পথ চলার বাতি

পথ চলার বাতি0%

পথ চলার বাতি লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: চরিত্র গঠনমূলক বই

পথ চলার বাতি

লেখক: আবু আবদিল্লাহ ইমাম জাফর ইবনে মুহাম্মদ আস-সাদিক্ব (আ.)
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 11081
ডাউনলোড: 2902

পাঠকের মতামত:

পথ চলার বাতি
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 61 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 11081 / ডাউনলোড: 2902
সাইজ সাইজ সাইজ
পথ চলার বাতি

পথ চলার বাতি

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

পরিচ্ছেদ-11

নামাজের দরজা খোলা

যখন তুমি ক্বিবলামুখী হও তোমার উচিত এ পৃথিবী থেকে , এর ভেতরে যেসব সৃষ্টি আছে এবং অন্যরা যা নিয়ে ব্যস্ত আছে তা থেকে নিরাশ হয়ে যাওয়া। তোমার অন্তর থেকে সব চিন্তা ভাবনা দূর করে দাও যা তোমাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি অমনোযোগী করে তুলতে পারে। আল্লাহর বিশালত্বকে দেখো তোমার গভীরতম সত্তা দিয়ে এবং স্মরণ রাখো যে তুমি তাঁর সামনে দাঁড়াবে। কারণ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) ه ُنَالِكَ تَبْلُو كُلُّ نَفْسٍ مَّا أَسْلَفَتْ وَرُدُّوا إِلَى اللَّـهِ مَوْلَاهُمُ الْحَقِّ(

‘‘ সেখানে প্রত্যেক সত্তা পরিচিত হবে তার সাথে যা সে আগে পাঠিয়েছে এবং তাদেরকে আল্লাহর কাছে ফেরত আনা হবে যিনি তাদের প্রকৃত পৃষ্ঠপোষক।’’ (সূরা ইউনুসঃ 30)

ভয় ও আশার গোড়াতে দাঁড়াও। যখন তুমি তাকবীর বল তোমার উচিত উচ্চ আকাশগুলো ও ভেজা পৃথিবীর মাঝে যা আছে তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করা , যার সবই তাঁর মর্যাদার নীচে। কারণ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁর বান্দাহর অন্তরের দিকে তাকান যখন সে তাকবীর বলছে এবং দেখেন যে তার অন্তরে কিছু একটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণার সত্যতাকে বাধা দিচ্ছে তখন তিনি বলেন ,‘‘ হে মিথ্যাবাদী! তুমি কি আমাকে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করছো ? আমার শক্তি ও মর্যাদার শপথ , আমি তোমাকে আমার স্মরণের মিষ্টতা থেকে বঞ্চিত করবো এবং আমি আমার নৈকট্য থেকে এবং আমার সাথে ঘনিষ্ট মিলনের আনন্দ থেকে তোমাকে পর্দার মাধ্যমে দূরে সরিয়ে রাখবো।’’

জেনে রাখো যে , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে তোমার খেদমতের কোন প্রয়োজন নেই। তুমি , তোমার ইবাদাত ও তোমার প্রার্থনার তিনি মুখাপেক্ষী নন । তিনি তোমাকে ডাকেন তাঁর নেয়ামত দিয়ে তোমার প্রতি রহমত করার জন্য , তোমাকে তাঁর শাস্তি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য , তোমাকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করার জন্য এবং তোমার জন্য তাঁর ক্ষমার দরজা খুলে দেয়ার জন্য। যদি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বিশ্বজগতে যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা বহুবার সৃষ্টি করতেন , চিরকালব্যাপী , কোন শেষ ছাড়া , আর যদি তারা তাকে সবাই প্রথ্যাখ্যান করতো অথবা তাঁর সাথে ঐক্যবদ্ধ হতো তবুও আল্লাহর জন্য তা একই হতো । প্রাণীকূলের ইবাদাত থেকে তাঁর কাছে যা আছে তা হলো তাঁর উদারতা এবং শক্তির প্রদর্শনী। অতএব নম্রতাকে বানাও তোমার পোষাক এবং অক্ষমতাকে বানাও তোমার গায়ের চাদর। প্রবেশ করো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ক্ষমতার আরশের নীচে , তাহলে তুমি তাঁর প্রভুত্বের কল্যাণ লাভ করতে পারবে তাঁর কাছে সাহায্য ও তাঁর কাছে আশ্রয় চেয়ে।

নামাজে রুকু

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার বান্দাহ যখন সত্যিকারভাবে মাথা ঝোঁকায় (রুকু করে) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে তাঁর ঔজ্জ্বল্যের আলো দিয়ে তাকে সাজান , তাকে ছায়া দেন তার মহত্ত্বের ছায়াতলে এবং তাকে পোষাক পরান তাঁর পবিত্রতার পোষাক দিয়ে। রুকু হলো প্রথম এবং সিজদা দ্বিতীয়। রুকুতে আছে সৌজন্য এবং সিজদাতে আছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নৈকট্য। যে সৌজন্যে ভালো নয় সে নৈকট্যের যোগ্য নয় ; অতএব রুকু র মাধ্যমে মাথা ঝোঁকাও তার মত যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি বিনীত , অন্তরে মর্যাদাশূন্য এবং তাঁর ক্ষমতার অধীনে ভীত , অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো আল্লাহর প্রতি সমর্পিত তার মত যে ভীত ও দুঃখিত এজন্য যে সে হয়তো যারা রুকু করে তাদের মত কল্যাণ পেতে ব্যর্থ হবে ।

বর্ণিত আছে রাবি ইবনে কুসাইম এক রুকুতে সারা রাত জাগতো সকাল পর্যন্ত। সকালে সে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলতোঃ‘‘ হায় , মুখলেস ব্যক্তিরা সামনে চলে গেছে এবং আমরা বাদ পড়ে গেছি।’’ তোমার রুকু শুদ্ধ করো পিঠ সোজা রেখে , দাঁড়ানো অবস্থায় তোমার উচ্চাশা থেকে তাঁর দাসত্ব করার জন্য নীচে নেমে এসে যা শুধু তাঁর সাহায্যের মাধ্যমেই ঘটে। তোমার অন্তর পালিয়ে আসুক শয়তানের কুমন্ত্রণা , ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁর বান্দাহদেরকে উঁচুতে উঠাবেন তাঁর প্রতি তাদের বিনয় অনুযায়ী এবং তাদেরকে পরিচালিত করবেন বিনয় , আত্মসমর্পণ ও মর্যাদাশূন্যতার শিকড়ের দিকে তাঁর বিশালত্বের সাথে তাদের গভীরতম সত্তার পরিচিতির গভীরতা অনুযায়ী।

নামাজে সিজদা

যে ব্যক্তি সত্যিকার সিজদা করে সে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে কোনভাবেই হারায় না , এমনও যদি হয় যে সে তা একবার করেছে তার সারা জীবনে ; কিন্তু যে ব্যক্তি তার রবকে ঐ অবস্থায় (সিজদায়) ছেড়ে যায় সে সমৃদ্ধি লাভ করে না। সে তার মত যে নিজেকে ধোঁকা দেয় , এবং এ জীবনের পরে যে আনন্দ ও আরাম তা অবহেলা করে ও ভুলে যায় যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন যারা সিজদা করে।

যে ব্যক্তি তার সিজদায় ভালো করে সে কখনোই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছ থেকে দূরে নয় ; আর যে ব্যক্তি অসৌজন্য দেখায় এবং তাঁকে সম্মান করাতে অবহেলা করে যেহেতু তার অন্তর সিজদা অবস্থায় আল্লাহ ছাড়া অন্যকিছুর সাথে যুক্ত তাই সে কখনোই তাঁর নিকটবর্তী হবে না। অতএব সিজদা করো তার সিজদার মত যে নিজেকে মর্যাদাশূন্য দেখে এবং জানে যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে মাটি থেকে যার উপরে লোকেরা হাঁটা-চলা করে এবং তাকে যে বীর্য থেকে তৈরী করা হয়েছে তা সবার কাছে অপবিত্র এবং তাকে জীবিত সত্তা বানানো হয়েছে যখন তার কোন অস্তিত্ব ছিলো না।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সিজদাকে করেছেন ব্যক্তির অন্তরে , গভীরতম সত্তায় ও রুহের ভিতরে তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার ক্ষণ। যে তাঁর নিকটবর্তী হয় সে তিনি ছাড়া আর সবকিছু থেকে দূরে। তুমি কি দেখো না যে সিজদা বাইরের দিকে সম্পূর্ণ হয় না যতক্ষণ না সব জিনিস থেকে চলে যাওয়া হয় এবং চোখ যা দেখে তার উপর পর্দা পড়ে যায় ? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা চান ভেতরের সত্তাও সেরকম হোক। যদি নামাজের ভেতর কারো অন্তর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছাড়া অন্য কোন কিছুর সাথে যুক্ত থাকে সে সেই জিনিসেরই নিকটবর্তী হয়ে আছে এবং সে তার নামাজে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যা চান তার বাস্তবতা থেকে বহু দূরে। কারণ তিনি বলেছেনঃ

) م َّا جَعَلَ اللَّـهُ لِرَجُلٍ مِّن قَلْبَيْنِ فِي جَوْفِهِ(

‘‘ আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার বুকের ভেতরে দু টো অন্তর দেন নি।’’ (সূরা আহযাবঃ 4)

রাসূলুল্লাহ (সা.)-র ভাষায়ঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ‘‘ যখন আমি কোন বান্দাহর অন্তরের উপর তাকাই , আমি জানি সত্যিই আমার জন্য তার আন্তরিক ভালোবাসা ও আনুগত্য আছে কিনা এবং আমার সন্তুষ্টি খোঁজ করে কিনা। এরপর আমি তার দায়িত্ব নেই এবং তাঁর নিকটবর্তী হই। যে তার নামাজে আমাকে ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকে সে তাদের একজন যে নিজেকে নিয়ে মশকরা করে এবং তার নাম ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকাতে লেখা হয়।’’

তাশাহুদ

তাশাহুদ হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রশংসা। তোমার গভীরতম সত্তায় তাঁর দাস হয়ে যাও তোমার কাজকর্মে তাঁর প্রতি ভীত ও বিনয়ী হয়ে যেহেতু তুমি কথায় ও দাবীতে তাঁর দাস। তোমার জিহবার সত্যবাদীতাকে যুক্ত করো তোমার গভীরতম সত্তার বিশুদ্ধ সত্যবাদিতার সাথে।

তিনি তোমাকে দাস হিসাবে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাকে আদেশ করেছেন তাঁর ইবাদাত করতে তোমার অন্তর , তোমার জিহবা ও তোমার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে। তাঁর প্রতি তোমার দাসত্বকে বাস্তবে অনুভব করো তোমার উপরে তাঁর প্রভুত্বের মাধ্যমে। জেনে রাখো প্রাণীকূলের কপালের চুল তাঁর হাতে। প্রাণীকূল শ্বাসপ্রশ্বাস ও দৃষ্টি ক্ষমতার অধিকারী হয় না তাঁর শক্তি ও ইচ্ছা ছাড়া। তারা তাঁর রাজ্যে সামান্য জিনিসও জন্ম দিতে অক্ষম যদি না তা হয় তাঁর অনুমতি ও ইচ্ছা অনুযায়ী। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) و َرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ وَيَخْتَارُ مَا كَانَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ سُبْحَانَ اللَّـهِ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ(

‘‘ তোমার রব সৃষ্টি করেন এবং যাকে তাঁর ইচ্ছা বাছাই করেন ; বাছাই করাতে তাদের কোন অধিকার নেই , ত্রুটির উর্ধ্বে আল্লাহ এবং তিনি তারও উপরে যা তারা (তাঁর সাথে) যুক্ত করে।’’ (সূরা কাসাসঃ 68)

অতএব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার দাস হও , তাকে স্মরণ করে কথা ও ঘোষণার মাধ্যমে এবং তোমার জিহবার সত্যতাকে সংযুক্ত করো তোমার গভীরতম অন্তরে পবিত্রতার সাথে , কারণ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি এত শক্তিধর ও এত উচ্চ মর্যাদার যে কারো ইচ্ছাশক্তি নেই তাঁর পূর্ববর্তী ইচ্ছা শক্তির মাধ্যম ছাড়া। দাসত্বের অবস্থা পরিপূর্ণ করো তাঁর প্রজ্ঞায় সন্তুষ্ট থেকে এবং ইবাদাতের মাধ্যমে তাঁর আদেশগুলো পালন করার উদ্দেশ্যে।

তিনি তোমাকে আদেশ করেছেন তাঁর হাবীব (ভালোবাসা) মুহাম্মাদের উপরে দরুদ পাঠানোর জন্য , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যেন তাকে ও তার পরিবারের উপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করেন। অতএব যুক্ত করো তোমার অনুরোধকে মুহাম্মাদের কাছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে তোমার প্রার্থনার সাথে , মুহাম্মাদের প্রতি আনুগত্যকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি আনুগত্যের সাথে এবং তোমার মুহাম্মাদকে দেখার তোমার আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে দেখার সাথে। সতর্ক দৃষ্টি রেখো যেন তুমি জ্ঞানের রহমত থেকে বঞ্চিত না হও যা লুকানো আছে তার (মুহাম্মাদ-সাঃ) পবিত্রতার প্রতি সম্মান জানানোর ভেতরে তা না হলে তার উপরে দরুদ পাঠানোর উপকারিতা লাভের সুযোগ থেকে প্রত্যাখ্যাত হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে আদেশ করেছেন তোমার জন্য ক্ষমা চাইতে এবং তোমার জন্য সুপারিশ করতে যখন তুমি আদেশ ও নিষেধগুলো এবং সুন্নাহ ও যে আদব গুলো (সৌজন্য) আছে যা রাসূলুল্লাহ (সা.)-র মাধ্যমে মানুষের কাছে প্রদর্শিত হয়েছে তা পালন করবে । আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে তার মহান মর্যাদা সম্পর্কে তোমার জানা থাকা উচিত।

সালাম

নামাজের শেষে তাসলিম (শান্তির শুভেচ্ছা)-এর অর্থ হচ্ছে নিরাপত্তা , আর তা হলো যে ব্যক্তি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার আদেশ ও তাঁর রাসূলের (সা.) সুন্নাহ পালন করলো তাঁর প্রতি বিনীত হয়ে এবং ভয়ের সাথে সে এ পৃথিবীর দুঃখকষ্ট থেকে নিরাপত্তা লাভ করলো এবং আখেরাতের শাস্তি থেকে মুক্ত থাকলো। আল-সালাম (শান্তি) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নামগুলোর একটি , যা তিনি তাঁর সৃষ্টির কাছে আমানত দিয়েছেন যেন তারা তা ব্যবহার করে তাদের আচার ব্যবহারে , আমানত রক্ষায় এবং চুক্তিতে এবং তাদের সাথীদের সমর্থনে ও সমাবেশগুলোতে এবং তাদের সুস্থ সামাজিক সম্পর্কের জন্য।

যদি তুমি সালামকে এর যথাযথ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করতে চাও এবং এর অর্থ পরিপূর্ণ করতে চাও তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে ভয় করো এবং তোমার বিশ্বাস , তোমার অন্তর ও তোমার বুদ্ধিকে সুস্থ করো। এগুলোকে বিদ্রোহের অন্যায় দিয়ে কালিমাযুক্ত করো না। তোমার অভিভাবকরা যেন তোমার কাছ থেকে নিরাপদ থাকে ; তাদের প্রতি তোমার দুর্ব্যবহার দিয়ে তাদেরকে দুশ্চিন্তাযুক্ত অথবা বিরক্ত অথবা দূরে সরিয়ে দিও না , তোমার বন্ধুদের সাথেও করো না এবং তোমার শত্রুদের সাথেও করো না। যদি কোন ব্যক্তির নিকটজনরা তার কাছ থেকে নিরাপদ না থাকে তাহলে যারা তার কাছ থেকে সবচেয়ে দূরে তারা সবচেয়ে নিরাপদ। যে ব্যক্তি সালামকে এর যথাযোগ্য স্থানে প্রতিষ্ঠিত করে না যখন তা প্রতিষ্ঠা করা উচিত তাহলে তার না আছে শান্তি , না আছে আত্মসমর্পণ। সে তার সালামে মিথ্যাবাদী যদি সে লোকজনের মাঝে তা ব্যবহার করে শুভেচ্ছা আকারেও।

জেনে রাখো মানুষের অস্তিত্ব বজায় আছে এ পৃথিবীর পরীক্ষা ও দুঃখ কষ্টের মাঝে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে পরীক্ষা করতে পারেন তাঁর রহমত দিয়ে , তার কৃতজ্ঞতাবোধ দেখার জন্য অথবা দুঃখকষ্ট দিয়ে দেখার জন্য যে সে তাঁকে মেনে চলার বিষয়ে দৃঢ়তা ও উঁচু মানসিকতা প্রদর্শন করে কিনা , অথবা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অসম্মানিত হয় কিনা , যদিও তাঁর সন্তুষ্টি ও রহমতে পৌঁছা যায় না তাঁর অনুগ্রহ ছাড়া। তাকে মেনে চলার একমাত্র উপায় হচ্ছে যখন তিনি সফলতা দান করেনঃ কেউ তাঁর কাছে সুপারিশ করতে পারে না তার অনুমতি ও রহমত ছাড়া।

পরিচ্ছেদ-12

তওবা

তওবা হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার রশি এবং তাঁর বান্দাহদের জন্য মনোযোগের প্রধান মাধ্যম যাদেরকে অবশ্যই অনুতপ্ত থাকতে হবে প্রত্যেক অবস্থায়। বান্দাহদের প্রত্যেক দলেরই রয়েছে এর নিজস্ব ধরনের তওবা।

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর তওবা হচ্ছে বাইরের বিরক্তি উদ্রেককারী উৎসের কারণে ভেতরের গভীরতম সত্তায় যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয় তার জন্য এবং আউলিয়াদের তওবা আসে তাদের চিন্তার রঙে পরিবর্তন ঘটা থেকে , পরিশুদ্ধদের (আবরার) তওবা নিহিত থাকে তাদেরকে যা সামান্যতম পীড়ন করে তা শান্তভাবে পরিত্যাগ করার ভেতরে , উচ্চস্থানীয়দের তওবা হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছাড়া অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে এবং সাধারণ মানুষের তওবা অন্যায় কাজের কারণে। এদের প্রত্যেকেই তাদের তওবার কারণ ও উদ্দেশ্য জানে এবং সে সম্পর্কে সচেতন। কিন্তু এখানে এসব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে অনেক লম্বা সময় প্রয়োজন হবে।

সাধারণ মানুষের তওবা হলো সে তার অভ্যন্তরীণ সত্তাকে অনুতাপের পানি দিয়ে ধোয় এবং তার ভুল কাজকে সর্বক্ষণ স্বীকার করে। সে যা করেছে তার জন্য দুঃখ করে এবং তার জীবনের যতটুকু বাকী আছে তা নিয়ে ভয় করে। সে তার অন্যায় কাজগুলোকে সামান্য ভাবে না যে , সেক্ষেত্রে তা তাকে অলসতার দিকে নিয়ে যাবে ; সে যা হারিয়েছে তার জন্য তার ক্রমাগত কান্না এবং দুঃখ করাটাও একটি ইবাদাত। তার উচিত নিজেকে পৃথিবীর ক্ষুধা থেকে বিরত রাখা এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাহায্য চাওয়া তওবা করার জন্য এবং সে কাজ আবার করা থেকে তাকে রক্ষা করার জন্য যা সে আগে করেছে। সে নিজেকে অজ্ঞতা ও ইবাদাতের উঠানে প্রশিক্ষণ দেয় । সে বাধ্যতামূলক কাজগুলো যেগুলো সে আগে করে নি তা পূরণ করে এবং সে সাহায্যের জন্য অন্যদের ডাকে সাড়া দেয়। অসৎসঙ্গ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয় , রাতে জেগে কাটায় , দিনের বেলায় পিপাসার্ত থাকে , তার সম্পত্তির উপরে সর্বক্ষণ ভাবে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে সাহায্য চায় , তাঁর কাছে অনুরোধ করে আরাম ও দুঃসময়ে তাকে দৃঢ় রাখার জন্য এবং তার পরীক্ষা ও দুঃখ দুর্দশায় স্থির রাখার জন্য যেন সে তওবাকারীদের মাক্বাম থেকে নীচে পড়ে না যায়। এটি তাকে তার অন্যায় কাজ থেকে পবিত্র করবে , তার জ্ঞান বৃদ্ধি করবে এবং তার মর্যাদা উঁচুতে উঠানো হবে। যেভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) ف َلَيَعْلَمَنَّ اللَّـهُ الَّذِينَ صَدَقُوا وَلَيَعْلَمَنَّ الْكَاذِبِينَ(

‘‘ আর আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে জেনে নিবেন যারা সত্যবাদী এবং অবশ্যই জেনে নিবেন মিথ্যাবাদীদের।’’ (সূরা আনকাবুতঃ 3)

নিজেকে গুটিয়ে নেয়া ( উযলাহ )

যে ব্যক্তি পৃথিবী থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাকে দুর্গের ভেতর নেন এবং নিরাপত্তা দেন তার অভিভাবকত্বের (বেলায়েতের) মাধ্যমে। যে ব্যক্তি নিজেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর কাছে গুটিয়ে নিয়েছে তার কীইনা আনন্দ , এটি করার জন্য তাকে অবশ্যই পার্থক্য করতে হবে সত্য ও মিথ্যার মধ্যে , দারিদ্র্যকে ভালোবাসতে হবে , দুঃখ কষ্ট এবং বিরত থাকাকে বেছে নিতে হবে এবং নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার প্রত্যেকটি সুযোগ গ্রহণ করতে হবে। তাকে অবশ্যই তার প্রত্যেকটি কাজের ফলাফল নিয়ে ভাবতে হবে , ইবাদাত করবে যত বেশী সম্ভব , অহংকার পরিত্যাগ করবে এবং সর্বক্ষণ যিকর-এ নিয়োজিত থাকবে উদাসীনতা ছাড়া যা হলো শয়তানের শিকারের ভূমি এবং প্রত্যেক দুর্দশার শুরু , আর এসব কিছুর কারণ অষ্পষ্ট। তার উচিত তার বাড়ি থেকে সব কিছু বিদায় করে দেয়া যার শীঘ্রই কোন প্রয়োজন নেই।

ঈসা (আ.) বলেছেনঃ‘‘ তোমার জিহবাকে পাহারা দাও যেন তোমার অন্তরে উন্নয়ন ঘটাতে পারো এবং তোমার বাসস্থানকে তোমার জন্য যথেষ্ট বানাও। লোক দেখানো এবং অতিরিক্ত রিয্ক থাকা থেকে সাবধান থাকো। তোমার রবের সামনে নম্র হও এবং তোমার ভুলের জন্য কাঁদো। লোকজন থেকে পালাও যেভাবে তুমি পালাও সিংহ ও বিষাক্ত সাপ থেকে। সেগুলো ছিলো ঔষধ এবং এখন সেগুলো রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে । এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে সাক্ষাত করো যেখানে তুমি চাও। রাবি ইবনে কুসাইম বলেছিলোঃ‘‘ যদি তুমি আজ এমন কোন স্থানে যেতে পারো যেখানে তুমি কাউকে চেনো না এবং যেখানে তোমাকে কেউ চেনে না তাহলে তাই করো।’’

নিজেকে গুটিয়ে নিলে তা আনে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য নিরাপত্তা , একটি মুক্ত অন্তর , সুস্থ রিয্ক , শয়তানের অস্ত্রগুলোর ধ্বংস , প্রত্যেক খারাপকে এড়িয়ে চলা এবং অন্তরের জন্য বিশ্রাম। কোন নবী নেই এবং কোন নবীর ওয়াসী নেই যে তার জীবনে একবার নিজেকে গুটিয়ে নেয় নি , হয় তার শুরুতে অথবা তার শেষে।

নিরব থাকা

নিরবতা তাদের চিহ্ন যারা সেসব বাস্তবতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে যা ইতোমধ্যেই এসেছে এবং যার বিষয়ে কলম ইতোমধ্যেই লিখেছে। এটি হচ্ছে এ পৃথিবী ও আখেরাতের সব বিশ্রামের চাবি : এটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টি আনে , আমলের হিসাবকে সহজ করে এবং এটি ভুলত্রুটি থেকে একটি নিরাপত্তা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এটিকে পর্দা বানিয়েছেন মূর্খদের জন্য এবং অলংকার বানিয়েছেন জ্ঞানীদের জন্য।

নিরবতার মাধ্যমে কামনা-বাসনাকে একপাশে সরিয়ে রাখা যায় এবং এর সাথে আসে আত্ম-শৃঙ্খলা , ইবাদাতের মিষ্টতা , হৃদয়ের কাঠিন্য দূরীভূত হওয়া , বিরত থাকা , ধার্মিকতা এবং জ্ঞান ভান্ডার। অতএব তোমার জিহবাকে তালা মারো সে কথার উপরে যা অত্যন্ত জরুরী নয় , বিশেষ করে যখন তুমি দেখো তুমি কারো সাথে কথা বলবে এমন কোন যোগ্য লোক দেখছো না ; তখন ছাড়া যখন তুমি একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে কথা বলছো।

রাবি ইবনে কুসাইম একটি মোটা কাগজ তার সামনে রাখতো যার উপরে সে লিখে রাখতো সে দিনের বেলায় কী বলেছে। রাতে সে নিজে নিজের হিসাব নিতো তার বেঁচে থাকাকালেই। দেখতো সে কী বলেছে নিজের পক্ষে এবং নিজের বিপক্ষে। এরপর সে বলতোঃ‘‘ হায় , যারা নিরব তারা রক্ষা পেয়েছে।’’

রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একজন সাহাবী তার মুখের ভেতরে নুড়িপাথর ভরে রাখতো। যখন সে কিছু বলতে চাইতো তখন যদি সে জানতো তা আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি , আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পথে এবং আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালার জন্য , তখন সে তার মুখের ভেতর থেকে তা বের করতো। সাহাবীদের অনেকেই এমনভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিতেন যেন মনে হতো কোন ডুবন্ত মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস এবং কথা বলতেন অসুস্থ মানুষের মত।

মানুষের ধ্বংস নিহিত আছে তার কথা-বার্তা ও নিরবতার মাঝে

সৌভাগ্য তাদের যাদেরকে কথাবার্তায় কী সঠিক ও কী ভুল এ সম্পর্কে এবং নিরবতার বিজ্ঞান ও এর সুবিধাগুলো সম্পর্কে জ্ঞান দেয়া হয়েছে। কারণ এটি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর গুণাবলীর একটি এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের বিশেষ চিহ্ন। যে কথার মূল্য বোঝে সে নিরবতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। যদি ব্যক্তিকে নিরবতার সুক্ষ্ণ বিষয়গুলো দেখানো হয় এবং এর মূল্যবান ভান্ডার তার কাছে গচ্ছিত রাখা হয় তখন তার কথা ও নিরবতা উভয়ই ইবাদাত। এ ইবাদাতের রহস্য শুধু তিনিই জানেন যিনি সবার বাদশাহ , সর্ববাধ্যকারী আল্লাহ।

বুদ্ধি ও কামনা-বাসনা

বুদ্ধিমান মানুষ যা সত্য তার কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং তার বক্তব্য হয় ন্যায়পরায়ণ ; যা মিথ্যা তা থেকে সে কুঁকড়ে সরে যায় এবং তার কথায় এর বিরোধিতা করে। সে এ পৃথিবীকে পিছনে ঠেলে দেয় কিন্তু তার বিশ্বাসকে ত্যাগ করে না।

বুদ্ধিমান মানুষের প্রমাণ দু টো জিনিসে নিহিত : সত্য কথা এবং সঠিক কাজ। বুদ্ধিমান মানুষ এমন কিছু বলে না যা বুদ্ধি প্রত্যাখ্যান করে , না সে নিজেকে সন্দেহে পড়তে দেয় , না সে পরিত্যাগ করে তাদের সাহায্য যারা পরীক্ষিত। তার কাজকর্মে জ্ঞান পথ দেখায় ; যে পথে সে চলে সেখানে ইরফান (আধ্যাত্মিক জ্ঞান) তার নিশ্চয়তা এবং সহনশীলতা তার সার্বক্ষণিক সাথী। কামনা-বাসনা বুদ্ধির শত্রু , সত্যের প্রতিপক্ষ এবং মিথ্যার সাথী। কামনা-বাসনার শক্তি আসে দুনিয়ার ক্ষুধা থেকে এবং এর প্রাথমিক প্রকাশ হচ্ছে হারাম কাজ করা , দায়িত্বে অবহেলা করা , সুন্নাহকে হালকা করে দেখা এবং আনন্দ ফুর্তিতে মগ্ন হওয়া।

পরিচ্ছেদ-13

ঈর্ষা

একজন ঈর্ষাপরায়ণ ব্যক্তি আগে নিজেরই ক্ষতি করে যার প্রতি সে ঈর্ষাপরায়ণ তাকে ক্ষতি করার আগে , ঠিক যেমনটি ঘটেছিলো ইবলিসের বেলায়। তার ঈর্ষার কারণে সে অভিশাপকে নিজের উপরে বয়ে এনেছিলো , অথচ আদমের জন্য সে এনেছিলো নির্বাচন , হেদায়েত , প্রকৃত চুক্তির স্তরে আরোহণ এবং বাছাই হওয়া। অতএব তোমার প্রতি ঈর্ষা করা হোক ঈর্ষাকাতর হওয়ার চাইতে , কারণ ঈর্ষাপরায়ণের শাস্তি সবসময় যাকে ঈর্ষা করা হয় তার চেয়ে বেশী ; এভাবেই রিয্ক(জীবনোপকরণ) নির্ধারন করা হয়।

লোভ

বলা হয়েছে যে কাব আল আহবারকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো বিশ্বাসের মধ্যে সবচেয়ে সুস্থ জিনিস এবং সবচেয়ে কলুষিত কী ? সে উত্তর দিয়েছিলোঃ সবচেয়ে সুস্থ জিনিস হলো সতর্কতা এবং সবচেয়ে কলুষিত হলো লোভ।

সম্পদের লোভ হচ্ছে শয়তানের মদ , যা সে নিজ হাতে তুলে দেয় তার পছন্দনীয়দের জন্য। যে এতে মাতাল হয় সে আল্লাহর শাস্তির ব্যাথ্যতেই শুধু ভদ্র হয় -যে তাকে এ পানীয় দিয়েছিলো তার নিকটে অবস্থান করে। বিশ্বাসের বদলে মানুষের এ পৃথিবী পছন্দ করা ছাড়া যদি লোভের জন্য আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে শাস্তির আর কোন কারণ না থাকতো , তাহলেও তা মারাত্মক শাস্তির কারণ হতো। আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ

) أ ُولَـٰئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدَىٰ(

‘‘ তারা হলো যারা সঠিক পথের বিনিময়ে ভুল কিনে’’ (সূরা বাকারাঃ 16)

বিশ্বাসীদের আমীর বলেছেনঃ‘‘ তুমি যার প্রতি ইচ্ছা উদার হও এতে তুমি হয়ে যাবে তার রাজপুত্র। যার কাছ থেকে ইচ্ছা সাহায্য প্রার্থনা করো এতে তুমি তার সমান হয়ে যাবে। তুমি যার প্রয়োজনে থাকো তার হাতে তুমি বন্দী’’ । যে লোভী তার কাছ থেকে বিশ্বাস কেড়ে নেয়া হয় সে তা টেরও পায় না। কারণ বিশ্বাস বান্দাহকে সৃষ্টিগতভাবে লোভী হতে বাধা দেয়। তিনি আরও বলেছেনঃ‘‘ হে আমার বন্ধু , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ভান্ডার সম্মানের পদক দিয়ে পূর্ণ এবং যে ভালো আচরণ করে তাকে পুরস্কৃত করতে তিনি অবহেলা করেন না।’’

মানুষের যা আছে তা কলংকিত হয় ত্রুটি দিয়ে। বিশ্বাস তাকে উদ্বুদ্ধ করে আল্লাহর উপর আস্থা রাখতে , মধ্যপন্থায় , কামনা-বাসনা পরিত্যাগ , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার আনুগত্যকে আঁকড়ে থাকতে এবং জনগণের বিষয়ে নিরাশ হতে। যদি সে তা করে তাহলে তার বিশ্বাসের কাছেই আছে এবং সঠিক পথ অবলম্বন করেছে । যদি সে তা না করে তাহলে বিশ্বাস তাকে ছেড়ে যায় এবং তাকে তার খারাপ প্রকৃতির কাছে ফেলে যায়।