পথ চলার বাতি

পথ চলার বাতি0%

পথ চলার বাতি লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: চরিত্র গঠনমূলক বই

পথ চলার বাতি

লেখক: আবু আবদিল্লাহ ইমাম জাফর ইবনে মুহাম্মদ আস-সাদিক্ব (আ.)
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 11086
ডাউনলোড: 2902

পাঠকের মতামত:

পথ চলার বাতি
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 61 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 11086 / ডাউনলোড: 2902
সাইজ সাইজ সাইজ
পথ চলার বাতি

পথ চলার বাতি

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

পরিচ্ছেদ-20

ক্ষমা

ক্ষমতা থাকা সত্তেও কাউকে ক্ষমা করে দেয়া হচ্ছে রাসূলদের (আ.) এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে যারা ভয় করে তাদের গোপন রহস্য। ক্ষমা হলো তা যখন তুমি তোমার সাথীকে বাহ্যিকভাবে সে যে অন্যায় করেছে তার জন্য তাকে অভিযুক্ত কর না , যখন তুমি সেই কারণকে ভুলে যাও যা ভেতরে কষ্টের সৃষ্টি করেছে এবং যখন তুমি তোমার পছন্দে বিরাট উদারতা প্রদর্শন কর তার উপরে তোমার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও। কেউ ক্ষমায় পৌঁছানোর পথ পায় না শুধু সে ছাড়া যাকে আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ক্ষমা ও মার্জনা করে দিয়েছেন সে যে গুনাহ করেছে তা থেকে এবং যে কাজ সে ফেলে রেখেছিলো তার জন্য এবং যাকে তাঁর সম্মানের পদক দিয়ে সাজানো হয়েছে এবং তাঁর জ্যোতির নূরের পোষাক পরানো হয়েছে।

এটি এজন্য যে ক্ষমা ও মার্জনা আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালার দু টো গুণাবলী যা তিনি আমানত রেখেছেন তাঁর বিশুদ্ধ বন্ধুদের ভেতরে যেন তারা তাদের সৃষ্টিকর্তা ও নির্মাতা সৃষ্টির সাথে যেমন আচরণ করেন সেরূপ আচরণ অবলম্বন করে। এজন্য তিনি বলেছেনঃ

) و َلْيَعْفُوا وَلْيَصْفَحُوا أَلَا تُحِبُّونَ أَن يَغْفِرَ اللَّـهُ لَكُمْ وَاللَّـهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ(

‘‘ তাদের উচিত ক্ষমা করা ও উপেক্ষা করা। তোমরা কি চাও না যে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন ? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল , করুণাময়। (সূরা নূরঃ 22)

যদি তুমি তোমার মত একজন মরণশীলকে ক্ষমা না কর তাহলে তুমি কীভাবে সর্ববাধ্যকারী বাদশাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা আশা কর ?

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে , তার রব তাকে আদেশ করেছেন এ গুণগুলো ধারণ করতে এই বলেঃ‘‘ তার সাথে একতাবদ্ধ হও যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং তাকে ক্ষমা করো যে তোমার প্রতি অন্যায় করে ; তাকে দান কর যে তোমাকে বঞ্চিত করে এবং তার প্রতি ভালো ব্যবহার করো যে তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে।’’ তিনি আমাদেরকে আদেশ করেছেন তাকে অনুসরণ করার জন্য। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) و َمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا(

‘‘ রাসূল তোমাদের যা দেয় , তা গ্রহণ করো এবং যা তিনি তোমাদের নিষেধ করেন তা থেকে সরে থাকো।’’ (সূরা হাশরঃ 7)

ক্ষমা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার একটি গোপন রহস্য যা তাঁর বাছাইকৃত ব্যক্তিদের অন্তরে আছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ তোমাদের মধ্যে কেউ কি আবু দামদাম-এর মত ক্ষমতা রাখো ?’’ - তারা বললোঃ‘‘ হে আল্লাহর রাসূল- আবু দামদাম কে ?’’ রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেনঃ‘‘ তোমাদের একজন পূর্বপুরুষ যে সকালে ঘুম থেকে জেগে বলতোঃ হে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা , সাধারণ জনগণ কর্তৃক আমার সম্মানহানি করাকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি।’’

সতর্ক করা

সর্তক করার সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো যখন কথা সত্যের সীমানা অতিক্রম না করে এবং কাজসমূহ আন্তরিকতার সীমানা অতিক্রম না করে। সতর্ককারী ও যাকে সতর্ক করা হচ্ছে তারা একজন জাগ্রত ও অন্যজন ঘুমন্ত ব্যক্তির মত। যে ব্যক্তি তার কথা অগ্রাহ্য করা , বিরোধিতা ও বিদ্রোহের ঘুম থেকে জেগে উঠে অন্যদের সেই ঘুম থেকে জাগায় সে ভালো কাজ করে।

যে ব্যক্তি সীমালংঘনের মরুভূমিতে ভ্রমণ করে এবং নিজেকে নিমজ্জিত করে বিভ্রান্তির বন্যতায় , তার মার্জিত স্বভাব ত্যাগ করে সুনাম , লোক দেখানো ও বিখ্যাত হওয়ার ভালোবাসায় , যারা সৎকর্মশীলতার পোষাক পরেছে তাদের সময় নষ্ট করে এবং তার বাইরের চেহারা প্রকৃত অবস্থাকে লুকিয়ে রেখেছে- যা তার ভেতরে আছে। বাস্তবে সে ভেতরে শূন্য এবং তার ভেতরের দেউলিয়াত্ব ডুবে গেছে প্রশংসার ভালোবাসায় এবং ঢেকে গেছে লোভের অন্ধকারে । কতই না প্রতারিত সে তার কামনা বাসনার মাধ্যমে। কীভাবেই না সে জনগণকে পথভ্রষ্ট করে তার কথায়! আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) ل َبِئْسَ الْمَوْلَىٰ وَلَبِئْسَ الْعَشِيرُ(

‘‘ নিশ্চয়ই খুব খারাপ এই অভিভাবক এবং নিশ্চয়ই খুব খারাপ এই সাথী।’’ (22:13)

কিন্তু যাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা রক্ষা করেছেন তাওহীদের আলো , সমর্থন এবং সুন্দর সফলতা দিয়ে , তার অন্তরকে অপবিত্রতা থেকে পরিষ্কার করা হয়েছে। সে নিজেকে ইরফান (আধ্যাত্মিক জ্ঞান) থেকে এবং সতর্কতা অবলম্বন থেকে বিচ্ছিন্ন করে না ; সে পথভ্রষ্ট লোকের কথাগুলো শোনে অথচ বক্তাকে উপেক্ষা করে সে যেই হোক। প্রজ্ঞাবানরা বলেছেনঃ প্রজ্ঞা গ্রহণ করো যদি তা কোন পাগলের মুখ থেকেও আসে। ঈসার (আ.) কথা অনুযায়ীঃ‘‘ তার সাথে বসো যে তোমাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় যখন তুমি তাকে দেখতে পাও ও তার সাক্ষাতে যাও , সে যখন কথা বলে তখন তা সংরক্ষণ কর। সে ব্যক্তির সাথে বসো না যাকে তোমার বাইরের সত্তা গ্রহণ করে কিন্তু ভিতরের সত্তা তাকে প্রত্যাখ্যান করে। সে ঐ ব্যক্তি যে তার দাবী করে যা তার ভেতরে নেই ; যদি তুমি আন্তরিক হও তাহলে তারা তোমার দিকে ঝুঁকবে। যখন তুমি কাউকে এ তিনটি গুণসম্পন্ন দেখবে , তাহলে তাকে দেখার ও তার সাথে সাক্ষাত করার সুযোগ গ্রহণ করো এবং তাদের সাথে বসো , যদি তা শুধু এক ঘন্টার জন্যও হয়। এর একটি প্রভাব পড়বে তোমার বিশ্বাস , তোমার অন্তর এবং তোমার ইবাদাতের উপর তার বরকতে।

যদি কোন ব্যক্তির কথা তার কাজকর্মকে অতিক্রম করে না , যার কাজকর্ম তার সত্যবাদিতাকে অতিক্রম করে না এবং যার সত্যবাদিতা তার রবের সাথে তর্ক করে না , তাহলে তার সাথে শ্রদ্ধার সাথে বসো এবং রহমত ও বরকতের জন্য অপেক্ষা করো। তোমার বিরুদ্ধে প্রমাণের বিষয়ে সাবধান হও এবং তোমার সাথে তার সময়কে প্রীতিকর কর , যাতে তুমি তাকে তিরস্কার না কর এবং ক্ষতিগ্রস্থ না হও। তার প্রতি তাকাও তার উপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নেয়ামত ও তাকে তাঁর নির্বাচন করা এবং তাকে তাঁর মর্যাদা দেয়ার দৃষ্টি দিয়ে।

পরামর্শ

সবচেয়ে ভালো পরামর্শ ও সবচেয়ে যা জরুরী তাহলো তুমি যেন তোমার রবকে ভুলে না যাও এবং যেন তুমি তাঁকে সবসময় স্মরণ রাখো এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না কর এবং যেন তুমি তাঁর ইবাদাত কর-হোক দাঁড়িয়ে অথবা বসে। তাঁর নেয়ামত দেখে অন্ধ হয়ে যেও না এবং তার প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকো। তাঁর করুণা , বিশালতা ও নিরাপদ ছাতার নীচ থেকে বেরিয়ে যেও না- এতে হয়তো তুমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে এবং ধ্বংসের মাঝে পড়ে যাবে , যদি এমনও হয় যে দুঃখ-কষ্ট ও দুর্দশা তোমাকে স্পর্শ করেছে এবং পরীক্ষার আগুন তোমাকে পুড়ছে। জেনে রাখো , যে দুঃখ-দুর্দশা তিনি পাঠান তা তাঁর চিরস্থায়ী সম্মানের পদক দিয়ে পূর্ণ এবং যে পরীক্ষায় তিনি ফেলেন তা তাঁর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য আনে। এমনও যদি হয় তা কিছু সময় পরে আসে। কী নেয়ামতই না আছে সে ব্যক্তির জন্য যার জ্ঞান আছে এবং যাকে সেখানে সফলতা দান করা হয়েছে।

বর্ণিত আছে যে কেউ একজন রাসূলুল্লাহর (সা.) পরামর্শ চাইলো , তিনি বললেনঃ‘‘ কখনো রাগ হয়ো না , কারণ রাগের ভেতর আছে তোমার রবের বিরোধিতা। ওযর দেখানোতে সাবধান থাকো , কারণ এর ভেতর আছে লুকানো শিরক। নামায পড়ো তার মত যে চিরবিদায় নিচ্ছে , কারণ এর ভেতর আছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে যোগাযোগ এবং তাঁর নৈকট্য। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সামনে বিনম্র হও যেভাবে তুমি তোমার সৎকর্মশীল প্রতিবেশীদের সামনে বিনম্র হও , কারণ এর ভেতর আছে ইয়াক্বীন-এ বৃদ্ধি ।’’

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের [নবী পরিবার (আ.)] দূরবর্তী ও নিকটবর্তী সব পূর্বপুরুষদের উপদেশগুলোকে একক বৈশিষ্ট্যে একত্র করেছেন।

সতর্কতা (তাক্বওয়া)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ভাষায়ঃ

) و َلَقَدْ وَصَّيْنَا الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَإِيَّاكُمْ أَنِ اتَّقُوا اللَّـهَ(

‘‘ নিশ্চয়ই আমরা তাদের আদেশ দিয়েছি যাদেরকে তোমাদের আগে কিতাব দেয়া হয়েছিলো এবং তোমাদেরও যে , তোমাদের উচিত আল্লাহর প্রতি (তোমাদের দায়িত্বে) সতর্ক হওয়া ।’’ (সূরা নিসাঃ 131)

প্রত্যেক নির্ভুল ইবাদাতের সারাংশ হচ্ছে এটি : তাক্বওয়ার মাধ্যমেই মানুষ উচ্চ স্থান ও সর্বোচ্চ মর্যাদা লাভ করে। তাক্বওয়ার মাধ্যমেই মানুষ একটি ভালো জীবন যাপন করে যেখানে আছে সার্বক্ষণিক সাহচর্য।

) إ ِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَنَهَرٍ ﴿٥٤﴾ فِي مَقْعَدِ صِدْقٍ عِندَ مَلِيكٍ مُّقْتَدِرٍ(

‘‘ নিশ্চয়ই যারা পাহারা দেয় (অন্যায়ের বিরুদ্ধে) তারা থাকবে বাগানগুলোতে এবং নদীগুলোতে- সম্মানের আসনে সবচেয়ে শক্তিশালী বাদশাহর সাথে।’’ (সূরা কামারঃ 54-55)

পূর্ণ আস্থা রাখা (তাওয়াক্কুল)

তাওয়াক্কুল একটি পেয়ালা যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে মুখ সীল করা অবস্থায় আছেঃ কেউ এ থেকে পান করতে পারবে না এবং এর সীল ভাঙ্গতে পারবে না আস্থাশীলরা ছাড়া। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) و َعَلَى اللَّـهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُتَوَكِّلُونَ(

‘‘ আল্লাহর উপরেই শুধু আস্থাশীলরা নির্ভর করুক।’’ (সূরা ইবরাহীমঃ 12)

) و َعَلَى اللَّهِ فَتَوَكَّلُوا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ(

‘‘ আল্লাহর উপরেই তোমাদের নির্ভর করা উচিত যদি তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাকো।’’ (সূরা মায়িদাঃ 23)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাওয়াক্কুলকে বিশ্বাসের চাবি বানিয়েছেন এবং বিশ্বাসকে তাওয়াক্কুলের তালা বানিয়েছেন। তাওয়াক্কুলের বাস্তবতা (হাক্বীক্বাত) হলো নিজের উপরে অন্যদের অগ্রাধিকার দেয়া। অন্যদের অগ্রাধিকার দেয়ার মূল হচ্ছে অন্য ব্যক্তির দাবীকে এগিয়ে দেয়া। যে আস্থা রাখে সে তার আস্থাতে দু টো অগ্রাধিকারের একটিকে ক্রমাগতভাবে সত্যায়ন করে যায়। যদি সে সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেয় তাহলে এটি হয়ে যায় একটি পর্দা যাতে সে ঢেকে যায়। যদি সে আস্থার কারণের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে অগ্রাধিকার দেয় তাহলে সে তাঁর সাথে থাকে। যদি তুমি তাওয়াক্কুলের মানুষ হতে চাও এবং সৃষ্টির মানুষ হতে না চাও তাহলে তোমার রুহের উপর পাঁচ বার তাকবীর বলো এবং তোমার সব আশাকে বিদায় জানাও যেভাবে মৃত্যু বিদায় জানায় জীবনকে।

সবচেয়ে নিচের স্তরের তাওয়াক্কুল হলো তোমার অগ্রযাত্রার সামনে তোমার সর্বোচ্চ আশাকে স্থান দেয়া , এ ছাড়া আর কিছু নয়। তোমার না উচিত তোমার অংশ চাওয়া , না দেখার চেষ্টা করা তোমার কীসের অভাব আছে , কারণ এ দু টোর যে কোন একটি তোমার ঈমানের বন্ধনকে ছিঁড়ে ফেলবে আর তুমি তা বুঝতেও পারবে না। যদি তুমি সত্যিকারভাবেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকো যে তাওয়াক্কুলকারীদের একটি পদক নিয়ে বেঁচে থাকবে এ দু টো অগ্রাধিকারের যে কোন একটি বিষয়ে তাঁর উপর তাওয়াক্কুল করার মাধ্যমে তাহলে এ ঘটনাটি দৃঢ়ভাবে ধরে রাখো। বর্ণিত আছে তাওয়াক্কুল সম্পন্ন এক ব্যক্তি ইমামদের (আ.) একজনের কাছে এলো এবং তাকে বললোঃ‘‘ তাওয়াক্কুলের বিষয়ে একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আমার প্রতি দয়া করুন ।’’

ইমাম জানতেন যে ঐ ব্যক্তির ছিলো প্রশংসনীয় তাওয়াক্কুল ও অসাধারণ (তাক্বওয়া) সতর্কতা এবং তিনি ঐ ব্যক্তি প্রশ্ন করার আগেই দেখতে পেয়েছিলেন যে , সে যে প্রশ্ন করছিলো তার বিষয়ে সে আন্তরিক। তিনি বললেন ,‘‘ তুমি যেখানে আছো সেখানেই থাকো এবং আমার সাথে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো।’’ যখন তিনি তার উত্তর সাজাচ্ছিলেন একজন দরিদ্র লোক পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। ইমাম তার পকেটে হাত দিলেন এবং কিছু বের করলেন এবং দরিদ্র লোকটিকে তা দিলেন। এরপর তিনি প্রশ্নকারীর দিকে ফিরে বললেনঃ‘‘ আসো এবং জিজ্ঞেস করো সে সম্পর্কে যা তুমি দেখেছো।’’ লোকটি বললোঃ হে ইমাম , আমি জানি যে আপনি আমাকে প্রশ্নটির উত্তর দিতে পারতেন আমাকে অপেক্ষা করানোর আগেই। তাহলে কেন আপনি দেরী করলেন ? এবার ইমাম বললেনঃ‘‘ বিশ্বাস হচ্ছে আমি বলার আগেই অর্থের উপর চিন্তা করা। কারণ কীভাবে আমি আমার গভীরতম সত্তার বিষয়ে অবহেলা করতে পারি যখন আমার রব তা দেখতে পান ? আমি কীভাবে তাওয়াক্কুলের বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করতে পারি যখন আমার পকেটে একটি মুদ্রা রয়েছে ? আমার জন্য অনুমতি নেই যে তাওয়াক্কুলের বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করবো যতক্ষণ না আমি তাকে তা (মুদ্রাটি) না দিয়েছি। অতএব বুঝে নাও! প্রশ্নকারী গভীর নিশ্বাস ফেললো এবং শপথ করলো যে যতদিন সে বেঁচে আছে সে কোন বাড়িতে আশ্রয় খুঁজবে না , না মরণশীল কারো উপর নির্ভর করবে ।

পরিচ্ছেদ-21

ভাইদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন

বিশ্বাসে যারা ভাই তারা করমর্দন করে তাদের প্রতি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ভালোবাসার কারণে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ যখনই ভাইরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পথে করমর্দন করে তাদের ভুল কাজগুলো দূর হয়ে যায় এবং এতে তারা সেদিনের মত হয়ে যায় যে দিন তাদের মা তাদেরকে জন্ম দিয়েছিলো।’’ যখন দুই ভাইয়ের পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি পায় তখন তাদের জন্যও তার বৃদ্ধি ঘটে। দুজনের মধ্যে যার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ধর্ম সম্পর্কে বেশী জ্ঞান আছে তার জন্য বাধ্যতামূলক যে সে তার বন্ধুকে উৎসাহিত করবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে বাধ্যতামূলক কাজগুলোকে প্রয়োজনীয় করেছেন তা সম্পাদন করতে এবং তাকে পথ দেখাবে সোজা পথে যাওয়ার জন্য , সস্তুষ্টি ও মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে , তাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার রহমতের সুসংবাদ দিবে এবং তাঁর শাস্তির ভয় দেখাবে। অন্য ভাইটি তার পথ দেখানোর রহমতকে চাইবে এবং তা সে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখবে যার দিকে সে ডাকছে , তার সতর্কবাণী মনে রাখবে এবং তার মাধ্যমে পথ দেখবে এবং এই পুরো সময়ে সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে নিরাপত্তা চাইবে এবং তাঁর সাহায্য ও সফলতা চাইবে।

ঈসা (আ.)-কে একবার জিজ্ঞেস করা হলোঃ‘‘ আজ সকালে আপনি কেমন আছেন ?’’ তিনি বললেনঃ আমি যা আশা করি তার কল্যাণ আমার আয়ত্তে নেই , না আমি প্রতিরোধ করতে পারি তাকে যার বিরুদ্ধে আমি সতর্ক পাহারায় আছি। একই সময়ে আমাকে আদেশ করা হয়েছে অনুগত হয়ে চলতে এবং নিষেধ করা হয়েছে বিদ্রোহ করতে। আমি মনে করি না আমার চাইতে বেশী ফক্বির কোন ফক্বির আছে। উয়ায়েস আল-ক্বারানিকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো , সে বলেছিলোঃ‘‘ ঐ লোক সকালে কেমন থাকবে যখন সে জানে না সে সন্ধ্যায় বেঁচে থাকবে কিনা এবং সন্ধ্যায় সে জানে না সকাল পর্যন্ত সে বেঁচে থাকবে কিনা ?’’

আবু যার বলেছিলোঃ‘‘ সকালে আমি ধন্যবাদ দেই আমার রবকে এবং ধন্যবাদ দেই আমাকে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ যে সকালে ঘুম থেকে ওঠে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে ছাড়া অন্য কিছুর আশা করে সে ক্ষতিগ্রস্থ ও সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

সংগ্রাম ও শৃঙ্খলা

প্রশান্তি সেই বান্দাহর অধিকারে যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার জন্য সংগ্রাম করে তার নিজের প্রকৃতি ও কামনা-বাসনার বিরুদ্ধে : যে তার কামনা-বাসনাকে পরাজিত করে সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টি জিতে নেয় এবং আল্লাহর দাসত্বে যার বুদ্ধি তার নিজের সত্তাকে পিছনে ফেলে দেয় চেষ্টা , সংগ্রাম , আত্মসমর্পণ এবং বিনয়ের মাধ্যমে সে এক বিরাট বিজয় অর্জন করেছে। বান্দাহ ও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার মাঝে নফস ও কামনা-বাসনার চেয়ে বেশী অন্ধকার অথবা এর চেয়ে বেশী নির্জন কোন পর্দা নেই। এগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ও তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পূর্ণ প্রয়োজন অনুভব করা , ভয় , ক্ষুধা , দিনের বেলা পিপাসা এবং রাতের বেলায় জেগে থাকার চাইতে ভালো আর কোন অস্ত্র নেই।

যখন এ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন কোন ব্যক্তি মারা যায় সে মৃত্যুবরণ করে শহীদের মর্যাদা নিয়ে। যদি সে সোজা পথ অনুযায়ী চলে তাহলে তার শেষ তাকে নিয়ে যাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সর্বোচ্চ সন্তুষ্টির কাছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) و َالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّـهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ(

‘‘ আর যারা আমাদের জন্য কঠিন সংগ্রাম করে , আমরা অতি অবশ্যই তাদেরকে পথ দেখাবো আমাদের পথে এবং অতি অবশ্যই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সাথে আছেন।’’ (সূরা আনকাবুতঃ 69)

যখন তুমি দেখ অন্য কেউ তোমার চেয়ে বেশী চেষ্টা করছে তখন নিজেকে তিরস্কার করো ও বকা দাও নিজেকে উৎসাহিত করার জন্য-আরো বেশী চেষ্টা করতে।

আদেশ ও নিষেধের লাগাম পরাও নিজের সত্তাকে এবং এমনভাবে কাজ চালিয়ে যাও যেন তুমি একজন প্রশিক্ষক যে তার ঘোড়াকে একটি পদক্ষেপও নিতে দেয় না যদি তা পুরোপুরি সঠিক না হয়।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এত লম্বা সময় ধরে নামায পড়তেন যে তার পা দু টো ফুলে যেতো। তিনি বলতেনঃ আমি কীভাবে একজন কৃতজ্ঞ বান্দাহ না হই ? রাসূলুল্লাহ (সা.) চেয়েছিলেন যেন তার সম্প্রদায় তা বিবেচনা করে। যাতে তারা সংগ্রাম , পরিশ্রম ও শৃঙ্খলাকে কোন অবস্থাতেই উপেক্ষা না করে। যদি তোমার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ইবাদাতের মিষ্টি স্বাদ পাওয়ার অভিজ্ঞতা হতো , বরকত দেখতে পেতে এবং এর আলোতে আলোকিত হতে তাহলে তুমি এর অনুপস্থিতিতে এক ঘন্টার জন্যও ধৈর্য ধরতে না , এমনকি তোমাকে কেটে টুকরো করে ফেললেও না। কেউ এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় না যদি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছ থেকে এরকম নিরাপত্তা ও সফলতা থেকে কাউকে প্রত্যাখ্যান করা না হয় যা অর্জন করেছিলো তার পূর্বপুরুষেরা ।

রাবি ইবনে কুসাইমকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো কেন সে রাতে ঘুমাতো না। সে উত্তর দিয়েছিলোঃ‘‘ কারণ আমি ভয় পাই যে রাতটি হয়তো আমি ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিবো।’’

মৃত্যু নিয়ে ভাবা

মৃত্যুকে নিয়ে ভাবলে তা আশা আকাঙ্ক্ষাকে হত্যা করে , কথা গ্রাহ্য না করার শিকড়কে কেটে ফেলে এবং অন্তর শক্তিশালী হয় আখেরাতের জীবন সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতিশ্রুতিতে।

এটি প্রকৃতিকে পরিশুদ্ধ করে এবং কামনা-বাসনার চিহ্নগুলো ভেঙ্গে ফেলে , লোভের আগুনকে নিভিয়ে ফেলে এবং পৃথিবীকে ঘৃণ্য বানিয়ে দেয় ; এটিই হলো রাসূলুল্লাহর (সা.) কথার অর্থঃ‘‘ এক ঘন্টার জন্য ভাবা এক বছরের ইবাদাতের চেয়ে উত্তম।’’ ঐ এক ঘন্টার ভাবনা হলো সেই মুহূর্ত যখন তুমি এ পৃথিবীর সাথে তোমাকে বেঁধে রাখা রশিগুলো খুলে ফেলবে এবং সেগুলোকে আখেরাতের সাথে বেঁধে নিবে। যখন মৃত্যুকে এভাবে স্মরণ করা হয় , আকাশ থেকে রহমত বর্ষণ কখনোও বন্ধ হয় না। যদি কোন ব্যক্তি মৃত্যুর বিষয় এবং এ থেকে তার নিজের পালানোর উপায়ের অভাবের বিষয় , তার বিরাট অক্ষমতার বিষয় , কবরে কত লম্বা সময় ধরে সে থাকবে এবং কেয়ামতের সময় তার কিংকর্তব্যবিমূঢ়তার বিষয় না ভাবে তাহলে তার ভেতরে ভালো কিছু নেই।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ আনন্দ ফুর্তির ধ্বংসকারীকে স্মরণ রেখো।’’ যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো সেটি কী , তিনি বললেনঃ‘‘ মৃত্যু। যখনই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কোন বান্দাহ তা করে যখন সে ধনী তখন এ পৃথিবী তার জন্য সংকীর্ণ হয়ে যায়। যখন সে একে স্মরণ করে কষ্টের সময় তখন তা তার জন্য প্রশস্ত হয়ে যায়।’’ মৃত্যু হলো পরবর্তী পৃথিবীর প্রথম ষ্টেশন এবং এ পৃথিবীর শেষ ষ্টেশন। রহমতপ্রাপ্ত সে যে নিজের প্রতি উদারতা দেখায় এবং উপকার লাভ করে শুরুতে এবং রহমতপ্রাপ্ত সে যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে শেষে।

আদম সন্তানের সবচেয়ে নিকট সাথী হলো মৃত্যু। যদিও সে স্বপ্ন দেখে যে তা সবচেয়ে দূরে । মানুষ নিজেকে কতই না আঘাত করে। এর চেয়ে দূর্বল আর কোন প্রাণী আছে ? মৃত্যুতেই নিহিত আছে মুখলেস (আন্তরিক) লোকদের উদ্ধার এবং অন্যায়কারীদের ধ্বংস।

এজন্যই কিছু মানুষ মৃত্যুকে চায় যখন অন্যরা একে ঘৃণা করে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে সাক্ষাত করে তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তার সাথে সাক্ষাত করতে ভালোবাসেন এবং যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে সাক্ষাত করাকে ঘৃণা করে তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তার সাথে সাক্ষাত করাকে ঘৃণা করেন।’’

ভালো ধারণা

ভালো ধারণার শিকড় হলো ব্যক্তির বিশ্বাস ও তার অন্তরের সুস্থতা ; ভালো ধারণার চিহ্ন হলো যখনই সে তাকায় সে পবিত্রতা ও ধার্মিকতার দৃষ্টি দিয়ে দেখে যেখানেই সে যায় এবং মধ্যপন্থা , বিশ্বস্ততা , নিরাপত্তা ও সত্যবাদিতা তার অন্তরে স্থাপন করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ তোমার ভাইদের সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখো। এর মাধ্যমে তুমি অন্তরের পবিত্রতা ও প্রকৃতিতে দৃঢ়তা লাভ করবে।’’ উবাই ইবনে কা ব বলেছিলোঃ যখন তুমি তোমার ভাইদের ভেতর কোন গুণকে পছন্দ না কর তাহলে এর সত্তরটি ব্যাখ্যা দাও এবং দেখো যে এর কোন একটির সাথে তোমার অন্তর শান্তি পায় কিনা। যদি তা না হয় তাহলে নিজেকে দোষারোপ করো যদি তাকে মার্জনা করতে না পারো। যদি তোমার কোন গুণ থাকে যার সত্তরটি ব্যাখ্যা আছে তাহলে তোমার উচিত তাকে অপছন্দ করার চাইতে তোমার নিজেকে আরও বেশী অপছন্দ করা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা দাউদ (আ.)-কে বলেছিলেনঃ আমার বান্দাহদের স্মরণ করিয়ে দাও আমার রহমত ও নেয়ামতগুলো সম্পর্কে। তারা শুধু বিশেষ ভালো জিনিসগুলোই আমার কাছ থেকে দেখতে পেয়েছে তাই তাদের উচিত শুধু তাই আশা করা যে , যা বাকী রয়ে গেছে তা ইতোমধ্যেই তারা যা পেয়েছে তারই মত হবে।’’ ভালো ধারণা ভালো ইবাদাত এনে দেয়। যে ব্যক্তি ধোঁকায় পড়েছে সে বিদ্রোহের ভিতর পড়ে থাকে যদিও সে ক্ষমার আশা করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সৃষ্টির প্রতি ভালো ধারণা রাখা তাদের জন্য বিশেষভাবে রাখা হয়েছে যারা তাঁকে মানে , তাঁর পুরস্কার আশা করে এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় পায়।

রাসূলুল্লাহ (সা.) তার রবের কাছ থেকে বর্ণনা করেছেনঃ‘‘ আমি আছি আমার বান্দাহদের ভালো ধারণার সাথে , হে মুহাম্মাদ , যে তার রবের সম্পর্কে ভালো ধারণার নেয়ামতগুলোর বাস্তবতা মেনে চলতে ব্যর্থ হয় সে তার নিজের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোরদার করেছে এবং সে তাদের একজন যারা তাদের কামনা-বাসনার শিকলে প্রতারিত হয়েছে।’’