কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?0%

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ? লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: ইমাম মাহদী (আ.)

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক: সাইয়্যেদ সাদরুদ্দীন আল সাদর
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 60442
ডাউনলোড: 3147

পাঠকের মতামত:

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 86 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 60442 / ডাউনলোড: 3147
সাইজ সাইজ সাইজ
কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

মাহদী (আঃ) এবং তার খিলাফত

ইকদুদ দুরার -এর লেখক (8ম অধ্যায়ে) বর্ণনা করেন হাফেয আবু নাঈম থেকে এবং তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে উমার থেকে যে রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদী আবির্ভূত হবে এবং তার উপরে থাকবে একটি মেঘ যেখান থেকে একজন ফেরেশতা ডাক দিয়ে বলবে- নিশ্চয়ই এ ব্যক্তিই মাহদী , ঐশী উত্তরাধিকারী (খলিফা) , অতএব তাকে মেনে চলো।

ইসাফুর রাগেবীনে র লেখক 153 পৃষ্ঠায় বলেছেন- হাদীসসমূহ উল্লেখ করে যে তার আবির্ভাবের সময় ফেরেশতারা ডেকে উঠবেঃ এ হলো মাহদী , ঐশী প্রতিনিধি , অতএব তাকে মেনে চলো। তখন জনগণ তার সাথে যোগদান করবে।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক 447 পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন আবু নাঈমের ফারায়েদুস সিমতাইন থেকে , তিনি আবু উমার থেকে যে রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদী আবির্ভূত হবে এবং একজন ফেরেশতা তার মাথার উপর থেকে চীৎকার করে বলবে- এ হলো মাহদী আল্লাহর প্রতিনিধি , অতএব তাকে অনুসরণ করো।

মাহদী (আঃ) ও তার কাছে বাইয়াত

ইকদুদ দুরার -এর লেখক (পরিচ্ছদ 3 , 9ম অধ্যায়ে) বর্ণনা করেন আবু উমারের সুনান , উসমান ইবনে সাইদ মুক্কারী এবং হাফেয আবু আব্দুল্লাহ নাঈম ইবনে হেমাদ থেকে , যিনি বর্ণনা করেছেন ইসহাক ইবনে আউফ থেকে , যিনি বলেছেন , মাহদীর পতাকায় লেখা থাকবেالبیعة (আল বাইয়াত বা আল্লাহর জন্য চুক্তি) ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখকও এ ধরনের একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন 435 পৃষ্ঠায়।

মাহদী (আঃ) ও ফেরেশতারা

ইকদুদ দুরার -এর লেখক (8ম অধ্যায়ে) বর্ণনা করেছেন আবু উমার ও উসমান ইবনে সাঈদ থেকে যারা বর্ণনা করেছেন হুযাইফা ইবনে ইয়ামানী থেকে যে রাসূল (সাঃ) মাহদী সম্পর্কে এবং রুকন ও মাক্বামের মাঝে তার কাছে জনগণের বাইয়াত গ্রহণ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বলেনঃ

জিবরাইল তার সামনে এগিয়ে আসবে এবং মিকাইল থাকবে তার ডান দিকে। আকাশসমূহ ও পৃথিবীর বাসিন্দারা এবং পশু- পাখিরা তার উপস্থিতিতে খুশী হয়ে উঠবে।

ইসাফুর রাগেবীনের লেখক 152 পৃষ্ঠায় লিখেছেন- হাদীসে এসেছে যে , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মাহদীকে সমথর্ন দিবেন 3 ,000 ফেরেশতা দিয়ে এবং আসহাবে কাহাফ তার সাহায্যকারীদের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

মাহদী (আঃ) ও আসহাবে কাহাফ

ইকদুদ দুরার -এর লেখক 7ম অধ্যায়ে লিখেছেন যে- ইমাম আবু ইসহাক্ব সুলবি তার কোরআনের তাফসীরে আসহাবে কাহাফ সম্পর্কে বলেছেন- তারা তাদের ঘুমের জায়গায় চলে গেলো এবং সময়ের শেষ পর্যন্ত থাকবে মাহদীর আবির্ভার্ব পর্যন্ত । এরপর আল্লাহ তাদেরকে জীবিত করবেন। এরপর আবার তারা তাদের ঘুমের জায়গায় ফেরত যাবে এবং কিয়ামত পর্যন্ত জাগবে না। তাফসীরে এ আয়াতের অধীনে তিনি বলেছেনঃ রাসূলুলাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

নিশ্চয়ই মাহদী (আঃ) গুহার লোকদেরকে সালাম জানাবে এবং আল্লাহ সবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদেরকে জীবিত করবেন। তখন তারা সালামের উত্তর দিবে। এরপর তারা তাদের জায়গায় ফেরত যাবে কিয়ামত পর্যন্ত আর জাগবে না।

লেখক বলতে চান , সম্ভবত আল্লাহ তাদেরকে জীবিত করবেন এ কারণে যে তারা মাহদীর হাতে বাইয়াত করবেন। ইসাফুর রাগেবীনের লেখক বলেন হাদীস অনুযায়ী তারা তার সাহায্যকারী ও সাথী হবেন।

মাহদী (আঃ) আল্লাহর হুজ্জাত (প্রমাণ)

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক (448 পৃষ্ঠায়) হাসান ইবনে খালিদের ফারায়েদুস সিমতাইন থেকে এবং তিনি আলী ইবনে মূসা আল-রিদা (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন- যে পরহেযগার নয় তার কোন ধর্ম নেই। নিশ্চয়ই তোমাদের মাঝে সেই আল্লাহর সামনে সবচেয়ে মর্যাদাবান যে সবচেয়ে পরহেযগার। এরপর তিনি বললেন , আমার বংশে চতুর্থতম সন্তান হচ্ছে দাসীদের নেত্রীর সন্তান। তার মাধ্যমে আল্লাহ পৃথিবীকে প্রত্যেক নৃশংসতা ও নিপীড়ন থেকে মুক্ত করবেন। সে সেই জন যার জন্ম হয়েছে কিনা তা নিয়ে জনগণ সন্দেহ করবে এবং তার জন্য থাকবে এক আত্মগোপনকাল। যখন সে আত্মপ্রকাশ করবে , পৃথিবী ঐশী আলোতে আলোকিত হয়ে যাবে এবং জনগণের মাঝে ন্যায়বিচারের দাঁড়িপাল্লা প্রতিষ্ঠিত হবে এমনভাবে যে , কেউ অন্যকে নিপীড়ন করবে না। নিশ্চয়ই সে সেইজন যার জন্য পৃথিবী গুটিয়ে যাবে এবং তার কোন ছায়া থাকবে না। সে সেইজন যার বিষয়ে আকাশ থেকে এক আহবানকারী ডেকে উঠবে এবং পৃথিবীর প্রত্যেক বাসিন্দা শুনতে পাবে-

জেনে রাখো আল্লাহর হুজ্জাত (প্রমাণ) আল্লাহর ঘরের কাছে আত্মপ্রকাশ করেছে। অতএব তাকে অনুসরণ কর যেহেতু সত্য তার ভেতরে ও তার সাথে আছে।

মাহদী (আঃ) ও ধর্মের পূর্ণতা

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক্ব -এর 97 পৃষ্ঠায় আবুল ক্বাসিম তাবারানী থেকে এবং তিনি রাসূল (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যেঃ মাহদী আমাদের কাছ থেকে। ধর্ম তার মাধ্যমে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে যেভাবে তা আমাদের মাধ্যমে প্রসার পেয়েছে।

ইসাফুর রাগেবীনের লেখক একই হাদীস বর্ণনা করেছেন 148 পৃষ্ঠায় সাইয়্যেদ মুমিন- ইবনে-হাসান শাবলনজি নুরুল আবসার -এ বর্ণনা করেন (231 পৃষ্ঠায়) আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ) থেকে যিনি বলেছেনঃ

আমি আল্লাহর রাসূলকে জিজ্ঞাসা করলাম যে মাহদী আমাদের কাছ থেকে , মুহাম্মাদের পরিবার থেকে আসবে , না কি অন্য কোন পরিবার থেকে ? তিনি বললেন , না , বরং সে আসবে আমাদের কাছ থেকে। তার মাধ্যমে আল্লাহ ধমর্কে পূণঃ প্রতিষ্ঠিত করবেন যেভাবে তিনি আমাদের মাধ্যমে এর প্রসার ঘটিয়েছেন।

বিষয়টি আরও শক্তিশালী হয় বেশ কিছু মুসতাফিযা হাদীসের মাধ্যমে যেগুলো ইঙ্গিত করে যে ধর্ম পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হবে না যতক্ষণ না 12জন খলিফা আসেন এবং প্রস্থান করেন। ইবনে আবিল হাদীদ মুসলমানদের ঐক্যমত বর্ণনা করেছেন যে দায়িত্ব শেষ হবে না মাহদীর মাধ্যমে ছাড়া। আর এভাবে বোঝা যায় যে তিনি ওয়াসীদের মধ্যে শেষ জন এবং ইসলাম ধর্ম তার কাছে গিয়ে শেষ হবে , যেভাবে তার প্রপিতামহ ছিলেন শেষ নবী এবং ধর্ম তার কাছে থেকেই শুরু হয়েছিলো।

মাহদী (আঃ) 12তম খলিফা (প্রতিনিধি)

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক (447 পৃষ্ঠায়) ফারায়েদুস সিমতাইন থেকে এবং তা বর্ণনা করে সাইদ ইবনে জুবায়ের থেকে , যিনি ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

নিশ্চয়ই আমার প্রতিনিধি ও উত্তরাধিকারীরা হলো আমার পরে জনগণের উপর আল্লাহর হুজ্জাত (প্রমাণ) এবং তারা সংখ্যায় 12জন। তাদের প্রথম জন আলী এবং তাদের শেষ জন আমার সন্তান মাহদী।

মাহদী (আঃ) 12তম ওয়াসী (অসিয়ত সম্পাদনকারী)

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক (486 পৃষ্ঠায়) খাওয়ারাযমীর মানাকিব থেকে বর্ণনা করেন তিনি আলী ইবনে মূসা আল-রিদা থেকে , তিনি তার পিতা থেকে এবং তিনি তার পিতা থেকে যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার নিজের গুণাবলী এবং তার পরিবার ও তার মেরাজ সম্পর্কে কিছু বলার সময় বলেছেন , আমি জিজ্ঞেস করলাম-

হে আমার রব , কারা আমার ওয়াসী ? তখন একটি কন্ঠস্বর শোনা গেলো। বললো- তোমার ওয়াসী হলো তারা যাদের নাম আমার আরশে লেখা রয়েছে। এরপর , আমি তাকিয়ে দেখলাম বারোটি নূর যার প্রত্যেকটির উপর আমার ওয়াসীর নাম সবুজ রং দিয়ে লেখা ছিলো। তাদের প্রথম জন আলী এবং শেষ জন ক্বায়েম

উক্ত বইয়ের লেখক (486 পৃষ্ঠায়) খাওয়ারাযমীর মানাক্বিব থেকে তিনি আবু সুলাইমান থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

যে রাতে আমাকে আকাশে নিয়ে যাওয়া হলো (এবং তিনি বললেন ঐ পর্যন্ত যখন আল্লাহ বললেন) : হে মুহাম্মাদ , তুমি কি তাদের সাথে সাক্ষাত করতে চাও ? আমি উত্তরে বললাম , জ্বী , হে আমার রব। তখন আল্লাহ বললেন , আরশের ডান দিকে তাকাও। যখন আমি তাকালাম হঠাৎ দেখলাম আলী , হাসান , হোসেইন , আলী ইবনে হোসেইন , মুহাম্মাদ ইবনে আলী , জাফর ইবনে মুহাম্মাদ , মূসা ইবনে জাফর , আলী ইবনে মূসা , মুহাম্মাদ ইবনে আলী , আলী ইবনে মুহাম্মাদ , হাসান ইবনে আলী এবং মুহাম্মাদ ইবনে হাসান মাহদীকে দেখলাম , তাদের মধ্যে সম্ভবত মাহদী জ্বলজ্বল নক্ষত্রের মত দেখা গেলো। তখন তিনি বললেন হে মুহাম্মাদ , তারা আমার দাসদের উপর আমার হুজ্জাত (প্রমাণ) এবং তারা তোমার ওয়াসী।

একই বইয়ে লেখক (487 পৃষ্ঠায়) ফারায়েদুস সিমতাইন থেকে তিনি সাঈদ ইবনে জুবাইর থেকে এবং তিনি ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুলাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

নিশ্চয়ই আমার ওয়াসী ও আমার পরে জনগণের উপর আল্লাহর হুজ্জাত (প্রমাণ) সংখ্যায় বারো জন। তাদের প্রথম জন আমার ভাই এবং তাদের শেষ জন আমার সন্তান। লোকজন জিজ্ঞেস করলো- কে আপনার ভাই ? তিনি বললেন- আলী ; আবার তাকে জিজ্ঞেস করা হলো , কে আপনার সন্তান ? তিনি বললেন- মাহদী

একই বইয়ের (487 পৃষ্ঠায়) লেখক ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন , আমি নবীদের সর্দার এবং ওয়াসীদের সর্দার। নিশ্চয়ই আমার পরে ওয়াসীদের সংখ্যা বারো জন। তাদের প্রথম জন আলী এবং শেষ জন মাহদী।

মাহদী (আঃ) 12তম ইমাম

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক (492 পৃষ্ঠায়) খাওয়ারাযমীর মানাক্বিব থেকে এবং তিনি আবু আব্দুল্লাহ হোসেইন ইবনে আলী থেকে বর্ণনা করেনঃ

একবার যখন আমি আমার নানার সাথে দেখা করলাম রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে তার কোলে বসালেন এবং এরপর বললেন , আল্লাহ তোমার পিঠ থেকে নির্বাচন করবেন নয়জন ইমামকে , তাদের মধ্যে নবম জন হবে ক্বায়েম । তাদের পত্যেকের মান ও মর্যাদা আল্লাহর কাছে একই।

একই বইয়ে লেখক বর্ণনা করেন (493 পৃষ্ঠায়) খাওয়ারাযমীর উল্লেখিত বই থেকে এবং তিনি আলী (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

আমার পরে ইমামদের সংখ্যা বারো জন। তাদের প্রথমজন তুমি (আলী) এবং তাদের শেষ জন হবে ক্বায়েম যার মাধ্যমে আল্লাহ পূর্ব ও পশ্চিমকে মুক্ত করবেন।

মাহদী (আঃ) যুগের ইমাম

আলী (আঃ) নাহজুল বালাগাতে বলেছেন- পৃথিবী আল্লাহর হুজ্জাত ও ক্বায়েম ছাড়া থাকবে না। সে হয় প্রকাশ্য ও সুপরিচিত থাকবে অথবা গোপন এবং (শত্রুদের কারণে) ভীত থাকবে। তাফতাযানী একই বিষয় বর্ণনা করেছেন আলী (আঃ) থেকে।

একটি বিখ্যাত হাদীস রয়েছে যা শিয়া ও সুন্নী উভয়ের কাছে সুপরিচিত ও এর সত্যতার বিষয়ে উভয় মাযহাবে কোন বিরোধিতা নেই তাহলো রাসূল (সাঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি তার যুগের ইমামকে না জেনে মারা গেলো সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করলো।

প্রশ্ন হলো বর্তমান যুগের ইমাম কে ?

বোখারী তার সহীহ তে মুসলিম থেকে বর্ণনা করেন তিনি জাবির ইবনে সামারা থেকে যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

ধর্ম সুসংহতভাবে চলতে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত এবং কুরাইশ থেকে 12জন উত্তরাধীকারী যারা জনগণের অভিভাবক থাকবে , তারা আসবে এবং চলে যাবে।

আলী ইবনে মুহাম্মাদ এ একই হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং শেষ করেছেন এ বলে যে নয় জন আসবে হোসেইনের পিঠ থেকে এবং মাহদী তাদের একজন।

আব্দুর রহমান ইবনে সামারা বলেন , আমি রাসূল (সাঃ)-কে বললাম- আমাকে নাজাতের পথ দেখান। তিনি বললেন- হে সামারার সন্তান , যখন আকাঙ্ক্ষা বিভিন্ন রকম হয়ে যায় এবং মতামত বিভিন্ন হয় তোমার দায়িত্ব আলী ইবনে আবি তালিবের সাথে থাকা। নিশ্চয়ই সে আমার উম্মতের নেতা এবং আমার পরে আমার প্রতিনিধি--- নিশ্চয়ই তার কাছ থেকে আমার উম্মতের ইমামরা আসবে এবং বেহেশতের যুবকদের দুই সর্দার (হাসান ও হোসেইন) এবং হোসেইনের কাছ থেকে আসবে নয়জন বংশধর যাদের শেষ জন হবে আমার উম্মতের ক্বায়েম

এছাড়া ইবনে মুগাযালি আবু ইমামাহ থেকে বর্ণনা করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন , আমার পরে ইমামদের সংখ্যা 12জন এবং তাদের প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশ থেকে। নয় জন হোসেইনের পিঠ থেকে এবং তাদের একজন মাহদী।

এছাড়া আবু সালেহ বর্ণনা করেছেন যায়েদ ইবনে সাবিত থেকে যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ পৃথিবী শেষ হবে না যতক্ষণ না হোসেইনের বংশ থেকে একজন আবির্ভূত হবে উম্মতের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য। সে পৃথিবীকে ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে ঠিক যেভাবে তা নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো।

আমরা জিজ্ঞেস করলাম , কে সেই ব্যক্তি ?

তিনি বললেন , সে নবম ইমাম , হোসেইনের বংশ থেকে

আরেকটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে হাসান ইবনে আলী রাযী থেকে যেখানে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এ হাদীসের শেষে বলেছেনঃ নিষ্পাপ ও ত্রুটিমুক্ত নেতারা আবির্ভূত হবে হোসেইনের বংশ থেকে। তাদের একজন হবে মাহদী এবং সে সেই ব্যক্তি যার পিছনে ঈসা ইবনে মারইয়াম নামাজ পড়বে এবং সে হবে হোসেইনের নবম বংশধর।

কিছু হাদীস এসেছে মাহদীর জনগণ থেকে আত্মগোপন করার বিষয়ে। এ হাদীসগুলো (যা একটু পরে বর্ণনা করবো) পরিষ্কারভাবে বলে দেয় তার আনুগত্য বাধ্যতামূলক , তার অনুপস্থিতিতে হোক অথবা উপস্থিতিতে হোক , সে প্রকাশ্য থাকুক অথবা গোপন। আর এ কারণে মসলমানরা তাকে চিনতে বাধ্য।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক (488 পৃষ্ঠায়) সাঈদ ইবনে জুবায়ের থেকে এবং তিনি ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

আলী আমার পরে আমার উম্মাতের নেতা এবং তার বংশধর থেকে আসবে ক্বায়েম যে পৃথিবীকে ইনসাফ ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে ঠিক যেভাবে তা নৃশংসতা ও নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো। আমি আল্লাহর নামে শপথ করছি যিনি আমাকে সত্যসহ নিয়োগ দিয়েছেন এবং সুসংবাদ দানকারী ও সতর্ককারী বানিয়েছেন , যে তার ইমামতে (আত্মগোপনের সময়) বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা লাল রংয়ের দিয়াশলায়ের চাইতে দূর্লভ হবে।

উক্ত বইয়ের লেখক খাওয়ারাযমীর মানাক্বিব থেকে বর্ণনা করেন যে আবু জাফর বাক্বির (আঃ) বলেছেন- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

রহমতপ্রাপ্ত সে যে আমার আহলে বাইত থেকে ক্বায়েম -কে খুঁজে পায় এমন অবস্থায় যখন সে তাকে আত্মগোপনকালে তাকে অনুসরণ করেছে এবং তার বন্ধুদের সাথে বন্ধুত্ব করেছে এবং তার শত্রুদের সাথে শত্রুতা করেছে। এ ধরনের ব্যক্তি আমার সাহাবীদের ও বন্ধুদের অন্তর্ভূক্ত বলে গণ্য হবে এবং বিচার দিনে সে আমার সামনে সবচেয়ে সম্মানিত বলে বিবেচিত হবে।

একই বইয়ের লেখক (494 পৃষ্ঠায়) খাওয়ারাযমীর মানাকিব থেকে এবং তিনি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে বর্ণনা করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

হে জাবির , নিশ্চয়ই আমার পরে আমার ওয়াসী এবং মুসলমানদের নেতারা হলো , প্রথমজন আলী , এরপর যথাক্রমে হাসান , হোসেইন , আলী ইবনে হোসেইন , মুহাম্মাদ ইবনে আলী- বাক্বির বলে বিখ্যাত , শীঘ্রই তুমি তার সাথে সাক্ষাত করবে এবং যখন তুমি সাক্ষাত করবে তার কাছে আমার সালাম পৌছেঁ দিও। তার পরে আসবে জাফর ইবনে মুহাম্মাদ , মূসা ইবনে জাফর , আলী ইবনে মূসা , মুহাম্মাদ ইবনে আলী , আলী ইবনে মুহাম্মাদ , হাসান ইবনে আলী এবং ক্বায়েম । তার নাম হবে আমার নামে এবং তার ডাক নাম হবে আমার ডাকনাম। সে হোসেইন ইবনে আলীর সন্তান এবং তার মাধ্যমে আল্লাহ পূর্ব ও পশ্চিমকে মুক্ত করবেন। সে তার বন্ধুদের কাছ থেকে গোপন থাকবে। এমন হবে যে তারা তার ইমামতে দঢ়ৃ থাকবে না শুধু সে ছাড়া যাদের অন্তরকে আল্লাহ বিশ্বাস দিয়ে পরীক্ষা করেছেন।

দুররুল মূসাউইয়াহ -এর লেখক লিখেছেন , মুহাম্মাদ ইবনে মুহাম্মাদ হাফেয বুখারী যিনি খাজা পারসা নামে বিখ্যাত তিনি তার বই ফাসলুল খিতাবে -র মার্জিনে মাহদী (আঃ)-এর জন্ম সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেনঃ এ বিষয়ে প্রাপ্ত হাদীসের সংখ্যা অসংখ্য এবং মাহদীর (আঃ) গুণাবলী সম্পর্কিত হাদীস অনেক এবং পরস্পরের সমর্থক। এছাড়া , তার আবির্ভাব , তার আলোকিতকারী নূর , তার মাধ্যমে মুহাম্মাদের (সাঃ)

শরীয়ত জীবিতকরণ , আল্লাহর পথে তার যুদ্ধসমূহ এবং পৃথিবীকে সব ময়লা থেকে পবিত্রকরণ সম্পর্কিত সব হাদীস সুষ্পষ্ট। তার সাথীরা প্রত্যেক সন্দেহ থেকে পবিত্র ও প্রত্যেক ভুল থেকে মুক্ত। তারাই ওরা যারা হেদায়েতের পথ অতিক্রম করেছে এবং সত্যের পথে গবেষণার দিকে যাচ্ছে। খিলাফত ও ইমামত তার ভিতরে শেষ হবে এবং তার পিতা কর্তৃক এ পৃথিবীকে বিদায় জানানোর সময় থেকে তিনি ইমাম হয়ে আছেন এবং তিনি সেরকম থাকবেন কিয়ামত দিবস পর্যন্ত। ঈসা (আঃ ) তার পিছনে নামাজ পড়বেন এবং তাকে স্বীকার করে নিবেন এবং জনগণকে আহবান জানাবেন তার বিশ্বাস অনুসরণের জন্য যা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বিশ্বাস ছাড়া আর কিছু নয়।

পঞ্চম অধ্যায়