একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন0%

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন লেখক:
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ: নারী বিষয়ক

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক: মীর আশরাফ-উল-আলম
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 41451
ডাউনলোড: 3894

পাঠকের মতামত:

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 87 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 41451 / ডাউনলোড: 3894
সাইজ সাইজ সাইজ
একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক:
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বাংলা

হাউলার হাদীস

হাউলা হলেন আত্তারাহ্ নামের এক লোকের স্ত্রী , সে রাসূল (সা.) -এর সময়ে জীবন-যাপন করত । একদিন তার স্বামী তাকে কোন ব্যাপারে নির্দেশ দিল , কিন্তু সে তার স্বামীর নির্দেশ মানতে আপত্তি জানালো । এর ফলে তার স্বামী খুব রাগান্বিত হয় । পরবর্তীতে সে তার স্বামীর কাছে উক্ত ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে , কিন্তু তার স্বামী তার ক্ষমা প্রার্থনার প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপই করলো না ।

সে তখন রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে উক্ত ঘটনার বর্ণনা দিল । সব শুনে রাসূল (সা.) হাউলাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে শিক্ষা দিলেন , যা আমরা নিম্নে লক্ষ্য করব ।

1- যে নারী তার স্বামীর দিকে রাগের দৃষ্টিতে তাকায় তার উপর আযাব :

হে হাউলা , যে নারী রাগান্বিত ভাবে তার স্বামীর দিকে তাকায় কিয়ামতের দিনে ঐ চোখে জাহান্নামের আগুনের ছাই দিয়ে সুরমা লাগানো হবে ।204

2- যে নারী তার স্বামীর কথা শোনে না তার উপর আযাব :

রাসূল (সা.) বললেন : হে হাউলা , সেই খোদার কসম যিনি আমাকে রাসূল হিসেবে মনোনীত করেছেন , যে নারী তার স্বামীর (যুক্তিযুক্ত) কথা গ্রহণ করে না , তাকে কিয়ামাতের দিনে তার জিহ্বা দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হবে এবং তার দুই ঠোঁটকে আগুনের তৈরী পেরেক দিয়ে সেলাই করে দেয়া হবে ।205

কিয়ামতের দিনে মানুষকে একদিকে যেমন দলে দলে বিভক্ত করা হবে তেমনি এই দুনিয়ায় তাদের কর্মের অভ্যন্তরীণ সত্য ও প্রকৃত স্বরূপও সে দিন প্রকাশ করা হবে । তাই যে নারী তার স্বামীর আনুগত্য না করবে এবং তার কথা মেনে না চলবে প্রকৃতপক্ষে ঐ নারী জাহান্নামের আগুনের শিখাকে দ্বিগুণ করে । এমন ধরনের পরিবার এই দুনিয়াতেও প্রতিকূলতার মধ্যে থাকে এবং তাদের জীবনকে জাহান্নাম বানিয়ে রাখে ও তা থেকে কোন আনন্দই উপভোগ করতে পারে না ।

3- যে নারী তার স্বামীকে কষ্ট দেয় তার উপর আযাব :

হে হাউলা , ঐ সত্তার কসম যিনি আমাকে রিসালাত দিয়ে পাঠিয়েছেন ; যে নারী হাত উঠায় এবং চায় যে , তার স্বামীর মাথা থেকে একটি চুল ছিড়ে নিতে অথবা তার পোশাক ছিড়ে ফেলতে আল্লাহ তা ’ য়ালা ঐ নারীর দুই হাত আগুনের তৈরী পেরেক দিয়ে সেলাই করে দিবেন ।

যদি কোন নারী তার স্বামীর থেকে শারীরিক গড়নে শক্তিশালী হয় তবুও সে তার স্বামীকে কষ্ট দেয়ার অধিকার রাখে না । আর যদি তেমন কাজ করে আল্লাহ তা ’ য়ালা যে ওয়াদা দিয়েছেন তাকে সেই আযাব দান করবেন । অনুরূপভাবে পুরুষও স্ত্রীকে মারার অধিকার রাখে না । তাই রাসূল (সা.) বলেছেন :

যে পুরুষ তার স্ত্রীকে একটি চড় মারবে আল্লাহ তা ’ য়ালা জাহান্নামের আগুনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতাকে নির্দেশ দিবেন যে , 70 টি আগুনের চড় ঐ পুরুষের গালে মারতে এবং যে পুরুষ হাত নামাহরাম নারীর চুলে হাত দিবে কিয়ামতের দিনে ঐ হাত জাহান্নামের আগুন দিয়ে তৈরী পেরেক দিয়ে সেলাই করে দেয়া হবে ।206

ইসলাম কোন বিশেষ দলের পক্ষে নেই বরং তাতে যা কিছু জরুরী বা প্রয়োজনীয় তার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে । তাই বলা হয়েছে যে , সঠিক সম্পর্ক ও ন্যায়পরায়ণতা রক্ষায় স্বামী স্ত্রীর উভয় পক্ষেরই দায়িত্ব রয়েছে । ইসলাম তাই উভয় পক্ষের জন্যেই সম্মান-মর্যাদা ও অধিকার এবং দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছে ।

শারীরিক গড়ন অনুসারে নারী যেহেতু পুরুষের থেকে দুর্বল এবং ইতিহাসের সাক্ষ্য অনুযায়ী তার উপর অত্যাচার হয়েছে সেহেতু এই দৃষ্টি ভঙ্গির উপর ভিত্তি করে প্রিয় ইসলাম নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য প্রচুর সুপারিশ করেছে এবং তাদের প্রতি অত্যাচার না করার জন্য বলেছে ।

4- যে নারী স্বামীর বিনা অনুমতিতে ঘরের বাইরে যায় তার উপর আযাব :

হে হাউলা , কসম আল্লাহর যিনি আমাকে রিসালাত দিয়ে পাঠিয়েছেন । যে নারী তার স্বামীর বিনা অনুমতিতে বাড়ির বাইরে যায় এবং কোন বিয়ের অনুষ্ঠান অথবা অন্য কোন দাওয়াতে উপস্থিত হয় , আল্লাহ্ তা ’ য়ালা তাকে ডান দিক থেকে চল্লিশ বার এবং বাম দিক থেকে চল্লিশ বার সামনের দিক থেকে চল্লিশবার অভিসম্পাত দিয়ে থাকেন । আর তার সম্পূর্ণ অস্তিত্বকে আল্লাহর অভিসম্পাত ঘিরে ফেলে এবং সে যে কয়টি পদক্ষেপ ফেলবে তার জন্য চল্লিশ বছর ধরে চল্লিশটি করে গোনাহ্ লিখে থাকেন ।

আর যখন সে চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয় ততদিন পর্যন্ত যত পুরুষ তার কণ্ঠ ও কথা শুনতে পাবে তাদের সংখ্যা পরিমাণ তার জন্য গুনাহ লেখা হবে এবং তার দোয়াও কবুল হবে না । তবে তার স্বামী যদি সে যতগুলো দোয়া করেছে তার দোয়ার পরিমানে তার জন্য তওবা করে অর্থাৎ ক্ষমা প্রার্থনা করে । আর তার স্বামী যদি তার জন্য তওবা না করে তবে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত আল্লাহ তা ’ য়ালার অভিসম্পাত চলতে থাকবে এবং সে তাঁর রহমত থেকে দূরে থাকবে ।207

এই হাদীসটি যে ক্ষতির সংকেত দিচ্ছে তা হচ্ছে :

প্রথমত : নারী যেন তার স্বামীর বিনা অনুমতিতে বাড়ীর বাইরে না যায় । তবে কোন ওয়াজিব বিষয় ব্যতীত যেমন : হজ্জ ও ।

দ্বিতীয়ত : সে এমন অবস্থায় দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে যখন আল্লাহ তা ’ য়ালার অভিসম্পাত তার উপর চলতে থাকবে এবং তাঁর রহমত থেকে দূরে থাকবে ।

তৃতীয়ত : ডান ও বাম থেকে লানত দেয়ার অর্থ হচ্ছে যে , আল্লাহ তা ’ য়ালা তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান না । আর এটাই সব থেকে বড় মুসিবত যে , আল্লাহ তা ’ য়ালা তাঁর বান্দার দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন ।

চতুর্থত : নারী যেন তার স্বামীর এবং কন্যা যেন তার পিতার বিনা অনুমতিতে বাড়ীর বাইরে না যায় এবং কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে অথবা কোন দাওয়াতে । যদি এ ধরণের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ও সেখানে পাপ কাজ হয় তবে তার উচিত হবে সেখানে ইসলামের নির্দেশিত সঠিক পথে তা প্রতিরোধের চেষ্টা করা এবং তা করতে অক্ষম হলে সেখান থেকে চলে আসা ।

আল্লাহ্ জানেন যে , অনেক বড় ধরনের গোনাহ্ এবং যুবক যুবতীর অবৈধ মেলামেশা , সংসার ধ্বংস হওয়া ও সন্তানরা অভিভাবকহীন হয়ে যাওয়াটা এই ধরনের অনুষ্ঠানের কারণেই হয়ে থাকে । আমরাও বহুবার এই ধরনের ঘটনাকে অতি নিকট থেকে লক্ষ্য করেছি ।

5- নারীর দেন-মোহরের পরিমান বেশী হওয়ার কারণে পাপ ও আযাব :

হে হাউলা , সেই আল্লাহর কসম করে বলছি যিনি আমাকে নবী হিসেবে মনোনীত করেছেন । যে নারী তার দেন-মোহরকে বেশী করে থাকে যার কারণে তার স্বামীর উপর অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি হয় ; আল্লাহ তা ’ য়ালা কিয়ামতের দিনে তার জন্য জাহান্নামের আগুন দিয়ে তৈরী শিকলগুলোকে আরো ভারী করে দিবেন ।208

ইসলাম নারীর জন্য দেন-মোহরকে নির্ধারণ করেছে । আর স্বামীর জন্য ওয়াজিব যে , তা যেন পরিশোধ করে । (যার আলোচনা এই বইয়ের নারীর মর্যাদা নামক অধ্যায়ে বলা হয়েছে) কিন্তু দেন মোহরের পরিমান যেন এমন বেশী না হয় যাতে করে তা কোন খারাপ প্রভাবে ফেলে । অপ্রিয় হলেও সত্য যে , কেউ কেউ এমন চিন্তা করে থাকে যে , দেন- মোহর বেশী হলে তার কন্যার মর্যাদা বেশী হবে । কিন্তু যদি তার পরিমান বেশী হয় তবে এমনও হতে পারে যে , যুবকরা বিয়ের ধারে কাছেই যাবে না । আর তার ফলশ্রুতিতে যুবক যুবতীর মধ্যে অবৈধ মেলা-মেশার পরিবেশ সৃষ্টি হবে । অবশ্য যখন কোন ব্যক্তি কারো কন্যার জন্যে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে তখন অবশ্যই তাকে নৈতিকতা এবং দ্বীনের মানদন্ড অনুযায়ী পরীক্ষা করা ও তার কাছ থেকে দেন-মোহর নেয়া উচিত । যাতে করে অসৎ চরিত্রের পুরুষরা নারীদেরকে প্রতিনিয়ত কষ্ট ও অসহায় অবস্থায় না ফেলতে পারে ।

যে বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং যে বিষয়টির প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখা উচিত তা হচ্ছে যে , যেরূপে রাসূল (সা.) বলেছেন : দ্বীন ও নৈতিকতার বিষয় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসা ব্যক্তির জন্য বিশেষ বিবেচ্য । কেননা যদি তার দ্বীন ও নৈতিকতা না থাকে তবে জীবন হয়ে উঠবে জাহান্নাম । যদিও তার প্রচুর পরিমানে ধন-সম্পদও থেকে থাকে । এই বিষয়গুলোর সাথে দেন-মোহরের বিষয়টিও বিশেষভাবে লক্ষণীয় এবং কন্যা দানের সময় অবশ্যই ছেলে এবং তার পরিবারের বিষয়ে খোঁজ খবর করা প্রয়োজন যাতে করে দুশ্চরিত্র পাত্র হতে রক্ষা পাওয়া যায় ।

সার সংক্ষেপ হচ্ছে যে , দুনিয়াবী বিষয়ের প্রতি যতই লক্ষ্য দেয়া হবে জীবনের ভিত্তি ততই দুর্বল হয়ে যাবে এবং তার ধ্বংস নিকটবর্তী হয়ে আসবে । আর যতই নৈতিক দিককে গুরুত্ব দেয়া হবে এবং আল্লাহ তাবারাক ওয়া তা ’ য়ালার নিকটবর্তী হওয়া যাবে ততই জীবন হয়ে উঠবে আলোকময় ও সুন্দর এবং তার স্থায়িত্বও বেশী হবে ।

6- যে নারীর দেন-মোহর স্বামীর ঘাড়ে থেকে যায় তার উপর আযাব :

হে হাউলা , তাঁর কসম যিনি আমাকে রিসালাত দিয়ে পাঠিয়েছেন । যে নারী দেন-মোহরকে ইচ্ছা করে তার স্বামীর কাছে থেকে নিতে দেরী করে এ উদ্দেশ্যে যে , তা যেন কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তার স্বামীর উপর থাকে ; আল্লাহ তাবারাক ওয়া তা ’ য়ালা তাকে দুনিয়ায় লাঞ্ছিত করে এবং আখিরাতে তার জন্য আরো বড় ধরনের আযাব অপেক্ষারত । যদি তারা জেনে থাকে ।209

এই হাদীসের সারমর্ম হচ্ছে যে , পুরুষ মরে যাওয়ার পরে যেন তার স্ত্রীর কাছে ঋণী না থাকে । নারী তার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় তার কাছে থেকে হয় দেন-মোহর নিয়ে নিবে অথবা তা ক্ষমা করে দিবে । দেন-মোহর ক্ষমা করে দেয়াটা হচ্ছে একটি মুসতাহাব কাজ ।

7- যে নারী স্বামীর বিনা অনুমতিতে মুসতাহাব রোযা রাখে তার উপর আযাব :

হে হাউলা , তাঁর কসম যিনি আমাকে রিসালাত সহকারে নবী নিযুক্ত করেছেন । যে নারী তার স্বামীর বিনা অনুমতিতে মুসতাহাব রোযা রাখে সে গোনাহ্গার হিসেবে চিহ্নিত হবে । তবে রমযান মাসের কাযা রোযা এবং মানতের রোযা ব্যতীত ।210

8- নারীর অনুমতি নেই যে , সে তার স্বামীর বিনা অনুমতিতে তার অর্থ দিয়ে ছাদকা দিবে বা কাউকে দান করবে :

হে হাউলা , কসম সেই খোদার যিনি আমাকে নবী হিসেবে মনোনীত করেছেন । এটা সমীচিন নয় যে , নারী তার স্বামীর ঘর থেকে কোন কিছুকে ছাদকা হিসেবে দিবে , যতক্ষণ পর্যন্ত তার স্বামীর অনুমতি না নিচ্ছে । আর যদি সে এই কাজটি স্বামীর বিনা অনুমতিতে করে থাকে তবে তার ছওয়াব স্বামী পাবে এবং তার ভাগ্যে শুধুমাত্র গোনাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুই জুটবে না ।

আর যদি স্বামী অনুমতি দেয় বা তার নিজের সম্পদ হয় তবেই তা গ্রহণযোগ্য হবে ।211

9- স্ত্রীর উপর স্বামী সন্তুষ্ট বা রাগান্বিত হলে আল্লাহ তা ’ য়ালাও সন্তুষ্ট বা রাগান্বিত হন :

হে হাউলা , ঐ আল্লাহর কসম যিনি আমাকে নবী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন । যদি স্বামী তার স্ত্রীর উপর সন্তুষ্ট থাকে তবে আল্লাহ তা ’ য়ালাও ঐ নারীর উপর সন্তুষ্ট থাকেন । আর যদি স্বামী তার স্ত্রীর উপর রাগান্বিত থাকে তবে আল্লাহ তা ’ য়ালা ও ফেরেশতাগণও ঐ নারীর উপর রাগান্বিত হন ।212

10- যে নারী তার স্বামীকে রাগান্বিত করে তার আযাব :

হে হাউলা , কসম সেই আল্লাহর যিনি আমাকে রিসালাত ও নবুওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছেন এবং হেদায়েত প্রাপ্তগণের মধ্যে স্থান দিয়েছেন । যখন স্বামী তার স্ত্রীর উপর রাগান্বিত হয় আল্লাহ তা ’ য়ালাও ঐ নারীর উপর রাগান্বিত হন এবং কিয়ামতের দিনে উল্টা দিকে ফিরিয়ে জাহান্নামের শেষ স্তরে যেখানে মুনাফিকরা (মুনাফিকরা জাহান্নামের সবচেয়ে নিম্নতম স্থানে থাকবে যে স্থানের নাম হচ্ছে দারাক) অবস্থান করবে সেখানে ফেলে দেয়া হবে । আর আল্লাহ তা ’ য়ালা এই নারীর উপর সাপ , বিছা , আফি (বিশাল বড় সাপ) ইত্যাদি ছেড়ে দিবেন এবং ঐগুলো নারীর শরীর ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে । আর কিয়ামতের দিনে ঐ সরীসৃপ জাতীয় বিশাল প্রাণীগুলো গাছ ও পাহাড়ের মত মজবুত থাকবে ।213

11- স্বামীর আনুগত্য করার সওয়াব :

হে হাউলা , যে নারী নামায আদায় করে এবং সংসারকে আঁকড়ে থাকে ও স্বামীর আনুগত্য করে মহান আল্লাহ তার অতীত এবং ভবিষ্যৎ সকল গোনাহ্ ক্ষমা করে দেন ।214

অবশ্য ভবিষ্যৎ গোনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে এর অর্থ এই নয় যে , সে ভবিষ্যতে ইচ্ছা মত গোনাহ্ করতে পারবে বরং এর অর্থ হচ্ছে যে , নারী যদি ইবাদত-বন্দেগি করে এবং অতি প্রয়োজনীয় কাজে স্বামীর অনুমতি নিয়ে বাড়ীর বাইরে যায় অর্থাৎ সব কিছুই নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলে তবে ভবিষ্যতে যদি অসতর্কতাবশত সে গোনাহ্ করে তবে তার সে গোনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে । আর আল্লাহ তা ’ য়ালা তার ভুল-ত্রুটিগুলোকে আনুগত্য ও খেদমত হিসেবে হিসাব করবেন । আল্লাহ্ তাবারাক ওয়া তা ’ য়ালা বলেছেন :

) وَأَقِمِ الصَّلَاةَ طَرَفَيِ النَّهَارِ وَزُلَفًا مِنَ اللَّيْلِ إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ ذَلِكَ ذِكْرَى لِلذَّاكِرِينَ(

দিনের দুই প্রান্তে এবং রাতের প্রথমভাগে নামায আদায় কর । নিশ্চয়ই ভাল কর্ম যেমন : নামায , রোযা ইত্যাদি মন্দ কর্ম সমূহকে দূর করে । এটা তাদের জন্যেই স্মারক যারা স্মরণ করে থাকে।215

উল্লিখিত পবিত্র আয়াত থেকে এটাই বুঝা যায় যে , যদি কোন ব্যক্তি গোনাহ্ করে থাকে এবং পরক্ষণেই প্রকৃত তওবা216 করে ও ভাল কাজ করে , তবে আল্লাহ্ তা ’ য়ালা ঐ ব্যক্তির গোনাহকে ভাল কাজে পরিবর্তন করে দেন । আর ভাল কাজ খারাপ কাজের প্রভাবকে ধ্বংস হওয়ার কারণ হয়ে থাকে ।

12- নারীর জন্য এটা জায়েয নয় যে , স্বামীর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু দাবি করবে :

হে হাওলা , নারীর জন্য এটা জায়েয ও হালাল নয় যে , স্বামীর কাছে তার সামর্থের চেয়ে বেশী কিছু দাবি জানাবে এবং তার ব্যাপারে মানুষের কাছে চাই সে পরিচিত হোক অথবা অপরিচিত হোক অভিযোগ করবে ।217

উল্লিখিত রেওয়ায়েতটি আমাদেরকে যা শিক্ষা দেয় তা হচ্ছে প্রথমত যদিও স্বামী অবশ্যই তার স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দিবে কিন্তু যদি অর্থনৈতিক ভাবে তার সমস্যা আসে তবে স্ত্রীরও উচিত যে , ঐ সমস্যাকে মেনে নিয়ে স্বামীর সাথে মিলিতভাবে সমস্যার মুকাবিলা করা । কেননা স্ত্রী যদি তার স্বামীকে চাপের মুখে ফেলে তবে সে ঈমানের দুর্বলতার কারণে অবৈধ পথে অর্থ উপার্জনের (যা হচ্ছে হারাম) দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে । আর এর মাধ্যমে স্বামীর মান-সম্মান হুমকীর মুখে পড়তে পারে ।

দ্বিতীয়ত স্ত্রীর অবশ্যই উচিত নয় যে , যা কিছু সংসারে ঘটছে বা ঘটে তা তার পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির কাছে বর্ণনা করবে । অন্যের সাথে স্ত্রীর এই সব কথা বলার কারণে সংসারে মতবিরোধের সৃষ্টি হতে পারে এবং ফলশ্রুতিতে সংসার জীবনে ফাটল ধরতে পারে এবং সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে । কারণ সংসারে অপরিচিত কোন ব্যক্তির হস্তক্ষেপ মতপার্থক্যের সৃষ্টি করে থাকে । হ্যাঁ , স্বামী যদি খারাপ হয়ে থাকে তবে স্ত্রীর অধিকার রয়েছে যে , তার ব্যাপারে এমন ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ করতে পারবে যারা তাদের প্রতি প্রকৃতই সহানুভূতিশীল ও পারিবারিক বিষয়ে অভিজ্ঞ । যাতে করে ঐ সমস্যার অবসান ঘটে ।

13- সুখে ও দুঃখের সময়ে স্বামীর সাথে জীবন-যাপন করা হচ্ছে সওয়াবের কাজ :

হে হাউলা , স্ত্রীর জন্য এটা হচ্ছে ওয়াজিব যে , তার স্বামীর সুখের ও দুঃখের সময় ধৈর্যধারণ করবে ; যেমনভাবে হযরত আইয়ুব (আ.) -এর স্ত্রী 18 বছর ধরে তার স্বামীর উপর যে মুসিবত এসেছিল তাতে ধৈর্যধারণ করেছিল । তার স্বামীকে ঘাড়ে করে রাখতো এবং তার জন্য (যাঁতাকলে) গম ভেঙ্গে আটা তৈরী করতো । আর সেই আটা দিয়ে রুটি তৈরী করতো এবং স্বামীকে গোসল করাতো । স্বামীর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতো এবং তিনি তা খেতেন । এতবড় মুসিবত আসার পরেও সে আল্লাহকে ভুলে যায় নি । তাঁর হামদ ও প্রশংসা করতো । তার স্বামীকে একটি আ ’ বায়(চাদরে) জড়িয়ে নিজের কাঁধে করে রাখতো । এগুলো সে শুধুমাত্র আল্লাহর পথে ভাল কাজ করার নিয়তে ও তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার জন্যই করেছিল ।218

14- নারীর দেহ কি পরিমান আবৃত থাকা প্রয়োজন :

হে হাউলা , তোমার সৌন্দর্য্যকে স্বামী ব্যতীত অন্য কারো সামনে উম্মুক্ত করো না । হে হাউলা , নারীর জন্য এটা হালাল নয় যে , সে তার হাতের কব্জি এবং পায়ের টাখনু কোন নামাহরামের সামনে উম্মুক্ত করবে । আর যদি তেমন গোনাহ্ করেই ফেলে তবে সবসময়ের জন্য আল্লাহ্ ও তাঁর ফেরেশতাগণের পক্ষ থেকে লানত প্রাপ্ত হয় এবং তাদেরকে ক্রোধান্বিত করে । আর তার জন্য কঠিন আযাবের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে ।219

15- স্বামীর কথা না মেনে চলা হচ্ছে গোনাহ্ :

হে হাউলা , কসম সেই আল্লাহর যিনি আমাকে রিসালাত দিয়ে পাঠিয়েছেন । স্বামী যখন কোন কাজের জন্য স্ত্রীকে ডাকে তখন যেন সে অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দেয় এবং তাকে যেন সন্তুষ্ট রাখে । সে যদি কোন নির্দেশ দেয় তবে স্ত্রী যেন তার নির্দেশ মেনে চলে এবং যেন তার অবমাননা না করে । তার ডাকে যেন সুন্দর উত্তর দেয় এবং তার বিরুদ্ধাচরণ যেন না করে । যদি স্বামী স্ত্রীর উপর অসন্তুষ্ট থাকে তবে স্ত্রী তাকে রাজি খুশি না করিয়ে যেন রাতে ঘুমাতে না যায় । যদিও স্বামী তার উপর জুলুম করে থাকে (এবং যদিও স্ত্রীর পছন্দ-অপছন্দের কোন মুল্য স্বামী না দিয়ে থাকে) । আর যেন তার স্বামীর আহবানে সাড়া দেয় সে তখন যদি উটের উপরেও বসে থাকে ।220

(অবশ্য স্বামীর কর্তব্য হল তার স্ত্রীর পছন্দ-অপছন্দ এবং চাওয়া- পাওয়াগুলোকে ইনসাফের সাথে বিবেচনা করবে ও তা স্থান ,কাল , পাত্রের সাথে মিলিয়ে দেখবে । কেননা স্ত্রীর ব্যাপারে স্বামীরও দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে । )

16- যে নারী তার স্বামীকে বলে যে , আমি তোমার কাছ থেকে কোন ভাল কিছু পাই নি তার আযাব :

হে হাউলা , সেই আল্লাহর কসম যিনি আমাকে রাসূল হিসেবে মনোনীত করেছেন । আল্লাহ তা ’ য়ালা আমাকে বেহেশ্ত ও জাহান্নামকে দেখিয়েছেন , যারা জাহান্নামী নারী ছিল আমি তাদেরকে দেখেছি । জিবরাইলকে বলেছিলাম : হে আমার বন্ধু , কেন এরূপ ? জিবরাইল আমাকে বলল : তাদের কুফরির কারণে । বললাম : আল্লাহ তা ’ য়ালার কুফরী করার কারণে ? জিবরাইল বলল : না , এলাহী নিয়ামতের কুফরী করার কারণে । বললাম : কিভাবে তারা এলাহী নিয়ামতকে অস্বীকার করলো ? জিবরাইল বলল : তাদের স্বামীরা সারা জীবন তাদের প্রতি সদাচরণ করেছে এবং তাদের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করে নি কিন্তু তবুও তারা বলেছে যে , আমি তার কাছ থেকে কোন ভাল কিছু পাই নি ।221

17- আখিরাতে দুনিয়ার সৎকর্মের ফল পাওয়া যাবে :

হে হাউলা , স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার হচ্ছে যে , সংসারে স্ত্রী সব সময় তার স্বামীর সাথে একাকার হয়ে থাকবে । তার স্বামীর প্রতি হৃদ্যতা দেখাবে । তাকে ক্রোধান্বিত করা থেকে বিরত থাকবে । তার স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জন করবে এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলবে । স্বামীর সাথে অভিমান করা থেকে দূরে থাকবে । সন্তানের ক্ষেত্রে স্বামীর সাথে অন্য কাউকে শরিক কর না । তাকে যেন কোন কষ্টের মধ্যে না ফেল । তার অনুপস্থিতিতে তার প্রতি ও তার সম্পদের খিয়ানত কর না । যে সময়ে তার স্বামী ঘরে নেই সে সময় সে যেন তার স্বামীর মান- সম্মান রক্ষা করে এবং তার ঘরে সঠিকভাবে ও সততার সাথে জীবন-যাপন করে । সৌন্দর্য্য ও নিজের সাজ-সজ্জাকে শুধু মাত্র স্বামীর জন্যে করে এবং নামায আদায় করে । যে গোসলসমূহ তার উপর ওয়াজিব তা যেন আঞ্জাম দেয় যেমন : সঙ্গমজনিত অপবিত্রতা , মাসিক ঋতু এবং ইসতিহাযার গোসল । যদি তেমন করে তবে কিয়ামতের দিনে তাকে এক অপরূপ সুন্দরী ও নূরানী মেয়ে হিসেবে উপস্থিত করা হবে । যদি তার স্বামী দুনিয়াতে মু ’ মিন বান্দা হয়ে থাকে তবে সে ঐ স্বামীরই স্ত্রী হবে । আর যদি তার স্বামী মু ’ মিন বান্দা না হয়ে থাকে তবে তাকে একজন শহীদের সাথে বিয়ে দেয়া হবে । হে হাউলা , নিজেকে খোশবুযুক্ত করো না যখন তোমার স্বামী কাছে না থাকে ।222

উল্লেখিত হাদীসের লক্ষ্যণীয় বিষয়গুলো :

1- সংসার জীবনে নারী পুরুষ উভয়েই একে অপরের উপর দায়িত্ব ও কর্তব্য রাখে । তারা অবশ্যই একে অপরের সম্মান রক্ষা করে চলবে । কিন্তু নারীর উচিত যে , সে যেন তার স্বামীর মতকে প্রাধান্য দেয় এবং তার সন্তুষ্টি অর্জন করে ।

2- নারী গোপনে এবং প্রকাশ্যে অবশ্যই তার স্বামীর সাথে অন্তরঙ্গ হয়ে থাকবে । আর যে সময়ে তার স্বামী বাড়ীতে থাকবে না সে সময় তার স্বামীর মান-সম্মানকে রক্ষা করবে । এমন নয় যে , সে তার স্বামীর অবর্তমানে তার বিপক্ষে কথা বলে এবং পরিচিত ও অপরিচিতদের কাছে তাকে ছোট করবে । অবশ্য স্বামীও তার স্ত্রীর ব্যাপারে অনুরূপ দায়িত্ব রাখে । কেননা যদি তা না হয় তবে সংসারে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হবে ।

3- আয়াত ও রেওয়ায়েত থেকে এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে , ইসলামের বিধানসমূহ হচ্ছে বিশেষ আলোয় আলোকিত , তা মানুষের অন্তর ও রুহকে আলোকিত করে থাকে । যারা ইসলামের নির্দেশ মত চলে তারা তা খুব ভাল ভাবেই বুঝে । ইসলামী বিধি অনুযায়ী আমল করার ফলে যে নূর আসে তা দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ের জন্যে ।

18- স্বামীর কথা সহ্য করার সওয়াব :

রাসূল (সা.) বলেছেন : হে হাউলা , যদি স্বামী তার স্ত্রীকে কোন কথা বলে এবং সে তা সহ্য করে তবে আল্লাহ তা ’ য়ালা সে যে কটি কটু কথা সহ্য করেছে তার জন্য একজন রোযাদার এবং আল্লাহর রাস্তায় একজন মুজাহিদের সম পরিমান সওয়াব তাকে দিবেন । ”

পুরুষেরও তদ্রূপ দায়িত্ব রয়েছে যে , তার স্ত্রীর ভুল-ত্রুটিগুলো ঢেকে রাখবে এবং তার ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করবে । প্রকৃতপক্ষে যখন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ বা মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয় তখন যদি উভয়ই ছবর করে এবং ভুল-ত্রুটিসমূহকে একে অপরের উপর চাপিয়ে না দেয় তবে জীবন হয়ে উঠবে আরো সুন্দর । আর যদি এমন চিন্তা করে থাকে যে , একে অপরের ব্যাপারে আপত্তি তুলবে তবে জীবন হয়ে উঠবে বিষাক্ত এবং তাতে যে আগুনের সৃষ্টি হবে তাতে উভয়ই পুড়ে মরবে । তারা এই আগুন থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অবশ্যই নবী (সা.) ও ইমামদের (আ.) কথা মেনে চলবে এবং তদানুযায়ী আমল করবে ।

19- স্বামীর ভুল-ত্রুটি ঢেকে রাখার সওয়াব :

হে হাউলা , যে নারী তার স্বামীর ব্যাপারে অন্যের কাছে অভিযোগ করে , আল্লাহ তা ’ য়ালা ঐ নারীর উপর রাগান্বিত হন এবং যে নারী তারা স্বামীর ভুল- ত্রুটিসমূহকে ঢেকে রাখে তার পরিপ্রেক্ষিতে কিয়ামতের দিনে আল্লাহ তা ’ য়ালা 70টি বেহেশতী খিলয়া ’ ত (সেলাইকৃত জামা যা কোন বিশেষ ব্যক্তির পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয়) দিয়ে তাকে আবৃত করে দিবেন । প্রতিটি খিলয়া ’ ত বাদশা নো ’ মান ইবনে মুনযারের খিলয়া ’ তের অনুরূপ । অনুরূপভাবে আল্লাহ্ তা ’ য়ালা 40 টি বেহেশ্তী হুরকে তার সেবিকা এবং খাদেম হিসেবে তাকে দিবেন ।223

এই নির্দেশসমূহ শুধুমাত্র স্ত্রীর জন্যেই নয় বরং তা স্বামীর জন্যেও বলা হয়েছে । স্বামীর উচিৎ তার স্ত্রীর ভুল-ত্রুটিসমূহ ঢেকে রাখা । তবে যেগুলো ঢেকে রাখা সমাজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে সেগুলো ব্যতীত যেমন মদ্যপ , জুয়াড়ি , মাদকাসক্ত হওয়া ইত্যাদি ।

20- গর্ভবতী হওয়া , সন্তান প্রসব করা ও শিশুকে দুধ দেয়ার সওয়াব :

হে হাউলা , কসম সেই আল্লাহর যিনি আমাকে রিসালাত দিয়ে এবং সু-সংবাদ প্রদানকারী ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছেন । যে নারী তার স্বামীর মাধ্যমে গর্ভবতী হবে সে আল্লাহর করুণার ছায়া তলে থাকবে ঐ সময় পর্যন্ত যখন তার প্রসব বেদনা দেখা দিবে । আর যখনই তার প্রসব বেদনা শুরু হবে তখন থেকে প্রতিটি কষ্টের জন্য আল্লাহ তাকে একজন মু ’ মিন দাস মুক্ত করে দেয়ার সওয়াব দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা থেকে মুক্ত হচ্ছে এবং শিশুকে দুধ দিতে শুরু করছে । আর যতবার শিশু তার মায়ের বুক থেকে দুধ টেনে খাবে ততবারের জন্য আল্লাহ তা ’ য়ালা কিয়ামতের দিনে মায়ের পায়ের সামনে এমন নূরের ছটা সৃষ্টি করবেন যে কারণে সে দিন অন্য সবাই আশ্চর্য হয়ে যাবে । ঐ মাকে রোযাদার ও নামাযীর সওয়াব দেয়া হবে । যদিও সে রোযাদার না হয় তদুপরি একযুগের নামাজ ও রোযার সওয়াব সে পাবে । যখন শিশু দুধ খাওয়া ছেড়ে দিবে তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে ঐ মাকে উদ্দেশ্য করে বলা হবে যে , হে নারী তোমার অতীত সমস্ত গোনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে এবং আজ আল্লাহর রহমতে সমস্ত আমলসমূহকে নতুন করে শুরু করো ।224