ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান 0%

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান লেখক:
প্রকাশক: আলে রাসূল পাবলিকেশন্স
বিভাগ: ইতিহাস

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

লেখক: মোঃ নুরুল মনির
প্রকাশক: আলে রাসূল পাবলিকেশন্স
বিভাগ:

ভিজিট: 34333
ডাউনলোড: 3315

পাঠকের মতামত:

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 27 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 34333 / ডাউনলোড: 3315
সাইজ সাইজ সাইজ
ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

লেখক:
প্রকাশক: আলে রাসূল পাবলিকেশন্স
বাংলা

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمنِ الرَّحيمِ

আল্লাহর নামে (শুরু করছি) যিনি অতিশয় দয়াল (সাধারণভাবে সবার জন্যে) এবং

পরম করুণাময় (বিশেষ কিছ ব্যক্তির জন্যে এবং বিশেষ ক্ষেত্রে)

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

[এহসানের প্রতিদানে এহসান ছাড়া আর কী হতে পারে ? (55:60) ]

লেখক : মোঃ নুরুল মনির

[কলামিস্ট , গবেষক ও ইসলামি চিন্তাবিদ]

মুঠোফোন : 01680042969

সম্পাদনায় : মকবুল হোসেন মজুমদার

(সম্পাদনা সহকারী , দৈনিক ইনকিলাব)

স্বত্ব : লেখক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রকাশকাল : একুশে বইমেলা 2014

প্রচ্ছদ : এম. এন. মুনির

প্রকাশনায় : আলে রাসূল পাবলিকেশন্স

প্লট-21 , রোড-1 , আরাম মডেল টাউন , বসিলা , মোহাম্মদপুর , ঢাকা-1207।

পরিবেশনায় :

র‌্যামন পাবলিশার্স , আলী রেজা মার্কেট ,

26 , বাংলাবাজার , ঢাকা। ফোন : 9515228

সদর প্রকাশনী , ইসলামি টাওয়ার (3য় তলা) ,

11 , 11/1 , বাংলাবাজার , ঢাকা। ফোন: 7124812

Islamay Hazrat Abu Talib-er Abodan -by MD. Nurul Monir, Edit by Mokbul Hossain Mojumder Published by Ale Rasul Publications, Plot-21, Road-1 Aram Model Town, Bosila, Mohammadpur, Dhaka-1207 Phone: 01776060676, 01973364529

E-mail: ale.rasul@outlook.com

উৎসর্গ

মহান আল্লাহ পাকের অসীম করুণায় লেখা এ বইটি ইমামতের ধারার সর্বশেষ ইমাম , মহাকালের ত্রাণকর্তা , আল্লাহর মনোনীত জীবন্ত প্রতিনিধি , বাকীয়াতুল্লাহ , আল-কায়েম , আল-মুনতাজার , আল-মুনতাক্বীম , যাঁর আগমণে সমগ্র বিশ্ব শোষণ , নির্যাতন , অত্যাচার , নীপিড়ন , দুর্নীতি ধোঁকা ও বৈষম্য মুক্ত হবে। যিনি গড়ে তুলবেন অন্ধকার ও কুসংস্কারমুক্ত বিশ্ব। সেই মহান ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর নামে উৎসর্গ করা হলো -আমিন।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার

আমি সর্বপ্রথমে কৃতজ্ঞতার সাথে শুকরিয়া আদায় করছি পরম করুণাময় আল্লাহ রব্বুল আলামিনের যাঁর অপার মহিমায় আমার মতো নগণ্য ক্ষুদ্র ব্যক্তি মহান আল্লাহর মনোনীত নবী মোহাম্মদ (সা.) যিনি সর্বজ্ঞানের নগরী , তাঁর আপন চাচা ও জ্ঞান নগরীর দরজা হযরত আলীর পিতা হযরত আবু তালিবের ওপর একটি বই লেখার তৌফিক দান করেছেন। আমার সেই সকল ভাই , বন্ধু ও শুভাকাঙ্খি যাদের উৎসাহ উদ্দীপনা ও সহযোগিতায় আমি এ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। সর্বজনাব ভাই ইরশাদ আহ্ম্মেদ , মাওলানা স্যাইয়েদ নাকী ইমাম রিজভী , মাওলানা হাশেম আব্বাস , মাওলানা মোবারক সালমান , মাওলানা আমানুল্লাহ কাতিব , মুহাম্মদ ইরফানুল হক , ড. জহির উদ্দিন মাহমুদ , শামীম হায়দার , রাশেদ হায়দার , ওয়াকার হোসেন , রফিকুল ইসলাম , মো: শাজাহান , শাহ কফিল উদ্দিন , রফিক উল্যাহ চৌধুরী , আবু জাফর মন্ডল , রাজু আহ্ম্মেদ , তারিফ হোসেন রানা , ওবায়দুর রহমান , আকবর হোসেন , আনোয়ার হোসেন , সাফদার ইমাম , মো: শাহেদ , শাকিল আহ্ম্মেদ , জাকির আলী , রাসেদুল ইসলাম , মারুফ হোসেন , হারুন অর-রশিদ ও শাহবাজ আহম্মেদ সহ দাওয়াতী মিশনের সকল ভাইদের জন্য রইল সালাম ও শুভেচ্ছা , -লেখক।

ভূমিকা

মহান সৃষ্টিকর্তার নামেই শুরু করছি, পবিত্র কোরআনের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি আল্লাহ পাকের মনোনীত দ্বীন হলো ইসলাম 1 । এই ইসলামকে যিনি সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব নবী-রাসূলগণের সর্দার হযরত মোহাম্মদ (সা.) । যে নবী (সা.)-এর আগমণ না হলে আমরা মহান আল্লাহ সম্পর্কে কিছুই জানতে পারতাম না, জানতে পারতাম না কোরআন সম্পর্কে, জানতে পারতাম না দ্বীন সম্পর্কে, এমনকি জানতে পারতাম না আমাদের অস্তিত্ব সম্পর্কেও। তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার যে, নবী (সা.) সমগ্র দুনিয়ার মানুষকে জাহেলী যুগের অন্ধকার থেকে মুক্ত করে গেছেন। আর সেই জাহেলী ভাব যদি এখনো মুসলমানদের মাঝে পরিলক্ষিত হয়, তবে কি আমরা ভেবে নেব যে, কোরআনের আলো যাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি তারা কি আজও অন্ধকারে নিমজ্জিত?

এমনই অসংখ্য অমিল অসংগতিপূর্ণ বিষয় বরাবরই আমাদের অন্তরকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলছে। এসকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার জন্যই আমি বিভিন্ন সময়ে স্বনামধন্য আলেম-ওলামা ও বুজর্গগণের স্মরণাপন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু যথাযথ উত্তর না পাওয়ার কারণেই পবিত্র কোরআন, হাদীস ও ইসলামের ইতিহাসের গবেষণামূলক অধ্যয়নে রত হই। অতঃপর সত্য উন্মোচনে কিছু লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যে প্রশ্নগুলো আমাকে সদা বিব্রত করত, তার কিছু অংশ পাঠকের উদ্দেশে বর্ণনা করছি। যেমন: পবিত্র হাদীস-আল-কিসায় নবীকন্যা ফাতেমা যাহরা (সা.আ.) থেকে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী বর্ণনা করেন। মহান আল্লাহ পাক বলেছেন: যদি আমি মোহাম্মদকে সৃষ্টি না করতাম তবে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তথা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতাম না। 2

তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, নবী (সা.) না হলে তো আমরা আল্লাহর পরিচিতি, ইসলাম কিংবা মুসলমান-এর কোনটাই পেতাম না। তাহলে যিনি বা যাঁরা নবী (সা.)-কে লালন-পালন করেছেন, তারা তো ইসলামকেই লালন-পালন করেছেন। যাঁরা নবী (সা.)-কে আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁরা তো ইসলামকেই আশ্রয় দিয়েছেন। যারা নবী (সা.)-এর জন্য যুদ্ধ করেছেন, তাঁরা তো ইসলামের জন্যই যুদ্ধ করেছেন। আর যে মহিয়সী নারী নিজের সমস্ত ধন-সম্পদ নবী (সা.)-এর দ্বীন রক্ষায় বিলিয়ে দিয়েছেন, তিনি তো ইসলামকেই সাহায্য করেছেন এবং দ্বীন ইসলামকেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই মহান প্রভু তাঁদের সেই অবদানের প্রতিদান দিতে ও কার্পণ্য করেননি। পবিত্র কোরআনের সূরা আদ-দ্বোহার 6 ও 8 নং আয়াতে ঐসকল মুমিন-মুমিনাতের কর্মের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের কাজকে প্রভু নিজের কর্ম হিসেবে প্রকাশ করেছেন। রব্বুল আলামীন বলছেন:

) أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَىٰ وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَىٰ(

তিনি কি আপনাকে এতিম রূপে পাননি? অতঃপর আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব রূপে, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন। 3 যদি আমরা উল্লিখিত আয়াতসমূহের গভীরে প্রবেশ করি এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মিলিয়ে দেখি তবে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে নবী (সা.)-কে এতিম অবস্থায় আশ্রয় দিয়েছেন দুই মহান ব্যক্তি। একজন তাঁর দাদা আবদুল মোতালিব, অপরজন চাচা আবু তালিব। আর নিঃস্ব অবস্থায় অভাবমুক্ত করেছেন বিবি খাদীজাতুল কোবরা। এই তিন মুমিন-মুমিনার কর্মকাণ্ড এতোটাই প্রশংসনীয় যে, তাঁদের কৃতকর্মকে আল্লাহ পাক নিজ কর্ম বলে স্বীকৃতি প্রদান করছেন। তাহলে মূল প্রসঙ্গে আসি, আমাদের সমাজের সেই সব আলেম যারা তাদের ওয়াজ-মাহফিল কিংবা লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন, “ নবী (সা.)-এর চাচা হযরত আবু তালিব নাকি ঈমান আনেননি। নবী (সা.) বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি তিনি চাচাকে ঈমান আনার জন্য কানে কানেও আহ্বান করেছিলেন। কিন্তু চাচা নাকি ঐ অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় ইসলামের জন্য যিনি অসংখ্য ত্যাগ-তিতীক্ষা ও অবদান রেখে গেছেন। তার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে এই প্রচার প্রচারণা। আর যারা তা করছেন তারাই বা কোন ইসলাম প্রচার করছেন?

তাই সেই মুহসিনে ইসলাম হযরত আবু তালিব, ইসলামের জন্য যে এহসান করেছেন তার কিছু অংশ আমি পাঠকের সামনে তুলে ধরছি। মহান খোদার একত্ববাদের প্রথম ঘোষণার সকল ব্যবস্থা হাশেমি বংশের উজ্জ্বল নক্ষত্র এই আবু তালিবই সর্বপ্রথম দাওয়াত-এ-জুলআসিরা’- র মাধ্যমে সুসম্পন্ন করেছিলেন। সমগ্র আরবের কাফের সর্দারদের উত্তম আপ্যায়নের মাধ্যমে তিনি মোহাম্মদ (সা.)-এর খোদায়ী মিশন ও একত্ববাদের ঘোষণার সকল বন্দোবস্ত করেছিলেন। পরপর দুই দিন কাফের সর্দারেরা ভোজন শেষে চলে যায়। তৃতীয় দিন হয়রত আবু তালিব তরবারি উন্মুক্ত করে বলেছিলেন, “ হে সর্দারগণ তোমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থানে অপেক্ষা করো যতক্ষণ পর্যন্ত আমার ভাতিজা মোহাম্মদ তাঁর বক্তব্য শেষ না করে । কাফেরেরা সেদিন আবু তালিবের নির্দেশ অমান্য করার সাহস পায়নি।4 ইসলামের ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে ঐ দিনই আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রকাশ্যে জনসম্মুখে একত্ববাদের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “ শোনো হে সর্দারগণ! আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয় তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি আমাদের ও তোমাদের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, তিনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই। তাঁকে বাদ দিয়ে তোমরা যেসকল দেব-দেবীর পূজা করছ তা তোমাদের কোনো কল্যাণে আসবে না। কোনো দেব-দেবী আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত নয়। এগুলো তোমাদের বাপ-দাদা ও পূর্বপুরুষদের সৃষ্টি। আল্লাহর সমকক্ষ কোনো শক্তিই নেই। তিনি সর্বশক্তিমান। আমি তার দাসদের অন্যতম। আর আজকের দিনে আল্লাহর কাজে যে আমাকে সাহায্য করবে সে হবে আমার ওয়াসী, আমার বন্ধু, আমার সাহায্যকারী ও আমার ভাই। তখন উপস্থিত লোকজনের মধ্য থেকে হযরত আবু তালিবের কিশোর পুত্র হযরত আলীই নবী (সা.)-এর সাহায্যকারী হওয়ার স্বীকৃতি প্রদান করে দাঁড়িয়েছিলেন। নবী (সা.) তাঁকে বসার জন্য ইঙ্গিত করলেন। নবী (সা.) একই কথা তিনবার উচ্চারণ করে দেখতে চেয়েছিলেন কোরাইশ সর্দারদের মধ্য থেকে কেউ তাঁর সাহায্যকারী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন কি না? কিন্তু না ঐ তিনবারই উঠে দাঁড়িয়েছিলেন হযরত আবু তালিবেরই সন্তান আট বছরের কিশোর আলী। আর ঐ সভাতেই নবী (সা.) তাঁর ওয়াসীর ঘোষণা প্রদান করেন, শুধু দুনিয়াতে নয় আখেরাতের জন্যেও।

পাঠকের অবগতির জন্য আরো কিছু বিষয় আমি তুলে ধরছি। শুধু যে হযরত আবু তালিব এবং তাঁর পুত্র আলী, নবী (সা.)-কে ভালোবাসতেন তা কিন্তু নয়। হযরত আবু তালিবের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিকট আত্মীয়দের মধ্যে এমন কোনো সদস্য ছিলেন না যে, এক মুহূর্তের জন্যও মোহাম্মদ (সা.)-কে শত্রুদের সম্মুখে একা ছেড়ে গেছেন। এমনিভাবে হযরত আবু তালিব ও তাঁর পরিবার পরিজন ইসলামের নবী (সা.)-এর সাহায্যকারী ছিলেন মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত। মক্কার কাফেররা যখন মোহাম্মদ (সা.)-কে লোভ-লালসা দেখানোর পরেও ইসলাম প্রচার থেকে বিরত রাখতে সক্ষম হলোনা এবং হাশেমিদের সাথে যুদ্ধেও মোকাবিলার সাহস পাচ্ছিল না। তখন তারা নতুন কৌশল অবলম্বন করল। মোহাম্মদ (সা.)-কে আশ্রয়দানকারী হযরত আবু তালিব ও তাঁর পরিবার পরিজনদেরকে একঘরে করে দেয়ার নীতি অবলম্বন ও সমাজ থেকে তাঁদেরকে বয়কট করার ঘোষণা এবং কাবার দেয়ালে কাফের সর্দাররা তাদের স্বাক্ষরিত শপথপত্র ঝুলিয়ে দিল। এমনসব প্রতিকূল পরিবেশ ও অবরোধ সত্ত্বেও হযরত আবু তালিব, মোহাম্মদ (সা.)-এর ওপর বিন্দুমাত্র আঁচড় যেন না আসে সে ব্যবস্থাই করেছিলেন। তিনি ভাতিজাকে নিয়ে সপরিবারে মক্কার অদূরে পাহাড়ের পাদদেশে একটি উপত্যকায় অবস্থান নিলেন। আর এই অবস্থার অবসান ঘটতে সময় লেগেছিল তিন বছরেরও অধিক সময়কাল। আবু তালিবের পাহাড়ের উপত্যকায় অবস্থানের ঐ স্থানটি আজও ইসলামের ইতিহাসে শেবে আবু তালিব নামে পরিচিত। হযরত আবু তালিব নবী (সা.) ও ইসলামের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণে সকল কাজের আন্জাম দিয়ে গেছেন। তদুপরি যেসব আলেম এই মহান ব্যক্তির সৎ কাজের স্বীকৃতির পরিবর্তে তাঁর ঈমান না আনার তির ছুঁড়ছেন। তারা কি হযরত আবু তালিবের এহসানের পরিবর্তে তাঁর প্রতি জুলুম করছেন না? অথচ মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনের সূরা আর-রহমানের 60নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন:

) هَلْ جَزَاءُ الْإِحْسَانِ إِلَّا الْإِحْسَانُ (

অর্থাৎ এহসানের প্রতিদানে এহসান ছাড়া আর কি হতে পারে ? উক্ত বইটিতে যে সকল ঐতিহাসিক বিষয়ের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তার তথ্য সূত্র সমূহ সংখ্যা নির্ধারণ পূর্বক বিভিন্ন পাতার নিম্নাংশে উল্লেখ করা হয়েছে

হযরতআবু তালিবের পরিচয়

নবী ইব্রাহিম (আ.)-এর পুত্র নবী ইসমাইল (আ.)-এর বংশ ধারায় জনাব আবদে মানাফ, হাশেম তদীয় পুত্র আবদুল মোতালিব ও তাঁর পুত্র হযরত আবু তালিব। মহান আল্লাহ পাক মানবজাতিকে অন্ধকারমুক্ত করে আলো দান করার নিমিত্তে তাঁর পক্ষ থেকে রেসালাতের যে ধারার প্রবর্তন করেন সেই ধারাবহিকতায় নবী আদম (আ.) থেকে হযরত মোহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত অসংখ্য নবী-রসূল প্রেরণ করেছেন। এখানে জানা থাকা দরকার যে, উল্লিখিত ধারার অনেকেই ছিলেন নবী-রাসূলগণের উত্তরাধিকারী বা ওয়াসী পদে মনোনীত। আবার কারো কারো মনোনয়ন ছিল কাবা ঘরের মোতাওয়াল্লী বা তত্ত্বাবধায়ক পদে। যেহেতু মহানবী (সা.)-এর পরবর্তিতে আর কোনো নবী নেই, তাই মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর প্রচলিত ধারাকেই ইমামত’- এর ধারায় প্রবাহিত করে কেয়ামত পর্যন্ত প্রবহমান রেখেছেন। আর সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে এধারায় যাঁরা নেতৃত্ব দিবেন তাঁরাই হচ্ছেন ইমাম । এই ইমামদের শুরু হযরত আলী থেকে এবং শেষ ইমাম মাহ্দী (আ.) পর্যন্ত। আবু তালিব এমনই এক ভাগ্যবান ব্যক্তি যাঁর বংশে আল্লাহর মনোনীত নবী এবং ইমাম দুটিই রয়েছে। আর মহান সৃষ্টিকর্তা এই বংশের গুণিজনদের হাতেই রেখেছেন কাবার কর্তৃত্ব।

বরাবরই কাবার কর্তৃত্ব হাশেমিদের হাতে ছিল, আবু তালিবের পূর্বে তাঁর পিতা আবদুল মোতালিব, তাঁর পূর্বে তাঁর দাদা হাশেম এমনিভাবে তাঁদের পূর্ব পুরুষগণ। কথিত আছে একবার দাদা হাশেমের সময় যখন আরবে দূঃর্ভিক্ষ দেখা দিল তখন তিনি দূঃর্ভিক্ষ মোকাবিলায় খাদ্য সরবরাহ করে আরব-অনারব সকলের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। আর এই অবস্থা চলেছিল প্রায় তিন মাসব্যাপী।5

দাদা হাশেমের মতোই হযরত আবু তালিব ছিলেন জনদরদী, কোমলমতি ও দানশীল। তৎকালীন আরবে গোত্রদ্বন্দ্ব আর বাহুশক্তির প্রদর্শন ছিল যত্রতত্র। কিন্তু হাশেমিদের সম্মুখে তরবারি উন্মুক্ত করার সাহস সকলের ছিল না। আর যখনই কোনো গোত্রীয় সমস্যা সমাধান হচ্ছিল না, তখন সমাধানের একটিমাত্র উপায় ছিলেন হযরত আবু তালিব। জীবনে বহুবার তিনি আরব অনারবদের নানামুখি সমস্যার সমাধান করেছেন। একারণেই সমগ্র আরবে তাঁর প্রভাব বিস্তার লাভ করে। পেশীশক্তির চেয়ে কৌশল অবলম্বনে সমাধানের পথ বের করায় তিনি ছিলেন এক অনবদ্য কিংবদন্তি। হযরত আবু তালিব জীবনে একমুহূর্তের জন্যেও কোনো মূর্তি কিংবা দেব-দেবীর স্মরণাপন্ন হয়েছেন এমন প্রমাণ পৃথিবীতে কোন লেখক ঐতিহাসিক কিংবা উপন্যাসিক উপস্থাপন করতে সক্ষম হননি। অথচ যারা অনায়াসে বলে ফেলেন, “ আবু তালিব ঈমান আনেননি । তারা কি নিজেদের ঈমান পরিমাপের কোনো মানণ্ড স্থাপন করেছেন? যে মহান ব্যক্তির সৎকর্মকে আল্লাহ পাক নিজের কর্ম বলে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন অথচ অধিকাংশ মুসলমান তা ভুলে গেলেন। আল কোরআনের সূরা আদ-দ্বোহা, 6 নং আয়াতটির প্রতি গভীর দৃষ্টিপাত করুন :

) أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَىٰ(

“ তিনি কি আপনাকে এতিম অবস্থায় পাননি , অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন ”

আব্দুলমোতালিবের দৃষ্টিতে হযরত আবু তালিব

ইতিহাসের নানা পর্যায়ের দালিলিক প্রমাণের দিকে দৃষ্টি দিলে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে , কোনো কোনো স্বচ্ছ অন্তরের অধিকারী ও ভবিষ্যৎ প্রবক্তা ব্যক্তিবর্গ আব্দুল মোতালিবকে মহানবী (সা.)-এর উজ্জ্বল ভবিষ্যত এবং তাঁর নবুওয়্যত সম্পর্কে অবহিত করেন। যেমন , সাইফ ইবনে জিইয়াজান যখন আবিসিনিয়ার শাসনভার গ্রহণ করেন তখন আব্দুল মোতালিব এক প্রতিনিধি দলের প্রধান হয়ে তার দরবারে উপস্থিত হন। বাদশাহ কিছু মনোজ্ঞ ও বাগ্মীতাপূর্ণ ভাষণের পর তাঁকে (আব্দুল মোতালিবকে) সুসংবাদ দেন যে , আপনার বংশে এক সম্মানিত নবী (সা.)-এর আগমণ ঘটবে। অতঃপর তিনি মহানবী (সা.)-এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেন: তাঁর নাম হবে মুহাম্মাদ। (শৈশবেই) তাঁর বাবা-মা মৃত্যুবরণ করবেন এবং তাঁর দাদা ও চাচা তাঁর দেখাশুনার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তিনি বিশ্বনবী (সা.) র আরো কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনার পর আব্দুল মোতালিবকে বলেন: নিঃসন্দেহে আপনি তাঁর পিতামহ (সিরায়ে হালাবি) আব্দুল মোতালিব এ সুসংবাদ শোনার পর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে উক্ত পবিত্র শিশু সম্পর্কে বললেন: আমার অতি প্রিয় এক সন্তান ছিল , তাঁর নাম ছিল আব্দুল্লাহ। এক মহিমান্বিত রমণীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ দিলাম যার নাম , আমেনা বিনতে ওয়াহাব ইবনে আব্দে মানাফ ইবনে যোহরাহ। সেই রমণী একটি জ্যোতীর্ময় পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় যার নাম রেখেছি মুহাম্মাদ। কিছু কাল পর তাঁর পিতা-মাতা ইন্তেকাল করলে আমি ও তাঁর চাচা (আবু তালিব) তাঁর দেখাশুনার দায়িত্ব নেই। (সিরায়ে হালাবি) এটা স্পষ্ট যে , আব্দুল মোতালিব ও এতিম শিশু মোহাম্মদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত সম্পর্কে অবহিত ছিলেন বলেই তিনি নিজের পর এই শিশুর প্রতিপালনের দায়িত্ব নিজের সবচেয়ে প্রিয় সন্তান আবু তালিবের হাতে অর্পণের উদ্যোগ নেন এবং অন্যদেরকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন। এতে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে , আবু তালিব নিজের একত্ববাদী মু মিন পিতার দৃষ্টিতে ঈমানের ঐ উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাই আব্দুল মোতালিবের দৃষ্টিতে তাঁর সন্তানদের মধ্য থেকে কেবল তিনিই রাসূল (সা.)-এর লালন-পালনের জন্য যোগ্য ও বিবেচিত হলেন।

পবিত্র কাবার দায়িত্ব গ্রহণ ও আরবে হযরত আবু তালিবের প্রভাব

হযরত আবদুল মোতালিব ইন্তেকালের পূর্বেই তাঁর পুত্রগণের মধ্যে থেকে হযরত আবু তালিবকে কাবার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে মনোনীত করেন। তিনি জানতেন খোদার ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের গুরু দায়িত্ব বহন করার ক্ষমতা একমাত্র আবু তালিবেরই রয়েছে। মহানবী (সা.)-এর দাদা হযরত আবদুল মোতালিব ছিলেন মহান খোদার একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার একনিষ্ঠ সৈনিক। যার প্রমাণ এইযে , তিনি তাঁর প্রিয় সন্তানের নাম রেখেছিলেন আবদুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর দাস। যিনি ছিলেন নবী (সা.)-এর পিতা। শুধু তাই নয় আবদুল মোতালিব এটাও জানতেন যে , এই শিশু মোহাম্মদই একদিন সমগ্র বিশ্বে সৃষ্টিকর্তার প্রকৃত দ্বীনের প্রসার ঘটাবেন। তাই তিনি ইন্তেকালের পূর্বে আবু তালিবকে সতর্ক করে বলেছিলেন , হে পুত্র! মনে রেখো , মোহাম্মদ হচ্ছে আমাদের বংশের গর্বের প্রতীক। তাঁর চালচলন অন্য সকলের থেকে আলাদা। তাঁকে সর্বসময়ে চোখে চোখে রেখো। একদিন তাঁর সুনাম সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে অথচ তাঁর শত্রুর সংখ্যাও কম হবে না। পিতার এই সতর্কবাণী হযরত আবু তালিব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। হযরত আবু তালিব নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সদা সচেতন ছিলেন। পবিত্র কাবার মোতাওয়াল্লী বা তত্ত্বাবধায়ক মনোনীত হওয়ায় তিনি মক্কাবাসী তথা আরব অনাবর সকলের নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। কথিত আছে 584 খ্রিস্টাব্দে অনাবৃষ্টির কারণে মক্কায় দুঃর্ভিক্ষ দেখা দেয়। মক্কাবাসীরা হযরত আবু তালিবের কাছে এসে বললেন , হে আবু তালিব , আপনি আমাদের বুজুর্গ ও পবিত্র ঘরের মোতাওয়াল্লী। কাবায় গিয়ে দোয়া করুন যেন বৃষ্টি হয়। আল্লাহর কৃপায় আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। হযরত আবু তালিব শিশু-কিশোর ও কোরাইশ লোকজনদের নিয়ে কাবায় গেলেন। সাথে ভাতিজা কিশোর মোহাম্মদকেও নিলেন। উপস্থিত লোকজনের সম্মুখে মোহাম্মদ (সা.)-এর হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে বললেন , হে মোহাম্মদ! প্রার্থনা কর রবের কাছে যেন এই অবস্থার অবসান ঘটে

নবী (সা.)-এর হাত আল্লাহর কাছে সকল অবস্থায় গ্রহণযোগ্য , হযরত আবু তালিব তা জানতেন। মুহূর্তের মধ্যে কালো মেঘে আকাশ ছেঁয়ে গেল , বৃষ্টি নেমে এলো। আর এমন বৃষ্টি হলো যে , চারিদিকে কেবল পানি আর পানি। হযরত আবু তালিব জানতেন ভাতিজা মোহাম্মদের হাতের মর্যাদা মহান আল্লাহ পাক অবশ্যই রক্ষা করবেন।6

পবিত্র কোরআনে সূরা বাকারার 124 নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন :

) وَإِذِ ابْتَلَىٰ إِبْرَ‌اهِيمَ رَ‌بُّهُ بِكَلِمَاتٍ فَأَتَمَّهُنَّ قَالَ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامًا قَالَ وَمِن ذُرِّ‌يَّتِي قَالَ لَا يَنَالُ عَهْدِي الظَّالِمِينَ(

যখন ইব্রাহীমকে তাঁর পালনকর্তা কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা করলেন , অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করলেন। তখন আল্লাহ বললেন নিশ্চয় আমি তোমাকে মানব জাতির জন্য ইমাম মনোনীত করলাম। তিনি তখন বলেছিলেন তবে কি আমার বংশধরদের জন্যও এ প্রতিশ্রুতি রয়েছে ? আল্লাহ বললেন , আমার অঙ্গীকার জালেমদের জন্য প্রযোজ্য নয়

উক্ত আয়াতে এটা সুস্পষ্ট যে , আল্লাহর রেসালেতের ধারা কিংবা আল্লাহর ঘরের কর্তৃত্ব তিনি কোনো জালেম কিংবা কাফেরের হাতে ন্যস্ত করেননি।

মহান প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নবী ইব্রাহীম (আ.)-এর বংশের দু ধারাতে এ মনোনয়ন অব্যাহত রেখেছেন। একটি নবী ইসহাক , ইয়াকুব , ইউসুফ , জাকারীয়া , মুসা (আ.) থেকে এরূপে নবী ঈসা (আ.) পর্যন্ত। বনী ইসরাইলীদের যত নবী এসেছেন তাঁরা সকলেই পরস্পরের পিতা-পুত্র বা বংশধর। এ ধারার পরিসমাপ্তি ঘটে নবী ঈসা (আ.) পর্যন্ত। কেননা তিনি কোনো সন্তান রেখে যাননি। আর অপর ধারাটি নবী ইব্রাহীমের পুত্র ইসমাইল (আ.) থেকে প্রবাহিত হয়। এ বংশের ধারাই কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর পূর্বে ও তৎপরবর্তী সময়ে কেয়ামত পর্যন্ত এ বংশের বিনয়ী সন্তানগণ কাবার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত।

হযরত আবু তালিবের প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পর্কে মক্কার কাফের সর্দারেরাও ভালোভাবে অবগত ছিল। একবার রাসূল (সা.)-কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। হযরত আবু তালিব শুনেছিলেন কোরাইশ কাফেরেরা তাকে ধোঁকা দিয়ে হত্যা করার পাঁয়তারা করছে। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি অসংখ্য হাশেমি সাহসী যুবকদের নির্দেশ দিলেন , নিজেদের পোশাক অভ্যন্তরে তরবারি গোপন রেখে সকল কাফের সর্দারের ওপর নজর রাখার জন্য। যদি মোহাম্মদকে না পাওয়া যায় তবে কারো নিস্তার নেই । সকল কাফেরদের থেকে প্রতিশোধ নেয়া হবে। কেননা মোহাম্মদ (সা.)-এর রক্ত সমগ্র কোরাইশদের রক্তের চেয়ে অধিক মূল্যবান।

মোহাম্মদ (সা.)-কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না শুনে কাফেররাও বিচলত হয়ে পড়ে। অবশেষে বিকেল বেলায় হযরত আবু তালিব নবী (সা.)-কে পাহাড়ের ঢাল থেকে খুঁজে বের করেন। তিনি লোকালয় ছেড়ে নীরবে নিভৃতে ঐশী ধ্যানের লক্ষ্যে সেই স্থানে গিয়ে ছিলেন। মোহাম্মদ (সা.)-কে সাথে নিয়ে হযরত আবু তালিব কোরাইশদের উদ্দেশে বলেন , তোমরা কি জানো আমাদের ইচ্ছা কী ছিল ? যদি তোমরা মোহাম্মদকে হত্যা করতে তাহলে তোমাদের মধ্যেকার একজনও আজ জীবিত থাকত না।

তারপর নিজদলীয় যুবকদের ধারালো তরবারিগুলো প্রদর্শনের হুকুম দিলেন , যাতে কোরাইশরা হযরত আবু তালিবের প্রস্তুতি সম্পর্কে বুঝতে পারে। অসংখ্য তরবারির ঝলকানি দেখে সর্দারদের চেহারা মলিন হয়ে গেল। ভাটা পড়ে যায় তাদের উদ্যমে , আবু জাহেল হতভম্ব হয়ে ঐ স্থান ত্যাগ করে।7