কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?0%

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ? লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: ইমাম মাহদী (আ.)

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক: সাইয়্যেদ সাদরুদ্দীন আল সাদর
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 60435
ডাউনলোড: 3145

পাঠকের মতামত:

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 86 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 60435 / ডাউনলোড: 3145
সাইজ সাইজ সাইজ
কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

মাহদী (আঃ)-এর আগমনের বছর ও দিন সম্পর্কে হাদীস

আবু বাসীর নবী (সাঃ)-এর বংশধর ইমাম সাদিক (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন- মাহদী বেজোড় বছরে ছাড়া আবির্ভূত হবে না , যেমন , প্রথম তৃতীয় , সপ্তম অথবা নবম বছরে।

আবারো আবু বাসীর ইমাম জাফর সাদিক (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন- ক্বায়েমের নাম ঘোষণা করা হবে পবিত্র রমযান মাসের 23 তারিখের রাতে। ক্বায়েম আবির্ভূত হবেন আশুরার দিনে যেদিন ইমাম হোসেইন (আঃ) শহীদ হন। আমি যেন দেখতে পাচ্ছি ক্বায়েম শনিবার দিন , 10ই মুহাররাম রুকন ও মাকামের মাঝে আবির্ভূত হয়েছে এবং কেউ একজন তার সামনে দাড়িয়ে চীৎকার করে বলছে বাইয়্যাত , বাইয়্যাত। ফলে মাহদীর অনুসারীরা তার দিকে ফিরবে সব দিক থেকে এবং তার কাছে বাইয়্যাত হবে। মাহদীর মাধ্যমে আল্লাহ পৃথিবীকে ন্যায়বিচার দিয়ে পূর্ণ করে দিবেন ঠিক যেভাবে তা নৃশংসতা ও নিপীড়নে পূর্ণ ছিলো। এরপর মাহদী তার মনোযোগ মক্কা থেকে কুফার দিকে দিবেন এবং নাজাফে যাবেন যেখান থেকে সৈনিকদের পাঠাবেন বিভিন্ন শহরের দিকে।

আব্দুল কারীম নাখী থেকে বর্ণনা এসেছে- আমি ইমাম সাদিক (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম কতদিন ক্বায়েম শাসন করবেন ? ইমাম (আঃ) উত্তর দিলেন- সাত বছর। রাত ও দিন মাহদীর সময়ে এত লম্বা হবে যে তখনকার এক বছর এখনকার দশ বছরের সমান হবে এবং মাহদীর সাত বছর তোমাদের হিসেবে সত্তর বছর।

একটি দীর্ঘ হাদীসে ইমাম বাকীর (আঃ) বলেন- যখন ক্বায়েম আবির্ভূত হবেন ; তার মনোযোগ থাকবে কুফার দিকে। তিনি কুফার মসজিদগুলোর উনয়ন্ন ঘটাবেন , রাস্তার পাশে ঝুল বারান্দাগুলো ভেঙ্গে ফেলবেন , রাস্তার পাশের ড্রেইন পাইপ ও কুপগুলো ধ্বংস করবেন , সব ধরনের অবিশ্বাসকে উপড়ে ফেলবেন , প্রত্যেক সূন্নাতকে জীবিত করবেন এবং ইস্তাম্বুল , চীন ও দায়লামের পাহাড়গুলো দখল করবেন। তিনি প্রায় সাত বছর থাকবেন যেখানে প্রত্যেক বছর হবে তোমাদের হিসাবে দশ বছরের সমান।

অন্য একটি বর্ণনায় মোহাম্মাদ বাক্বীর (আঃ) বলেন- পৃথিবী মাহদীর জন্য বিস্তৃতত হবে এবং সম্পদসমূহ তার সামনে থাকবে। তার শাসন পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। আল্লাহ তার ধর্মকে সব ধর্মের উপর স্থাপন করবেন মুশরিকরা তাকে যতই অপছন্দ করুক না কেন। এমন কোন জরাজীর্ণ স্থান থাকবে না যার উন্নয়ন মাহদী করবেন না। পৃথিবী তার শস্যকে না কমিয়ে তার বৃদ্ধি ঘটাবে। মাহদীর সময়ে মানুষ এমন বরকত উপভোগ করবে যা তারা এর আগে কখনোই ভোগ করে নি।

বর্ণনাকারী বলেনঃ হে আল্লাহর রাসূলের সন্তান! কখন আপনার ক্বায়েম আবির্ভূত হবেন ?

তিনি বললেন- সে সময় যখন পুরুষরা নারীদের অনুসরণ করবে এবং নারীরা পুরুষদের অনুসরণ করবে , যখন নারীরা ঘোড়ায় চড়বে ; যখন জনগণ তাদের নামাজকে হত্যা করবে এবং তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করবে ; যখন রক্তপাত করা সামান্য বিষয় হয়ে উঠবে ; যখন প্রকাশ্য ব্যভিচার ব্যবসা হয়ে দাড়াবে ; যখন তারা উচুঁ উচুঁ দালান তৈরী করবে ; যখন তারা মিথ্যা বলাকে বৈধ বলে মনে করবে ; যখন তারা ঘুষ গ্রহণ করবে , যখন তারা তাদের লোভ ও আকাঙ্ক্ষার অনুসরণ করবে ; যখন তারা এ পৃথিবীর জন্য ধর্মকে বিক্রি করে দিবে , যখন তারা যাকে খাওয়াবে তাকে দায়বদ্ধ করে ফেললো বলে ভাববে , যখন তারা ধৈর্যকে দূর্বলতা এবং অবিচারকে সম্মান হিসেবে গন্য করবে।

যখন তাদের শাসকরা হবে খারাপ এবং মন্ত্রীরা হবে মিথ্যাবাদী , যখন তাদের মাঝে সাহায্যকারীরা হবে অন্যায়কারী , যখন কোরআন তেলাওয়াতকারীরা হবে সীমালংঘনকারী , যখন নৃশংসতা ও নিপীড়ন প্রকাশ্য হয়ে পড়বে , যখন তালাক বৃদ্ধি পাবে , যখন জনগণ অশ্লীলতা ও ব্যভিচারে লিপ্ত হবে , যখন জবরদস্তিমূলক সাক্ষী ও মিথ্যা গ্রহণ করা হবে , যখন তারা মদপান ও জুয়াখেলায় নিয়োজিত হবে , যখন পুরুষ পুরুষের সাথে যৌনকার্যে লিপ্ত হবে , যখন নারীরা নারীদের সাথে যৌনকার্যে লিপ্ত হবে , যখন জনগণ যাকাতকে গনিমতের মাল মনে করবে এবং দানকে ক্ষতি হিসেবে দেখবে , যখন তারা খারাপ লোকদের জিহবাকে ভয় করবে , যখন সুফিয়ানী বিদ্রোহ করবে সিরিয়া থেকে , যখন বাইদাহ (যা মক্কা ও মদীনার মাঝখানে) দেবে যাবে , যখন রুকন ও মাকামের মধ্যবর্তী স্থানে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বংশের এক সন্তানকে হত্যা করা হবে এবং যখন আকাশ থেকে একটি উচ্চ কণ্ঠ শোনা যাবে যে , সত্য আছে মাহদী তার অনুসারীদের সাথে , তখন আমাদের ক্বায়েম আবির্ভূত হবে।

যখন সে পুনরাগমন করবে তখন সে কাবার দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়াবে এবং তার 313 জন অনসারী তাকে চারদিকে ঘিরে থাকবে। ক্বায়েমের প্রথম কথা হবে কোরআনের এ আয়াত-

) بَقِيَّتُ اللَّـهِ خَيْرٌ‌ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ(

যা আল্লাহর সাথে রয়ে যায় তা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। (সূরা হুদঃ 86)

এরপর তিনি বলবেনঃ আমি বাক্বিয়াতুল্লাহ , আল্লাহর প্রতিনিধি ও প্রমাণ তোমাদের উপর।

এরপর প্রত্যেক মুসলমান তাকে এভাবে সালাম জানাবে- আসসালামু আলাইকা ইয়া বাক্বিয়াতুল্লাহা ফী আরদিহী (আপনার উপর সালাম হে আল্লাহর সর্বশেষ (প্রতিনিধি) পৃথিবীর উপর।

যখনই 10 ,000 ব্যক্তি তার চারদিকে জড়ো হবে। কোন ইহুদী ও খৃষ্টান বাকী থাকবে না তার উপর বিশ্বাস আনতে এবং ইসলামই হবে তখন একমাত্র ধর্ম।

আকাশ থেকে পৃথিবীতে একটি আগুন নেমে আসবে এবং (আল্লাহ ছাড়া) পূজার যেকোন বস্তুকে তা পুড়ে ফেলবে।

কোন কোন ঐতিহাসিক বলেনঃ মাহদী হলেন সেই প্রতীক্ষিত ক্বায়েম। মাহদী সম্পর্কে হাদীসগুলো পরস্পর সমর্থক।

অষ্টম অধ্যায়

মাহদীর (আঃ) জন্য অপেক্ষা করার ফযীলত

ইয়া নাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক (493 পৃষ্ঠায়) খাওয়ারাযমী মানাকিব থেকে বর্ণনা করেন যে ইমাম মুহাম্মাদ বাক্বীর (আঃ) তার পিতা থেকে এবং তিনি তার পিতা থেকে এবং তিনি আমিরুল মুমিনীন আলী (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

ফারাজ (মুক্তির জন্য) -এর অপেক্ষা করা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদাত।

মানাকিব -এর লেখক বলেনঃ ফারাজের জন্য অপেক্ষার অর্থ হলো মাহদীর আবির্ভাবের জন্য অপেক্ষা করা।

কামালুদ্দীন বইতে শেইখ সাদুক আম্মার সাবাতি থেকে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেছেন যেখানে ইমাম সাদিক (আঃ) বলেছেন-

দুষ্ট সরকারের শাসনের সময় ইবাদাত , সৎকর্মশীল সরকারের অধীনে ইবাদাতের চাইতে উত্তম। এছাড়া দুষ্ট সরকারের সময় ইবাদাতের পুরস্কার সৎকর্মশীল সরকারের সময়ে ইবাদাতের পুরস্কারের চাইতে বেশী।

আম্মার বলেন- আমি ইমামকে বললাম , আমার জীবন আপনার জন্য উৎসর্গ হোক। এটি কি এমন যে সত্যের আবির্ভাবের সময়ে আমরা ক্বায়েমের সাথীদের অন্তর্ভূক্ত হতে চাইবোনা ? আপনার নেতৃত্বে ও আনুগত্যে আমাদের কর্মকাণ্ড কি সত্য সরকারের অধীনে অনুসারীদের কর্মকাণ্ড থেকে উত্তম! ?

ইমাম সাদিক (আঃ) উত্তরে বললেনঃ সুবহানাল্লাহ , আমরা কি চাই না আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সত্য ও ন্যায়বিচারকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করেন এবং জনগণের সাধারণ অবস্থার উন্নতি ঘটুক ? এবং আল্লাহ (জনগণের) বক্তব্যে একতা আনেন এবং জনগণের বিভিন্নমূখী অন্তরকে আমন্ত্রণ করেন ? যেন তারা পৃথিবীতে আল্লাহর অবাধ্য না হয় ? এবং তার নিষেধাজ্ঞাগুলো তাঁর সৃষ্ট প্রাণীর উপর প্রয়োগ হয় এবং আল্লাহ তার জনগণের কাছে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেন যেন তা প্রকাশ হয়ে যায় ? যেন কারো ভয়ে সত্যের কোন কিছু গোপন না থাকে... ?

আবির্ভাবের সময় উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকা

ইয়া নাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক 456 পৃষ্ঠায় ফারায়েদুস সিমতাইন এর লেখক থেকে এবং তিনি আহমাদ ইবনে যিয়াদ থেকে এবং তিনি দেবেল ইবনে খযাঈু থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেন যেখানে দেবেল ইমাম রিদার (আঃ) কাছে গেলেন এবং তার কবিতা আবৃত্তি করলেন। তার কবিতাতে ইমাম মাহদীর (আঃ) কথা ছিলো। ইমাম বললেন-

রুহুল কদ্দুস তোমার জিহবা দিয়ে কথা বলেছে। তুমি কি জানো সেই ইমাম কে ? তিনি সেই ব্যক্তি যার জন্য জনগণ অপেক্ষা করবে এবং তারা তার প্রতি আত্মসমপির্ত হবে তার আবির্ভাবের সময়ে। মাহদীর আবির্ভার্ব সম্পর্কে আমার পিতা তার পিতা থেকে এবং তিনি তার পিতা থেকে এবং তারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে- মাহদীর উদাহরণ হচ্ছে কিয়ামতের উদাহরণ , যা হঠাৎ করে ছাড়া আসবে না

এ বইয়ের লেখক বলতে চান- কিছু কিছু হাদীসে আত্মগোপন বা গাইবাত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে মাহদী জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের মত আবির্ভূত হবে। আবার কিছু হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে আল্লাহ মাহদীর (আঃ) বিষয়কে এক রাতে ফয়সালা করবেন।

এগুলো দেখে বঝা যায় যে মাহদীর (আঃ) আবির্ভাবের দিন অজানা এবং যিনি তাকে সৃষ্টি করেছেন তিনি ছাড়া কেউ জানেন না।

শেষ যুগে মাহদীর (আঃ) আবির্ভাব

ইসাফুর রাগেবীন -এর লেখক 148 পৃষ্ঠায় হাকীম এর সহীহ থেকে এবং তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যেঃ

শেষ যুগে আমার উম্মতের উপর এক ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসবে। আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন অথবা তিনি বলেছেন , আমার আহলে বাইত থেকে , যে পৃথিবীকে সাম্য ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে।

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক্ব এর 98 পৃষ্ঠায় আহমাদ ও মুসলিম থেকে এবং তারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

শেষ যুগে একজন খলিফা উপস্থিত থাকবেন এবং সম্পদ বণ্টন করবেন হিসাব ছাড়া।

ইসাফুর রাগেবীন -এর লেখক একই হাদীস বর্ণনা করেছেন 149 পৃষ্ঠায়। এ বইয়ের লেখক বলতে চান যে অন্যান্য হাদীস পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় এ খলিফাই হচ্ছেন ইমাম মাহদী (আঃ)।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক ইমাম আবু উমার মাদায়েনি থেকে এবং তিনি আবু সাইদ খুদরী থেকে এবং তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ

শেষ যুগে উন্নত নাক ও পৌরুষদীপ্ত সুশ্রী চেহারার অধিকারী এক যুবক আমার বংশ থেকে আবির্ভূত হবে এবং সে পৃথিবীকে সাম্য ও ন্যায় বিচারে পূর্ণ করে দিবে ঠিক যেভাবে তা আগে নৃশংসতা ও অত্যাচারে পূর্ণ ছিল

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক 430 পৃষ্ঠায় মিশকাতুল মাসাবীহ র লেখক থেকে এবং তিনি মুসলিম-এর সহীহ এবং আহমাদ- এর মুসনাদ থেকে এবং তারা জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

শেষ যুগে একজন খলিফা উপস্থিত থাকবেন যিনি সম্পদ বণ্টন করবেন হিসাব ছাড়া।

অন্য আরেকটি হাদীসে এসেছে , আমার উম্মতের শেষ যুগে একজন খলিফা আসবেন যিনি সম্পদ বণ্টন করবেন কোন হিসাব ছাড়া।

ইয়া নাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক ফারায়েদুস সিমতাইন -এর লেখক থেকে এবং তিনি আলী ইবনে হালাল থেকে এবং তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদী আসবে শেষ যুগে এবং পৃথিবীকে সাম্য ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে ঠিক যেভাবে তা আগে নৃশংসতা ও নিপীড়নে পূর্ণ ছিলো।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক সপ্তম অধ্যায়ে হাফেয আবু আব্দুল্লাহর মুসতাদরাক থেকে এবং তিনি আবু সাঈদ খদরী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদী তরবারীসহ আবির্ভূত হবে আমার উম্মতের শেষ যুগে। আল্লাহ বৃষ্টি পাঠাবেন এবং ভূমি তার গাছকে বৃদ্ধি পেতে দিবে। (মাহদী) সম্পদ বণ্টন করবে সঠিকভাবে।

হাকীম বলেন- এর বর্ণনা পরম্পরা বিবেচনা করে এ হাদীসটি সঠিক । কিন্তু বুখারী ও মুসলিম তা বর্ণনা করেন নি।

আবির্ভাবের দিনে মাহদীর (আঃ) বৈশিষ্ট্য

ইকদুদ দুরার -এর লেখক তৃতীয় অধ্যায়ে হাফেয আবু নাঈম থেকে , তিনি আবু ইমামাহর সিফাত আল মাহদী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একটি হাদীসে যা কিছু মাহদীর আবির্ভাবের আগে ও পরে ঘটবে তা উল্লেখ করেছিলেন। আব্দুল ক্বায়েস নামে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো , ইয়া রাসূলুল্লাহ , সেদিন জনগণের ইমাম কে হবেন ?

তিনি (সাঃ) বললেন- সে হবে মাহদী , আমার বংশ থেকে যার বয়স হবে তখন চল্লিশ বছর।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক উল্লেখিত অধ্যায়ে হাফিয নাঈম ইবনে হেমাদ-এর ফাতান থেকে বর্ণনা করেন যে , আমিরুল মুমিনীন আলী (আঃ) বলেছেন যে , মাহদী উঠে দাঁড়াবে যখন তার বয়স হবে ত্রিশ অথবা চল্লিশ বছর।

উক্ত বই-এর একই অধ্যায়ে লেখক আবু আব্দুল্লাহ মাদায়েনি এবং আবু বকর বায়হাক্বী থেকে বর্ণনা করেন যে ইবনে আব্বাস বলেছেন- আমার আশা আছে রাত ও দিন শেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ আমাদের আহলুল বায়েত এর মধ্য থেকে এক যুবককে নিয়োগ দেন। ষড়যন্ত্র তাকে কিছু করতে পারবে না এবং সেও ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়বে না। তিনি এ উম্মতের বিষয়াবলী প্রতিষ্ঠা করবেন , যেভাবে আল্লাহ এ উম্মতের বিষয়াবলী আমাদের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। আমার আশা যে বিষয়াবলীর সমাপ্তি ঘটবে আমাদের মাঝেই।

বর্ণনাকারী বলেন , আমি ইবনে আব্বাসকে বললাম , এ বিষয়ে কি আপনারা অসহায় যে আপনারা আপনাদের যুবকদের নিয়ে আশা করছেন ? তিনি বললেন , আল্লাহ করেন যা তাঁর ইচ্ছা।

একই বইয়ের একই অধ্যায়ে লেখক ইমাম হোসেইন ইবনে আলী (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে , মাহদী আবির্ভূত হবে কিন্তু জনগণ তাকে অস্বীকার করবে , কারণ সে তাদের কাছে ফেরত আসবে যুবক চেহারা নিয়ে। সবচে বড় দুর্যোগ হলো যে তাদের কর্তৃত্বশীল নেতা তাদের কাছে যুবক অবস্থায় আসবে অথচ তারা তাকে বৃদ্ধ ও দূর্বল হিসেবে চিন্তা করবে।

একই বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে লেখক হাফেয আবু আব্দুল্লাহর মুসতাদরাক থেকে এবং তিনি সানবান থেকে বর্ণনা করেন যে , রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

একজন খলিফার তিনজন সন্তানকে হত্যা করা হবে তোমাদের কোষাগারের কাছে , যখন তোমরা তাকে (যুবককে) দেখবে তার প্রতি অনুগত্যের শপথ করো , কারণ তিনিই মাহদী , আল্লাহর খলিফা।

হাকীম বলেন , এ হাদীসটি সঠিক যদিও বুখারী ও মুসলিম তা বর্ণনা না করে থাকে।

একই বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে লেখক হাফেয আবু আব্দুল্লাহ নাঈম ইবনে হেমাদের ফাতান বই থেকে এবং তিনি ইসহাক ইবনে ইয়াহইয়া ইবনে তালহা থেকে বর্ণনা করেন যে তাউস বর্ণনা করেন , উমর ইবনে খাত্তাব তার পরিবারকে বিদায় জানালেন এবং বললেন- এটি কী অন্যায় হবে যদি আমি কাবার সম্পদ ও অস্ত্রশস্ত্র আল্লাহর পথে ব্যয় করি ? আলী বললেন , হে আমিরুল মুমিনীন , এ চিন্তা থেকে বিরত থাকন। আপনি কাবার মালিক নন। কাবার মালিক হচ্ছে কুরাইশ বংশ থেকে এক যুবক যে কাবার সম্পদকে আল্লাহর পথে বিলিয়ে দিবে শেষ যুগে।

এ বইয়ের লেখক বলতে চান সবগুলো হাদীস পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে মাহদী (আঃ)-এর জীবন দীর্ঘ হওয়া সত্বেও আবির্ভাবকালে তিনি যুবক চেহারা নিয়েই হাজির হবেন। কারণ আল্লাহ পাক তার উপরে বার্ধক্যকে স্থগিত করে দিয়েছেন।

মাহদীর (আঃ) আবির্ভাবের স্থান

ইকদুদ দুরার -এর লেখক দ্বিতীয় অধ্যায়ে জাবির ইবনে ইয়াযীদ থেকে এবং তিনি ইমাম বাকির (আঃ) থেকে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন যেখানে তিনি মাহদীর আবির্ভাবের নিদর্শনগুলো ও সুফিয়ানীর সৈন্যবাহিনীর মাটিতে দেবে যাওয়া উল্লেখ করে বলেন , সুফিয়ানী মদিনায় সৈন্যদল পাঠাবে যার ফলে মাহদী মক্কার দিকে গোপনে চলে যাবেন। মাহদীর গোপনে চলে যাবার খবর সুফিয়ানীর সেনাপতিদের কাছে পৌছালে তারা একদল সৈন্যকে মাহদীর পশ্চাৎধাবন করার জন্য পাঠাবে কিন্তু তারা তাকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হবে। মাহদী (আঃ) মক্কায় প্রবেশ করবেন ভয়ের মাঝে এবং মুসা ইবনে ইমরান (আঃ)-এর মত অপেক্ষা করবেন।

ইসাফুর রাগেবীন -এর লেখক 150 পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ গোলযোগ শুরু হবে বাদশাহর মৃত্যুতে। এক ব্যক্তি মদিনা থেকে মক্কায় আত্মগোপনে যাবে। মক্কার কিছু লোক তার কাছে আসবে এবং তার কাছে বায়াত হবে রুকন ও মাক্বামের মাঝে। সিরিয়া থেকে একটি সেনাবাহিনী তাদের দিকে পাঠানো হবে যা মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি বাইদাহ নামের স্থানে মাটিতে দেবে যাবে।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক 431 পৃষ্ঠায় জাওহার আল আক্বদাইন থেকে এবং তা ইবনে দাউদ থেকে এবং তিনি ইমাম আহমাদ এবং হাফেয বায়হাক্বী থেকে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা র লেখক 488 পৃষ্ঠায় ফারায়েদুস সিমতাইন -এর লেখক থেকে এবং তিনি হাসান ইবনে খালিদ থেকে এবং তিনি ইমাম আলী ইবনে মূসা রিদা (আঃ) থেকে মাহদীর অদৃশ্যকাল সম্পর্কে একটি হাদীস ও মাহদী (আঃ) যে তারই চতুর্থ তম বংশ তা বর্ণনা করেন এবং বলেন , মাহদী হলো সেই ব্যক্তি যার সম্পর্কে আকাশ থেকে এক আহবানকারী ঘোষণা করবে এবং সারা পৃথিবীর বাসিন্দারা তা শুনবে। সে বলবে , সচেতন হও আল্লাহর প্রতিনিধি আবির্ভূত হয়েছে আল্লাহর ঘরে (কাবায়)। তাকে অনুসরণ কর যেহেতু সত্য তার সাথে আছে