ইমাম জাওয়াদ (আ.)

ইমাম জাওয়াদ (আ.)25%

ইমাম জাওয়াদ (আ.) লেখক:
প্রকাশক: -
বিভাগ: ইমাম মুহাম্মাদ বিন আলী আল জাওয়াদ (আ.)

  • শুরু
  • পূর্বের
  • 14 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 5711 / ডাউনলোড: 2648
সাইজ সাইজ সাইজ
ইমাম জাওয়াদ (আ.)

ইমাম জাওয়াদ (আ.)

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

ইমাম জাওয়াদ (আ.)

দার রাহে হাক প্রকাশনীর লেখকবৃন্দ

بسم الله الرحمن الرحیم

পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু

আল্লাহর নামে

ভূমিকা

নিঃসন্দেহে সৃষ্টির বিস্ময়কর ঘটনাবলীর মধ্যে ভূপৃষ্ঠে মানুষকে খলিফারূপে প্রেরণ করাই হচ্ছে সর্বাধিক বিস্ময়কর ঘটনা। যদি বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করি ,তাহলে দেখব অন্যান্য সৃষ্টির উপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ তার খলিফাতুল্লাহ হওয়া। কবি হাফিজ যথার্থই বলেছেন :

আসমান আমানতের বোঝাকে করতে পারেনি বহন ,

পড়েছে ফলনামা এ অধমেরই নামে তখন।

হযরত আদম (আ.) থেকে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) থেকে হযরত মাহদী (আ.) পর্যন্ত খোদা পরিচিতি ও আধ্যাত্মিকতার ইতিহাসে ,তাঁরা খনিজ কয়লার মত দাহ্যমান জ্ঞান ,প্রজ্ঞা ও বেলায়েতের অধিকারী ছিলেন।

আধ্যাত্মিকতায় পূর্ণ এ দৃঢ়পদীরা ছিলেন সৃষ্টির সেরা ,সর্বাধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা এবং সকলের নেতা বা ইমাম। তাঁদের প্রত্যেকের জীবনধারা ,তাদের ঐশী জ্ঞান ,আচার-ব্যবহার ও ব্যক্তিত্ব ,তা কোন সাধারণ জীবন যাপন ছিল না এবং বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অসংখ্য বিস্ময়কর ঘটনাবলীর নিদর্শন তাদের জীবন ধারায় পরিলক্ষিত হয়। হযরত নুহ (আ.) প্রায় সহস্র বছর জীবন যাপন ও নবুওয়াতের দায়িত্ব পালন করেন।

আল্লাহ তায়ালা হযরত নূহ (আ.)-এর দুশমনদেরকে প্লাবনের মাধ্যমে ধ্বংস করেছিলেন। হযরত হুদ ও সালেহ (আ.)-এর বিরোধীদের উপর আসমান থেকে আল্লাহ্ আযাব নাযিল করেছিলেন। হযরত ইবরাহীম খলীল (আ.) প্রজাপতির ন্যায় আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন এবং আল্লাহর নির্দেশে তা ফুলবাগানে রূপান্তরিত হয়েছিল। মূসা (আ.) আল্লাহর ইচ্ছায় তার লাঠিকে ফেরাউনদের জন্য বিশালদেহী সাপে রূপান্তরিত করেছিলেন। সুলাইমান (আ.) বাতাসকে নির্দেশ দিতেন এবং পশু-পাখির সাথে কথা বলতেন। ঈসা (আ.) মৃতকে জীবিত করতেন। মহানবী (সা.) বিভিন্ন প্রকার বিস্ময়কর ঘটনাবলীর অধিকারী ছিলেন। তাঁর জন্মের সাথে সাথে মূর্তি সমূহ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। খসরুর প্রাসাদের চৌদ্দটি স্তম্ভ ভেঙ্গে গিয়েছিল। পারস্যের সহস্র বছরের অগ্নিকুণ্ড নিভে গিয়েছিল। তাঁর নবুওয়াতের ভিত্তিতে পৃথিবী বদলে গিয়েছিল এবং মানব জীবনের এক নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছিল। সত্যিই বিশ্বের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা আশ্চর্যজনক ও বিস্ময়কর ঘটনা হচ্ছে মানুষের খলিফাতুল্লাহ হওয়া। এই বিস্ময়কর অনুগ্রহ যার উপরই ভাস্বর হয়েছিল ,যুগপৎ বিস্ময়কর ঘটনাবলীর অধিকারী ও তিনিই ছিলেন ।

বিশেষ করে সকল নবী ও ইমামগণের পারিবারিক শিক্ষার বিষয়টি এ বিস্ময়কর ব্যপারগুলোর মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। কেননা তাঁরা পৃথিবীর কোন মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন নি ,বরং তাঁদের জ্ঞানের উৎস ছিল স্বয়ং চিরন্তন সত্তা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন। এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই (শিক্ষার জন্য পরমুখাপেক্ষী না হওয়া) আল্লাহর খলিফাদের খেলাফত ও রেসালাতের ক্ষেত্রে বয়সের কোন ভূমিকা ছিল না ,বরং আল্লাহর ইচ্ছা ও অনুমোদনে যে কোন সময় এবং যে কোন বয়সে মানুষের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর নবী অথবা ইমাম হিসাবে প্রেরিত হতে পারেন। যেমন : অনেকে মধ্য বয়সে ,কেউ বার্ধক্যে ,কেউ যৌবনে কেউবা আবার শৈশবেই আল্লাহর খলিফার মত উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্টিত হয়েছিলেন। আল্লাহর ইচ্ছা বা অনুমোদন ব্যতীত কেউই এ উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হতে পারেন না। আর যেখানে আল্লাহর ইচ্ছা ও অনুমোদন রয়েছে সেখানে বয়সের কোন প্রশ্নই আসতে পারে না ।

পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় বলছে যে ,হযরত ইয়াহিয়া (আ.) বাল্যকালে এবং হযরত ঈসা (আ.) শৈশবে দোলনাতেই আল্লাহর খলিফা বা নবী নির্বাচিত হন।

) ي َا يَحْيَىٰ خُذِ الْكِتَابَ بِقُوَّةٍ ۖ وَآتَيْنَاهُ الْحُكْمَ صَبِيًّا(

অর্থাৎ হে ইয়াহিয়া! তুমি এই কিতাবকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং আমরা তাকে বাল্যকালেই প্রজ্ঞা দান করেছিলাম (সূরা মারিয়াম : ১২) ।

) قَالُوا كَيْفَ نُكَلِّمُ مَن كَانَ فِي الْمَهْدِ صَبِيًّا قَالَ إِنِّي عَبْدُ اللَّـهِ آتَانِيَ الْكِتَابَ وَجَعَلَنِي نَبِيًّا(

অর্থাৎ তারা বলল ,আমরা তার সাথে কিভাবে কথা বলব ,যে এক দোলনার শিশু ? তিনি (হযরত ঈসা) বললেন ,নিশ্চয় আমি আল্লাহর বান্দা ,তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী মনোনীত করেছেন (সূরা মারিয়াম : ২৯-৩০) ।

অতএব ,আল্লাহর পক্ষ থেকে ,তাঁরই ইচ্ছায় শৈশবে ইমামত প্রাপ্ত আমাদের কোন কোন পবিত্র ইমামের ইমামত প্রাপ্তির বিরোধিতা যারা করে ,তা তাদের বোকামি ও বিবেকের অপরিপক্কতা বৈ কিছুই নয়। আমরা যা আলোচনা করেছি এবং কোরআনও যা অনুমোদন করে ,একমাত্র অজ্ঞরা ছাড়া আর কেউই এ বিষয়ে আপত্তি করতে পারেনা যে ,কিভাবে ইমাম জাওয়াদ (আ.) ৮/৯ বছর বয়সে ইমামতের উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন ?

ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে আলী আল জাওয়াদ (আ.) তাঁর মহান পিতার শাহাদতের পর পূর্ববর্তী ইমামগণের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ,অষ্টম ইমামের পক্ষ থেকে পূর্বেই পৃথিবীতে ইমাম ও আল্লাহর খলিফার দায়িত্বশীল হিসাবে নিযুক্ত হন। ইমাম জাওয়াদের বয়স কম হওয়ার কারণে অজ্ঞরা প্রায়ই তাঁকে পরীক্ষা করত। কিন্তু ইমামের খোদায়ী জ্ঞানের দ্যুতি এতই বেশি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করত যে ,হযরত ইয়াহিয়া ও ঈসা (আ.)-এর শৈশবে নবুওয়াত প্রাপ্তির বিষয়টি প্রমাণের জন্য এই মহান ইমামের দৃষ্টান্ত আনা প্রয়োজন হতো অর্থাৎ তাঁদের নবুওয়াতকে ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর ইমামতের মাধ্যমে প্রমাণ করা হতো।

ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর জন্ম

অষ্টম ইমাম হযরত আলী ইবনে মূসা আর রেজা (আ.)-এর বয়স তখন চল্লিশেরও বেশি। কিন্তু তদোবধি কোন সন্তান তার ঘরে আসেনি। এ বিষয়টি শিয়াদের জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছিল। কেননা তারা রাসূল (সা.) ও পবিত্র ইমামগণের রেওয়ায়েত থেকে এ বিশ্বাসে উপনীত হয়েছিলেন যে ,নবম ইমাম হবেন অষ্টম ইমামেরই সন্তান। উপরোক্ত কারণেই তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান ছিলেন যে আল্লাহ্তায়ালা ইমাম রেজাকে একটি পুত্র সন্তান দান করুন। এমনকি তারা কখনো কখনো ইমাম রেজা (আ.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার অনুরোধ জানাতেন ,যেন মহান আল্লাহ্ তাঁকে একটি পুত্র সন্তান দান করেন। ইমাম রেজা (আ.) তাদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতেন :

“ আল্লাহ্ তায়ালা আমাকে এমন এক পুত্র সন্তান দান করবেন যে আমার উত্তরাধিকারী ও আমার পরবর্তী ইমাম হবে ” (বিহারুল আনওয়ার,৫০তম খণ্ড ,পৃ. ১৫ ;উয়ুনুল মুজিযাত পৃ. ১০৭) ।

অবশেষ ১৯৫ হিজরীর ১০ই রজব ,মতান্তরে রমযান মাসে ইমাম মুহাম্মদ তাকী (আ.) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম মুহাম্মদ ,কুনিয়াহ আবু জাফর এবং তাঁর প্রসিদ্ধ উপাধি হচ্ছে তাকী ’ এবং জাওয়াদ ’ ।

তাঁর জন্মের সুসংবাদে সমস্ত শিয়ারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন এবং তাদের ঈমান ও আকিদা আরও দৃঢ়তর হয়। কেননা হযরতের জন্ম বিলম্বে হওয়ায় শিয়াদের মধ্যে সন্দেহের যে সম্ভাবনা ছিল ,তা দূর হয়ে গেল ।

ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর মাতার নাম সাবিকাহ ’ । ইমাম রেজা (আ.) তাঁকে খিযরান ’ বলতেন। এই মহীয়ষী রমণী রাসূল (সা.)-এর স্ত্রী মারিয়া কিবতির বংশের ছিলেন। তিনি চারিত্রিক গুণাবলীর দিক থেকে সে যুগের শ্রেষ্ঠা রমণী ছিলেন। রাসূল (সা.) এক রেওয়ায়েতে তাঁকে (সাবিকাহ)خير الاماء বা সর্বোত্তম দাসী হিসাবে উল্লেখ করেছেন। (উসূলে কাফী ,১ম খণ্ড ,পৃ. ৩২৩) এই রমণী ইমাম রেজা (আ.)-এর গৃহে আসার পূর্বেই ইমাম মূসা ইবনে জাফর তার কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছিলেন এবং ইয়াযিদ ইবনে সালিতের মাধ্যমে তাকে সালাম পৌঁছিয়েছিলেন (উসূলে কাফী ,১ম খণ্ড ,পৃ. ৩১৫) ।

ইমাম রেজা (আ.)-এর বোন হাকিমাহ বলেন : ইমাম রেজা (আ.) আমাকে ইমাম মুহাম্মদ তাকী (আ.)-এর জন্মের সময় খিযরানের কাছে থাকার নির্দেশ দেন। নবজাতক জন্মের তৃতীয় দিবসে আকাশের দিকে তাকাল অতঃপর ডানে ও বায়ে দেখল এবং বলল :

اشهدُ ان لا اله الاّ الله و اشهد انّ محمّداً رسول الله

‘ অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,আল ্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) হচ্ছেন আল্লাহর রাসূল। ’

আমি এই বিস্ময়কর ঘটনা অবলোকন করে তড়িৎ ভাইয়ের কাছে গিয়ে যা দেখেছি তা বর্ণনা করলাম। ইমাম রেজা (আ.) বললেন , যা দেখেছ তার চেয়ে আরও বেশি আশ্চর্যজনক ঘটনা ভবিষ্যতে তার থেকে দেখতে পাবে ’ (মানাকেব ,৪র্থ খণ্ড ,পৃ. ৩৯৪) ।

আবু ইয়াহিয়া সানয়ানী বলেন : ইমাম রেজা (আ.)-এর খেদমতে ছিলাম। এমন সময় ছোট্ট শিশু ইমাম জাওয়াদকে তাঁর কাছে আনা হলে তিনি বলেন : এই শিশু এমন শিশু যে ,শিয়াদের জন্য তাঁর থেকে বরকতময় আর কেউই দুনিয়াতে আসেনি।

সম্ভবতঃ উল্লিখিত কারণেই (শিয়াদের মধ্যে সন্দেহ দূরীকরণের জন্য) হয়তো ইমাম এরূপ বর্ণনা করেছেন। কেননা ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর জন্মের মাধ্যমেই ইমামের উত্তরাধিকারের প্রশ্নে শিয়াদের উদ্বেগের অবসান ঘটে। আর এভাবে শিয়াদের ঈমান সন্দেহের কলুষতা থেকে মুক্তি লাভ করে।

নোফেলি বলেন : ইমাম রেজা (আ.)-এর সাথে একত্রে খোরাসান যাওয়ার পথে তাঁকে সবিনয়ে নিবেদন করলাম : আমার প্রতি কোন আদেশ উপদেশ আছে কি ? তিনি বললেন : তোমার প্রতি নির্দেশ হলো : আমার পর আমার পুত্র মুহাম্মদের অনুসরণ করবে। জেনে রাখ আমি এমন এক সফরে যাচ্ছি যেখান থেকে আর কোনদিন ফিরব না (উয়ুনু আখবারুর রেজা ,২য় খণ্ড ,পৃ. ২১৬) ।

ইমাম রেজা (আ.)-এর ব্যক্তিগত লেখক মুহাম্মদ ইবনে আবি ইবাদ বলেন ,ইমাম রেজা (আ.) তাঁর পুত্র ইমাম জাওয়াদকে কুনিয়া ধরে সম্বোধন করতেন। (আরবদের মধ্যে যখন কাউকে সম্মানের সাথে স্মরণ করা হয় তখন তাকে কুনিয়া ধরে সম্বোধন করা হয়) । যখন ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর কাছ থেকে কোন পত্র আসত ,ইমাম রেজা (আ.) খুশী হয়ে বলতেন , আবুজাফর আমাকে লিখেছে... ।’ আবার যখন ইমাম রেজা (আ.) আমাকে ইমাম জাওয়াদ (আ.) -এর কাছে চিঠি লিখতে বলতেন ,তাঁকে সম্মানের সাথে খেতাব করতেন। আর ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর পক্ষ থেকে যে সমস্ত পত্র আসত ,তা খুবই সুন্দর বাচন ভঙ্গি ও বাক্যালংকারে পূর্ণ থাকত।

মুহাম্মদ ইবনে আবি ইবাদ আরও বলেন ,ইমাম রেজাকে বলতে শুনেছি যে ,তিনি বলতেন , আমার পরে আবু জাফর হচ্ছে আমার উত্তরাধিকারী ও স্থলাভিষিক্ত ’ (উয়ুনু আখবারুর রেজা ,২য় খণ্ড ,পৃ. ২৪০) ।

মুয়াম্মার ইবনে খাল্লাদ বলেন ,ইমাম রেজা (আ.) কিছু কথা স্মরণ করে বলেন : আমার থেকে শোনার প্রয়োজন নেই ,আবু জাফরকে আমার স্থলাভিষিক্ত করেছি ,যে কোন প্রশ্ন ও সমস্যা থাকলে তাকে প্রশ্ন করো সে জবাব দিবে। আমাদের পরিবার এমন এক পরিবার যে এ পরিবারের সন্তানরা তাঁদের মহান পিতাগণের কাছ থেকে ইলমের হাকিকাত (জ্ঞানের নিগুঢ় রহস্য) ও মারেফাত পূর্ণরূপে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে থাকেন। (উদ্দেশ্য এটাই যে পূর্বের ইমামের সমস্ত মর্যাদা এবং জ্ঞান পরবর্তী ইমামের কাছে স্থানান্তরিত হয়। আর এটা শুধুমাত্র ইমামগণের বেলায় প্রযোজ্য ইমামগণের অন্যান্য সন্তানদের বেলায় নয়।

খাইরানী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন ,খোরাসানে ইমাম রেজা (আ.)-এর খেদমতে ছিলাম ,কেউ প্রশ্ন করল : যদি আপনি আমাদের মাঝ থেকে চলে যান তাহলে কার শরণাপন্ন হব ? ইমাম রেজা (আ.) বলেন : আমার পুত্র আবু জাফরের শরণাপন্ন হবে। ’

প্রশ্নকারী হয়ত ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর বয়সকে ইমামতের জন্য উপযুক্ত মনে করেনি এবং মনে করেছিল একটি বালক কিভাবে ইমামতের উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারে ? ইমাম রেজা (আ.) বললেন : আল্লাহ্তায়ালা হযরত ঈসাকে শৈশবে দোলনাতেই নবুওয়াত দান করেছেন। আর আবু জাফরতো এখন ৮ বছরের বালক ,আল্লাহর কাছে কিছুই অসম্ভব নয় ” (উসূলে কাফী ,১ম খণ্ড ,পৃ. ৩২২ ,এরশাদে শেখ মুফিদ ,পৃ. ২৯৯) ।

আবদুল্লাহ্ ইবনে জাফর বলেন ,ইয়াহিয়া ইবনে সাফওয়ানের সাথে ইমাম রেজা (আ.)-এর নিকটে উপস্থিত হলাম। সেখানে তিন বছরের বালক ইমাম জাওয়াদও ছিলেন। ইমাম রেজাকে সবিনয়ে নিবেদন করলাম : আল্লাহ না করুন ,আপনি যদি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যান ,তাহলে আপনার উত্তরাধিকারী কে হবেন ? ইমাম রেজা (আ.) আবু জাফরের দিকে ইশারা করে বললেন ,আমার এ সন্তানই আমার উত্তরাধিকারী ও স্থলাভিষিক্ত। বললাম : এত কম বয়সে ? তিনি বললেন : হ্যাঁ ,এ বয়সেই। আল্লাহ্ তায়ালা হযরত ঈসা (আ.)-কে শৈশবেই নবুওয়াত দান করেছেন ,অথচ তখন তাঁর বয়স তিন বছরও ছিল না (কেফায়াতুল আছার ,পৃ. ৩২৪ ;বিহারুল আনওয়ার ,৫০তম খণ্ড ,পৃ. ৩৫) ।

ইমামতেরশুরু

ইমামতও নবুওয়াতের ন্যায় আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ যা আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর যোগ্য এবং মনোনীত বান্দাগণকে দান করেন। এক্ষেত্রে বয়সের তেমন গুরুত্ব নেই। যারা অল্প বয়সে কারও নবী বা ইমাম হওয়াকে অসম্ভব বলে মনে করেন তারা এ আধ্যাত্মিক ব্যাপারকে সাধারণ ব্যাপারের সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন। যদিও এমনটি নয় ,কেননা নবুওয়াত ও ইমামত সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। মহান আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর অসীম জ্ঞানের মাধ্যমে যাদেরকে এ মর্যাদার যোগ্য মনে করেন কেবলমাত্র তাদেরকেই তা দান করেন। আল্লাহ্ তায়ালা যদি মানুষের কল্যাণের জন্য কোন শিশুকেও সমস্ত জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করেন তাতে কোন সমস্যার অবকাশ থাকতে পারে না! কেননা আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞানী ও সর্বশক্তিমান।

সুতরাং আল্লাহ্ তায়ালা যোগ্য মনে করলে শিশুকালেই কাউকে নবী ,আবার কাউকে উম্মতের জন্য ইমাম হিসাবে মনোনীত করতে পারেন।

ইমাম জাওয়াদ (আ.) যখন ইমামত প্রাপ্ত হন তখন তাঁর বয়স মাত্র নয় বছর। মুয়াল্লা ইবনে মুহাম্মদ বলেন : ইমাম রেজা (আ.)-এর শাহাদতের পর ইমাম মুহাম্মদ তাকী (আ.)-এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম। শিয়াদের কাছে বর্ণনা করার জন্য তাঁর শারীরিক অবয়ব বিশেষভাবে লক্ষ্য করেছিলাম। এমতাবস্থায় ইমাম জাওয়াদ (আ.) বললেন : হে মুয়াল্লা ,মহান আল্লাহ ইমামতের ক্ষেত্রেও নবুওয়াতের ন্যায় দলিল পেশ করেছেন :

و اتيناه الحكم صبياً

আমরা (ইয়াহিয়াকে) বাল্যকালেই প্রজ্ঞা (নবুওয়াত) দান করেছিলাম। (এরশাদ ,শেখ মুফিদ ,পৃ. ৩০৬)

মুহাম্মদ ইবনে হাসান ইবনে আম্মার বলেন ,দু ’ বছর যাবৎ আমি ইমাম রেজা (আ.)-এর চাচা আলী ইবনে জাফরের নিকটে যেতাম। তিনি তাঁর ভাই ইমাম মূসা ইবনে জাফর (আ.)-এর কাছ থেকে যে সমস্ত হাদীস শুনতেন ,তা আমার কাছে বর্ণনা করতেন ,আর আমি তা লিখে রাখতাম। একদা মসজিদে নববীতে একত্রে বসে ছিলাম ,এমন সময় ইমাম জাওয়াদ (আ.) প্রবেশ করলেন। আলী ইবনে জাফর উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান জানালেন এবং তাঁর হস্ত মোবারকে চুম্বন করলেন।

ইমাম জাওয়াদ (আ.) তাকে বললেন : দাদা বসুন ,মহান আল্লাহ্ আপনার উপর রহমত বর্ষণ করুন। তিনি বললেন : কিভাবে বসি হে আমার নেতা ,আপনি দাঁড়িয়ে থাকতে আমি বসতে পারি ?

যখন আলী ইবনে জাফর নিজের স্থানে ফিরে আসলেন ,সকলে তাকে তিরস্কার করে বলল ,আপনি তাঁর দাদা ,আর আপনি কিনা তাঁকে এভাবে সম্মান দেখালেন ?

আলী ইবনে জাফর বললেন : চুপ করুন ,আল্লাহ্ আমার মত পাকা দাড়িওয়ালাকে ইমামতের যোগ্য মনে করেন নি। অথচ এই বালককে ইমামতের যোগ্য মনে করেছেন এবং তাঁকে ইমাম বানিয়েছেন। তোমরা বলতে চাও আমি তাঁর মর্যাদাকে অস্বীকার করব ? আমি তোমাদের এ সকল কথা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি তাঁর গোলাম। (উসূলে কাফী ,১ম খণ্ড ,পৃ. ৩২২)

ওমর ইবনে ফারাজ বলেন ,ইমাম জাওয়াদের সাথে তাইগ্রীস নদীর তীরে দাঁড়িয়েছিলাম। তাঁকে বললাম : শিয়ারা দাবী করেন যে ,আপনি তাইগ্রীস নদীর পানির ওজন বলে দিতে পারেন ?

ইমাম জাওয়াদ (আ.) জবাব দিলেন ,তুমি কি বিশ্বাস কর না যে ,আল্লাহ্ চাইলে একটা মশাকেও তাইগ্রীস নদীর পানির ওজনের সমপরিমাণ জ্ঞান দান করতে পারেন ? আরজ করলাম ,জী হ্যাঁ ,আল্লাহ্ তা পারেন । ইমাম বললেন , আমি আল্লাহর নিকট মশা এবং অন্য সকল সৃষ্টির মধ্যে সর্বাধিক প্রিয়। (বিহারুল আনওয়ার ,৫০তম খণ্ড ,পৃ. ১০০ ,উয়ুনুল মোজেযাহ ,পৃ. ১১৩)

আলী ইবনে হাসানে ওয়াসেতী বলেন ,ইমাম জাওয়াদ যেহেতু ছোট্ট ছিলেন ,কিছু খেলনা তাঁর জন্য উপহার হিসাবে নিয়ে গেলাম। হযরতের কাছে পৌঁছে দেখলাম জনগণ প্রশ্ন করছে আর ইমাম জবাব দিচ্ছেন ,প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হলে সকলে চলে গেল। ইমামও উঠে যাচ্ছিলেন আমিও তার পিছু পিছু গেলাম। খাদেমের কাছে অনুমতি নিয়ে ইমামের সাথে সাক্ষাৎ করলাম।

সালাম করলাম। তিনি জবাব দিলেন কিন্তু বেশ বিরক্ত বোধ করছিলেন এবং আমাকে বসতেও বললেন না। যাই হোক এগিয়ে গিয়ে খেলনাগুলো তাঁর সামনে রাখলাম ,তিনি চোখ পাকিয়ে আমার দিকে তাকালেন এবং খেলনাগুলো ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললেন :

‘ আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আমাকে খেলা করার জন্য সৃষ্টি করেন নি! আমি খেলনা দিয়ে কি করব ? আমি খেলনাগুলো গুটিয়ে নিলাম এবং ইমামের কাছে ক্ষমা চাইলাম। তিনি ক্ষমা করে দিলেন এবং আমি আমার কৃত কর্মের জন্য লজ্জিত হয়ে ফিরে এলাম (দালায়েলুল ইমামাহ ,পৃ. ২১২ ;বিহারুল আনওয়ার ,৫০তম খণ্ড ,পৃ. ৫৯) ।

ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর কিছু মুজিযাহ

ইমাম রেজা (আ.)-এর শাহাদতের পর আশি জন জ্ঞানী এবং ফকীহ বাগদাদ ও অন্যান্য শহর থেকে হজ্বব্রত পালন করার জন্য মক্কায় আসেন। মক্কা যাওয়ার পথে ইমাম জাওয়াদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য তারা মদীনায় প্রবেশ করেন এবং ইমাম সাদিক (আ.)-এর বৈঠক খানা যেহেতু খালি ছিল সেখানে গেলেন। বালক ইমাম জাওয়াদ (আ.) তাদের মাঝে উপস্থিত হন। মুয়াফফাক নামে এক ব্যক্তি ইমামকে উপস্থিত সকলের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন। সকলে ইমামের সম্মানে উঠে দাঁড়ান এবং সালাম বিনিময় করেন। অতঃপর তারা ইমামকে প্রশ্ন করলেন : ইমাম জাওয়াদ যথাযথ ভাবে তাদের প্রশ্নের জবাব দিলেন। সকলে এই মহামানবের মধ্যে ইমামতের নিদর্শন স্পষ্ট দেখতে ফেলেন এবং তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হলো। তারা খুব খুশী হলেন এবং ইমামের প্রশংসা ও তাঁর জন্য দোয়া করলেন ।

১. ইসহাক নামে এক ব্যক্তি বলেন ,আমিও ইমামের কাছে প্রশ্ন করার জন্য একটি কাগজে দশটি প্রশ্ন লিখে রেখেছিলাম। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলাম যে ,ইমাম যদি আমার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেন ,তাহলে আমার জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানাব। বলব আমার স্ত্রী অন্তসত্তা ,আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন ঐ সন্তান ,পুত্র সন্তান হয়। সভা দীর্ঘায়িত হতে দেখে চিন্তা করলাম আজ না হয় থাক ,কাল এসে প্রশ্নগুলি ইমামকে নিবেদন করব। ইমাম (আ.) আমাকে উঠতে দেখে বললেন , হে ইসহাক ,আল্লাহ্ আমার দোয়া কবুল করেছেন ,তোমার একটি পুত্র সন্তান হবে ,তার নাম রেখ আহমাদ। ’ আল্লাহর শোকর আদায় করে বললাম নিঃসন্দেহে ইনিই (ইমাম জাওয়াদ) হচ্ছেন পৃথিবীর বুকে আল্লাহর হুজ্জাত বা স্পষ্ট দলিল।

ইসহাক দেশে ফিরে গেল। আল্লাহ্ তাকে একটি সুন্দর পুত্র সন্তান দান করলেন। ইসহাক ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর নির্দেশানুসারে ছেলেটির নাম আহমাদ রাখল। (উয়ুনুল মুজিযাত ,পৃ. ১০৯)

২. ইমরান ইবনে মুহাম্মদ আশয়ারী বলেন ,ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর নিকটে গেলাম। আমার কাজ শেষে ইমামকে বললাম : উম্মুল হাসান আপনাকে সালাম জানিয়েছে এবং তার কাফনের জন্য আপনার একটা পোশাক চেয়েছে। ইমাম এরশাদ করলেন : তার জন্য এটার আর প্রয়োজন নেই।

আমি চলে গেলাম কিন্তু ইমামের এ কথার অর্থ বুঝতে পারলাম না। দেশে ফিরে জানতে পারলাম যে ,আমি ইমামের সান্নিধ্যে পৌঁছানোর ১৩-১৪ দিন পূর্বেই উম্মুল হাসান মারা গিয়েছে।

৩. আহমদ ইবনে হাদীদ বলেন ,আমরা একদল হজ্বব্রত পালন করতে মক্কায় যাচ্ছিলাম ,পথিমধ্যে ডাকাতরা আমাদের পথ রোধ করে সমস্ত মালপত্র ছিনিয়ে নিয়ে গেল। মদীনায় পৌঁছে ইমাম জাওয়াদের সাথে সাক্ষাৎ করে ,ঘটনা খুলে বললাম। ইমাম জাওয়াদ (আ.) আমাদেরকে টাকা-পয়সা ও পোশাক-পরিচ্ছদ দান করলেন এবং বললেন : তোমাদের যার যে পরিমাণ অর্থ ডাকাতি হয়েছে সকলে সে পরিমাণে এ থেকে ভাগ করে নাও। ভাগ করে দেখা গেল ,ডাকাতরা যে পরিমাণ অর্থ আমাদের কাছ থেকে ডাকাতি করেছিল ,ইমাম জাওয়াদ (আ.) ঠিক সেই পরিমাণ অর্থ আমাদেরকে দান করেছিলেন ,তা অপেক্ষা কমও নয় বা বেশিও নয় (বিহারুল আনওয়ার ,৫০তম খণ্ড ,পৃ. ৪৩) ।

৪. মুহাম্মদ ইবনে সাহল কুমী বলেন : মক্কায় সর্বস্ব হারিয়ে মদীনায় ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর নিকটে গেলাম। মনে করেছিলাম ইমামের কাছে পরিচ্ছদ প্রার্থনা করব কিন্তু তার পূর্বেই সিদ্ধান্ত নিলাম যে ,আমার আবেদন কাগজে লিখে জানাব এবং তাই করলাম। অতঃপর মসজিদে নববীতে গিয়ে স্থির করলাম দু ’ রাকাত নামাজ পড়ব এবং শতবার আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করব। যদি আমার অন্তর চিঠিটা ইমামের কাছে দিতে বলে তবে তাই করব আর যদি অন্তর সায় না দেয় তবে ছিঁড়ে ফেলব। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। কিন্তু আমার অন্তর বলল চিঠিটা না দিতে। তাই চিঠিটি ছিঁড়ে ফেলে মক্কা অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম। কিছুদুর না যেতেই দেখতে পেলাম ,এক ব্যক্তি রুমালে মুড়িয়ে কিছু পোশাক নিয়ে কাফেলার মধ্যে আমাকে খুঁজছিল। আমার কাছে পৌঁছে পোশাকগুলো বাড়িয়ে দিয়ে বলল , তোমার মাওলা (ইমাম জাওয়াদ) এ পরিচ্ছদগুলো তোমার জন্য পাঠিয়েছেন ’ (খারায়েজে রাভান্দি ,পৃ. ২৩৭ ;বিহারুল আনওয়ার ,৫০তম খণ্ড ,পৃ. ৪৪) ।

৫. বৃক্ষটি ফলবান হওয়া : মামুন ,ইমাম জাওয়াদকে মদীনা থেকে বাগদাদে নিয়ে আসল এবং ইমামের সাথে তার কন্যাকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করল। কিন্তু ইমাম বাগদাদে না থেকে স্ত্রীকে নিয়ে মদীনায় ফিরে আসলেন।

ফেরার পথে জনগণ ইমামকে বিদায় জানাতে শহরের শেষ পর্যন্ত এসেছিল। মাগরিবের নামাজের সময় ইমাম এক মহল্লায় পৌঁছান ,সেখানে একটি পুরাতন মসজিদ ছিল। নামাজ পড়ার জন্য তিনি সেখানে গেলেন। মসজিদের আঙ্গিনায় একটি কুল গাছ ছিল কিন্তু তাতে কখনো ফল হতো না। ইমাম জাওয়াদ ওজুর পানি চাইলেন এবং ঐ বৃক্ষের গোড়ায় ওজু করলেন। জামায়াতবদ্ধভাবে হয়ে নামাজ পড়েলেন। অতঃপর চার রাকাত নফল নামাজ পড়ে সেজদাবনত হয়ে আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। অতঃপর জনগণের কাছে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। পরের দিন সকালে দেখা গেল গাছটিতে ফুল ধরেছে এবং কিছুদিন পর গাছটি ফলে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। জনগণ এ দৃশ্য দেখে খুবই আশ্চর্যান্বিত হলো (নূরুল আবসার শাবলানজী ,পৃ. ১৭৯ ;ইহকাকুল হাক ,১২তম খণ্ড ,পৃ. ৪২৪) । শেখ মুফিদ ও এ গাছটি দেখে ছিলেন এবং তার ফলও খেয়েছিলেন।


2

3

4