শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড)

শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড)0%

শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড) লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: ইতিহাস

শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড)

লেখক: আল্লামা আব্বাস বিন মুহাম্মাদ রেযা আল কুম্মি
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 45662
ডাউনলোড: 4037

পাঠকের মতামত:

শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড)
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 90 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 45662 / ডাউনলোড: 4037
সাইজ সাইজ সাইজ
শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড)

শোকার্তের দীর্ঘশ্বাস (প্রথম খণ্ড)

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

উসমান বিন আলী বিন আবি তালিবের শাহাদাত

তিনি এ যুদ্ধ ক্ষেত্রের কবিতাটি আবৃত্তি করা অবস্থায় যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন , নিশ্চয়ই আমি উসমান , মর্যাদার অধিকারী , আমার অভিভাবক হচ্ছেন আলী যিনি ছিলেন সৎকর্ম সম্পাদনকারী , এ হলো হোসেইন- ইনসাফের অভিভাবক , যুবক ও বৃদ্ধদের সর্দার। ”

তার বয়স ছিলো একুশ বছর , তিনি গেলেন এবং তার ভাইদের জায়গায় দাঁড়ালেন (আগে যারা গিয়েছিলেন) ।

আবুল ফারাজ এবং অন্যরা বলেন যে , খাওলী বিন ইয়াযীদ একটি তীর ছুঁড়ে তার দিকে যা তাকে ফেলে দেয়।

‘ মানাক্বিব ’ -এ আছে যে , একটি তীর তার পাশে বিদ্ধ হলো এবং তিনি ঘোড়া থেকে পড়ে গেলেন। বনি আবান বিন দারিম গোত্রের এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করে এবং তার (আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক তার উপর) মাথা নিয়ে যায়। বর্ণিত আছে ইমাম আলী (আ.) বলেছেন যে , “ আমি তাকে নাম দিয়েছি আমার (দ্বীনি) ভাই উসমান বিন মাযউনের নামে। ”

মুহাম্মাদ আল আসগার বিন আলী বিন আবি তালিবের শাহাদাত

তার মা ছিলেন একজন দাসী। [তাবারি , আবুল ফারাজ উল্লেখ করেছেন] । বনি আবান বিন দারিম গোত্রের এক ব্যক্তি তাকে হত্যা করে এবং তার মাথা নিয়ে যায় (আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক তার উপর) ।

আবু বকর বিন আলী বিন আবি তালিবের শাহাদাত

তার নাম জানা যায় না (তার কুনিয়া হলো আবু বকর) , এবং তার মা ছিলো মাসউদ বিন খালিদের কন্যা লায়লা।

[তাবারির গ্রন্থে আছে] এক হামাদানি ব্যক্তি তাকে হত্যা করে। মাদায়েনি বর্ণনা করেন যে , তার লাশ পাওয়া যায় একটি স্রোতধারার পাশে , কিন্তু তার হত্যা সম্পর্কে জানা যায়নি।

‘ মানাক্বিব ’ -এ আছে যে আবু বকর বিন আলী যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন এ যুদ্ধের কবিতাটি আবৃত্তি করে , আমার অভিভাবক আলী বেশ কিছু উন্নত গুণাবলীর অধিকারী , মর্যাদাবান , দয়ালু ও সম্মানিত হাশিমের বংশধর। এ হলো হোসেইন আল্লাহর রাসূলের সন্তান , আমরা তাকে ধারালো তরবারি দিয়ে রক্ষা করি , আমার জীবন আপনার জন্য কোরবান হোক , হে আমার সম্মানিত ভাই। ” তিনি যুদ্ধ করতে লাগলেন যতক্ষণ পর্যন্তনা যাহর (অথবা যাজর) বিন বাদার জু ’ ফি অথবা উক্ববাহ গানাউই তাকে হত্যা করে (আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক তার উপর) ।

‘ মানাক্বিব ’ -এ রয়েছে যে এরপর তার ভাই উমর যুদ্ধক্ষেত্রে এলেন এ যুদ্ধ ক্ষেত্রের কবিতাটি আবৃত্তি করে , হে আল্লাহর শত্রুরা , উমরের পথ ছাড়ো , সিংহকে ছেড়ে দাও যেন সে তোমাদেরকে আঘাত করতে পারে তার তরবারি দিয়ে এবং সে পালাবে না। হে যাজর , হেযাজর , আমার ওপরে তোমার প্রতিশোধ নাও। ” এরপর তিনি যাজরকে হত্যা করলেন , যে ছিলো তার ভাইয়ের হত্যাকারী এবং যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন।

আমরা বলি যে , ঐতিহাসিকদের কাছে ও জীবনী লেখকদের কাছে জানা নেই যে , উমর কারবালায় উপস্থিত ছিলেন কিনা তার ভাই ইমাম হোসেইন (আ.) এর সাথে। উমদাতুত তালিব ’ -এর লেখক তার বক্তব্যের শেষে এসে বলেছেন যে , উমার তার ভাই ইমাম হোসেইন (আ.) এর সাথে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করেছিলো এবং তার সাথে কুফা যায় নি। তার সম্পর্কে বর্ণনা যে , তিনি কারবালায় উপস্থিত ছিলেন তা সঠিক নয়। উমর ৭৭ বছর বয়সে তাস আতে ইন্তেকাল করেন।

আবুল ফারাজ বলেন , মুহাম্মাদ বিন আলী বিন হামযা বলেন যে , আশুরার দিনে , ইবরাহীম বিন আলীও কারবালায় শহীদ হন এবং তার মা ছিলেন এক দাসী , কিন্তু অন্যরা তার উল্লেখকরেন নি এবং আমি জীবনীমূলক বইগুলোতে ইবরাহীম বিন আলী নামে কাউকে পাই নি।

সাইয়েদ ইবনে তাউস বলেন যে , মাসাবীহ ’ -এর লেখক বলেছেন যে , হাসান বিন হাসান আল মুসাননাহ তার চাচার সাথে থেকে যুদ্ধ করেছেন আশুরার দিনে এবং তরবারি দিয়ে সত্তর জনকে হত্যা করেছিলেন। তিনি আঠারোটি আঘাত পেয়েছিলেন এবং তার ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। তার মামা আসমা বিন খারেজা তাকেফকাতে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেখানে সুস্থতা লাভ করেছিলেন , এরপর তিনি তাকে মদীনায় পাঠিয়ে দেন।

‘ বিহারুল আনওয়ার ’ -এ খাওয়ারেযমির মাক্বতাল ’ থেকে উল্লেখ আছে যে , আশুরার দিনে একটি বাচ্চা বেরিয়ে এলো ইমাম হোসেইন (আ.) এর তাঁবু থেকে , কানে তার দুখানা দুল ছিলো। সে খুব ভীত ছিলো এবং সে ডান বায়ে তাকাচ্ছিলো এবং তার কানের দুলগুলো কাঁপছিলো। হানি বিন সাবীত তাকে আক্রমণ করে ও হত্যা করে। শাহারবান(ইমাম হোসেইন (আ.) এর স্ত্রী) ভাষা হারিয়ে তার দিকে তাকালেন এবং একটি কথাও বললেন না।

আবুজাফর তাবারি বর্ণনা করেছেন হিশাম কালবি থেকে , তিনি আবুল হুযাইল থেকে , তিনি সাকুনি নামে এক ব্যক্তি থেকে যে বলেছে যে , খালিদ বিন উবায়দুল্লাহর দিনগুলোতে আমি হানি বিন সাবীত হাযরামিকে দেখলাম , যে বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলো , (হাযরাম গোত্রের) লোকজনের এক জমায়েতে বলছিলো যে , আমি কারবালায় উপস্থিত ছিলাম হোসেইনকে হত্যার দিন এবং অন্য নয় জন ব্যক্তির সাথে ঘোড়ায় চড়ে ঘুরছিলাম। ঘোড়াগুলো হাঁটছিলো ও ছুটছিলো এখানে সেখানে। হঠাৎ হোসেইনের পরিবারের একটি ছোট্ট বাচ্চা বেরিয়ে এলো তাঁবু থেকে , পরনে ছিলো জামা ও প্যান্ট। তার হাতে ছিলো তাঁবুর একটি খুঁটি এবং সে ডানে বামে তাকাচ্ছিলো ভয়ে। আমি যেন দেখতে পাচ্ছি তার কানের দুটো দুল কাঁপছে যখন সে মাথা ঘোড়াচ্ছিলো এবং আমি যেন এখনও দেখতে পাচ্ছি একজন ঘোড়সওয়ার ঘোড়া ছুটিয়ে তার দিকে গেলো এবং তার কাছে পৌঁছে নিচু হলো এবং তাকে তরবারি দিয়ে দুটুকরো করে ফেললো। ” হিশাম বলে যে , সাকুনি বলেছে যে , শিশুটির হত্যাকারী ছিলো হানি বিন সাবীত নিজেই এবং সে তিরস্কারের ভয়ে নিজের নাম গোপন করেছিলো। আমার চোখ এমন শিশুদের আর দেখেনি যাদের দুঃখ মানুষের হৃৎপিণ্ডকে আগুনে ঝলসে দেয়।