• শুরু
  • পূর্বের
  • 11 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 3886 / ডাউনলোড: 2556
সাইজ সাইজ সাইজ
ইমাম হোসাইন (আ.)

ইমাম হোসাইন (আ.)

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আচরণ ও শিষ্টাচার

ইমাম হোসাইন (আ.)-এর ছাপান্ন বছরের জীবনের প্রতি সংক্ষিপ্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে আমরা দেখতে পাই যে তাঁর সারাটা জীবন ধার্মিকতা ,বন্দেগী ও মোহাম্মাদী রেসালত এবং আমাদের দৃষ্টি ও উপলব্ধির বহু উর্দ্ধের বিষয়ের প্রচারের মধ্যে অতিবাহিত হয়েছে।

এখন তাঁর জীবনের বিভিন্ন অংশ থেকে অল্প কিছু আলোচনা আপনাদের সামনে পেশ করছি :

তিনি অত্যন্ত মনোযোগের সাথে নামাজ আদায় করতেন ,আল্লাহর গভীর রাথে গোপন সংলাপে রত হতেন ,কোরআন তেলাওয়াত ,দোয়া ও ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করতেন। কখনো তিনি দিবা রাত্রিতে কয়েকশ রাকাত নামাজ আদায় করতেন। 25 এমন কি তাঁর জীবনের শেষ রাত্রিতেও তিনি দোয়া প্রার্থনা থেকে বিরত থাকেন নি। আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই যে ,তিনি কারবালাতে শত্রুদের কাছ থেকে সময় ও সুযোগ চেয়েছেন যেন তাঁর মহান প্রভুর সাথে একাকী প্রার্থনায় বসতে পারেন। তিনি বলেন : আল্লাহ ভাল জানেন যে ,আমি নামাজ ,কোরআন তেলাওয়াত ,অত্যধিক দোয়া-মুনাজাত ও ইস্তিগফারকে কত ভালবাসি। 26

তিনি অনেক বার পদব্রজে কা বা গৃহে ছুটে গেছেন এবং হজব্রত পালন করেছেন। 27 গালেব আল আসাদীর দু পুত্র বুশর ও বাশির বর্ণনা করেছেন যে :

একদা আমি হজব্রত পালনের সময় জিলহজ্ব মাসের নয় তারিখ ,আরাফাত দিবসের বিকেলে আরাফাতের ময়দানে হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)-এর সাথে ছিলাম। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও বন্দেগীর হালতে তাঁবু থেকে বাইরে আসলেন। তিনি সেখানে তাঁর বেশ কিছু সাথী এবং সন্তানদের নিয়ে কা বার দিকে মুখ করে দাঁড়ালেন। তিনি একজন দুর্বল নিঃস্বের ন্যায় দু হাত আসমানের দিকে তুলে ধরে নিম্নের এ দোয়া পাঠ করেন।

সেই আল্লাহর হামদ ও প্রশংসা ,কোন কিছুই যার ইচ্ছা ও বিধান পরিবর্তন করতে পারে না এবং পারে না তাঁর দান ও দয়ার পথরোধ করতে। দয়া ও বদান্যতায় তাঁর হস্ত উন্মুক্ত এবং সব কিছু তাঁর প্রজ্ঞা ও হেকমতের মাধ্যমে সুন্দর এবং দৃঢ়তা লাভ করেছে। গোপনে কর্ম সম্পাদনকারীদের কোন কাজই তাঁর কাছে গোপন নয়। তাঁর কাছে যা রাখা হয় তা ধ্বংস হয় না। তিনিই সকলকে পুরস্কার অথবা শাস্তি প্রদানকারী ,মিতব্যয়ী ব্যক্তিদের অবস্থার সংস্কারক। তিনি দুর্বল ও অসহায়দের করুণা করে থাকেন। তিনি সকল মঙ্গল এবং পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান সমৃদ্ধ ও আলোকজ্জল কিতাব আল কোরআনের অবতীর্ণকারী । তিনি দোয়া প্রার্থনাকারীদের শ্রোতা এবং অসুবিধা ও সমস্যা দূরীকরণে একমাত্র ভরসাস্থল। তিনি সৎকর্মশীলদের মর্যাদা বৃদ্ধিকারী এবং জালেমদের আঘাতকারী। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। তাঁর কোন সমকক্ষ ও শরীক নেই। তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা ও লাতিফ (সুদক্ষ স্রষ্টা ,দয়াশীল) 28 ,সজাগ ও সর্বশক্তিমান। প্রভু আমার! আমি তোমার দিকে মুখ ফিরিয়েছি এবং তোমার প্রতিপালকত্বের সাক্ষ্য দিচ্ছি। আমি স্বীকার করছি যে তুমি আমার প্রতিপালক আর আমাকে তোমার কাছেই ফিরে যেতে হবে। আমার অস্তিত্বের পূর্বেই তুমি আমাকে নেয়ামত প্রদান করতে আরম্ভ করেছ। আমাকে তুমি মাটি থেকে সৃষ্টি করেছো...।

অতঃপর আমাকে সুস্থ ও ত্রুটিহীন দেহে তোমার পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত হেদায়েতসহ পৃথিবীতে এনেছো। আমাকে শিশু অবস্থায় তুমি হেফাজত করেছো এবং বিভিন্ন খাদ্যের মধ্যে আমার জন্যে সুপেয় দুধের ব্যবস্থা করেছো। আমার লালন-পালনকারীদের অন্তরে তুমি আমার মহব্বত ঢেলে দিয়েছো এবং আমার প্রশিক্ষণের জন্যে তুমি সদয় মায়ের ব্যবস্থা করেছো। আমাকে তুমি জ্বিনের গোপন অনিষ্ট ও অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছো আর অপূর্ণতা এবং ত্রুটি থেকে হেফাজতে রেখেছো। আর তাই তুমি সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী। হে মহিমাময় ,অতিশয় দয়ালু। কথা বলার দিন পর্যন্ত তুমি আমাকে তোমার পরিপূর্ণ নেয়ামত দানে ধন্য করেছো এবং আমার অস্তিত্ব পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তুমি সর্বদা আমাকে লালন করেছো। ইলহামের (বাতেনী জ্ঞানের) মাধ্যমে আমাকে তোমার পরিচয় দান করে আমার প্রতি তোমার হুজ্জাত (দলিল) পরিপূর্ণ করেছো। তুমি তোমার আশ্চর্যজনক হেকমতের মাধ্যমে আমাকে বিস্মিত করেছো এবং আসমান ও যমীনে সৃষ্ট তোমার বিরল সৃষ্টির মাধ্যমে আমাকে জাগ্রত করেছো। তুমি আমাকে তোমার শোকর আদায় এবং তোমার স্মরণ করার জন্যে সজাগ করেছো। তোমার অনুসরণ ও ইবাদত আমার জন্যে ফরজ করেছো। তোমার নবী রাসূলগণের আনীত বিষয়সমূহ সম্পর্কে আমাকে জ্ঞান দান করেছো। তুমি যে কাজে সন্তুষ্ট হও সে কাজ আমার জন্যে সহজ করে দিয়েছো। তুমি এ সকল পর্যায়ে তোমার দয়া ও সাহায্য দ্বারা আমাকে ধন্য করেছো।

ইলাহ্ (উপাস্য) আমার ,তুমি আমাকে বিভিন্ন প্রকার নেয়ামত না দিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারো নি। তোমার চিরস্থায়ী দয়া ও মহান দানের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম খাবার ,পানীয় দ্রব্য ও পরিধেয় বস্ত্রের ব্যবস্থা করেছো।

যখন তুমি তোমার সকল প্রকার অনুগ্রহ পরিপূর্ণভাবে দান করেছো আর বালা-মুসিবত দূর করেছো তখন আমার অজ্ঞতা এবং ঔদ্ধত্য তোমাকে তোমার নৈকট্যের দিকে আমাকে পরিচালিত করতে বাধা দেয়নি বরং যা তোমার নৈকট্য লাভের জন্যে প্রয়োজন তা দান করে সফলতার প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছো।

হে আমার রব! তোমার কয়টা অনুগ্রহ গণনা করবো এবং স্মরণ করবো ?তোমার কোন দানের জন্যে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবো ?যখন তোমার দান কোন গণনাকারীই গণনা করে শেষ করতে পারবে না এবং সকল হিসেবী সে ব্যাপারে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জনে ব্যর্থ। তুমি আমার কাছ থেকে যে সকল বিপদ ও কষ্ট দূর করেছো তা আমার নিকট প্রকাশিত তোমার  দেয়া নেয়ামত ও সুস্থতার চেয়েও অনেক গুণ বেশী।

প্রভু আমার! আমি আমার ঈমানের সত্যতার সাক্ষী দিয়ে বলছি যদি ধরে নেয়া হয় আমি সকল সময় এবং সকল যুগে জীবিত থাকবো আর তোমার একটা নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের চেষ্টা করবো তারপরও তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। তুমি যদি আমাকে অনুগ্রহ কর তাহলেই শুধু সম্ভব ,কিন্তু সেক্ষেত্রে আবার ঐ অনুগ্রহের শোকর আদায় প্রয়োজন হয়ে পড়বে...।

হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এমন অবস্থা দান কর যে আমি যেন তোমাকে এমন ভয় করি যে মনে হয় আমি তোমাকে দেখছি। আমাকে পরহেজগারিতা ও তাকওয়া দানে সৌভাগ্যবান কর এবং পাপ ও গুনাহ্ এবং তোমার নির্দেশ অমান্য করার কারণে আমাকে হতভাগ্য করো না।

হে আমার ইলাহ! তুমি আমার অস্তিত্বে অমুখাপেক্ষিতা ,আমার অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস ,আমার কাজে ও আমলে নিষ্ঠা ও একাগ্রতা ,নুর ও আলো আমার নয়নে ,ধর্মের ক্ষেত্রে অর্ন্তদৃষ্টি ও সচেতনতা দাও এবং আমাকে আমার দেহের অঙ্গ-প্রতঙ্গ দ্বারা উপকৃত কর।

হে আমার উপাস্য ,আমি তোমার অনুগ্রহ ও মহামূল্যবান দানসমূহকে গণনা করতে চাইলেও গণনা করতে পারবো না।

হে আমার প্রভ! তুমিই তো আমাকে দয়া করেছো। তুমিই তো অনুগ্রহ করেছো। তুমিই তো করুণা করেছো। তুমিই তো আমার সাথে সম্মানজনক ব্যবহার করেছো। তুমিই তো তোমার দান পরিপূর্ণতায় পৌছিয়েছো। তুমিই তো রুজি দান করেছো। তুমিই তো ভাল কাজের তৌফিক দিয়েছো। তুমিই তো আমাকে প্রচুর দান করেছো। তুমিই তো আমার প্রয়োজন মিটিয়েছো। তুমিই তো আমাকে পুঁজি দান করেছো। তুমিই তো আমাকে আশ্রয় দিয়েছো। তুমিই তো আমার দুশ্চিন্তা দূর করেছো। তুমিই তো আমাদের হেদায়াত করেছো। তুমিই তো আমাকে বিপদ-আপদ ও পদস্খলন থেকে রক্ষা করেছো। তুমিই তো আমার অন্যায়কে ঢেকে রেখেছো। তুমিই তো আমাদেরকে ক্ষমা করেছো। তুমিই তো আমাদেরকে মাফ করে দিয়েছো। তুমিই তো আমাদেরকে সাহায্য করেছো। তুমিই তো আমাদেরকে শক্তি দিয়েছো। তুমিই তো আমাদেরকে শক্তি দিয়ে সাহায্য করেছো। তুমিই তো আমাদের রোগ মুক্তি দান করেছো। তুমিই তো আমাদের সুস্বাস্থ্য দান করেছো। তুমিই তো আমাদের সম্মানিত করেছো।

تَبَارَكْتَ رَبِّى وَ تَعَالَيْتَ فَلَكَ اْلْحَمْدُ دَائِمًا وَ لَكَ اْلْشُّكْرُ وَاصِبًا

হে আমার প্রতিপালক ,মহত্ত্ব ও বিরাটত্ব শুধু তোমারই ভূষণ। সকল প্রশংসা সর্বদা তোমারই জন্যে এবং সকল শোকর সকল ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তোমারি।

হে আমার সৃষ্টিকর্তা! আমি আমার অবাধ্যতার স্বীকার করছি ,তুমি আমাকে ক্ষমা কর এবং আমার সকল পাপ মোচন করে দাও। 29

সেদিন হোসাইন ইবন আলী এই দোয়া পাঠে আমাদের অন্তরগুলোকে এমনভাবে আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট করেছিলেন যে ,অগণিত জনতা ক্রন্দনে ফেটে পড়ে। তারা সকলে ইমামের দোয়ার সাথে সাথে আমিন বলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলো।

ইবনে আসির উসদুল গাবা গ্রন্থে লিখেন :

كَانَ اْلْحُسَيْنُ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ فَاضِلاً كَثِيْرَ اْلْصُّوْمِ وَ اْلْصَّلاَةِ وَ اْلْحَجِّ وَ اْلْصَّدَقَةِ وَ أَفْعَالِ اْلْخِيْرِ جَمِيْعِهَا

অর্থাৎ হোসাইন (রা.) প্রচুর রোজা রাখতেন ,নামাজ আদায় করতেন ,হজ্বে গমন করতেন ,দান করতেন এবং সকল ভাল কাজ তিনি করতেন। 30

হযরত হোসাইন ইবনে আলীর ব্যক্তিত্ব এতই উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ,আড়ম্বরপূর্ণ এবং মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল যে ,যখন তিনি তাঁর ভাই ইমাম হাসান (আ.)-এর সাথে পদব্রজে হজ্বে গমন করতেন তখন সকল মহান ব্যক্তিবর্গ এবং ইসলামী ব্যক্তিত্বসমূহ তাদের সম্মানে বাহন থেকে নিচে নেমে আসতেন আর তাদের সাথে পথ চলা শুরু করতেন। 31

যে কারণে সমাজের লোকেরা তাঁকে সম্মানের চোখে দেখতো তা হলো যে তিনি সাধারণ জনগনের মাঝে বসবাস করতেন। তিনি কখনো সমাজ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখেন নি। অন্যান্য সকলের মত সমাজের সুখ দুঃখের সাথে তিনি শরীক ছিলেন। আর এগুলোর চেয়ে ঊর্ধ্বে ছিল আল্লাহর প্রতি তাঁর দৃঢ় ঈমান যা তাকে একজন জনদরদী মানুষে পরিণত করেছিল। আর তাই যদি না হয় তাহলে তার তো কোন চাকচিক্যময় প্রাসাদ ছিল না ,ছিল না কোন বাহিনী ও পাহারাদার। নিম্নের রেওয়ায়েতটি তার সামাজিক নৈতিকতারই একটা উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত ।

একদা তিনি একটি এলাকা অতিক্রম করছিলেন। সেখানে একদল ফকির তাদের চাদর বিছিয়ে তার উপর বসে তাদের শুকনো রুটি খাচ্ছিল। ইমাম হোসাইন (আ.) তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা ইমামকে তাদের সাথে শরীক হওয়ার জন্য আহ্বান জানালো। ইমাম তাদের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন। তিনি তাদের সাথে খাবার খেলেন। অতঃপর বলেন :

) إِنَّ اللهَ لاَ يُحِبُّ اْلْمُتَكَبِّرِيْنَ (

অর্থাৎ আল্লাহ অহংকারীদের ভালবাসেন না। 32

তারপর তিনি বলেন : আমি আপনাদের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেছি। এখন আপনারা আমার দাওয়াত গ্রহণ করুন। তারাও ইমামের দাওয়াত কবুল করে ইমামের সাথে বাড়ীতে যান । ইমাম নির্দেশ দিলেন বাড়ীতে যা আছে তা যেন মেহমানদের সামনে উপস্থিত করা হয়। 33 আর এভাবে তাদের জন্যে তিনি উষ্ণ আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। তিনি তার নিজ কর্ম দ্বারা সমাজকে বিনয় ও মানব প্রেমের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।

শুআইব ইবনে আবদুর রহমান খুযায়ী বলেন :

হোসাইন ইবনে আলী শাহাদাত বরণ করলে জনগণ তাঁর পবিত্র পিঠে কড়ার দাগ দেখতে পায়। এর কারণ ইমাম যয়নুল আবেদীনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন : কড়াগুলো ঐ সমস্ত খাদ্যের বস্তার ছাপ যা আমার পিতা রাত্রিতে কাঁধে করে বিধবা মহিলা ও ইয়াতিম শিশুদের ঘরে পৌঁছে দিতেন। 34

মজলুম ও অসহায় মানুষের পক্ষে কর্তব্য পালনে ইমাম হোসাইনের অতীব আগ্রহ ছিল। এর পরিচয় আমরা আরিনাব ও তার স্বামী আবদুল্লাহ্ বিন সালামের ঘটনা থেকে বুঝতে পারি :

ইয়াযিদ যুবরাজের পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে ,যদিওবা যৌন কামনা চরিতার্থ করণের সব ধরনের উপকরণ যেমন অর্থ ,পদবী ,নর্তকী ইত্যাদি তার করায়ত্বে ছিল তদুপরি তার নাপাক ও ইতর চক্ষু এক সতী-সাধ্বী গৃহ বধুর উপর পতিত হয়েছিল।

এই অশ্লীল ও লজ্জাকর আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে যেখানে তার পিতা মুয়াবিয়ার অত্যন্ত শক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের প্রয়োজন ছিল সেখানে সে ধোকাবাজী ও মিথ্যার মাধ্যমে একজন মুসলমান সতী নারীকে তার স্বামীর ঘর থেকে বের করে তার পুত্র ইয়াযিদের পাপ-জর্জরিত বিছানাতে টেনে আনার সকল প্রাথমিক উপকরণের ব্যবস্থা করে। হোসাইন ইবনে আলী (আ.) এই সংবাদ শুনতে পেয়ে উক্ত অশোভন সিদ্ধান্তের মোকাবিলায় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে যান। তিনি মুয়াবিয়ার কুচক্রকে নস্যাৎ করে দেন। তিনি ইসলামী আইন অনুযায়ী সেই মহিলাকে তার স্বামী আবদুল্লাহ বিন সালামের কাছে ফিরিয়ে দেন এবং একজন সৎ ও মুসলমান পরিবার থেকে ইয়াযিদের সীমালংঘনকারী হস্ত কর্তন করে দেন। আর এই কাজের মাধ্যমে তিনি তার খোদায়ী সৎসাহস ও তীব্র আত্মসম্মানবোধের পরিচয় ফুটিয়ে তুলেছেন এবং মুসলিম সমাজের সম্ভ্রম রক্ষায় তার একান্ত আগ্রহের বিষয়টাই ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর এহেন আচরণ ও পদক্ষেপ ইতিহাসের পাতায় হযরত আলী (আ.)-এর সন্তানদের গৌরবময় চরিত্র এবং বনি উমাইয়ার হীনতা ও অত্যাচারী চরিত্রের নিকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে চিরকাল সাক্ষ্য হয়ে থাকবে। 35

জনাব আলায়েলী তার সুমুয়ুল মানী গ্রন্থে এরূপ উল্লেখ করেছেন : আমরা মানব জাতির ইতিহাসে এমন সব মহামানবের সন্ধান পাই যারা প্রত্যেকে এক একটি ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী নিজেদের মহত্ব ও বিশালতার পরিচয় দিয়েছেন। একজন সাহসিকতার ক্ষেত্রে অন্যজন যুহদ ও দুনিয়া ত্যাগের ক্ষেত্রে আবার আরেকজন বদান্যতার ক্ষেত্রে আবার কেউ বা ভিন্ন কিছু কিন্তু ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মহত্ব ও মর্যাদা এতটা প্রসারিত যে ,যার প্রতিটি দিকই এতটা অসীম ও অনন্ত যে ইতিহাসের সকল অধ্যায়গুলোতেই শীর্ষস্থান দখল করে আছে। দৃশ্যতঃ মনে হয় তিনি সকল উচ্চ মর্যাদা ও শীর্ষস্থানের সমষ্টি। 36

হ্যাঁ ,যে ব্যক্তি মুহাম্মদী নবুওয়াতের সীমাহীনতার উত্তরাধিকারী ,যে ব্যক্তি হযরত আলী (আ.)-এর ন্যায় পিতার বিচার ও মহানুভবতার সুউচ্চ মর্যাদার ওয়ারিস এবং যে ব্যক্তি হযরত ফাতেমা (আ.)-এর ন্যায় মাতার মর্যাদার আলোক উজ্জ্বলতার উত্তরাধিকারী সে কি করে মানবতার মহত্বের উচ্চতর ও শীর্ষ উদাহরণ এবং খোদায়ী বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রকাশ না হয়ে পারেন। তাঁর উপর আমাদের অসংখ্য দরুদ বর্ষিত হোক। এমন ব্যক্তিকেই আমাদের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।

ইমাম হোসাইনের জীবন পদ্ধতি ,তাঁর শাহাদাত ,কথার ধরন ও আচরণগত বিভিন্ন দিক যে শুধুমাত্র ইতিহাসের একজন মহাপুরুষেরই উদাহরণ পেশ করে তাই নয় বরং তাঁর সম্পূর্ণ অস্তিত্বই আত্মসম্মানবোধ ,মহানুভবতা ,ত্যাগ-তিতিক্ষা ও উৎসর্গী মনোভাব এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা ও আল্লাহ্ প্রেমের একটি পরিপূর্ণ প্রতিবিম্ব। তিনি স্বয়ং একাই অন্তঃকরণসমূহকে উর্ধ্বলোকের দিকে নির্দেশনা দিয়ে নিয়ে যেতে পারেন এবং পারেন মানবতার সৌভাগ্যের নিশ্চয়তা দান করতে ।

তাঁর জীবন এবং মৃত্যু (শাহাদাত) সব কিছুই মানব জাতির মর্যাদা ও আধ্যাত্মিকতাকে সমুন্নত করেছে।

  তাঁর পবিত্র মুখ থেকে নিঃসৃত জীবন গড়ার হৃদয়গ্রাহী কিছু বাণী আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।

এক: তিনি বলেন  :

أَلْنَّاسُ عَبِيْدُ اْلْدُّنْيَا وَاْلْدِيْنُ لَعِقٌ عَلَى أَلْسِنَتِهِمْ يَحُوْطُوْنَهُ مَا دَرَّتْ مَعَايِشُهُمْ فَإِذَا مُحِّصُوْا بِالْبَلاَءِ قَلَّ اْلْدَّيَّانُوْنَ

অর্থাৎ জনসাধারণ দুনিয়ার গোলাম। ধর্ম তাদের জিহ্বার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা অনুভব করবে যে দীনচর্চা তাদের জীবনে কোন ক্ষতি বয়ে আনবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তারা দীনের চারপাশে ঘুরাফেরা করবে। কিন্তু যখন তারা কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হয় তখন খুব কম সংখ্যকই দীনের পথে অবিচল থাকে। 37

দুই : ইমাম হোসাইন (আ.) তাঁর প্রিয় পুত্র ইমাম যয়নুল আবেদীনকে বলেন :

 يَا بُنَىَّ إِيَّاكَ وَ ظُلْمَ مَنْ لاَ يَجِدُ عَلَيْكَ نَاصِرًا إِلاَّ اللهَ جَلَّ وَ عَزَّ

হে বৎস! যে ব্যক্তির আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সাহায্যকারী নেই তার উপর জুলুম করা থেকে বিরত থাকো। আল্লাহ্ এ ধরনের মজলুমের ফরিয়াদ অতি শীঘ্রই গ্রহণ করে থাকেন। 38

তিন : একদা জনৈক ব্যক্তি ইমামের কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গল ও কল্যাণ রয়েছে এমন কাজ সম্পর্কে লিখার জন্যে আর্জি পেশ করলে তিনি উত্তরে লিখেন :

 بِسْمِ اللهِ اْلْرَّحْمَانِ اْلْرَّحِيْمِ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ مَنْ طَلَبَ رَضِىَ اللهِ بِسَخَطِ اْلْنَّاسِ كَفَاهُ اللهُ أُمُوْرَ اْلْنَّاسِ وَ مَنْ طَلَبَ رَضِىَ اْلْنَّاسِ بِسَخَطِ اللهِ وَكَلَهُ اللهُ إِلَى اْلْنَّاسِ وَاْلْسَّلاَمُ

অর্থাৎ আল্লাহর নামে ,যিনি অতিশয় দয়ালু ও মেহেরবান। তারপর এই যে ,যে ব্যক্তি মানুষের ক্রোধের প্রতি ভ্রক্ষেপ না করে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় কাজ করে যায় আল্লাহ মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট কার্যাবলীর ব্যাপারে তার সকল সমস্যার সমাধান করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি মানুষকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে আল্লাহকে রাগাম্বিত করে তোলে আল্লাহ্ তাকে মানুষের প্রতিই ছেড়ে দেন ,ওয়াসসালাম। 39

চার : জনৈক ব্যক্তি ইমাম হোসাইনের কাছে বলল , হে আল্লাহর রাসূলের সন্তান! আমি গুনাহর মধ্যে নিমজ্জিত। আমার এ অবাধ্যতা থেকে পালানোর কোন পথ নেই। আমাকে আপনি উপদেশ দিন। তখন ইমাম বলেন :

إِفْعَلْ خَمْسَةَ أَشْيآءَ وَ أَذْنِبْ مَا شِئْتَ :

فَأَوَّلُ ذَلِكَ : لاَ تَأْكُلْ رِزْقَ اللهِ وَاْذْنِبْ مَا شِئْتَ

وَاْلْثَّانِى : أُخْرُجْ مِنْ وِلاَيَةِ اللهِ وَاْذْنِبْ مَا شِئْتَ

وَاْلْثَّالِثُ : اُطْلُبْ مَوْضِعًا لاَ يَرَاكَ اللهُ وَاْذْنِبْ مَا شِئْتَ

وَاْلْرَّابِعُ : إِذَا جَآءَ مَلَكُ اْلْمَوْتِ لِيَقْبِضَ رَوْحَكَ فَادْفَعْهُ عَنْ نَفْسِكَ وَاْذْنِتْ مَا شِئْتَ

وَاْلْخَامِسُ : إِذَا  أَدْخَلَكَ  مَالِكٌ  فِىْ  اْلْنَّارِ  فَلآ  تَدْخُلْ فِىْاْلْنَّارِ وَاْذْنِبْ مَا شِئْتَ

অর্থাৎ পাঁচটি কাজ যদি করতে পার তবে তুমি যত ইচ্ছা পাপ করতে পার।

প্রথমটি হচ্ছে : আল্লাহর রিযিক ভক্ষণ করো না অতঃপর যত খুশী গোনাহ্ করো ।

দ্বিতীয় : আল্লাহর কর্তৃত্বের সীমা থেকে বেরিয়ে যাও তারপর যত পার গোনাহ্ কর।

তৃতীয় : এমন স্থানে চলে যাও যেখানে আল্লাহ্ তোমাকে দেখবেন না ,অতঃপর যত পার গোনাহ্ কর।

চতুর্থ : যখন মৃত্যুর ফেরেশতা তোমার রুহ্ কবজ করতে আসবে তখন যদি তুমি নিজেকে রক্ষা করতে পার তাহলে যত খুশী গোনাহ  কর।

পঞ্চম : যখন আজাবের ফেরেশতা তোমাকে আগুনে নিক্ষেপ করবে তখন যদি তা থেকে বাচঁতে পার তাহলে যত ইচ্ছা পাপ করে যাও। 40

পাঁচ :   ইমাম  হোসাইন  (আ.)  বলেছেন :

يَا اْبْنَ آدَمَ إِنَّمَا أَنْتَ أَيَّامٌ كُلَّمَا  مُضِىَ يَوْمٌ ذَهَبَ بَعْضُكَ

অর্থাৎ হে মানুষ ,তোমার পুঁজি তোমার আয়ুষ্কাল। তোমার আয়ু থেকে যতদিন চলে যাচ্ছে ততই তোমার মূলধন সমাপ্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে। 41

ছয় :

قِيْلَ لِلْحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ (ع) : كَيْفَ أَصْبَحْتَ يَا اْبْنَ رَسُوْلِ اللهِ؟ قَالَ: أَصْبَحْتُ وَ لِىَ رَبِّى فَوْقِى, وَ اْلْنَّارُ أَمَامِى , وَ اْلْمَوْتُ يَطْلُبُنِى , وَ اْلْحِسَابُ مُحْدِقٌ بِى , وَ أَنَا مُرْتَهِنٌ بِعَمَلِى , لاَ أَجِدُ مَا أُحِبُّ , وَ لاَ أَدْفَعُ مَا أَكْرَهُ , وَاْلأُمُوْرُ بِيَدِ غَيْرِى , فَإِنْ شَآءَ عَذَّبَنِى وَ إِنْ شَآءَ عَفَا عَنِّى , فَأَىُّ فَقِيْرٍ أَفْقَرُ مِنِّى؟

ইমাম হোসাইন (আ.) -কে প্রশ্ন করা হলো : রাত্রি কেমন কাটালেন ?তিনি উত্তরে বললেন : আমি এমন অবস্থায় রাত কাটিয়েছে যখন আমার রব (প্রতিপালক) আমার কাজ-কর্মের উপর সর্বক্ষন নজর রাখছেন ,যখন জাহান্নামের আগুন আমাকে ধাওয়া করে চলছে এবং মৃত্যু হাতছানি দিয়ে ডাকছে এবং হিসেব-নিকেশ (পৃথিবীতে এবং কিয়ামতের দিবসের জন্যে) আমাকে ঘিরে রেখেছে আর এভাবে আমি আমার কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করবো। এরকমটি নয় যে ,সব কিছু আমার পছন্দ অনুসারে আমার সামনে আসবে আর যা কিছু অপছন্দ করি তা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো। কেননা সকল কিছুর পরিচালনা তার হাতে। তিনি যদি চান আমাকে আযাব দিতে পারেন। আবার যদি চান ক্ষমা করে দিতে পারেন। সুতরাং আমার চেয়ে বড় অভাবী কে হতে পারে ? 42

সাত :   ইমাম বলেন :

إِنَّ قَوْمًا عَبَدُوْا اللهَ رَغْبَةً فَتِلْكَ عِبَادَةُ اْلْتُّجَّارِ وَ إِنَّ قَوْمًا عَبَدُوْا اللهَ رَهْبَةً فَتِلْكَ عِبَادَةُ اْلْعَبِيْدِ وَ إِنَّ  قَوْمًا عَبَدُوْا اللهَ شُكْرًا فَتِلْكَ عِبَادَةُ اْلأَحْرَارِ وَ هِىَ أَفْضَلُ اْلْعِبَادَةِ

একদল জান্নাতের লোভে আল্লাহর ইবাদত করে থাকে। তাদের ইবাদত ব্যবসায়িক ইবাদত। অন্য একদল লোক জাহান্নামের ভয়ে ইবাদত করে থাকে। তাদের ইবাদত দাসত্বের ইবাদত। অপর একদল আল্লাহর শোকর আদায়ের লক্ষ্যে ইবাদত করে থাকে। তাদের ইবাদত মুক্ত মানুষের ইবাদত। এটাই সর্বত্তোম ইবাদত। 43

আট :   ইমাম বলেন :

مَا أَخَذَ اللهُ طَاقَةَ أَحَدٍ إِلاَّ وَضَعَ عَنْهُ طَاعَتَهُ , وَ لاَ أَخَذَ قُدْرَتَهُ إِلاَّ وَضَعَ عَنْهُ كُلْفَتَهُ

যদি আল্লাহ কারো সাধ্যকে সীমিত করেন তবে তাঁর আনুগত্যের সীমাকেও সীমাবদ্ধ করে দেন এবং যদি কারো শক্তিকে হ্রাস করেন তবে তার অবশ্য করণীয় বিষয়সমূহেও বিশেষ ছাড় দেন অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যক্তির সাধ্য অনুযায়ী আনুগত্য নির্ধারণ করেন এবং শক্তি অনুযায়ী দায়িত্ব আরোপ করেন। 44

অর ্থাৎ আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে তার শক্তি ও সামর্থ অনুযায়ী কর্তব্য দিয়ে থাকেন ,সাধ্যের অতীত কোন কিছু কারো উপর চাপিয়ে দেন না। যেমনি করে কুরআনুল কারিমে আল্লাহ্ বলেন :

) لا َ يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا (

অর্থাৎ আল্লাহ্ সাধ্যের অতীত কোন ব্যক্তির উপর দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না।

নয় : ইমাম বলেন :

لَيْسَ لِأَنْفُسِكُمْ ثَمَنٌ إِلاَّ اْلْجَنَّةَ فَلاَ تَبِيْعُوْهَا بِغَيْرِهَا فَإِنَّهُ مَنْ رَضِىَ مِنَ اللهِ بِاْلْدُّنْيَا فَقَدْ رَضِىَ بِاْلْخَسِيْسِ

জান্নাত ব্যতীত অন্য কিছুতে তোমাদের কোন মূল্য হয় না। সুতরাং জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুর বিনিময়ে নিজেকে বিক্রি করো না। যে ব্যক্তি দুনিয়া পেয়েই সন্তুষ্ট হয়ে যায় সে সর্বনিকৃষ্ট জিনিস নিয়েই সন্তুষ্ট হয়। 45

দশ : ইমাম বলেন :

لاَ يُكْمَلُ اْلْعَقْلُ إِلاَّ بِإِتِّبَاعِ اْلْحَقِّ

সত্যের অনুসরণ ব্যতীত আকলের (বুদ্ধিবৃত্তি) পরিপূর্ণতা আসে না। 46

এগার : ইমাম বলেন :

شُكْرُكَ لِنِعْمَةٍ سَالِغَةٍ يَقْتَضِى نِعْمَةً آنِفَةً

অতীত অনুগ্রহের কৃতজ্ঞতা আল্লাহর পক্ষ থেকে নতুন নেয়ামত বয়ে আনে। 47

বার : ইমাম বলেন :

لاَ تَأْمَنْ إِلاَّ مَنْ خَافَ اللهُ تَعَالَى

যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় পায় তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিশ্বাস করো না। 48

তের :

قِيْلَ لَهُ مَا اْلْفَضْلُ ؟ قَالَ عَلَيْهِ اْلْسَّلاَمُ : مِلْكُ اْلْلِسَانِ وَ بَذْلُ اْلإِحْسَانِ

ইমামকে প্রশ্ন করা হলো যে মর্যাদা কিসে হয় ? তিনি বলেন : জিহ্বার মালিক হলে (অর্থাৎ যে কথায় আল্লাহ অসন্তুষ্ট হবেন সে কথা থেকে বিরত থাকা) এবং দয়া পরবশ হলে (অর্থাৎ আল্লাহর বান্দাদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ করলে)। 49