খোৎবা
-
৩
وَ هِیَ الْمَعْرُوفَهُ بِالشِّقشْقِيَّهِ
أَمَا واللَّه لَقَدْ تَقَمَّصَهَا فُلَانٌ وإِنَّه لَيَعْلَمُ أَنَّ مَحَلِّي مِنْهَا مَحَلُّ الْقُطْبِ مِنَ الرَّحَى، يَنْحَدِرُ عَنِّي السَّيْلُ ولَا يَرْقَى إِلَيَّ الطَّيْرُ، فَسَدَلْتُ دُونَهَا ثَوْباً وطَوَيْتُ عَنْهَا كَشْحاً وطَفِقْتُ أَرْتَئِي بَيْنَ أَنْ أَصُولَ بِيَدٍ جَذَّاءَ أَوْ أَصْبِرَ عَلَى طَخْيَةٍ عَمْيَاءَ ، يَهْرَمُ فِيهَا الْكَبِيرُ ويَشِيبُ فِيهَا الصَّغِيرُ، ويَكْدَحُ فِيهَا مُؤْمِنٌ حَتَّى يَلْقَى رَبَّه، فَرَأَيْتُ أَنَّ الصَّبْرَ عَلَى هَاتَا أَحْجَى فَصَبَرْتُ وفِي الْعَيْنِ قَذًى وفِي الْحَلْقِ شَجًا أَرَى تُرَاثِي نَهْباً حَتَّى مَضَى الأَوَّلُ لِسَبِيلِه، فَأَدْلَى بِهَا إِلَى فُلَانٍ بَعْدَه.
فَيَا عَجَباً بَيْنَا هُوَ يَسْتَقِيلُهَا فِي حَيَاتِه، إِذْ عَقَدَهَا لِآخَرَ بَعْدَ وَفَاتِه لَشَدَّ مَا تَشَطَّرَا ضَرْعَيْهَا ، فَصَيَّرَهَا فِي حَوْزَةٍ خَشْنَاءَ يَغْلُظُ كَلْمُهَا ، ويَخْشُنُ مَسُّهَا ويَكْثُرُ الْعِثَارُ فِيهَا والِاعْتِذَارُ مِنْهَا، فَصَاحِبُهَا كَرَاكِبِ الصَّعْبَةِ ، إِنْ أَشْنَقَ لَهَا خَرَمَ وإِنْ أَسْلَسَ لَهَا تَقَحَّمَ ، فَمُنِيَ النَّاسُ لَعَمْرُ اللَّه بِخَبْطٍ وشِمَاسٍ وتَلَوُّنٍ واعْتِرَاضٍ ، فَصَبَرْتُ عَلَى طُولِ الْمُدَّةِ وشِدَّةِ الْمِحْنَةِ حَتَّى إِذَا مَضَى لِسَبِيلِه، جَعَلَهَا فِي جَمَاعَةٍ زَعَمَ أَنِّي أَحَدُهُمْ فَيَا لَلَّه ولِلشُّورَى ، مَتَى اعْتَرَضَ الرَّيْبُ فِيَّ مَعَ الأَوَّلِ مِنْهُمْ، حَتَّى صِرْتُ أُقْرَنُ إِلَى هَذِه النَّظَائِرِ ، لَكِنِّي أَسْفَفْتُ إِذْ أَسَفُّوا وطِرْتُ إِذْ طَارُوا، فَصَغَا رَجُلٌ مِنْهُمْ لِضِغْنِه ، ومَالَ الآخَرُ لِصِهْرِه مَعَ هَنٍ وهَنٍ إِلَى أَنْ قَامَ ثَالِثُ الْقَوْمِ نَافِجاً حِضْنَيْه ، بَيْنَ نَثِيلِه ومُعْتَلَفِه ، وقَامَ مَعَه بَنُو أَبِيه يَخْضَمُونَ مَالَ اللَّه، خِضْمَةَ الإِبِلِ نِبْتَةَ الرَّبِيعِ ، إِلَى أَنِ انْتَكَثَ عَلَيْه فَتْلُه وأَجْهَزَ عَلَيْه عَمَلُه، وكَبَتْ بِه بِطْنَتُه
فَمَا رَاعَنِي إِلَّا والنَّاسُ كَعُرْفِ الضَّبُعِ ، إِلَيَّ يَنْثَالُونَ عَلَيَّ مِنْ كُلِّ جَانِبٍ، حَتَّى لَقَدْ وُطِئَ الْحَسَنَانِ وشُقَّ عِطْفَايَ مُجْتَمِعِينَ حَوْلِي كَرَبِيضَةِ الْغَنَمِ ، فَلَمَّا نَهَضْتُ بِالأَمْرِ نَكَثَتْ طَائِفَةٌ ومَرَقَتْ أُخْرَى وقَسَطَ آخَرُونَ كَأَنَّهُمْ لَمْ يَسْمَعُوا اللَّه سُبْحَانَه يَقُولُ:(
تِلْكَ الدَّارُ الآخِرَةُ نَجْعَلُها لِلَّذِينَ، لا يُرِيدُونَ عُلُوًّا فِي الأَرْضِ ولا فَساداً، والْعاقِبَةُ لِلْمُتَّقِينَ
)
،
بَلَى واللَّه لَقَدْ سَمِعُوهَا ووَعَوْهَا، ولَكِنَّهُمْ حَلِيَتِ الدُّنْيَا فِي أَعْيُنِهِمْ ورَاقَهُمْ زِبْرِجُهَا أَمَا والَّذِي فَلَقَ الْحَبَّةَ وبَرَأَ النَّسَمَةَ ، لَوْ لَا حُضُورُ الْحَاضِرِ وقِيَامُ الْحُجَّةِ بِوُجُودِ النَّاصِرِ، ومَا أَخَذَ اللَّه عَلَى الْعُلَمَاءِ، أَلَّا يُقَارُّوا عَلَى كِظَّةِ ظَالِمٍ ولَا سَغَبِ مَظْلُومٍ، لأَلْقَيْتُ حَبْلَهَا عَلَى غَارِبِهَا - ولَسَقَيْتُ آخِرَهَا بِكَأْسِ أَوَّلِهَا - ولأَلْفَيْتُمْ دُنْيَاكُمْ هَذِه أَزْهَدَ عِنْدِي مِنْ عَفْطَةِ عَنْزٍ
قَالُوا وقَامَ إِلَيْه رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ السَّوَادِ - عِنْدَ بُلُوغِه إِلَى هَذَا الْمَوْضِعِ مِنْ خُطْبَتِه - فَنَاوَلَه كِتَاباً قِيلَ إِنَّ فِيه مَسَائِلَ كَانَ يُرِيدُ الإِجَابَةَ عَنْهَا فَأَقْبَلَ يَنْظُرُ فِيه - [فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قِرَاءَتِه] قَالَ لَه ابْنُ عَبَّاسٍ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ - لَوِ اطَّرَدَتْ خُطْبَتُكَ مِنْ حَيْثُ أَفْضَيْتَ! فَقَالَ هَيْهَاتَ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ - تِلْكَ شِقْشِقَةٌ هَدَرَتْ ثُمَّ قَرَّتْ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَوَاللَّه مَا أَسَفْتُ عَلَى كَلَامٍ قَطُّ - كَأَسَفِي عَلَى هَذَا الْكَلَامِ - أَلَّا يَكُونَ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَعليهالسلام
بَلَغَ مِنْه حَيْثُ أَرَادَ.
এটা খোৎবায়ে শিকশিকিয়্যাহ
নামে খ্যাত
সাবধান! আল্লাহর কসম ,আবু কুহাফার পুত্র (আবু বকর)
নিজে নিজেই উহা (খেলাফত) পরিধান করেনিয়েছিল। সে নিশ্চিতভাবেই জ্ঞাত ছিল যে ,খেলাফতের জন্য আমার অবস্থান এমন যেন যাতার কেন্দ্রিয় শলাকা । বন্যার পানি আমা হতে প্রবাহিত হয় এবং পাখী আমা পর্যন্ত উড়ে আসতে পারে না। আমি খেলাফতের সামনে একটা পর্দা টেনে দিলাম এবং নিজেকে উহা থেকে নির্লিপ্ত রাখলাম ।
অতঃপর আমি প্রবল বেগে আক্রমণ করা অথবা ধৈর্য সহকারে চোখ বন্ধ করে অন্ধকারের সকল দুঃখ - দুর্দশা সহ্য করার বিষয়ে চিন্তা করতে লাগলাম। এরই মধ্যে বয়স্কগণ দুর্বল হয়ে পড়লো ,যুবকেরা বৃদ্ধ হয়ে গেল এবং মোমেনগণ চাপের মুখে আমরণ কষ্ট করে কাজ করছিলো। আমি দেখলাম এ অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। সুতরাং আমি ধৈর্য ধারণ করলাম। যদিও তাদের কর্মকাণ্ড কাঁটার মতো চোখে বিধতেছিলো এবং সামগ্রিক অবস্থা শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে পড়েছিলো। প্রথম জনের মৃত্যু পর্যন্ত আমার লুষ্ঠিত উত্তরাধিকারের জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু সে তা ইবনে খাত্তাবের হাতে তুলে দিয়ে গেল। এরপর আমার দিন উটের পিঠে (অতি দুঃখ - কষ্টে) কাটতে লাগল। শুধুমাত্র জাবিরের ভ্রাতা হাইয়ানের৫ সহচর্যে ক 'টি দিন ভালো গেল।
এটা এক অদ্ভুত ব্যাপার যে ,জীবদ্দশায় সে খেলাফত থেকে অব্যাহতি পাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু মৃত্যুকালে সে তা অন্য একজনের হাতে তুলে দিয়ে গেল। এতে কোন সন্দেহ নেই যে ,এরা দুজনই পরিকল্পিতভাবে একই স্তনের বাঁটগুলো নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করেনিয়েছিল। এজন্য (উমর) খেলাফতকে একটা শক্ত বেষ্টনীর মধ্যে রাখলো ,যেখানে কথাবার্তা ছিল উদ্ধত এবং স্পর্শ ছিল রূঢ়া ; অনেক ভুল - ভ্রান্তি ও ত্রুটি - বিচূতি ছিল এবং তদ্রুপ ওজরও দেখানো হতো। খেলাফতের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি মাত্রই অবাধ্য উটের সওয়ারের মতো হয়ে যেতো - লাগাম টেনে ধরলে নাসারন্ধ কেটে যায় ,আবার টেনে না ধরলে সওয়ার নিক্ষিপ্ত হয়। আল্লাহর কসম ,ফলতঃ ,মানুষ বলগাহীনতা ,ভিন্নরূপিতা ,অদৃঢ়তা ও পথভ্রষ্টতায় জড়িয়ে পড়েছিল।
এতদসত্ত্বেও কালের দৈর্ঘ্য আর কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে তার (উমর) মৃত্যু পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে রইলাম। সে খেলাফতের বিষয়টি একটা দলের৬ হাতে ন্যস্ত করলো এবং আমাকেও তাদের একজন মনে করলো। হায় আল্লাহ! এ“
মনোনয়ন বোর্ড”
দিয়ে আমি কী করবো ? তাদের প্রথম জনের তুলনায় আমার শ্রেষ্ঠত্ব বিষয়ে কি কখনো কোন সংশয় ছিল যে ,এখন আমাকে এসব লোকের সমপর্যায়ের মনে করা হলো ? কিন্তু তারা শান্ত থাকলে আমিও শান্ত থাকতাম এবং তারা উচুতে উড়লে আমিও উচুতে উড়তাম। তাদের একজন আমার প্রতি হিংসাপরায়ণতার কারণে আমার বিরোধী হয়ে গেল এবং অপর একজন তার বৈবাহিক আত্মীয়তা ও এটা - সেটা নিয়ে আমার বিরুদ্ধে চলে গেল। ফলে এদের তৃতীয় জন বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার সাথে তার পিতামহের সন্তানেরা (উমাইয়াগণ) দাঁড়িয়ে গেল এবং এমনভাবে আল্লাহর সম্পদ৭ গলাধঃকরণ করতে লাগলো যেভাবে বসন্তের পত্রপল্লব ক্ষুধার্ত উট গোগ্রাসে গিলতে থাকে। তার ক্রিয়াকলাপ তাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে গেল এবং তার অতিভোজন তাকে অবনত করলো ।
সে সময় আমার দিকে জনতার দ্রুত আগমন ছাড়া আর কোন কিছুই আমাকে বিস্মিত করেনি। চতুর্দিক থেকে হায়নার কেশরের মতো এত অধিক জনতা এগিয়ে আসলো যে ,হাসান ও হুসাইন পদদলিত হবার অবস্থায় পড়েছিল এবং আমার উভয় স্কন্ধের কাপড় ছিড়ে গিয়েছিল। ভেড়া ও ছাগলের পালের মতো তারা আমার চারদিকে জড়ো হয়েছিল। যখন আমি শাসনভার গ্রহণ করেছিলাম তখন একদল কেটে পড়লো ,আরেক দল বিদ্রোহী হয়ে গেলো এবং অন্যরা এমন অন্যায়ভাবে ক্রিয়াকলাপ করতে লাগলো যেন তারা কখনো আল্লাহর এ বাণী শুনতে পায়নি -
এটা আখিরাতের সে আবাস যা আমরা তাদের জন্যই অবধারিত করি যারা পৃথিবীতে ঔদ্ধত্য প্রকাশ এবং ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চায় না এবং উত্তম পরিণাম মুত্তাকিদের জন্যই (কুরআন–
২৮ : ৮৩) |
হ্যাঁ ,আল্লাহর কসম ,তারা আল্লাহর বাণী শুনেছিল এবং তার অর্থও বুঝেছিল। কিন্তু দুনিয়ার চাকচিক্য তাদের চোখে অধিক প্রিয় হয়ে পড়েছিল এবং দুনিয়ার জাক - জমক ও বিলাসিত তাদেরকে প্রলুব্ধ করে পথভ্রষ্ট করেছিল। মনে রেখো ,যিনি শস্যকণা ভেঙ্গে চারা গজান ও জীবিত সত্তা সৃষ্টি করেন ,তার কসম করে বলছি ,যদি মানুষ আমার কাছে না। আসতো এবং সমর্থনকারীরা যুক্তি নিঃশেষ না করতো এবং জ্ঞানীদের সাথে এ মর্মে আল্লাহর কোন অঙ্গীকার না থাকতো যে ,জালিমের অতিভোজন আর মজলুমের ক্ষুধায় তারা মৌন সম্মতিও দিতে পারবে না ; তাহলে আমি খেলাফতের রাশি তার নিজের কাধে নিক্ষেপ করতাম এবং শেষ জনকে প্রথম জনের পেয়ালা দ্বারা পানি পান করাতাম । তখন তোমরা দেখতে পেতে যে ,তোমাদের এ দুনিযা আমার মতে ছাগলের হ্যাঁচির চেয়েও নিকৃষ্টতর।
(কথিত আছে যে ,আমিরুল মোমেনিন তার খোৎবায় এ পর্যন্ত বলার পর ইরাকের একজন লোক দাঁড়িয়ে গেল এবং আমিরুল মোমেনিনের হাতে একটা চিরকুট দিলেন। আমিরুল মোমেনিন তার দিকে তাকিয়ে রইলেন। এমন সময় ইবনে আব্বাস বললেন ,“
হে আমিরুল মোমেনিন ,আপনার খোৎবা যেখানে বন্ধ করেছেন সেখান থেকে আবার আরম্ভ করুন।”
উত্তরে তিনি বললেন ,“
হে ইবনে আব্বাস ,এটা উটের বুদুদের (শিকশিকিয়্যাহ্) মতে যা প্রচুর পরিমাণে নিঃসৃত হয়। কিন্তু অল্পক্ষণেই মিটে যায়।”
ইবনে আব্বাস বলেছিলেন যে ,তিনি কোনদিন আমিরুল মোমেনিনের কোন কথায় এত দুঃখ পান নি যা পেয়েছিলেন সেদিন ,কারণ অনুরোধ সত্ত্বেও আমিরুল মোমেনিন তাঁর খোৎবা শেষ করলেন না।)
___________________
খোৎবা -
৪
وهي من أفصح كلامهعليهالسلام
وفيها يعظ الناس ويهديهم من ضلالتهم
بِنَا اهْتَدَيْتُمْ فِي الظَّلْمَاءِ وتَسَنَّمْتُمْ ذُرْوَةَ - الْعَلْيَاءِ وبِنَا أَفْجَرْتُمْ عَنِ السِّرَارِ - وُقِرَ سَمْعٌ لَمْ يَفْقَه الْوَاعِيَةَ - وكَيْفَ يُرَاعِي النَّبْأَةَ مَنْ أَصَمَّتْه الصَّيْحَةُ - رُبِطَ جَنَانٌ لَمْ يُفَارِقْه الْخَفَقَانُ - مَا زِلْتُ أَنْتَظِرُ بِكُمْ عَوَاقِبَ الْغَدْرِ - وأَتَوَسَّمُكُمْ بِحِلْيَةِ الْمُغْتَرِّينَ - حَتَّى سَتَرَنِي عَنْكُمْ جِلْبَابُ الدِّينِ - وبَصَّرَنِيكُمْ صِدْقُ النِّيَّةِ - أَقَمْتُ لَكُمْ عَلَى سَنَنِ الْحَقِّ فِي جَوَادِّ الْمَضَلَّةِ - حَيْثُ تَلْتَقُونَ ولَا دَلِيلَ - وتَحْتَفِرُونَ ولَا تُمِيهُونَ.
الْيَوْمَ أُنْطِقُ لَكُمُ الْعَجْمَاءَ ذَاتَ الْبَيَانِ - عَزَبَ رَأْيُ امْرِئٍ تَخَلَّفَ عَنِّي - مَا شَكَكْتُ فِي الْحَقِّ مُذْ أُرِيتُه - لَمْ يُوجِسْ مُوسَىعليهالسلام
خِيفَةً عَلَى نَفْسِه - بَلْ أَشْفَقَ مِنْ غَلَبَةِ الْجُهَّالِ ودُوَلِ الضَّلَالِ - الْيَوْمَ تَوَاقَفْنَا عَلَى سَبِيلِ الْحَقِّ والْبَاطِلِ - مَنْ وَثِقَ بِمَاءٍ لَمْ يَظْمَأْ!
আমিরুল
মোমেনিনের
দূরদর্শিতা
এবং
তাঁর
ইমানের
দৃঢ়
প্রত্যয়
সম্পর্কে
তোমাদের অন্ধকার যুগে আমাদের কাছ থেকে হেদায়েত লাভ করে তোমরা আলোর পথ দেখতে পেয়েছে এবং তোমরা উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছো। আমাদের দ্বারাই তোমরা অন্ধকার রাত থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছো। যে কান কান্নার শব্দ শুনতে পায় না তা বধির হয়ে গেছে। কুরআন ও রাসূলের কান্নায় (কুরআন ও সুন্নাহ্ পরিত্যাগের কারণে) যে ব্যক্তি বধির রয়ে গেল সে কী করে আমার ক্ষীণ স্বর শুনতে পাবে ? যে হৃদয় আল্লাহর ভয়ে প্রকম্পিত হয় সে প্রশান্তি প্রাপ্ত হবে।
আমি সর্বদা শঙ্কিত থাকি তোমাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের পরিণতির জন্য এবং আমি তোমাদেরকে ধোকাবাজদের চাকচিক্যে জড়িয়ে পড়তে দেখেছিলাম। দ্বীনের পর্দা তোমাদের কাছ থেকে আমাকে গোপন করে রেখেছিল কিন্তু আমার নিয়্যতের বিশুদ্ধতা তোমাদের সব কিছু আমার কাছে ফাঁস করে দিল । তোমরা বিপথে চলে গেলে অথচ আমি তোমাদের জন্য সত্য পথে দাঁড়িয়েছিলাম। আমা হতে মুখ ফিরিয়ে যখন তোমরা রাস্তার সন্ধান করছিলে তখন কোন পথ প্রদর্শক ছিল না। ফলে তোমরা কূপ খনন করেছো সত্য ,কিন্তু একটুও পানি পাওনি।
আজ আমি যেসব মূক জিনিসকে (অর্থাৎ আমার সুচিন্তিত সুপারিশসমূহ ও গভীর বেদনাগাথা) তোমাদের সাথে কথা বলাচ্ছি তা নিদারুণভাবে উপেক্ষিত হয়েছিল। যে ব্যক্তি আমা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার মতামত বা অভিমত ধ্বংস হয়ে যায়। যখন থেকে আমাকে সত্য দেখানো হয়েছে তখন থেকে আমি কখনো সত্যের প্রতি সন্দিহান হইনি। মুসা
নিজের জন্য ভীত বিহ্বল হননি ; বরং তিনি অজ্ঞদের পথভ্রষ্টতার ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছিলেন। আজ আমরা সত্য ও অসত্যের মিলন স্থলে উপনীত। কেউ পানি পাবার বিষয়ে নিশ্চিত হলে তৃষ্ণা - কাতর হয় না।
____________________
খোৎবা -
৫
لما قبض رسول اللهصلىاللهعليهوآله
- وخاطبه العباس وأبو سفيان بن حرب - في أن يبايعا له بالخلافة (وذلك بعد أن تمت البيعة لأبي بكر في السقيفة، وفيها ينهى عن الفتنة ويبين عن خلقه وعلمه)
أَيُّهَا النَّاسُ شُقُّوا أَمْوَاجَ الْفِتَنِ بِسُفُنِ النَّجَاةِ - وعَرِّجُوا عَنْ طَرِيقِ الْمُنَافَرَةِ - وضَعُوا تِيجَانَ الْمُفَاخَرَةِ - أَفْلَحَ مَنْ نَهَضَ بِجَنَاحٍ أَوِ اسْتَسْلَمَ فَأَرَاحَ - هَذَا مَاءٌ آجِنٌ ولُقْمَةٌ يَغَصُّ بِهَا آكِلُهَا. ومُجْتَنِي الثَّمَرَةِ لِغَيْرِ وَقْتِ إِينَاعِهَا كَالزَّارِعِ بِغَيْرِ أَرْضِه.
فَإِنْ أَقُلْ يَقُولُوا حَرَصَ عَلَى الْمُلْكِ - وإِنْ أَسْكُتْ يَقُولُوا جَزِعَ مِنَ الْمَوْتِ - هَيْهَاتَ بَعْدَ اللَّتَيَّا والَّتِي واللَّه لَابْنُ أَبِي طَالِبٍ آنَسُ بِالْمَوْتِ - مِنَ الطِّفْلِ بِثَدْيِ أُمِّه - بَلِ انْدَمَجْتُ عَلَى مَكْنُونِ عِلْمٍ لَوْ بُحْتُ بِه لَاضْطَرَبْتُمْ - اضْطِرَابَ الأَرْشِيَةِ فِي الطَّوِيِّ الْبَعِيدَةِ!
আবু বকর কর্তৃক খেলাফত দখলের পর আব্বাস ও আবু সুফিয়ান খেলাফতের জন্য আমিরুল মোমেনিনকে সাহায্য করার প্রস্তাব করায় এ খোৎবা প্রদান করেন।
হে জনমণ্ডলী
!
ফেতনার তরঙ্গ মাঝে শক্ত হাতে হাল ধরে মুক্তির নৌকা চালিয়ে যাও ; বিভেদের পথ থেকে ফিরে এসো ; এবং অহংকারের মুকুট নামিয়ে ফেলো। সে ব্যক্তি সফলকাম ,যে ডানার সাহায্যে উড়ে (যখন তার ক্ষমতা থাকে) অথবা সে শান্তিপূর্ণভাবে থাকে এবং তাতে অন্যরা সুখে - শান্তিতে থাকতে পারে। এটা (খেলাফতের লালসা) পঙ্কিল পানি অথবা শক্ত খাদ্য টুকরার মতো - যে কেউ গলাধঃকরণ করলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যাবে। যে ব্যক্তি পাকার আগেই ফল তোলে সে ওই ব্যক্তির মতো ,যে অন্যের জমিতে চাষাবাদ করেছে।
যদি আমি বলেই ফেলি (খেলাফতের কথা) তবে তারা আমাকে বলবে ক্ষমতালোভী ; আর যদি আমি নিশূপ হয়ে থাকি তবে তারা বলবে আমি মৃত্যুর ভয়ে ভীত। দুঃখের বিষয় এই যে ,সকল উত্থানপতনের মধ্যেও আমি টিকে আছি। আল্লাহর কসম ,আবু তালিবের পুত্র
মৃত্যুর সাথে এমনভাবে পরিচিত যেমন একটি শিশু তার মায়ের স্তনের সাথে । আমি নীরব রয়েছি আমার গুপ্ত জ্ঞানের কারণে যা আমাকে দান করা হয়েছে। যদি আমি তা প্রকাশ করি তবে গভীর কূপ থেকে পানি উত্তোলনরত রশির মতো তোমরা কাপতে থাকবে ।
__________________
খোৎবা -
৬
لما أشير عليه بألا يتبع طلحة والزبير ولا يرصد لهما القتال وفيه يبين عن صفته بأنهعليهالسلام
لا يخدع
واللَّه لَا أَكُونُ كَالضَّبُعِ تَنَامُ عَلَى طُولِ اللَّدْمِ حَتَّى يَصِلَ إِلَيْهَا طَالِبُهَا ويَخْتِلَهَا رَاصِدُهَاولَكِنِّي أَضْرِبُ بِالْمُقْبِلِ إِلَى الْحَقِّ الْمُدْبِرَ عَنْه - وبِالسَّامِعِ الْمُطِيعِ الْعَاصِيَ الْمُرِيبَ أَبَداً - حَتَّى يَأْتِيَ عَلَيَّ يَوْمِي - فَوَاللَّه مَا زِلْتُ مَدْفُوعاً عَنْ حَقِّي - مُسْتَأْثَراً عَلَيَّ مُنْذُ قَبَضَ اللَّه نَبِيَّهصلىاللهعليهوسلم
حَتَّى يَوْمِ النَّاسِ هَذَا.
তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ ও জুবায়ের ইবনে আওয়ামের পশ্চাদ্ধাবন না করার জন্য কেউ কেউ উপদেশ দিলে আমিরুল মোমেনিন এ খোৎবা প্রদান করেন।
আল্লাহর কসম ,আমি "দাবু ’ (ভোঁদড় জাতীয় নিশাচর প্রাণী) এর মত হবো না ,যা অনবরত পাথর নিক্ষেপের শব্দেও ঘুমের ভান করে পড়ে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না শিকারি তাকে দেখতে পায় এবং আটক করে। বরং সত্যের পথে অগ্রগামীদের সহায়তায় আমি পথভ্রষ্টদেরকে এবং যারা আমার কথা শুনে ও মানে তাদের সহায়তায় পাপী ও সন্দেহ পোষণকারীকে আঘাত করে যাবো ,যে পর্যন্ত না আমার দিন ফুরিয়ে যায়। আল্লাহর কসম ,রাসূলের (সা.) ইনতিকালের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমাকে আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
খোৎবা -
৭
يذم فيها أتباع الشيطان
اتَّخَذُوا الشَّيْطَانَ لأَمْرِهِمْ مِلَاكاً واتَّخَذَهُمْ لَه أَشْرَاكاً فَبَاضَ وفَرَّخَ فِي صُدُورِهِمْ ودَبَّ ودَرَجَ فِي حُجُورِهِمْ - فَنَظَرَ بِأَعْيُنِهِمْ ونَطَقَ بِأَلْسِنَتِهِمْ - فَرَكِبَ بِهِمُ الزَّلَلَ وزَيَّنَ لَهُمُ الْخَطَلَ فِعْلَ مَنْ قَدْ شَرِكَه الشَّيْطَانُ فِي سُلْطَانِه ونَطَقَ بِالْبَاطِلِ عَلَى لِسَانِه!
শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণকারীদের সম্পর্কে
তারা শয়তানকে তাদের কর্মকান্ডের বিধায়ক হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং শয়তানও তাদেরকে তার অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করেছে। তাদের বক্ষেই শয়তান ডিম পাড়ে ও বাচ্চা ফুটায়। তাদের কোলেই শয়তান হামাগুড়ি দিয়ে চলে। সে তাদের চোখ দিয়েই দেখে এবং তাদের জিহবা দিয়েই কথা বলে। এভাবেই সে তাদেরকে পাপের পথে পরিচালিত করেছে এবং ক্লেদপূর্ণ জিনিস তাদের জন্য সুসজ্জিত করেছে। তাদের কর্মকাণ্ড সেই ব্যক্তির মতো যাকে শয়তান তার রাজ্যে অংশীদার করে এবং যার জবানে সে কথা বলে ।
খোৎবা- ৮
يعني به الزبير في حال اقتضت ذلك ويدعوه للدخول في البيعة ثانية
يَزْعُمُ أَنَّه قَدْ بَايَعَ بِيَدِه ولَمْ يُبَايِعْ بِقَلْبِه - فَقَدْ أَقَرَّ بِالْبَيْعَةِ وادَّعَى الْوَلِيجَةَ - فَلْيَأْتِ عَلَيْهَا بِأَمْرٍ يُعْرَفُ - وإِلَّا فَلْيَدْخُلْ فِيمَا خَرَجَ مِنْه.
জুবায়ের সম্পর্কে
সে বলে বেড়ায় যে ,সে আমার হাতে হাত রেখেই বায়াত গ্রহণ করেছে কিন্তু অন্তর দিয়ে তা করেনি।
সুতরাং সে এমন বায়াত স্বীকার করে না। সে বায়াত গ্রহণ করেছে ; এখন যদি দাবি করে যে তার অন্তরে বিপরীত ভাবে লুক্কায়িত ছিল তা হলে সে স্পষ্ট দলিল নিয়ে আসুক। অন্যথায় ,যেখান থেকে সে বেরিয়ে এসেছে সেখানে ফিরে যাক (অর্থাৎ বায়াত মেনে চলুক) ।
____________________
খোৎবা- ৯
في صفته وصفة خصومه ويقال إنها في أصحاب الجمل
وقَدْ أَرْعَدُوا وأَبْرَقُوا ومَعَ هَذَيْنِ الأَمْرَيْنِ الْفَشَلُ ولَسْنَا نُرْعِدُ حَتَّى نُوقِعَ ولَا نُسِيلُ حَتَّى نُمْطِرَ.
জামাল -
যুদ্ধে
শত্রুদের
কাপুরুষতা
সম্পর্কে
তারা
মেঘের মতো গর্জন করেছিল বিজলীর মতো চমক দিয়েছিল। লম্ফ - ঝম্ফ ছাড়া তাদের সবটুকুই কাপুরুষতা। তীব্রবেগে শত্রুকে আক্রমণ না করা পর্যন্ত আমরা গর্জন করি না এবং কথার ঢল প্রবাহিত করি না যতক্ষণ পর্যন্ত বৃষ্টি বর্ষণ না করি।
___________________
খোৎবা- ১০
أَلَا وإِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ جَمَعَ حِزْبَه - واسْتَجْلَبَ خَيْلَه ورَجِلَه وإِنَّ مَعِي لَبَصِيرَتِي مَا لَبَّسْتُ عَلَى نَفْسِي ولَا لُبِّسَ عَلَيَّ - وايْمُ اللَّه لأُفْرِطَنَّ لَهُمْ حَوْضاً أَنَا مَاتِحُه لَا يَصْدُرُونَ عَنْه ولَا يَعُودُونَ إِلَيْه.
তালহা ও
জুবায়ের
সম্পর্কে
সাবধান ! শয়তান
তার দল জড়ো করেছে এবং তার অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্যদল সমবেত করেছে। নিশ্চয়ই ,আমার সূক্ষ্ম দৃষ্টি সম্পন্ন জ্ঞান আছে। আমি কখনো নিজের সাথে প্রতারণা করি নি বা প্রতারিতও হইনি। আল্লাহর কসম ,আমি তাদের জন্য একটা জলাধার কানায় কানায় ভরে রাখবো যেখান থেকে শুধু আমিই পানি তুলবো। যারা সেই জলাধারে পা রাখবে তারা বের হয়ে আসতে পারবে না। আর যদি বের হযে আসে তাহলে দ্বীতীয়বার তার দিকে ফিরে যেতে পারবে না ।
____________________
খোৎবা- ১১
لابنه محمد ابن الحنفية - لما أعطاه الراية يوم الجمل
تَزُولُ الْجِبَالُ ولَا تَزُلْ - عَضَّ عَلَى نَاجِذِكَ أَعِرِ اللَّه جُمْجُمَتَكَ - تِدْ فِي الأَرْضِ قَدَمَكَ ارْمِ بِبَصَرِكَ أَقْصَى الْقَوْمِ وغُضَّ بَصَرَكَ واعْلَمْ أَنَّ النَّصْرَ مِنْ عِنْدِ اللَّه سُبْحَانَه.
জামাল যুদ্ধে আমিরুল মোমেনিন তার পুত্র মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়া
এর হাতে পতাকা অর্পণকালে এ খোৎবা প্রদান করেন।
পর্বতমালা
তার স্থান থেকে সরে পড়তে পারে। কিন্তু তুমি তোমার অবস্থান থেকে নড়তে পারবে না। দাঁতে দাঁত কামড়ে ধরো। তোমার মাথা আল্লাহকে ধার দাও (আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে নিজকে উৎসর্গ করো) । তোমার পদদ্বয় শক্তভাবে জমিনে স্থাপন করো। বহুদূরবর্তী শত্রুর প্রতিও দৃষ্টি রেখো। শত্রুর সংখ্যাধিক্যের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করো না। নিশ্চিত মনে রেখো ,সাহায্য ও বিজয় মহিমান্বিত আল্লাহ থেকেই হয়ে আসে ।
____________________
খোৎবা- ১২
لما أظفره الله بأصحاب الجمل وقَدْ قَالَ لَه بَعْضُ أَصْحَابِه - وَدِدْتُ أَنَّ أَخِي فُلَاناً كَانَ شَاهِدَنَا - لِيَرَى مَا نَصَرَكَ اللَّه بِه عَلَى أَعْدَائِكَ
فَقَالَ لَهعليهالسلام
أَهَوَى أَخِيكَ مَعَنَا فَقَالَ نَعَمْ قَالَ فَقَدْ شَهِدَنَا - ولَقَدْ شَهِدَنَا فِي عَسْكَرِنَا هَذَا أَقْوَامٌ فِي أَصْلَابِ الرِّجَالِ - وأَرْحَامِ النِّسَاءِ - سَيَرْعَفُ بِهِمُ الزَّمَانُ ويَقْوَى بِهِمُ الإِيمَانُ.
জামালের যুদ্ধে যখন আল্লাহ আমিরুল মোমেনিনকে শত্রুপক্ষের ওপর বিজয়ী করলেন তখন তার একজন অনুচর বললেন ,“
হায় ! আমার ভাই অমুক যদি যুদ্ধে উপস্থিত থাকতো তাহলে সেও দেখতে পেতো আল্লাহ আপনাকে কিরূপ সাফল্য ও বিজয় দান করেছেন।”
একথা শুনে আমিরুল মোমেনিন। জিজ্ঞেস করলেন ,“
তোমার ভাই কি আমাকে বন্ধু বলে জানে ?”
সে বললো ,“
জি হ্যাঁ ।”
আমিরুল মোমেনিন তখন বললেন ,“
তাহলে সে আমাদের সঙ্গেই ছিল।
আমাদের এ সৈন্যবাহিনীতে তারাও উপস্থিত ছিল যারা এখনো পুরুষের ঔরসে ও নারীর জরায়ুতে রয়েছে। সহসাই সময় তাদেরকে বের করেনিয়ে আসবে এবং তাদের মাধ্যমে ইমান শক্তি লাভ করবে।”
____________________
খোৎবা- ১৩
في ذم أهل البصرة بعد وقعة الجمل
كُنْتُمْ جُنْدَ الْمَرْأَةِ وأَتْبَاعَ الْبَهِيمَةِ رَغَا فَأَجَبْتُمْ وعُقِرَ فَهَرَبْتُمْ أَخْلَاقُكُمْ دِقَاقٌ وعَهْدُكُمْ شِقَاقٌ ودِينُكُمْ نِفَاقٌ ومَاؤُكُمْ زُعَاقٌ والْمُقِيمُ بَيْنَ أَظْهُرِكُمْ مُرْتَهَنٌ بِذَنْبِه والشَّاخِصُ عَنْكُمْ مُتَدَارَكٌ بِرَحْمَةٍ مِنْ رَبِّه - كَأَنِّي بِمَسْجِدِكُمْ كَجُؤْجُؤِ سَفِينَةٍ قَدْ بَعَثَ اللَّه عَلَيْهَا الْعَذَابَ مِنْ فَوْقِهَا ومِنْ تَحْتِهَا - وغَرِقَ مَنْ فِي ضِمْنِهَا.
وفِي رِوَايَةٍ وايْمُ اللَّه لَتَغْرَقَنَّ بَلْدَتُكُمْ حَتَّى كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى مَسْجِدِهَا كَجُؤْجُؤِ سَفِينَةٍ - أَوْ نَعَامَةٍ جَاثِمَةٍ.
وفِي رِوَايَةٍ كَجُؤْجُؤِ طَيْرٍ فِي لُجَّةِ بَحْرٍ.
وفِي رِوَايَةٍ أُخْرَى بِلَادُكُمْ أَنْتَنُ بِلَادِ اللَّه تُرْبَةً - أَقْرَبُهَا مِنَ الْمَاءِ وأَبْعَدُهَا مِنَ السَّمَاءِ - وبِهَا تِسْعَةُ أَعْشَارِ الشَّرِّ - الْمُحْتَبَسُ فِيهَا بِذَنْبِه والْخَارِجُ بِعَفْوِ اللَّه - كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى قَرْيَتِكُمْ هَذِه قَدْ طَبَّقَهَا الْمَاءُ - حَتَّى مَا يُرَى مِنْهَا إِلَّا شُرَفُ الْمَسْجِدِ كَأَنَّه جُؤْجُؤُ طَيْرٍ فِي لُجَّةِ بَحْرٍ!
বসরার জনগণকে
তিরস্কার
তোমরা ছিলে একজন রমণীর সৈন্য এবং একটা চতুষ্পদ জন্তুর নিয়ন্ত্রণাধীন। যখন জন্তুটি রোষে গর্জে উঠলো ,তোমরাও তার সঙ্গে সাড়া দিলে। আবার যখন জন্তুটির পায়ের শিরা কেটে দেয়া হয়েছিল ,তোমরা তখন পালিয়ে গেলে । তোমাদের চরিত্র নিম্নমানের এবং তোমরা অঙ্গীকার ভঙ্গকারী। তোমাদের হৃদয় হচ্ছে মোনাফেকিপূর্ণ। তোমাদের পানি হচ্ছে লবনাক্ত। যারা তোমাদের সঙ্গে থাকে তারা পাপে ডুবে থাকে এবং যারা তোমাদের পরিত্যাগ করে তারা আল্লাহর রহমতের অধিকারী হয়। যদিও আমি তোমাদের মসজিদকে নৌকার উপরিভাগের মতো দীপ্যমান দেখছি। তবুও আল্লাহ তার ওপর ও নিচের দিক হতে শাস্তি প্রেরণ করলে তোমরা যারা এতে রয়েছে। প্রত্যেকেই অতলে তলিয়ে যাবে।
অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
আল্লাহর কসম ,তোমাদের শহর নিশ্চয়ই ,এতখানি ডুবে যাবে যে ,এর মসজিদকে আমি নৌকার উপরিভাগ অথবা বসে থাকা উটপাখীর মতো দেখতে পাচ্ছি। অন্য এক বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
তোমাদের মসজিদকে গভীর সমুদ্রে একটা পাখীর বক্ষের মতো দেখতে পাচ্ছি।
অন্য এক বর্ণনানুযায়ীঃ
তোমাদের শহর অতীব পুতিগন্ধময়। শহরটি পানির অত্যন্ত নিকটবর্তী এবং আকাশ থেকে অনেক দূরে। এ শহরের দশ ভাগের নয় ভাগই পাপে পঙ্কিল। যে কেউ এতে প্রবেশ করে সে পাপের মধ্যে প্রবেশ করে এবং যে এ শহর থেকে বেরিয়ে যায়। সে আল্লাহর ক্ষমা লাভ করে । তোমাদের এ জনপদের দিকে তাকালে দেখা যায় যে ,পানি এমনভাবে এটাকে গ্রাস করেছে কেবলমাত্র মসজিদের চূড়া গভীর সমুদ্রে ভাসমান পাখীর বক্ষের মতো ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়না ।
____________________
খোৎবা- ১৪
أَرْضُكُمْ قَرِيبَةٌ مِنَ الْمَاءِ بَعِيدَةٌ مِنَ السَّمَاءِ - خَفَّتْ عُقُولُكُمْ وسَفِهَتْ حُلُومُكُمْ فَأَنْتُمْ غَرَضٌ لِنَابِلٍ وأُكْلَةٌ لِآكِلٍ وفَرِيسَةٌ لِصَائِلٍ.
বসরাবাসীদের
প্রতি
ভর্ৎসনা
তোমাদের মাটি সমুদ্রের নিকটবর্তী এবং আকাশ হতে অনেক দূরে ৷ তোমাদের বোধশক্তি খুবই ক্ষীণ ,ধৈর্য মূর্খতাপূর্ণ এবং তোমাদের মন পাপে পূর্ণ। তোমরা তীরন্দাজের লক্ষ্যবস্তু ,খাদকের গ্রাস এবং শিকারির সহজলভ্য শিকার।
খোৎবা- ১৫
فيما رده على المسلمين من قطائع عثمان -رضياللهعنه
واللَّه لَوْ وَجَدْتُه قَدْ تُزُوِّجَ بِه النِّسَاءُ ومُلِكَ بِه الإِمَاءُ - لَرَدَدْتُه - فَإِنَّ فِي الْعَدْلِ سَعَةً - ومَنْ ضَاقَ عَلَيْه الْعَدْلُ فَالْجَوْرُ عَلَيْه أَضْيَقُ!
উসমান ইবনে
আফফান
কর্তৃক
অনুদানকৃত
ভূমি
পুনঃগ্রহণ
করার
পর
বলেন
আল্লাহর কসম ,যদিও আমি দেখেছিলাম এ অর্থ দ্বারা নারী বিয়ে করা যায় অথবা ক্রীতদাসী ক্রয় করা যায়। তবুও আমি তা ফেরত প্রদান করতাম। আমি এ কারণে তা গ্রহণ করেছিলাম যে ,এতে ন্যায় বিচার বিধান করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যদি কেউ ন্যায় কাজ করাকে কঠিন মনে করে তবে অন্যায় কাজ করাকে অধিকতর কঠিন মনে করা উচিত।
খোৎবা- ১৬
لما بويع في المدينة وفيها يخبر الناس بعلمه بما تئول إليه أحوالهم وفيها يقسمهم إلى أقسام
ذِمَّتِي بِمَا أَقُولُ رَهِينَةٌ، وَ أَنَا بِهِ زَعِيمٌ. إِنَّ مَنْ صَرَّحَتْ لَهُ الْعِبَرُ عَمَّا بَيْنَ يَدَيْهِ مِنَ الْمَثُلاَتِ حَجَزَتْهُ التَّقْوى عَنْ تَقَحُّمِ الشُّبُهاتِ.
أَلاَ وَ إِنَّ بَلِيَّتَكُمْ قَدْ عَادَتْ كَهَيْئَتِهَا يَوْمَ بَعَثَ اللَّهُ نَبِيَّكُمْصلىاللهعليهوآلهوسلم
، وَ الَّذِي بَعَثَهُ بِالْحَقِّ لَتُبَلْبَلُنَّ بَلْبَلَةً، وَ لَتُغَرْبَلُنَّ غَرْبَلَةً، وَ لَتُسَاطُنَّ سَوْطَ الْقِدْرِ، حَتَّى يَعُودَ أَسْفَلُكُمْ أَعْلاَكُمْ وَ أَعْلاَكُمْ أَسْفَلَكُمْ، وَ لَيَسْبِقَنَّ سَابِقُونَ كَانُوا قَصَّرُوا، وَ لَيُقَصِّرَنَّ سَبَّاقُونَ كَانُوا سَبَقُوا. وَ اللَّهِ مَا كَتَمْتُ وَشْمَةً، وَ لاَ كَذَبْتُ كِذْبَةً، وَ لَقَدْ نُبِّئْتُ بِهَذَا الْمَقَامِ وَ هَذَا الْيَوْمِ.
أَلاَ وَ إِنَّ الْخَطَايَا خَيْلٌ شُمُسٌ حُمِلَ عَلَيْهَا أَهْلُهَا، وَ خُلِعَتْ لُجُمُها فَتَقَحَّمَتْ بِهِمْ فِي النَّارِ. أَلا وَ إِنَّ التَّقْوَى مَطايا ذُلُلٌ حُمِلَ عَلَيْها أَهْلُها وَ أُعْطُوا أَزِمَّتَهَا فَأَوْرَدَتْهُمُ الْجَنَّةَ، حَقُّ وَ بَاطِلٌ، وَ لِكُلِّ أَهْلٌ، فَلَئِن أَمِرَ الْبَاطِلُ لَقَدِيما فَعَلَ، وَ لَئِنْ قَلَّ الْحَقُّ فَلَرُبَّما وَ لَعَلَّ، وَ لَقَلَّمَا أَدْبَرَ شَي ءٌ فَأَقْبَلَ.
شُغِلَ مَنِ الْجَنَّةُ والنَّارُ أَمَامَه - سَاعٍ سَرِيعٌ نَجَا وطَالِبٌ بَطِيءٌ رَجَا - ومُقَصِّرٌ فِي النَّارِ هَوَى - الْيَمِينُ والشِّمَالُ مَضَلَّةٌ والطَّرِيقُ الْوُسْطَى هِيَ الْجَادَّةُ عَلَيْهَا بَاقِي الْكِتَابِ وآثَارُ النُّبُوَّةِ - ومِنْهَا مَنْفَذُ السُّنَّةِ وإِلَيْهَا مَصِيرُ الْعَاقِبَةِ - هَلَكَ مَنِ ادَّعَى و(
خابَ مَنِ افْتَرى
)
- مَنْ أَبْدَى صَفْحَتَه لِلْحَقِّ هَلَكَ - وكَفَى بِالْمَرْءِ جَهْلًا أَلَّا يَعْرِفَ قَدْرَه - لَا يَهْلِكُ عَلَى التَّقْوَى سِنْخُ أَصْلٍ - ولَا يَظْمَأُ عَلَيْهَا زَرْعُ قَوْمٍ - فَاسْتَتِرُوا فِي بُيُوتِكُمْ(
وأَصْلِحُوا ذاتَ بَيْنِكُمْ
)
- والتَّوْبَةُ مِنْ وَرَائِكُمْ - ولَا يَحْمَدْ حَامِدٌ إِلَّا رَبَّه ولَا يَلُمْ لَائِمٌ إِلَّا نَفْسَه.
মদিনায় তার
হাতে
বায়াত
গ্রহণের
পর
এ
ভাষণ
দেন
আমি যা বলি তার দায় দায়িত্বের নিশ্চয়তা আমার এবং সে জন্য আমিই জবাবদিহি করবো। যার নিকট অতীতের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির (আল্লাহ্ কর্তৃক প্রদত্ত) অভিজ্ঞতা পরিস্কারভাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে ,সন্দেহে পতিত হওয়া থেকে তাকওয়া তাকে বিরত রাখে। জেনে রাখো ,রাসূলের (সা.) আগমন কালে যেসব বিপদাপদ বিরাজমান ছিল সেসব আবার ফিরে এসেছে।
সেই আল্লাহর কসম ,যিনি সত্যের সাথে রাসূলকে পাঠিয়েছেন ,তোমরা মারাত্মকভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে ,চালনি দিয়ে চালার মত আলোড়িত হবে এবং রান্না করার পাত্রে চামচ দিয়ে মিশানোর মতো সম্পূর্ণরূপে মিশ্রিত হয়ে যাবে। কারণ তোমাদের নিচু শ্রেণির লোকেরা উচ্চ মর্যাদা লাভ করেছে এবং উচ্চ শ্রেণির লোকেরা হতমান হয়ে পড়েছে ,তোমাদের পিছনে - পড়া লোকেরা অগ্রগামী হয়েছে এবং অগ্রগামীকে পিছনে ফেলে রাখা হয়েছে। আল্লাহর কসম ,আমি একটা শব্দও গোপন করিনি বা কোন মিথ্যা কথা বলিনি । এ ঘটনা এবং এ সময় সম্পর্কে আমাকে অবহিত করা হয়েছে।
সাবধান ,পাপ হলো অবাধ্য ঘোড়ার মতো। সেই ঘোড়ার ওপর ওদের আরোহীকে সওয়ার করিয়ে দেয়া হয়েছে এবং ওদের লাগামও ঢিলা করে দেয়া হয়েছে। সুতরাং সেই ঘোড়া আরোহীসহ দোযখে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। মনে রেখো ,তাকওয়া হলো অনুগত ঘোড়ার মতো। ওটার ওপর আরোহীকে সওয়ার করিয়ে দিয়ে লাগাম হাতে ধরিয়ে দেয়া হয় যাতে আরোহীকে বেহেশতে নিয়ে যেতে পারে। পৃথিবীতে ন্যায় আছে ,অন্যায়ও আছে এবং উভয়ের অনুসারীও আছে। যদি অন্যায় প্রাধান্য বিস্তার করে (অতীতে এমনই ছিল) এবং সত্য লাঞ্চিত হয় (যা প্রায়শই ঘটেছে) তাহলে মানুষ যথাযথ পথে অগ্রসর হতে পারে না। একবার পিছনে পড়ে গেলে ,সামনে এগিয়ে আসতে পেরেছে এমন ঘটনা বিরল।
যাদের চিন্তা - চেতনায় বেহেশত ও দোযখ দৃশ্যমান তাদের অন্য কোন লক্ষ্য থাকে না। যে ব্যক্তি প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় ও দ্রুত কর্মসাধন করে সে নাজাত পায় এবং যে ব্যক্তি সত্যের অনুসন্ধানকারী সে ধীর হলেও আল্লাহর অনুগ্রহের আশা পোষণ করতে পারে। আর যে ব্যক্তি কর্মসাধন করে না সে দোযখে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ডানে ও বামে বিভ্রান্তিকর পথ রয়েছে। শুধুমাত্র মধ্যবর্তী পথই যথার্থ যা রয়েছে চিরস্থায়ী গ্রন্থে ও রাসূলের তরিকায়। সে পথ থেকেই সুন্নাহ প্রসার লাভ করেছে এবং পরিণামে সে দিকেই প্রত্যাবর্তন।
যে ব্যক্তি অন্য পথ অবলম্বন করে সে ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং যে মিথ্যা আরোপ করে সে হাতাশাগ্রস্থ । যে ব্যক্তি মুখে ন্যায়ের বিরোধিতা করে সে ধ্বংস হয়ে যায়। নিজেকে না জানাই একজন লোকের যথেষ্ট অজ্ঞতা। যার তাকওয়ার ভিত্তি শক্তিশালী
সে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় না এবং তাকওয়ার ভিত্তিতে করা চাষাবাদ কখনো পানিবিহীন থাকে না । তোমরা নিজেদেরকে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে ফেল এবং সংস্কার করা। অতীতের জন্য তওবা কর। নিজেকে তিরস্কার করে কেবলমাত্র আল্লাহর প্রশংসা কর।
____________________