ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব 0%

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব লেখক:
প্রকাশক: -
বিভাগ: ধর্ম এবং মাযহাব

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

লেখক: আল্লামা সাইয়্যেদ মুহাম্মদ হুসাইন তাবাতাবাঈ
প্রকাশক: -
বিভাগ:

ভিজিট: 38375
ডাউনলোড: 4796

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 31 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 38375 / ডাউনলোড: 4796
সাইজ সাইজ সাইজ
ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

‘ইসলাম ও শীয়া মাযহাব’ নামক এ গ্রন্থে ইসলামের দু’টি বৃহৎ উপদলের (শীয়া ও সুন্নী) অন্যতম শীয়া মাযহাবের প্রকৃত পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে । শীয়া মাযহাবের উৎপত্তি, বিকাশ ও চিন্তাধারার প্রকৃতি এবং ইসলামী জ্ঞানের ব্যাপারে শীয়া মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গী এ বইয়ে আলোচিত হয়েছে ।

আল্লাহর অস্তিত্বের আবশ্যকতা

মানুষ তার স্বভাবগত উপলদ্ধি ক্ষমতা যা জন্ম সূত্রে প্রাপ্ত তার মাধ্যমে সর্বপ্রথম যে কাজটি করে , তা হল এ বিশ্ব জগত ও মানব জাতির স্রষ্টার অস্তিত্বকে তার জন্য সুস্পষ্ট করে দেয় । অনেকেই নিজের অস্তিত্ব সহ সবকিছুর প্রতিই সন্দিহান । তারা এ বিশ্বজগতের অস্তিত্বকে এক ধরণের কল্পনা ছাড়া অন্য কিছু মনে করে না । কিন্তু আমরা সবাই জানি যে , একজন মানুষ সৃষ্টির পর থেকেই স্বভাবগত অনুভুতি ও উপলদ্ধি ক্ষমতা সম্পন্ন । তাই জন্মের পর থেকেই সে নিজের এবং এ বিশ্ব জগতের অস্তিত্ব উপলদ্ধি করে । অর্থাৎ এ ব্যাপারে তার মনে সন্দেহের উদ্রেক হয় না যে , সে আছে এবং সে ছাড়াও তার চতুর্পাশ্বে আরও অনেক কিছুই আছে । মানুষ যতক্ষণ মানুষ হিসেবে গণ্য হবে , ততক্ষণ এ জ্ঞান ও উপলদ্ধি তার মধ্যে কোন সন্দেহের উদ্রেক ঘটাবে না , অথবা এ ধারণার মধ্যে কোন পরিবর্তনও ঘটবে না । সুফিষ্ট ( Sophist, যে মতে সত্যকে আপেক্ষিক গণ্য করা হয়) ও সংশয়বাদীদের বিপরীতে এ বিশ্ব জগতের অস্তিত্ব ও তার বাস্তবতা সম্পর্কিত মানুষের এ বিশ্বাস একটি প্রমাণিত ও বাস্তব সত্য । বিষয়টি একটি চিরন্তন বিধি , যা অপরিববর্তনশীল । অর্থাৎ এ সৃষ্টিজগতের অস্তিত্ব কে অস্বীকারকারী ও তার বাস্তবতায় সন্দেহ পোষণকারী সুফিষ্ট বা সংশয়বাদীদের বক্তব্য মোটেই সত্য নয় । বরং এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব এক বাস্তব সত্য । কিন্তু আমরা যদি এ বিশ্ব জগতের সৃষ্টিনিচয়ের প্রতি লক্ষ্য করি , তাহলে অবশ্যই দেখতে পাব যে , আগে হোক আর পরেই হোক , প্রত্যেক সৃষ্টিই এক সময় তার অস্তিত্ব হারাতে বাধ্য হয় এবং ধ্বংস হয়ে যায় । আর এখান থেকে এ বিষয়টি সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে যায় যে , আমাদের দৃশ্যমান এ সৃষ্টিজগতের অস্তিত্বই প্রকৃতপক্ষে অস্তিত্ব নয় বরং প্রকৃতপক্ষে অস্তিত্ব ভিন্ন কিছু । বস্তুতঃ ঐ প্রকৃত অস্তিত্বের উপরই এই কৃত্তিম অস্তিত্ব নির্ভরশীল । ফলে অবিনশ্বর ও প্রকৃত অস্তিত্বের মাধ্যমেই এই কৃত্তিম অস্তিত্ব অস্তিত্ব প্রাপ্ত হয় । কৃত্তিম অস্তিত্ব যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ প্রকৃত ও অবিনশ্বর অস্তিত্বের সাথে সম্পর্কিত ও সংযুক্ত থাকবে , ততক্ষণ পর্যন্ত তার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকবে । আর যে মূহুর্তে ঐ সম্পর্ক ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে , সে মূহুর্তেই কৃত্তিম অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে ।135 আমরা অপরিবর্তনশীল ও অবিনশ্বর অস্তিত্বকেই (অবশ্যম্ভাবী বা অপরিহার্য অস্তিত্ব) আল্লাহ নামে অভিহিত করি ।

মানুষ ও এ বিশ্বজগতের সম্পর্ক

আল্লাহর একত্ববাদ

আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণের লক্ষ্যে ইতিপূর্বে উল্লেখিত পদ্ধতিটি সকল মানুষের জন্যেই অত্যন্ত সহজবোধ্য ব্যাপার । আল্লাহ প্রদত্ত জন্মগত উপলদ্ধি ক্ষমতা দিয়েই মানুষ তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয় । উক্ত প্রমাণ পদ্ধতিতে কোন প্রকার জটিলতার অস্তিত্ব নেই । কিন্তু অধিকাংশ মানুষই পার্থিব ও জড়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত থাকার ফলে শুধুমাত্র অনুভবযোগ্য বস্তুগত আনন্দ উপভোগে অভ্যস্ত ও তাতে নিমগ্ন হয়ে আছে । যার পরিণতিতে খোদাপ্রদত্ত সহজ -সরল প্রবৃত্তি ও অনুধাবন ক্ষমতার দিকে ফিরে তাকানো মানুষের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে । ইসলাম স্বীয় পবিত্র আদর্শকে সার্বজনীন বলে জনসমক্ষে পরিচিত করিয়েছে তাই ইসলাম তার পবিত্র লক্ষ্যের কাছে সকল মানুষকেই সমান বলে গণ্য করে । যেসব মানুষ খোদাপ্রদত্ত সহজাত প্রবৃত্তি থেকে দুরে সরে গিয়েছে , মহান আল্লাহ তখন অন্য পথে তাদেরকে তার অস্তিত্ব প্রমাণে প্রয়াস পান । মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষকে আল্লাহর পরিচয় লাভের শিক্ষা দিয়েছেন । ঐসবের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মহান আল্লাহ এ সৃষ্টিজগত ও তাতে প্রভুত্বশীল নিয়ম-শৃংখলার প্রতি মানব জাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন । তিনি মানুষকে এ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিরহস্য নিয়ে সুগভীর চিন্তা ভাবনা করার আহবান্ জানিয়েছেন । কারণ , মানুষ তার এই নশ্বর জীবনে যে পথেই চলকু বা যে কাজেই নিয়োজিত থাককু না কেন , সে এ সৃষ্টিজগত ও তাতে প্রভুত্ব বিস্তারকারী অবিচল নিয়ম শৃংখলার বাইরে বিরাজ করতে পারবে না । একইভাবে সে এই পৃথিবী ও আকাশ মণ্ডলীর বিস্ময়কর দৃশাবলী অবলোকন ও উপলদ্ধি থেকে বিরত থাকতে পারবে না । আমাদের সামনে দৃশ্যমান এ বিশাল জগতের136 সব কিছুই একের পর এক প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল । প্রতি মূহুর্তে ই নতুন ও অভুতপূর্ব আকারে এ প্রকৃতি আমাদের দৃশ্যপটে মূর্ত হচ্ছে । আর তা ব্যতিক্রমহীন চিরাচরিত নিয়মে বাস্তবতার রূপ লাভ করছে । সুদূর নক্ষত্র মণ্ডল থেকে শুরু করে এ পৃথিবী গঠনকারী ক্ষুদ্রতম অণু-পরমাণু পর্যন্ত সকল কিছুই এক সুশৃংখল নিয়মের অধীন । সকল অস্তিত্বের মধ্যেই এ বিস্ময়কর আইন শৃংখলা স্বীয় ক্ষমতা বলে বলবৎ রয়েছে । যা তার ক্রীয়াশীল রশ্মিকে সর্বনিম্ন অবস্থা থেকে সর্বোন্নত পর্যায়ের দিকে ধাবিত করে এবং পূর্ণাঙ্গ লক্ষ্যে নিয়ে পৌছায় । প্রতিটি বিশেষ শৃংখলা ব্যবস্থার উপর উচ্চতর শৃংখলা ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠিত । আর সবার উপরে বিশ্বব্যবস্থা বিরাজমান । অসংখ্য অণু-পরমাণু কণা সমন্বয়ে বিশ্ব জগত পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে আছে । ক্ষুদ্রতর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গুলোকেও ঐ সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ অংশগুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করেছে ।

এক্ষেত্রে আদৌ কোন ব্যতিক্রম নেই এবং তাতে কখনও কোন ধরণের বিশৃংখলা ঘটে না । উদাহরণ স্বরূপ এ সৃষ্টিজগত পৃথিবীর বুকে যদি কোন মানুষকে অস্তিত্ব দান করে , তাহলে এমনভাবে তার দৈহিক গঠনের অস্তিত্ব রচনা করে , যাতে তা পৃথিবীর পরিবেশের জন্য উপযোগী হয় । একইভাবে তার জীবন ধারণের পরিবেশকে এমনভাবে প্রস্তত করে যে , তা যেন দুগ্ধদাত্রী মায়ের মত আদর দিয়ে তাকে লালন করতে পারে । যেমন : সূর্য , চন্দ্র , গ্রহ , তারা , মাটি , পানি , দিন , রাত , ঋতু , মেঘ , বৃষ্টি , বায়ু , ভূগর্ভস্থ সম্পদ , মাটির বুকে ছড়ানো সম্পদ..... ইত্যাদি তথা এ বিশ্বজগতের সমুদয় সৃষ্টিকূল একমাত্র এই মানুষের সেবাতেই নিয়োজিত থাকে । এই অপূর্ব সম্পর্ক আমরা সমগ্র সৃষ্টিনিচয়ে বিরাজমান দেখতে পাই । এ ধরণের সুশৃংখল ও নিবিড় সম্পর্ক আমরা বিশ্বের প্রতিটি সৃষ্ট বস্তুর মধ্যেই খুজে পাই । প্রকৃতি যেমন মানুষকে খাদ্য দিয়েছে , তেমনি তা আনার জন্যে তাকে পা দিয়েছে । খাদ্য গ্রহণ করার জন্য দিয়েছে হাত এবং খাওয়ার জন্যে দিয়েছে মুখ । চিবানোর জন্যে তাকে দিয়েছে দাতঁ আর এই মাধ্যমগুলো একটি শিকলের অংশ সমূহের মত পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত , যা মানুষকে মহান ও পূর্ণাঙ্গ লক্ষ্যে পৌছার জন্যে পরস্পরকে সংযুক্ত করেছে । এ ব্যাপারে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের কোন সন্দেহ নেই যে , হাজার বছরের বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলে এ সৃষ্টিজগতে বিরাজমান সুশৃংখল ও অন্তহীন যে সম্পর্ক আবিস্কৃত হয়েছে , তা অনন্ত সৃষ্টি রহস্যের এক নগণ্য নমুনা মাত্র । প্রতিটি নব আবিস্কৃত জ্ঞানই মানুষকে তার আরো অসীম অজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । বাহ্যতঃ পৃথক ও সম্পর্কহীন এ সৃষ্টিনিচয় , প্রকৃতপক্ষে এক গোপন সূত্রে অত্যন্ত সুদৃঢ় ও সুশৃংখলতার নিয়মের অধীনে আবদ্ধ , যা সত্যিই বিস্ময়কর । এই অপূর্ব সুশৃংখল ব্যবস্থাপনা এক অসীম জ্ঞান ও শক্তির পরিচায়ক । তাহলে এটা কি করে সম্ভব যে এত সুন্দর ও সুশৃংখল ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত এ বিশাল জগতের কোন সৃষ্টিকর্তা নেই ?

এটা কি বিনা কারণে , বিনা উদ্দেশ্যেএবং দূর্ঘটনা বশতঃ সৃষ্টি হয়েছে ? এই ক্ষুদ্র ও বৃহত্তর তথা এ বিশ্বজগতের ব্যবস্থাপনা , যা পরস্পরের সাথে অত্যন্ত সুদৃঢ়রূপে সম্পর্কিত হয়ে এক বিশাল ব্যবস্থাপনার অবতারণা ঘটিয়েছে এবং ব্যতিক্রমহীন , সুক্ষ্ণ ও সুনির্দিষ্ট এক নিয়ম শৃংখলা এর সর্বত্র বিরাজমান । এখন এটা কল্পনা করা কি করে সম্ভব যে , কোন ধরণের পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই এটা কোন দূর্ঘটনার ফসল মাত্র ? অথবা , এ সৃষ্টিজগতের ছোট-বড় সকল সৃষ্টিকূলই একটি সুনির্দিষ্ট ও সুশৃংখল নিয়মতান্ত্রিকতা অবলম্বনের পূর্বে তারা নিজেরাই ইচ্ছেমত কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে চলেছে এবং ঐ সুশৃংখল নিয়মতান্ত্রিকতার আবির্ভাবের পর তারা নিজেদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে ? অথবা এই সুশৃংখল বিশ্বজগত একাধিক ও বিভিন্ন কারণের সমষ্টিগত ফলাফল , যা বিভিন্ন নিয়মে পরিচালিত হয় ? অবশ্য যে বিশ্বাস প্রতিটি ঘটনা বা বিষয়ের কারণ খুজে বেড়ায় এবং কখনো বা কোন একটি অজানা কারণকে জানার জন্য দিনের পর দিন গবেষণার মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় সে কোন কিছুকেই কারণবিহীন বলে স্বীকার করতে পারে না । আর যে বিশ্বাস কিছু সুসজ্জিত ইটের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বাড়ী দেখে এর গঠনের পেছনে এক গভীর জ্ঞান ও শক্তির ক্রিয়াশীলতাকে উপলদ্ধি করে এবং একে আকস্মিক কোন দূর্ঘটনার ফলাফল বলে মনে করে না । বরং ঐ বাড়ীটিকে সে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে রচিত পূর্ব পরিকল্পনার ফসল বলেই বিশ্বাস করে । এ ধরণের বিশ্বাস কখনোই মেনে নিতে পারেনা যে , এ সুশৃংখল বিশ্ব জগত কোন কারণ ছাড়াই উদ্দেশ্যহীনভাবে দূর্ঘটনা বশতঃ সৃষ্টি হয়েছে । সুতরাং সুশৃংখল ব্যবস্থাপনায় নিয়ন্ত্রিত এ বিশ্বজগত এক মহান স্রষ্টারই সৃষ্টি । যিনি তার অসীম জ্ঞান ও শক্তির মাধ্যমে এ বিশ্বজগতকে সৃষ্টি করেছেন । এই সৃষ্টিজগতকে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে তিনি এগিয়ে নিয়ে যান । সৃষ্টিজগতের ছোট বড় সকল কারণই ঐ মহান স্রষ্টাতে গিয়ে সমাপ্ত হয় । বিশ্বে সকল কিছুই তার আয়ত্বের মধ্যে এবং তার দ্বারা প্রভাবিত । এ জগতের সকল অস্তিত্বই তার মুখাপেক্ষী । কিন্তু একমাত্র তিনি কারো মুখ াপেক্ষী নন । তিনি অন্য কোন শর্ত বা কারণের ফলাফল ও নন ।

এ সৃষ্টিজগতের যে কোন কিছুর প্রতিই আমরা লক্ষ্য করি না কেন , তাকে সসীম হিসেবেই দেখতে পাব । কারণ , সবকিছুই কার্য কারণ নিয়মনীতির অধীন । কোন কিছুই এ নীতির বাইরে নয় । অর্থাৎ সৃষ্টিজগতে সকল অস্তিত্বই সীমাবদ্ধ । নির্দিষ্ট সীমার বাইরে কোন অস্তিত্বই খুজে পাওয়া যাবে না । শুধুমাত্র সর্বস্রষ্টা আল্লাহই এমন এক অস্তিত্বের অধিকারী , যার কোন সীমা বা পরিসীমা কল্পনা করা সম্ভব নয় । কেননা তিনি নিরংকুশ অস্তিত্বের অধিকারী । যেভাবেই কল্পনা করি না কেন , তার অস্তিত্ব অনস্বীকার্য । তার অস্তিত্ব কোন শর্ত বা কারণের সাথেই জড়িত নয় । আর নয় কোন শর্ত বা কারণের মুখাপেক্ষী ।

এটা খুবই স্পষ্ট ব্যাপার যে , অসীম ও অনন্ত অস্তিত্বের জন্যে সংখ্যার কল্পনা করা অসম্ভব । কেননা আমাদের কল্পিত প্রতিটি দ্বিতীয় সংখ্যাই প্রথম সংখ্যার চেয়ে ভিন্ন হবে । যার ফলে দুটো সংখ্যাই সীমিত ও সমাপন রযাগে হবে দু রটাই তাদের নিজস্ব সীম্রারখায় বন্দী হবে । কারণ কোন একটি অস্তিত্বকে যদি আমরা অনন্ত ও অসীম হিসেবে কল্পনা করি , তাহলে তার সমান্তরালে অন্য কোন অস্তিত্বের কল্পনা অসম্ভব হয়ে পড়বে । তবুও যদি তা কল্পনা করার চেষ্টা করি , তাহলে একমাত্র প্রথম অস্তিত্বই পুনঃকল্পিত হবে । তাই অসীম অস্তিত্ব সম্পন্ন মহান আল্লাহ এক । তার কোন শরীক বা অংশী নেই ।137

আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী

একটি মানুষকে যদি আমরা বুদ্ধিবৃত্তিগত ভাবে বিশ্লেষণ করি , তাহলে দেখতে পাব যে , মানুষের একটি সত্তা রয়েছে । আর তা তার মনুষ্য-বিশেষত্ব বৈ কিছুই নয় । এর পাশাপাশি তার মধ্যে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী বিদ্যমান , যা তার সত্তার সাথে সম্মিলিতভাবে সনাক্ত হয় । যেমন : অমুকের ছেলে অত্যন্ত জ্ঞানী ও কর্মপটু এবং দীর্ঘাঙ্গী ও সুন্দর , অথবা এর বিপরীত গুণাবলী সম্পন্ন । এখানে লক্ষ্যণীয় যে , প্রথম গুণটি (অমুকের ছেলে) ঐ ব্যক্তির সত্তার সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত , যা তার সত্তা থেকে পৃথক করা সম্ভব নয় । কিন্তু উপরোক্ত 2য় ও 3য় গুণটি অর্থাৎ জ্ঞান ও কর্মদক্ষতাকে তার সত্তা থেকে পৃথক করা বা পরিবর্তন সাধন সম্ভব । যাই হোক , উপরোক্ত গুণাবলীই (পৃথক করা সম্ভব হোক বা নাই হোক) ঐ ব্যক্তির প্রকৃত সত্তা নয় । আর প্রতিটি গুণাবলীই একটি থেকে আরেকটি আলাদা । আর এ বিষয়টিই (মূলসত্তা ও গুণাবলীর ব্যবধান ও গুণাবলীর পারস্পরিক পর্থক্য) সত্তা ও গুণাবলীর সীমাবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে সর্বোত্তম দলিল ও প্রমাণ । কারণঃ সত্তা যদি অসীম হত , তাহলে গুণাবলীকে অবশ্যই তা পরিবর্তন করত । আর পরিণতিতে সবগুলোই একাকার হয়ে একে রূপান্তরিত হত । সেক্ষেত্রে পূর্বোল্লিখিত মানুষের সত্তা , জ্ঞান , কর্মদক্ষতা , দীর্ঘাঙ্গীতা এবং সৌন্দর্য সবই একই অর্থে রূপান্তরিত হত । অর্থাৎ সবগুলো অর্থই একই অর্থের পরিচায়ক হত । উপরোক্ত আলোচনায় এটা স্পষ্ট হয় যে , মহান আল্লাহর সত্তার জন্যে (পূর্বোক্ত অর্থে) পৃথকভাবে গুণাবলী প্রমাণ করা সম্ভব নয় । কারণঃ গুণাবলী তার জন্যে অসীম হতে পারে না । আর তার পবিত্র সত্তা যেকোন ধরণের সীমাবদ্ধতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ।

আল্লাহর গুণাবলীর অর্থ

এই সৃষ্টিজগতে পূর্ণাঙ্গতা বা উন্নতির চরম উৎকর্ষতার এমন অনেক বিষয়ের কথাই আমাদের জানা আছে , যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বিভিন্ন গুণাবলীর ছত্রছায়ায় । এগুলো সবই ইতিবাচক গুণাবলী যার মধ্যেই এসব গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ ঘটে , ফলে সে সকল বস্তুকে পূর্ণাঙ্গতর এবং উন্নতরূপ প্রদান করে । একইভাবে ঐসব গুণাবলী প্রকাশিত মাধ্যমের অস্তিত্বগত মূল্য বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে । আমরা বিষয়টিকে মানুষের সাথে পাথরের মত নিষ্প্রাণবস্তু অস্তিত্বগত মূল্যের পার্থক্য ও তার তুলনা করে স্পষ্ট বুঝতে পারি । এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই যে , এসকল পূর্ণত্ব ও উন্নতি মহান আল্লাহ ই সৃষ্টি ও দান করেছেন । তিনি যদি নিজেই ঐসব গুণাবলীর অধিকারী না হতেন , তাহলে অন্যদেরকে তা দান করতে পারতেন না । ফলে অন্যদেরকেও পূর্ণাঙ্গতর করতে পারতেন না । এ কারণেই সকল সুস্থ বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন বিশ্বাসই এ ব্যাপারে একমত পোষণ করবেন যে , এ বিশ্ব জগতের সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই মহাজ্ঞান ও শক্তির অধিকারী এবং তিনি সকল প্রকৃত পূর্ণাঙ্গ তার অধিকারী । যেমনটি ইতিপূর্বে আলোচিত হয়েছে , জ্ঞান ও শক্তির লক্ষণ প্রকৃতপক্ষে জীবদ্দশারই পরিচায়ক । আর এটা সৃষ্টিজগতের ব্যবস্থাপনাগত নিয়ম শৃংখলার বৈশিষ্ট্য । কিন্তু যেহেতু মহান আল্লাহর অস্তিত্ব অনন্ত ও অসীম , তাই পূর্ণাঙ্গতার এসব গুণাবলী , যা আমরা তার জন্য প্রমাণ করতে চাচ্ছি , তা মূলত্ঃ তার সত্তারই স্বরূপ । অর্থাৎ তাঁর গুণাবলীই তাঁর সত্তা এবং তাঁর সত্তাই তার গুণাবলীর পরিচায়ক ।138 তবে তাঁর সত্তা ও গুণাবলীর মধ্যে এবং গুণসমূহের পাস্পরিক যে পার্থক্য আমরা উপলদ্ধি করি , তা শুধুমাত্র তাত্বিক পর্যায়েই সীমাবদ্ধ । এছাড়া সত্তা ও গুণাবলী প্রকৃতপক্ষে একত্রেই পরিচায়ক এবং একই মুদ্রার এপিঠ ও ওপিঠ বৈ অন্য কিছুই নয় । মহান আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী কখনোই পরস্পর বিভাজ্য নয় । ইসলাম এ বিষয়ক মৌলিক বিশ্বাসের ব্যাপারে তার অনুসারীদেরকে এ ধরণের অনাকাংখিত ভুল139 থেকে বেচে থাকার জন্য আল্লাহর গুণাবলীকে ইতিবাচক ও নেতিবাচক রূপে দু ভাগে ভাগ করেছে ।140 তাই এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী সঠিক বিশ্বাসের স্বরূপ হচ্ছে এ রকম : মহান আল্লাহ জ্ঞানী । কিন্তু তার জ্ঞান অন্যদের জ্ঞানের মত নয় । মহান আল্লাহ শক্তিশালী । কিন্তু তার শক্তি অন্যদের শক্তির মত নয় । তিনি সর্বশ্রোতা । তবে অন্যদের মত কান দিয়ে শুনার প্রয়োজন তার হয় না । তিনি সর্বদ্রষ্টা । কিন্তু , দেখার জন্য অন্যদের মত চোখের প্রয়োজন তার নেই । এভাবে তার অন্য সকল গুণাবলীই সম্পূর্ণরূপে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ও তুলনাহীন ।

ঐশী গুণাবলীর ব্যাখা

গুণাবলী দু প্রকার :

1 । পূর্ণত্বমূলক গুণাবলী এবং

2 । ত্রুটিমূলক গুণাবলী ।

যেমনটি পূর্বে উল্লেখ করেছি যে , পূর্ণত্বমূলক গুণাবলী মূলতঃ ইতিবাচক অর্থ প্রদান করে । কারণ : প্রথম শ্রেণীর মাধ্যমে গুণান্বিত বিষয়ের অস্তিত্বের মানগত মূল্য বৃদ্ধি পায় । আর তা গুণান্বিত বিষয়ের ইতিবাচক অস্তিত্বগত সুফলের প্রাচুর্য্য আনয়ন করে । উদাহরণ স্বরূপ জ্ঞানী , শক্তিশালী ও জীবন্ত অস্তিত্বের সাথে জ্ঞান ও শক্তি বিহীন মৃতু বস্তুর তুলনামূলক পার্থক্যের সুস্পষ্ট ব্যাপারটি উল্লেখযোগ্য ।

কিন্তু ত্রুটিমূলক গুণাবলী শ্রেষ্ঠত্বের গুণাবলীর সম্পূর্ণ বিপরীত । এই ত্রুটিমূলক গুণাবলী অর্থের দিকে যদি আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করি , তাহলে দেখতে পাব যে , এটা প্রকৃতপক্ষে নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য । এটা হচ্ছে : পূর্ণাঙ্গতা বা শ্রেষ্ঠত্বের অভাব , যা ঐ গুণে গুণান্বিত বিষয়ের অস্তিত্বের মানগত মূল্যহীনতার পরিচায়ক । যেমন : মুর্খতা , অক্ষমতা , শ্রীহীনতা , অসুস্থতা ইত্যাদি । সুতরাং নেতিবাচক গুণাবলীর অস্বীকতি প্রকৃতপক্ষে ইতিবাচক গুণাবলীরই স্বীকৃতি বটে । যেমন : মুর্খতার অভাবের অর্থই জ্ঞানের অস্তিত্ব । অক্ষমতাহীনতা অর্থ সক্ষমতা । এ কারণেই পবিত্র কুরআন সকল শ্রেষ্ঠত্ব মূলক বা ইতিবাচক গুণাবলীকেই মহান আল্লাহর বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রমাণ করে । আর সকল ত্রুটিমূলক বা নেতিবাচক গুণাবলীকেই আল্লাহর ব্যাপারে অস্বীকার করে । যেমন : পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে তিনি জীবিত , তাকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয় । আর জেনে রেখো , তোমরা আল্লাহকে পরাভুত করতে পারবে না । যে বিষয়টি আমাদের সবার দৃষ্টিতে থাকা উচিত , তা হল , মহান আল্লাহ স্বয়ং এক নিরংকুশ অস্তিত্বের অধিকারী , যার কোন সীমা বা শেষ নেই । আর এ কারণেই141 তার জন্য বিবেচিত শ্রেষ্ঠত্ব ও পূর্ণাঙ্গতার গুণাবলীও অবশ্যই অসীম হবে । মহান আল্লাহ কোন জড়বস্তু বা দেহের অধিকারী নন । তিনি স্থান বা সময় দ্বারা সীমাবদ্ধ নন । সবধরণের অবস্থাগত বৈশিষ্ট্য , যা নিয়ত পরিবর্তনশীল , তা থেকে তিনি মুক্ত । মহান আল্লাহর জন্যে প্রকৃতই যেসব বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী আরোপিত হয় তা সব ধরণের সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত । তাই পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে : তিনি কোন কিছুরই সদৃশ্য নন ।142

কার্য সংক্রান্ত গুণাবলী :

পূ্র্বোক্ত শ্রেণী বিন্যাস ছাড়াও গুণাবলীর আরও শ্রেণী বিন্যাস রয়েছে । যেমন :

1 । সত্তাগত গুণাবলী এবং

2 । কার্য সংক্রান্ত গুণাবলী :

যেসব গুণাবলী সত্তার সাথে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত , তাকেই সত্তাগত গুণাবলী বলে । যেমনঃ মানুষের জীবন , জ্ঞান ও শক্তি , আমরা মানুষের সত্তাকে অন্য কিছু কল্পনা না করে শুধুমাত্র উপরোক্ত গুণাবলীর দ্বারাই বিশেষিত করতে পারি । কিন্তু এমন অন্য গুণাবলী রয়েছে , যা বিশেষত্বের সত্তার মধ্যে নিহিত নয় । ঐ ধরণের গুণ বা বৈশিষ্ট্য দ্বারা বিশেষিত হতে হলে অন্য কিছুর বাস্তবায়ন প্রয়োজন । এ ধরণের গুণাবলীই কার্যসংক্রান্ত গুণাবলী নামে পরিচিত যেমন : লেখক , বক্তা ইত্যাদি । আমরা তখনই একজন মানুষকে লেখক হিসেবে বিশেষিত করব , যখন তার পাশাপাশি কাগজ , কালি , কলম ও লেখাও কল্পনা করা হবে । তেমনি যখন শ্রোতার অস্তিত্ব কল্পনা করব , তখন একজন মানুষকে বক্তা হিসেবে বিশেষিত করতে পারব । তাই শুধুমাত্র মানুষের সত্তা বা অস্তিত্বের কল্পনা এ ধরণের গুণাবলী বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট নয় । উপরোক্ত আলোচনায় এ বিষয়টি সুস্পষ্ট হল যে , মহান আল্লাহর প্রকৃতপক্ষে গুণাবলী এই প্রথম শ্রেণীর (সত্তাগত গুণাবলী) গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত । কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণীর গুণাবলীর অস্তিত্ব অন্য কিছুর বাস্তবায়নের উপর নির্ভরশীল । আর আল্লাহ ছাড়া অন্য যেকোন কিছুই আল্লাহরই সৃষ্টি এবং আল্লাহর পরই তার অস্তিত্ব ।

মহান আল্লাহ তার অস্তিত্ব দিয়েই ঐ সবকিছুকে অস্তিত্বশীল করেছেন । তাই যেসব গুণাবলী অন্য কিছুর অস্তিত্ব অর্জনের উপর নির্ভরশীল , সে সব গুণাবলী অবশ্যই আল্লাহর সত্তাগত গুণাবলী বা সত্তার স্বরূপ নয় । সৃষ্টি কার্য সম্পাদিত হওয়ার পর যেসব গুণাবলী দ্বারা মহান আল্লাহ গুণান্বিত হন , সেসব গুণাবলীকেই আল্লাহর কার্য সংক্রান্ত গুণাবলী বলা হয় । যেমন : স্রষ্টা , প্রতিপালক , জীবন দানকারী , মৃত্যু দানকারী , জীবিকা দাতা , ইত্যাদি হওয়ার গুণাবলী আল্লাহর সত্তার স্বরূপ নয় । বরং এসব গুণাবলী আল্লাহর সত্তার সাথে সংযুক্ত অতিরিক্ত গুণাবলী । কার্য সংক্রান্ত গুণাবলী বলতে সেসব গুণাবলীকেই বোঝায় , যা কোন কার্য সম্পাদিত হওয়ায় ঐ সম্পাদিত কার্য থেকে গৃহীত হয় ঐ গুণাবলী সত্তা থেকে গৃহীত হয় না । অর্থাৎ সম্পাদিত কার্যই ঐ গুণাবলীর উৎসস্থল , ঐ কার্যের কর্তা বা ঐ গুণাবলীর উৎস সত্তা নয় । যেমন : সৃষ্টিকার্য সম্পাদিত হওয়ার পরই মহান আল্লাহ ঐ সৃষ্টিকার্যের কারণে স্রষ্টা হিসেবে বিশেষিত হন । স্রষ্টা হওয়ার গুণটি ঐসব সৃষ্টবস্তুর মধ্যেই নিহিত , আল্লাহর সত্তার মধ্যে নয় । এভাবে বিভিন্ন ধরণের কার্য সম্পাদিত হওয়ার পরই মহান আল্লাহর সত্তা ঐ কার্য সম্পাদনকারী হওয়ার গুণে ভূষিত হন । আর এসব গুণাবলী তার পবিত্র সত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় । কারণ : কাজ সম্পাদনের উপর নির্ভরশীল এসব গুণাবলী সর্বদাই পরিবর্তনশীল । তাই এসব গুণাবলী যদি আল্লাহর সত্তাগত গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত হত , তাহলে আল্লাহর সত্তাও পরিবর্তনশীল হতে বাধ্য , যা মহান আল্লাহর পবিত্র সত্তার ক্ষেত্রে কখনোই সম্ভব নয় । শীয়াদের দৃষ্টিতে মহান আল্লাহর ইচ্ছা করা (ইচ্ছা করা অর্থাৎ কিছু করতে চাওয়া বা কামনা করা) এবং কথোপকথন (কোন কিছুর অর্থের শাব্দিকরূপ) নামক গুণাবলী দু টোই তার কার্য সংক্রান্ত গুণাবলী র অন্তর্ভূক্ত ।143 কিন্তু আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীদের অধিকাংশের মতেই মহান এ দু টি গুণাবলীই তার জ্ঞান নামক গুণেরই অংশ । অর্থাৎ এ দু টো গুণাবলী তার সত্তাগত গুণাবলীরই অন্তর্ভূক্ত বলে তারা মনে করেন ।