কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?5%

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ? লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: ইমাম মাহদী (আ.)

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 86 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 63598 / ডাউনলোড: 3750
সাইজ সাইজ সাইজ
কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

কে ইমাম মাহদী (আঃ) ?

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

মাহদী (আঃ) সম্পর্কে কোরআনের আয়াত

নাহাজুল বালাগায় হযরত আলী (আঃ)-এর পজ্ঞাপূর্ণ কথা- ২০৫ নম্বর এ আছে যে তিনি বলেন : পৃথিবী আমাদের দিকে বাকাঁ হয়ে আসবে অবাধ্য হওয়ার পর , যেভাবে কামড় দেয় এমন মাদী উট তার বাচ্চার দিকে বাকাঁ হয়।

এটি একটি রূপক মন্তব্য। নবী (সাঃ)-এর সময় বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক অভিভাবকত্ব দু টোই ছিলো তার ঘরে। একইভাবে হযরত মাহদী (আঃ)- এর পুনরাগমনে সরকার ও আধ্যাত্মিক অভিভাবকত্ব দু টোই নেতার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

এরপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন :

) وَنُرِ‌يدُ أَن نَّمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا فِي الْأَرْ‌ضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَئِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ الْوَارِ‌ثِينَ(

এবং আমরা চাইলাম তাদের ওপর নেয়ামত দান করতে যাদেরকে পৃথিবীতে দূর্বল ভাবা হতো এবং তাদেরকে ইমাম বানাতে এবং তাদেরকে উত্তরাধিকারী বানাতে। (সূরা ক্বাসাসঃ ০৫)

ইবনে আবিল হাদীদ মোতাযালী তার নাহজুল বালাগার ব্যাখ্যায় বলেন (পৃষ্ঠা ৩২৯ , খণ্ড-৪) : আমাদের সাথীরা বলেন যে এ আয়াতে আল্লাহ ইমাম ও নেতার কাছে ওয়াদা করেছেন যে সে পৃথিবীর দখল পাবে এবং সব জাতির উপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করবে।

আবু আব্দুল্লাহ নাইম ইবনে হেমাদ ইকদুদ দুরার বইয়ের সপ্তম অধ্যায়ে বলেছেন : ইমাম আবু ইসহাক্ব সালবী ঐশীح م ع س ق বক্তব্যের তাফসীরে ইবনে আব্বাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন :ح ইঙ্গিত করে কুরাইশ ও দাসদের মধ্যে যুদ্ধের যেখানে কুরাইশরা বিজয়ী হবে ;م ইঙ্গিত করে বনি উমাইয়্যাদের রাজ্য ও সরকারের ;ع হচ্ছে বনি আব্বাসের মর্যাদা ও সম্মান ;س ইঙ্গিত করে মাহদী ( আঃ ) এর যুগ।ق ইঙ্গিত করে ঈসার নাম ও মাহদী ( আ ) এর আত্মপ্রকাশের সময়। লেখক বলেনس হচ্ছে মাহদী (আা .) এর উজ্জ্বলতা এবংق ঈসা ইবনে মরিয়মের ক্ষমতা।

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক্বের ১৬ পৃষ্ঠায় ব্যাখ্যা করেন এ কথার এভাবে :

) وَإِنَّهُ لَعِلْمٌ لِّلسَّاعَةِ(

এবং সে ক্বিয়ামতের নিদর্শন (সূরা যুখরুফঃ ৬১ )

তাফসীরকারকদের মধ্যে মাক্বাতেল ইবনে সুলাইমান ও তার অনুসারীগণ বলেছেন যে এ আয়াত আল মাহদী (আঃ)- এর পক্ষে নাযিল হয়েছে। ইসাফুর রাগেবীনের লেখক ১৫৬ তম পৃষ্ঠায় তাই লিখেছেন।

নুরুল আবসার - এর লেখক আবু আব্দুল্লাহ গাঞ্জি থেকে ২২৮ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেনঃ আল্লাহ বলেন :

) لِيُظْهِرَ‌هُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِ‌هَ الْمُشْرِ‌كُونَ(

যেন তা সব ধর্মের উপরে বিজয় লাভ করে , মুশরিকরা তা যতই অপছন্দ করুক। (সূরা আস সাফ্ফঃ ০৯)

সাইয়্যেদ ইবনে জুবায়ের বলেন : তা মাহদীর কথা বলে যিনি ফাতেমা (আঃ)- এর বংশধর , যিনি এ আয়াতের আদেশ বলে সব ধর্মের উপর বিজয় লাভ করবেন।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র ৪৪৩ পৃষ্ঠায় মানাক্বিবে খাওয়ারাযমী থেকে এবং তা জাবীর ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে এক দীর্ঘ ঘটনা বর্ণনা করেন , সেখানে একজন ইহুদী নবী (সাঃ)- এর কাছে আসে এবং তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে যার ফলে সে ইসলাম গ্রহণ করে। একটি প্রশ্ন সেই ইসলাম গ্রহণকারী জিজ্ঞেস করেছিলো নবী (সাঃ)-এর উত্তরাধীকারী সম্পর্কে এবং নবী (সাঃ) উত্তরে বলেছিলেন তারা সংখ্যায় বারোজন। তিনি নাম নিয়ে প্রত্যেককে গোনেন ইমাম হাসান আল আসকারী পর্যন্ত। এরপর তিনি বলেন : তার পর আসবে তার ছেলে মুহাম্মাদ যে পরিচিত হবে মাহদী , ক্বায়েম ও হুজ্জাত নামে। এরপর সে কিছু সময়ের জন্য লোকচক্ষুর আড়ালে যাবে এবং আবার উপস্থিত হবে এবং যখন সে তা করবে সে পৃথিবীকে ইনসাফ ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে। কারণ ততদিনে পৃথিবী নিষ্ঠুরতায় ও নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে যাবে।

রহমতপ্রাপ্ত তারা যারা তার অন্তরালে যাওয়ার সময়টিতে ধৈর্য ধরবে এবং রহমতপ্রাপ্ত তারা যারা তাঁর প্রতি ভালোবাসায় দৃঢ় থাকবে। তারাই হলো ওরা যাদেরকে আল্লাহ তাঁর কিতাবে প্রশংসা করেছেন এভাবে :

) وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِالْآخِرَ‌ةِ هُمْ يُوقِنُونَ(

যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে (যেমন মাহদীর অর্ন্তধান) এবং নামাজ ক্বায়েম করে এবং আমরা যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে ব্যায় (সূরা বাক্বারাঃ ০৩)

আল্লাহ আরো বলেন :

) أُولَـٰئِكَ حِزْبُ اللَّـهِ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّـهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ(

তারাই হলো আল্লাহর দল ; জেনো যে আল্লাহর দলই সফলতা লাভ করবে

(সূরা মুজাদিলাঃ ২২ )

(হাদীসটি এখানে শেষ । )

উপরোক্ত বইয়ের ৪৪৮ পৃষ্ঠায় তিনি ফারায়েদুস সিমতাইন বই থেকে একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন যা হাসান ইবনে খালিদ বর্ণনা করেছেন আবু হাসান আলী ইবনে মুসা রেযা (আঃ) থেকে মাহদী (আঃ) সম্পর্কে । যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন তিনি হবেন তার বংশ থেকে চতুর্থ এবং যখন তিনি পুনরায় আগমন করবেন পৃথিবী ঐশী আলোতে ঢেকে যাবে। এরপর ইমাম বলতে লাগলেন : সে-ই ঐ ব্যক্তি যার পুনরাগমন আকাশ থেকে এক আহবানকারীর আহবানের সময়ের সাথে মিলে যাবে , তা এমন হবে যে পৃথিবীর সব অধিবাসী তার এ চীৎকার শুনবে- জেনো যে আল্লাহর হুজ্জাত (প্রমাণ) আল্লাহর ঘরের কাছে আত্মপ্রকাশ করেছে , তাই তাকে অনুসরণ করো। কারণ সত্য তার ভেতরে আছে এবং তার সাথে আছে। আল্লাহর কথাও তাই বলেঃ

) إِن نَّشَأْ نُنَزِّلْ عَلَيْهِم مِّنَ السَّمَاءِ آيَةً فَظَلَّتْ أَعْنَاقُهُمْ لَهَا خَاضِعِينَ(

আমরা যদি চাই , আমরা তাদের ওপর এক নিদর্শন পাঠাবো আকাশ থেকে , যেন তাদের ঘাড় এর দিকে নীচু হয়। (সূরা শু আরাঃ ০৪ )

নিশাবুরী তার তাফসীরে (খণ্ড-১) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ শিয়াদের কেউ কেউ বিশ্বাস করেন অদৃশ্য এ আয়াতে মাহদীকে (আঃ) ইঙ্গিত করে , যার প্রতীক্ষা করা হচ্ছে। যার সম্পর্কে আল্লাহ তার কিতাবে এরকম ওয়াদা করেছেন :

) وَعَدَ اللَّـهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْ‌ضِ(

আল্লাহ তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে এবং ভালো কাজ করে তাদেরকে ওয়াদা করেছেন যে তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীর শাসক বানাবেন। (সূরা নূ রঃ ৫৫)

এছাড়া , তার সম্পর্কে নবী (সাঃ) বলেছেন :

যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ সেদিনকে এত লম্বা করে দেবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না এক ব্যক্তি আমার বংশধর থেকে আসবে যে আমার নামে নাম বহন করবে এবং পৃথিবীকে ন্যায়বিচার দিয়ে পূর্ণ করে দিবে ঠিক বিপরীতভাবে যেভাবে তা অবিচার ও নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো।

নিশাবুরী আরো বলেন :

আহলে সূন্নাতের মত অনুযায়ী উপরোক্ত আয়াত খোলাফায়ে রাশেদীনের ইমামত সম্পর্কে ইঙ্গিত করে। কারণ শব্দটি পবিত্র আয়াতে অংশ ইঙ্গিত করে এবং যখন সম্বোধন করা হবে এ অংশ -র জন্য উপস্থিত থাকা জরুরী । এছাড়া এটি সবাই জানে যে চার খলিফা (আবু বকর , উমর , উসমান এবং আলী) বিশ্বাসী ও নৈতিকগুণ সম্পন্ন ছিলেন এবং তারা তখন উপস্থিত ছিলেন। পরিণতিতে খিলাফত ও বিজয় তাদের জন্য নিশ্চিত ছিলো। তাই এটি বলা প্রয়োজন যে এ আয়াত তাদেরকেই ইঙ্গিত করে।

এরপর তিনি বলেন :

একদল তাদের ( উপরোক্ত অভিমতের ) বিরুদ্ধে গিয়েছেন এ যুক্তি দিয়ে যেمن শব্দটি প্রকাশ করা অর্থে ধরা অনুমোদন যোগ্য নয়। তারা বলেন পৃথিবীর উত্তরাধিকারী হওয়া অর্থ এর দখল ও এর ওপরে অধিপত্য যেমন তা হয়েছিলো বনি ইসরাইলীদের ক্ষেত্রে।

তিনি আরো বলেন : চলুন আমরাمن শব্দটির অর্থ অংশ -ই গ্রহণ করি , কিন্তু কিসের ভিত্তিতে তা অনুমোদনযোগ্য হবে না যদি অংশ বলতে আলীর খেলাফত বোঝায় এবং ধরুনمن এখানে বহুবচনে ধরা হয়েছে শুধু আলীর সম্মান ও বিরাট মর্যাদা দেখানোর জন্য অথবা হযরতের প্রতি ও তার পরে তার এগারোজন সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করার জন্য।

মাহদী ( আঃ ) সম্পর্কে নবীর ( সাঃ ) হাদীস

আবু দাউদ তার সহীহ -তে (পৃষ্ঠা ৮৭ , চতুর্থ খণ্ডে) , আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন নবী (সাঃ) বলেছেনঃ

যদি পৃথিবীর জীবন আর একদিনও অবশিষ্ট না থাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ দিনটিকে এত দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি এক ব্যক্তিকে আমার বংশ থেকে নিয়োগ দিবেন।

এরপর তিনি একইভাবে বলেন যে হাদীসে সুফিয়ানে এসেছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন : পৃথিবীর জীবন শেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না একজন আরব আমার বংশ থেকে পৃথিবী শাসন করবে।

ঐ একই বইয়ের একই পৃষ্ঠায় আলী (আঃ) থেকে একটি হাদীস এসেছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন : যদি পৃথিবীর জীবন আর একদিনও অবশিষ্ট না থাকে আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিবেন।

তিরমিযী তার সহীহতে , (খণ্ড-২ , পৃষ্ঠা- ২৭) , আব্দুল্লাহ থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন :

পৃথিবীর জীবন শেষ হবে না যতক্ষণ না একজন আরব আমার বংশ থেকে আসবে এবং শাসন করবে।

তিরমিযী বলেন : এ হাদীসটি হাসান (গ্রহণযোগ্য) এবং সহীহ (সঠিক) এবং একই জিনিস বর্ণিত হয়েছে আলী , আবু সাইয়ীদ , উম্মে সালামা এবং আবু হুরায়রা থেকে।

একই বইতে একই পৃষ্ঠায় একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে আবু হুরায়রা থেকে যে , নবী (সাঃ) বলেছেন :

যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ সেদিনকে এত দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না এক ব্যক্তি আমার বংশ থেকে আসবে ও শাসন করবে।

এরপর তিনি বলেন : এ হাদীসটি হাসান (গ্রহণযোগ্য) এবং সহীহ (সঠিক)।

ইবনে হাজার তার সাওয়ায়েক্ব -এ , (পৃষ্ঠা নং ৯৭) বলেন : আবু আহমাদ , আবু দাউদ , তিরমিযী এবং ইবনে মাজাহ নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন :

যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই আল্লাহ সেদিন আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিবেন।

ইসাফুর রাগেবীনের ১৪৭ নং পৃষ্ঠায় এ হাদীসটি বর্ণনা করা হয়েছে।

ইসাফুর রাগেবীন এ হাদীস বর্ণনা করেছে ১৪৮ পৃষ্ঠায়।

ইবনে হাজার পূর্বে উল্লেখিত বইয়ের ৯৭ পৃষ্ঠায় বলেন : আবু দাউদ এবং তিরমিযী নবী (সাঃ) থেকে এরকম বর্ণনা করেছেন :

এ পৃথিবীর জীবন শেষ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তি আসবে ও শাসন করবে।

ইসাফুর রাগেবীনও একই হাদীস ১৪৮ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছে।

ইবনে হাজার সাওয়ায়েক্ব এ (পৃষ্ঠা-৯৭) লিখেছেন : আবু দাউদ এবং তিরমিযী নবী (সাঃ) থেকে এরকম বর্ণনা করেছেন :

যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে আল্লাহ সেদিনকে এত দীর্ঘ করে দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দেন।

ইসাফুর রাগেবীনও একই হাদীস ১৪৮ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছে।

নুরুল আবছারে , (পৃষ্ঠা-২৯৯) আলী (আঃ) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন :

যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই (সেদিন) আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তির আগমন ঘটাবেন।

এরপর লেখক বলেন : এ হাদীসটি আবু দাউদ কৃতর্ক তার সুনানে বর্ণিত হয়েছে।

একই বইতে (পৃষ্ঠা ২৩১) আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন :

ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তি আসে এবং শাসন করে।

ইসাফুর রাগেবীনের ১৫১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে আহমাদ ও মাওয়ারদী নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন : সুসংবাদ তোমাদের (সবাইকে) মাহদীর বিষয়ে। একই হাদীস এসেছে নুরুল আবসারে ১৫১ পৃষ্ঠায়।

নুরুল আবসারের লেখক ২৩১ পৃষ্ঠায় লেখেন : আহমাদ বর্ণনা করেছেন আবু সাইদ খুদরী থেকে যে নবী (সাঃ) বলেছেন : আমি তোমাদের সুসংবাদ দিচ্ছি মাহদী সম্পর্কে।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দাতে (পৃষ্ঠা ৪৩২) ক্বাতাদা থেকে বর্ণিত হয়েছে : আমি সাইদ ইবনে মাসীবকে জিজ্ঞেস করলাম : মাহদী সম্পর্কে কী কোন সত্যতা আছে ? সে বললো : হ্যা , সে সত্য এবং সে ফাতেমার বংশ থেকে।

একই বইতে পূর্বে উল্লেখিত পৃষ্ঠায় আলী (আঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন : যদি পৃথিবীর জীবন এক দিনের বেশী অবশিষ্ট না থাকে অবশ্যই আল্লাহ আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তির আগমন ঘটাবেন। এরপর তিনি লেখেন : এ হাদীসটি আবু দাউদ , আহমাদ , তিরমিযী ও ইবনে মাজাহও বর্ণনা করেছেন।

একই বইতে , (পৃষ্ঠা ৪৩২) একটি হাদীস আহমাদ এর মুসনাদ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে নবী (সাঃ) বলেছেন : ক্বেয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না পৃথিবী নিষ্ঠুরতায় ও নিপীড়নে পূর্ণ হবে। তখন আমার বংশ থেকে এক ব্যক্তি আসবে তা ইনসাফ ও ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিতে।

আবার একই বইতে ৪৪০ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন : মুফেক্ব ইবনে আহমাদ আখতার খাওয়ারাযম-এর খোতবা থেকে বর্ণনা করেন যিনি বর্ণনা করেন আব্দুর রহমান ইবনে আবি লাইলী থেকে , তিনি তার বাবা থেকে যিনি বলেন : খাইবারের যুদ্ধে নবী (সাঃ) আলীর (আঃ) হাতে পতাকা দিলেন। তারপর আল্লাহ তার হাতে বিজয় দিলেন। পরে গাদীরে খুমে তিনি লোকদেরকে মনে করিয়ে দিলেন যে আলী সকল বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীর মাওলা (অভিভাবক) এবং আরো বলতে থাকলেন এবং এক পর্যায়ে কিছু বাক্য বললেন আলী , ফাতেমা , হাসান এবং হুসাইনের নৈতিক গুণাবলী সম্পর্কে।

এরপর তিনি বললেন : জীবরাইল আমাকে জানিয়েছে আমার বিদায়ের পর তারা অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হবে এবং এ নিপীড়ন চলতে থাকবে একটি আন্দোলন পর্যন্ত যা তাদের ক্বায়েম শুরু করবে এবং সে সময় তাদের বিশ্বাসকে উচুঁতে উঠানো হবে , জনগণ তাদের বন্ধুত্বের দিকে ফিরবে , তাদের বিরুদ্ধে খারাপ কথা শেষ হবে। তাদের প্রতি যাদের তিক্ততা আছে তারা অপমানিত হবে এবং যারা তাদের প্রশংসা করবে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এ ধরনের ঘটনা তখন ঘটবে যখন শহরগুলো পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে এবং জনগণ দূর্বল হয়ে যাবে এবং রেহাই পাওয়ার ক্ষেত্রে অসহায় হয়ে পড়বে। তখন (ক্বায়েম) আসবে আমার বংশ থেকে এবং আল্লাহ সত্যকে প্রকাশ করবেন তার মাধ্যমে এবং মিথ্যাকে নিভিয়ে দিবেন তার তরবারীর মাধ্যমে।

এরপর তিনি বললেন : হে জনতা , সুসংবাদ তোমাদের বোঝা লাঘব এবং বিরামের বিষয়ে। অবশ্যই আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং তিনি কখনো তা ভাঙ্গেন না এবং তার আদেশ কখনো খণ্ডন হয় না। তিনি সর্বসচেতন এবং সর্বদ্রষ্টা এবং আল্লাহর বিজয় নিকটবর্তী ।

একই বইতে পৃষ্ঠা ৪৪৭ এ তিনি শেইখ আবু ইসহাক ইবরাহিম ইবনে ইয়াকুব এর ফারায়েদুস সিমতাইন বই থেকে যিনি জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী থেকে বর্ণনা করেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন :

যে ব্যক্তি মাহদীর আগমনকে অস্বীকার করলো সে অবশ্যই অবিশ্বাস করলো যা আল্লাহ মুহাম্মাদের ওপর নাযিল করেছেন এবং যে ঈসা-র আগমনকে অস্বীকার করলো অবশ্যই সে অবিশ্বাসীতে পরিণত হলো এবং যে দাজ্জালের বিদ্রোহকে অস্বীকার করলো সে অবশ্যই অবিশ্বাসীতে পরিণত হলো।

মাহদী ( আঃ )সম্পর্কে হযরত আলী ( আঃ )- এর খোতবা

নাহাজুল বালাগা , খোতবা নং ৯১ , মাহদী (আঃ) সম্পর্কে ইমাম আলী (আঃ)এর বক্তব্য। এটি একটি খোতবার অংশ যা তিনি বনি উমাইয়্যা ও জনগণের প্রতি তাদের অপকর্ম সম্পর্কে দিয়েছিলেন যার এক পর্যায়ে তিনি বললেন : এরপর , আল্লাহ তোমাদের উপর অপ্রীতিকরভাবে বিস্তৃতৃ করবেন সমস্যাবলী এবং অন্যান্য ঘটনা এবং চামড়া কেটে নেয়া হবে , গোশত চেঁছে নেয়া হবে , তখনই (শুধু) দুর্যোগ সাফ করা হবে। এরপর তিনি আরো বললেন : আল্লাহ এ স্বাধীনতা ও নাজাত এক ব্যক্তির মাধ্যমে আনবেন যার আচরণ সেই গোত্রের প্রতি হবে কঠিন ও দয়াহীন এবং সে তাদেরকে শাস্তি দিবে এবং সে তাদের তৃষ্ণা মেটাবে (কষ্টের) তিক্ত পেয়ালা দিয়ে এবং তাদের প্রতি তরবারী ছাড়া কিছু বাড়িয়ে দিবে না।

মোতাযালী এর তাফসীরে , তার বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ডে (পৃষ্ঠা ১৭৮) উপরোক্ত খোতবার অধীনে বলেন : এ খোতবাটি একদল ইতিহাসবিদ স্মরণ করেছেন এবং এটি প্রায়ই পাওয়া যায় এবং বর্ণিত হয়েছে যে এটি ইসতেফাদাহ র (প্রচুর পাওয়া যায়) স্তরে পৌঁছেছে।

নাহরেওয়ানের যুদ্ধের পর আলী (আঃ) এ ধরনের বাক্যে কথা বলেন :

আমি ছাড়া কারো সাহস ছিলো না দৃঢ় থাকায় ও ঐসব বিদ্রোহ ও গণ্ডগোল প্রতিরোধ করায় [সম্ভবত : দৃঢ় থাকার কথা বলেছেন খারেজীদের বিদ্রোহের সময়ে , যখন মুয়াবিয়ার সাথীরা আমর-আস-এর চালাকিতে কোরআনকে বর্ষার আগায় বিদ্ধ করে এবং এভাবে তারা নিজেদের হাতের তরবারীর আঘাত থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলো। আলী (আঃ)-এর সৈন্যরা এ দেখে তার হুকুম মানতে দ্বিধায় পড়ে যায় এবং তার বিরোধিতা করে বলে : এ লোকদের ওপর আমাদের তরবারী উঠানোর সাহস করা উচিত না। অথবা সম্ভবত জামালের যুদ্ধের প্রতিপক্ষের কথা ইঙ্গিত করে যেখানে অংশগ্রহণ করেছে এ ধরনের ব্যক্তিত্ব যেমন হযরত আয়শা , তালহা এবং যুবাইর , যারা মুসলিমদের চোখে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন । এ কারণে তাদের সাহস ছিলো না তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা একমাত্র আলী (আঃ) ছাড়া যিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন ও তাদের পরাজিত করেছেন]।

এরপর ইবনে আবিল হাদীদ বলেন : একটি বক্তব্য যা রাযী উল্লেখ করেন নি তা হলো একটি খোতবা যা তিনি বনি-উমাইয়্যা সম্পর্কে দিয়েছেন , তার বিষয়বস্তু এরকম :

তখন অবশ্যই আল্লাহ জনগণকে মুক্ত করবেন আমাদের পবিত্র পরিবারের একজনকে দিয়ে। আমার বাবা তার জন্য কোরবান হোক যার মা বেহেশতের শ্রেষ্ঠ নারীদের একজন।

এরপর তিনি স্বীকার করেছেন যে আলী (আঃ) এ বক্তব্যে প্রতীক্ষিত মাহদী (আঃ)এর কথা বলেছেন।

নাহাজুল বালাগা- খোতবা নং ১৪৮। হযরত আলী (আঃ) অদৃশ্যের খবর সম্পর্কে যা বলেছেন তা এরকম :

হে জনতা , এটি হলো সময় প্রত্যেক শপথকৃত ঘটনা ঘটার এবং বিভিন্ন বিষয়ের আগমনের যা সম্পর্কে তোমরা জানো না। জেনে রাখো আমাদের মাঝ থেকে (নবী (সাঃ)-র পবিত্র পরিবার থেকে) সে ভবিষ্যতে আমাদের পথে চলবে একটি পোজ্জ্বোল বাতি নিয়ে এবং নৈতিকগুণ সম্পন্নদের পায়ের ছাপ অনুসরণ করবে গিট খোলার জন্য , দাসদের মুক্ত করার জন্য এবং বিভক্তদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য। সে জনগণের কাছ থেকে গোপন থাকবে এমনভাবে যে কোন পায়ের ছাপ সন্ধানকারী তার পায়ের ছাপ খুজে পাবে না যদি সে তার পিছু নেয়।

মোতাজালী তার বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ডে (পৃষ্ঠা ৪৩৬ এ) এ খোতবার অধীনে বলেন :

হযরত এখানে প্রতীক্ষিত মাহদী এবং তার গোপন থাকার কথা বলেছেন।

নাহাজুল বালাগা , খোতবা ১৮০। আলী (আঃ) যেসব খোতবা কুফার লোকদের উদ্দেশ্যে দিয়েছিলেন সেগুলোর মধ্যে এটি একটি। খোতবাটি বর্ণনা করার পূর্বে এটি উল্লেখ করা ভালো হবে যে , নুফিল বুকালি বর্ণনা করেন আলী (আঃ) এ খোতবাটি দিয়েছিলেন একটি পাথরের উপর দাঁড়িয়ে যা জুদা ইবনে হুবাইরা মুখযুমী তার জন্য স্থাপন করেছিলেন। আলীর (আঃ) গায়ে ছিলো একটি উলের জামা , তার তরবারীর বেল্ট ছিলো পাতার তৈরী এবং পায়ের স্যান্ডেলও ছিলো খেজুর পাতা দিয়ে তৈরী। তার কপালে ছিলো একটি শক্ত জায়গা উটের হাঁটুর মত। তিনি বললেন :

সে পরে থাকবে প্রজ্ঞার বর্ম , যা সে লাভ করবে এর সব শর্তসহ। যেমন এর প্রতি পূর্ণ মনোযোগ (এর পুরো জ্ঞান এবং এর প্রতি পূর্ণ আত্মনিয়োগ)। তার জন্য এটি এমন একটি জিনিস যা সে হারিয়ে ফেলেছিলো এবং সে এখন তা খুঁজছে অথবা তার প্রয়োজন যা সে মেটাবার চেষ্টা করছে। যদি ইসলাম বিপদে পড়ে সে হারিয়ে যাওয়া ভ্রমণকারীর মত অনুভব করে এবং (ক্লান্ত) এক উটের মত এর লেজের অগ্রভাগ দিয়ে আঘাত করতে থাকে তার ঘাড় মাটিতে শুইয়ে দিয়ে। সে আল্লাহর যুক্তির শেষ জন এবং তার নবীদের একজন প্রতিনিধি।

নাহাজুল বালাগার ব্যাখ্যাকারী ইবনে আবিল হাদীদ তার দ্বিতীয় খণ্ডে ৫৩৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন : প্রত্যেক দল একথাগুলো ব্যাখ্যা করেছে তাদের বিশ্বাসের সুবিধা অনুযায়ী এবং বারো ইমামি শিয়ারা মনে করে হযরতের বক্তব্যে যে ব্যক্তির ইঙ্গিত করা হচ্ছে তিনি মাহদী (আঃ) ছাড়া আর কেউ নন।

এরপর তিনি বলেন : আমি যেভাবে তা দেখি , এটি বিশ্বাস করা কঠিন মনে হয় না যে এখানে মুহাম্মাদ (সাঃ)- এর বংশধর আল-ক্বায়েম -এর কথা বলা হচ্ছে।

ইয়ানাবিউল-মুওয়াদ্দা বইয়ের লেখক ৪৬ নং পৃষ্ঠায় দুররুল মুনাযযাম বই থেকে বর্ণনা করেন : আমিরুল মুমিনীন (আঃ)-এর কথা মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বংশধর মাহদী অথবা ক্বায়েম সম্পর্কে এরকম :

মুহাম্মাদী পতাকার বাহক ও আহমাদী সরকারের শাসক প্রকাশিত হবে। সে এমন একজন যে তার তরবারী নিয়ে বিদ্রোহ করবে। সোজা করবে বাকাকে। পৃথিবী জয় করবে এবং ভুলে যাওয়া ফরজ ও সুন্নাতকে পুনরুজ্জীবিত করবে।

ইয়ানাবিউল মুওয়াদ্দা -র লেখক ৪৬৭ পৃষ্ঠায় লেখেন : অতিন্দ্রীয় জ্ঞান ও দৃষ্টিসম্পন্ন কিছু মানুষ আমিরুল মুমিনীন থেকে বর্ণনা করেছেন :

শীঘ্রই আল্লাহ একটি দলকে আনবেন যাদেরকে তিনি ভালোবাসেন এবং তারাও তারঁ প্রেমিক এবং তাদের মধ্যে যে আগন্তুকের মত সে সরকারের দায়িত্ব নেবে। অবশ্যই সেই হবে মাহদী , তার চেহারা গোলাপী , তার চুলের রঙ সোনালী। সে পৃথিবীকে ন্যায় বিচারে পূর্ণ করে দিবে কোন সমস্যা ছাড়াই। তার একেবারে শৈশবে সে তার পিতামাতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং প্রশিক্ষণের দৃষ্টিকোণ থেকে সে হবে বিরল ও তুলনাহীন। সে মুসলমান দেশগুলোর উপরে শাসন করবে চুড়ান্ত স্থিরতা ও নিরাপত্তার মাধ্যমে এবং সময় হবে তার পক্ষে ও তার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ । তার কথা গ্রহণ করা হবে : যুবক ও বৃদ্ধরা তাকে বিনয়ের সাথে মেনে চলবে। সে পৃথিবীকে ন্যায়বিচারে পূর্ণ করে দিবে যেভাবে তা নিপীড়নে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো। তখন তার ইমামাত পূর্ণতায় পৌঁছুবে এবং খেলাফত তার জন্য প্রতিষ্ঠিত হবে। এছাড়া আল্লাহ মৃতদেরকে কবর থেকে জাগাবেন এবং পৃথিবীতে ফেরত পাঠাবেন। তখন সকালের ঘুম থেকে মানুষ যেমন জাগে তারা তেমনি নিজেদের বাড়ি ছাড়া আর কিছু দেখবে না। জমি সমৃদ্ধি লাভ করবে এবং তার (মাহদীর) অবস্থানের রহমতে তা সতেজ ও ফলদায়ক হবে। বিদ্রোহ ও বিশৃঙ্খলা উধাও হয়ে যাবে এবং রহমত ও কল্যাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে ।


2

3

4

5

6

7

8

9

10

11

12

13

14

15

16

17

18