একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন0%

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন লেখক:
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ: নারী বিষয়ক

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক: মীর আশরাফ-উল-আলম
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 41456
ডাউনলোড: 3897

পাঠকের মতামত:

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 87 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 41456 / ডাউনলোড: 3897
সাইজ সাইজ সাইজ
একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক:
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বাংলা

গণহত্যা :

পাশ্চাত্যের দেশগুলো যখন শিল্প ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেল তখনই তারা দুর্বল দেশসমূহের উপর বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর উপর আগ্রাসন চালাতে শুরু করলো এবং আগ্রাসনের ফলে হস্তগত সম্পদের ভাগা-ভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব । তারা দু ’ শ বছর ব্যাপী এ দেশগুলোতে ঔপনিবেশিক শাসন চালায় । সারা বিশ্ব থেকে রাশি রাশি সম্পদ আহরণ করে নিজেদের দেশে পুঞ্জীভূত করতে শুরু করে । আফ্রিকা , উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা সহ সকল স্থানেই তাদের আগ্রাসী হামলা ও লুটপাট দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকে । অবশেষে তারাই প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সূচনা করে । আর এই দুটি বিশ্ব যুদ্ধের পর শোষিত মানুষেরা তাদেরকে ভালভাবে চিনতে পারলো এবং ধীরে ধীরে তাদের কাছে থেকে নিজেদের স্বাধীনতা অর্জন করল ।

তবে যেহেতু সর্ব প্রথম এই সব হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসলীলা তারাই শুরু করেছিল সেহেতু এই বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে তারাই তার প্রথম খেসারত দিয়েছিল । আল্লাহ তা ’ য়ালা এরশাদ করেছেন :

) يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا بَغْيُكُمْ عَلَىٰ أَنفُسِكُم(

হে মানব সকল! জেনে রাখ যে , তোমরা যখন কোন প্রকার জুলুম-অত্যাচারের সাথে জড়িত হবে এবং সত্য থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে তবে তা তোমাদের উপরই পড়বে (এর পরিণতি তোমাদেরকেই ভোগ করতে হবে) ।127

প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষতি ছাড়াও প্রায় 60 মিলিয়ন মানুষ নিহত ও 110 মিলিয়ন মানুষ আহত হয়েছিল । ধর্মহীনজ্ঞান এ ছাড়া আর কী দিতে পারে! আর এর থেকে বেশী কিছু খোদাহীন ঐ জ্ঞানের কাছে আশা করা যায় না ।

আফগানিস্তানের সাথে রাশিয়ার , ইরানের সাথে ইরাকের , আলজেরিয়ার সাথে ফ্রান্সের , আরবদের সাথে ইসরাইলের মধ্যে যে যুদ্ধগুলো সংঘটিত হয়েছে তাতে প্রায় 5 মিলিয়ন মানুষ নিহত হয়েছিল । আর এই সব যুদ্ধের সূচনাকারী দেশগুলোর পরিকল্পানাই ছিল মুসলমানদের নিধন করা ।

আত্মহত্যা , দুর্ঘটনা ও মদপানজনিত মৃত্যু :

ইরানী পত্রিকার এক সাংবাদিক রোম থেকে এই মর্মে খবর দেয় যে , প্রতি বছর 30 হাজার ইটালীয় নাগরিক মদ পান ও মাদকদ্রব্য ব্যবহারের কারণে নিজেদের জীবন হারিয়ে থাকে ।128

জার্মানীতে দুর্ঘটনাজনিত কারণে এক বছরে 8 হাজার জনের মৃত্যু ও 4 ,48 ,000 লোক আহত হয় । এ ঘটনার কারণে উল্লেখ করা হয়েছে যে , গাড়ির গতি অতিমাত্রায় বেশী থাকা , মাদক দ্রব্য ব্যবহার ইত্যাদি ।129

জাপানে 1985 সালে 23 হাজার 599 জন লোক আত্মহত্যা করেছে । জাপান পুলিশ এর কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপ এবং মাদবদ্রব্য ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছে । তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা নারীদের দ্বিগুণ ছিল এবং তাদের অধিকাংশই 65 বছর বয়স্ক ।130

ব্রাজিলে প্রায় 16 হাজারেরও বেশী শিশু অবৈধ ভাবে পাচারকারী দলের হাতে নিহত হয় । ব্রাজিলের পার্লামেন্টের এক বিশেষ বৈঠকে এ মর্মে ঘোষণা দেয়া হয় যে , গত 5 বছরে 16 হাজার 414 জন শিশু ব্রাজিলের বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছে ।

বন থেকে জার্মান কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা যুদ দুভিচে ’ নামক পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে যে , ব্রাজিলে গত 2 বছরে শুধুমাত্র রিওডিজেনেরো ’ ও সাওপাওলো ’ নামক দুটি বৃহৎ শহরে অভিভাবকহীন 3 মিলিয়ন শিশুর মধ্যে 40611 শিশু নিহত হয়েছে ।

ব্রাজিলে শিশু হত্যা করাটা হচ্ছে একটি সমাধান স্বরূপ , যাতে করে তারা ফ্যাসাদের দিকে অগ্রসর না হতে পারে । জুখে মৃত্যু ’ নামে একটি দল প্রতিটি শিশুকে হত্যা করার জন্য 700 মার্ক গ্রহণ করে থাকে ।131

তালাকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও পরিবার নামক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস :

ইংল্যান্ডের জনসংখ্যা ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী যে সকল স্বামী-স্ত্রী বিয়ের আগে নিজেদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক রাখতো বিয়ের পরে 15 বছরের মধ্যেই তাদের মধ্যে তালাকের সম্ভাবনা অন্যদের থেকে বেশী হয়ে থাকে । আর তার পরের বছরগুলোতে তাদের 1 প্রায় 60 ভাগের মধ্যে তালাক হয়ে যায় ।132

উক্ত রিপোর্টে আমেরিকা , কানাডা , সুইডেনের অবস্থা ইংল্যান্ডের থেকে আরো খারাপ পর্যায়ে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ।133

সি.এন.এন সংবাদ সংস্থা এক রিপোর্টে আমেরিকানদের পারিবারিক অবস্থার ব্যাপারে বলে : গত 30 বছরে 16270 জন পুরুষ তাদের পরিবারের কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়েছে । এই সকল পরিবারের স্ত্রীদের সাহায্য প্রার্থনায় এগিয়ে এসে ফেডারেল পুলিশ মাত্র 7 হাজার পুরুষকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ।

পালিয়ে যাওয়া পুরুষদের কাছে তাদের এহেন কাজের কারণ জানতে চাইলে তারা জানায় যে , স্ত্রীর অভদ্রতা , সব ক্ষেত্রেই কর্তৃত্ব করা , অধিক মাত্রায় খরচ করা , দায়িত্বহীনতা , বিয়ে করে পস্তাচ্ছে এমন ভাব করা , সন্তানদের অতিরিক্ত দুষ্টামী করা ও শাশুড়ীর যন্ত্রণা , অন্য নারীর প্রতি ভালবাসার কথা বলেছে ।134

1986 থেকে 1992 সাল পর্যন্ত আমেরিকায় 8 লাখ লোক তাদের স্ত্রীদের থেকে আলাদা হয়েছে । আর ফ্রান্স , জার্মানী , ইটালী , সুইডেন ও ইংল্যান্ড আমেরিকার সাথে অল্প কিছু পার্থক্য রেখে প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে । সি.এন.এন সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখা যায় যে , আমেরিকায় প্রতি পরিবারে তিনটি বিয়ের মধ্যে একটি তালাক হয়ে যায় । আর এটাই শিশুদের দুঃখ ও কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । এমনকি সৎ মা অথবা সৎ বাবার হাতে তারা নিহতও হয়ে থাকে ।135

অবৈধ সন্তানের সংখ্যা বৃদ্ধি :

প্রতি 5টি শিশুর মধ্যে একটি শিশু অবৈধভাবে কুমারী মাতা হতে জন্মগ্রহণ করে । আমেরিকার এক সংবাদ সংস্থার (এপি) পক্ষ থেকে জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় যে , এই সন্তানদের অধিকাংশই 30 থেকে 40 বছর বা তার থেকেও বেশী বয়সের মহিলাদের হতে জন্মগ্রহণ করেছে , এমনকি 20 বছর ও তার থেকে কম বয়সের মেয়েদের থেকেও অবৈধ সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে ।136

ইংল্যান্ডের পরিসংখ্যান ব্যুারোর এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয় যে , গত বছরের শেষ তিন মাসে 31 ভাগ শিশু ভূমিষ্ট হয়েছে যাদের পিতা নির্দিষ্ট ছিল না ।137

সি.এন.এন টেলিভিশনের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে , আমেরিকার 50 ভাগ শিশু অবৈধ ভাবে জন্মগ্রহণ করে থাকে এবং যে পরিবার পিতা-মাতার তালাকের কারণে তছনছ হয়েছে তার পরিমানও অনেক বেশী ।138

আমেরিকার এক মহিলা এক শিশুকে জন্মদান করে যে শিশুর দেহটি মানুষ ও কুকুরের আকৃতির ছিল । পাকিস্তানের ইসলামাবাদের সময়ের কথা ’ নামক এক পত্রিকায় ঐ মহিলার ছবি সহ উক্ত বিষয়ে এরূপে রিপোর্ট করে যে , ঐ মহিলা আমেরিকার এক শহরে একটি শিশুর জন্ম দেয় , যে শিশুটির মুখের আকৃতি ও কন্ঠস্বর হচ্ছে কুকুরের মত এবং তার স্বভাব হচ্ছে সম্পূর্ণ মানুষের মত ।

ঐ মহিলা বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার সাথে সাক্ষাৎকারে বলে যে , সে এখনো বিয়ে করে নি । কিন্তু নয় মাস পূর্বে এক নভোযান এসে তাকে ধরে নিয়ে যায় এবং কিছু দিন পরে তাকে ছেড়ে দিয়ে যায় । এই বিষয়ের উপর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ঐ মহিলাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে বলেছেন যে , এই মহিলার সাথে কুকুরের মিলনের ফলে অথবা তাকে কুকুরের বীর্যের ইনজেকশন পুশ করাতে এই শিশু ভুমিষ্ঠ হয়েছে । শিশুটি জন্মের সময় 6 কেজি 500 গ্রাম ওজনের হয়েছিল ।139

গর্ভপাত করা ও তার ক্ষতিকর দিকসমূহ :

ইংল্যান্ডের সরকারী একটি প্রসূতি কলেজের গবেষণা অনুযায়ী দেখা যায় যে , গত 20 বছরে 13 থেকে 19 বছর বয়স্ক মেয়েদের মধ্যে গর্ভপাতের হার 4 গুণ বেড়ে গেছে । টাইমেয পত্রিকা এভাবে লিখছে :

গত বছর অনুরূপ একটি গবেষণাতে দেখা গেছে যে , ইংল্যান্ডে ও উইলটারে আইনগতভাবে 173900 টি গর্ভপাত হয়েছে । গর্ভপাতকারী নারীদের এক তৃতীয়াংশ হচ্ছে 20 বছর থেকেও কম বয়সের মেয়ে ।

এই পত্রিকায় আরো বলা হয়েছে যে , 1969 সালে 15 থেকে 19 বছর বয়স্ক যে মেয়েরা গর্ভপাত করেছিল তার সংখ্যা 11 ,200টির বেশী নয় । 1972 , 1980 , 1988 সালে ঐ সংখ্যার পরিমান বেড়ে হয়েছে 37 হাজারেরও বেশী ।140

বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই সব থেকে বড় একটি সমস্যা হচ্ছে বিয়ের আগে মেয়েদের গর্ভবতী হওয়া , বিশেষ করে যখন মেয়েরা প্রাপ্ত বয়স্ক হয় । এর পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন ধরনের যৌন রোগও সৃষ্টি হচ্ছে যেমন এইডস । বিশ্বের অনেক স্থানে দেখা গেছে যে , যে সব মেয়েরা অনিচ্ছাকৃতভাবে গর্ভবতী হয়েছে সে কারণে অদক্ষ কারো কাছে গর্ভপাত ঘটাতে যায় । আর এই অবৈধ গর্ভপাতে প্রতি বছর প্রায় 2 লাখেরও বেশী মেয়ের মৃত্যু হয়ে থাকে । তবে যারা বেঁচে থাকে তাদের মধ্যে অনেকেই আবার কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে যেমন পরবর্তীতে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ।141

পাশ্চাত্যে সমকামিতা ও তার নিদারুণ পরিণতি :

জার্মানের ব্যারান্ড বুর্গ প্রদেশে প্রোটেষ্ট্যান্টদের গীর্জায় সমকামিতাকে বৈধ বলে ঘোষণা দিয়ে বলা হলো যে , তা কোন পাপ নয় । বনের কেন্দ্রীয় সংবাদ সংস্থা এ ব্যাপারে ফ্যারাঙ্কফুটার রুওয়ান্ড সাউ ’ পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে বলে যে , গীর্জার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সমকামিতা কাজটি কোন পাপও নয় এবং কোন রোগও নয় ।

আরো মজার ব্যাপার হলো যে , গীজার্র কাছে দাবী পেশ করা হয়েছে এই মর্মে যে , যারা এই কাজ করবে তাদেরকে যেন গীর্জায় প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয় । ঘোষণা পত্রে আরো বলা হয় যে , সমকামিতাদের উপর যেন কোন প্রকার আক্রমণ না হয় এবং তাদের কাজে যেন কোন প্রকার বাধাও দেয়া না হয় ।142

অথচ নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়ে বৃটেনের কমন্স সভা 14/4/46 ফার্সী তারিখে আট ঘন্টা সময় নিয়ে এক দীর্ঘ আলোচনার পর বৈধ বলে ঘোষণা দেয় । আর তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য লর্ডসভায় পাঠিয়ে দেয় । এর দশ দিন পরে ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট সমকামিতার বৈধতাকে সরকারী ভাবে ঘোষণা দেয় ।143

আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এটাই যে , ইংল্যান্ডে কারো দু ’ জন স্ত্রী থাকা নিষিদ্ধ কিন্তু সমকামিতা বৈধ । তারা বলে থাকে যে , কোন পুরুষ যদি তার একটি স্ত্রী থাকা সত্বেও আরেকটি স্ত্রী নিয়ে আসে তবে তা হবে অন্যায় বা অবৈধ । কেননা তার প্রথম স্ত্রীর সাথে সেটা হবে অমানবিক আচরণ কিন্তু সমকামিতাতে কোন সমস্যা নেই ।

পাশ্চাত্যের কাছে এর থেকে বেশী কিছু আশা করা যায় না কারণ তারা তো নষ্ট হয়ে গেছে । কিন্তু আফসোস হয় তাদের জন্য যারা তাদেরকে অনুসরণ করে চলতে চায় ।

সি.এন.এন সংবাদ সংস্থা আমেরিকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা মূলক একটি রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছে যে , আমেরিকাতে প্রতি 13 মিনিটে একজন এইডসের ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে ।

এই রিপোর্ট অনুযায়ী আমেরিকায় প্রতি 100 জন পুরুষ মধ্যে একজন এবং প্রতি 800 জন মহিলার মধ্যে একজন এইডস ভাইরাস আক্রান্ত । এইডসের ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশের প্রায় 2 থেকে 8 বছর পরে ধরা পড়ে । এই ভাইরাস প্রথমে মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয় এবং পরিশেষে এর সংক্রমণ ঘটে সে মৃত্যুবরণ করে । এইডস মূলত যৌন অনাচার ও আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে দৈহিক সম্পর্কের কারণে হয়ে থাকে । আমেরিকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই মর্মে ঘোষণা দেয় যে , বর্তমানে সেখানে 5 লাখ 50 হাজার লোক এইডসে আক্রান্ত এবং আগামী বছরগুলোতে এইডসের মড়ক লাগতে পারে । তাই এইডস সম্পর্কে মানুষের বিশেষ করে যুব সমাজকে বেশী জানানোর জন্যে সকল ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন এবং শিক্ষা কেন্দ্র গুলোতে সে সম্পর্কে বর্ণনা দেয়া ও তা থেকে রেহাই পাওয়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করার প্রস্তাব প্রণয়ন করেছে ।

এই রিপোর্ট অনুযায়ী ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রানসিসকো শহরটি (যা সমকামীদের রাজধানী বলে অভিহিত হয়েছিল) বর্তমানে সব থেকে বেশী এইডস রোগী দেখতে পাওয়া যায় ।144

এই ন্যাক্কার জনক কাজটি ইসলামের দৃষ্টিতে সব থেকে নিচু ও খারাপ কাজ । কেননা তা এমনই একটি কাজ যার শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড । ফিকাহ্ শাস্ত্রে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে যেমন একটি হাদীসে বলা হয়েছে :

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন : সমকামিতা হচ্ছে এতই নিকষ্টৃ মানের একটি কাজ যা ব্যভিচারের থেকেও খারাপ । আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা ’ য়ালা যে সকল ব্যক্তি সমকামিতার দিকে ছুটে যায় তাদেরকে ব্যভিচারী ব্যক্তিদের থেকে আগে ধ্বংস করে দেন ।145

ইমামগণের (আ.) রেওয়ায়েত থেকে মানুষ ইসলামী বিধি-বিধানের শ্রেষ্ঠত্ব ও ঐশী উজ্জ্বলতা সম্পর্কে অবহিত হয়ে থাকে । কিন্তু দুনিয়ার কিছু লোক এই সকল কাজের কারণে যে অকালে মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে এর প্রকৃত কারণ হলো আল্লাহ্ সুবহানাহু তা ’ য়ালার থেকে দূরে থাকা এবং পবিত্র কোরআন ও আম্বিয়াদের (আ.) আদেশ-নিষেধের প্রতি গুরুত্ব না দেয়া ।

চুরি, ধর্ষণ এবং নিরাপত্তাহীনতা :

1985 সালে আমেরিকার প্রধান বিচার বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি 13টি পরিবারে মধ্যে 1টি পরিবারে রাতের বেলা চুরি হয়েছে অথবা পরিবারের যে কোন একজন সদস্যের প্রাণহানী ঘটেছে । 1985 সালে ঘোষণা করা হয় যে , দস্যুরা পরিবারের 2 কোটি 21 লক্ষ সব কিছুই নিয়ে গেছে । গাড়ী চুরি , ধর্ষণ , ব্যক্তির সম্পত্তিতে অবৈধ হস্তক্ষেপ এবং বাড়ীর আসবাবপত্র চুরি করার মত অসংখ্য ঘটনা ঘটার খবর উল্লেখ করা হয়েছে ।146

আশ্চর্য জনক ও অমানবিক একটি ঘটনা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ঘটেছে সেখানে এক গ্রামের একই বাড়ীর চারজন নারী পুলিশ ও স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মীর দ্বারা পালাক্রমে ধর্ষিত হয় । যারা তাদের নিরাপত্তা দেয়ার কথা তারাই তাদেরকে ধর্ষণ করে । এই রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয় যে , ভারতীয় নারী ঐক্য সমাজ ’ ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা দেয় যে , মধ্য রাতে পুলিশরা এই বাড়ি থেকে পুরুষ ও উক্ত চার নারীকে ধরে নিয়ে যায় ; ঐ চার নারীর মধ্যে সব থেকে বয়স্ক মহিলা হচ্ছে 75 বছরের এবং সব থেকে কম বয়স্ক মেয়ে হচ্ছে 6 বছরের । পুলিশরা বাড়ীর পুরুষদেরকে ঘর থেকে বের করে বেদম প্রহার করে বেঁধে রাখে এবং 14 ঘন্টা ধরে ঐ চার নারীর উপর চালায় ধর্ষণ ও পাশবিক অত্যাচার । তারপর তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যায় ।147

জমহুরী ইসলামী পত্রিকা জানায় : একজন এশীয় মহিলা দিনের বেলা লন্ডনের এক রাস্তায় দুইজন পুরুষের দ্বারা অপহরণ হয় এবং উক্ত রাস্তা সংলগ্ন একটি পার্কে ধর্ষিত হয় ।

এই ঘটনাটি বিকাল বেলা যখন ঐ রাস্তাটিতে প্রচুর ভিড় থাকে তখন ঘটে । এটা কিভাবে সম্ভব যে , লোকজনের সমাগম থাকা সত্বেও দুইজন লোক একজন 26 বছরের মহিলাকে তুলে নিয়ে যাবে এবং পাশের পার্কে তাকে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যাবে ?

এই ঘটনার কয়েক ঘন্টা পর রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক বৃদ্ধ লোকের সাহায্যে সে মহিলা পুলিশ স্টেশনে পৌঁছায় এবং ঘটনার বর্ণনা দেয় । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লন্ডনের পুলিশ তখনও ঘটনাটিকে খুটিয়ে দেখছিল ।148

পাশ্চাত্যপ্রেমীরা কোথায় যেতে চান ?

আমেরিকার সি.এন.এন সংবাদ সংস্থা নিজেই আমেরিকার সামাজিক অবক্ষয় ও অধঃপতনের ব্যাপারে এক রিপোর্টে বলে যে , সেখানে ফ্যাসাদ ও অশ্লীলতা এত অধিক পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে যে আইন প্রণয়নকারীদের ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে দিয়েছে এবং তাদেরকে নতুন আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য করেছে ।

এই সংবাদ সংস্থার আরব আমিরাত হতে প্রচারিত রিপোর্ট হতে জানা যায় , আমেরিকানদের বিনোদন লজ্জাকর ও কুৎসিত এক রূপ লাভ করেছে । বিনোদনের নামে তারা বিভিন্ন ধরনের অশোভনীয় ও অশ্লীল ছবি , টিভি সিরিয়াল এবং যৌন উদ্দীপক গান প্রচার করছে । নৈতিকতার দিকনির্দেশক বাণীবাহক হওয়ার পরিবর্তে তারা অশ্লীলতা , অনাচার ও বিশৃংখলার বিস্তার ভূমিকা রাখছে । আর সেখানকার চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গায়কদের দৃষ্টিতে কোন কিছুই ঘৃণার ও অসন্তোষের বিষয় নয় ।

উক্ত সংবাদ সংস্থা তার রির্পোটে আরো উল্লেখ করে যে ,যৌন নির্যাতন , অবৈধ যৌনসম্পর্ক , মাদক দ্রব্য সেবন , শয়তান পুজার দৃশ্য , সহিংসতা , উচ্ছৃঙ্খলতা ও অশ্লীলতাসহ বিভিন্ন প্রকার অনৈতিক বিষয় আমেরিকার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে ।

উক্ত সংবাদ সংস্থা তার রির্পোটে উল্লেখ করে যে , হলিউডে এমন সব ছবি তৈরী করা হয় যা শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং তা পর্দায় তাদের সামনে তুলে ধরা হয় । চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের ছবির প্রতি দর্শককে আকর্ষণ করার লক্ষ্যে টিকিট কাউন্টার বা বুকিং অফিসের সামনে ছবির ব্যানারের উপর এক্স চিহ্ন দিয়ে রাখে যাতে করে মানুষের মনে কৌতুহলের সৃষ্টি করে ।

সন্তানের উপর বে-পর্দার ধ্বংসাত্মক প্রভাব :

পিতা-মাতার ভাল ও মন্দ স্বভাবসমূহ শিশুর উপর প্রভাব ফেলে । এমন কি যখন শিশু মায়ের গর্ভে থাকে তখন মায়ের হালাল ও হারাম খাবারও ঐ শিশুর উপর প্রভাব ফেলে । তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন যে : যদি কোন মা মাদকাসক্ত হয়ে থাকে তবে তার গর্ভে থাকা সন্তানটিও হবে মাদকাসক্ত । আর এটা তো হয়েই থাকে যে , উত্তরাধিকার সূত্রে পিতা- মাতার ভাল-মন্দ সকল বৈশিষ্ট্যই শিশুর দৈহিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে থাকে । এ কারণে রাসূল (সা.) বলেছেন :

দেখ , কোন এলাকায় এবং কোন বংশের থেকে সন্তান নিতে চাও , কেননা রক্ত ও বংশ (শিশুর উপর) প্রভাব ফেলে ।149

হযরত আলী (আ.) বলেছেন :

ﺣﺴﻦ ﺍﻷﺧﻼﻕ ﺑﺮﻫﺎﻥ ﻛﺮﻡ ﺍﻷﻋﺮﺍﻕ

উত্তম চরিত্র বংশীয় মর্যাদার পরিচায়ক ।150

উক্ত বর্ণনা অনুযায়ী , কোন নারীর চরিত্রবান ও দুশ্চরিত্র হওয়া এবং তাকওয়া সম্পন্ন হওয়া ও না হওয়ার বিষয়টি কন্যার উপর প্রভাব ফেলে । আর এই বিষয়টি (চারিত্রিক উত্তরাধিকার) শুধুমাত্র পবিত্র ইসলামেই নয় বরং সামাজিক অভিজ্ঞতা ও ইতিহাসের ভিত্তিতেও তা প্রমাণিত হয়েছে । পরিশেষে এটা বলতে হয় যে , যে নারী বে-পর্দায় থাকে এবং অশ্লীল , কামনা উদ্দীপক ও উত্তেজক পোশাক পরে বাড়ীর বাইরে আসে সে তো সমাজকে অনাচার ও বিপথগামিতার দিকে পরিচালিত করেই , সাথে সাথে দুনিয়া ও আখিরাতে তার ভাগ্যে জোটে খারাপ পরিণতি । কেননা আগামীতে তার সন্তানরা বিশেষ করে তার কন্যা মায়ের অনুরূপ পথ বেছে নেবে । কারণ এ মেয়ের জন্যে তার মা হচ্ছে উত্তম আদর্শ । তাই সেও সেই আদর্শের অনুসরণ করতে থাকে । আর এই অনুসরণের ফলেই ঐ মেয়ে শুধুমাত্র মায়ের মতই হয় না বরং মায়ের থেকে অনেক গুণ বেশী মাত্রায় খারাপ হয়ে থাকে ।

তাই সে সকল মায়েরা আশা করে থাকেন যে , তাদের সন্তান যারা তাদের রক্তের নির্যাস থেকে সৃষ্টি হয়েছে তারা যেন দুনিয়া ও আখিরাতে সৌভাগ্যবান হতে পারে এবং শরিয়ত বিরোধী কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকে , তাদের উচিত ঐরূপ কুরুচিপূর্ণ আচরণ থেকে বিরত থাকা ।

বে-পর্দা বা সঠিক পর্দার অনুপস্থিতি অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে :

সাধারণত সঠিক পর্দা না করা ও বে-পর্দায় থাকা নারী যেহেতু ফ্যাশন করতে বেশী পছন্দ করে তাই সব সময় নতুন নতুন পোশাক কিনতে বা পরতে এবং বিভিন্ন ধরনের পোশাকের অধিকারী হতে পছন্দ করে । আর নতুন নতুন পোশাক কেনার জন্য কখনো কখনো সে নিজের পুরাতন পোশাকগুলো অন্য মানুষদের কাছে বিক্রি করে থাকে এবং ঐ বিক্রিত অর্থের সাথে আরো কিছু অর্থ যোগ করে তার চাহিদা মত নতুন পোশাক কিনে । যে সকল দরিদ্র ব্যক্তি এই ধরনের পুরাতন কাপড় কিনে থাকেন তাদের জানা উচিৎ যে :

ক)- তা কেনার ফলে নিজের ব্যক্তিত্বের হানি হয় ।

খ)- তা স্বাস্থ্য সম্মত নয় ।

গ)- তা কেনার কারণে বিক্রেতা সব সময় নতুন নতুন পোশাক পরবে এবং সামর্থহীন ব্যক্তিদের সামনে গর্ব করবে ও তাদেরকে হীন দৃষ্টিতে দেখবে ।

এই নতুন নতুন পোশাক কেনার জন্য তারা সংসারে খরচের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং পরিবারের কর্তাকে অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে চাপের মুখে ফেলে । আর অন্য দিকে দেশের অর্থনীতির উপরও চাপের সৃষ্টি করে থাকে । কেননা এ ধরনের ফ্যাশনের পোশাক সাধারণত সরকারকে বিদেশ থেকে আমদানির মাধ্যমে দেশে আনতে হয় যার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়ে থাকে । আর ঐ অর্থের যোগান দিতে সরকারকে সমাজের বিভিন্ন খাতের উপর শুল্কের পরিমান বাড়িয়ে দিতে হয় ।

বে-পর্দা নারী সময়েরও অপচয় করে থাকে :

এই ধরনের নারীরা অধিকাংশ সময় সাজ-সজ্জা নিয়েই ব্যস্ত থাকে । যেমন তারা তাদের মাথার চুল , পোশাক ইত্যাদি পরিপাটি ও পছন্দমত ডিজাইন করতে এবং মুখের মেকআপের জন্য যথেষ্ট সময় ব্যয় করে । অতঃপর নিজেকে প্রকাশ ও অভিসারের উদ্দেশ্যে অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়িয়ে থাকে । কিন্তু সে এগুলো না করে তার জীবনের মূল্যবান সময়টুকু সন্তান লালন-পালন ও তাদেরকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা , সংসারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি আদর-ভালবাসা দান করার মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারতো । তরুণীরা জ্ঞান অর্জন , অধ্যয়ন , সুস্থ বিনোদন , খেলাধূলা ইত্যাদিতে ব্যস্ত থাকতে পারতো ।

বে-পর্দায় থাকা নারিগণ! এটা কী উচিত হবে , আল্লাহ রাব্বুল আ ’ লামীন যে জীবনকে নিয়ামত স্বরূপ আমাদেরকে দান করেছেন তা তাঁর অপছন্দনীয় কাজে ব্যয় করে তাঁর ক্রোধ ও অসন্তোষের কারণ হওয়া ?

রাসূল (সা.) বলেছেন :

কিয়ামতের দিনে চারটি বিষয়ের প্রতি প্রশ্ন করা ব্যতীত এক পা অগ্রসর হতে দেয়া হবে না , যথা : 1- মানুষ তার জীবনকে কিভাবে পরিচালনা করেছে , 2- যৌবন কালটি কোন পথে ব্যয় করেছে , 3- অর্থ কোন পথে উপার্জন করেছে এবং কোন পথে ব্যয় করেছে , 4- আহলে বাইতের (আ.) প্রতি ভালবাসা সম্পর্কে ।151

যা কিছু উপরে উল্লেখ করা হয়েছে তা থেকে এটা পরিস্কার যে , জীবন ও যৌবন যা আল্লাহ তা ’ য়ালা আমাদেরকে দান করেছেন তা হিসাব- নিকাশের উর্ধ্বে নয় । আর তিনি যে নিয়ামত আমাদেরকে দিয়েছেন তার উত্তম ব্যবহার ও ফলাফল আমাদের কাছ থেকেই চাইবেন ।

আয়াতরেওয়ায়েত ও আক্বলের দৃষ্টিতে হিজাব

হিজাবের ইতিহাসের উপর সংক্ষিপ্ত দৃষ্টিপাত

বিভিন্ন সভ্যতার উপর গবেষণা হতে জানা যায় যে , সেই প্রাচীনকাল থেকেই হিজাব মানুষের সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত ছিল । উদাহরণ স্বরূপ : গ্রীসের নারীদের বিশেষ ধরনের পর্দা ছিল যা কৌস152 দ্বীপে দীর্ঘদিন পর্যন্ত প্রচলিত ছিল ।

তদানিন্তন সময়ের গ্রীক লেখকদের প্রায় সকলেই হিজাব নিয়ে কথা বলেছেন । যেমন বিন লুপ বলেছেন যে , গ্রীসের প্রথম রাজ কন্যা পর্দা করতেন । তিব শহরের মহিলাগণ বিশেষ ধরনের পর্দা করতো । তাদের দু ’ চোখের সামনে ছিদ্র করা থাকতো যাতে করে তারা দেখতে পায় ।

নুকুশি বলেন যে , স্পোরটি শহরের নারীরাও তাদের মাথা ঢেকে রাখতো কিন্তু তাদের মুখমণ্ডল খোলা থাকতো । যখন মহিলাগণ ও মেয়েরা বাজারে যেত তখন তারা হিজাব পরিধান করতো । আর্য ধর্ম বিশ্বাসী সম্মানিত নারীরাও পর্দা করতো । আর ইরানের উচ্চ পর্যায়ের ভদ্র ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মহিলারাও অতি সুন্দরভাবে পর্দা করতো ফলে তাদেরকে সাধারণ নারীদের থেকে সহজেই আলাদা করা যেত ।153

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা পরিস্কার বুঝা যায় যে , এই পৃথিবীতে ইসলামের আবির্ভাবের আগেও হিজাবের প্রচলন ছিল । কেননা রাসূল (সা.)-এর আগেও অনেক নবী (আ.) এসেছিলেন এবং তারাও মানুষকে চারিত্রিক পবিত্রতা ও তাকওয়ার প্রতি দাওয়াত করেছিলেন । আর স্বভাবগত কারণে মানুষ পবিত্রতা ও আত্মসম্মানবোধ যা আল্লাহ সুবহানাহু তা ’ য়ালা ও নবীদের বৈশিষ্ট্য তা পছন্দ করে । যদিও পাপের ধুলা-বালি এই বৈশিষ্ট্যকে ঢেকে ফেলে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নবীদের প্রচেষ্টা ও তৌহীদের বুনিয়াদ প্রতিটি মানুষের অস্তিত্বে ছিল ও থাকবে ।