রাসূলুল্লাহর (সা.) আহলে বাইত ও বিবিগণ

রাসূলুল্লাহর (সা.) আহলে বাইত  ও  বিবিগণ 0%

রাসূলুল্লাহর (সা.) আহলে বাইত  ও  বিবিগণ লেখক:
প্রকাশক: -
বিভাগ: ইতিহাস

রাসূলুল্লাহর (সা.) আহলে বাইত  ও  বিবিগণ

লেখক: নূর হোসেন মজিদী
প্রকাশক: -
বিভাগ:

ভিজিট: 12572
ডাউনলোড: 2635

পাঠকের মতামত:

বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 22 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 12572 / ডাউনলোড: 2635
সাইজ সাইজ সাইজ
রাসূলুল্লাহর (সা.) আহলে বাইত  ও  বিবিগণ

রাসূলুল্লাহর (সা.) আহলে বাইত ও বিবিগণ

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

আজকের করণীয়

ইসলামের দৃষ্টিতে আজকের দিনে মুসলমানদের দ্বীনী সমস্যাবলীকে তিনটি সমস্যার মধ্যে সমন্বিত করা যায় ;তাদের অন্যান্য পার্থিব ও অপার্থিব সমস্যাবলী এ তিনটির কোনোটি না কোনোটির আওতাভুক্ত এবং উক্ত তিনটি সমস্যার সমাধান হলে অন্যান্য সমস্যার সমাধানও খুব সহজেই সম্ভব হবে । এ তিনটি সমস্যা হচ্ছে আক্বাএদের সমস্যা ,ফিক্বহী সমস্যা এবং নেতৃত্ব ও শাসন- কর্তৃত্বের সমস্যা ।

ইসলাম তার মৌলিক আক্বাএদের ( اصول دین ) ক্ষেত্রে কোনোরূপ অন্ধ বিশ্বাসকে প্রশ্রয় দেয় নি - যা বর্তমানে মুসলিম উম্মাহকে গ্রাস করে নিয়েছে । বরং ইসলাম তার মৌলিক আক্বাএদের তিনটি বিষয়কে অর্থাৎ তাওহীদ ,আখেরাত ও রিসালাতকে বিশ্বের সকল মানুষের জন্য সমানভাবে গ্রহণীয় সর্বজনীন মানদণ্ড বিচারবুদ্ধি ( عقل )-এর ওপর ভিত্তিশীল করেছে - যাতে কারো জন্য নিজ নিজ অন্ধ বিশ্বাসের ওপর অটল থাকার পক্ষে কোনো দলীল না থাকে ।

আল্লাহ্ তা ‘ আলা কোরআন মজীদে বার বার আক্বল্-এর আশ্রয় গ্রহণের জন্য সকল মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবং যারা আক্বল্-এর আশ্রয় গ্রহণ করে না তাদেরকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন । আল্লাহ্ তা ‘ আলা স্বীয় অস্তিত্ব ও তাওহীদ ,আখেরাত এবং নবুওয়াতে মুহাম্মাদী (সা.) ও কোরআন মজীদের ঐশী গ্রন্থ হওয়ার সপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন । অতএব ,মুসলমানদেরকে ইসলামের উছূলে আক্বাএদকে আক্বলী দলীলের ভিত্তিতে নতুন করে জানতে ও গ্রহণ করতে হবে এবং অমুসলিমদেরকে এরই ভিত্তিতে ইসলামের দিকে আহ্বান করতে হবে ।

অতঃপর আক্বাএদের বিস্তারিত বিষয়াদির ক্ষেত্রে কোরআন মজীদকে ও তার সহায়ক ব্যাখ্যাকারী শক্তি হিসেবে আক্বল্-কে এবং মুতাওয়াতির হাদীছ সমূহ ও ইজমাএ উম্মাহকে (প্রথম যুগের মুসলমানদের মধ্যকার মতৈক্যকে ,কোনো ফির্কাহ্ বা মাযহাব বিশেষের ইজমাকে নয়) গ্রহণ করতে হবে । হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর সর্বশেষ নবী হওয়া ,কোরআন মজীদের সর্বশেষ এবং একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ও সংরক্ষিত ঐশী কিতাব হওয়া ,আর রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর স্থলাভিষিক্ততার বিষয়গুলো এ সব সূত্র থেকেই অকাট্যভাবে পাওয়া যায় ।

বলা বাহুল্য যে , আক্বাএদের মূল বিষয় সমূহ ও শাখা-প্রশাখা সমূহ এবং মূল ও গুরুত্বপূর্ণ ফিক্বহী জিজ্ঞাসাবলীর জবাব অর্থাৎ ফরয ও হারাম সম্পর্কিত বিষয়গুলো উপরোক্ত চারটি মৌলিক দ্বীনী সূত্র থেকেই পাওয়া যায় ;অতঃপর উপরোক্ত চার সূত্রের কোনোটির সাথে সাংঘর্ষিক না হওয়া সাপেক্ষে গৌণ (মুস্তাহাব্ ও মাকরূহ) এবং প্রায়োগিক বিষয়াদিতে খবরে ওয়াহেদ হাদীছ গ্রহণযোগ্য । সুতরাং এগুলোর ও এ নীতির ভিত্তিতে ইজতিহাদকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং যে সব ফির্কাহ্ ও মাযহাব ইজতিহাদের দরযা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করে তাদেরকে সে দরযা পুনরায় খুলে দিতে হবে । কারণ ,ইসলামে ইজতিহাদের বৈধতা থাকলে - যার বৈধতার ব্যাপারে সকলেই একমত - তার দরযা কেউ কখনো বন্ধ করতে পারে না । বিশেষ করে কোরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াত থেকে মুসলিম সমাজে ইজতিহাদের অস্তিত্ব থাকা ফরযে কেফায়ী হিসেবে প্রমাণিত হয় ।

আল্লাহ্ তা ‘ আলা এরশাদ করেন :

) وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنْفِرُوا كَافَّةً فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ (

কেন এমন হলো না যে , তাদের ( মু মিনদের ) প্রতিটি গোষ্ঠীর মধ্য থেকে কতক লোক বেরিয়ে পড়বে এবং দ্বীনের গভীর জ্ঞান অর্জনের পর যখন স্বীয় ক্বওমের কাছে ফিরে যাবে তখন তাদেরকে সতর্ক করবে যাতে তারা ( আল্লাহর ) নাফরমানী থেকে বেঁচে থাকে । ” ( সূরা আত্ - তাওবাহ্ : 122 ) 84

অন্যদিকে যাদের মধ্যে ইজতিহাদ অব্যাহত রয়েছে তাদেরকে পূর্ব থেকে চলে আসা ইজতিহাদের মূলনীতি ও জ্ঞানসূত্রসমূহ সম্পর্কে সব সময়ই এ কথা মনে রাখতে হবে যে , ছ্বাহাবীগণ সহ অতীতের মনীষীগণের মধ্যেও ভুল ও দুর্বলতা থাকতে পারে । বিশেষ করে তাঁদের কারো কোনো মত যদি কোরআন মজীদের কোনো আয়াতের সাথে বা হযরত রাসূলে আকরাম ( সা .)- এর মত বলে ইয়াক্বীন সৃষ্টি হয় এমন কোনো মতের সাথে সাংঘর্ষিক হয় সে ক্ষেত্রে কিছুতেই তাঁর সে মত গ্রহণযোগ্য হতে পারে না ।

এখানে আরো উল্লেখ্য যে , ইজতিহাদের ক্ষেত্রে ক্বিয়াস নিয়ে বিতর্ক আছে । এ প্রসঙ্গে অনস্বীকার্য যে , কোরআন ও সুন্নাতে রাসূল ( সা .)- এর মোকাবিলায় ক্বিয়াস - এর কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না । তবে এর বাইরে ক্বিয়াস - এর গ্রহণযোগ্যতা আছে কিনা তা স্বতন্ত্রভাবে বিচার্য বিষয় ।

প্রকৃত পক্ষে ওপরে যে , চারটি সর্বসম্মত অকাট্য দ্বীনী সূত্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাকে চূড়ান্ত ও বিতর্কাতীত সূত্র হিসেবে এবং সেই সাথে এ চার মানদণ্ডের বিচারে উৎরে যাওয়া খবরে ওয়াহেদ হাদীছ সমূহকে পঞ্চম উৎস হিসেবে গ্রহণ করা হলে এগুলোর সাহায্যে সমাধান করা যাবে না এমন কোনো দ্বীনী জিজ্ঞাসা থাকতে পারে না ।

এমতাবস্থায় মুজতাহিদের কাজ হবে উপরোক্ত সূত্রসমূহ নিয়ে গবেষণা করে নবজাগ্রত বা বিতর্কিত সমস্যাবলী সম্পর্কে আল্লাহ্ ও রাসূলের ( সা .) ফয়ছ্বালা উদ্ঘাটন করা । অতঃপর আর কোনো প্রশ্ন অবশিষ্ট থাকতে পারে না । এতদ্সত্ত্বেও আমরা যদি ধরে নেই যে , আরো কিছু প্রশ্ন অবশিষ্ট থাকতে পারে এবং তার সমাধানের জন্য ক্বিয়াসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তো সে সব প্রশ্ন হবে খুবই গৌণ বিষয়াদিতে - মুস্তাহাব ও মাকরূহ্ সংক্রান্ত । এর ফলে ক্বিয়াসের ক্ষেত্র খুবই সীমিত হয়ে আসবে এবং মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ফিক্বহী মতপার্থক্যও প্রায় শূন্যের কাছাকাছি চলে আসবে , অন্ততঃ কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই মতপার্থক্য থাকবে না ।

বস্তুতঃ মুসলমানদের মধ্যে যে সব ফিক্বহী মতপার্থক্য রয়েছে তার বেশীর ভাগেরই কারণ হচ্ছে সরাসরি কোরআন মজীদ থেকে ফিক্বহী জিজ্ঞাসাবলীর জবাব সন্ধানে যথাযথ প্রচেষ্টা না চালানো এবং এ ব্যাপারে খবরে ওয়াহেদ্ হাদীছ ও অতীতের মনীষীদের ওপর অনেক বেশী মাত্রায় এবং অনেক ক্ষেত্রে অন্ধভাবে নির্ভরতা , অথচ হাদীছের রাভীগণ ও সংকলকগণ এবং অতীতের মনীষীগণ না মাছুম ছিলেন , না সরাসরি ঐশী জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন । আল্লাহ্ তা আলা যেখানে কোরআন মজীদকে সকল জ্ঞানের আধার বলে উল্লেখ করেছেন সেখানে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফিক্বহী সমস্যা তথা ফরয ও হারাম সংক্রান্ত কোনো সমস্যাই সমাধান বিহীন থাকতে পারে না ।

অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে , ‘ আক্বাএদ্ - কে ওপরে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে সেভাবে গ্রহণ করার পর কোরআন নিয়ে গভীরভাবে চর্চা করা হলে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফিক্বহী সমস্যাই সমাধানবিহীন থাকে না । ওযূ , তালাক্ব , অস্থায়ী বিবাহ , ওয়াছ্বীয়্যাত্ ও কোনো কোনো মীরাছী বিষয় সহ যে সব গুরুত্বপূর্ণ ফিক্বহী বিষয়ে মুসলমানদের মধ্যে গুরুতর মতভেদ রয়েছে তার সবগুলোর সমাধানই কোরআন মজীদে নিহিত রয়েছে ; ‘ আক্বল্ , মুতাওয়াতির হাদীছ ও ইজমা এ উম্মাহর সাহায্য নিয়ে এর সবগুলোই উদ্ঘাটন করা সম্ভব ।

অবশ্য কোরআন মজীদ থেকে সঠিক তাৎপর্য গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানগত , কালগত , ভাষাগত ও পরিবেশগত ব্যবধানের কারণে যে সব সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠা অপরিহার্য এবং তা কাটিয়ে ওঠার জন্য সংশ্লিষ্ট জ্ঞানগবেষক ( মুজতাহিদ ) গণকে কোরআন নাযিলের যুগের আরবী ভাষার জ্ঞানের সাথে সাথে সঠিক জ্ঞান ও ভুল জ্ঞানের মধ্যে পার্থক্যকরণে সহায়ক শাস্ত্রসমূহেরও ( যেমন : জ্ঞানতত্ত্ব , তাৎপর্যবিজ্ঞান , যুক্তিবিজ্ঞান ও দর্শন ) আশ্রয় নিতে হবে ।

উপরোক্ত চার মৌলিক সূত্র থেকে ফিক্বহী জিজ্ঞাসাবলীর জবাব সন্ধান করা হলে এরপর মাত্র কতক গৌণ বিষয়ই অবশিষ্ট থাকতে পারে । কারণ , আল্লাহ্ তা আলা যে সব উদ্দেশ্যে নবী - রাসূলগণকে ( আ .) প্রেরণ করেন তার মধ্যে সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য হচ্ছে লোকদেরকে আল্লাহ্ তা আলার সাথে পরিচিত করানো এবং দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে তাদেরকে আল্লাহ্ তা আলা কর্তৃক নির্ধারিত ফরয ও হারামগুলো সম্বন্ধে জানিয়ে দেয়া । এমতাবস্থায় এটা সম্ভব নয় যে , একজন রাসূল এ সম্পর্কে তাঁর স্বল্পসংখ্যক ছ্বাহাবীকে জানাবেন , বরং এ ধরনের আহ্কাম বিপুল সংখ্যক ছ্বাহাবীর জানা থাকবে এটাই স্বাভাবিক । আর যেহেতু হযরত রাসূলে আকরাম ( সা .)- এর ওফাতের সময় তাঁর ছ্বাহাবীর সংখ্যা ছিলো লক্ষাধিক , সুতরাং খবরে ওয়াহেদ্ হাদীছের দ্বারা ফরয বা হারাম প্রমাণিত হতে পারে না । অবশ্য বিস্তারিত তথা খুটিনাটি , বিশেষতঃ প্রায়োগিক বিধান ও ব্যাখ্যা - বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে খবরে ওয়াহেদ্ হাদীছ গ্রহণযোগ্য , কিন্তু তার গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে উপরোক্ত চার সূত্রের সাথে সাংঘর্ষিক না হওয়ার শর্তে ।

বলা বাহুল্য যে , কোরআন মজীদের ব্যাখ্যা ও বিস্তারিত আহ্কামের ক্ষেত্রে নিষ্পাপ ( মা ছুম্ ) ব্যক্তিত্ববর্গের কথা ও কাজ নির্দ্বিধায় মেনে নেয়া মুসলমানদের কর্তব্য , কিন্তু কোনো হাদীছ গ্রন্থে কোনো কিছু মা ছুমের কথা বা কাজ হিসেবে উল্লেখ থাকা মানেই যে সত্যি সত্যিই তা মা ছুমের কথা ও কাজ এটা নিশ্চিত করে বলা চলে না । বরং একজন মুজতাহিদ যে কোনো খবরে ওয়াহেদ্ হাদীছকে উপরোক্ত চার দলীলের মানদণ্ডে ও হাদীছ বিচারের আরো বহু মানদণ্ডে পরীক্ষা - নিরীক্ষা করে যখন এ প্রত্যয়ে উপনীত হবেন যে , তা সত্যি সত্যিই মা ছুমের কথা বা কাজ কেবল তখনি তিনি তা গ্রহণ করবেন ।

এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় হচ্ছে এই যে , কোনো হাদীছের ক্ষেত্রে মা ছুম্ ও হাদীছ - সংকলকের মাঝে বর্ণনাস্তরের ( রাভী ) সংখ্যা যতো কম হবে হাদীছে ভ্রান্তি বা বিকৃতি প্রবেশ বা পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা ততোটা কম এবং বর্ণনাস্তরের আধিক্যের ক্ষেত্রে ভ্রান্তি , বিকৃতি ও পরিবর্তনের সম্ভাবনা ততো বেশী । মোদ্দা কথা , শিয়া ও সুন্নী নির্বিশেষে কোনো ধারার কোনো হাদীছ - গ্রন্থেরই সকল হাদীছকে চোখ বুঁজে গ্রহণ বা চোখ বুঁজে প্রত্যাখ্যান করার উপায় নেই ।

বস্তুতঃ আক্বাএদী ও ফিক্বহী উভয় ক্ষেত্রেই শিয়া - সুন্নী দুস্তর ব্যবধান গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ হচ্ছে হয় ইজতিহাদকে অবৈধ গণ্য করা , নয়তো বৈধ গণ্য করা সত্ত্বেও অতীতের ইজতিহাদ সমূহকে যথেষ্ট গণ্য করে ইজতিহাদের দরযা বন্ধ গণ্য করা । বাছ - বিচার না করে অন্ধভাবে খবরে ওয়াহেদ্ হাদীছ গ্রহণ করার কারণও তা - ই । ইজতিহাদ অব্যাহত থাকলে এর ধারাক্রমে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এক সময় হাদীছের ক্ষেত্রে এ ভ্রান্ত কর্মনীতির বিলুপ্তি ঘটতে বাধ্য । তাই দেখা যায় , যারা ইজতিহাদ করছেন তাঁরা বহুলাংশে এ অন্ধত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন ।

সুন্নীদের মধ্যে যেমন আহলে হাদীছ নামে পরিচিত একটি অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ফির্কাহ্ ইজতিহাদকে অবৈধ গণ্য করে , তেমনি শিয়াদের মধ্যেও আখবারী নামে পরিচিত একটি অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ফির্কাহ্ ইজতিহাদকে অবৈধ গণ্য করে । অন্যদিকে উছূলী নামে পরিচিত বেশীর ভাগ শিয়াদের মধ্যেই ইজতিহাদ প্রচলিত আছে এবং এ ধারার মুজতাহিদগণ ইজতিহাদের ক্ষেত্রে সুন্নী ধারার হাদীছ , তাফসীর ও ফিক্বাহ্ থেকেও সাহায্য নিয়ে থাকেন এবং দেখা গেছে যে , একজন শিয়া মুজতাহিদ কতক ক্ষেত্রে পূর্ব থেকে শিয়া মাযহাবের অনুসারীদের মধ্যে চলে আসা পূর্ববর্তী খ্যাতনামা মুজতাহিদগণের ফত্ওয়া পরিত্যাগ করে সুন্নী ধারার মধ্যে প্রচলিত ফত্ওয়ার অনুরূপ ফত্ওয়া দিয়েছেন , কিন্তু এ কারণে তাঁকে কোনোরূপ বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হতে হয় নি । 17

এ পর্যায়ে তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে মুসলমানদের শাসন-কর্তৃত্বের বিষয় ।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ বিষয়ক প্রশ্নটির জবাব সবচেয়ে সহজ বলে মনে করি । কারণ ,ছ্বাহাবীদের যুগ অনেক আগেই গত হয়ে গিয়েছে এবং শিয়া মাযহাবের অনুসারীগণ যে বারো জন পবিত্র ব্যক্তিত্বকে আল্লাহ্ তা আলার পক্ষ থেকে মনোনীত ইমাম বলে আক্বীদাহ্ পোষণ করে তাঁদের মধ্যে এগারো জন অনেক আগেই এ পার্থিব দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন এবং শিয়া আক্বীদাহ্ অনুযায়ীই দ্বাদশ ইমাম [ইমাম মাহ্দী (আ.)] স্বীয় পরিচিতি ও দাবী সহকারে সমাজে বিচরণ করছেন না ,বরং স্বীয় পরিচিতি গোপন করে অবস্থান করছেন । ফলে তাঁর নেতৃত্ব ও শাসন-কর্তৃত্বের দাবী কার্যতঃ মেনে নেয়া বা না মানার প্রশ্নটি আপাততঃ বিদ্যমান নেই । এমতাবস্থায় রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের প্রশ্নে শিয়া- সুন্নী উভয় ধারার মুসলমানরাই অভিন্ন অবস্থানে এসে উপনীত হয়েছে ।

এ সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে ,হযরত ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের পূর্ববর্তী বর্তমান অন্তর্বর্তীকালে মুসলমানদের শাসনকর্তৃত্বের ভার এমন ব্যক্তিদের হাতে অর্পণ করতে হবে যারা মা ছুম না হলেও ইতিপূর্বে উল্লিখিত দ্বীনী নেতৃত্বের জন্য অপরিহার্য তিনটি গুণের অধিকারী । বলা বাহুল্য যে ,এ ধরনের গুণাবলীর অধিকারী ব্যক্তিত্ব কেবল মুজতাহিদগণের মধ্যেই পাওয়া যেতে পারে । আর কোরআন-সুন্নাহর দাবীও এটাই । কারণ ,ইসলামের সকল মাযহাব ও ফির্কাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে হযরত রাসূলে আকরাম (সা.) থেকে বর্ণিত এমন একটি হাদীছ হচ্ছে :

العلماء . ورثة الانبیاء

আলেমগণ নবী-রাসূলগণের (আ.) উত্তরাধিকারী ।

আর বলা বাহুল্য যে ,এ হাদীছে আলেম ” বলতে বর্তমান যুগে প্রচলিত পরিভাষায় ঢালাওভাবে যাদেরকে আলেম ” বলা হয় তাঁদেরকে বুঝানো হয় নি ,বরং কোরআন মজীদে যাদের সম্পর্কে یفقهو فی الدین বলা হয়েছে কেবল তাঁদের ক্ষেত্রেই তথা মুজতাহিদগণের ক্ষেত্রেই উল্লিখিত হাদীছের এ শব্দটি প্রযোজ্য । তেমনি এ ধরনের ব্যক্তির জন্য চিন্তা ও আচরণের ক্ষেত্রে ভারসাম্য ( আদ্ল্ বা তাক্বওয়া)-এর অধিকারী হওয়া তথা চরম পন্থা ও শিথিল পন্থা থেকে মুক্ত হওয়া এবং দূরদৃষ্টির ( بصیرة ) অধিকারী হওয়াও অপরিহার্য । আর বিচারবুদ্ধির অকাট্য রায়ও এটাকেই সমর্থন করে ।

এ বিষয়টি ইসলামে কোনো নতুন বিষয় নয় ,যদিও বহু শতাব্দী যাবত বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি দেয়া হয় নি । অতঃপর খৃস্টীয় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্ঃ) এ বিষয়টিকে বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” (ولایة فقیه -মুজতাহিদের শাসন-কর্তৃত্ব) শিরোনামে একটি তত্ত্ব হিসেবে উপস্থাপন করেন । অতঃপর তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইরানের মুসলিম জনগণ ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটানোর পর সেখানে এ তত্ত্ব ভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তন করে ।

দুর্ভগ্যজনক যে ,সুন্নী জগতের কতক ইসলামী নেতা ও আলেম বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” তত্ত্বকে শিয়া মাযহাবের একান্ত নিজস্ব বিষয় বলে অভিহিত করে উপেক্ষা করার চেষ্টা করেছেন ,অথচ প্রকৃত ব্যাপার হলো এই যে ,তত্ত্বটির নামের প্রতি দৃষ্টি না দিলেও এর মূল বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে ,শিয়া মাযহাবের অনুসারীদের অনেক আগে থেকেই (এমনকি হযরত ইমাম খোমেইনী কর্তৃক তত্ত্ব হিসেবে উপস্থাপনেরও বহু আগে - হাজার বছরেরও বেশীকাল পূর্ব থেকেই) সুন্নী মাযহাবের অনুসারীরা এ তত্ত্বের মূল বক্তব্যের মুখাপেক্ষী ছিলো ।

বস্তুতঃ শিয়া মাযহাবের অনুসারীরা সমাজে মা ছুম্ ইমামগণের (আ.) প্রকাশ্য উপস্থিতি কালে ইজতিহাদ ও বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” তত্ত্ব - কোনোটিরই মুখাপেক্ষী ছিলো না । কারণ ,মা ছুম্ (নবীই হোন বা ইমামই হোন) যখন সমাজে উপস্থিত থাকেন তখন দ্বীনী জিজ্ঞাসার চূড়ান্ত জবাব দানের অধিকার এবং শাসন-কর্তৃত্বের অধিকার একমাত্র তাঁরই ;কেবল মা ছুমের অনুপস্থিতিতেই ইজতিহাদ ও বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” র প্রয়োজন দেখা দেয় । কিন্তু সুন্নী আক্বীদাহ্ অনুযায়ী যেহেতু হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর ওফাতের সাথে সাথে আল্লাহ্ তা আলার পক্ষ থেকে মনোনীত ’ দ্বীন-ব্যাখাকারী এবং নেতা ও শাসনকর্তার সমাপ্তি ঘটেছে সেহেতু

  یفقهو فی الدین সম্বলিত আয়াত ও العلماء ورثة الانبیاء হাদীছ অনুযায়ী ,রাসূলুল্লাহ্ (সা.)- এর ওফাতের পর মুহূর্ত থেকেই তাদের জন্য ওলামা তথা মুজতাহিদগণের দ্বীনী নেতৃত্ব ও শাসনকর্তৃত্ব অপরিহার্য হয়ে ওঠে ।

এ ক্ষেত্রে দ্বীনের ব্যাখ্যা ও শাসন-কর্তৃত্বের জন্য হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ছ্বাহাবী ,তাবেঈন্ বা তাবে তাবেঈন্-এর কথা চিন্তা করা হলে তা একটি তত্ত্ব হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না । কারণ ,তাঁরা কয়েকটি সুনির্দিষ্ট প্রজন্ম মাত্র । অন্যদিকে হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর স্থলাভিষিক্ততার প্রশ্নটি কোনো সাময়িক প্রশ্ন নয় ,বরং তাঁর ওফাতের পর মুহূর্ত থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত একটি স্থায়ী প্রশ্ন । তাই আল্লাহর মনোনীত স্থলাভিষিক্ততা তথা ইমামতের আক্বীদাহ্ গ্রহণ না করলে তত্ত্ব হিসেবে রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর স্থলাভিক্তিতার বিষয়টি ব্যক্তি বা গোষ্ঠী প্রশ্নের উর্ধে চিন্তা করতে হবে এবং বেলায়াতে ফক্বীহ্ ” তত্ত্বটি এ ধরনেরই একটি তত্ত্ব । আর এ তত্ত্ব ছ্বাহাবী ,তাবেঈন্ বা তাবে তাবেঈন্ সহ যে কোনো প্রজন্মের জন্য প্রযোজ্য ।

বস্তুতঃ বাস্তবে মুসলমানদের একজন দ্বীনী নেতা ও শাসক বা খলীফাহ্ বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” র জন্য অপরিহার্য গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন কিনা তা একটি স্বতন্ত্র প্রশ্ন - যা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে ,কিন্তু একজন দ্বীনী নেতা ও শাসকের জন্য যে এর সবগুলো গুণের অধিকারী হওয়া অপরিহার্য সে ব্যাপারে বিতর্ক থাকতে পারে না ।

এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য যে ,অতীতে সুন্নী জগতের মনীষীগণও যে এ বিষয়টির প্রতি মোটেই দৃষ্টি দেন নি তা নয় । কারণ ,তাঁদের অনেকে খলীফাহ্ বা শাসক মনোনয়নের এখতিয়ার اهل الحل و العقد (চূড়ান্ত মতামত প্রদানের এখতিয়ারের অধিকারীগণ)-এর বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন । এ পরিভাষাটির বিভিন্ন সংজ্ঞা দেয়া হলেও এর অন্যতম সংজ্ঞা হচ্ছে দ্বীনী বিষয়ে মতামত প্রদানের যোগ্যতার অধিকারী ব্যক্তিগণ ” -যা কেবল মুজতাহিদগণের বেলায়ই প্রযোজ্য হতে পারে ।

মোদ্দা কথা ,আজকের দিনে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে মুসলিম সমাজের দ্বীনী নেতৃত্ব ও শাসন-কর্তৃত্বের একমাত্র সমাধান হচ্ছে বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” বা মুজতাহিদের শাসন-কর্তৃত্ব ’ ।

হযরত ইমামে খোমেইনী (রহ্ঃ) কেবল যে এ তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন তা নয় ,তিনি এর প্রায়োগিক পদ্ধতিও প্রদর্শন করে গেছেন । যেহেতু কোরআন মজীদের যে আয়াত ও হযরত রাসূলে আকরাম (সা.)-এর যে হাদীছ এ তত্ত্বের ভিত্তি তাতে মাত্র একজন আলেম বা মুজতাহিদকে দ্বীনী নেতৃত্ব ও শাসনকর্তৃত্বের অধিকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয় নি ,বরং উভয় সূত্রেই বহুবচন বাচক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে সেহেতু এ অধিকার ও দায়িত্ব সমাজে বিদ্যমান সকল মুজতাহিদের । তবে যেহেতু রাষ্ট্রক্ষমতার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব কেবল একজনের ওপরই ন্যস্ত করা যেতে পারে সেহেতু তাঁরা তাঁদের শাসনকর্তৃত্বের দায়িত্বটি নিজেদের মধ্য থেকে একজনের ওপর অর্পণ করবেন ।

কিন্তু এ অর্পণের মানে শাসনকর্তৃত্বের ক্ষেত্রে তাঁদের অধিকার ও কর্তব্যের পরিসমাপ্তি ঘটা নয় । সুতরাং তাঁরা সব সময়ই শাসকের কাজের প্রতি দৃষ্টি রাখবেন ও তাঁকে পরামর্শ দেবেন এবং শাসক যদি কখনো শারীরিক ,মানসিক ,নৈতিক বা রাজনৈতিক দিক থেকে যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন তাহলে তাঁরা যে কোনো মুহূর্তে তাঁকে অপসারিত করে তাঁর স্থলে অন্য কারো ওপর এ দায়িত্ব অর্পণ করতে পারবেন ।

অন্যদিকে দ্বীনী বিষয়াদির ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের অধিকার ও কর্তব্য সর্বাবস্থায়ই ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক মুজতাহিদেরই থাকবে এবং এ ক্ষেত্রে তাঁদের প্রত্যেকের অনুসারীগণ নিজ নিজ অনুসৃত মুজতাহিদকেই অনুসরণ করতে থাকবে ;রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রেই শাসক-মুজতাহিদের মতের অনুসরণ সকলের জন্য বাধ্যতামূলক হবে না । শুধু তা-ই নয় ,যে সব বিষয়ে রাষ্ট্রের বাস্তবায়ন-কর্তৃত্ব বা বিচারিক কর্তৃত্ব থাকে এমন বিষয়াদিতেও যদি বিভিন্ন মাযহাব বা বিভিন্ন মুজতাহিদের রায়ের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে মতপার্থক্য থাকে (যেমন : বিবাহ-তালাক্ব ও মীরাছ বণ্টনের ক্ষেত্রে কতক শাখাগত বিষয়) সে সব ক্ষেত্রেও সকলের ওপরে শাসক-মুজতাহিদের মত বা সংখ্যাগুরু মাযহাবের রায় চাপিয়ে দেয়া যাবে না । বরং বিবদমান পক্ষদ্বয় একই মাযহাবের বা একই মুজতাহিদের অনুসারী হলে তাদের ব্যাপারে তাদের অনুসৃত মাযহাব বা মুজতাহিদের রায় অনুযায়ী ফয়ছ্বালা করতে হবে ,তবে বিবদমান পক্ষদ্বয় যদি দুই ভিন্ন মাযহাব বা মুজতাহিদের অনুসারী হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সংশ্লিষ্ট জনপদে যারা সংখ্যাগুরু তাদের ফিক্বহী রায় অনুযায়ী ফয়ছ্বালা করতে হবে ।

অমুসলিম সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রেও এ নীতিই প্রযোজ্য হবে ।

অবশ্য ফৌজদারী দণ্ডবিধি ,পররাষ্ট্রনীতি ,সশস্ত্র বাহিনী ,যুদ্ধ ,সন্ধি ,আমদানী-রফতানী নীতি ,মুদ্রানীতি ইত্যাদি একান্তভাবেই মুজতাহিদ শাসকের এখতিয়ারাধীনে থাকবে - যে সব ক্ষেত্রে তিনি তাঁকে নির্বাচনকারী মুজতাহিদগণের এবং তাঁকে সহায়তাকারী আইন বিভাগ ,প্রশাসন ইত্যাদির সাহায্যক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং প্রশাসন ও স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে কার্যকর করবেন । বস্তুতঃ এর চেয়ে উত্তম ও ভারসাম্যপূর্ণ ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা চিন্তা করা সম্ভব নয় ।

এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ,হযরত ইমাম খোমেইনী (রহ্ঃ) স্বয়ং শিয়া মাযহাবের অনুসারী একজন মুজতাহিদ ছিলেন বটে ,কিন্তু তিনি যে বেলায়াতে ফাক্বীহ্ ” তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন তা শিয়া-সুন্নী যে কোনো দেশে সমানভাবে প্রযোজ্য ;এ তত্ত্ব প্রয়োগের জন্য শিয়া মাযহাবের অনুসারী কোনো মুজতাহিদকে শাসনকর্তৃত্ব প্রদান করা জরুরী নয় । বরং সুন্নী মুসলমানদের দ্বারা অধ্যুষিত কোনো দেশে ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার শাসনকর্তৃত্ব সে দেশেরই কোনো মুজতাহিদের ওপর অর্পিত হবে । 18

পরিশিষ্ট