কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?0%

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ? লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: ইমাম মাহদী (আ.)

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক: সাইয়্যেদ সাদরুদ্দীন আল সাদর
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 60317
ডাউনলোড: 3132

পাঠকের মতামত:

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 86 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 60317 / ডাউনলোড: 3132
সাইজ সাইজ সাইজ
কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

মাহদীর (আঃ) কাছে বায়াতের স্থান

ইকদুদ দুরার -এর লেখক দ্বিতীয় অধ্যায়ে আবুল হাসান মালাকি থেকে এবং তিনি হুযাইফা ইবনে ইয়ামানী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

যদি পৃথিবীর জীবন একদিনও বাকী থাকে আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তির উত্থান ঘটাবেন যার নাম হবে আমার নামের মত এবং তার চেহারা হবে আমার চেহারার মত এবং তার ডাক নাম হবে আবু আব্দুল্লাহ। জনগণ তার কাছে রুকন ও মাকামের মধ্যবর্তী স্থানে বায়াত হবে।

একই বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ের দ্বিতীয় অংশে এর লেখক আবু দাউদের সুনান , তিরমিযির জাময়ে , আহমাদের মসনাদ , ইবনে মাজাহ-র সুনান , বায়হাকীর বেহসাথ ওয়া নশুর এবং অন্যান্য কিছুর সূত্র ধরে উম্মে সালামা থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

এক বাদশাহর মৃত্যুরু পর গোলযোগ শুরু হবে এবং এক ব্যক্তি মদীনা থেকে মক্কার দিকে আত্মগোপন করবে। মক্কার কিছু অধিবাসী তার কাছে রুকন ও মাক্বামের মধ্যবর্তী স্থানে বায়াত করবে।

একই বইয়ের লেখক বলেছেন- হাদীসটির টীকায় ব্যক্তিটিকে মাহদী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লিখিত বইয়ের পঞ্চম অধ্যায়ে লেখক আবু আব্দুল্লাহ নাঈম ইবনে হেমাদ এর ফাতান থেকে এবং তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন যেখানে তিনি সুফিয়ানীর উত্থান এবং মাহদীর (আঃ) মদীনা থেকে মক্কায় গমন এবং তার কাছে বায়াত হওয়া বর্ণনা করেন এবং বলেনঃ

মাহদী রুকন ও মাক্বামের মধ্যবর্তী স্থানে বসবেন এবং তার হাত লম্বা করে দিবেন। জনগণ তার কাছে বায়াত গ্রহণ করবে এবং আল্লাহ তার জন্য জনগণের হৃদয়ে ভালোবাসা জমা রাখবেন।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক সপ্তম অধ্যায়ে নাঈম ইবনে হেমাদ- এর ফাতান থেকে এবং তিনি আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন যে , জনগণ মাহদীর কাছে রুকন ও মাক্বামের মধ্যবর্তী স্থানে বায়াত করবে। মাহদী ঘুমন্ত কাউকে জাগ্রত করবে না এবং কারো রক্তও ঝরাবে না।

এ বইয়ের লেখক বলতে চান- এ কথা বায়াতের পূর্ব মুহূর্তের সময়ের বিষয়ে বলা হয়েছে কিন্তু সে সময়ের কথা বলা হয় নি যখন হযরত পৃথিবীতে সংস্কার ও তার বিজয় আনার চেষ্টা করবেন।

ইবনে হাজার তার বই সাওয়ায়েক্ব -এর 98 পৃষ্ঠায় ইবনে আসাকির থেকে এবং তিনি হযরত আলী (আঃ) থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেন যে , মাহদী মদীনা থেকে মক্কায় গোপনে চলে যাবেন এবং মক্কার কিছু অধিবাসী মাহদীর কাছে আসবে এবং তার কাছে রুকন ও মাকামের মধ্যবর্তী স্থানে বায়াত গ্রহণ করবে।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক চতুর্থ অধ্যায়ের দ্বিতীয় অংশে জাবির ইবনে ইয়াযীদ থেকে এবং তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বাকির থেকে বর্ণনা করেন যে মাহদী মদীনা থেকে মক্কায় গোপনে চলে যাবেন এবং আরও বলেন- জনগণ তার কাছে রুকন ও মাকামের মধ্যবর্তী স্থানে বায়াত করবে। হে জাবির , মাহদী আসবে হুসেইনের (আঃ) বংশ থেকে।

প্রাথমিক ঘটনাবলী

ইকদুদ দুরার -এর পঞ্চম অধ্যায়ে লেখক আহমাদ এর মুসনাদ , ইবনে মাজাহ-র সুনান , বায়হাকী , আবু উমাম মাদায়েনি , নাঈম ইবনে হেমাদ , আবুল কাসিম তাবারানি এবং আবু নাঈম ইসফাহানি এবং তারা আমিরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদী আমাদের আহলে বাইত থেকে। আল্লাহ তার বিষয়কে এক রাতের মাঝে ঠিক করে দিবেন।

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক -এর 98 পৃষ্ঠায় ইবনে মাজাহ থেকে বর্ণনা করেন যে , পূর্ব দিক থেকে এক জনগোষ্ঠী উঠে দাড়াবেঁ এবং তারা মাহদীর শাসনের জন্য পস্তুতি গ্রহণ করবে।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক পঞ্চম অধ্যায়ে আবু নাঈম-এর সিফাত আল মাহদী থেকে এবং তিনি সাওবান থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

যখন তোমরা পূর্ব দিক থেকে কালো পতাকা আসতে দেখবে তখন তাদের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাও এমনও যদি হয় যে বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয় , কারণ মাহদী , যে আল্লাহর প্রতিনিধি , সে তাদের মাঝে থাকবে।

বর্ণনাকারী বলেন- হাকীম আবু আব্দুল্লাহ মুসতাদরাক -এ এবং ইমাম আবু উমার সুনান -এ এবং হাফিয নাঈম ইবনে হেমাদ ফাতান -এ এ হাদীসের কথাগুলো বর্ণনা করেছেন।

একই বইয়ের একই অধ্যায়ে এর লেখক সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যেব থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

বনি আব্বাস এর এক লোক পূর্ব দিক থেকে উঠে দাঁড়াবে এবং জমিনে সে টিকে থাকবে যতক্ষণ না আল্লাহ চান। এরপর একটি দল আবির্ভূত হবে ছোট ছোট কালো পতাকা নিয়ে এবং তারা আবু সুফিয়ানের এক বংশধর ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করবে মাহদীর কাছে নিজেদের সমর্পণ করতে ও তার অনুগত্য করতে।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক 448 পৃষ্ঠায় ফারায়েদুস সিমতাইন থেকে এবং তা হাফিয আবু নাঈম থেকে এবং তিনি ইমাম বাকির থেকে বর্ণনা করেন- আল্লাহ আমাদের বন্ধুদের ও অনুসারীদের অন্তরে ভয় দিয়েছেন। যখন আমাদের ক্বায়েম , যিনি মাহদী , আবির্ভূত হবেন আমাদের অনুসারীদের প্রত্যেকে হবে ভয়ানক সিংহের চাইতে সাহসী এবং বর্শার ফলার চাইতে ধারালো।

মাহদীর (আঃ) সাহায্যকারীরা

ইবনে হাজার সাওয়ায়েক -এর 98 পৃষ্ঠায় ইবনে আসাকির থেকে বর্ণনা করেন যে হযরত আলী (আঃ) বলেছেন- যখন মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বংশ থেকে ক্বায়েম আবির্ভূত হবে তখন আল্লাহ পূর্ব ও পশ্চিমের অধিবাসীদের একত্র করবেন। তার সাথীরা আসবে কুফা থেকে এবং সাহসীরা যারা তাকে সাহায্য করবে তারা আসবে সিরিয়া থেকে।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক চতুর্থ অধ্যায়ের দ্বিতীয় অংশে জাবির ইবনে ইয়াযিদ জুয়াফি থেকে এবং তিনি ইমাম মুহাম্মাদ বাকীর (আঃ) থেকে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন যেখানে মাহদীর আবির্ভাবের কিছু নিদর্শন উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সুফিয়ানীর বিদ্রোহ , মাহদীর মদীনা থেকে মক্কায় গোপনে চলে যাওয়া। এরপর তিনি বলেছেন- আল্লাহ মাহদীর 313 জন সাহাবীকে একত্র করবেন।

একই বইয়ে চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথম অংশে এর লেখক হাকীম আবু আব্দুল্লাহর মুসতাদরাক থেকে এবং তিনি মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়া থেকে বর্ণনা করেন- আমরা আলীর সামনে উপস্থিত ছিলাম। এক ব্যক্তি হযরতকে মাহদী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। হযরত আলী (আঃ) বললেন- হায় , এবং তিনি তা সাতবার বললেন। এরপর বললেন- মাহদী শেষ যুগে আসবে , সে সময় যখন কেউ আল্লাহর নাম বললে তাকে হত্যা করা হবে। এরপর আল্লাহ একটি দলকে একত্র করবেন যাদের বিচক্ষণতা ও ক্ষিপ্রতা মেঘের মত হবে এবং তিনি তাদের অন্তরগুলোকে পরস্পরের নিকটবর্তী করবেন। তারা না কাউকে ভয় পাবে , না তারা পালাবে। তাদের সংখ্যা হবে বদর -এর সাহাবীদের সংখ্যায়। অতীতের কোন লোক তাদের অগ্রবর্তী হয় নি এবং ভবিষ্যতের লোকেরা তাদেরকে বুঝতে পারবে না। তাদের সংখ্যা হবে তালুত (আঃ)-এর সাথীদের সংখ্যার সমান যারা নদী অতিক্রম করেছিলো।

বর্ণনাকারী বলেন- হাকীম বলেছেন- এ হাদীসটি সঠিক যদিও বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা না করে থাকে।

একই বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে লেখক আবু আমরো উসমান ইবনে সাঈদ মুক্বাররীর সুনান থেকে এবং তিনি হুযাইফা ইবনে ইয়ামানী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মাহদী ও তার আবির্ভাব সম্পর্কে বলেছেনঃ

সিরিয়া থেকে সাহসী লোকেরা হযরতের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাবে তাদের অনুসারীদেরসহ এবং মিশরের মর্যাদাবানরা তার সাথে যোগদান করবে। অন্য আরেকটি দল পূর্ব দিক থেকে অগ্রসর হবে মক্কায় পৌঁছা পর্যন্ত এবং তারা তার কাছে বায়াত করবে।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক 449 পৃষ্ঠায় গানজী থেকে এবং তিনি ইবনে আসিম কুফী থেকে বর্ণনা করেন যে আলী (আঃ) বলেছেন- সাবাস তালেক্বান (বর্তমান ইরানের একটি জেলা)-এর লোকদের জন্য , কারণ আল্লাহ তাদের মাঝে মূল্যবান সম্পদ লুকিয়ে রেখেছেন , সেগুলো না সোনা না রুপা। বরং তারা হচ্ছে সেই লোকজন যারা আল্লাহকে প্রকৃত অর্থে চিনেছে এবং তারা শেষ যুগে মাহদীর সাহায্যকারী হবে।

ইসাফুর রাগেবীন -এর লেখক 150 পৃষ্ঠায় বলেছেন- এটি সত্য যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

গোলযোগ সৃষ্টি হবে এক বাদশাহর মৃত্যুতে। এরপর তিনি মক্কায় মাহদীর আবির্ভাব , মক্কায় তার কাছে জনগণের বায়াত , বাইদাহ -তে সুফিয়ানীর সৈন্যবাহিনীর মাটিতে দেবে যাওয়া সম্পর্কে উল্লেখ করলেন এবং বললেন তখন জনগণ মাহদীর কাছে মোজেযা প্রত্যক্ষ করবে , সিরিয়া থেকে সাহসী লোকেরা এবং ইরাক থেকে একদল লোক হযরতের কাছে যাবে এবং তার কাছে বায়াত করবে।

ফেরেশতারা মাহদীকে (আঃ) সাহায্য করবে

ইক্বদুদ দুরার -এর লেখক পঞ্চম অধ্যায়ে আবু আমারা উসমান ইবনে সাঈদ মুকাররীর সুনান থেকে এবং তিনি হুযাইফা ইবনে ইয়ামান থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদীর কাছে বায়াত করা হবে রুকন ও মাকামের মধ্যবর্তী স্থানে। সে সিরিয়ার দিকে যাত্রা করবে এবং জীবরাইল তার সামনে এবং মিকাইল তার ডানে থাকবে।

একই বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথম অংশে লেখক ইমাম মোহাম্মাদ বাকীর (আঃ) থেকে একটি হাদীস যেখানে তিনি মাহদীর আবির্ভাব এবং রুকন ও মাক্বাম-এর মধ্যবর্তী স্থানে তিনি তার কাছে বায়াতের কথা উল্লেখ করেন এবং এরপর বলেন- জিবরাইল তার সামনে ও মিকাইল তার বায়েঁ থাকবে।

আবার একই বইয়ের লেখক সপ্তম অধ্যায়ে আবু আমারা উসমান ইবনে সাঈদ মুকাররীর সুনান থেকে এবং তিনি হুযাইফা ইবনে ইয়ামান থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলল্লাহ (সাঃ) মাহদীর আবির্ভাব এবং রুকন ও মাক্বাম এর মধ্যবর্তী স্থানে তার কাছে বায়াতের কথা উল্লেখ করে বলেন , মাহদীর মনোযোগ থাকবে সিরিয়ার দিকে এবং জিবরাইল থাকবে তার সামনে এবং মিকাইল থাকবে তার বামে।

ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)-এর অবতরণ

বুখারী তার সহীহ র দ্বিতীয় খণ্ডে 158 পৃষ্ঠায় আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

সে সময়টি কেমন হবে যখন ইবনে মারইয়াম তোমাদের মাঝে অবতরণ করবে এবং তোমাদের ইমাম আসবে তোমাদের মাঝ থেকে।

ইকদুদ দুরার -এর লেখক দশম অধ্যায়ে এ হাদীসটি মুসলিম এর সহীহ থেকে বর্ণনা করেছেন।

ইক্বদুদ দুরার -এর লেখক আবু নাঈমের মানাক্বিব-ই-মাহদী থেকে এবং তিনি আবু সাঈদ খুদরী থেকে বলেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

যার পিছনে ঈসা ইবনে মারইয়াম নামাজ পড়বে সে আমার বংশ থেকে।

একই বইয়ের একই অধ্যায়ে নাঈম ইবনে হেমাদ-এর ফাতান থেকে একই ধরনের একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।

ইসাফুর রাগেবীন -এর লেখক 159 পৃষ্ঠায় শেইখ মহিউদ্দীন আল আরাবীর ফুতুহাত থেকে বর্ণনা করেছেনঃ

সর্বশক্তিমান আল্লাহ ঈসা ইবনে মারইয়ামকে সাদা মিনারে অবতরণ করাবেন যা দামেস্কের পূর্বে অবস্থিত , দু জন ফেরেশতা তার সাথে থাকবে একজন তার ডান পাশে এবং অন্যজন তার বামে। জনগণ তখন তাদের সান্ধ্যকালীন নামাজে ব্যস্ত থাকবে। যখন ঈসা অবতরণ করবেন ইমাম তার স্থানকে ঈসাকে দিতে চাইবেন। এরপর তিনি জনতার সাথে জামাতে নামাজ পড়বেন।

ফুতুহাত -এর লেখক হাদীসটি বর্ণনা করার পর বলেছেন অবতরণের পর ঈসা জনতার সাথে নামাজ পড়বেন একথা অন্যান্য হাদীসের সাথে মেলে না। যিনি জনতার নামাজে ইমামতি করবেন তিনি হলেন মাহদী। এরপর তিনি বলেন- ঈসার অবতরণের সময় জনতা সান্ধ্যকালীন নামাজে রত থাকবে একথা ইতিহাসের সাথে মিলে না। যেখানে বলা হয়েছে জনতা ঈসার অবতরণের সময় ফজরের নামাজে রত থাকবে।

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক -এর 99 পৃষ্ঠায় বলেছেন- যা স্পষ্ট তা হলো মাহদীর আবির্ভাব ঘটবে ঈসার অবতরণের পূ্র্বে ।

আবুল হাসান আরাবি বলেন- হযরত মুস্তাফা (সাঃ)-এর কাছ থেকে বর্ণনাকারীর পরম্পরা বজায় রেখে প্রচুর হাদীস এসেছে যে- মাহদী আবির্ভূত হবেন এবং মাহদী নবী (সাঃ)-এর বংশ থেকে এবং মাহদী সাত বছর শাসন করবেন এবং মাহদী পৃথিবীকে ন্যায়বিচারে পরিপূর্ণ করে দিবেন এবং মাহদী ঈসা (আঃ)-এর সাথে আবির্ভূত হবেন এবং ঈসা দাজ্জালকে ফিলিস্তীনের লদু ফটকে হত্যা করতে মাহদীকে সাহায্য করবেন এবং মাহদী এ উম্মতের নেতৃত্ব দিবেন এবং ঈসা তার পিছনে নামাজ পড়বেন।

ইবনে হাজার বলেন- আবুল হাসান আবারির অভিমত যে মাহদী জামায়াতের ইমামতি করবেন এবং ঈসা তার পিছনে দাড়াবেন এর সমর্থন খুঁজে পাওয়া যায় হাদীসগুলোতে কিন্তু তাফতাযানির অভিমত যে ঈসা (আঃ) মাহদীর (আঃ) ইমামতি করবেন , কারণ ঈসা মাহদীর চাইতে সম্মানিত এ কথার কোন প্রমাণ নেই। কারণ ঈসা (আঃ) আকাশ থেকে অবতরণ করবেন মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর অনুসারী হিসেবে এবং মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর শরীয়তের অধীনে থাকবেন , তার নিজ শরীয়তের জন্য তার কোন স্বাধীনতা থাকবে না।

ইসাফুর রাগেবীন -এর 163 পৃষ্ঠায় লেখক বলেন- সুয়ুতি তার কাশফ - এ বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন যে ঈসা (আঃ) অবতরণের পর চল্লিশ বছর বেচেঁ থাকবেন। এবং লাম নামক বইতে লিখেছেন ঈসা (আঃ) মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর শরীয়ত অনুযায়ী বিচার করবেন।

মাহদীর (আঃ) আবির্ভাবে বরকত

ইকদুদ দুরার -এর লেখক পঞ্চম অধ্যায়ে হাকীম আবু আব্দুল্লাহর মুসতাদরাক থেকে এবং তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বলেনঃ

মাহদীর সময়ে বন্য ও হিংস্র প্রাণীরা শান্তিতে বসবাস করবে এবং পৃথিবী তার গুপ্তধন বের করে দিবে। আমি বললাম- পৃথিবীর কোন গুপ্তধন ? তিনি বললেন- সোনা ও রুপার ইট

হাকীম বলেন- এ হাদীসটির বর্ণনা পরম্পরা সঠিক , কিন্তু মুসলিম ও বুখারী তা বর্ণনা করে নি।

একই বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে লেখক হাকীম এর মুসতাদরাক থেকে এবং তিনি উসমান ইবনে সাঈদ মুক্বাররীর সুনান থেকে এবং তিনি হুযাইফা ইবনে ইয়ামানী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

আকাশের বাসিন্দা , পশু-পাখি ও সমূদ্রের মাছেরা মাহদীর উপস্থিতিতে আনন্দিত হবে। মাহদীর শাসনামলে পানি প্রচুর পরিমাণ পাওয়া যাবে। সব জায়গায় ঝর্ণা বের হয়ে আসবে। পৃথিবীর খনিজ পদার্থ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে এবং পৃথিবী তার ধন সম্পদ বের করে দিবে।

একই বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে লেখক হাকীম-এর মুসতাদরাক থেকে এবং তিনি আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

এক কঠিন দুর্যোগ যার ব্যাপকতা সম্পর্কে আগে আর কখনো শোনা যায় নি তা আমার উম্মতের উপর আসবে। এমন হবে যে আমার উম্মতের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়বে এবং পৃথিবী নৃশংসতা ও নিপীড়নে ছেয়ে যাবে। বিশ্বাসীরা নিজেদের জন্য কোন আশয় খুঁজে পাবে না। তখন আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তির উত্থান ঘটাবেন যে পৃথিবীকে ন্যায়বিচার ও সাম্যে পূর্ণ করে দিবে ঠিক যেভাবে তা অত্যাচার ও নিপীড়নে পূর্ণ ছিলো। আকাশ ও পৃথিবীর বাসিন্দারা মাহদীকে নিয়ে সন্তষ্ট থাকবে। পৃথিবী তার শস্যকে মজদু করবে না , বের করে দিবে এবং আকাশও তার বৃষ্টি ফোটাকে ধরে রাখবে না ঝরিয়ে দিবে। মাহদী জনগণের উপর সাত , আট অথবা নয় বছর শাসন করবে। আল্লাহ কল্যাণ ও বরকত এত পরিমাণ দিবেন যে জীবিতরা চাইবে মৃতরাও জীবিত হয়ে উঠুক।

হাকীম বলেন- এ হাদীসটি বর্ণনা পরম্পরা সঠিক কিন্তু মুসলিম ও বুখারী তা বর্ণনা করে নি।

একই বইয়ের একই অধ্যায়ে লেখক আবু নাঈম-এর মানাকিব- ই-মাহদী এবং তাবারানির মুয়াজ্জাম থেকে এবং তিনি আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদীর যুগে আমার উম্মত এমন নেয়ামত উপভোগ করবে যে তারা এর আগে কখনোই তা ভোগ করে নি। আকাশ তাদের উপর বৃষ্টি ঝরাবে আর পৃথিবী তার সবজি কিছুমাত্র ধরে না রেখে বের করে দিবে।

একই বইয়ের একই অধ্যায়ে লেখক আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

মাহদী আমার উম্মত থেকে আবির্ভূত হবে। আল্লাহ তাকে জনগণের ত্রাণকর্তা হিসেবে নির্ধারণ করবেন। মাহদীর উপস্থিতির কারণে আমার উম্মত আনন্দে থাকবে। তার কারণে পশুরাও প্রশংসিত জীবন যাপন করবে। পৃথিবী তার সবজি বের করে দিবে। মাহদী সম্পদকে ন্যায়পরায়ণতার সাথে বণ্টন করবে।

উল্লেখিত বইয়ের অষ্টম অধ্যায়ে এর লেখক তাবরানির মুয়াজাম এবং নাঈম ইবনে হেমাদের ফাতান থেকে এবং তিনি আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করে বলেন যে , রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ

মাহদীর যুগে আমার উম্মত এমন নেয়ামত ভোগ করবে যা এর আগে কখনো ভোগ করে নি। আকাশ তাদের উপর বৃষ্টি ঝরাবে এবং পৃথিবী তার সবজিকে বের করে দেয়ার ব্যাপারে কোন কার্পণ্য করবে না। সম্পদের তখন তেমন মূল্য থাকবে না। এমন হবে কোন ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলবে হে মাহদী আমাকে সম্পদ দান করুন। হযরত উত্তরে বলবেন- নাও।

একই বইয়ে লেখক আবু নাঈম ইসফাহানির সিফাতুল মাহদী থেকে এবং তিনি আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণনা করেন যে মুহাম্মাদ (সাঃ) বলেছেনঃ

যে আমার সুন্নাত অনুযায়ী কাজ করবে সে হবে সেই ব্যক্তি যে আবির্ভূত হবে। আকাশ তার নেয়ামতসমূহ অবতরণ করবে এবং পৃথিবীও তার নেয়ামত উগরে দিবে। পৃথিবী ন্যায়বিচারে পূর্ণ হবে ঠিক যেভাবে তা নিপীড়ন দিয়ে পূর্ণ ছিলো।

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক্ব -এর 97 পৃষ্ঠায় হাকীম-এর সহীহ থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ

আকাশ ও পৃথিবীর বাসিন্দারা মাহদীকে ভালোবাসবে। পৃথিবী তার সবজিকে বের করে দিবে এবং কিছইু মজুদ করবে না। আল্লাহ পৃথিবীর বাসিন্দাদের এত বরকত ও নেয়ামত দিবেন যে যারা জীবিত তারা চাইবে মৃতরাও জীবিত হয়ে উঠুক।