের প্রচার থেকে বিরত থাকার শামিল) হযরতকে (সা.) এ সুসংবাদ দেয়া হয়েছিল যে,মহান আল্লাহ তাকে সকল অনাকাংখিত প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা করবেন। আর এ আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার সাথে সাথে মহানবী (সা.) অনুধাবন করলেন যে,সে শুভলগ্ন উপস্থিত হয়েছে এবং এর অধিক বিলম্ব করা সঠিক নয়। অতএব গাদীরে খুম নামক স্থানে এ দায়িত্ব সম্পন্ন করতে উদ্যোগী হলেন।১৩৩

তবে এ দিনটির বিশেষত্ব হল এই যে,এ দিনে আলীর (আ.) জন্য ইমামতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও বাইআত বা আনুগত্যের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছিল। নতুবা রাসূল (সা.) তার রিসালাতের সময়কালে এশাধিকবার ও একাধিকরূপে আলী (আ.)-এর উঊরাধিকারিত্বের কথা বর্ণনা করেছিলেন। নবুয়্যতের প্রারম্ভিক বছর ,গুলোতে যখনوَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ অর্থাৎ এবং তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে ভয় প্রদর্শন কর। (সূরা শুয়ারা-২১৪) এ আয়াতটি নাযিল হয়েছিল এবং মহানবী (সা.) তার সকল নিকটাত্মীয়দেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন : সর্বপ্রথমে যে আমার আহবানে সাড়া দিবে,সেই আমার উত্তরাধিকারী হবে। দলমত নির্বিশেষে সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে,সর্বপ্রথমেই যিনি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিলেন তিনি আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) ব্যতীত আর কেউ নন।১৩৪ অনুরূপ,

) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ(

হে ঈমানদারগণ! আনুগত্য কর আল্লাহকে এবং আনুগত্য কর আল্লাহর রাসূল তার ঊলুল আমরদেরকে (উত্তরসুরিগণ)। (নিসা-৫৯)

উল্লেখিত আয়াতটি যখন নাযিল হয়োছিল এবং ঊলূল আমর হিসাবে যার পরম আনুগত্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আর তার আনুগত্য করাকে নবী (সা.)-এর আনুগত্য করার সমকক্ষ বলে বর্ণনা করা হয়েছে’’ তখন জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী হযরত (সা.)-এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন এই ঊলূল আমর কারা,যাদের আনুগত্য করা আপনার আনুগত্যের সমকক্ষ বলা হয়েছে ? তিনি বললেন :

هم خلفائی یا جابر و ائمة المسلمین من بعدی اوّلهم علیّ بن ابی طالب ثمّ الحسن ثمّ السحین ثمّ علی بن الحسین ثمّ محمّد بن علی المعروف فی التوراة بالباقر- ستدرکه یا جابر فاذا لقیته فاقرأه منی السلام- ثمّ الصادق جعفر بن محمد ثمّ موسی بن جعفر ثم علی بن موسی ثم محمد بن علی  ثم علی بن محمد ثم الحسن بن علی ثم سمیّی و کنیّی حجة الله فی ارضه وبقیّته فی عباده ابن الحسن بن علی........

হে জাবির ! তারা হলেন আমার পর , আমার খলিফা ও মুসলমানদের ইমাম। তাদের প্রথম ব্যক্তি হলেন আলী ইবনে আবি তালিব , অতঃপর হাসান , অতঃপর হুসাইন , অতঃপর আলী ইবনে হুসাইন , অতঃপর মুহাম্মাদ ইবনে আলী , যিনি তৌরাতে বাক্বির বলে পরিচিত , হে জাবির ! যখন তার সাক্ষাৎ লাভ করবে , আমার পক্ষ থেকে তাকে সালাম জানাবে অতঃপর সাদিক জাফর ইবনে মুহাম্মাদ , অতঃপর মূসা ইবনে জাফর , অতঃপর আলী ইবনে মূসা , অতঃপর মুহাম্মাদ ইবনে আলী , অতঃপর আলী ইবনে মুহাম্মাদ , অতঃপর হাসান ইবনে আলী , অতঃপর আমার নাম ও কুনীয়াতধারী পৃথিবীতে আল্লাহর হুজ্জাত তার ( মনোনিত ) বান্দাগণের মধ্যে সর্বশেষ হাসান ইবনে আলী        ।১৩৫

এবং রাসূল (সা.) এর ভবিষদ্বাণী অনুসারে জাবির (রা.) হযরত ইমাম বাক্বির (আ.) পর্যন্ত জীবিত ছিলেন এবং হযরতের (সা.) সালাম তার নিকট পৌছে দিয়েছিলেন।

অপর একটি হাদীসে আবু বাসির থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,ঊলূল আমর প্রাসংগিক আয়াতটি সম্পর্কে ইমাম সাদিক (আ.)-এর নিকট প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বললেন : (আয়াতটি) আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) হাসান (আ.) ও হোসাইন (আ.)-এর সম্মানে অবতীর্ণ হয়েছে। সবিনয়ে নিবেদন করলাম,মানুষ জানতে চায় পবিত্র কোরানে আলী (আ.) ও আহলে বাইতগণকে (আ.) তাদের নাম উল্লেখ পূর্বক পরিচয় দেয়নি কেন ? তিনি বললেন : তাদেরকে বল,নামাযের যে আয়াত নাযিল হয়েছে তাতে তিন রাকাত বা চার রাকাতের কোন উল্লেখ করা হয়নি এবং মহানবীই (সা.) ঐগুলো মানুষের নিকট ব্যাখ্যা করেছিলেন। অনুরূপ যাকাত,হজ্জ ইত্যাদি সম্পর্কিত আয়াতসমূহ ও মহানবীকে (সা.) ব্যাখ্যা করতে হয়েছে এবং তিনিই এরূপ বলেছিলেন,

من کنت مولاه فعلی مولاه

আমি যার মাওলা আলীও তার মাওলা।

এছাড়াও তিনি বলেছিলেন,

اوصیکم بکتاب الله و اهل بیتی فانی سألت الله عزّوجلّ ان لا یفرق بینهما حتّی یورد هما علیّ الحوض فأعطانی ذالک

অর্থাৎ তোমাদের নিকট আল্লাহর কিতাব এবং আমার আহলে বাইতের (সান্নিধ্যে) থাকার জন্যে সুপারিশ করছি বাস্তবিকই মহীয়ান,গরীয়ান আল্লাহর কাছে এ আবেদন জানিয়েছিলাম যে,তিনি যেন কোরানকে আহলে বাইত থেকে পৃথক না করেন,যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের সাথে হাউজে কাওছারে মিলিত হয়,এবং মহান আল্লাহ আমার আবেদন গ্রহণ করেছেন। অনুরূপ বললেন :

لا تعلموهم فإنهم أعلم منكم، أنّهم لن يخرجوكم من باب هدى، ولن يدخلوكم في باب ضلال

অর্থাৎ তাদের জ্ঞান সম্পর্কে অবহিত হতে তোমরা সক্ষম নও,তারা প্রকৃতই তোমাদের থেকে অধিকতর জ্ঞাত। বস্তুতঃ তারা তোমাদেরকে কখনোই হিদায়াত থেকে বঞ্চিত করবেন না এবং পথভ্রষ্টতার দিকে ধাবিত করবেন না।

এছাড়া মহনবী (সা.) একাধিকবার (বিশেষকরে তার জীবনের অন্তিম দিন গুলোতে) বলেছিলেন :

انی تارک فیکم الثقلین کتاب الله و عترتی اهل بیتی فانّهما لن یفترقا حتّی یردا علی الحوض

বস্তুতঃ আমি তোমাদের মাঝে দু টি গুরুভার রেখে গেলাম : আল্লাহর কিতাব এবং আমার আহলে বাইত। প্রকৃতপক্ষে এতদ্ভয় পরস্পর থেকে কখনোই বিচ্ছিন্ন হবে না,যতক্ষণ পর্যন্ত না      হাউজে কাওছারে আমাদের সাথে মিলিত হয়।১৩৬

আরও বলেছিলেন :

الا انّ مثل اهل بیتی فیکم مثل سفینة نوح من رکبها نجا و من تخلّف عنها غرق

অর্থাৎ জেনে রাখ,বস্তুতঃ আমার আহলে বাইতের উদাহরণ হল নূহের তরীর মত -যে কেউ এতে আরোহণ করবে নিস্তার পাবে,আর যে কেউ একে ত্যাগ করবে নিমজ্জিত হবে।১৩৭

অনুরূপ আলী ইবনে আবি তালিবকে (আ.) উদ্দেশ্য করে মহানবী (সা.) একাধিকবার বলেছিলেন:

انت ولیّ کل مومن بعدی

তুমি হলে আমার পর সকল মু মিনের ওয়ালী১৩৮

এছাড়াও এমন অনেক হাদীস বিদ্যমান যেগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা ক্ষুদ্রপরিসরে সম্ভব নয়।১৩৯