ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব 5%

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব লেখক:
প্রকাশক: -
বিভাগ: ধর্ম এবং মাযহাব

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 31 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 41891 / ডাউনলোড: 5859
সাইজ সাইজ সাইজ
ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

ইসলাম ও শীয়া মাযহাব

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

‘ইসলাম ও শীয়া মাযহাব’ নামক এ গ্রন্থে ইসলামের দু’টি বৃহৎ উপদলের (শীয়া ও সুন্নী) অন্যতম শীয়া মাযহাবের প্রকৃত পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে । শীয়া মাযহাবের উৎপত্তি, বিকাশ ও চিন্তাধারার প্রকৃতি এবং ইসলামী জ্ঞানের ব্যাপারে শীয়া মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গী এ বইয়ে আলোচিত হয়েছে ।


1

2

3

4

5

6

7

8

তথ্যসূত্র :

১। মহান আল্লাহ বলেছেন : স্মরণ রাখ! আল্লাহর অভিশাপ অত্যাচারীদের উপর নিপতিত , যারা আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং তাতে বক্রতা সৃষ্টি করে। (-সুরা আল আ রাফ , ৪৪ ও ৪৫ নং আয়াত।)

২। মহান আল্লাহ বলেন : তার চেয়ে দ্বীনের ব্যাপারে কে উত্তম যে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন করে এবং নিজেও সৎকর্ম পরায়ণ , আর একনিষ্ট ভাবে ইব্রাহীমের সরল ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে ? (-সূরা আন্ নিসা , ১২৫ নং আয়াত।)

মহান আল্লাহ আরো বলেছেনঃ তুমি বল , হে ঐশী গ্রন্থের অধিকারীগণ! এসো , এমন এক কথায় (ঐক্য বদ্ধ হই) যা আমাদের ও তোমাদের মাঝেও একই (সমভাবে গ্রহণযোগ্য) ; যেন আমরা আল্লাহ ছাড়া আর অন্য কারো ইবাদত না করি এবং কোন কিছুকেই আল্লাহর সাথে শরীক না করি। আমাদের কেউ আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে যেন প্রতিপালক রূপে গ্রহণ না করে। যদি তারা এ প্রস্তাব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় , তাহলে বল , তোমরা সাক্ষী থেকো আমরা মুসলিম। (-সুরা আল্ ইমরান , ৬৪ নং আয়াত।)

মহান আল্লাহ বলেনঃ হে মুমিনগণ তোমরা সর্বাত্মকভাবে আত্মসমর্পণের স্তরে (ইসলামে) প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ককে অনুসরণ কর না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু । (-সুরা আল্ বাকারা ২০৮ নম্বর আয়াত।)

৩। যাইদিয়া দের যে দলটি ইমাম আলী (আঃ)-এর পূর্ববতী দু জন খলিফাকে (১ম ও ২য় খলিফা) সঠিক বলে বিশ্বাস করে এবং ফেকাহগত দিক থেকে ইমাম আবু হানিফার অনুসারী , তারাও শীয়া হিসেবে পরিচিত। তবে এরা বনি উমাইয়া ও আব্বাসীয় খলিফাদের মোকাবিলায় ইমাম আলী (আঃ) ও তার বংশধরদেরকেই (পবিত্র আহলে বাইত) খেলাফতের ন্যায্য অধিকারী বলে বিশ্বাস করে। এ কারণেই এদেরকেও শীয়া বলা হয়।

মহান আল্লাহ বলেনঃ (হযরত ইব্রাহীম ও হযরত ইসমাইল বললেন) হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের উভয়কে তোমার একান্ত অনুগত কর এবং আমাদের বংশধর হতে তোমার প্রতি অনুগত (মুসলিম) এক উম্মত (সৃষ্টি) কর । (-সুরা আল বাকারা , ১২৮ নং আয়াত।)

মহান আল্লাহ বলেনঃ এটা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ । তিনিই পূর্বে তোমাদেরকে মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী) হিসেবে নাম করণ করেছেন। (-সুরা আল হাজ্জ , ৭৮ নং আয়াত।)

৪. রাসূল (সঃ)-এর জীবদ্দশায় সর্ব প্রথম যে পরিভাষাটির উদ্ভব ঘটে , তা হল শীয়া । রাসুল (সঃ)-এর সাহাবী হযরত আবুযার (রাঃ) , হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) , হযরত মিকদাদ (রাঃ) , হযরত আম্মার ইয়াসিরও (রাঃ) রাসুল (সঃ)-এর জীবদ্দশাতেই এই খেতাবে ভূষিত ছিলেন। (হাদের আল আলাম আল্ ইসলামী , ১ম খণ্ড , ১৮৮ নং পৃষ্ঠা)

৫. (হে রাসূল) আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন। (সুরা আশ শুয়ারা ২১৫ নং আয়াত)

৬. এ হাদীসে হযরত আলী (আঃ) বর্ণনা করেনঃ আমি ছিলাম সর্বকনিষ্ট। আমি মহানবীকে (সঃ) বললামঃ আমি আপনার প্রতিনিধি হব । আল্লাহর রাসূল (সঃ) তার হাত আমার কাধে রেখে বললেন , এ ব্যক্তি আমারই ভাই , আমার উত্তরাধিকারী এবং আমার স্থলাভিষিক্ত। তোমরা অবশ্যই এর আনুগত্য করবে । উপস্থিত লোকেরা হেসে আবু তালিবকে বলল , তোমাকে এবার থেকে তোমার ছেলের আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছে। ( তারিখে তাবারী , ২য় খণ্ড , ৩২১ পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড ১১৬ নম্বর পৃষ্ঠা। আল বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৩য় খণ্ড , ৩৯ নং পৃষ্ঠা। গায়াতুল মারাম , ৩২০ নং পৃষ্ঠা।)

৭. হযরত উম্মে সালমা হতে বর্ণিত ; হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেনঃ আলী (আঃ) সর্বদা সত্য ও কুরআনের সাথে রয়েছে। আর সত্য ও কুরআনও সর্বদা আলী (আঃ)-এর সাথে রয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না। এ হাদীসটি আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ১৫টি বর্ণনা সূত্র থেকে বর্ণিত হয়েছে। আর শীয়াদের ১১টি বর্ণনা সূত্র থেকে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। উম্মে সালমা , ইবনে আব্বাস , প্রথম খলিফা আবু বকর , উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়শা , হযরত আলী (আঃ) , আবু সাঈদ খুদরী , আবু লাইলা এবং আবু আইয়ুব আনসারী প্রমুখ সাহাবীগণ হয়েছেন এ হাদীসটির মূল বর্ণনাকারী , (-বাহরানী রচিত গায়াতুল মারাম ৫৩৯ ও ৫৪০ নং পৃষ্ঠা)

হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেনঃ আলীর প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক , কেননা , সত্য সর্বদা তার সাথে রয়েছে। -আল বিদায়াহ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৭ম খণ্ড ৩৬ নং পৃষ্ঠা।

৮. হযরত রাসূল (সঃ) বলেছেনঃ হিকমাত (প্রজ্ঞা) দশ ভাগে বিভক্ত যার নয় ভাগই দেয়া হয়েছে আলী (আঃ)-কে এবং বাকী এক ভাগ সমগ্র মানব জাতির মাঝে বন্টন করা হয়েছে । (-আল বিদায়াহ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৭ম খণ্ড ৩৫৯ নং পৃষ্ঠা)

৯. যখন মক্কার কাফিররা আল্লাহর রাসূল (সঃ)-কে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর বাড়ী ঘেরাও করল , তখন মহা নবী (সঃ) মদীনায় হিজরত করার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং হযরত আলী (আঃ)-কে বললেন , তুমি কি আমার বিছানায় শুতে প্রস্তুত আছো , যাতে করে কাফেররা ভাববে আমিই বিছানায় ঘুমিয়ে আছি। আর এ ভাবে আমি তাদের পশ্চাদ্ববন বা তল্লাশী থেকে নিরাপদ থাকব। হযরত আলী (আঃ) ঐ বিপদজনক মূহুর্তে রাসূল (সঃ)-এর প্রস্তাবটি মনে প্রাণে মেনে নিলেন।

১০. তাওয়ারীখ ও জাওয়ামিঈ হাদীস

১১. গাদীরে খুমের হাদীসটি শীয়া ও সুন্নী উভয় সম্প্রদায়ের সর্বজন স্বীকৃত একটি হাদীস। শীয়া ও আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে শতাধিক সাহাবীর দ্বারা এ হাদীসটি বিভিন্ন ভাবে বর্ণিত হয়েছে যা উভয় সম্প্রদায়ের বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে। বিস্তারিত জানতে ইচ্ছুক পাঠকদের নিম্নলিখিত গ্রন্থ গুলো দেখার পরামর্শ দেওয়া হল। ( গায়াতুল মারাম ৭৯ নং পৃষ্ঠা , আল গাদীর এবং আবাকাতের গাদীর খণ্ড দ্রষ্টব্য)

১২. তারিখে ইয়াকবী -নাজাফীয় মুদ্রণ- ২য় খণ্ড , ১৩৭ ও ১৪০ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা ১ম খণ্ড ১৫৬ নং পৃষ্ঠা। সহীহ্ বখারী ৪র্থ খণ্ড , ১০৭ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব ২য় খণ্ড , ৪৩৭ নং পৃষ্ঠা। ইবনে আবিল হাদীদ ১ম খণ্ড , ১২৭- ১৬১ নং পৃষ্ঠা ১০- সাহীহ মুসলিম ৫ম খণ্ড , ১৭৬ নং পৃষ্ঠা। সহীহ বুখারী ৪র্থ খণ্ড , ২০৭ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব , ২য় খণ্ড , ২৩ এবং ৪৩৭ নং পৃষ্ঠা। তারীখু আবিল ফিদা প্রথম খণ্ড , ১২৭ ও ১৮৭ নং পৃষ্ঠা।

১৩. হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ আল্ আনসারী (রাঃ) বলেছেনঃ আমরা একবার মহানবী (সঃ)-এর সাথে ছিলাম। একটু দূরে হযরত আলী (আঃ)-কে দেখা গল। মহা নবী (সঃ) বললেন , যার হাতে আমার প্রাণ , তার শপথ এ ব্যক্তি (আলী) ও তার শীয়ারাই (অনুসারী) কেয়ামতের দিন নাজাত (মুক্তি) পাবে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে , যখন এ আয়াতটি {যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে , তারই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ।-সূরা আল বাইয়িনাহ , ৭নং আয়াত } নাযিল হলো , রাসূল (সঃ) হযরত আলী (আঃ)-কে বললেন , তুমি এবং তোমার শীয়ারাই (অনুসারী) হচ্ছে এই আয়াতের বাস্তব উদাহরণ যারা কেয়ামতের দিন সন্তষ্ট থাকবে এবং আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তষ্ট থাকবেন। এ ছাড়াও এধরণের হাদীস নীচের গ্রন্থ গুলোতে উল্লেখিত হয়েছে : দুররুল মানসুর ৬ষ্ঠ খণ্ড , ৩৭৯ নং পৃষ্ঠা। গায়াতুল মারাম ৩২৬ নং পৃষ্ঠা।

১৪. মহানবী (সঃ) মৃত্যুর পূর্বে অসুস্থ অবস্থায় জনাব উসামা বিন যায়েদকে একটি সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পন করেছিলেন। আর অন্য সবাইকে তিনি উসামার নেতৃত্বে ঐ বাহিনীতে যোগ দিয়ে মদীনার বাইরে যাওয়ার জন্যে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্ত বেশকিছু সংখ্যক সাহাবী রাসূল (সঃ)-এর এই আদেশের বিরুদ্ধাচারণ করেন। ঐসব বিরুদ্ধাচারীদের মধ্যে প্রথম খলিফা আবু বকর ও দ্বিতীয় খলিফা ওমরের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্য। এ বিষয়টি মহানবীকে (সঃ) ভীষণভাবে মর্মাহত করেছিল। [শারহু ইবনে আবিল হাদীদ , (মিশরীয় মুদ্রণ) ১ম খণ্ড ৫৩ নং পৃষ্ঠা]

মহানবী (সঃ) শেষনিশ্বাস ত্যাগের পূর্বে উপস্থিত সাহাবীদেরকে বললেনঃ কাগজ কলম নিয়ে এসো। আমি তোমাদের জন্যে এমন কিছু লিখে রেখে যেতে চাই , যা তোমাদের জন্যে হেদায়ত স্বরূপ হবে এবং যার ফলে তোমরা কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। কিন্ত দ্বিতীয় খলিফা ওমর এ কাজের বিরোধীতা করলেন এবং বললেনঃ রাসূল (সঃ)-এর রোগ খুব চরম মাত্রায় পৌছে গেছে। তিনি প্রলাপ বকছেন।(তারিখে তাবারী , ২য় খণ্ড ৪৩৬ নং পৃষ্ঠা। সহীহ্ বুখারী ৩য় খণ্ড , সহীহ্ মুসলিম ৫ম খণ্ড , আল বিদায়াহ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৫ম খণ্ড ২২৭ নং পৃষ্ঠা। ইবনে আবিল হাদীদ , ১ম খণ্ড ১৩৩ নং পৃষ্ঠা।)

ঠিক একই ধরণের ঘটনা প্রথম খলিফা আবু বকরের মৃত্যুর সময় ঘটে ছিল। তখন প্রথম খলিফা দ্বিতীয় খলিফা ওমরকে তার পরবর্তী খলিফা হিসেবে মনোনীত করে ওসিয়ত (উইল) লিখে যান। এমন কি ওসিয়াত লিখার মাঝে তিনি সংজ্ঞাও হারিয়ে ফেলেন। কিন্ত তখন দ্বিতীয় খলিফা ওমর প্রতিবাদ করেননি। অথচ মহানবী (সঃ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলেন এবং তার সাহাবীরাও সুস্থ ছিলেন। এ ছাড়া মহানবী (সঃ) ছিলেন সম্পূর্ণ মাসুম (নিস্পাপ) । (রওদাতুস্ সাফা ২য় খণ্ড , ২৫০ নং পৃষ্ঠা)

১৫. শারহু ইবনে আবিল হাদীদ ১ম খণ্ড , ৫৮ ও ১২৩ থেকে ১৩৫ নং পৃষ্ঠা। তারিখে ইয়াকুবী ২য় খণ্ড , ১০২ নং পৃষ্ঠা। তারিখে তাবারী ২য় খণ্ড , ৪৪৫ থেকে ৪৬০ নং পৃষ্ঠা।

১৬. তারিখে ইয়াকুবী ২য় খণ্ড ১০৩ থেকে ১০৬ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা ১ম খণ্ড , ১৫৬ ও ১৬৬ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব ২য় খণ্ড ৩০৭ নং ও ৩৫২ নং পৃষ্ঠা। শারহু ইবনি আবিল হাদীদ ১ম খণ্ড , ১৭ ও ১৩৪ নং পৃষ্ঠা।

১৭. জনাব ওমর বিন হুরাইস , সা দ বিন যাইদকে , বলেছেনঃ প্রথম খলিফা আবু বকরের হাতে বাইয়াত গ্রহণের ব্যাপারে কেউ বিরোধীতা করেছিল কি ? তিনি উত্তর দিলেনঃ শুধুমাত্র মুরতাদ বা মুরতাদ সম লোক ছাড়া আর কেউই এর বিরোধীতা করেনি।(তারিখে তাবারী , ২য় খণ্ড , ৪৪৭ নং পৃষ্ঠা)

১৮. হাদীসে সাকালইনে বর্ণিত হয়েছে আমি আমানত স্বরূপ তোমাদের মাঝে দু টি মূল্যবান জিনিস রেখে যাচ্ছি। যদি তোমরা ঐ দু টি বস্তু কে দৃঢ়ভাবে আকড়ে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হচ্ছে : কুরআন ও আমার পবিত্র আহলে বাইত (নবী বংশ) , যা কেয়ামতের দিন পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন হবে না। বিখ্যাত এ হাদীসটি যারা বর্ণনা করেছেন তাদের মধ্যে রাসূল (সা.) এর সাহাবীই প্রায় ৩৫ জন এবং অন্য আরো শতাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। (গায়াতুল মারাম ২১১ নং পৃষ্ঠা , ও তাবাকাত গ্রন্থের সাকালাইন হাদীস দ্রষ্টব্য।) রাসূল (সা.) বলেছেনঃ আমি জ্ঞানের নগরী আর আলী (আ.) তার দরজা। যে ব্যক্তি জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হবে , তাকে ঐ দরজা দিয়েই প্রবেশ করতে হবে। (আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ্ ৭ম খণ্ড , ৩৫৯ নং পৃষ্ঠা)

১৯. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১০৫ থেকে ১৫০ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।

২০. পবিত্র কুরআন , রাসুল (সা.) এবং পবিত্র আহলে বাইতগণ (আ.) জ্ঞানার্জনের প্রতি অতিশয় গুরুত্ব আরোপ ও উৎসাহ প্রদান করতেন। জ্ঞানার্জনের প্রতি অনুপ্রেরণা প্রদান করতে গিয়ে এক পর্যায়ে মহা নবী (সা.) বলেনঃ জ্ঞান অর্জন প্রতিটি মুসলমানের জন্যেই ফরজ। (বিহারুল আনোয়ার , ১ম খণ্ড , ১৭২ নং পৃষ্ঠা)

২১. আল বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৭ম খণ্ড , ৩৬০ নং পৃষ্ঠা।

২২. তারিখে ইয়াকুবী , ১১১ , ১২৬ , ও ১২৯ নং পৃষ্ঠা।

২৩. মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন : পবিত্র কুরআন একটি সম্মানিত গ্রন্থ , যার সামনে ও পিছন থেকে কখনই মিথ্যা অনুপ্রবেশ করতে পারবে না।। -সূরা ফুসসিলাত , ৪১ও ৪২ নং আয়াত।

মহান আল্লাহ আরও বলেছেনঃ একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত নির্দেশ দেয়ার অধিকার আর কারও নেই । -সূরা আল ইউসুফ , ৬৭ নং আয়াত।

শরীয়ত বা ইসলামী বিধি বিধানের একমাত্র প্রতিভু আল্লাহই , যা নবীর মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌছানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেনঃ বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং সর্ব শেষ নবী। -সূরা আল আহযাব , ৪০ নং আয়াত।

এ আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ নবুয়্যত ও শরীয়তের (খোদায়ী বিধান) সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন ।

মহান আল্লাহ আরও বলেন : যারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুসারে নির্দেশনা প্রদান করে না , তারাই কাফের - সরা আল মায়েদা , ৪৪ নং আয়াত।

২৪. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১১০ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৫৮ নং পৃষ্ঠা।

২৫. দুররূল মানসুর , ৩য় খণ্ড , ১৮৬ নং পৃষ্ঠা। তারিখে ইয়াকুবী , ৩য় খণ্ড ৪৮ নং পৃষ্ঠা। এ ছাড়া পবিত্র কুরআনেও আবশ্যকীয় বিধান সুস্পষ্ট। যেমনঃ খুমস সম্পর্কিত কুরআনের আয়াত : জেনে রাখ! যা কিছু তোমরা লাভ কর তা থেকে এক পঞ্চামাংশ আল্লাহর , রাসূল ও রাসূলের আত্মীয় স্বজনের প্রাপ্য। (-সূরা আল আনফাল , ৪১ নং আয়াত।)

২৬. প্রথম খলিফা আবু বকর তার খেলাফত কালে প্রায় পাঁচ শত হাদীস সংগ্রহ করেন। উম্মুল মুমিনীন আয়শা বর্ণনা করেনঃ এক দিন ভোর পর্যন্ত সারা রাত আমার পিতাকে মানসিক অস্তিরতায় ভুগতে দেখেছি। সকালে তিনি আমাকে বললেনঃ রাসূল (সঃ)-এর হাদীসগুলো নিয়ে এসো। অতঃপর তিনি আনীত ঐ হাদীসগুলো পুড়িয়ে ফেলেন। (কানযুল উম্মাল , ৫ম খণ্ড , ২৩৭ নং পৃষ্ঠা। )

দ্বিতীয় খলিফা ওমর প্রতিটি শহরে লিখিতভাবে এই মর্মে নির্দেশনামা পাঠান যে , যার কাছেই রাসূল (সঃ)-এর হাদীস রয়েছে সে যেন অতি সত্তর তা পুড়িয়ে ফেলে। (-কানযুল উম্মাল , ৫ম খণ্ড , ২৩৭ নং পৃষ্ঠা।) মুহাম্মদ বিন আবু বকর বলেনঃ দ্বিতীয় খলিফা ওমরের যুগে রাসূল (সঃ)-এর অসংখ্য হাদীস সংগৃহীত হয়েছিল। ঐগুলো যখন তার কাছে আনা হল তখন তিনি ওগুলো সব পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। (তাবাকাতে ইবনে সা দ , ৫ম খণ্ড , ১৪০ পৃষ্ঠা।)

২৭. তারিখে ইবনে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৫১ পৃষ্ঠা , ও অন্যান্য গ্রন্থ সমূহ।

২৮. মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) তার বিদায় হজ্জের সময় যেসব হাজীরা দূর-দূরান্ত থেকে মক্কায় প্রবেশ করত , তাদের জন্যে বিশেষ আইন প্রণয়ন করেন । যার উৎস ছিল পবিত্র কুরআনের এই আয়াত. আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ্জ ও ওমরাহ একত্রে একইসাথে পালন করতে চাও (-সূরা আল বাকারা -১৯৬ নং আয়াত।) কিন্তু দ্বিতীয় খলিফা তার খেলাফতের যুগে দূর থেকে আগত হাজীদের জন্যে হজ্জের ঐ আইনটি (হজ্জে তামাত্ত) বাতিল ও নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেন। মোতাহ বা সাময়িক বিবাহ্ যা আল্লাহর রাসূল (সঃ)-এর যুগে প্রচলিত ছিল , তাও দ্বিতীয় খলিফা ওমর নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। আর তিনি তার নির্দেশ অমান্যকারীদের পাথর মেরে হত্যার বিধান জারী করেন। একইভাবে হযরত রাসূল (সঃ)-এর যুগে , হাইয়্যা আলা খাইরিল আমাল অর্থাৎ উত্তম কাজের (নামাজের) দিকে ধাবিত হও ব্যাক্যটি আযানের মধ্যে উচ্চারিত হত । কিন্ত দ্বিতীয় খলিফা ওমর তার শাসন আমলে বলেন : এ ব্যাক্যটি জনগণকে জিহাদের অংশ গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে পারে! তাই তিনি তার খেলাফতের যুগে আযানে ঐ ব্যাক্যটির উচ্চারণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। হযরত রাসূলের (সা.) যুগে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী মাত্র এক বৈঠকে একটির বেশী তালাক প্রদান বৈধ বলে গৃহীত হত না। কিন্ত দ্বিতীয় খলিফা ওমর তার শাসন আমলে একই বৈঠকে তিনটি তালাক প্রদান জায়েয বলে ঘোষণা দেন!! একই বৈঠকে তিন তালাক গৃহীত হওয়ার বৈধতা তিনিই প্রথম ঘোষণা করেন। উল্লেখিত বিষয়গুলো , হাদীস গ্রন্থ ও শীয়া এবং সুন্নী মাযহাবের ফেকহ ও কালাম শাস্ত্রের গ্রন্থে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ।

২৯. তারিখে ইয়াকুবী ২য় খণ্ড , ১৩১ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৬০ নং পৃষ্ঠা।

৩০. আসাদুল গাবা , ৪র্থ খণ্ড , ৩৮৬ নং পৃষ্ঠা। আল-ইসাবাহ , ৩য় খণ্ড দ্রষ্টব্য।

৩১. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৫০ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৬৮ নং পৃষ্ঠা। তারিখে তাবারী , ৩য় খণ্ড , ৩৭৭ নং পৃষ্ঠা।

৩২. তারীখ ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৫০ নং পৃষ্ঠা। তারিখে তাবারী , ৩য় খণ্ড , ৩৯৮ নং পৃষ্ঠা।

৩৩. মিসরবাসীদের একটি দল তৃতীয় খলিফা ওসমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। খলিফা এতে বিপদের আশংকা করলেন। তিনি এ ব্যাপারে হযরত আলী (আঃ)-এর সহযোগিতা প্রার্থনা করেন এবং কৃতকর্মের জন্যে অনুশোচণা প্রকাশ করেন। তখন হযরত আলী (আঃ) মিসরবাসীদের উদ্দেশ্যেবলেনঃ তোমরাতো সত্যের বিজয়ের জন্যেই বিদ্রোহ করেছ। আর ওসমানও তার কুকর্মের জন্য অনুতপ্ত এবং তওবা করেছেন। তিনি বলেছেন : আমি আমার অতীত কৃতকর্ম থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছি। আগামী তিন দিনের মধ্যেই তোমাদের দাবী-দাওয়া আমি বাস্তবায়ন করব এবং সকল অত্যাচারী প্রশাসকদের বরখাস্ত করব । এর পর হযরত আলী (আঃ) তৃতীয় খলিফা ওসমানের পক্ষ হয়ে একটি সন্ধিপত্র প্রস্তুত করেন। অতঃপর বিদ্রোহীরা নিজ নিজ স্থানে ফিরে যায় । কিন্ত বিদ্রোহীরা বাড়ী ফেরার পথে তৃতীয় খলিফা ওসমানের জনৈক ক্রীতদাসকে তারই উটে চড়ে মিশরের দিকে যেতে দেখল। বিদ্রোহীরা সন্দিহান হয়ে ঐ ক্রীতদাসকে থামিয়ে তল্লাশী চালায়। ঘটনাক্রমে ঐ ক্রীতদাসের কাছে মিশরের প্রশাসককে লেখা তৃতীয় খলিফা ওসমানের একটি চিঠি তারা উাদ্ধার করে। ঐ চিঠিতে এ ভাবেই লখা ছিলঃ আল্লাহর নামে শুরু করছি। যখন আব্দুর রহমান বিন উদাইস তোমার নিকট পৌছবে , তাকে ১০০টি চাবুক মারবে। তার চুল ও দাড়ি কামিয়ে ফেলবে এবং সুদীর্ঘ কারাবাসে নিবদ্ধ করবে। আর ওমর বিন আল- হামাক , সুদান বিন হামরান , এবং উরওয়া বিন নাবা র ব্যাপারেও একই নির্দেশ জারী করবে। বিদ্রোহীরা অত্যন্ত ক্ষিপ্ত অবস্থায় ঐ চিঠি সহ ওসমানের কাছে ফিরে এসে বললঃ আপনি আমাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। কিন্ত ওসমান ঐ চিঠির বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। জবাবে বিদ্রোহীরা বললঃ আপনার ক্রীতদাসই এই চিঠিটার বাহক। ওসমান বললেনঃ সে আমার বিনা অনুমতিতে এ কাজ করেছে! তারা বললঃ সে আপনার উটেই চড়ে যাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ সে আমার উট চুরি করেছে ! তারা বললোঃ চিঠিতো আপনার ব্যক্তিগত সেক্রেটারীর লেখা । তিনি বললেনঃ সে আমাকে অবহিত না করেই এ কাজ করেছে ! তারা বললো : তাহলে তো খেলাফতের কাজ পরিচালনা করার মত যোগ্যতা আদৌ আপনার নেই। শিগগীর ইস্তফা দিন। কারণ যদি প্রকৃতপক্ষে এ কাজ আপনার দ্বারাই ঘটে থাকে , তাহলে অবশ্যই খিয়ানত করেছেন। আর যদি এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ আপনার বিনা অনুমতিতে হয়ে থাকে তবে খেলাফতের ব্যাপারে আপনার অযোগ্যতা ও ব্যর্থতাই প্রমাণিত হল। সুতরাং ইস্তফা দিন , তা নাহলে অত্যাচারী প্রশাসকদের বরখাস্ত করুন। এর উত্তরর ওসমান বললেনঃ আমাকে যদি তোমাদের কথা মেনে চলতে হয় , তাহলে তো তোমরাই আমার শাসনকর্তা। সেখানে আমি কোন জন ? তৃতীয় খলিফার এধরণের উত্তরে বিদ্রোহীরা চরমভাবে রাগান্বিত হয়ে ওঠে এবং বৈঠক ত্যাগ করে। (তারিখে তাবারী , ৩য় খণ্ড ৪০২- ৪০৯ নং পৃষ্ঠা। তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড ১৫০- ১৫১ নং পৃষ্ঠা।)

৩৪. তারিখে তাবারী , ৩য় খণ্ড , ৩৭৭ নং পৃষ্ঠা।

৩৫. সহীহ বুখারী , ৬ষ্ঠ খণ্ড , ৮৯ নং পৃষ্ঠা। তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১১৩ নং পৃষ্ঠা।

৩৬. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১১১ নং পৃষ্ঠা। তারিখে তাবারী , ৩য় খণ্ড , ১২৯-১৩২ নং পৃষ্ঠা।

৩৭. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড ১১৩ নং পৃষ্ঠা। শারহু ইবনি আবিল হাদীদ , ১ম খণ্ড , ৯ নং পৃষ্ঠা। ইতিহাসে পাওয়া যায় যে , প্রথম খলিফা আবুবকর খেলাফতের বাইয়াত প্রাপ্তির পর পরই হযরত আলী (আঃ)-এর নিকট থেকে তাঁর বাইয়াত প্রাপ্তির জন্য লোক পাঠান। কিন্ত হযরত আলী (আঃ) উত্তর দিলেন , আমি প্রতিজ্ঞা করেছি যে , কেবল মাত্র নামায ছাড়া আর অন্য কোন কারণে বাড়ীর বাইরে যাব না , যাতে করে আমি কুরআন সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন করতে পারি। ইতিহাসে আরও পাওয়া যায় যে , রাসূল (সঃ)-এর মৃত্যুর প্রায় ছয় মাস পর তিনি আবু বকরের বাইয়াত গ্রহণ করেন।

এ ঘটনাটি কুরআন সংগ্রহের কাজ সমাপ্ত হওয়ার একটি প্রমাণ স্বরূপ। অতঃপর হযরত আলী (আঃ) নিজ সংগৃহীত কুরআনকে উটের পিঠে করে জনগণের নিকট নিয়ে তাদেরকে দেখান। অথচ ইয়মামার যুদ্ধের পর যখন কুরআন সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয় সেটা ছিল প্রথম খলিফা আবু বকরের খেলাফতের দ্বিতীয় বছর। এ সমস্ত ঘটনা ইসলামের ইতিহাসসহ বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে।

৩৮. তারিখে ইয়াকুবি , ২য় খণ্ড , ১৫৪ নং পৃষ্ঠা।

৩৯. তারিখে ইয়াকুবি , ২য় খণ্ড , ১৫৫ নং পৃষ্ঠা। মরুযুয যাহাব , ২য় খণ্ড , ৩৬৪ নং পৃষ্ঠা।

৪০. নাহজুল বালাগা , ১৫ নং বক্তৃতা।

৪১. মহানবী (সা.)-এর মৃত্যুর পর হযরত আলী (আ.)-এর অনুসারী মুষ্টিমেয় কিছু সাহাবী খলিফার বাইয়াত (আনুগত্য প্রকাশ) গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। এই সংখ্যালঘু গোষ্ঠির শীর্ষে ছিলেন হযরত সালমান ফারসী (রা.) , হযরত আবু যার (রা.) , হযরত মিকদাদ (রা.) এবং হযরত আম্মার (রা.) । একই ভাবে স্বয়ং হযরত ইমাম আলী (আ.)-এর খেলাফতের সময়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কিছুলোক তার বাইয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। এ সব বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে কঠোরপন্থীরা ছিলেন , জনাব সাইদ বিন আস , ওয়ালিদ বিন উকবা , মারওয়ান বিন হাকাম , ওমর বিন আস , বাসার বিন এরাদা , সামার নিজান্দা , মুগাইরা বিন শু আবা ও আরো অনেকে। খেলাফতের যুগের এ দুই বিরোধী পক্ষের লোকদের সবার ব্যক্তিগত জীবনী এবং তাদের ঐতিহাসিক কার্যকলাপ যদি আমরা সুক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করি , তাহলে তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য আমাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে। প্রথম বিরোধী পক্ষের সদস্যরা সবাই ছিলেন হযরত রাসূল (সা.)-এর বিশেষ সাহাবী বৃন্দ। তাঁরা সংযম সাধানা , ইবাদত , আত্মত্যাগ , খোদা ভীরুতা , ইসলামী চেতনার দিক থেকে রাসূল (সা.) এর বিশেষ প্রিয় পাত্রদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। মহানবী (সা.) এদের সম্পর্কে বলেছেনঃ মহান আল্লাহ আমাকে অবগত করেছেন যে চারজন ব্যক্তিকে তিনি ভালবাসেন। আর আমাকে আদেশ দিয়েছেন , আমিও যেন তাদেরকে ভালবাসি। সবাই ঐ ব্যক্তিদের নাম জিজ্ঞেস করলে , এর উত্তরে পর পর তিনবার তিনি প্রথম আলী (আ.) অতঃপর সালমান (রা.) , আবু যার (রা.) ও মিকদাদের (রা.) নাম উচ্চারণ করেন। (সুনানে ইবনে মাজা , ১ম খণ্ড , ৬৬ নং পৃষ্ঠা।) হযরত আয়শা (রা.) বলেনঃ হযরত রাসূল (সা.) বলেছেনঃ‘‘ যে দু টি বিষয় আম্মারের (রা.) প্রতি উপস্থাপিত হবে , আম্মার (রা.) অবশ্যই ঐ দু ক্ষেত্রে সত্যকেই বেছে নেবে।’’ (ইবনে মাজা ১ম খণ্ড , ৬৬ নং পৃষ্ঠা। )

মহানবী (সা.) বলেছেন :‘‘ আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে আবু যারের (রা.) চেয়ে অধিকতর সত্যবাদী আর কেউ নেই।’’ (ইবনে মাজা , ১ম খণ্ড , ৬৮ নং পৃষ্ঠা।) এদের কারও জীবন ইতিহাসেই শরীয়ত বিরোধী একটি কাজের উল্লেখ পাওয়া যায় না। এরা কেউ অন্যায়ভাবে কোন রক্তপাত ঘটাননি। অন্যায়ভাবে কারও অধিকার কখনও হরণ করেননি। কারও অর্থসম্পদ কখনও ছিনিয়ে নেননি। জনগণের মাঝে তারা কখনই দূর্নীতি ও পথ ভ্রষ্টতার প্রসারে লিপ্ত হননি। কিন্তু দ্বিতীয় বিরোধী পক্ষের ব্যক্তিদের জঘণ্য অপরাধ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের অসংখ্য সাক্ষীতে ইতিহাস পরিপূর্ণ। ইতিহাসে অন্যায়ভাবে প্রচুর রক্তপাত তারা ঘটিয়েছেন মুসলমানদের ধনসম্পদ লুন্ঠন করেছেন। এতসব লজ্জাকর কান্ড তারা ঘটিয়েছেন যে , তা গুনে শেষ করাও কঠিন। তাদের ঐ সব ঐতিহাসিক অপরাধের আদৌ কোন যুক্তিপূর্ণ অজুহাত খুজে পাওয়া যায় না। তাদের ঐ সব কৃত কর্মের মোকাবিলায় শুধুমাত্র এটা বলেই সান্তনা দেয়া হয় যে , তারা যত অপরাধই করুক না কেন , আল্লাহ তো তাদের প্রতি সন্তুষ্ট (রাদিয়াল্লাহু আনহু) । কুরআন বা সুন্নায় উল্লেখিত ইসলামী আইন অন্যদের জন্য , ওসব সাহাবীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়!!

৪২. মরুযুয যাহাব , ২য় খণ্ড , ৩৬২ নং পৃষ্ঠা। নাহজুল বালাগা , ১২২ নং বক্তৃতা। তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৬০ নং পৃষ্ঠা। শারহু ইবনি আবিল হাদীদ , ১ম খণ্ড , ১৮০ নং পৃষ্ঠা।

৪৩. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৭২ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব , ২য় খণ্ড , ৩৬৬ নং পৃষ্ঠা।

৪৪. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৫২ নং পৃষ্ঠা।

৪৫. মরুযুয যাহাব , ২য় খণ্ড , ৩৬২ নং পৃষ্ঠা। নাহজুল বালাগা , ১২২ নং বক্তৃতা। তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৬০ নং পৃষ্ঠা। শারহু ইবনি আবিল হাদীদ , ১ম খণ্ড , ১৮০ নং পৃষ্ঠা।

৪৬. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৭২ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয্ যাহাব , ২য় খণ্ড , ৩৬৬ নং পৃষ্ঠা।

৪৭. তৃতীয় খলিফা যখন বিপ্লবীদের দ্বারা নিজ বাড়ী ঘেরাও অবস্থায় কাটাচ্ছিলেন। তখন এ অবস্থার নিরসন কল্পে সাহা্য্য চেয়ে তিনি মুয়াবিয়ার কাছে পত্র পাঠান। মুয়াবিয়া উক্ত পত্র পেয়ে প্রায় বারো হাজার সৈন্যের একটি সেনাবাহিনীকে অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত করেন। তিনি ঐ সেনাবাহিনীসহ সিরিয়া থেকে মদীনার দিকে রওনা দেন। কিন্ত এর পরই তিনি আপন সেনাবাহিনীকে সিরিয়া সীমান্তে অবস্থান করার নির্দেশ দেন। অতঃপর সেনাবাহিনী ঐ অবস্থায় রেখে তিনি একাই মদীনায় গিয়ে তৃতীয় খলিফার সাথে সাক্ষাত করেন এবং খলিফাকে সাহায্যের জন্যে তার প্রয়োজনীয় সামরিক প্রস্তুতী চুড়ান্তের পতিবেদন পেশ করেন। তৃতীয় খলিফা এর প্রত্যুত্তরে বলেন : তুই উদ্দেশ্য মুলকভাবে সেনাবাহিনীর অভিযান থামিয়ে রেখে এসেছিস , যাতে করে আমি নিহত হই আর আমার হত্যার প্রতিশোধের বাহানায় তুই বিদ্রোহ করার সুযোগ পাস। তাই নয় কি ? (তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৫২ নং পৃষ্ঠা। মরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড ২৫ নং পৃষ্ঠা। তারিখে তাবারী , ৪০২ নং পৃষ্ঠা। )

৪৮. মরুযুয যাহাব , ২য় খণ্ড ৪১৫ নং পৃষ্ঠা।

৪৯. পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন : তাদের কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি একথা বলে প্রস্থান করে যে , তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের উপাস্যদের পুজায় দৃঢ় থাক।’’ (-সূরা আসু সায়াদ , ৬ নং আয়াত।)

আল্লাহ আরও বলেছেন :‘‘ আমি আপনাকে দৃঢ়পদ না রাখলে আপনি তাদের প্রতি পায় কিছুটা ঝুকে পড়তেন।’’ (-সূরা আল ইসূরা , ৭৪ নং আয়াত।)

মহান আল্লাহ বলেছেন :‘‘ তারা চায় যে , তুমি নমনীয় হও , তাহলে তারাও নমনীয় হবে।’’ (-সূরা আল কালাম , ৯ নং আয়াত।) উপরোক্ত আয়াতগুলোর হাদীস ভিত্তিক তাফসির দ্রষ্টব্য।

৫০. কিতাবুল গারার ওয়াদ দারার আমাদি ও মুতাফাররিকাতু জাওয়ামিউ হাদীস

৫১. মরুযুয যাহাব ২য় খণ্ড , ৪৩১ নং পৃষ্ঠা। শারহু ইবনি আবিল হাদীদ ১ম খণ্ড , ১৮১ নং পৃষ্ঠা।

৫২. আশবাহ ও নাযাইরু সুয়ুতী ফিন নাহু ২য় খণ্ড। শারহু ইবনি আবিল হাদীদ ১ম খণ্ড ৬ নং পৃষ্ঠা।

৫৩. নাহজুল বালাগা দ্রষ্টব্য।

৫৪. শারহু ইবনি আবিল হাদীদ , ১ম খণ্ড , ৬-৯ নং পৃষ্ঠা। জঙ্গে জামালের যুদ্ধে জৈনক বেদুইন ব্যক্তি হযরত আলী (আ.)-কে বললঃ হে আমিরুল মু মিনীন! আপনার দৃষ্টিতে আল্লাহ কি এক ? পার্শ্বস্থ সবাই ঐ ব্যক্তিকে আক্রোমণ করে বলল : হে বেদুইন এ দূযোগমুহুর্তে তুমি কি ইমাম আলী (আ.)-এর অরাজক মানসিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করছো না! জ্ঞান চর্চার আর কোন সময় পেলে না ?

ইমাম আলী (আ.) তার সাথীদের লক্ষ্য করে বললেনঃ ঐ ব্যক্তিকে ছেড়ে দাও। কেননা , মৌলিক বিশ্বাস ও ইসলামী মতাদর্শের সংশোধন এবং ইসলামের উদ্দেশ্য ও লক্ষকে সুস্পষ্ট করার জন্যেই তো আজ আমি এ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি। অতঃপর তিনি ঐ বেদুইন আরব ব্যক্তির প্রশ্নের বিস্তারিত ব্যাখা সহ উত্তর দিয়ে ছিলেন। (বিহারুল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , ৬৫ নং পৃষ্ঠা।)

৫৫. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৯১ নং পৃষ্ঠা। এবং অন্যান্য ইতিহাস গ্রন্থ দ্রষ্টব্য।

৫৬. শারহু ইবনে আবিল হাদীদ , ৪র্থ খণ্ড , ১৬০ নং পৃষ্ঠা। তারিখে তাবারী , ৪র্থ খণ্ড , ১২৪ নং পৃষ্ঠা। তারিখে ইবনে আসির , ৩য় খণ্ড , ২০৩ নং পৃষ্ঠা।

৫৭. পূ্র্বোক্ত সূত্র দ্রষ্টব্য।

৫৮. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৯৩ নং পৃষ্ঠা।

৫৯. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ২০২ নং পৃষ্ঠা।

৬০. ইয়াযিদ ছিল এক অলস ও চরম বিলাসী ব্যক্তি। সে ছিল লম্পট ও মদ্যপ। রেশমী বস্তুই ছিল তার পোশাক। কুকুর ও বানর ছিল তার নিত্য সংগী ও খেলার সাথী। তার নিত্য আসরগুলো ছিল মদ ও নাচ-গানে আনন্দ মুখর। তার বানরের নাম ছিল আবু কায়েস। ঐ বানরটিকে ইয়াযিদ সবসময় অত্যন্ত সুন্দর মূল্যবান পোশাক পরিয়ে মদপানের আসরে নিয়ে আসত ! কখনো বা বানরটিকে নিজের ঘাড়ায় চড়িয়ে ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতায় পাঠাতো। (তারীখু ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৯৬ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড ৭৭ নং পৃষ্ঠা।)

৬১. মরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড , ৫ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড ১৮৩ নং পৃষ্ঠা।

৬২. আন নাসাঈহ আল কাফিয়াহ , ৭২ নং পৃষ্ঠা। আল ইহদাস নামক গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত।

৬৩. হাদীস জনাব আবুল হাসান আল-মাদায়েনী কিতাবুল ইহদাস গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে , হাসান (আ.)-এর সাথে চুক্তির পরের বছর মুয়াবিয়া তার জনৈক কর্মচারীর কাছে লিখিত এক নির্দেশে জানায় :‘‘ যে ব্যক্তি ইমাম আলী (আ.) বা আহলে বাইতের মর্যাদা সম্পর্কে কোন হাদীস বর্ণনা করবে , তাকে হত্যা করার জন্যে আমি দায়ী নই।’’ {কিতাবুল নাসাঈহুল কাফিয়াহ (মুহাম্মদ বিন আকিল) , (১৩৮৬ হিজরী সনে নাজাফে মুদ্রিত) ৮৭ ও ১৯৪ নং পৃষ্ঠা। }

৬৪. আন নাসাঈহুল কাফিয়াহ , ৭২ -৭৩ নং পৃষ্ঠা।

৬৫. আন নাসাঈহুল কাফিয়াহ , ৫৮ , ৬৪ , ৭৭ ও ৭৮ নং পৃষ্ঠা।

৬৬. আর যারা সর্বপ্রথম হিজরতকারী ও আনসারদের মাঝে পুরাতন এবং যারা তাদের অনুসরণ করেছে , আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। (-সূরা আত্ তওবা , ১০০ নং আয়াত দ্রষ্টব্য।)

৬৭. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ২১৬ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৯০ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড , ৬৪ নং পৃষ্ঠা। আরও অন্যান্য ইতিহাস গ্রন্থ দ্রষ্টব্য ।

৬৮. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ২৪৩ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৯২ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড , ৭৮ নং পৃষ্ঠা।

৬৯. তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ২২৪নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১৯২ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড , ৮১ নং পৃষ্ঠা।

৭০. তারিখে ইয়াকুবী , ৩য় খণ্ড , ৭৩ নং পৃষ্ঠা।

৭১. মরুযুয যাহাব , ৩য় খণ্ড , ২২৮ নং পৃষ্ঠা।

৭২. এ বইয়ের ইমাম পরিচিতি অধ্যায় দ্রষ্টব্য।

৭৩. মু জামুল বুলদান কোম শব্দ দ্রষ্টব্য।

৭৪. মরুযুয যাহাব ৩য় খণ্ড , ২১৭-২১৯ নং পৃষ্ঠা। তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ৬৬ নং পৃষ্ঠা।

৭৫. বিহারুল আনোয়ার ১২ নং খণ্ড।

৭৬. তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ৮৪ নং পৃষ্ঠা।

৭৭. তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড ৭৯ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা ১ম খণ্ড , ২০৮ নং পৃষ্ঠাও অন্যান্য ইতিহাস দ্রষ্টব্য।

৭৮. তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ৮৬ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব ৩য় খণ্ড , ২৬৮ নং পৃষ্ঠা।

৭৯. তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ৮৬ নং পৃষ্ঠা। মুরুযুয যাহাব ৩য় খণ্ড , ২৭০ নং পৃষ্ঠা।

৮০. তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ৯১-৯৬ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা ১ম খণ্ড , ২১২ নং পৃষ্ঠা।

৮১. তারিখে আবিল ফিদা ২য় খণ্ড , ৬ নং পৃষ্ঠা।

৮২. তারিখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ১৯৮ নং পৃষ্ঠা। তারিখে আবিল ফিদা ২য় খণ্ড , ৩৩ নং পৃষ্ঠা।

৮৩. বিহারুল আনোয়ার ১২ তম খণ্ড , ইমাম জাফর সাদিকের (আ.) অবস্থা অধ্যায়।

৮৪. বাগদাদ সেতুর কাহিনী

৮৫. আগানী আবিল ফারাজ কিস আতু আমিন

৮৬. তাওয়ারিখ

৮৭. রাজনৈতিক দিক থেকে আব্বাসীয় খলিফা মামুন ছিলেন অত্যন্ত চতুর। তিনি অষ্টম ইমাম হযরত ইমাম রেজা (আ.)-কে তার খেলাফতের পরবর্তী উত্তরাধীকারী হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু এটা ছিল তার এক ধূর্ততাপূর্ণ রাজনৈতিক কৌশল। হযরত ইমাম রেজা (আ.) এটা ভাল করেই জানতেন। তাই তিনি বাহ্যতঃ খলিফা মামুনের প্রস্তাব মেনে নিলেও রাষ্ট্রের রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করেন। মামুনের ধূর্ততা সম্পর্কে ইমাম রেজা (আ.)-এর ধারণার সত্যতার প্রমাণ তখনই পাওয়া গেল , যখন খলিফা মামুন হযরত ইমাম রেজা (আ.)-কে বিষপ্রয়োগের মাধ্যমে শহীদ করেন।

৮৮. তারিখে আবিল ফিদা ও অন্যান্য ইতিহাস গ্রন্থাবলী দ্রষ্টব্য ।

৮৯. আল হিদারাতুল ইসলামিয়া -১ম খণ্ড , ৯৭ নং পৃষ্ঠা।

৯০. মরুযুয যাহাব ৪র্থ খণ্ড ৩৭৩ নং পৃষ্ঠা। আল মিলাল ওয়ান নিহাল ১ম খণ্ড , ২৫৪ নং পৃষ্ঠা।

৯১. তারিখে আবিল ফিদা ২য় খণ্ড , ৬৩ নং পৃষ্ঠা , এবং ৩য় খণ্ড , ৫০ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য।

৯২. তাওরীখে কামেল তারিখে রাওদাতুস সাফা , ও তারিখে হাবিবুস সিয়ার দ্রষ্টব্য

৯৩. তারিখে কামেল তারিখে আবিল ফিদা , ৩য় খণ্ড দ্রষ্টব্য।

৯৪. তারিখে হাবিবুস সিয়ার তারিখে আবিল ফিদা ও অন্যান্য ইতিহাস গ্রন্থ দ্রষ্টব্য।

৯৫. রওদাতল জান্নাত ও রিয়াদুল উলামা (রাইহানাতুল আদাব ) ২য় খণ্ড , ৩৬৫ নং পৃষ্ঠা।

৯৬. কিতাবুর রাওদাত কিতাবুল মাজালিশ ও ওয়াফিয়াতুল আ ঈয়ান

৯৭. রওদাতুস সাফা হাবিবুস সাইর

৯৮. রওদাতুস সাফা হাবিবুস সাইর

৯৯. উল্লেখ্য যে পাঠকদের হাতে উপস্থিত গ্রন্থটি প্রায় ৩৫ বছর পূর্বে রচিত। ফলে শীয়াদের যে সংখ্যাটি উদ্ধৃত হয়েছে সেটি অত্যন্ত প্রাচীন হিসাব। বর্তমান যুগে বিশ্বে শীয়াদের সংখ্যা প্রায় ৩৫ কোটি। (-অনুবাদক)

১০০. উক্ত বিষয়টি শাহরিস্তানীর মিলাল ওয়ান নিহাল গ্রন্থ ও আল - কামিল -ইবনে আসীর থেকে সংগৃহীত হয়েছে।

১০১. উক্ত বিষয়টি ইবনে আস্রিরর আল কামিল গ্রন্থ ও রাওদাতুস সাফা হাবিবুস সেইর আবিল ফিদা এবং শাহরিস্তানীর মিলাল ওয়াল নিহাল গ্রন্থ এবং কিছু অংশ তারিখে আগাখানি থেকে ঊদ্ধৃত হয়েছে।

১০২. ইসলামে আল্লাহর ইবাদত তার একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাসের একটি অংশ এবং তার উপর ভিত্তি করেই তা গঠিত হয়ে থাকে। এটাই উল্লেখিত কুরআনের আয়াতের মর্মার্থ ।

১০৩. যথার্থ গুণকীর্তন সঠিক উপলদ্ধির উপরই নির্ভরশীল। উক্ত আয়াত থেকে বুঝা যায় যে , একমাত্র মুখলাস (পরম নিষ্টবান ব্যক্তি) এবং আত্মশুদ্ধি সম্পন্ন পবিত্র ব্যক্তি ব্যতীত কেউই সর্বস্রষ্টা অল্লাহর প্রকৃত পরিচয় লাভে সক্ষম হবে না। আর মহান অল্লাহ্ অন্যদের দ্বারা বিশেষিত হওয়া থেকে পবিত্র।

১০৪. উক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায় যে , মহান আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্যে তার একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস আনয়ন ও সৎকাজ সম্পাদন ছাড়া আর কোন পথ নেই।

১০৫. উক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায় যে , মহান আল্লাহর প্রকৃত ইবাদত ও আনুগত্য নিশ্চিত বিশ্বাসের স্তরে উন্নত হওয়ারই ফসল।

১০৬. উক্ত আয়াত থেকে বোঝা যায় যে , নিশ্চিত বিশ্বাসের (ইয়াকীন) স্তরে উপনীত হওয়ার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে পৃথিবী ও আকাশের প্রকৃত রূপের রহস্য অবলোকন।

১০৭. উক্ত আয়াত থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে , সৎকাজ সম্পাদনকারীদের স্থান হবে বেহেস্তের ইল্লিয়্যিন (অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্থান) নামক স্থানে , যা একমাত্র আল্লাহর নৈকট্য প্রাপ্ত ব্যক্তিরাই অবলোকন করবেন। এখানে বই বলে লিখিত কোন পুস্তককে বুঝানো হয়নি। বরং তা দিয়ে উন্নত ও নৈকট্যের জগতই বুঝানো হয়েছে।

১০৮. এ ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদীস আছে , যা শীয়া ও সুন্নী উভয় গোষ্ঠি থেকে বর্ণিত হয়েছে যে , তিনি বলেছেনঃ‘‘ আমরা নবীরা মানুষের সাথে তাদের বুদ্ধিবৃত্তির পরিমাণ অনুযায়ী কথা বলে থাকি।’’ (বিহারূল আনোয়ার , ১ম খণ্ড , ৩৭ নং পৃষ্ঠা। উসুলে কাফী , ১ম খণ্ড , ২০৩ নং পৃষ্ঠা।)

১০৯. নাহজুল বালাগা , ২৩১ নং বক্তৃতা।

১১০. দুররূল মানসুর , ২য় খণ্ড , ৬নং পৃষ্ঠা।

১১১. তাফসীরে সাফী , ৮ নং পৃষ্ঠা ও বিহারূল আনোয়ার ১৯ তম খণ্ড , ২৮ নং পৃষ্ঠা।

১১২. সূরা আশু শুয়ারা , ১২৭ নং আয়াত।

১১৩. সূরা আল হিজর , ৭৪ নং আয়াত।

১১৪. তাফসীরে সাফী , ৪নম্বর পৃঃ ।

১১৫. সাফিনাতুল বেহার তাফসীরে সাফী , ১৫ নম্বর পৃঃ এবং অন্যসব তাফসীর গ্রন্থেও মুরসাল স্বরূপ মহানবী থেকে বর্ণিত হয়েছে , কাফী , তাফসীরে আইয়াশী ও মা আনী আল আখবার গ্রন্থেও এজাতীয় রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে।

১১৬. বিহারুল আনওয়ার , ১খণ্ড , ১১৭পঃ।

১১৭. হাদীসের দ্বারা কুরআনের আয়াত বাতিল হওয়ার বিষয়টি ইলমুল উসুলের (ইসলামী আইন প্রণয়নে মূলনীতি শাস্ত্র) আলোচ্য বিষয়। আহলুস সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আলেমদের একাংশের মতে হাদীসের দ্বারা কুরআনী আইন রহিত হওয়া সম্ভব। প্রথম খলিফাও যে , এ মতেরই অনুসারী ছিলেন , তা ফিদাকের ব্যাপারে তার ভূমিকা তাই প্রমাণ করে।

১১৮. এ বিষয়ের সাক্ষী সরূপ , হাদীস সংক্রান্ত বিষয়ের উপর আলেমগণের লিখিত অসংখ্য গ্রন্থই যথেষ্ট। এ ছাড়া ইলমে রিজাল (হাদীস বর্ণনাকারীদের ব্যক্তি বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা শাস্ত্র) সংক্রান্ত গ্রন্থ গুলোতে হাদীসের অনেক বর্ণনাকারীকেই মিথ্যাবাদী ও হাদীস জালকারী হিসেবে প্রমাণ করা হয়েছে।

১১৯. বিহারূল আনোয়ার , ১ম খণ্ড , ১৩৯ নং পৃষ্ঠা।

১২০. বিহারূল আনোয়ার , ১ম খণ্ড , ১১৭ নং পৃষ্ঠা।

১২১. খাবারে ওয়াহিদের (অ-মুতাওয়াতির হাদীস) দলিল হওয়ার যোগ্যতার আলোচ্য অধ্যায় দ্রষ্টব্য। এটা ইলমে উসুলের (ইসলামী আইন প্রণয়নের মূলনীতি শাস্ত্র ) আলোচ্য বিষয়।

১২২. বিহারুল আনওয়ার ১খণ্ড ১৭২পঃ।

১২৩. এ বিষয়ে মূলনীতি বিষয়ক শাস্ত্র (এলমে উসুলের) এর ইজতিহাদ ও তাকলীদ অধ্যায় দেখুন।

১২৪. ওয়াফিয়াত ইবনে খালকান ৭৮ নং পৃষ্ঠা , এবং আইয়ানুশ শীয়া ১১তম খণ্ড ২৩১ নং পৃষ্ঠা।

১২৫. ওয়াফিয়াত ইবনে খালকান ১৯০ নং পৃষ্ঠা , এবং আইয়ানুশ শীয়া।

১২৬. ইতকান (সুয়ুতী)।

১২৭. শারহু ইবনি আবিল হাদীদ ১ম খণ্ড , ১ম অধ্যায়।

১২৮. আখবারুল হুকমা ওফিয়াত গ্রন্থ দ্রষ্টব্য ।

১২৯. হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেনঃ ইবাদত তিন প্রকার :

(ক) একদল লোক শাস্তির ভয়ে আল্লাহর উপাসনা করে। এটা ক্রীতদাসদের ইবাদত।

(খ) একদল লোক পুরুস্কারের আশায় আল্লাহর ইবাদত করে। এটা অর্থলোভী শ্রমিকের উপাসনা।

(গ) একদল লোক শুধুমাত্র আন্তরিকতা ও ভালবাসার কারণেই আল্লাহর ইবাদত করে। এটা হচ্ছে স্বাধীনচেতা ও মহৎ ব্যক্তিদের ইবাদত আর এটাই হচ্ছে সর্বোত্তম ইবাদত( বিহারূল আনোয়ার, ১৫ তম খণ্ড ২০৮ নং পৃষ্ঠা।)

১৩০. তাযকিরাতুল আউলিয়া , তারাযিম , তারায়েক ও অন্যান্য তরীকত পন্থার গ্রন্থ দ্রষ্টব্য।

১৩১. মহান আল্লাহ বলেছেন : আর সন্ন্যাসবাদ তো তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের জন্য প্রর্বতন করেছিল। আমি তো তাদেরকে ঐ বিধান দেইনি। অথচ এটাও তারা যথাযথ ভাবে পালন করেনি। (-সূরা আল হাদীদ , ২৭ নং আয়াত।)

১৩২. হযরত ইমাম আলী (আ.) বলেছেনঃ সে তো আল্লাহ নয় , যে জ্ঞানের পরিসীমায় সীমাবদ্ধ। বরং তিনিই আল্লাহ , যিনি প্রমাণের ক্ষেত্রে বুদ্ধিবৃত্তিকে নিজের প্রতি পথ নির্দেশনা প্রদান করেন’’

১৩৩. হযরত আলী (আ.) বলেছেনঃ যে নিজেকে জানতে পারলো , নিশ্চয় সে আল্লাহকেও জানতে পারলো। (বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , ১৮৬ নং পৃষ্ঠা।)

১৩৪. হযরত ইমাম আলী (আ.) আরো বলেছেন যে ,‘‘ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি নিজেকে বেশী চেনে সে তার প্রতিপালককেও তোমাদের মধ্যে বেশী চেনে। (গুরারূল হিকাম , ২য় খণ্ড , ৬৫৫ নং পৃষ্ঠা।)

১৩৫. পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ উল্লিখিত দলিলটির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন : তাদের রাসূলগণ বলেছিলেনঃ আল্লাহ সম্পর্কে কি সন্দেহ আছে , যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের স্রষ্টা ? (-সূরা আল ইব্রাহীম , ১০ নং আয়াত।)

১৩৬. মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেনঃ নিশ্চয়ই নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডলে মুমিনদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। আর তোমাদের সৃষ্টিতে ও চারদিকে ছড়িয়ে রাখা জীব জন্তর সৃজনের মধ্যেও নিদর্শনাবলী রয়েছে বিশ্বাসীদের জন্য , দিবা রাত্রির পরিবর্তনে , আল্লাহ আকাশ থেকে যে রিযিক (বৃষ্টি) বর্ষন করেন অতঃপর পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর পুনরূজ্জীবিত করেন , তাতে এবং বায়ুর পরিবর্তনে বুদ্ধিমানদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (-সূরা জাসিয়া , ৩ থেকে ৬ নম্বর আয়াত।)

১৩৭. জংগে জামালের যুদ্ধের সময় জনৈক আরব বেদুঈন হযরত ইমাম আলী (আ.) -এর কাছে এসে প্রশ্ন করল : হে আমিরুল মু মিনীন আপনি কি বলেন , আল্লাহ এক ? আরব বেদুঈনের এ ধরণের অসময়োচিত প্রশ্নে উপস্থিত সকলে বিরক্ত হয়ে ঐ ব্যক্তিকে আক্রমন করে বলল : হে বেদুঈন! তুমি কি দেখতে পাচ্ছনা যে , আমিরুল মু মিনীন এখন এ যুদ্ধের ব্যাপারে কেমন মানসিক ব্যস্ততার মধ্যে কাটাচ্ছেন ? হযরত আমিরুল মু মিনীন আলী (আ.) বললেনঃ‘‘ ওকে ছেড়ে দাও! ঐ আরব বেদুঈন তাই চাচ্ছে , যা আমরা এই দলের (যুদ্ধরত প্রতিপক্ষ) কাছে চাচ্ছি’’ । অতঃপর তিনি ঐ আরব বেদুঈনকে লক্ষ্য করে বললেনঃ‘‘ এই যে বলা হয়ে থাকে আল্লাহ এক এ কথার চারটি অর্থ রয়েছে। এ চারটি অর্থের মধ্যে দু টো অর্থ শুদ্ধ নয়। এ ছাড়া বাকী দুটো অর্থই সঠিক। ঐ ভুল অর্থ দুটো হচ্ছে , এ রকম যেমনঃ কেউ যদি বলে যে , আল্লাহ এক এবং এ ব্যাপারে (আল্লাহর একত্ববাদ) যদি সংখ্যার ভিত্তিতে কল্পনা করে। তাহলে এ ধরণের একত্ববাদের অর্থ সঠিক নয়। কারণঃ যার কোন দ্বিতীয় নেই , সেটা কখনোই সংখ্যামূলক হতে পারে না। তোমরা কি দেখছো না যে , খৃষ্টানরা আল্লাহর ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী হবার কারণে কাফেরে পরিণত হয়েছে ? এর (আল্লাহর একত্ববাদ) অন্য একটি ভুল অর্থ হচ্ছে এই যে , যেমন অনেকেই বলেঃ অমুক অনেক মানুষের মধ্যে একজন। অর্থাৎ অমুক রহিম , করিম খালেদের মতই একজন সমগোত্রীয় মানুষ মাত্র। (অথবা অমুক তার সমগোত্রীয়দেরই একজন।) আল্লাহর ব্যাপারে এ ধরণের অর্থও কল্পনা করা ভুল । কারণ এটা এক ধরণের সাদৃশ্য মূলক কল্পনা। আর আল্লাহ যে কোন সাদৃশ্য মূলক বিষয় থেকে পবিত্র। আর আল্লাহর একত্ববাদের দু টো সঠিক অর্থের একটি হচ্ছে , যেমন কেউ বলেঃ আল্লাহ এক। অর্থাৎ এ সৃষ্টিজগতে তার সাদৃশ্য কিছুই নেই। আল্লাহ প্রকৃতই এ রকম। অন্য অর্থটি হচ্ছে এই যে , কেউ বলে : আল্লাহ এক। অর্থাৎ তাঁর কোন আধিক্য সম্ভব নয়। তিনি বিভাজ্যও নন বাস্তবে যেমন সম্ভব নয় , চিন্তাজগতে কল্পনা করাও তমনি সম্ভব নয়। এটাই আল্লাহর স্বরূপ। (বিহারূল আনোয়ার , ৬৫ নং পৃষ্ঠা।)

হযরত ইমাম আলী (আ.) আরো বলেছেনঃ আল্লাহ কে এক হিসেবে জানার অর্থই তাঁর পরিচিতি লাভ করা। (বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , ১৮৬ নং পৃষ্ঠা। )

অর্থাৎ মহান আল্লাহর অসীম ও অবিনশ্বর অস্তিত্বের প্রমাণই তাঁর একত্ববাদ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট কারণঃ অসীম অস্তিত্বের জন্যে দ্বিতীয়ের কল্পনা আদৌ সম্ভব নয়।

১৩৮. ৬ষ্ঠ ইমাম হযরত জাফর সাদিক (আ.) বলেন : মহান আল্লাহ স্থির অস্তিত্বের অধিকারী। তিনি নিজেই তাঁর জ্ঞান। তাঁর জন্য জ্ঞাত বিষয়ের কোন অস্তিত্ব নেই। তিনি নিজেই তার শ্রবণ ক্ষমতা । তার জন্য শ্রুত বিষয়ের কোন অস্তিত্ব নেই। তিনি নিজেই তার দর্শন ক্ষমতা । তার জন্য দৃষ্ট বিষয়ের কোন অস্তিত্ব নেই । তিনি নিজেই তার শক্তির পরিচায়ক তাঁর জন্য প্রয়োগকৃত শক্তির কোন অস্তিত্ব নেই। (বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , ১২৫ নং পৃষ্ঠা।)

এ বিষয়ে আহলে বাইত গণের (আ.) অসংখ্য হাদীস রয়েছে। এ ব্যাপারে নাহজুল বালাগা তাওহীদে আইউন বিহারূল আনোয়ার , (২য় খণ্ড গ্রন্থ সমূহ দ্রষ্টব্য)

১৩৯. অষ্টম ইমাম , ইমাম রেজা (আ.) বলেনঃ মহা প্রভু এমন এক জাতি , যার সাথে কখনো আধারের সংমিশ্রন ঘটতে পারে না। তিনি এমন এক জ্ঞানের অধিকারী , যেখানে অজ্ঞতার কোন উপস্থিতিই কল্পনা করা আদৌ সম্ভব নয়। তিনি এমন এক জীবনের অধিকারী , যেখানে মৃত্যুর কোন ছোয়া পড়তে পারে না। (বিহারূল আনোয়ার ২য় খণ্ড ১২৯ পৃষ্ঠা।) অষ্টম ইমাম (আ.) বলেনঃ প্রভুর গুণাবলীর ক্ষেত্রে মানুষেরা তিনটি মতে বিভক্ত।

১৪০. (ক) অনেকে প্রভুর গুণাবলী প্রমাণ করতে অন্যদের সাথে ঐ গুণাবলীর তুলনা করেন।

(খ) আবার অনেকে গুণাবলী সমূহকে অস্বীকার করেন। এই দৃষ্টিভঙ্গীটি সঠিক , যা অন্য সকল প্রকারের গুনাবলীর সাথে তুলনা না করেই পভুর গুণাবলী প্রমাণ করে ।

১৪১. সূরা আশ শুরা , ১১ নং আয়াত।

১৪২. ষষ্ঠ ইমাম হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেনঃ মহান আল্লাহকে সময় , স্থান , গতি , স্থানান্তর অথবা স্থিরতার ন্যায় গুণাবলী দ্বারা গুণান্বিত করা সম্ভব নয়। বরঞ্চ , তিনিই স্থান , কাল , গতি , স্থানান্তর ও স্থিরতার স্রষ্টা। (বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , ৯৬ নং পৃষ্ঠা।)

১৪৩. ষষ্ঠ ইমাম হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ সর্বদাই জ্ঞানী , কিন্তু এ জন্যে জ্ঞাত বস্তুর প্রয়োজন তার নেই। তিনি সর্বদাই ক্ষমতাশীল , কিন্তু এ জন্যে কুক্ষিগত অস্তিত্বের প্রয়োজন তার নেই। বর্ণনাকারী (রাবী) জিজ্ঞেস করেনঃ তিনি কি কথোপকথনকারী ও ? হযরত জাফর সাদিক (আ.) বললেনঃ কথা ধ্বংসশীল। আল্লাহ ছিলেন। কিন্তু কথা ছিল না। অতঃপর তিনি কথা সৃষ্টি করেন। (বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , ১৪৭ নং পৃষ্ঠা। )

অষ্টম ইমাম হযরত রেজা (আ.) বলেছেনঃ মানুষের ক্ষেত্রে ইচ্ছা তার অন্তরের একটি অবস্থা। তা তার ঐ অবস্থা অনুযায়ী কাজ সৃষ্টি হয়। কিন্তু ইচ্ছা আল্লাহর ক্ষেত্রে কোন সৃষ্টি বা বাস্তবায়নের নামান্তর মাত্র। কেননা , আমাদের মত চিন্তা ধারণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন আল্লাহর নেই। (বিহারূল আনোয়ার , ৩য় খণ্ড ১৪৪ নং পৃষ্ঠা।)

১৪৪. ষষ্ঠ ইমাম হযরত জাফর সাদিক (আ.) বলেনঃ মহান আল্লাহ যখন কোন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন , তখন তিনি তা নির্ধারণ করেন। নির্ধারণের পর তিনি তা মানুষের জন্যে ভাগ্যে পরিণত করেন। এরপর তা তিনি বাস্তবায়ন করেন। (বিহারূল আনোয়ার , ৩য় খণ্ড , ৩৪ নং পৃষ্ঠা)

১৪৫. হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেনঃ মহান আল্লাহ তার সৃষ্টির প্রতি অত্যন্ত দয়ালু । তাই তাদেরকে পাপ কাজে লিপ্ত হতে তিনি কখনোই বাধ্য করেন না , যাতে তারা পাপ জনিত কঠিন শাস্তিভোগ না করে । মহান আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতা এর চাইতে অনেক উর্দ্ধে যে , তিনি কিছু ইচ্ছা করবেন , আর তা বাস্তবায়িত হবে না। (বিহারূল আনোয়ার , ৩য় খণ্ড , ৫ ও ৬ নং পৃষ্ঠা।)

হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.) আরও বলেন : মানুষের ক্ষমতার বাইরে কোন দায়িত্ব তার উপর চাপিয়ে দেয়ার চেয়ে আল্লাহর উদারতা অনেক বেশী। মহান আল্লাহ এতই পরাক্রমশালী যে , তার রাজত্বে তাঁর ইচ্ছে বিরোধী কোন কিছু ঘটার বিষয়টিই কল্পনাতীত। (বিহারূল আনোয়ার , ৩য় খণ্ড , ১৫ নং পৃষ্ঠা।)

১৪৬. এ জগতের সবচেয়ে কম বুদ্ধিসম্পন্ন সাধারণ মানুষটিও তার প্রকৃতিজাত স্বভাবের দ্বারা একজন আইন প্রণেতার প্রয়োজন অনুভব করে । যার ফলে এ বিশ্বের সকল প্রাণীই নির্বিঘ্নে শান্ত্রি ও সৌহার্দের মাঝে নিরাপদ জীবন - যাপন করতে পারে । দর্শনের দৃষ্টিতে চাওয়া , আগ্রহ ও ইচ্ছা পোষণ করা এমন এক বৈশিষ্ট্য , যা অতিরিক্ত ও পরস্পর সম্পর্ক মূলক । অর্থাৎ এধরণের বৈশিষ্ট্য প্রান্তের সাথে সম্পর্কিত । এক কথায় ঐ বৈশিষ্ট্য দু টি প্রান্তের মধ্যে অবস্থিত । যেমনঃ ঐ বৈশিষ্ট্য (কামনা) , কামনাকারী ও কাংখিতবস্তু , এ দু প্রান্ত দ্বয়ের মাঝে বিদ্যমান । তাই এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার যে কাংখিতবস্তু অর্জন যদি অসম্ভব হয় , তাহলে তার আকাংখা অর্থহীন হয়ে পড়ে । অবশেষে সবাই এ ধরণের বিষয়ের (আদর্শ আইন) অভাব বা ত্রুটি উপলদ্ধি করে । আর পূর্ণতাও শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন যদি অসম্ভবই হত , তাহলে অপূর্ণতা বা ত্রুটির অস্তিত্বও অর্থহীন হয়ে পড়ত ।

১৪৭. যেমন : একজন ঠিকাদার তার শ্রমিককে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করতলগত করে । একজন নেতা তার অনুসারীদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করে । ভাড়াটে অর্থের বিনিময়ে মালিকের সত্ত্ব ভোগ করার মাধ্যমে তার উপর কর্তৃত্ব লাভ করে । একজন ক্রেতা বিক্রেতার স্বত্বের ওপর অধিকার লাভ করে । এ ভাবে মানুষ বিভিন্ন ভাবে পরস্পরের উপর প্রভুত্ব বা শ্বাসন ক্ষমতা বিস্তার করে । (-সূরা আযু যুখরূফ , ৩২ নং আয়াত । )

১৪৮. মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন : তারা যদি সত্যবাদী হয় , তাহলে তার (কুরআনের) সদৃশ্য কোন রচনা উপস্থাপন করুক না! (-সূরা আত তুর , ৩৪ নং আয়াত । )

১৪৯. তারা কি এটা বলে , সে এটা (কুরআন) নিজে রচনা করেছে ? বল , তোমরা যদি সত্যবাদীই হও তোমরা এর অনুরূপ দশটি স্বরচিত সূরা আনয়ন কর । (-সূরা আল হুদ , ১৩ নং আয়াত । )

১৫০. মহান আল্লাহ বলেছেন : আর মানুষ কি বলে যে , এটি বানিয়ে এনেছ ? বলে দাও! তোমরা নিয়ে এসো (-কুরআনের সূরার মতই) একটিই সূরা । (-সূরা আল ইউনুস , ৩৮ নং আয়াত । )

১৫১. জনৈক আরব বক্তা বর্ণনা করেছেন , পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে : (ওয়ালিদ অন্য চিন্তা ভাবনার পর সত্যকে অবজ্ঞা করে) বলেঃ এর পর বলেছে : এতো লোক পরস্পরায় প্রাপ্ত যাদু বৈ নয় , এতো মানুষের উক্তি নয় । (-সূরা আল্ মুদ্দাসসির , ২৪ ও ২৫ নং আয়াত । )

১৫২. মহান আল্লাহ তার নবী (সা.)-এর ভাষায় বলেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মাঝে একটা বয়স অতিবাহিত করেছি , তারপরেও কি তোমরা চিন্তা করবে না ? (-সূরা আল ইউনুস , ১৬ নং আয়াত । )

মহান আল্লাহ আরও বলেছেন : আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় দক্ষিণহস্তে কোন কিতাব লিখেননি । (-সূরা আনকাবুত , ৪৮ নং আয়াত।)

মহান আল্লাহ বলেছেন : এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতির্ণ করেছি , তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস । (-সূরা আল বাকারা , ২৩ নং আয়াত । )

১৫৩. মহান আল্লাহ বলেছেন : এরা কি লক্ষ্য করে না , কুরআনের প্রতি ? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কারো পক্ষ থেকে হত , তবে এতে অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত । (-সূরা আন নিসা , ৮২ নং আয়াত । )

১৫৪. বিহারূল আনোয়ার , ৩য় খণ্ড , ১৬১ নং পৃষ্ঠা ।

১৫৫. বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , বারযাখ অধ্যায় ।

১৫৬. বিহারূল আনোয়ার , ২য় খণ্ড , বারযাখ অধ্যায় ।

১৫৭. উপরোক্ত বিষয়টি নিম্নোক্ত গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত হয়েছে । তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ২৬- ৬১ নং পৃষ্ঠা । সীরাতে ইবনে হিশাম , ২য় খণ্ড , ২২৩-২৭১ পৃষ্ঠা । তারিখে আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড ১২৬ নং পৃষ্ঠা । গায়াতুল মারাম , ৬৬৪ নং পৃষ্ঠা ইত্যাদি ।

১৫৮ । রাসূল (সা.) এর উত্তরাধিকারী হিসেবে হযরত ইমাম আলী (আ.) এর অধিকার সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের বেশ কিছু আয়াত উল্লেখ যোগ্য । যেমন , মহান আল্লাহ বলেন : তোমাদের অভিভাবক (পথ নির্দেশক) তো আল্লাহ ও তার রাসূল এবং মু মিন বান্দাদের মধ্যে যে নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং রুক অবস্থায় যাকাত প্রদান করে । (সূরা মায়েদা , ৫৫ নং আয়াত । ) সুন্নী ও শীয়া উভয় তাফসীরকারকগণই এ ব্যাপারে একমত যে , পবিত্র কুরআনের উপরোক্ত আয়াতটি একমাত্র হযরত ইমাম আলী (আ.)-এর মর্যাদায়ই অবতীর্ণ হয়েছে । উক্ত আয়াতের ব্যাখা স্বরূপ শীয়া ও সুন্নী উভয় সম্প্রদায়ের বর্ণিত অসংখ্য হাদীসও এ কথারই প্রমাণ বহন করে । এ বিষয়ে রাসূল (সা.) এর সাহাবী হযরত আবু যার গিফারী (রা.) বলেনঃ একদিন মহানবীর পিছনে যাহরের নামায পড়ছিলাম । এ সময়ে জনৈক ভিক্ষুক সেখানে উপস্থিত হয়ে সবার কাছে ভিক্ষা চাইল । কিন্তু কেউই ঐ ভিক্ষুককে সাহায্য করল না । তখন ঐ ভিক্ষুক তার হাত দু টা আকাশের দিকে উঠিয়ে বললোঃ হে আল্লাহ্ তুমি সাক্ষী থেকো , রাসূল (সা.)-এর এই মসজিদে কেউই আমাকে সাহায্য করলনা । ঐ সময় হযরত ইমাম আলী (আ.) নামাযরত অবস্থায় ছিলেন । তিনি তখন রুকুরত অবস্থায় ছিলেন । হযরত আলী (আ.) তখন রুকু অবস্থাতেই হাতের আঙ্গুল দিয়ে ঐ ভিক্ষুকের প্রতি ইশারা করলেন । ঐ ভিক্ষুকও ইমাম আলী (আ.) এর ইঙ্গিত বুঝতে পেরে তার হাতের আঙ্গুল থেকে আংটি খুলে নিল । এ দৃশ্য দেখে মহানবী (সা.) আকাশের দিকে মাথা উচিয়ে এই প্রার্থনাটি করেছিলেন : হে আল্লাহ আমার ভাই হযরত মুসা (আ.) তোমাকে বলেছিল আমার হৃদয়কে প্রশস্ত করে দাও এবং আমার কাজগুলোকে করে দাও সহজ । আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও যাতে সবাই আমার বক্তব্য অনুধাবন করতে পারে । আর আমার ভাই হারূনকে আমার প্রতিনিধি ও সহযোগীতে পরিণত কর । তখন তোমার ঐশীবাণী অবতীর্ণ হলঃ তোমার ভাইয়ের মাধ্যমে তোমার বাহুকে আমরা শক্তিশালী করব এবং তোমাকে প্রভাব বিস্তারের শক্তি দান করব । সুতরাং , হে আল্লাহ ! আমিও তো তোমারই নবী । তাই আমাকেও হৃদয়ের প্রশস্ততা দান কর । আমার কাজগুলোকেও করে দাও সহজ । আর আলীকে আমার প্রতিনিধি ও সহযোগী হিসেবে নিযুক্ত কর । হযরত আবু যার (রা.) বললেনঃ রাসূল (সা.)-এর কথা শেষ না হতেই পবিত্র কুরআনের আলোচ্য আয়াতটি অবতির্ণ হল । [যাখাইরূল উকবা (তাবারী) ১৬ নং পৃষ্ঠা , ১৩৫৬ হিজরী মিশরীয় সংস্করণ । ]

একই হাদীস সামান্য কিছু শব্দিক পার্থক্য সহ নিম্নোক্ত গ্রন্থ সমূহে উল্লেখিত হয়েছে । (দুররূল মানসুর , ২য় খণ্ড , ২৯৩ নং পৃষ্ঠা । গায়াতুল মারাম-বাহরানী , এ বইয়ের ১০৩ নং পৃষ্ঠায় । )

আলোচ্য আয়াতের অবতরণেরর ইতিহাস বর্ণনায় সুন্নী সূত্রে বর্ণিত ২৪টি হাদীস এবং শীয়া সূত্রে বর্ণিত ১৯টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে । মহান আল্লাহ বলেন : আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীন থেকে নিরাশ হয়ে গেছে । অতএব তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর । আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীন কে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম । তোমাদের প্রতি আমার অবদান (নিয়ামত) সম্পূর্ণ করে দিলাম , এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম । (সূরা মায়েদা ৩ নং আয়াত । )

বাহ্যত উক্ত আয়াতের বক্তব্য হচ্ছে এই যে , এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে কাফেররা এই ভেবে আশান্বিত ছিল যে , শীঘ্রই এমন একদিন আসবে , যেদিন ইসলাম ধ্বংস হয়ে যাবে । কিন্তু মহান আল্লাহ উক্ত আয়াত অবতীর্ণের মাধ্যমে চিরদিনের জন্যে কাফেরদেরকে নিরাশ করলেন । আর এটাই ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব লাভ ও তার ভিত্তিকে শক্তিশালী হওয়ার কারণ ঘটিয়েছিল । এটা সাধারণ কোন ইসলামী নির্দেশজারীর মত স্বাভাবিক কোন ঘটনা ছিল না । বরং এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল , যার উপর ইসলামের অস্তিত্ব টিকে থাকা নির্ভরশীল ছিল । এই সূরার শেষের অবতীর্ণ আয়াতও আলোচ্য বিষয়ের সাথে সম্পর্কহীন নয় ।

মহান আল্লাহ বলেছেন : হে রাসূল! পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতির্ণ হয়েছে । আর যদি আপনি এরূপ না করেন তবে আপনি তার (প্রতিপালকের) রিসালাতের কিছুই পৌছালেন না । আল্লাহ আপনাকে অত্যাচারীদের (অনিষ্ট) হতে রক্ষা করবেন । (সূরা মায়েদা , ৬৭ নং আয়াত । )

উক্ত আয়াত থেকে প্রতীয়মাণ হয় যে , মহান আল্লাহ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন , যা সাধিত না হলে ইসলামের মূলভিত্তি ও বিশ্বনবী (সা.) এর এই মহান মিশন বা রিসালাত চরম বিপদের সম্মুখীন হবে । তাই আল্লাহ এ ব্যাপারে বিশ্বনবী (সা.) কে নির্দেশ দেন । কিন্তু বিশ্বনবী (সা.) ঐ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সাধিত হওয়ার ব্যাপারে জনগণের বিরোধীতা ও বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হওয়ার আশংকা করলেন । এমতাবস্থায় ঐ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি অতিদ্রুত সমাধা করার জন্যে জোর তাগিদ সম্বলিত নির্দেশ মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশ্বনবী (সা.) এর প্রতি জারী করা হয় । মহান আল্লাহ বিশ্বনবী (সা.)-এর প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে , ঐ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সমাধানের ব্যাপারে অবশ্যই অবহেলা কর না এবং ঐ ব্যাপারে কাউকে ভয়ও কর না । এ বিষয়টি অবশ্যই ইসলামী শরীয়তের কোন বিধান ছিল না । কেননা এক বা একাধিক ইসলামী বিধান প্রচারের গুরুত্ব এত বেশী হতে পারে না যে , তার অভাবে ইসলামের মূলভিত্তি ধ্বংস হয়ে যাবে । আর বিশ্বনবী (সা.) -ও কোন ঐশী বিধান বর্ণনার ক্ষেত্রে আদৌ ভীত ছিলেন না ।

উপরোক্ত দলিল প্রমাণাদি এটাই নির্দেশ করে যে , আলোচ্য আয়াতটি গাদীরে খুম নামক স্থানে হযরত ইমাম আলী ইবনে আবি তালিবের (আ.) বিলায়াত সংক্রান্ত ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে । অসংখ্য সুন্নী ও শীয়া তাফসীরকারকগণই এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেন ।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন : বিশ্বনবী (সা.) হযরত ইমাম আলী (আ.) এর প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন । এরপর বিশ্বনবী (সা.) ইমাম আলী (আ.) এর হাত দু টা উপরদিকে উত্তোলন করেন । এমনকি বিশ্বনবী (সা.) হযরত আলী (আ.) এর হাত এমনভাবে উত্তোলন করেছেন যে , মহানবী (সা.) এর বগলের শুভ্র অংশ প্রকাশিত হয়ে পড়েছিল । এমতাবস্থায় পবিত্র কুরআনের এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় : আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীন কে পূর্ণঙ্গ করে দিলাম । তোমাদের প্রতি আমার অবদান (নেয়ামত) সম্পূর্ণ করে দিলাম , এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম । ( সূরা মায়েদা , ৩ নং আয়াত । )

উক্ত আয়াতটি অবতির্ণ হওয়ার পর মহানবী (সা.) বললেন : আল্লাহ্ আকবর কারণ , বিশ্বনবী (সা.) এর পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে হযরত ইমাম আলী (আ.)-এর বিলায়াত (কর্তৃত্ব) প্রমাণিত হওয়ার মাধ্যমে আজ আল্লাহর নেয়ামত ও সন্তুষ্টি এবং ইসলামের পূর্ণত্ব প্রাপ্তি ঘটলো । অতঃপর উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে মহানবী (সা.) বললেনঃ আমি যাদের অভিভাবক , আজ থেকে আলীও তাদের অভিভাবক । হে আল্লাহ! আলীর বন্ধুর প্রতি বন্ধু বৎসল হও ও আলীর শত্রুর সাথে শত্রুতা পোষণ কর । যে তাকে (আলীকে) সাহায্য করবে , তুমিও তাকে সাহায্য কর । আর যে আলীকে ত্যাগ করবে , তুমিও তাকে ত্যাগ কর ।

জনাব আল্লামা বাহরানী তার গায়াতুল মারাম নামক গ্রন্থের ৩৩৬ নং পৃষ্ঠায় উক্ত আয়াতের অবতরণের কারণ প্রসঙ্গে সুন্নী সূত্রে বর্ণিত ৬টি হাদীস এবং শীয়া সূত্রে বর্ণিত ১৫টি হাদীস উদ্ধৃত করেছেন ।

সারাংশ : ইসলামের শত্রুরা ইসলামকে ধ্বংস করার স্বার্থে কোন প্রকার অনিষ্ট সাধনে কখনোই কুন্ঠাবোধ করেনি । কিন্তু এত কিছুর পরও তারা ইসলামের সামান্য

পরিমাণ ক্ষতি করতেও সক্ষম হয়নি । ফলে ব্যর্থ হয়ে তারা সবদিক থেকেই নিরাশ হয়ে পড়ে । কিন্তু এর পরও শুধু মাত্র একটি বিষয়ে তাদের মনে আশার ক্ষীণ প্রদীপ জ্বলছিল । আর সেই আশার সর্বশেষ বস্তুটি ছিল এই যে , তারা ভেবে ছিল , যেহেতু মহানবী (সা.)-ই ইসলামের রক্ষক ও প্রহরী , তাই তার মৃত্যুর পর ইসলাম অভিভাবকহীন হয়ে পড়বে । তখন ইসলাম অতি সহজেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে । কিন্তু গাদীরে খুম নামক স্থানে সংঘটিত ঐতিহাসিক ঘটনা তাদের হৃদয়ে লুকানো আশার শেষ প্রদীপটাও নিভিয়ে দিল । কারণ , গাদীরে খুমে মহানবী (সা.) , হযরত ইমাম আলী (আ.) কে তাঁর পরবর্তী দায়িত্বশীল ও ইসলামের অভিভাবক হিসেবে জনসমক্ষে ঘোষণা প্রদান করেন । এমনকি বিশ্বনবী (সা.) হযরত ইমাম আলী (আ.)-এর পর ইসলামের এই দায়িত্বভার মহানবী (সা.)-এর পবিত্র বংশ তথা হযরত আলী (আ.) এর ভবিষতে বংশধরদের জন্যে নির্ধারণ করেন । (এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্যের জন্যে হযরত আল্লামা তাবাতাবাঈ রচিত তাফসীর আল মিজান নামক কুরআনের তাফসীরের ৫ম খণ্ডের ১৭৭ থেকে ২১৪ নং পৃষ্ঠা এবং ৬ষ্ঠ খণ্ড ৫০ থেকে ৫৪ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য । )

হাদীসে গাদীরে খুম

বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজ্জ শেষে মদীনার দিকে ফিরে যাচ্ছিলেন , পথিমধ্যে গাদীরে খুম নামক একটি স্থানে পৌছানোর পর পবিত্র কুরআনের সূরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াতটি অবতির্ণ হয় । মহানবী (সা.) তাঁর যাত্রা থামিয়ে দিলেন । অত:পর তার আগে চলে যাওয়া এবং পেছনে আগত সকল মুসলমানদেরকে তার কাছে সমবেত হবার আহবান করেন । সবাই মহানবী (সা.)এর কাছে সমবেত হবার পর তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এক মহা মূল্যবান ও ঐতিহাসিক বক্তব্য প্রদান করেন । এটাই সেই ঐতিহাসিক গাদীরে খুমের ভাষণ হিসেবে পরিচিত । এই ভাষণের মাধ্যমেই তিনি হযরত ইমাম আলী (আ.)-কে তাঁর পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেন ।

হযরত বুরআ (রা.) বলেনঃ বিদায় হজ্জের সময় আমি মহানবীর পবিত্র সান্নিধ্যে উপস্থিত ছিলাম । যখন আমরা গাদীরে খুম নামক স্থানে পৌছলাম , তখন মহানবী (সা.) আমাদেরকে ঐ স্থানটি পরিস্কার করার নির্দেশ দিলেন । এরপর তিনি হযরত ইমাম আলী (আ.)-কে তার ডান দিকে এনে তার হাত দু টি জনসমক্ষে উপর দিকে উচিয়ে ধরলেন । তারপর তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের অভিভাবক (কর্তা) নই ? সবাই উত্তর দিল , আমরা সবাই আপনারই অধীন । অতঃপর তিনি বললেন : আমি যার অভিভাবক ও কর্তা আলীও তার অভিভাবক ও কর্তা হবে । হে আল্লাহ্! আলীর বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব কর এবং আলীর শত্রুর সাথে শত্রুতা কর । এরপর দ্বিতীয় খলিফা ওমর বিন খাত্তাব হযরত আলী (আ.) কে সম্বোধন করে বললেন : তোমার এই অমূল্য পদমর্যাদা আরও উন্নত হোক! কেননা তুমি আমার এবং সকল মু মিনদের অভিভাবক হয়েছ । -আল্ বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ , ৫ম খণ্ড , ২০৮ নং পৃষ্ঠা , এবং ৭ম খণ্ড , ৩৪৬ নং পৃষ্ঠা । যাখাইরূল উকবা , (তাবারী) , ১৩৫৬ হিজরী মিশরীয় সংস্করণ , ৬৭ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহু , (ইবনে সাব্বাগ) , ২য় খণ্ড , ২৩ নং পৃষ্ঠা । খাসাইসুন -নাসাঈ , ১৩৫৯ হিজরীর নাজাফীয় সংস্করণ , ৩১ নং পৃষ্ঠা ।

জনাব আল্লামা বাহরানী (রহঃ) তার গায়াতুল মারাম নামক গ্রন্থে সুন্নী সূত্রে বর্ণিত ৮৯ টি হাদীস এবং শীয়া সূত্রে বর্ণিত ৪৩টি হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন ।

সাফিনাতুন নুহের হাদীস

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেনঃ মহানবী (সা.) বলেছেন যে , আমার আহলে বাইতের উদাহরণ হযরত নুহ (আ.) এর নৌকার মত । যারা নৌকায় আরহণ করল , তারাই রক্ষা পল । আর যারা তা করল না তারা সবাই ডুবে মরল । ( যাখাইরূল উকবা ২০ নং পৃষ্ঠা । আস সাওয়াইকুল মুহরিকাহ (ইবনে হাজার) মিশরীয় সংস্করণ , ৮৪ ও ১৫০ নং পৃষ্ঠা । তারীখুল খুলাফাহ (জালালুদ্দীন আস সূয়ুতী) ৩০৭ নং পৃষ্ঠা । নরুল আবসার (শাবালঞ্জি) মিশরীয় সংস্করণ , ১১৪ নং পৃষ্ঠা । )

জনাব আল্লামা বাহরানী , তার গায়াতুল মারাম নামক গ্রন্থের ২৩৭ নং পৃষ্ঠায় সুন্নীদের ১১টি সূত্র থেকে এবং শীয়াদের ৭টি সূত্র থেকে এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ।

হাদীসে সাকালাইন

হযরত যাইদ বিন আরকাম (রা.) বলেন : মহানবী (সা.) বলেছেনঃ মনে হচ্ছে আল্লাহ যেন আমাকে তাঁর দিকেই আহবান জানাচ্ছেন , অবশ্যই আমাকে তার প্রত্যুত্তর দিতে হবে । তবে আমি তোমাদের মাঝে অত্যন্ত ভারী (গুরুত্বপূর্ণ) দু টি জিনিস রেখে যাচ্ছি : তা হচ্ছে আল্লাহর এই ঐশী গ্রন্থ (কুরআন) এবং আমার পবিত্র আহলে বাইত । তাদের সাথে কেমন ব্যাবহার করবে , সে ব্যাপারে সতর্ক থেকো । এ দু টা (পবিত্র কুরআন ও আহলে বাইত) জিনিষ হাউজে কাউসারে (কেয়ামতের দিন) আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনোই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না । (আল বিদাহয়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্ ৫ম খণ্ড , ২০৯ নং পৃষ্ঠা । যাখাইরূল উকবা , (তাবারী) ১৬ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহু , ২২নং পৃষ্ঠা । খাসইসুন্ -নাসাঈ , ৩০ নং পৃষ্ঠা । আস্ সাওয়াইকুল মুহরিকাহ , ১৪৭ নং পৃষ্ঠা । )

গায়াতুল মারাম গ্রন্থে ' আল্লামা বাহরানী ৩৯টি সুন্নী সূত্রে এবং ৮২টি শীয়া সূত্রে উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন । হাদীসে সাকালাইন একটি বিখ্যাত ও সর্বজনস্বীকৃত এবং অকাট্যভাবে প্রমাণিত সূত্রে বর্ণিত । উক্ত হাদীসটি অসংখ্য সূত্রে এবং বিভিন্ন ধরণের বর্ণনায় (একই অর্থে ) বর্ণিত হয়েছে । উক্ত হাদীসের সত্যতার ব্যাপারে সুন্নী ও শীয়া , উভয় সম্প্রদায়ই স্বীকৃতি প্রদান করেছে । এ ব্যাপারে তারা উভয়ই সম্পূর্ণরূপে একমত । আলোচ্য হাদীসটি এবং এ ধরণের হাদীস থেকে বেশ কিছু বিষয় আমাদের কাছে প্রমাণিত হয় । তা হল :

১. পবিত্র কুরআন যেভাবে কেয়ামতের দিন পর্যন্ত মানব জাতির মাঝে টিকে থাকবে , মহানবী (সা.) এর পবিত্র আহলে বাইত ও তার পাশাপাশি মানব জাতির মাঝে কেয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবেন । অর্থাৎ এ বিশ্বের কোন যুগই ইমাম বা প্রকৃত নেতাবিহীন অবস্থায় থাকবে না ।

২. বিশ্বনবী (সা.) মানব জাতির কাছে এই দু টো অমূল্য আমানত গচ্ছিত রাখার মাধ্যমে তাদের সর্ব প্রকার ধর্মীয় ও জ্ঞানমূলক প্রয়োজন মেটানো এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে গেছেন । মহানবী (সা.) তাঁর পবিত্র আহলে বাইতগণকে (আ.) সকল প্রকার জ্ঞানের অমূল্য রত্ন ভান্ডার হিসেবে মুসলমানদের মাঝে পরিচিত করিয়ে দিয়েছেন । মহানবী (সা.) তাঁর পবিত্র আহলে বাইতগণের (আ.) যে কোন কথা ও কাজকেই নির্ভরযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন ।

৩. পবিত্র কুরআন ও মহানবী (সা.)-এর পবিত্র আহলে বাইতকে অবশ্যই পরস্পর থেকে পৃথক করা যাবে না । মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইতের পবিত্র জ্ঞানধারা থেকে মুখ ফিরিয়ে তাদের উপদেশ ও হেদায়েতের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাবার অধিকার কোন মুসলমানেরই নেই ।

৪. মানুষ যদি পবিত্র আহলে বাইতগণের (আ.) আনুগত্য করে এবং তাদের কথা মেনে চলে , তাহলে কখনোই তারা পথভ্রষ্ট হবে না । কেননা , তারা সর্বদাই সত্যের সাথে অবস্থান করছেন ।

৫. মানুষের জন্যে প্রয়োজনীয় সর্ব প্রকার ধর্মীয় ও অন্য সকল জ্ঞানই পবিত্র আহলে বাইতগণের (আ.) কাছে রয়েছে । তাই যারা তাদের অনুসরণ করবে , তারা কখনোই পথভ্রষ্ট হবে না , এবং তারা অবশ্যই জীবনের প্রকৃত সাফল্য লাভ করবে । অর্থাৎ , পবিত্র আহলে বাইতগণ (আ.) সর্ব প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে মুক্ত ও পবিত্র ।

এ থেকেই বোঝা যায় যে , পবিত্র আহলে বাইত বলতে মহানবী (সা.) এর পরিবারের সকল আত্মীয়বর্গ ও বংশধরকেই বোঝায় না । বরং পবিত্র আহলে বাইত বলতে নবী বংশের বিশেষ ব্যক্তিবর্গকেই বোঝানো হয়েছে । ইসলাম সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী হওয়া এবং সর্বপ্রকার পাপ ও ভুল থেকে তাদের অস্তিত্ব মুক্ত ও পবিত্র হওয়াই ঐ বিশেষ ব্যক্তিবর্গের বৈশিষ্ট্য । যাতে করে তারা প্রকৃত নেতৃত্বের গুণাবলীর অধিকারী হতে পারেন । ঐ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ হচ্ছেন : হযরত ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) এবং তার বংশের অন্য এগারোজন সন্তান । তাঁরা প্রত্যেকেই একের পর এক ইমাম হিসেবে মনোনীত হয়েছেন । একই ব্যাখা মহানবী (আ.) এর অন্য একটি হাদীসে পাওয়া যায় ।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেনঃ আমি মহানবী (সা.) কে জিজ্ঞাস করলাম যে , আপনার যেসব আত্মীয়কে ভালবাসা আমাদের জন্যে ওয়াজিব , তারা কারা ? মহানবী (সা.) বললেনঃ তারা হলেন আলী , ফাতিমা , হাসান এবং হোসাইন । (-ইয়ানাবী-উল-মুয়াদ্দাহ , ৩১১ নং পৃষ্ঠা । )

হযরত যাবির (রা.) বলেন : বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন : মহান আল্লাহ প্রত্যেক নবীর বংশকেই স্বীয় পবিত্র সত্তার মাঝে নিহিত রেখেছেন । কিন্তু আমার বংশকে আলীর মাঝেই সুপ্ত রেখেছেন । (-ইয়ানাবী-উল-মুয়াদ্দাহ , ৩১৮ নং পৃষ্ঠা । )

হাদীসে হাক্ক

হযরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে , তিনি বলেছেনঃ আলী পবিত্র কুরআন ও সত্যের সাথে রয়েছে । আর পবিত্র কুরআন ও সত্যও আলীর সাথে থাকবে এবং তারা হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর বিচ্ছিন হবে না । উক্ত হাদীসটি গায়াতুল মারাম গ্রন্থের ৫৩৯ নং পৃষ্ঠায় একই অর্থে সুন্নী সূত্রে ১৪টি এবং শীয়া সূত্রে ১০টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে ।

হাদীসে মানযিলাত

হযরত সা দ বিন ওয়াক্কাস (রা.) বলেনঃ আল্লাহর রাসূল (সা.) হযরত আলী (আ.) কে বলেছেনঃ তুমি কি এতেই সন্তুষ্ট নও যে , তুমি (আলী) আমার কাছে মুসা (নবী) আর হারুনের মত ? শুধু এই টুকুই পার্থক্য যে , আমার পর আর কোন নবী আসবে না । (বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ , ৭ম খণ্ড , ৩৩৯ নং পৃষ্ঠা । যাখাইরুল উকবা , (তাবারী ) , ৫৩ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ , ২১ নং পৃষ্ঠা । কিফায়াতুত তালিব (গাঞ্জী শাফেয়ী) , ১১৪৮ - ১৫৪ পৃষ্ঠা । খাসাইসুন্ - নাসাঈ , ১৯- ২৫ নং পৃষ্ঠা । আস্ সাওয়াইকুল মুরিকাহ , ১৭৭ নং পৃষ্ঠা । ) গায়াতুল মারাম গ্রন্থের ১০৯ নং পৃষ্ঠায় জনাব আল্লামা বাহরানী উক্ত হাদীসটি ১০০টি সুন্নী সূত্রে এবং ৭০টি শীয়া সূত্রে বর্ণনা করেছেন ।

আত্মীয়দের দাওয়াতের হাদীস

মহানবী (সা.) তার নিকট আত্মীয়দেরকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন । আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়া শেষ হওয়ার পর তিনি তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন : এমন কোন ব্যক্তির কথা আমার জানা নেই , যে আমার চেয়ে উত্তম কিছু তার জাতির জন্যে উপহার স্বরূপ এনেছে । মহান আল্লাহ তোমাদেরকে তার প্রতি আহবান জানানোর জন্যে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন । অতএব তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে , যে আমাকে এ পথে সহযোগিতা করবে ? আর সে হবে আমার উত্তরাধিকারী এবং আমার খলিফা বা প্রতিনিধি । উপস্থিত সবাই নিরুত্তর রইল । অথচ আলী (আ.) যদিও উপস্থিত সবার মাঝে কনিষ্ট ছিলেন , তিনি বললেনঃ আমিই হব আপনার প্রতিনিধি এবং সহযোগী । অতঃপর মহানবী (সা.) নিজের হাত তাঁর ঘাড়ের উপর রেখে বললেন : আমার এ ভাইটি আমার উত্তরাধিকারী এবং আমার খলিফা । তোমরা সবাই অবশ্যই তাঁর আনুগত্য করবে । এ দৃশ্য প্রত্যক্ষের পর উপস্থিত সবাই সেখান থেকে উঠে গেল এবং এ বিষয় নিয়ে ঠাট্রা-বিদ্রূপ করতে লাগলো । তারা জনাব আবু তালিবকে বললঃ মুহাম্মদ তোমাকে তোমার ছেলের আনুগত্য করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছে । (তারীখু আবিল ফিদা , ১ম খণ্ড , ১১৬ নং পৃষ্ঠা । )

এ জাতীয় হাদীসের সংখ্যা অনেক , যেমন : হযরত হুযাইফা বলেন মহানবী (সা.) বলেছেনঃ তোমরা যদি আমার পরে আলীকে খলিফা ও আমার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নিযুক্ত কর , তাহলে তোমরা তাকে একজন দিব্য দৃষ্টি সম্পন্ন পথ প্রদর্শক হিসেবেই পাবে , যে তোমাদেরকে সৎপথে চলতে উদ্বুদ্ধ করবে । তবে আমার মনে হয় না যে , এমন কাজ তোমরা করবে । (খলিফাতুল আউলিয়া , আবু নাঈম , ১ম খণ্ড , ৬৪ নং পৃষ্ঠা । কিফায়াতুত তালিব , ৬৭ নং পৃষ্ঠা , ১৩৫৬ হিজরীর নাজাফিয় মুদ্রণ । )

হযরত ইবনু মারদুইয়াহ (রা.) বলেনঃ মহানবী (সা.) বলেছেন যে , যে ব্যক্তি আমার মতই জীবন যাপন ও মৃত্যুবরণ করতে চায় এবং বহেশতবাসী হতে চায় , সে যেন আমার পরে আলীর প্রেমিক হয় ও আমার পবিত্র আহলে বাইতের অনুসারী হয় । কারণ , তারা আমারই রক্ত সম্পর্কের ঘনিষ্ট আত্মিয়বর্গ এবং আমারই কাদামাটি থেকে সৃষ্টি হয়েছে । আমার জ্ঞান ও বোধশক্তি তারাই লাভ করেছে । সুতরাং হতভাগ্য সেই , যে তাদের পদমর্যাদাকে অস্বীকার করবে । অবশ্যই আমার সুপারিশ (শাফায়াত) থেকে তারা বঞ্চিত হবে । (মুন্তাখাবু কানযুল উম্মাল , মুসনাদে আহমাদ , ৫ম খণ্ড , ৯৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৫৯ । আল বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৫ম খণ্ড , ২৭৭ নং পৃষ্ঠা । শারহু ইবনি আবিল হাদিদ , ১ম খণ্ড , ১৩৩ নং পৃষ্ঠা । আল কামিল ফিত তারীখ (ইবনে আসির) , ২য় খণ্ড , ২১৭ নং পৃষ্ঠা । তারীখুর রাসূল ওয়াল মুলুক (তাবারী) , ২য খণ্ড , ৪৩৬ নং পৃষ্ঠা ।

১৬০ । আল কামিল ফিত তারীখ (ইবনে আসির) , ২য় খণ্ড , ২৯২ নং পৃষ্ঠা । শারহু ইবনি আবিল হাদিদ , ১ম খণ্ড , ৪৫ নং পৃষ্ঠা ।

১৬১ । শারহু ইবনি আবিল হাদিদ , ১ম খণ্ড , ১৩৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৬২ । তারিখে ইয়াকুবী , ২য় খণ্ড , ১৩৭ নং পৃষ্ঠা ।

১৬৩ । আল বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্ , ৬ষ্ঠ খণ্ড , ৩১১ নং পৃষ্ঠা ।

১৬৪ । উদাহরণ স্বরূপ পবিত্র কুরআনের এ আয়াতটি উল্লেখযোগ্য : শপথ এই সুস্পষ্ট কিতাবের । আমরা কুরআনকে আরবী ভাষায় (বর্ণনা) করেছি , যাতে তোমারা চিন্তা কর । নিশ্চয়ই এই কুরআন আমার কাছে সমুন্নত ও অটল রয়েছে লওহে- মাহফুজে । (সূরা যুখরূফ , ২-৪ নং আয়াত । )

১৬৫ । উদাহরণ স্বরূপ নিম্নোক্ত হাদীসটি উল্লেখযোগ্য । মহান আল্লাহ মে রাজ সংক্রান্ত হাদীসে মহানবী (সা.) কে বলেন : যে ব্যক্তি তার কার্য ক্ষেত্রে আমার (আল্লার) সন্তুষ্টি চায় । তাকে তিনটা বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হতে হবে ।

ক. অজ্ঞতামূলক ভাবে প্রভুর প্রসংশা না করা ।

খ. অন্যমনষ্ক অবস্থায় প্রভুকে স্মরণ না করা ।

গ. প্রভুর ভালবাসায় যেন অন্যবস্তুর প্রেম কোন প্রভাব বিস্তার না করে । এমতবাস্থায় যে আমাকে ভালবাসবে আমিও তাকে ভালবাসবো এবং তার অন্তদৃষ্টি উন্মুচিত করে দেব , আমার ঐশ্বর্যের প্রতি । তার দৃষ্টি সম্মুখে সৃষ্টির প্রকৃতরূপ প্রকাশিত হবে । তাকে রাতের আধারে অথবা সূর্যালোকে এমনকি জনগণের মাঝে বা নির্জনেও সাফল্যমণ্ডিত করবো । তখন সে আমার ও ফেরেস্তাদের কথা শুনতে পাবে এবং যে সকল রহস্য আমি আমার সৃষ্টিকূল থেকে গোপন রেখেছি তাও সে জানতে পারবে । আর তাকে শালীনতার পরিচ্ছদ পরিধান করানো হবে , যাতে সৃষ্টিকূল তার সাথে শালীনতাপূর্ণ সম্পর্ক রাখে । সে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ভূপৃষ্ঠে পথ চলবে । তার অন্তরকে ক্রন্দনময় ও দৃষ্টিশক্তিকে বিচক্ষণ করে দেন । তখন সে বহেশত ও দোযখের সব কিছু কেই সুস্পষ্ট প্রত্যক্ষ করতে পারবে । কেয়মতের দিন মহাভয় ও ভীতিতে মানুষের অবস্থা কেমন হবে তাও তাকে জানানো হবে । -বিহারূল আনোয়ার , (কোনম্পানী মুদ্রণ) ১৭ নং খণ্ড , ৯ নং পৃষ্ঠা । ] অন্য একটি হাদীস : আবি আব্দুল্লাহ্ (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে তিনি বলেন : একদিন রাসূল (সা.) এর সাথে হারেস বিন মালেক আন নু মানী আল্ আনসারীর সাক্ষাত হল । অতঃপর রাসূল (সা.) তাকে বললেনঃ তুমি কেমন আছো , হে হারেস বিন মালিক ? সে বললো : হে রাসুলুল্লাহ্ (সা.) , প্রকৃত মুমিনের অবস্থায় । রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেনঃ প্রত্যেকটি বিষয়ের যুক্তি বা প্রমাণ আছে , তোমার একথার যুক্তি বা প্রমাণ কি ? সে বললো : হে রাসূলুল্লাহ (সা.) , পার্থিবজগতে আমার আত্মার অবস্থা অবলোকন করেছি যার ফলে সারারাত জাগরণে এবং সমস্ত দিন রোযা রেখে কেটেছে । পৃথিবী থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে এমনকি যেন আমি দেখতে পাচ্ছি প্রভুর আরশ কে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে মানুষের হিসাব নিকাশের জন্য । এখনই যেন আমি দেখতে পাচ্ছি বহেশতবাসীরা বেহেশতে আনন্দ উল্লাস করছে আরও শুনতে পাচ্ছি জাহান্নামীদের অগ্নিদগ্ধের বিকট আর্তনাদ । অতঃপর রাসূল (সা.) বললেনঃ তুমি এমন এক বান্দা যার অন্তরকে প্রভু ঐশী নুরে জ্যোতির্ময় করেছেন । (আল ওয়াফী , ৩য় খণ্ড , ৩৩ নং পৃষ্ঠা । )

১৬৬. মহান আল্লাহ বলেন : আমি তাদেরকে নেতা মনোনীত করলাম । তারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ পদর্শন করত । আমি তাদের প্রতি সৎকাজ করার ওহী নাযিল করলাম (সূরা আল আম্বিয়া , ৭৩ নং আয়াত । )

আল্লাহ অন্যত্র বলেন : তারা ধৈর্য অবলম্বন করতো বিধায় আমি তাদের মধ্য থেকে নেতা মনোনীত করেছিলাম , যারা আমার আদেশে পথপ্রদর্শন করত । (সূরা সিজদাহু , ২৪ নং আয়াত । )

উপরোক্ত আয়াতসমূহ থেকে বোঝা যায় যে , ইমামগণ জনগণকে উপদেশ প্রদান ও বাহ্যিকভাবে সৎপথে পরিচালিত করা ছাড়াও একধরণের বিশেষ হেদায়েত ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের অধিকারী ছিলেন , যা সাধারণ জড়জগতের উর্ধ্বে । তাঁরা তাদের অন্তরের আধ্যাত্মিক জাতি দিয়ে গণমানুষের অন্তরের অন্তঃস্থলে প্রভাব বিস্তার করেন । আর এভাবে তাঁরা বিশেষ ক্ষমতা বলে অন্যদেরকে আত্মিক উন্নতি ও শ্রেষ্ঠত্বের সিড়িতে আরোহণে সাহায্য করেন ।

১৬৭ উদাহরণ স্বরূপ কিছু হাদীস : যাবের বিন সামরাতেন বলেন : রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি যে , বারজন প্রতিনিধি আবির্ভাবের পূর্বে এই অতীব সম্মানীত ধর্মের সমাপণ ঘটবে না । যাবের বললেন : জনগণ তাকবির ধ্বনিতে গগন মুখরিত করে তুললো । অতঃপর রাসূল (সা.) আস্তে কিছু কথা বললেন । আমি আমার বাবাকে বললাম : কি বল্লেন ? বাবা বললেন : রাসূল (সা.) বললেনঃ তারা সবাই কুরাইশ বংশের হবেন । (সহীহু আবু দাউদ , ২য় খণ্ড ২০৭ নং পৃষ্ঠা । মুসনাদে আহমাদ , ৫ম খণ্ড , ৯২ নং পৃষ্ঠা । )

একই অর্থে বর্ণিত আরও অসংখ্য হাদীস রয়েছে । স্থানাভাবে এখানে সেগুলো উল্লেখ করা হচ্ছে না । অন্য একটি হাদীসঃ সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে , তিনি বলেনঃ এমতাবস্থায় রাসূল (সা.) এর নিকট উপস্থিত হলাম যে যখন হোসাইন তার উরুর উপর ছিল এবং তিনি তার চোখ ও ওষ্ঠতে চুম্বন দিচ্ছেন আর বলছেন যে , তুমি সাইয়্যেদের সন্তান সাইয়্যেদ এবং তুমি ইমামের সন্তান ইমাম , তুমি ঐশী প্রতিনিধির সন্তান ঐশী প্রতিনিধি । আর তুমি নয় জন ঐশী প্রতিনিধিরও বাবা , যাদের নবম ব্যক্তি হলেন কায়েম (ইমাম মাহদী) । [-ইয়ানাবী-উল্ -মুয়াদ্দাহ , (সুলাইমান বিন ইব্রাহীম কান্দুযি) ৭ম মুদ্রণ , ৩০৮ নং পৃষ্ঠা । )]

১৬৮. নিম্নলিখিত গ্রন্থগুলো দ্রষ্টব্যঃ

১. আল-গাদীর - আল্লামা আমিনী ।

২. গায়াতুল মারাম - সাইয়্যেদ হাশিম বাহরানী ।

৩. ইসবাতুল হুদাহ -মুহাম্মদ বিন হাসান আল হুর আল্ আমিলী ।

৪. যাখাইরূল উকবা মহিবুদ্দিনে আহমাদ বিন আবদিল্লাহ আত তাবারী ।

৫. মানাকিব - খারাযমি ।

৬. তাযকিরাতুল খাওয়াস - সিবতু ইবনি জাউযি ।

৭. ইয়া নাবী উল মুয়াদ্দাহ , সুলাইমান বিন ইব্রাহীম কান্দুযি হানাফী ।

৮. ফসুলুল মুহিম্মাহ - ইবনু সাব্বাগ ।

৯. দালাইলুল ইমামাহ -মুহাম্মদ বিন জারির তাবারী ।

১০. আন নাস্ ওয়াল ইজতিহাদ আল্লামা শারাফুদ্দীন আল মুসাভী ।

১১. উসুলুল ক্বাফী , ১ম খণ্ড -মুহাম্মদ বিন ইয়াকুব আল কুলাইনী ।

১২. কিতাবুল ইরশাদ -শেইখ মুফিদ ।

১৬৯. ফসুলুল মুহিম্মাহ (২য় মুদ্রণ) , ১৪ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে খারাযমি ১৭ নং পৃষ্ঠা ।

১৭০. যাখাইরূল উকবা ১৩৫৬ হিজরী মিশরীয় মুদ্রণ , ৫৮ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে খারাযমি ১৩৮৫ হিজরী নাজাফিয় মুদ্রণ , ১৬ থেকে ২২ নং পৃষ্ঠা । ইয়া নাবীউল মুয়াদ্দাহ (৭ম মুদ্রণ) , ৬৮ থেকে ৭২ নং পৃষ্ঠা ।

১৭১. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) , ১৩৭৭ হিজরী তেহরানের মুদ্রণ , ৪ নং পৃষ্ঠা । ইয়ানাবীউল মুয়াদ্দাহ ১২২ নং পৃষ্ঠা ।

১৭২. ফসুলুল মুহিম্মাহ ২৮ থেকে ৩০ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ১৩৮৩ হিজরী নাজাফিয় সংস্করণ , ৩৪ নং পৃষ্ঠা । ইয়া নাবীউল মুয়াদ্দাহ ১০৫ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে খারাযমি ৭৩ থেকে ৭৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৩. ফসুলুল মুহিম্মাহ ৩৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৪. ফসুলুল মুহিম্মাহ ২০ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ২০ থেকে ২৪ নং পৃষ্ঠা । ইয়া নাবীউল মুয়াদ্দাহ ৫৩ থেকে ৬৫ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৫. তাযকিরাতুল খাওয়াস ১৮ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ২১ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে খারাযমি ৭৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৬. মানাকিবে আলে আবি তালিব (মুহাম্মদ বিন আলী বিন শাহরের আশুব) , কোমে মুদ্রিত , ৩য় খণ্ড , ৬২ ও ২১৮ নং পৃষ্ঠা । গায়াতুল মারাম ৫৩৯ নং পৃষ্ঠা । ইয়া নাবীউল মুয়াদ্দাহ ১০৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৭. মানাকিবে আলে আবি তালিব ৩য় খণ্ড , ৩১২ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ্ ১১৩ থেকে ১২৩ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ১৭২ থেকে ১৮৩ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৮. তাযকিরাতল খাওয়াস ২৭ নং পৃষ্ঠা ।

১৭৯. তাযকিরাতুল খাওয়াস ২৭ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে খারাযমি ৭১ নং পৃষ্ঠা । ১৮০. মানাকিব আলে আবি তালিব ৩য় খণ্ড , ২২১ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে খারাযমি ৯২ নং পৃষ্ঠা ।

১৮১. নাহজুল বালাগা ৩য় খণ্ড , ২৪ নং অধ্যায় ।

১৮২. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ২১ থেকে ২৫ নং পৃষ্ঠা । যাখাইরূল উকবা ৬৫ ও ১২১ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৩. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ২৮ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ (মুহাম্মদ বিন জারির তাবারী) , ১৩৬৯ হিজরী নাজাফীয় মুদ্রণ , ৬০ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ১৩৩ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস্ ১৯৩ নং পৃষ্ঠা । তারীখু ইয়াকুবী ১৩১৪ হিজরীতে নাজাফে মুদ্রিত , ২য় খণ্ড , ২০৪ নং পৃষ্ঠা । উসুলুল ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৬১ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৪. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) , ১৭২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৩৩ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ১৪৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৫. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) , ১৭২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৩৩ নং পৃষ্ঠা । আল ইমামাহ্ ওয়াস সিয়াসাহ , (আবদুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবাহ ) , ১ম খণ্ড , ১৬৩ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ১৪৫ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ১৯৭ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৬. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) , ১৭৩ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৩৫ নং পৃষ্ঠা । আল ইমামাহ্ ওয়াস সিয়াসাহ , (আবদুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবাহ ) , ১ম খণ্ড , ১৬৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৭. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) , ১৭৪ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৪২ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ১৪৬ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৮. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) , ১৮১ নং পৃষ্ঠা । ইসবাতুল হুদাহ ৫ম খণ্ড , ১২৯ ও ১৩৪ নং পৃষ্ঠা ।

১৮৯ । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ১৭৯ নং পৃষ্ঠা । ইসবাতুল হুদাহ্ ৫ম খণ্ড , ১৫৮ ও ২১২ নং পৃষ্ঠা । ইসবাতুল ওয়াসিয়াহ (মাসউদী) [১৩২০ হিজরীতে তেহরানে মুদ্রিত] ১২৫ নং পৃষ্ঠা ।

১৯০. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ১৮২ নং পৃষ্ঠা । তারীখু ইয়াকুবী ২য় খণ্ড , ২২৬- ২২৮ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ১৫৩ নং পৃষ্ঠা ।

১৯১. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৮৮ নং পৃষ্ঠা ।

১৯২. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৮৮ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ১৮২ নং পৃষ্ঠা । আল ইমামাহ্ ওয়াস্ সিয়াসাহ ১ম খণ্ড , ২০৩ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ২য় খণ্ড , ২২৯ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ১৫৩ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ২৩৫ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৩. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২০১ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৪. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৮৯ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৫. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২০১ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ১৬৮ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৬. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২০৪ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ১৭০ নং পৃষ্ঠা । মাকাতিলুত তালিবিন ২য় সংস্করণ , ৭৩ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৭. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২০৫ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহ ১৭১ নং পৃষ্ঠা । মাকাতিলুত তালিবিন ২য় সংস্করণ , ৭৩ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৮. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৮৯ নং পৃষ্ঠা ।

১৯৯. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৯৯ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২১৪ নং পৃষ্ঠা ।

২০০. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ৮৯ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২১৪ নং পৃষ্ঠা ।

২০১. বিহারূল আনোয়ার ১০ম খণ্ড , ২০০ , ২০২ ও ২০৩ নং পৃষ্ঠা দ্রষ্টব্য ।

২০২. মাকাতিলুত তালেবিন ৫২ ও ৫৯ নং পৃষ্ঠা ।

২০৩. তাযকিরাতুস খাওয়াস্ ৩২৪ নং পৃষ্ঠা । ইসবাতুল হুদাহ ৫ম খণ্ড , ২৪২ নং পৃষ্ঠা ।

২০৪. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড , ১৭৬ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ্ ৮০ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ১৯০ নং পৃষ্ঠা ।

২০৫. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৪৬ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ ১৯৩ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ১৯৭ নং পৃষ্ঠা ।

২০৬. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৬৯ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ১ম খণ্ড , ২৪৫ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ২০২ ও ২০৩ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ৬৩ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ৩৪০ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ্ ৯৪ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ২১০ নং পৃষ্ঠা ।

২০৭. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৪৫ থেকে ২৫৩ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুর রিজাল মুহাম্মদ ইবনে উমার ইবনে আব্দুল আজিজ কাশী । কিতাবুর রিজাল -মুহাম্মদ ইবনে হাসান আত তুসী ।

২০৮. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৭২ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ ১১১ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৫৪ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ১১৯ নং পৃষ্ঠা । ফসুলুল মুহিম্মাহু ২১২ নং পৃষ্ঠা । তায্কিরাতুল খাওয়াস্ ৩৪৬ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ২৮০ নং পৃষ্ঠা ।

২০৯. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৫৪ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ ২০৪ ও নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ২৪৭ নং পৃষ্ঠা ।

২১০. ফসুলুল মুহিম্মাহ ২১২ ও নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ ১১১ নং পৃষ্ঠা । ইসবাতুল ওয়াসিয়াহ্ ১৪২ নং পৃষ্ঠা ।

২১১. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৩১০ নং পৃষ্ঠা ।

২১২. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৭৬ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৭০ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ২১৪ থেকে ২২৩ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ ১৪৬ থেকে ১৪৮ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ৩৪৮ থেকে ৩৫০ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৩২৪ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ১৫০ নং পৃষ্ঠা ।

২১৩. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৭৯ থেকে ২৮৩ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ্ ১৪৭ ও ১৫৪ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মহিম্মাহু ২২২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৩২৩ ও ৩২৭ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ১৫০ নং পৃষ্ঠা ।

২১৪. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৮৬ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৮৪ থেকে ২৯৬ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ্ ১৭৫ থেকে ১৭৭ নং পৃষ্ঠা। ফুসুলুল মুহিম্মাহ ২২৫ থেকে ২৪৬ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ১৮৮ নং পৃষ্ঠা ।

২১৫. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৮৮ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ ২৩৭ নং পৃষ্ঠা।

২১৬. দালাইরুল ইমামাহ ১৯৭ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৩৬৩ নং পৃষ্ঠা ।

২১৭. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৮৯নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৯০ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ২৩৭ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ৩৫২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৩৬৩ নং পৃষ্ঠা ।

২১৮. মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৩৫১ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইহতিজাজ (আহমাদ ইবনে আলী ইবনে আবি তালিব আত তাবারসি ) ,-হিজরী ১৩৮৫ সনের নাজাফীয় মুদ্রণ , ২য় খণ্ড , ১৭০ থেকে ২৩৭ নং পৃষ্ঠা ।

২১৯. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ২৯৭ নং পৃষ্ঠা । উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৯৭ থেকে ৪৯২ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ্ ২০১ থেকে ২০৯ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৩৭৭ থেকে ৩৯৯ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ২৪৭ থেকে ২৫২ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ৩৫৮ নং পৃষ্ঠা ।

২২০. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৪৯৭ থেকে ৫০২ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ৩০৭ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ্ ২১৬ থেকে ২২২ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ ২৫৯ থেকে ২৬৫ নং পৃষ্ঠা । তায্কিরাতুল খাওয়াস্ ৩৬২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৪০১ থেকে ৪২০ নং পৃষ্ঠা ।

২২১. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ৩০৭ থেকে ৩১৩ নং পৃষ্ঠা । উসূলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৫০১ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ২৬১ নং পৃষ্ঠা । তাযকিরাতুল খাওয়াস ৩৫৯ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৪১৭ নং পৃষ্ঠা । ইসবাতুল ওয়াসিয়াহ ১৭৬ নং পৃষ্ঠা । তারীখে ইয়াকুবী ৩য় খণ্ড , ২১৭ নং পৃষ্ঠা । মাকাতিলুত তালিবিন ৩৯৫ নং পৃষ্ঠা । মাকাতিলুত তালিবিন ৩৯৫ ও ৩৯৬ নং পৃষ্ঠা ।

২২২. মাকাতিলুত তালিবীন ৩৯৫ পৃষ্ঠা ।

২২৩. মাকাতিলুত তালিবীন ৩৯৫ পৃষ্ঠা থেকে ৩৯৬পৃষ্ঠা ।

২২৪. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ৩১৫ নং পৃষ্ঠা । দালাইলুল ইমামাহ ২২৩ নং পৃষ্ঠা । ফুসুলুল মুহিম্মাহ্ ২৬৬ থেকে ২৭২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৪২২ নং পৃষ্ঠা । উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৫০৩ নং পৃষ্ঠা । তায্কিরাতুল খাওয়াস ৩৬২ নং পৃষ্ঠা ।

২২৫. কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ৩২৪ নং পৃষ্ঠা । উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৫১২ নং পৃষ্ঠা । মানাকিবে ইবনে শাহরে আশুব ৪র্থ খণ্ড ৪২৯ ও ৪৩০ নং পৃষ্ঠা ।

২২৬. সহীহ তিরমিযি ৯ম খণ্ড , হযরত মাহদী (আ.) অধ্যায় । সহীহ্ ইবনে মাযা ২য় খণ্ড , মাহদী (আ.) এর আবির্ভাব অধ্যায় । কিতাবুল বায়ান ফি আখবারি সাহেবুজ্জামান -মুহাম্মদ ইউসুফ শাফেয়ী । নুরুল আবসার -শাবলাঞ্জি । মিশকাতুল মিসবাহ্ -মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ খাতিব । আস্ সাওয়াইক আল মুরিকাহ -ইবনে হাজার । আস আফুর রাগিবিন -মুহাম্মদ আস সাবান । ( কিতাবুল গাইবাহ -মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম নোমানী । কামালুদ দ্বীন -শেইখ সাদুক । ইসবাতুল হুদাহ্ -মুহাম্মদ বিন হাসান হুর আল আমেলী । বিহারুল আনোয়ার -আল্লামা মাজলিসি ৫১ ও ৫২ নং খণ্ড দ্রষ্টব্য । )

২২৭. উসুলে ক্বাফী ১ম খণ্ড , ৫০৫ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল ইরশাদ (শেইখ মুফিদ) ৩১৯ নং পৃষ্ঠা ।

২২৮. রিজালে কাশী , রিজালে তুসী , ফেহরেস্ত -এ তুসী ও অন্যান্য রিজাল গ্রন্থসমূহ ।

২২৯. বিহারূল আনোয়ার ৫১ নং খণ্ড , ৩৪২ ও ৩৪৩ থেকে ৩৬৬ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল গাইবাহ শেইখ মুহামাদ বিন হাসান তুসী -দ্বিতীয় মুদ্রণ -২১৪ থেকে ২৪৩ পৃষ্ঠা । ইসবাতুল হুদাহু ৬ষ্ঠ ও ৭ম খণ্ড , দ্রষ্টব্য ।

২৩০. বিহারূল আনোয়ার ৫১ নং খণ্ড , ৩৬০ থেকে ৩৬১ নং পৃষ্ঠা । কিতাবুল গাইবাহ্ -শেইখ মুহাম্মদ বিন হাসান তুসী ২৪২ নং পৃষ্ঠা ।

২৩১. নমুনা স্বরূপ একটি হাদীসের উদ্ধৃতী এখানে দেয়া হলঃ এ বিশ্বজগত ধ্বংস হওয়ার জন্যে যদি একটি দিনও অবশিষ্ট থাকে , তাহলে মহান আল্লাহ অবশ্যই সে দিনটিকে এতখানি দীর্ঘায়িত করবেন , যাতে আমারই সন্তান মাহ্দী (আ.) আত্মপ্রকাশ করতে পারে এবং অন্যায় অত্যাচারে পরিপূর্ণ এ পৃথিবীতে সম্পূর্ণ রূপে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে । (ফসুলুল মুহিম্মাহ্ ২৭১ নং পৃষ্ঠা । )

২৩২. উদাহরণ স্বরূপ দু টি হাদীসের উদ্ধৃতি এখানে দেয়া হল , হযরত ইমাম বাকের (আ.) বলেছেনঃ যখন আমাদের কায়েম কিয়াম করবে , তখন মহান আল্লাহ তার ঐশী শক্তিতে সমস্ত বান্দাদের বুদ্ধিবৃত্তি ও চিন্তাশক্তির প্রতিপালনের মাধ্যমে পরিপূর্ণরূপে পূর্ণত্ব দান করবেন । (বিহারূল আনোয়ার ৫২তম খণ্ড , ৩২৮ ও ৩৩৬ নং পৃষ্ঠা । ) আবু আব্দুল্লাহ্ (আ.) বলেনঃ সমস্ত বিদ্যা ২৭টি অক্ষরের মধ্যে সন্নিবেশিত হয়েছে । রাসূল (সা.)-এর আনীত জনগণের উদ্দেশ্যে সমস্ত বিদ্যার পরিমাণ মাত্র দুটি অক্ষর সমান । মানবজাতি আজও ঐ দুটি অক্ষর পরিমাণ জ্ঞানের অধিকের সাথে পরিচিত হয়নি । তবে যখন আমাদের কায়েম কিয়াম করবে তখন আরও ২৫টি অক্ষরের বিদ্যা জনসমাজে প্রকাশ ঘটাবেন । একইসাথে পূর্বের ঐ দু টি অক্ষরের বিদ্যাও তিনি সংযুক্ত করবেন , ফলে জ্ঞান ২৭টি অক্ষরে পরিপূর্ণ হবে । (বিহারূল আনোয়ার , ৫২তম খণ্ড ৩৩৬ নং পৃষ্ঠা । )

২৩৩. উদাহরণ স্বরূপ আরো একটি হাদীসের উদ্ধৃতি এখানে দেয়া হল : জনাব সিক্কিন বিন আবি দালাফ বলেনঃ আমি হযরত আবু জাফর মুহাম্মদ বিন রেজা (আ.) কে বলতে শুনেছি যে , তিনি বলেছেন : আমার পরবর্তী ইমাম হবে আমারই পুত্র হাদী । তার আদেশ ও বক্তব্য সমূহ আমারই আদেশ ও বক্তব্যের সমতুল্য আর তাঁর আনুগত্য আমাকে আনুগত্য করার শামিল । হাদীর পরবর্তী ইমাম হবে তারই সন্তান হাসান আসকারী । যার আদেশ ও বক্তব্য সমূহ তার পিতারই আদেশ ও বক্তব্য ও আদেশসম । একইভাবে তার আনুগত্য তার বাবারই আনুগত্যের শামিল । (অতঃপর ইমাম যাওয়াদ (আ.) নীরব থাকলেন) -তাকে বলা হল : হে রাসূলের সন্তান ! হাসান আসকারীর পরবর্তী ইমাম কে হবেন ? (ইমাম যাওয়াদ) প্রচন্ড কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন এবং বললেন : হাসান আসকারীর পরবর্তী ইমাম তারই সন্তান কায়েম (মাহদী) সত্যের উপর অধিষ্ঠিত ও প্রতিশ্রুত । (বিহারূল আনোয়ার ৫১তম খণ্ড , ১৫৮ নং পৃষ্ঠা । )


10

11

12

13

14

15

16

17

18