সৃষ্টির পরশমনি

সৃষ্টির পরশমনি 0%

সৃষ্টির পরশমনি লেখক:
: মোহাম্মাদ আলী মোর্ত্তজা
প্রকাশক: বিশ্ব ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র কোম,ইরান।
বিভাগ: ইমাম মাহদী (আ.)

সৃষ্টির পরশমনি

লেখক: মুহাম্মদ মাহদী হায়েরীপুর,মাহদী ইউসুফিয়ান ও মুহাম্মদ আমীন বালাদাসতিয়ান
: মোহাম্মাদ আলী মোর্ত্তজা
প্রকাশক: বিশ্ব ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র কোম,ইরান।
বিভাগ:

ভিজিট: 20549
ডাউনলোড: 3371

পাঠকের মতামত:

সৃষ্টির পরশমনি
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 40 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 20549 / ডাউনলোড: 3371
সাইজ সাইজ সাইজ
সৃষ্টির পরশমনি

সৃষ্টির পরশমনি

লেখক:
প্রকাশক: বিশ্ব ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র কোম,ইরান।
বাংলা

চতুর্থ অধ্যায় : আবির্ভাবের সময়কাল

প্রথম ভাগ :আবির্ভাবের সময়ে বিশ্ব

পূর্বের অধ্যায়সমূহে আমরা দ্বাদশ ইমামের অদৃশ্য এবং তার দর্শন সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আল্লাহর শেষ হুজ্জাত এজন্যে অদৃশ্যে রয়েছেন যে ,প্রেক্ষাপট প্রস্তুত হওয়ার পর তিনি আবির্ভূত হবেন এবং বিশ্বকে সরাসরি হেদায়াত করবেন। অদৃশ্যকালীন সময়ে মানুষ সাঠিকভাবে আমল করত তাহলে আবির্ভাবের ক্ষেত্র অতি সত্তর প্রস্তুত হতে পারত। কিন্তু শয়তানের ও নফসের তাড়নায় ,কোরআনের শিক্ষা থেকে দূরে থাকা এবং পবিত্র ইমামদের বেলায়াত গ্রহণ না করার কারণে মানুষ পথভ্রষ্ঠ হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত অন্যায়ের ঘাঁটি তৈরী করেছে ও অন্যায়-অত্যাচারকে বৃদ্ধি করেছে। এ পথকে নির্বাচন করে তারা অতি ভয়ানক পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে। অত্যাচারে পূর্ণ পৃথিবী ,ফ্যাসাদ ও ধ্বংস ,আত্মিক ও চারিত্রিক নিরাপত্তার অভাব ,পবিত্রতা ও আধ্যাত্মিকতা বিহীন জীবন ,অন্যায়ে ভরা সমাজ এবং কর্মচারীদেরকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ইত্যাদি হচ্ছে অদৃশ্যকালীন সময়ের মানুষের কর্মকাণ্ড। যে সত্যকে বহু শতাব্দি পূর্বে পবিত্র ইমামগণ বলে গিয়েছেন।

ইমাম জা ’ ফর সাদিক (আ.) তার এক সাথীকে বলেছেন:

যখন দেখবে অন্যায়-অত্যাচার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে ,কোরআনকে ভুলে গিয়েছে এবং ইচ্ছামত তার তাফসীর হচ্ছে ,অসত্য পন্থিরা সত্যপন্থিদের উপর প্রাধান্য পেয়েছে ,ঈমানদাররা মুখ বন্ধ করে রেখেছেন ,আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন হয়েছে ,চাটুকারীতা বেড়ে গিয়েছে ,সত্যের রাস্তা খালি এবং অন্যায়ের রাস্থা ভরপুর ,হালালকে হারাম করা আর হারামকে মার্জিত মনে করা হয়েছে । অধিক ধন-সম্পদ আল্লাহর আক্রশের (ফ্যাসাদ ও নষ্টামির) পথে ব্যয় হচ্ছে ,সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে সুধ খাওয়ার প্রচলন ঘটেছে ,অবৈধ বিনোদন এত বেশী বৃদ্ধি পেয়েছে যে কেউ তার বিরোধিতা করতে পারছে না। কোরআনের হকিকত শুনতে কষ্ট পাচ্ছে অথচ বাতিলকে অতি সহজেই অনুসরণ করছে। অন্য কারো উদ্দেশ্যে আল্লাহর ঘরে হজ্জ করতে যাচ্ছে ,মানুষের হৃদয় কঠিণ হয়ে যাচ্ছে। যদি কেউ ন্যায় কাজের আদেশ ও অন্যায় কাজের নিষেধ করতে যায় তাকে বলা হয় এটা তোমার দায়িত্ব নয় ,প্রতি বছর নতুন নতুন ফ্যাসাদ ও বিদয়াতের প্রচলন ঘটছে। (যখনই দেখবে মানুষের পরিস্থিতি এমন হয়েছে) সতর্ক থাকবে এবং আল্লাহর কাছে তা থেকে মুক্তি চাইবে। (আবির্ভাব নিকটে)। 120

তবে অদৃশ্যকালীন সময়ের এ অবস্থা অধিক হলেও প্রকৃত ঈমানদার আছে যারা তাদের ঈমানের প্রতি অটল থাকবে এবং ঈমানের গণ্ডিকে রক্ষা করবে। তারা সমাজের ফ্যাসাদে নিমজ্জিত হবে না এবং নিজের ভাগ্যকে অন্যদের দুর্ভাগ্যের সাথে জোড়া লাগাবে না। তারা আল্লাহর উত্তম বান্দা এবং পবিত্র ও নূরানী ইমামদের শিয়া (অনুসারী) যাদেরকে বিভিন্ন হাদীসেও অনেক প্রশংসা করা হয়েছে। তারা নিজেরাও পবিত্রভাবে জীবন- যাপন করেছে এবং অন্যদেরকেও পবিত্রভাবে জীবন-যাপন করার জন্য আহবান করেছে । তারা জানে যে ,সৎকর্মের প্রসার ঘটলে এবং ঈমানের সুগন্ধে পরিবেশকে সুগন্ধী করলে ইমাম আবির্ভূত হবেন এবং তার সংগ্রাম ও হুকুমতের পথ সুগম হবে। কেননা ,তখনই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সম্ভব যখন ইমামের সাহায্যকারী থাকবে। এ চিন্তাধারা ঐ বাতিল চিন্তার মোকাবেলায় আনা হয়েছে যারা বলে থাকে যে ,ইমামের আবির্ভাবের জন্য অন্যায়ের প্রসার ঘটাতে হবে। এটা কি মেনে নেয়া সম্ভব যে ,ঈমানদাররা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে না এজন্যে যে ,অন্যায়ের প্রসার ঘটলে ইমাম মাহদী (আ.) আবির্ভূত হবেন ?সত্য ও ন্যায়ের প্রসার ঘটার মাধ্যমে সৎকর্মশীলদের ইমামের আবির্ভাব ত্বরান্বিত হওয়া সম্ভবপর নয় কি ?

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা মুসলমাদের উপর ফরজ এবং কখনো ও কোথাও তা থেকে দূরে থাকা সম্ভব নয়। সুতরাং আবির্ভাব ত্বরান্বিত হওয়ার জন্য কিরূপে অন্যায় ও অত্যাচারের প্রসার ঘটানো সম্ভব হতে পারে ?

এ সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেছেন:

শেষ যামানায় এমন এক দল আসবে যাদের পুরস্কার ইসলামের প্রথম যুগের উম্মতের সমপরিমাণ হবে। কেননা ,তারা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করবে এবং ফিতনা-ফ্যাসাদকারীদের সাথে সংগ্রাম করবে। 121

তাছাড়াও অসংখ্য রেওয়ায়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে পৃথিবী অন্যায়- অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে তার অর্থ এই নয় যে ,প্রতিটি মানুষই জালেম হয়ে যাবে। বরং আল্লাহ পথের পথিকরা ঠিকই সে পথে অবিচল থাকবে এবং ফযিলতের সুগন্ধ বিভিন্ন স্থান থেকে নাকে আসবে।

সুতরাং আবির্ভাবের পূর্বের পৃথিবী তিক্ত হলেও তা আবির্ভাবের সুন্দর পৃথিবীতে গিয়ে শেষ হবে। ফ্যাসাদ ও অত্যাচার থাকলেও পাশাপাশি নিজে পবিত্র থাকা এবং অন্যদেরকে সৎকর্মের দিকে আহবান করা মুসলমানদের অবশ্য কর্তব্য এবং তা ইমাম মাহদী (আ.)-এর আবির্ভাবকে ত্বরান্বিত করতে সরাসরি ভূমিকা পালন করে থাকে।

এ অধ্যায়টি ইমাম মাহ্দী তিনি বলেছেন: (আ.) -এর একটি বাণীর মাধ্যমে শেষ করছি ,কোন কিছুই আমাদের অনুসারীদের থেকে আমাদেরকে দূরে রাখে না কেবল মাত্র তাদের গোনাহ ও অসৎকর্ম ব্যতীত। 122