ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান 0%

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান লেখক:
প্রকাশক: আলে রাসূল পাবলিকেশন্স
বিভাগ: ইতিহাস

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

লেখক: মোঃ নুরুল মনির
প্রকাশক: আলে রাসূল পাবলিকেশন্স
বিভাগ:

ভিজিট: 34521
ডাউনলোড: 3394

পাঠকের মতামত:

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 27 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 34521 / ডাউনলোড: 3394
সাইজ সাইজ সাইজ
ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান

লেখক:
প্রকাশক: আলে রাসূল পাবলিকেশন্স
বাংলা

প্রকৃত সত্য উদঘাটনে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা

হাদীসে কুদ্সীর মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি মহান আল্লাহ পাক তাঁর নিজ পরিচয় প্রকাশের নিমিত্তে সর্ব প্রথম নূর-এ-মোহাম্মদ -কে সৃষ্টি করেছেন। অপর আরেকটি হাদীসে নবী (সা.) বলেছেন , আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করেছেন। 41

উল্লিখিত হাদীস দুটিতে যে বিষয়টি সুস্পষ্ট তা হচ্ছে মহান সৃষ্টিকর্তার অনন্ত বিশালতা সম্পর্কে অবগত হওয়া , সর্বজ্ঞানের নগরী নবী মোহম্মদ (সা.) ব্যতীত যেমন আর কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তদ্রুপ মহানবী (সা.)-এর শান ও মান বোঝার যোগ্যতা এক আল্লাহ ব্যতীত মানুষ তো দূরের কথা অনেক নবী (সা.)-এর পক্ষেও সম্ভব নয়। তবে হ্যাঁ , আরেকটি হাদীসে নবী (সা.) বলেছেন , হে আলী আমাকে কেউ চিনতে/বুঝতে পারেনি তুমি এবং আল্লাহ ব্যতীত। তোমাকে কেউ বুঝতে পারেনি আমি এবং আল্লাহ ব্যতীত। আর আল্লাহকে কেউ বুঝতে পারেনি আমি এবং তুমি ব্যতীত42

উল্লিখিত হাদীসটি জানার পর আমি একটু চিন্তিত হয়ে পড়ি। হযরত আলীর নবী (সা.)-এর সমজ্ঞান আছে কি ? অতঃপর যখন নিন্মোক্ত হাদীস দু টি জানতে পারলাম তখন আমার ঐ ভুল ধারণাটি দূর হলো।

নবী (সা.) বলেছেন , আমি এবং আলী একই নূরের দুটি টুকরো আমি হচ্ছি জ্ঞানের শহর আর আলী হচ্ছে তার দরজা। 43

আমি পূর্বেই ইঙ্গিত দিয়েছি প্রকৃত সত্য উদঘাটনে আমাদেরকে কোরআন হাদীস ও সেই সমসাময়িক ঐতিহাসিক ঘটনার আলোকে যাচাই বাছাই করতে হবে। এখন আমি একটি বহুল প্রচারিত হাদীসের বর্ণনা করছি। হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত : রাসূল (সা.) বলেছেন বনী ইস্রাইলীরা 72 ফেরকায় (দলে) বিভক্ত হয়েছিল। আর আমার উম্মত বিভক্ত হবে 73 ফেরকায় তন্মধ্যে মাত্র একটি ফেরকা হবে নাজাতপ্রাপ্ত ও জান্নাতী। তাছাড়া সবগুলো ফেরকা হবে জাহান্নামী। 44

উল্লিখিত হাদীসের আলোকে পাঠকের দৃষ্টি-আকর্ষণ করছি :

· আমরা কি কখনও নিজেদের যাচাই করে দেখেছি , আমার অবস্থান বাহাত্তরে না একে ?

· যাচাইয়ের পথতো সর্বদা উন্মুক্ত এখন শুধু আমাদের ইচ্ছা প্রকাশের প্রয়োজন। যেমন

· আমরা কি কোরানের আদেশ-নিষেধ মেনে চলি ?

· আমরা কি সে সকল হাদীস অনুসরণ করি যার সাথে কোরআনের সম্পৃক্ততা রয়েছে ?

· আমরা কি হারাম হালাল বিবেচনা করি ?

· আমরা কি সুদ-ঘুষ থেকে নিজেকে রক্ষা করি ?

· আমরা কি অপরাধ দুর্নীতি থেকে দূরে থাকি ?

· আমরা কি ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করি ?

· আমারা কি আইনের শাসন ও অপরাধী দমনে সক্রিয় ?

· আমরা কি সত্য প্রকাশের ভূমিকা ও মিথ্যা প্রচারে বাধা দেয়ার চেষ্টা করি ?

· আমরা কি সত্য ও মিথ্যা এক করে দিই ?

· আমরা কি সত্যকে গোপন করি ?

· আমরা কি অঙ্গীকার কিংবা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করি ?

· আমরা কি ন্যায় বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ?

· আমরা কি স্বজনপ্রীতি আর সুযোগসন্ধানী থেকে মুক্ত ?

· আমরা কি নিজ ত্রুটি সংশোধন না করে অন্যের ত্রুটি প্রচার থেকে সরে আসতে পেরেছি ?

· আমাদের কথা এবং কাজে মিল আছে কি ?

· আমরা কি নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে কিছু করতে পেরেছি ?

· আমরা কি নিজেকে ছাড়া দেশ ও দশের কথা ভাবি কখনো ?

এই সকল প্রশ্নের উত্তর মহান আল্লাহ পাক তাঁর নবী (সা.)-এর মাধ্যমে সেই 14শ বছর পূর্বেই পবিত্র কোরআনে প্রকাশ করেছেন। অথচ এর মর্মবাণী অধিকাংশ মানুষ উপলব্ধি করেননি। আর ভুলে গেছেন আল্লাহর মনোনীত মহান ইমামদের। যে কারণে আমাদের সমাজ দেশ তথা সারা বিশ্বে অশান্তি , নৈরাজ্য , দুর্নীতি , চাঁদাবাজি , সুদ-ঘুষের অবাধ প্রচলন , নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি , শাসনের নামে শোষণের উপস্থিতি , ব্যবসার নামে প্রতারণা , আমানতের খেয়ানত ও জালিয়াতির নব নব কৌশল আবিষ্কার , মানবতার মূল্যবোধের অবক্ষয় , শিষ্টাচার হীনতা , বেলাল্লাপনার প্রচার ও প্রসার সহ নানাবিধ অনৈতিক অবক্ষয়ে আমরা জর্জরিত।

যদি ধর্ম কিংবা নীতি বলতে আমাদের মধ্যে কিছু থেকে থাকে তবে কেন এত বিপর্যয় ? সত্যি কথা বলতে কি আমাদের মধ্যে ধর্মের শুধু নামটাই বিদ্যমান আছে। এর অন্ত:র্নিহীত কার্যক্রম অর্থাৎ সততা , ন্যায়-নিষ্ঠা , পাপ কর্মের ভয় ও খোদাভীরুতা বহু পূর্বেই আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে। এর প্রমাণ মেলে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে। যেমন , দিনের শুরু থেকে রাতের আঁধারের আগমণ পর্যন্ত যদি শুধু এইটুকু সময় আমারা নিজেরা নিজেদের কর্মকাণ্ড খাতায় লিপিবদ্ধ করি , তবে দেখতে পাব আমি প্রতিদিন কত মিথ্যা কর্মে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আর এদিক থেকে আমরা বরাবরই দুর্ভাগা। রমজানের আগমণের পূর্বেই আমাদের ব্যবসায়ীগণ দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে দেন তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী। যদিও পৃথিবীর অন্যান্য দেশ আমাদের অনুরূপ নয়। দুখঃজনক হলেও সত্য যে , আমাদের দেশে খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণ যেন মামুলি ব্যপার। অথচ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তা বিরল। গানে কিংবা কবিতায় আমরা নিজেদের যেভাবে তুলে ধরি বাস্তবে যদি তাই হোতো , তবে কতই না সুন্দর হোতো। বাস্তবতা এটাই। আমাদের এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে অপরাধ-দুর্নীতির মতো কোনো না কোন জটিল সমস্যা নেই। আর সমস্যা তো মানুষেরই সৃষ্ট। কবে আমরা এমন সব সমস্যা হতে মুক্ত হবো তা কেবল আল্লাহ পাকই জানেন।

পবিত্র কোরআনে নামাজের বিষয়ে বেশ কয়েকবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। তাই আমাদের সকলেরই নামাজে মনোযোগী হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তবে যে বিষয়টি লক্ষ্যণীয় তা হচ্ছে , যদি আমরা নামাজী হয়ে যাই তাহলে আমাদের উচিৎ এতিম , মিসকীনদের সাহায্য করা এবং লোক দেখানো নামাজ না পড়া। আর অবশ্যই মন্দ কথা কিংবা মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা অনেকেই দু টাই সমান্তরালে করে যাচ্ছি। যার প্রমাণ পাওয়া যায় ঐসকল নামাজী যখন নামাজ শেষে হাট-বাজারে কিংবা তাদের কর্মস্থলে এসে নিত্য কর্মে যোগ দেন , তাদের তখনকার আচার-আচরণ থেকেই তা প্রকাশিত হয়। আর অনূরূপ নামাজীদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক পূর্ব থেকেই অবগত।

তাই তিনি সূরা মাউনের 4-6 নং আয়াতে তাদের প্রতি ধিক্কার জানিয়েছেন এভাবে :

) فَوَيْلٌ لِلْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ الَّذِينَ هُمْ يُرَاءُونَ(

ধিক সেই সব নামাজীর প্রতি , যারা তাদের নামাজ সম্পর্কে বে-খবর। যা তারা লোক দেখানোর জন্য করে

তাই আমাদের সকলের নামাজ ও কর্ম সেরূপ হওয়া বাঞ্ছণীয় যেন আমরা হতে পারি আল্লাহর করুণা প্রত্যাশী , ধিক্কারের অধিকারী নয়।

মুসলমানদের দায়িত্ব-কর্তব্য ও আদেশ-নিষেধ সম্পর্কে পবিত্র কোরানে আল্লাহ পাক যে সকল আয়াত নাজিল করেছেন তার কিছু অংশ পাঠকদের খেদমতে উপস্থাপন করছি :

1) এটি সেই কিতাব যাতে কোনো সন্দেহ নেই। পরহেজগারদের জন্য রয়েছে পথ প্রদর্শন ; যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে , নামাজ কায়েম করে এবং তাদেরকে যে রুযী দান করা হয়েছে তা থেকে ব্যয় করে এবং আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে ও আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে যারা বিশ্বাস করে ও পরকালে যারা নিশ্চিত বিশ্বাসী। তারাই নিজেরদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত , তাঁরাই সফলকাম। (সূরা-2: আয়াত- 5)

2) তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিয়ো না এবং জেনে শুনে সত্যকে গোপন করো না। আর নামাজ কায়েম করো , যাকাত প্রদান করো এবং অবনত হও তাদের সাথে , যারা অবনত হয়। (2 : 42-43)

3) সাহায্য প্রার্থনা করো ধৈর্যের সাথে নামাজের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন কিন্তু সেই সমস্ত বিনয়ী লোকগণ ব্যতীত , যারা এ কথা বিশ্বাস করে যে , তাদেরকে উপস্থিত হতে হবে স্বীয় পালনকর্তার সামনে এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে। (2 : 45-46)

4) তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে এসেছে এক নূর এবং সুস্পষ্ট কিতাব। (5 : 15)

5) তোমাদের অভিভাবক হচ্ছেন , আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং সেই সব ঈমানদার ব্যক্তি যারা নামাজ কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে রুকু অবস্থায়। (5 : 55)

6) হে রাসূল পৌঁছিয়ে দিন , আপনার রবের পক্ষ থেকে যা আপনাকে বলা হয়েছে। যদি আপনি তা না পৌঁছান , তবে আপনার রেসালাতের কাজ পরিপূর্ণ হলো না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চই আল্লাহ কাফেরদেরকে হেদায়েত প্রদান করেন না। (5 : 67)

7) আজ আমি তোমাদের জন্য দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম , আমার নিয়ামত দ্বারা এবং ইসলামকে দীন হিসেবে মনোনীত করলাম। (5 : 3)

8) নামাজের ধারে কাছেও যেয়ো না নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। (4 : 43)

9) হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু শুনেন ও জানেন। হে ঈমানদারগণ তোমরা নবী (সা.)-এর কণ্ঠস্বরের ওপর তোমাদের কণ্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ আচরণ করো। তাঁর সাথে সেরূপ আচরণ করো না। এতে তোমাদের আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে তোমরা টের পাবে না। (49 : 1-2)

10) সৎ কাজে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে এগিয়ে যাও। তোমরা যেখানেই থাকবে , অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে সমবেত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমতাশীল। (2 : 148)

11) সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর , আমিও তোমাদের স্মরণ করব এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর , অকৃতজ্ঞ হয়ো না। হে মুমিনগণ , তোমরা ধৈর্যের সাথে নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয় , তাদেরকে তোমরা মৃত বলো না বরং তারা জীবিত , কিন্তু তোমরা তা বুঝ না। অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয় , ক্ষুধা , জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি ও ফল-ফসলের বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের। (2 : 152-155)

12) হে ঈমানদারগণ তোমরা পবিত্র বস্তু সামগ্রী আহার করো। যেগুলি আমি তোমাদের রুজী হিসেবে দান করেছি এবং শূকরিয়া আদায় করো আল্লাহর , যদি তোমরা তারই বন্দেগি করো। তিনি তোমাদের ওপর হারাম করেছেন মৃত জীব , রক্ত , শুকরের মাংস এবং যেসব জীবজন্তু আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক নিরুপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমান ও সীমালঙ্ঘনকারী নয় , তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল , অত্যন্ত দয়ালু। (2 : 172-173)

13) সৎকর্ম শুধু এই নয় যে , পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে , বরং সৎকাজ হলো এই যে , ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর , কেয়ামত দিবসের ওপর , ফেরেস্তাদের ওপর , সকল কিতাবের ওপর এবং সমস্ত নবী রাসূলগণের ওপর। আর সম্পদ ব্যয় করবে আল্লাহর মহব্বতে। সাহায্য করবে আত্মীয়-স্বজন , এতিম , মিসকীন , মুসাফির , ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী কৃতদাসদের। আর যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে , যাকাত প্রদান করে ও স্বীয় প্রতিজ্ঞা সম্পাদন করে এবং অভাবে রোগে শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্যধারণকারী তারাই হলো সত্য আশ্রয়ী এবং তারাই পরহেজগার। (2 : 177)।

14) হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা পরহেজগারী অর্জন করতে পার। (2 : 183)

15) আর পানাহার করো যতক্ষণ না রাতের কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোজা পূর্ণ করো রাত পর্যন্ত। (2 : 187)

16) আর লড়াই করো আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে , যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (2 : 190)

17) আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই করো , যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায় , তাহলে কারো প্রতি কোনো জবরদস্তি নেই। কিন্তু যারা জালেম তাদের বিষয় আলাদা। (2 : 193)

18) আর ব্যয় করো আল্লাহর পথে , তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করে নয়। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করো। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালবাসেন। (2 : 195)

19) পার্থিব জীবন কাফেরদের জন্য সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। তারা ঈমানদারদের লক্ষ্য করে উপহাস করে। পক্ষান্তরে , যারা পরহেযগার তারা সেই কাফেরদের তুলনায় কেয়ামতের দিন অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদায় অবস্থান করবে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুজি দান করেন। (2 : 212)

20) তারা আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে কি তারা ব্যয় করবে ? বলে দিন যা তোমরা ব্যয় করবে তা হবে পিতা-মাতার জন্য নিকট আত্মীয়ের জন্য , এতিম , অসহায়ের জন্য ও মুসাফিরদের জন্য। আর তোমরা যেকোনো সৎ কাজ করবে , নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা ভালভাবে অবগত আছেন। (2 : 215)

21) যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান খয়রাত করো , তবে তা উত্তম। আর যদি গোপনে অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও তবে তা তোমাদের জন্য আরো উত্তম। এতে আল্লাহ তোমাদের কিছু গুনাহ্ মাফ করে দিবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজকর্মের বিষয়ে সম্যক অবগত। (2 : 271)

22) যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম তালাশ করে , কস্মিনকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত। (3 : 85)

23) তোমরা কস্মিনকালেও কল্যাণ লাভ করতে পারবে না , যদি তোমদের প্রিয় বস্তু থেকে তোমরা ব্যয় না করো। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে আল্লাহ তা জানেন। (3 : 92)।

24) হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেভাবে ভয় করা উচিত , ঠিক তেমনি ভাবে ভয় করো অবশ্যই তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। (3 : 102)

25) আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ় হস্তে ধারণ করো , পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সেই নেয়ামতের কথা স্মরণ করো , যা আল্লাহ তোমাদের দান করেছেন। তোমরা পরস্পরের শত্রু ছিলে অতঃপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহে পরস্পরে ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকু-ের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ তাঁর নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন , যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার। (3 : 103)

26) যদি আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেন , তাহলে কেউ তোমাদের পরাস্ত করতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন , তবে এমন কে আছে যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে ? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানদের ভরসা করা উচিত। (3 : 160)

27) প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। কিয়ামতের দিন তোমরা তোমাদের কর্মের পরিপূর্ণ ফলপ্রাপ্ত হবে। অতঃপর যাকে দোযখের আগুন থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে , সে-ই হবে সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ব্যতীত অন্য কিছু নয়। (3 : 185)

28) নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমা করেন না , তাঁর সাথে শরীক করার অপরাধ তিনি ক্ষমা করেন এছাড়া অন্যান্য অপরাধ , যার জন্য ইচ্ছা। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করে আল্লাহর সাথে , সে তো এক মহাপাপে লিপ্ত হলো। (4 : 48)

29) হে ঈমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর ও তাঁর রাসূলের এবং উলিল আমরগণের। অতঃপর যদি তোমরা কোনো বিষয়ে বিবাদে লিপ্ত হও , তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তণ করো। যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের ওপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক থেকে উত্তম। (4 : 59)

30) যে আল্লাহর নির্দেশে মস্তক অবনত করে সৎ কাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করে , যিনি ছিলেন একনিষ্ঠ। তাঁর চেয়ে উত্তম ধর্ম কার হতে পারে ? আল্লাহ ইব্রাহিমকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করেছেন। (4 : 125)

31) হে ঈমানদারগণ! তোমরা কাফেরদেরকে বন্ধু বানিয়ো না , মুসলমানদের বাদ দিয়ে। তোমরা কি এমনটি করে নিজেদের ওপর আল্লাহর প্রকাশ্য দলিল কায়েম করবে ? (4 : 144)

32) হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় করো তাঁর নৈকট্য অন্বেষণ করো এবং তাঁর পথে জিহাদ করো , যাতে তোমরা সফলকাম হও। (5 : 35)

33) হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য নিষেধ করা হলো মদ , জুয়া , প্রতিমা ও ভাগ্য নির্ধারক তীরসমূহ এই সবকিছু শয়তানের অপবিত্র কাজ ব্যতিত অন্য কিছু নয়। অতএব এগুলি থেকে বেঁচে থাকো যাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হও। (5 : 90)

34) পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত আর কিছুই নয়। পরকালের আভাস পরহেযগারদের জন্য শ্রেষ্ঠতর। তোমরা কি বোঝো না ? (6 : 32)

35) তোমরা তাদের মন্দ বলো না , যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহ ব্যতীত। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কৃতকর্মকে সুশোভিত করে দিয়েছি। অতঃপর তাদেরকে স্বীয় পালনকর্তার নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন তিনি তাদের বলে দেবেন যা কিছু তারা করত। (6 : 108)

36) তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং একে অন্যের ওপর মর্যাদায় সমুন্নত করেছেন , যাতে তোমাদে এ বিষয়ে পরীক্ষা করেন যা কিছু তোমাদের দিয়েছেন। আপনার প্রতিপালক দ্রুত শাস্তিদাতাও বটে এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল , দয়ালু। (6 : 165)

37) তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক , কাকুতি-মিনতি করে এবং সঙ্গোপনে। তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (7 : 55)

38) আর ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তোলো , সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খ্য জাহিলদের থেকে দূরে থাকো। (7 : 199)

39) আর যখন কোরআন পাঠ করা হয় , তোমরা তা মনযোগ দিয়ে শোন এবং নীরব থাক , যাতে তোমাদের ওপর রহমত হয়। (7 : 204)

40) হে ঈমাদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবক রূপে গ্রহণ করো না , যদি তারা ঈমানের চেয়ে কুফরীকে অধিক ভালবাসে। আর তোমরা যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে , তারাই সীমালঙ্ঘনকারী। (9 : 23)

41) যে কেউ শুধু পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করে , আমি দুনিয়াতেই তাদের কর্মফল পূর্ণরূপে দান করি। যাতে তাদের কিছু মাত্র কমতি না হয়। এরাই হল সেই সব লোক যাদের আখেরাতের জন্য আগুন ছাড়া আর কিছু নেই। তারা যা কিছু উপার্জন করেছে সবই বরবাদ ও বিনষ্ট হয়ে গেছে। (11 : 15-16)

42) আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মোমেনদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে , তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহে , অতঃপর মরে ও মারে। তাওরাত ইঞ্জিল ও কোরআনে এ সত্য প্রতিশ্রুতি রয়েছে। আর আল্লাহর চেয়ে অধিক প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী কে হতে পারে ? সুতরাং আনন্দিত হও সে লেনদেনের ওপর , যা তোমরা করেছ তাঁর সাথে। আর এ হচ্ছে মহাসাফল্য। তারাই তওবাকারী , ইবাদতকারী , শোকরগুজারকারী , দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক চ্ছেদকারী , রুকু ও সেজদা আদায়কারী , সৎ কাজে আদেশদানকারী ও মন্দ কাজে নিবৃতকারী এবং আল্লাহর দেয়া সীমাসমূহের হেফাজতকারী। বস্তুত সুসংবাদ দাও সেই সব মুমিনদের। (9 : 111-112)

43) যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর যিকিরে শান্তি লাভ করে , জেনে রাখো , আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্তি লাভ করে। (13 : 28)

44) নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের গোপন ও প্রকাশ্য যাবতীয় বিষয়ে অবগত। নিশ্চয়ই তিনি অহংকারীদের পছন্দ করেন না। (16 : 23)

45) আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চই এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (17 : 32)

46) আপনি সব মানুষের চাইতে মুসলমানদের অধিক শত্রু ইহুদী ও মুশরিকদের পাবেন এবং মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বের অধিক নিকবর্তী তাদের পাবেন , যারা নিজেদের খ্রীষ্টান বলে। এর কারণ এই যে , খ্রীষ্টানদের মধ্যে আলেম ও দরবেশ রয়েছে যারা অহংকার করে না। (5 : 82)

47) নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেস্তাগণ নবী (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও নবী (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ কর বিনয়ের সাথে। (5 : 56)

48) নামাজ কায়েম করুন সূর্য হেলে যাওয়ার পর থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত , আর ফজরে কোরআন পাঠ করুন। নিশ্চই ফজরে কোরাআন পাঠ মুখোমুখি হয়। (17 : 78)

49) তদুপরি যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও , তবে আল্লাহ তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক জাতিকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। তারা তোমাদের মতো হবে না। (47 : 38)

50) আপনি কেবল তাদের সতর্ক করুন , যারা তাদের পালন কর্তাকে না দেখে ভয় করে এবং নামাজ কায়েম করে। (35 : 18)