মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার

 মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার0%

 মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার লেখক:
: এ.কে.এম. রশিদুজ্জামান
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: ইমাম হোসাইন (আ.)

 মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার

লেখক: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
: এ.কে.এম. রশিদুজ্জামান
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 9165
ডাউনলোড: 2714

পাঠকের মতামত:

মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 29 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 9165 / ডাউনলোড: 2714
সাইজ সাইজ সাইজ
 মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার

মহানবী (সা.)-এর বন্দী পরিবার

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

ইমাম আলী বিন হোসেইন (আ.)-এর খোতবা

দামেস্কে বন্দী থাকা অবস্থায় ইমাম আলী ইবনে হোসেইন (আ.) ইয়াযিদকে বলেছিলেন সে যেন জুমার দিনে খুতবার দেওয়ার অনুমতি দেয়। বিহার আল আনওয়ার ’ গ্রন্থে উদ্ধৃত আছে এবং মানাক্বিব ’ -এর লেখক এবং অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন যে , ইয়াযীদ একটি মিম্বর তৈরী করতে বললো এবং এরপর একজন বক্তাকে ডেকে পাঠালো। সে তাকে আদেশ করলো ইমাম হোসেইন (আ.) ও ইমাম আলী (আ.)-কে তিরস্কার করার জন্য এবং তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে জনতার সামনে বলার জন্য। বক্তা মিম্বরে উঠলো এবং আল্লাহর হামদ ও তাসবিহ করলো এবং ইমাম আলী (আ.) ও ইমাম হোসেইন (আ.)-কে প্রচুর গালিগালাজ করলো। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে মুয়াবিয়া ও ইয়াযীদের প্রশংসা করলো এবং তারা অনেক ভালো কাজ করেছে বলে উল্লেখ করলো। তখন ইমাম আলী বিন হোসেইন (আ.) তাকে উচ্চকণ্ঠে বললেন , হে তুমি , যে ওয়াজ করছো , দুর্ভোগ হোক তোমার , তুমি সৃষ্টিকর্তার ক্রোধ ডেকেছো সৃষ্টিকে খুশী করতে গিয়ে , আর তোমার স্থান হলো জাহান্নামে। এরপর তিনি ইয়াযীদের দিকে ফিরলেন এবং বললেন , তুমি কি আমাকে অনুমতি দিচ্ছো কিছু বলার জন্য যা আল্লাহর জন্য সন্তুষ্টির এবং যারা উপস্থিত আছে তাদের জন্য হবে পুরস্কার ? ইয়াযীদ তা প্রত্যাখ্যান করলো , কিন্তু জনতা বললো , তাকে অনুমতি দিন মিম্বরে ওঠার জন্য , হয়তোবা আমরা তার কাছ থেকে [মূল্যবান] কিছু শুনতে পাবো। ইয়াযীদ বললো , যদি আমি তাকে অনুমতি দিই মিম্বরে ওঠার জন্য সে তা থেকে নামবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সে আমাকে ও আবু সুফিয়ানের বংশকে অপমানিত করবে। তারা বললো , কিভাবে এ অসুস্থ যুবক তা করবে ? ইয়াযীদ বললো , সে এমন এক পরিবার থেকে এসেছে যারা শিশুকালেই দুধের সাথে প্রজ্ঞা পান করেছে। তারা তাকে চাপ দিতে থাকলো যতক্ষণ না সে তাতে রাজী হলো। ইমাম (আ.) মিম্বরে উঠলেন , তিনি আল্লাহর হামদ ও তাসবিহ করলেন এবং একটি খোতবা দিলেন যা চোখগুলোকে কাঁদালো এবং হৃদয়গুলোকে কাঁপিয়ে দিলো। এরপর তিনি বললেন ,

হে জনতা , আমাদেরকে ছয়টি গুণাবলী ও সাতটি মর্যাদা দেওয়া হয়েছে [আল্লাহর পক্ষ থেকে] ― জ্ঞান , সহনশীলতা , উদারতা , বাগ্মিতা , সাহস ও বিশ্বাসীদের অন্তরে আমাদের জন্য ভালোবাসা ― যা আমাদের মাঝে উপস্থিত। আর আমাদের মর্যাদাগুলো হলো যে , যে রাসূল দায়িত্বে আছেন তিনি আমাদের মাঝ থেকে ; সত্যবাদী [ইমাম আলী] আমাদের মাঝ থেকে ; যিনি ওড়েন [জাফর আত তাইয়ার] তিনি আমাদের মাঝ থেকে , আল্লাহর সিংহ এবং তাঁর রাসূলেরও ― আমাদের মাঝ থেকে ; আর উম্মতের দুই সিবত আমাদের মাঝ থেকে। যারা আমাকে জানে তারাতো আমাকে জানেই ; যারা আমাকে চেনে না , আমি তাদের জন্য আমার বংশধারা ও পুর্বপুরুষদের পরিচয় প্রকাশ করছি যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা আমাকে চিনতে পারে। হে জনতা , আমি মক্কা ও মিনার সন্তান , আমি যমযম ও সাফা-এর সন্তান। আমি তার সন্তান যিনি কালো পাথরকে [হাজর আল আসওয়াদ] তুলেছিলেন তার কম্বলের প্রান্ত ধরে। আমি সেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সন্তান যিনি সুন্দর করে পাজামা ও আলখাল্লা পড়তেন। আমি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সন্তান যিনি কাবা তাওয়াফ করেছেন , সাঈ করেছেন। আমি সেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সন্তান যিনি হজ্ব করেছেন এবং তালবিয়া উচ্চারণ করেছেন। আমি তার সন্তান যাকে রাতের বেলা মাসজিদুল আকসাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল [মেরাজের সময়] , আমি তার সন্তান যাকে সিদরাতুল মুনতাহাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল , আমি তার সন্তান যে-

) ث ُمَّ دَنَا فَتَدَلَّىٰ(

এরপর নিকটবর্তী হলো এবং আরো নিকটবর্তী। [সূরা নাজম: 8]

আমি তার সন্তান যে ছিলো-

) ك َانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَىٰ(

দুই ধনুক পরিমাণ [পরস্পর মুখোমুখি] অথবা তার চাইতেও কাছে। [সূরা নাজম: 9]

আমি তার সন্তান যাকে সর্বশক্তিমান ওহী দান করেছিলেন , যা তিনি প্রকাশ করেছিলেন। আমি হোসেইন (আ.)-এর সন্তান ― যাকে কারবালায় হত্যা করা হয়েছে ; আমি আলীর সন্তান ― যিনি মুর্তাযা [অনুমোদনপ্রাপ্ত] ; আমি মুহাম্মাদের সন্তান ― যাকে বাছাই করা হয়েছিল ; আমি ফাতেমাতুয যাহরা (আ.)-এর সন্তান , আমি সিদরাতুল মুনতাহার সন্তান , আমি শাজারাতুল মুবারাকাহ [বরকতময় গাছ]-এর সন্তান , আমি তার সন্তান যার শোকে রাতের অন্ধকারে জিনরা বিলাপ করেছিল , আমি তার সন্তান যার জন্য পাখিরা শোক পালন করেছিল।

‘ কামিলে বাহাঈ ’ গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে যে , ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) ইয়াযীদকে বলেছিলেন যে সে যেন তাকে জুম ’ আর দিন খোতবা দিতে দেয়। এতে সে রাজী হয়েছিল। জুম আর দিন ইয়াযীদ এক অভিশপ্তকে আদেশ করলো মিম্বরে উঠতে এবং ইমাম আলী (আ.) ও ইমাম হোসেইন (আ.)-কে যত পারে তত গালি দিতে এবং খলিফা উমর ও খলিফা আবু বকরের প্রশংসা করতে। অভিশপ্ত ব্যক্তিটি মিম্বরে উঠলো এবং তার যা ইচ্ছা বললো। তখন ইমাম (আ.) বললেন , আমাকে অনুমতি দাও খোতবা দেওয়ার জন্য। ইয়াযীদ তার প্রতিশ্রতি রক্ষা করতে অস্বীকার করলো এবং তাকে অনুমতি দিলো না। জনতা চাপ প্রয়োগ করলো , কিন্তু সে অনুমতি দিলো না , যতক্ষণ পর্যন্ত না তার নাবালক সন্তান মুয়াবিয়া বললো , হে বাবা , তার খোতবা কোন দিকে নিয়ে যেতে পারে ? তাকে খোতবা দেওয়ার জন্য অনুমতি দিন। ইয়াযীদ বললো , তুমি তাদের কাজ সম্পর্কে জানো না , তারা প্রজ্ঞা ও বাগ্মীতা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। আর আমি আশঙ্কা করি তার খোতবা হয়তো বিদ্রোহের সৃষ্টি করতে পারে এবং আমাদের মাথার ওপরে ঘুরতে পারে। এরপর সে তাকে অনুমতি দিলো। ইমাম (আ.) মিম্বরে উঠলেন এবং বললেন , প্রশংসা আল্লাহর যার কোন শুরু নেই এবং যিনি চিরস্থায়ী যার কোন শেষ নেই , তিনি সবার প্রথমে যাঁর কোন শুরু নেই এবং তিনি সবার শেষে যার শেষের কোন শেষ নেই , সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে শুধু তাঁর সত্তা ছাড়া , তিনি দিন ও রাতের পরিমাপ নির্ধারণ করেন , পরিণতি প্রস্তুত করেন এবং বরকতময় হলেন আল্লাহ , তিনিই একমাত্র বাদশাহ , সর্বজ্ঞানী।

এরপর বললেন , আল্লাহ আমাদেরকে দান করেছেন জ্ঞান , সহনশীলতা , উদারতা , বাগ্মীতা , সাহস এবং বিশ্বাসীদের অন্তরে ভালোবাসা। আর আমাদের মর্যাদা হলো , যে রাসূল দায়িত্বে আছেন তিনি আমাদের মাঝ থেকে , এ ছাড়াও শহীদদের সর্দার [হামযা] এবং জাফর , যিনি বেহেশতে ওড়েন এবং এ উম্মতের দুই সিব্ত [ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেইন-আ.] আমাদের মাঝ থেকে এবং মাহদী (আ.)-ও যিনি দাজ্জাল ’ -কে হত্যা করবেন। হে জনতা , যারা আমাকে চিনে তারাতো চিনেই , আর যারা আমাকে চিনো না , তাদের জন্য আমার বংশবৃক্ষ ও পূর্বপুরুষের পরিচয় দিচ্ছি যতক্ষণ না তারা আমাকে চিনতে পারে। হে জনতা , আমি মক্কা ও মিনার সন্তান , আমি যমযম ও সাফা-এর সন্তান , আমি তার সন্তান যিনি তার কম্বলের পাশ ধরে হাজর আল-আসওয়াদ [কালো পাথর] তুলেছিলেন। আমি সেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির সন্তান যার কারণে পাজামা ও আলখাল্লা সৌন্দর্য পেয়েছিল। আমি সেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সন্তান যারা [কা ’ বা] তাওয়াফ করেছিল এবং সাঈ করেছিল। আমি সেই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের সন্তান যারা হজ্ব সম্পাদন করেছিল এবং তালবিয়াহ উচ্চারণ করেছিল। আমি তার সন্তান যাকে রাতে মসজিদুল আক্বসাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল [মেরাজে]। আমি তার সন্তান যাকে সিদরাতুল মুনতাহাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমি তার সন্তান যে নিকটবর্তী হলো এবং স্থির হয়ে রইলো [সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টির মাঝে মেরাজের রাতে] , আমি তার সন্তান , যে ছিলো নিকটে ― দুই ধনুক পরিমাণ দূরত্বে অথবা তারও কাছে [সামনা সামনি]। আমি তার সন্তান যাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ ওহী পাঠিয়েছিলেন , যা তিনি প্রকাশ করেছিলেন। আমি সন্তান হোসেইন (আ.)-এর ― যাকে কারবালায় হত্যা করা হয়েছে , আমি সন্তান আলীর ― যাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে [মুরতাযা] , আমি সন্তান মুহাম্মাদ (সা.)-এর ― যিনি ছিলেন নির্বাচিত , আমি সন্তান ফাতেমা যাহরা [জোতির্ময়] (আ.)-এর , আমি সন্তান সিদরাতুল্ মুন্তাহার , আমি সন্তান শাজারাতুল মুবারাকাহর [পবিত্র বৃক্ষের] , আমি সন্তান তার যাকে রক্তে ও বালিতে মাখা হয়েছে , আমি সন্তান তার যার জন্যে জিনরা বিলাপ করেছে রাতের অন্ধকারে , আমি সন্তান তার যার জন্যে পাখিরা শোক পালন করেছে। যখন খোতবা এ পর্যায়ে পৌঁছলো জনতা কাঁদতে ও বিলাপ করতে শুরু করলো এবং ইয়াযীদ আশঙ্কা করলো এতে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যেতে পারে। সে মুয়া যযিনকে ডেকে বললো , নামাযের ঘোষণা দাও। মুয়া যযিন উঠলো এবং বললো , আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার। ইমাম বললেন , আল্লাহ শ্রেষ্ঠতর এবং সর্বোচ্চ , সবচেয়ে সম্মানিত এবং সবচেয়ে দয়ালু তার চাইতে যা আমি ভয় করি এবং যা আমি এড়িয়ে যাই। এরপর সে বললো , আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। ইমাম বললেন , নিশ্চয়ই আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি অন্যদের সাথে যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং তিনি ছাড়া কোন মালিক নেই , আর আমি প্রত্যেক অস্বীকারকারীকে প্রত্যাখ্যান করি। যখন সে বললো , আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল , ইমাম নিজের মাথা থেকে পাগড়ী নামিয়ে নিলেন এবং মুয়া যযিনের দিকে ফিরে বললেন , আমি এ মুহাম্মাদের (সা.) নামে অনুরোধ করছি , এক মুহূর্ত নীরব থাকার জন্য। এরপর তিনি ইয়াযীদের দিকে ফিরে বললেন , হে ইয়াযীদ , এ সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ রাসূল কি আমার প্রপিতামহ , নাকি তোমার ? যদি তুমি বলো যে তোমার প্রপিতামহ , তাহলে গোটা পৃথিবী জানে তুমি মিথ্যা বলছো। আর যদি তুমি বল যে তিনি আমার প্রপিতামহ , তাহলে কেন তুমি আমার পিতাকে জুলুমের মাধ্যমে হত্যা করেছো এবং তার মালপত্র লুট করেছো এবং তার নারী-স্বজনদের বন্দী করেছো ? এ কথা বলে ইমাম (আ.) নিজের জামার কলার ছিঁড়ে ফেললেন ও কাঁদলেন। এরপর বললেন , আল্লাহর শপথ , এ পৃথিবীর ওপরে আমি ছাড়া কেউ নেই যার প্রপিতামহ হলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) , কেন এ লোকগুলো আমার পিতাকে জুলুমের মাধ্যমে হত্যা করেছে এবং আমাদেরকে রোমানদের মতো বন্দী করেছে ? এরপর বললেন , হে ইয়াযীদ , তুমি এটি করে আবার বলছো যে মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসূল এবং তুমি ক্বিবলার দিকে মুখ ফিরাও , অভিশাপ তোমার ওপর ঐদিন যেদিন আমার প্রপিতামহ এবং পিতা তোমার ওপর ক্রোধান্বিত হবেন। এ কথা শুনে ইয়াযীদ মুয়া যযিনকে নামাযের ইক্বামাহ দিতে বললো। লোকজনের ভেতর গুঞ্জন উঠলো এবং তাদের ভেতর একটি তোলপাড় শুরু হলো। এরপর একটি দল তার সাথে নামাজ পড়লো এবং অন্যরা পড়লো না এবং ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে গেলো।

বন্দী অবস্থায় ইমাম হোসেইন (আ.)-এর কন্যা সাইয়েদা সাকিনাহ (আ.)-এর স্বপ্ন

সাইয়েদা সাকিনাহ (আ.) বর্ণনা করেছেন যে , সিরিয়াতে এক বৃহস্পতিবার স্বপ্ন দেখলাম , এরপর তিনি একটি দীর্ঘ স্বপ্ন বর্ণনা করলেন।

শেইখ ইবনে নিমা বর্ণনা করেছেন যে , সাইয়েদা সাকিনাহ (আ.) দামেস্কে স্বপ্নে দেখেছেন যে , পাঁচটি আলোকিত ঘোড়া সামনে এগিয়ে এলো এবং প্রত্যেকটির ওপর একজন সম্মানিত ব্যক্তি বসে আছেন এবং ফেরেশতারা তাদেরকে সব দিক থেকে ঘেরাও করে আছে এবং বেহেশতের একজন নারী কর্মীও তাদের সাথে আছে। যারা ঘোড়ায় বসে আছেন তারা আরো এগিয়ে গেলেন , আর নারী কর্মীটি আমার দিকে এলেন এবং বললেন , নিশ্চয়ই তোমার প্রপিতামহ তোমাকে সালাম পাঠিয়েছেন। আমি উত্তর দিলাম , রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপরও সালাম , আপনি কে ? তিনি বললেন , বেহেশতের নারী কর্মীদের একজন। আমি জিজ্ঞেস করলাম , তারা কারা যারা সম্মানিত ঘোড়াগুলোর পিঠে বসে এখানে এসেছেন ? তিনি জবাব দিলেন , তারা হলেন আদম সিফওয়াতুল্লাহ [বাছাইকৃত] (আ.) , দ্বিতীয় জন হলেন ইবরাহীম খলিলুল্লাহ [আল্লাহর বন্ধু] (আ.) , তৃতীয় জন হলেন মূসা কালিমুল্লাহ [যিনি আল্লাহর সাথে কথা বলেছেন] (আ.) এবং চতুর্থ জন ঈসা রুহুল্লাহ [যার রুহ আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত] । আমি জিজ্ঞেস করলাম , ইনি কে যিনি নিজের দাড়ি ধরে আছেন এবং পড়ে যাচ্ছেন [শোকে] এবং আবার উঠছেন ? তিনি বললেন , তিনি তোমার দাদা , রাসূলুল্লাহ (সা.) । আমি বললাম , তারা কোথায় যাচ্ছেন ? তিনি উত্তর দিলেন , তারা তোমার পিতা হোসেইনের (আ.) দিকে যাচ্ছেন। আমি তার দিকে দৌড়ে গেলাম , এটি জানানোর জন্য যে অত্যাচারীরা আমাদের সাথে কী ব্যবহার করেছে তার মৃত্যুর পর। ঐ মুহূর্তে পাঁচটি উটের হাওদা এলো এবং এদের প্রত্যেকটিতে একজন নারী বসেছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম , এ নারীরা কারা যারা এই মাত্র এলেন ? তারা বললো , প্রথম জন হাওয়া ― যিনি মানবজাতির মা , দ্বিতীয় জন আসিয়াহ ― যিনি মাযাহিম-এর কন্যা [ফেরাউনের স্ত্রী] , তৃতীয় জন মারইয়াম ― যিনি ইমরানের কন্যা [ঈসা (আ.)-এর মা] , চতুর্থ জন খাদিজা (আ.) ― যিনি খুয়াইলিদের কন্যা [রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী ও মা ফাতেমা (আ.)-এর মা] এবং পঞ্চম জন যার হাত তার মাথায় রাখা এবং যিনি পড়ে যাচ্ছেন এবং আবার উঠছেন তিনি আপনার দাদী ফাতেমা (আ.)― যিনি রাসূলুল্লাহ (আ.) -এর কন্যা , আপনার পিতার মা। আমি বললাম , আল্লাহর শপথ , আমার উচিত তার কাছে বর্ণনা করা তারা আমাদের সাথে কী ব্যবহার করেছে। এ কথা বলে আমি তার সামনে বসলাম এবং বললাম , হে প্রিয় মা , তারা আমাদের অধিকার দেয় নি ; হে প্রিয় মা , তারা আমাদের দলকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে ; হে প্রিয় মা , তারা আমাদের মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে ; হে প্রিয় মা , আল্লাহর শপথ , তারা আমার পিতা হোসেইন (আ.)-কে হত্যা করেছে। তিনি (আ.) জবাব দিলেন , হে সাকিনাহ , চুপ করো , তুমি আমার কলিজা পুড়ে ফেলেছো এবং আমার হৃদপিণ্ডের সংযোগ কেটে ফেলেছো। এ হলো তোমার বাবা হোসেইন (আ.)-এর জামা যা আমি সংরক্ষণ করছি যতক্ষণ না আমি এটি নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করি। এরপর আমি ঘুম থেকে উঠে গেলাম এবং তা গোপন রাখতে চাইলাম , কিন্তু তা আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের কাছে বলে ফেললাম। আর তা জনগণের মাঝে প্রচার হয়ে গেলো।

ইয়াযীদের স্ত্রীর স্বপ্ন এবং ইমাম হোসেইন (আ.)-এর জন্য তার কান্না

বিহার আল আনওয়ার ’ গ্রন্থে ইয়াযীদের স্ত্রী হিনদ থেকে বর্ণিত আছে যে , আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম যে বেহেশতের দরজাগুলো খুলে গেলো এবং ফেরেশতারা একজনের পর একজন অবতরণ করলো ইমাম হোসেইন (আ.)-এর মাথার কাছে এবং তাকে অভিবাদন জানালো। সে মুহূর্তে একটি মেঘ হাজির হলো যার ওপরে কিছু মানুষ বসে ছিলেন এবং এদের মাঝে একজনের চেহারা ছিলো আলোকিত। তিনি ইমাম হোসেইন (আ.)-এর মাথার দিকে দৌড়ে গেলেন এবং তার দাঁতগুলোতে চুমু দিয়ে বললেন , হে আমার সন্তান , তারা তোমাকে হত্যা করেছে , আর তুমি কি মনে করো তারা তা করেছে তোমাকে না চিনেই ? এছাড়া তারা পানির কাছে যাওয়ার পথকে তোমার জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল। হে প্রিয় সন্তান , আমি তোমার নানা , রাসূলুল্লাহ (সা.) , এ হলো তোমার পিতা আলী আল মুরতাযা (আ.) । এ হলো তোমার ভাই হাসান (আ.) , এরা হলো তোমার দু চাচা জাফর (আ.) ও আক্বীল (আ.) , আর ওরা হলো হামযা ও আব্বাস [নবীর চাচা] । একথা বলে তিনি তার পরিবারের প্রত্যেকের নাম বললেন।

হিনদ বলেছে যে , আমি ঘুম থেকে জেগে উঠলাম ভয় নিয়ে এবং দেখলাম ইমাম হোসেইন (আ.)-এর মাথার চারপাশে আলো ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর আমি উঠে পড়লাম ইয়াযীদকে খুঁজতে এবং তাকে একটি অন্ধকার ঘরে দেয়ালের দিকে মুখ করে বসে থাকতে দেখলাম এবং বলতে শুনলাম , আমার হোসেইনের সাথে কী দরকার ছিলো ? এবং মনে হলো পৃথিবীর সব দুঃখ তাকে ঘিরে ধরেছে। আমি তাকে স্বপ্নটি বর্ণনা করলাম , আর সে তার মাথা নিচু করলো। যখন সকাল হলো , সে ইমাম হোসেইন (আ.)-এর পরিবারকে ডেকে পাঠালো এবং বললো , তোমরা কি আমার সাথে থেকে যেতে চাও , নাকি মদীনায় ফেরত যেতে চাও এবং অনেক পুরস্কার নিতে চাও ? তারা বললেন , প্রথমে আমরা চাই ইমাম হোসেইন (আ.)-এর ওপর শোক পালন করতে ও কাঁদতে। সে উত্তর দিলো , তোমরা চাইলে তা করতে পারো। তখন কিছু বাড়িঘর তাদের জন্য খালি করা হলো এবং বনি হাশিম ও কুরাইশ-এর নারীরা কালো পোশাক পরলেন এবং ইমাম হোসেইন (আ.)-এর জন্য সাতদিন শোক পালন করলেন।

শেইখ ইবনে নিমা বলেন যে , যতদিন নবী পরিবারের নারীরা দামেস্কে রইলেন ততদিন তারা ইমাম হোসেইন (আ.)-এর জন্য শোক পালন করলেন দুঃখ ও বিলাপের মাধ্যমে। বন্দীদের দুঃখ ছিলো অপরিসীম এবং তাদের পুরুষদের এত শীঘ্র মৃত্যুতে তাদের শোকও ছিলো অনেক। তাদেরকে এমন একটি বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়েছিল যেখানে তাপ ও ঠাণ্ডায় নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব ছিলো না , যতক্ষণ না তাদের পর্দার আড়ালে বেড়ে ওঠা নরম দেহের চামড়া ফেটে রক্ত বেরিয়ে আসছিল। সহ্য করার ক্ষমতা তাদের কাছ থেকে চলে গিয়েছিল এবং তীব্র বেদনা তাদেরকে পরাস্ত করেছিল এবং দুঃখ ছিলো তাদের সাথী।

ইমাম হোসেইন (আ.)-এর শিশু কন্যার স্বপ্ন

ইয়াজিদের জেলখানায় বন্দী থাকা অবস্থায় ইমাম হোসেইন (আ.)-এর এক শিশু কন্যা একটি স্বপ্ন দেখে। কামিলে বাহাই ’ গ্রন্থে কিতাব আল হাউইয়াহ ’ থেকে উদ্ধৃত হয়েছে যে , নবী পরিবার শিশুদের কাছে তাদের পিতাদের শাহাদাতের সংবাদ গোপন রেখেছিলেন। তারা তাদেরকে বলেছিলেন তাদের পিতারা সফরে গিয়েছেন , ঐ সময় পর্যন্ত যখন ইয়াযীদ তাদেরকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠালো। ইমাম হোসেইন (আ.)-এর চার বছরের এক শিশু কন্যা একদিন ঘুম থেকে উঠে বললেন , আমার বাবা কোথায় ছিলেন ? আমি এখন তাকে স্বপ্নে দেখলাম যে তিনি অস্থির এবং বিপর্যস্ত। এ কথা শুনে নারীরা এবং শিশুরাও কাঁদতে শুরু করলেন এবং তাদের শোকের কণ্ঠ উঁচু হলো। ইয়াযীদ তার ঘুম থেকে উঠলো এবং জিজ্ঞেস করলো , কী হয়েছে ? তারা বিষয়টি জানলো এবং তাকে জানালো , আর এ অভিশপ্ত আদেশ দিলো তার বাবার [ইমাম হোসেইন আ.-এর] মাথাটি ঐ কন্যার কাছে পাঠিয়ে দিতে। মাথাটি আনা হলো এবং তার কোলে রাখা হলো। শিশু কন্যাটি জিজ্ঞেস করলো , এটি কী ? তারা উত্তর দিলো এটি তোমার বাবার মাথা। এ কথা শুনে বাচ্চাটি অস্থির হয়ে উঠলো এবং চিৎকার করতে শুরু করলো , সে অসুস্থ হয়ে পড়লো এবং দামেস্কে মৃত্যুবরণ করলো।

দামেস্কের প্রধান দরজা ও বড় মসজিদে ইমাম হোসেইন (আ.)-এর ঝুলন্ত মাথা

কামিলে বাহাইগ্রন্থে বর্ণিত আছে যে ,ইয়াযীদ আদেশ দিয়েছিল যেন ইমাম হোসেইনের ( .)মাথা এবং তার পরিবারের অন্যান্যদের এবং তার সাথীদের মাথাগুলো শহরের প্রধান ফটকে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

একই গ্রন্থে এও বর্ণিত হয়েছে যে , ইমাম হোসেইন (আ.)-এর মাথাটি দামেস্কের সবচেয়ে বড় মসজিদের মিনারে চল্লিশ দিন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল , আর অন্যান্য মাথাগুলো অন্যান্য মসজিদ ও শহরগুলোর দরজায় ঝোলানো হয়েছিল এবং ইয়াযীদের বাড়ির দরজায় ঝোলানো হয়েছিল একদিনের জন্য।

শেইখ রাওয়ানদি বর্ণনা করেছেন মিনহাল বিন আমর থেকে যে , আল্লাহর শপথ , আমি এক ব্যক্তিকে দেখেছি এর দিকে ফিরে সূরা কাহফ তেলাওয়াত করতে। যখন সে এ আয়াতে পৌঁছলো:

) أ َمْ حَسِبْتَ أَنَّ أَصْحَابَ الْكَهْفِ وَالرَّ‌قِيمِ كَانُوا مِنْ آيَاتِنَا عَجَبًا(

অথবা তুমি কি মনে করো গুহার বাসিন্দারা এবং লেখা কাগজ আমাদের একটি বিস্ময়কর নির্দশন ? [সূরা কাহাফ: 9]

মাথাটি সুস্পষ্ট ও সুন্দর কণ্ঠে বললো , আমার শাহাদাত এবং উদাহরণ গুহার বাসিন্দাদের চাইতেও বিস্ময়কর।

ইয়াজিদের দরবারে ইহুদী রাব্বি-এর বক্তব্য

আল্লামা মাজলিসি তার বিহার আল-আনওয়ার ’ গ্রন্থে সিরিয়ার মিম্বর থেকে ইমাম আলী যায়নুল আবেদীন (আ.)-এর খোতবা উল্লেখ করার পর বলেন যে , সে সময় এক ইহুদী রাব্বি ইয়াযীদের সামনে বসে ছিলো। সে বললো , হে ইয়াযীদ , এ যুবকটি কে ? ইয়াযীদ বললো , সে হোসেইনের সন্তান আলী। রাব্বি জিজ্ঞেস করলো , কোন হোসেইন ? ইয়াযীদ বললো , আলী ইবনে আবি তালিবের সন্তান। রাব্বি জিজ্ঞেস করলো , কে তার মা ? ইয়াযীদ বললো , ফাতেমা ― মুহাম্মাদের কন্যা। এ কথা শুনে ঐ প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি বললো , সুবহানাল্লাহ , সে তোমার রাসূলের নাতি , আর তুমি তাকে এত শীঘ্র হত্যা করলে ? কত খারাপ আচরণই না করেছো তার সন্তানের সাথে তার মৃত্যুর পর। আল্লাহর শপথ , যদি মূসা বিন ইমরানের ঔরস থেকে কোন নাতি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকতো , আমরা বিশ্বাস করি আমরা আমাদের রবের সমান তার ইবাদাত করতাম। তোমাদের নবী তোমাদের মাঝ থেকে গতকাল চলে গেছেন , আর আজ তোমরা তার সন্তানের ওপর আঘাত করেছো এবং তাকে হত্যা করেছো। কত খারাপ জাতিই না তোমরা। এ কথা শুনে ইয়াযীদ আদেশ দিলো তার কণ্ঠনালীকে তিনবার চেপে ধরতে। রাব্বি উঠে দাঁড়িয়ে বললো , তুমি যদি চাও আমাকে হত্যা করতে তাহলে করো , যদি চাও মুক্ত করে দাও এবং যদি চাও আমাকে আঘাত করো। আমি তওরাতে পড়েছি , যে নবীর সন্তানকে হত্যা করে সে যতদিন জীবিত থাকবে ততদিন অভিশপ্ত থাকবে এবং যখন মরবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।

সাইয়েদ ইবনে তাউস বলেন যে , ইবনে লাহীআহ বর্ণনা করেছে আবুল আসওয়াদ মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান থেকে যে সে বলেছে যে , রা স আল জালুত আমার কাছে এলো এবং বললো , দাউদ (আ.) ও আমার মাঝে সত্তর জন পিতামহের দূরত্ব আছে , আর এ কারণে ইহুদীরা আমাকে সম্মান করে , অথচ তোমরা তোমাদের নবীর সন্তানকে হত্যা করলে যখন তাদের মাঝে যুক্তকারী পিতা [বা মাতা] শুধুমাত্র একজন ?

ইমাম হোসেইন (আ.)-এর হত্যাকারীকে ইয়াজিদের পুরস্কার প্রদান

সিবতে ইবনে জাওযির তাযকিরাহ ’ গ্রন্থে আছে যে , ইয়াযীদ [উবায়দুল্লাহ] ইবনে যিয়াদকে ডেকে পাঠালো এবং তাকে বেশ কিছু পুরস্কার এবং অসংখ্য উপহার দিলো। এরপর সে তাকে নিজের কাছে বসালো এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করলো এবং তাকে নিজের স্ত্রীদের সাথে চলাফেরা করতে দিলো। সে তাকে নিজের সৌভাগ্য সাথী বানিয়েছিলো এবং এক রাতে সে মাতাল হলো এবং গায়ককে আদেশ দিলো একটি গান গাওয়ার জন্য এবং নিজ থেকেই হঠাৎ বললো , আমাকে এক গ্লাস মদ দাও যা আমার মনোবল বৃদ্ধি করবে এবং একই জিনিস দাও ইবনে যিয়াদকে , যে আমার গোপন কথার অংশীদার ও বিশ্বস্ত এবং সে আমার জন্য যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আনে এবং আমার জন্য যুদ্ধ করে , সে বিদ্রোহী হোসেইনের [আউযুবিল্লাহ] হত্যাকারী এবং আমার শত্রুদেরও এবং ঈর্ষাপরায়ণদেরও।

দামেস্কে নবী পরিবারের বন্দীদের মুক্তি প্রদান

এক পর্যায়ে ইয়াজিদ জনরোষের কথা বিবেচনায় এনে নবী পরিবারের অসহায় ও শোকার্ত বন্দীদের শেষ পর্যন্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। একদিন ইমাম যায়নুল আবেদীন (আ.) ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলেন এবং দামেস্কের বাজারে হেঁটে বেড়াতে লাগলেন। মিনহাল বিন আমর তার দিকে এগিয়ে এলো এবং জিজ্ঞেস করলো , রাতটি আপনি কিভাবে কাটিয়েছেন হে রাসূলুল্লাহর (সা.) সন্তান ? ইমাম জবাব দিলেন , আমাদের রাত ছিলো বনি ইসরাইলের মতো। যারা ফেরাউনের জনগণের মধ্যে ছিলো , যাদের পুত্র-সন্তানদের মাথা কেটে ফেলা হয়েছিল এবং নারীদের বন্দী করা হয়েছিল। হে মিনহাল , অন্যদের মধ্যে আরবদের বিশেষ মর্যাদা ছিলো এ কারণে যে মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন একজন আরব এবং আমরা , মুহাম্মাদ (সা.)-এর পরিবার , নিহত হয়েছি এবং এ রাতে ছত্রভঙ্গ হয়েছি , আমাদেরকে ঘৃণা করা হয়েছে , হত্যা করা হয়েছে এবং বিতাড়িত হয়েছি। তাই এ রাতের ওপর হে মিনহাল , ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।