একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন0%

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন লেখক:
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ: নারী বিষয়ক

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক: মীর আশরাফ-উল-আলম
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 41461
ডাউনলোড: 3897

পাঠকের মতামত:

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 87 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 41461 / ডাউনলোড: 3897
সাইজ সাইজ সাইজ
একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক:
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বাংলা

নারীদের কর্মের গোপন ও প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশিত হবে

হযরত আলী (আ.) বলেছেন : আমি ও ফাতিমা রাসূল (সা.)-এর নিকট পৌঁছে দেখলাম তিনি খুব কান্নাকাটি করছেন । জিজ্ঞাসা করলাম : আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক , ইয়া রাসূলুল্লাহ! এমন কি বিষয় যা আপনাকে কাঁদতে (আ.) বাধ্য করেছে ? তিনি বললেন : হে আলী ! মি ’ রাজের রাতে যখন আমি আসমানে গিয়েছিলাম তখন সেখানে আমার উম্মতের নারীদেরকে দেখলাম যে , তারা কঠিন আযাবের মধ্যে রয়েছে এবং তাদেরকে চিনতেও পারলাম । তাদের সেই কঠিন আযাবের কথা স্মরণ করে কাঁদছি । তারপর তিনি বললেন :

1- এক নারীকে দেখলাম যে , তাকে তার চুল দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার মাথার মগজ টগবগ করে ফুটছিল ।

2- এক নারীকে দেখলাম যে , তাকে তার জিহ্বার মাধ্যমে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার গলার ভিতর দিয়ে গরম পানি ঢালা হচ্ছে ।

3- এক নারীকে দেখলাম যে , তাকে তার স্তনদ্বয়ের মাধ্যমে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ।

4- এক নারীকে দেখলাম যে , তার দু ’ পা দু ’ হাতের সাথে বাধা এবং বিষাক্ত সাপ ও বিছা তাকে ছোবল মারছে ও কামড়াচ্ছে ।

5- এক নারীকে দেখলাম যে , সে তার নিজের শরীরের মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছিল এবং শরীরের যেখান থেকেই মাংস ছিড়ছিল সেখান থেকেই আগুনের ফুলকি বের হচ্ছিলো ।

6- এক নারীকে দেখলাম যে , সে ছিল বধির , বোবা ও অন্ধ , এমতাবস্থায় কুণ্ডলীর মত আগুনের তীব্রতায় তার মগজ গলে নাক দিয়ে বেরিয়ে আসছিল এবং তার দেহও ছিল কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ।

7- এক নারীকে দেখলাম যে , উত্তপ্ত তন্দুরের মধ্যে তার দু ’ পা উপরের দিকে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ।

8- এক নারীকে দেখলাম যে , তার শরীরটিকে অগ্রভাগ ও পশ্চাৎভাগ থেকে আগুনের কাঁচি দিয়ে আলাদা করা হচ্ছে ।

9- এক নারীকে দেখলাম যে , তার মুখমণ্ডল ও দু ’ হাতে আগুন লেগে গেছে । আর তখন সে নিজেই তার অন্ত্র (নাড়ীভুঁড়ি) খাচ্ছিল ।

10- এক নারীকে দেখলাম যে , তার মাথা শুকরের মাথার ন্যায় , তার শরীরটি গাধার শরীরের ন্যায় ছিল এবং তাকে হাজার প্রকৃতির শাস্তি দেয়া হচ্ছে ।

11- এক নারীকে দেখলাম যে , সে কুকুরের ন্যায় ছিল এবং তার পিছন থেকে আগুন নির্গত হচ্ছিল । আর ফেরেশ্তারা আগুনে উত্তপ্ত লোহার মোটা রড দিয়ে তার মাথা ও শরীরে আঘাত করছিল ।

এরপর ফাতিমা (সা.আ.) পিতাকে লক্ষ্য করে বললেন , হে আমার প্রিয় পিতা! হে আমার চোখের জ্যোতি! আপনি আমাকে বলুন , ঐ নারীদের আমল ও কর্ম পদ্ধতি কেমন ছিল যে কারণে আল্লাহ সুবহানাহু তা ’ য়ালা তাদের জন্য এরূপ শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন ? রাসূল বললেন :

1- যে নারীকে তার চুলের সাহায্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল তা এ জন্য যে , সে তার মাথার চুল না-মাহরাম (যাদের সামনে পর্দা করা ওয়াজিব ও যাদের সাথে বিবাহ বৈধ) লোকদের থেকে আড়াল করে রাখতো না ।

2-যে নারীকে তার জিহ্বার সাথে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল তা এ জন্য যে , সে তার স্বামীকে জিহ্বার (কথার) মাধ্যমে কষ্ট দিতো ।

3-.যে নারীকে তার স্তনের সাথে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল তা এ জন্য যে , সে তার স্বামীর সাথে মিলিত হওয়া থেকে বিরত থাকতো ।

4- যে নারীকে তার হাতের সাথে পা বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল এবং বিষাক্ত সাপ ও বিছা তাকে দংশন করছিল তা এ জন্য যে , অপবিত্রতা শরীরে থাকা অবস্থায় ওযু করতো , নাজিস (অপবিত্র) পোশাক পরে থাকতো এবং জুনুব ও ঋতুচক্র হওয়ার পরও সে গোসল করতো না । আর নামায পড়তেও অবহেলা করতো ।

5- যে নারী তার নিজের শরীরের মাংস ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছিল তা এ জন্য যে , সে তার না-মাহরাম লোকদের জন্য নিজেকে সজ্জিত করতো ।

6- যে নারী বধির , বোবা ও অন্ধ ছিল তা এ জন্য যে , যেনার মাধ্যমে গর্ভবতী হত এবং তা তার স্বামীর উপর দিয়ে চালিয়ে দিত ।

7- যে নারীর দু ’ পায়ে দড়ি বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল তা এ জন্য যে , সে তার স্বামীর বিনা অনুমতিতে বাড়ীর বাইরে যেত ।

8- যে নারীর শরীরের অগ্রভাগ ও পশ্চাৎভাগ আগুনের কাঁচি দিয়ে আলাদা করা হচ্ছিল তা এ জন্য যে , সে নিজের শরীরকে অন্যদের সামনে উপস্থাপন করতো ।

9- যে নারীর মুখ মণ্ডল ও দু ’ হাত আগুনে পুড়ছিল এবং সে নিজেই তার অন্ত্র খাচ্ছিল তা এ কারণে যে , সে সতীত্বের পরিপন্থী কাজের মধ্যস্থতাকারীর দায়িত্ব পালন করতো ।

10- যে নারীর মাথা শুকরের মাথার ন্যায় এবং শরীরটি গাধার শরীরের ন্যায় ছিল তা এ জন্য যে , সে গুজব রটনা করতো এবং মিথ্যা কথা বলতো ।

11- যে নারী ছিল কুকুরের মত তা এ জন্য যে , সে গান গাইতো এবং হিংসুক ছিল ।

এরপর রাসূল (সা.) বললেন , ঐ নারীর কপালে অনেক দুঃখ রয়েছে যে নারী তার স্বামীকে রাগান্বিত করে আর ঐ নারীই হচ্ছে সৌভাগ্যবতী যে নারীর প্রতি তার স্বামী সন্তুষ্ট থাকে ।

হ্যাঁ , এই দুনিয়াতে আমাদের সকল ভাল ও মন্দ আমলই নিবন্ধিত ও রেকর্ড করে রাখা হবে এবং অন্য দুনিয়ায় (আখিরাতে) সেগুলোর ব্যাপারে হিসাব-নিকাশ করা হবে । যদিও জুলুম ও পাপের কারণে অনেক সময় মানুষ এই দুনিয়াতেও দুর্দশা ভোগ করে থাকে । তাই আল্লাহ রাব্বুল আ ’ লামিন পবিত্র কোরআনে বলেছেন :

) إِنَّا كُنَّا نَسْتَنسِخُ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ(

নিশ্চয়ই তোমরা যা করতে আমরা তাই অনুলিখন করতাম ।73

) يَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَيْرٍ‌ مُّحْضَرً‌ا وَمَا عَمِلَتْ مِن سُوءٍ تَوَدُّ لَوْ أَنَّ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ أَمَدًا بَعِيدًا(

সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি যা ভাল কাজ করেছে তা দেখতে পাবে আর যা মন্দ কাজ করেছে তাও দেখতে পাবে । সে কামনা করবে যদি তার ও এসবকমে র্ র মধ্যে অনেক দূরত্ব থাকত ।74

) وَوُضِعَ الْكِتَابُ فَتَرَ‌ى الْمُجْرِ‌مِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هَـٰذَا الْكِتَابِ لَا يُغَادِرُ‌ صَغِيرَ‌ةً وَلَا كَبِيرَ‌ةً إِلَّا أَحْصَاهَا وَوَجَدُوا مَا عَمِلُوا حَاضِرً‌ا وَلَا يَظْلِمُ رَ‌بُّكَ أَحَدًا(

(কিয়ামতের দিনে) আমল নামা উপস্থাপন করা হবে । পাপীদেরকে তুমি দেখবে তাদের আমল নামাতে যা কিছু আছে সে ব্যাপারে তারা খুবই ভীত সন্ত্রস্তএবং বলবে যে , হায়! এটা কেমন গ্রন্থ (আমল নামা) যার মধ্যে ছোট ও বড় এমন কোন আমলই নেই যার হিসাব রাখা হয় নি । সকলেই তাদের আমল দেখতে পাবে এবং তোমার পালনকর্তা কারো প্রতিই কোন প্রকার জুলুম করবেন না ।75

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন : কিয়ামতের দিনে মানুষের আমল নামাকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হবে । তারপর তা পড়তে বলা হবে । (আ.) বর্ণনাকারী ইমামকে প্রশ্ন করে বলল : যা কিছু ঐ আমলনামাতে থাকবে তার সবগুলোই কি স্মরণে আনতে পারবে ? ইমাম বললেন : এক নিমেষেই সব কিছুই স্মরণে আনতে পারবে । কোথায় কি বলেছে , কোথায় কি করেছে , কোথায় গিয়েছে এবং যা কিছু ঘটেছে । তারা এমন ভাবে সে সব স্মরণে আনবে যে , মনে হবে তখনই তা আঞ্জাম দিচ্ছে । আর সে কারণেই তারা বিকট ধ্বনিতে চিৎকার দিয়ে বলবে যে , হায়! এটা কেমন আমলনামা যার মধ্যে ছোট ও বড় এমন কোন আমল নেই যার হিসাব রাখা হয় নি ।

কিয়ামতের দিনে মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে

এই পৃথিবীর কোন কিছুই হিসাব-নিকাশ বিহীন নয় । আমাদের সব কিছুই অর্থাৎ সব আমলই আল্লাহ রাব্বুল আ লামিনের নির্দেশে ফেরেশতাদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন হয়ে থাকে এবং কিয়ামতের দিনে সেগুলো আমাদেরকে দেখানো হবে , তাই পালিয়ে যাওয়ার কোন রাস্তাই আমাদের জন্য খোলা থাকবে না বা কোন অজুহাত উত্থাপনের সুযোগ থাকবে না । আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিন বলেছেন :

) وَيَوْمَ يُحْشَرُ‌ أَعْدَاءُ اللَّـهِ إِلَى النَّارِ‌ فَهُمْ يُوزَعُونَ ﴿١٩﴾ حَتَّىٰ إِذَا مَا جَاءُوهَا شَهِدَ عَلَيْهِمْ سَمْعُهُمْ وَأَبْصَارُ‌هُمْ وَجُلُودُهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿٢٠﴾ وَقَالُوا لِجُلُودِهِمْ لِمَ شَهِدتُّمْ عَلَيْنَا قَالُوا أَنطَقَنَا اللَّـهُ الَّذِي أَنطَقَ كُلَّ شَيْءٍ وَهُوَ خَلَقَكُمْ أَوَّلَ مَرَّ‌ةٍ وَإِلَيْهِ تُرْ‌جَعُونَ ﴿٢١﴾ وَمَا كُنتُمْ تَسْتَتِرُ‌ونَ أَن يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلَا أَبْصَارُ‌كُمْ وَلَا جُلُودُكُمْ وَلَـٰكِن ظَنَنتُمْ أَنَّ اللَّـهَ لَا يَعْلَمُ كَثِيرً‌ا مِّمَّا تَعْمَلُونَ ﴿٢٢﴾ وَذَٰلِكُمْ ظَنُّكُمُ الَّذِي ظَنَنتُم بِرَ‌بِّكُمْ أَرْ‌دَاكُمْ فَأَصْبَحْتُم مِّنَ الْخَاسِرِ‌ينَ(

কিয়ামতের দিন , আল্লাহর শত্রুদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানে তাদেরকে একত্রিত করা হবে ।

পাপীরা যখন জাহান্নামের আগুনের নিকটবর্তী হবে তখন তাদের কর্ণ , চক্ষু ও ত্বক তাদের কর্ম (গুনাহ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে ।

পাপীরা তাদের ত্বককে (অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ) বলবে : কেন তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ ? তারা বলবে : সেই আল্লাহ তা ’ য়ালা আমাদেরকে কথা বলার শক্তি দিয়েছেন যিনি সকল কিছুকে কথা বলার শক্তি দিয়েছেন , তিনি তোমাদেরকে প্রথমবারের মত সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা পুনরায় তাঁর দিকে ফিরে এসেছো । কর্ণ , চক্ষু ও শরীরের ত্বক যে তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে এই ভয়ে কি তোমরা তোমাদের পাপকাজগুলোকে গোপন রাখতে ? না তা নয় বরং তোমরা মনে করতে যে , তোমাদের বহু কৃতকর্ম সম্পর্কে আল্লাহ তা ’ য়ালা জানেন না ।76

তোমাদের প্রতিপালক সম্পর্কে তোমাদের সেই ভ্রান্তধারণার কারণেই তোমরা ধ্বংস হয়েছো তাই তোমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছো ।

মানুষেরশরীরের অঙ্গ - প্রত্যঙ্গগুলো আল্লাহ তা য়ালার পক্ষ থেকে আমানত স্বরূপ

আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও সব কিছুই আল্লাহ তা ’ য়ালার পক্ষ থেকে আমাদের কাছে আমানত স্বরূপ দেয়া হয়েছে । আর তাই আমাদের উচিৎ যে , তাঁর প্রদত্ত এই আমানতসমূহ তাঁর নির্দেশিত পথেই ব্যবহার করা । আমাদের কোন অধিকার নেই যে , এগুলোকে তাঁর অমনোনীত পথে ব্যবহার করবো । এগুলোর উপর আমাদের কোন কর্তৃত্ব নেই এবং কারো এমন অধিকারও নেই যে , সেগুলোর কোন (বস্তুগত বা অবস্তুগত) ক্ষতিসাধন করবে । তাই কোন নারীই হারাম পথে তার শরীরের অঙ্গ- প্রত্যঙ্গকে ব্যবহার করতে পারে না । এমন কি সেগুলোকে পর্দার মধ্যে না রেখে উম্মুক্তও করতে পারে না ।

প্রকৃতপক্ষে এই দুনিয়া তার বাহ্যিকতাসহ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস প্রাপ্ত হবে । শুধুমাত্র আমাদের নেক আমল সমূহই অবশিষ্ট থাকবে এবং আমাদের উপকারে আসবে । সুতরাং আমাদের উচিত আমাদের মৃত্যুর পূর্বেই পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় পাথেয় সংগ্রহ করা ।

যদিও আমাদের সমাজে এমন কিছু বেপর্দা নারী রয়েছে যারা ইসলাম প্রদত্ত আদেশ-নিষেধ মেনে চলে না । ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণেই তারা এটা করে থাকে । কেননা , তারা তো সহজাত ভাবেই কুরআন ও নবীর (সা.) আহলে বাইত (আ.) -এর প্রতি ভালবাসা রাখে । আশা করি জ্ঞান অন্বেষণের মাধ্যমে তাদের মধ্য থেকে এই সমস্যা দূর হবে ।

হাদীসেরদৃষ্টিতে বে - পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করার অনিষ্টতা ও ক্ষতিকর দিকসমূহ

1- সঠিকভাবে পর্দা মেনে না চলা নারীরাই শয়তানের উপযুক্ত হাতিয়ার :

রাসূল ( সা .) বলেছেন :

ﺍﻭﺛﻖ ﺳﻼﺡ ﺍﺑﻠﻴﺲ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ

(মন্দ) নারীরাই হচ্ছে শয়তানের সব থেকে নিশ্চিন্ত হাতিয়ার ।77

মানব জাতিকে ধ্বংস করার জন্য শয়তানের কাছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র রয়েছে । যেরূপ যুদ্ধের সময় মানুষ তার শত্রুপক্ষকে ধ্বংস করার নিমিত্তে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে । সেরূপ শয়তানের অস্ত্রগুলোর মধ্যেও প্রকারভেদ রয়েছে । কিন্তু যে অস্ত্রটি শয়তানের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং তাকে মানব জাতির সাথে যুদ্ধে একশত ভাগ সফল করে তা হচ্ছে নারী ।

এই হাদীস থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে , (যেভাবে ইতিহাস বর্ণনা দিয়েছে) শয়তান যখনই বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় মানব জাতিকে ধ্বংস করতে গিয়ে নিরাশ হয়ে যায় তখনই দ্বীন-ধর্মহীন নারী এবং যে সকল নারী শুধুমাত্র প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা ব্যতীত অন্য কিছুই চিন্তা করে না সে সকল নারীকে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করে থাকে । আর তারা হচ্ছে সেই সব নারী যারা জালেম ও অত্যাচারী শাসকদের হাতের পুতুল ছিল ।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান পৃথিবীর দিকেও যদি আমরা সূক্ষদৃষ্টিতে তাকাই দেখি যে , বিশ্বে বিশেষত ইসলামী বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদীদের জুলুম ও লুটপাট প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখছে চরিত্রহীন নারীরা ।

তাই আল্লাহ তা য়ালা বলেছেন :

) زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاءِ وَالْبَنِينَ وَالْقَنَاطِيرِ‌ الْمُقَنطَرَ‌ةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَالْخَيْلِ الْمُسَوَّمَةِ وَالْأَنْعَامِ وَالْحَرْ‌ثِ ذَٰلِكَ مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَاللَّـهُ عِندَهُ حُسْنُ الْمَآبِ(

মানবকুলকে মোহগ্রস্ত করেছে রমনী , সন্তান-সন্ততি , পুঞ্জীভূত স্বর্ণ ও রৌপ্য , চিহ্নিত অশ্ব ও গৃহপালিত পশু এবং শস্যক্ষেত্র এই সব কিছুই পার্থিব জীবনের ব্যবহারিক বস্তু । আর উত্তম জীবন তো আল্লাহরই নিকট রয়েছে ।78

এই পবিত্র আয়াতে প্রথম যে বিষয়টি উল্লিখিত হয়েছে তা হচ্ছে নারী । এ কারণেই মনোবিজ্ঞানীরা বলে থাকেন : যৌন প্রবণতা হচ্ছে মানুষের অন্য সব প্রবণতা থেকে শক্তিশালী একটি প্রবণতা । সামাজিক অনেক ঘটনাই এই প্রবণতা ও তাড়না থেকে সৃষ্টি হয়ে থাকে ।

এটা বলার প্রয়োজন রয়েছে যে , উক্ত আয়াতটি এবং অনুরূপ আয়াতসমূহ স্ত্রী , সন্তান ও সম্পদের প্রতি ভালবাসাকে নিন্দা বা তিরস্কার করে না (কেননা আত্মিক বিষয়ের উন্নতি কখনোই দুনিয়াবী বিষয়ের মাধ্যম ব্যতীত সম্ভব নয়) বরং এ সকল আয়াতে এসবের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত ভালবাসাকে তিরস্কার করা হয়েছে ।

শয়তান সম্পর্কে কিছু আলোচনা

ক)- শয়তান ’ শব্দটি শাতানা ’ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে । আর তার কর্তাবাচক বিশেষ্য হচ্ছে শাতেন ’ অর্থাৎ দুষ্ট , অপবিত্র , নোংরা ও ইতর প্রকৃতির ।

খ)- শয়তান ’ শব্দটি দ্বারা এমন এক সত্তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয় যে , সে হচ্ছে অবাধ্য , বিদ্রোহী এবং মানুষ ছাড়াও অন্যান্য সব কিছুর সাথে সংযুক্ত করা যায় । শয়তান ’ হচ্ছে একটি সাধারণ নাম এবং ইবলিস ’ হচ্ছে একটি বিশেষ নাম

) وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَىٰ وَاسْتَكْبَرَ‌ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِ‌ينَ(

স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম আদমের উদ্দেশ্যে সিজদাহ্ দিতে তখন তারা সকলেই সিজদাহ্ করেছিল ; শুধুমাত্র ইবলিস এই নির্দেশ উপেক্ষা করেছিল এবং অহমিকা প্রদর্শন করেছিল । আর(এই নির্দেশের অবাধ্যতা করার কারণে) সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল ।79

) إِنَّمَا يُرِ‌يدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ‌ وَالْمَيْسِرِ‌ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ‌ اللَّـهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ(

শয়তান চায় শরাব (মদ) ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং তোমাদেরকে আল্লাহর যিকির করা ও নামাজ থেকে বিরত রাখতে । (তোমরা কি) এসব ফ্যাসাদ ও ক্ষতিকর কর্ম থেকে ক্ষান্ত হবে ?80

) وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِينَ الْإِنسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ زُخْرُ‌فَ الْقَوْلِ غُرُ‌ورً‌ا وَلَوْ شَاءَ رَ‌بُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْ‌هُمْ وَمَا يَفْتَرُ‌ونَ(

আর এরূপভাবে আমরা প্রতিটি নবীর শত্রু হিসেবে বহু শয়তান সৃষ্টি করেছি তাদের কতক হচ্ছে মানুষ আর কতক হচ্ছে জ্বিন । যাদের কতিপয় অপর কতিপয়কে ভিত্তিহীন মনভুলানো বাক্যের মাধ্যমে প্রতারণার উদ্দেশ্যে কুমন্ত্রণা দিত । আর যদি তোমার প্রতিপালক চাইতেন তবে ঐরূপ করতে পারতো না । সুতরাং তাদেরকে তাদের মিথ্যা রটনা নিয়েই থাকতে দিন !81

গ)- শয়তানকে দেখা যায় না ,

) إِنَّهُ يَرَ‌اكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَ‌وْنَهُمْ(

নিশ্চয়ই শয়তান ও তার দোসররা সেইস্থান থেকে তোমাদেরকে দেখতে পায় , যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখতে পাও না ।82

ঘ)- শয়তান বিভিন্ন পথে গোমরাহ্ করার জন্য এবং ফ্যাসাদ সৃষ্টির লক্ষ্যে তোমাদের মধ্যে প্রবেশ করবে :

) قَالَ فَبِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَاطَكَ الْمُسْتَقِيمَ ﴿١٦﴾ ثُمَّ لَآتِيَنَّهُم مِّن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَانِهِمْ وَعَن شَمَائِلِهِمْ وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شَاكِرِينَ(

শয়তান আল্লাহ তা ’ য়ালাকে বলল : যেহেতু আপনি আমাকে গোমরাহ্ করেছেন সেহেতু অবশ্যই আমি তাদের (বিভ্রান্ত করার) জন্য আপনার সরল পথে বসে থাকবো । তারপর সামনে থেকে , পিছন থেকে , ডান ও বাম পাশ থেকে তাদের কাছে যাবো এবং তাদের অধিকাংশকেই আপনি কৃতজ্ঞ হিসেবে পাবেন না । (সূরা আরাফ :16-17)

এই যে শয়তান বলছে যে , সে চার পাশ থেকে আসবে ; এটা হয়তো এমন হতে পারে যে , সে মানব জাতিকে অবরোধ করবে এবং যে কোন প্রক্রিয়াতেই হোক না কেন সে তাদেরকে গোমরাহ্ করার চেষ্টা করবে । এমন ধরনের কথা তো সাধারণ মানুষও বলে থাকে যেমন , অমুক চার দিক থেকেই আটকে গেছে অথবা শত্রুর খপ্পরে পড়েছে ।

ইমাম বাকির (আ.) বলেছেন : সামনের দিক থেকে মানুষের কাছে শয়তান আসার অর্থ হচ্ছে , তাদের সামনে যে আখেরাত রয়েছে তাদের দৃষ্টিতে সামান্য ও হালকা হিসেবে তুলে ধরা । মানুষ এই আখেরাতকে মূল্যহীন ও অতি সাধারণ মনে করার কারণেই গোনাহ্তে লিপ্ত হয় । আর পিছন দিক থেকে মানুষের নিকট আসার অর্থ হচ্ছে , সম্পদ পুঞ্জীভূত করার জন্য এবং তাদের সন্তান ও উত্তরসূরীদের উছিলা দিয়ে অন্যের অধিকার না দেয়ার জন্য আহ্বান জানাবে । ডান দিক থেকে মানুষের নিকট আসার অর্থ হচ্ছে , নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করবে এবং বাম দিক থেকে আসার অর্থ হচ্ছে , দুনিয়াবী আকাঙ্ক্ষা এবং কামভাবকে তাদের সামনে আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তুলবে ।83

ঙ)- উদ্ধত ও সীমালংঘনকারী মানুষ , ক্ষতিকারক প্রাণী , বিভেদ সৃষ্টিকারী সত্তা , জীবাণু , পাপাচারী নারী , মুনাফিক ও মিথ্যাবাদী ইত্যাদি বিভিন্ন অর্থে শয়তান শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে । মহানবী (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতের নিষ্পাপ ইমামদের থেকে এরূপ অর্থে প্রচুর হাদীস বর্ণিত হয়েছে । যেমন ,

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻻ ﺗﻮﻭﺍ ﻣﻨﺪﻳﻞ ﺍﻟﻠﺤﻢ ﰱ ﺍﻟﺒﻴﺖ ﻓﺎﻧﻪ ﻣﺮﺑﺾ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ

মাংসের ব্যাগ বাড়িতে রেখোনা , কেননা তা হচ্ছে শয়তানের বসবাসের স্থান অর্থাৎ তাতে জীবাণু জন্মায় ।84

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন :

ﻻ ﺗﺪﻋﻮﺍ ﺁﻧﻴﺘﻜﻢ ﺑﻐﲑ ﻏﻄﺎﺀ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺍﺫﺍ ﱂ ﺗﻐﻂ ﻟﻶﻧﻴﺔ ﺑﺰﻕ ﻭﺍﺧﺬ ﻣﺎ ﻓﻴﻬﺎ ﺷﺎﺀ

তোমাদের পাত্রগুলোকে খোলা রেখো না , যদি তা না ঢাক তবে তাতে শয়তান তার মুখের লালা লাগিয়ে দেয় (তাতে রোগ জীবাণু জন্মায় এবং তা ব্যবহারও করে) ।85

ইমাম বাকির (আ.) বলেছেন :

ﺍﳕﺎ ﻗﺼﺼﺖ ﺍﻻﻇﻔﺎﺭلأنها ﻣﻘﻴﻞ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ

তোমাদের আঙ্গুলের নখগুলোকে ছোট করে রাখ ; কেননা যদি তা বড় থাকে তবে তা হচ্ছে শয়তানের বসবাসের (ও রোগ জীবানুর জন্মানোর) স্থান ।86

রাসূল ( সা .) বলেছেন :

ﻻ ﺗﺒﻴﺘﻮﺍ ﺍﻟﻘﻤﺎﻣﺔ ﰱ ﺑﻴﻮﺗﻜﻢ ﻓﺎﺧﺮﺟﻮﻫﺎ نهاراﹰ ﻣﻘﻌﺪ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ

রাতে আবর্জনা তোমাদের ঘরে রেখোনা এবং তা দিনেই বাইরে ফেলে দিবে । কেননা তা শয়তানের বসার (রোগজীবাণু জন্মানোর) স্থান ।87

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻻ ﻳﻄﻮﻟﻨﺎ ﺍﺣﺪﻛﻢ ﺷﺎﺭﺑﻪ، ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﻳﺘﺨﺬﻩ ﳐﺒﺌﺎ ﻳﺴﺘﺘﺮﺑﻪ

তোমাদের গোঁফ বড় করোনা , কেননা সেখানে শয়তান (জীবাণু) নিজের বসবাসের স্থান করে নেয় এবং সেখানে লুকিয়ে থাকে ।88

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﺍﻥ ﺍﻟﻄﻌﺎﻡ ﺍﳊﺎﺭ ﺟﺪﺍ ﳏﻮﻕ ﺍﻟﱪﻛﺔ ﻭ ﻟﻠﺸﻴﻄﺎﻥ ﻓﻴﻪ ﺷﺮﻛﺔ

গরম খাবার সত্যই বরকত নষ্ট করে দেয় , কেননা শয়তান তাতে অংশগ্রহণ করে ।89

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻻ ﻳﺒﻴﱳ ﺍﺣﺪﻛﻢ ﻭﻳﺪﻩ ﻏﻤﺮﺓ ﻓﺎﻥ ﻓﻌﻞ ﻓﺎﺻﺎﺑﻪﳌﻢ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﻓﻼ ﻳﻠﻮﻣﻦ ﺍﻻ ﻧﻔﺴﻪ

তৈলাক্ত হাতে রাত্রি যাপন করো না । সেক্ষেত্রে যদি শয়তান তোমাদের কোন ক্ষতি করে তবে নিজেদের ব্যতীত অন্য কাউকে তিরস্কার করো না ।90

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন :

ﺍﻟﻘﻬﻘﻬﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ

অট্টহাসি হচ্ছে শয়তানের একটি বৈশিষ্ট্য ।91

ﻋﻦ ﺍﰉ ﻋﺒﺪ ﺍﷲ (ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ) : ﺍﻟﻨﻈﺮ ﺳﻬﻢ ﻣﻦ ﺳﻬﺎﻡ ﺍﺑﻠﻴﺲ ﻣﺴﻤﻮﻡ ﻭ ﻛﻢ ﻣﻦ ﻧﻈﺮﺓ ﺍﻭﺭﺛﺖ ﺣﺴﺮﺓ ﻃﻮﻳﻠﺔ

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন : দৃষ্টি হচ্ছে শয়তানের নিক্ষিপ্ত তীরসমূহের মধ্যে একটি বিষাক্ত তীর এবং এমন অনেক দৃষ্টি রয়েছে যার পরিণতি হলো দীর্ঘ পরিতাপ ।92

ﺍﻟﻨﻈﺮ ﺍﱃ ﳏﺎﺳﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﺳﻬﻢ ﻣﻦ ﺳﻬﺎﻡ ﺍﺑﻠﻴﺲ ﻓﻤﻦ ﺗﺮﻛﻪ ﺍﺫﺍﻗﻪ ﺍﷲ ﻃﻌﻢ ﻋﺒﺎﺩﺓ ﺗﺴﺮﻩ

রাসূল (সা.) বলেছেন : না-মাহরাম (যে মহিলা বা পুরুষের সাথে বিবাহ করা যায়) মহিলার চুলের দিকে তাকানোটা হচ্ছে এমন এক দৃষ্টি যা শয়তানের কাছ থেকে আসা বিষাক্ত তীরের মত । যারা তাকাবে না বা দেখবে না তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবাদতে আধ্যাত্মিক স্বাদ দেয়া হবে যা তাদেরকে আনন্দিত করবে ।93

হযরত আলী (আ.) বলেছেন :

ﺍﳌﻜﻮﺭ ﺷﻴﻄﺎﻥ ﰱ ﺻﻮﺭﺓ ﺍﻧﺴﺎﻥ

যে বেশী চালাকী করে , সে হচ্ছে মানুষরূপী শয়তান ।94

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন :

ﻟﻴﺲ ﻻﺑﻠﻴﺲ ﺟﻨﺪ ﺍﺷﺪ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻭ ﺍﻟﻐﻀﺐ

নারী ক্রোধ এই দুটির মত উত্তম সৈনিক শয়তানের আর নেই ।95

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﺍﻭﺛﻖ ﺳﻼﺡ ﺍﺑﻠﻴﺲ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ

শয়তানের উত্তম অস্ত্র হচ্ছে নারী ।96

ফলাফল :

উপরোল্লিখিত পবিত্র আয়াতসমূহ ও আহলে বাইতের নিষ্পাপ ইমামগণের (আ.) রেওয়ায়েত থেকে আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়েছে তা নিম্নরূপ :

ক)- শয়তান এমন এক সত্তা যা দেখা যায় না কিন্তু তার নমুনা অনেক কিছুর মধ্যে পাওয়া যায় , যেমন , মিথ্যাবাদী ও মতানৈক্য সৃষ্টিকারী মানুষ , নারী , জীবাণু ইত্যাদি । মূল কথা হচ্ছে যে অপবিত্র ও দুষ্ট সত্তা মানুষকে সত্য পথ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় এবং তার জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে সেই সত্তাকেই শয়তান বলা হয় । যদি কোন কোন নারীকে শয়তান অথবা শয়তানের বন্ধু বা সহায়তাকারী বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয় তবে তা এ কারণেই করা হয়ে থাকে যে , তাকওয়াহীন , বেপর্দা অথবা সঠিকভাবে পর্দা না করা নারী তার কথা ও আচার-আচরণের মাধ্যমে যেহেতু মানুষকে সত্য পথ থেকে দূরে সরিয়ে ফিতনা-ফ্যাসাদের দিকে নিয়ে যায় । আর যেহেতু শয়তানের উদ্দেশ্যও এর বাইরে কিছু নয় , সেহেতু এমন প্রকৃতির নারীরাই শয়তান নামক ঐ অপবিত্র ও দুষ্ট সত্তাকে তার প্রকৃত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে থাকে ।

খ)-যে সকল রেওয়ায়েত আবর্জনা এবং তা রাখার স্থান এবং সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছে এবং যেসকল রেওয়ায়েত চর্বি ও জীবাণু সংক্রান্ত আলোচনা করেছে তা থেকে আমাদের কাছে এটা স্পষ্ট যে , ইসলাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কত গুরুত্ব দিয়েছে । যদি মুসলমানগণ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের সঠিক ব্যবহার ও নিয়ম- কানুন জানতো তবে বর্তমানে আমাদের দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে , রাস্তা- ঘাটে , অলিতে-গলিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার যে অভাব রয়েছে তা থাকতো না । আল্লাহ্ তা ’ য়ালা সবাইকে নবী মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর দ্বীনের বিধি- বিধান সম্পর্কে সঠিকভাবে জানার তৌফিক দান করুন ।