আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে গাদীর

আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে গাদীর0%

আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে গাদীর লেখক:
: মুহাদ্দিস এম, এ, রহমান
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ: ইতিহাস

আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে গাদীর

লেখক: মুহাম্মদ রেজা জাব্বারান
: মুহাদ্দিস এম, এ, রহমান
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 23101
ডাউনলোড: 3259

বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 28 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 23101 / ডাউনলোড: 3259
সাইজ সাইজ সাইজ
আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে গাদীর

আহলে সুন্নাতের দৃষ্টিতে গাদীর

লেখক:
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বাংলা

মুসলিম বিশ্ব আজ পরাশক্তির চক্রান্তের শিকার। তাদের ফাদে পরে মুসলমানদের অবস্থা এখন অতি নাজুক। মুসলমানরা আজ বহু দলে বিভক্ত , মিথ্যা ও বিভ্রান্তির বেড়াজালে বন্দী , তারা নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ - সংঘাত , মারামারি , আর হানাহানিতে লিপ্ত। ফতোয়া দিয়ে একে অপরকে কাফির ঘোষণা এখন একদল অজ্ঞ ও পাশ্চাত্যের হাতের পুতুল ব্যক্তির নিত্য দিনের কর্মে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থা থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য সম্মানিত বিজ্ঞ লেখক নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সুন্নীদের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ সমূহের উপর ভিত্তি করে Ghadir az didgahe ahle sunnatনামে একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ গ্রন্থে লেখক গাদীরের ঐতিহাসিক ঘটনাকে ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি হযরত আলী ( আ .)- এর মর্যাদা যে শিয়া - সুন্নী নির্বিশেষে সকলের কাছে অনস্বীকার্য একটি বিষয় তা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করার প্রয়াস চালিয়েছেন এবং প্রকৃত ও সত্য বিষয়কে পাঠকের কাছে তুলে ধরেছেন।

স্থলাভিষিক্ত ও উত্তরাধিকারী

সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত খলিফা বা প্রতিনিধি

শিয়া মাযহাবের বিশ্বাস অনুযায়ী , রাসূল (সা.)-এর খলিফা বা প্রতিনিধির দু ধরনের দায়িত্ব বা কর্তব্য রয়েছে ; যথা- ক. বাহ্যিক শাসন ও খ. আধ্যাত্মিক শাসন।

ক. বাহ্যিক শাসন

অর্থাৎ শাসন পরিচালনা , আইনের বাস্তবায়ন , অধিকার সংরক্ষণ , ইসলামী রাষ্ট্রের সংরক্ষণ ইতাদি।

এক্ষেত্রে খলিফা বা প্রতিনিধি অন্যান্য শাসকদের মতই , শুধু এতটুকু পার্থক্য যে , সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা ইসলামী শাসন ব্যবস্থার একটি বৈশিষ্ট্য ও আবশ্যক কাজ।

খ. আধ্যাত্মিক শাসন

আধ্যাত্মিক শাসন এই অর্থে যে , খলিফা বা প্রতিনিধির কর্তব্য হচ্ছে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়গুলি (যা কোন কারণে বলা হয়নি) মুসলমানদের নিকট তুলে ধরা।

খলিফা বা প্রতিনিধি একজন শাসকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অবশ্যই ইসলামী বিধি-বিধান ও কোরআনের তাফসীর বা ব্যাখ্যাও জনগণের সামনে বর্ণনা করবে যাতে ইসলামের চিন্তাধারাকে যে কোন ধরনের বিচ্যুতি থেকে রক্ষা এবং বিভিন্ন ধরনের সন্দেহ-সংশয় হতে মুক্ত রাখতে পারে।

সুতরাং খলিফাকে অবশ্যই রাষ্ট্রের অধিবাসীদের মধ্যে ইসলামের ভিত্তি , মানদণ্ড ও শরীয়তের বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জ্ঞানী ও বিজ্ঞ হতে হবে। অর্থাৎ সবার চেয়ে বেশি মহানবীর প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের ঝর্ণা ধারা হতে পানি পান ও মহান রাসূল (সা.)-এর বিদ্যমান থাকাকালীন সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ তার থেকে জ্ঞান ও নৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সৌভাগ্যের অধিকারী হতে হবে। সুতরাং ইসলামকে টিকিয়ে রাখার জন্য এরূপ ব্যক্তিত্ব বিদ্যমান থাকা অপরিহার্য যিনি রাসূল (সা.)-এর পবিত্র অস্তিত্ব থেকে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত ও নৈতিক শিক্ষা লাভ করেছেন। সেই সাথে ইসলামের অগ্রবর্তী অবদানের অধিকারী তেমন ব্যক্তির মধ্যে সংবেদনশীল পরিস্থিতিতে , নিজের স্বার্থের উপর মুসলমানদের ও ইসলামের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দ্বীনকে রক্ষার জন্য আত্মোৎসর্গ করার দৃষ্টান্ত থাকতে হবে।

খলিফার শাসনকার্যের ক্ষেত্রে মুসলমানের সমস্ত সম্পদের উপর তার শাসন কর্তৃত্বের অধিকার থাকবে বিশেষ করে খুমস , যাকাত , টাক্স বা রাজস্ব , যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বা গণিমত , খনিজ ও অন্যান্য সাধারণ সম্পদ ইতাদি যা খলিফার অধীনে থাকবে এবং খলিফার দায়িত্ব হচ্ছে এগু্লোকে কোন প্রকার অনিয়ম ও অনাচার ছাড়াই জনগণের মাঝে বিতরণ করা ; অথবা ইসলামী রাষ্ট্রের কল্যাণকর কোন কাজে লাগানো। সুতরাং তাকে অবশ্যই দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত হতে হবে যাতে সংবেদনশীল বিশেষ মুহূর্তে ও ভুল না করে। ঠিক এই দলিলের ভিত্তিতেই খেলাফত হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত যা তার পক্ষ হতে উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিকই প্রদান করা হয়। তাই ঐ পবিত্র পদ মানুষের নির্বাচনের নাগালের বাইরে।

অন্যভাবে বলা যায় , খেলাফত আল্লাহর মনোনীত একটি পদ যাতে মানুষের ভোটের কোন প্রভাব নেই। এ চিন্তার ভিত্তিতে আমরা রাসূল (সা.)- এর স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণের ক্ষেত্রে অবশ্যই বর্ণিত দলিল ও ঐশী নির্দেশের উপর নির্ভর করবো এবং রাসূল (সা.)-এর বাণীসমূহ যা এই সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো নিরপেক্ষভাবে পর্যালোচনা করে তার ফলাফলের উপর সিদ্ধান্ত নিব।

ইতিপূর্বেই জেনেছি যে , গাদীরের ঘটনা একটি প্রামাণিক ঘটনা যা ইসলামের ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে এবং বেলায়াতের (কর্তৃত্বের) হাদীসও একটি তর্কাতীত বাণী যা রাসূল (সা.) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে। আর অর্থ ও ভাবধারার ক্ষেত্রেও কোন প্রকার অস্পষ্টতার চিহ্ন তাতে নেই ; যারাই একটু আরবি ব্যকরণ সম্পর্কে জ্ঞাত ও বুদ্ধিবৃত্তিক এবং প্রচলিত সর্বগ্রাহ্য মাপকাঠি সম্পর্কে পরিচিত তারা যদি ন্যায়সঙ্গত দৃষ্টিতে পক্ষপাতহীনভাবে এই হাদীসটির প্রতি দৃষ্টিপাত করে তাহলে অবশ্যই স্বীকার করবে যে এই হাদীসটি আলী ইবনে আবী তালিবের (আ.) ইমামত , নেতৃত্ব ও প্রাধান্যতার কথাই প্রমাণ করে।

এমন কি এই হাদীসটিকে যদি না দেখার ভান করি তারপরেও আলীর (আ.) ইমামত ও নেতৃত্ব সম্পর্কে শিয়া এবং সুন্নীদের গ্রন্থসসমূহে যথেষ্ট পরিমাণ হাদীস বর্ণিত হয়েছে যা আমাদের নিকট বিদ্যমান।

রাসূল (সা.) হতে এই সম্পর্কে যে সমস্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার কিছু নমুনা এখানে দু টি ভিন্ন অধ্যায়ে তুলে ধরবোঃ

যে সব হাদীস গাদীরের হাদীসের মত সরাসরি আমিরুল মু মিনীন আলীর (আ.) খেলাফতের দিকে ইঙ্গিত করে , সে সকল হাদীস প্রথম অধ্যায়ে আলোচনা করবো।

আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে ঐ সমস্ত হাদীস তুলে ধরা হবে যেগুলোতে আমিরুল মু মিনীন আলীর (আ.) ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং যা গাদীরের হাদীসের সঠিকতার প্রমাণ বহন করে ও খেলাফতের ক্ষেত্রে তার অগ্রাধিকারকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত করে।

অতঃপর বিদ্যমান হাদীসসমূহ এবং বর্ণনাগত দলিল (শাব্দিকভাবে তার শ্রেষ্ঠতার ইঙ্গিত বহনকারী প্রমাণ) ব্যতীত হযরত আলী (আ.)-এর ব্যক্তিত্ব থেকে যে সকল সত্তাগত যোগ্যতা ও মর্যাদার পরিচয় পাওয়া যায় তার পর্যালোচনা করবো। সর্বশেষে গাদীরের ঈদ ও এই ঈদের আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে আলোকপাত করবো।

হযরত আলীর (আ.) খেলাফতের অকাট্য প্রমাণসসমূহ

গাদীরের হাদীস ছাড়াও অন্য যে সকল প্রমাণাদি সরাসরি সুস্পষ্টভাবে আলীর (আ.) খেলাফত ও নেতৃত্বকে প্রমাণ করে তার সংখ্যা এত বেশী যে যদি আমরা তা উল্লেখ করতে চাই তাহলে শুধু সেগুলিই একটা বড় গ্রন্থের রূপলাভ করবে। তাই এখানে সামান্য কয়েকটির উল্লেখ করেই ক্ষান্ত থাকব।

প্রথমেই বলা দরকার যে , যদিও মুসলিম সমাজ রাসূল (সা.)-এর ইন্তেকালের পর নেতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভ্রান্ত পথে গিয়েছিল ও রাসূল (সা.)-এর প্রকৃত খলিফাকে 25 বছর (পচিশঁ বছর) ধরে শাসনকার্য হতে দূরে রেখেছিল , কিন্তু এতে তার সত্ত্বাগত মর্যাদার মূল্য বিন্দু পরিমাণও কমে নি ; বরং তারা নিজেরাই একজন নিষ্পাপ বা মাসুম নেতা হতে বঞ্চিত হয়েছে এবং উম্মতকেও বঞ্চিত করেছে। কারণ , তার মান-মর্যাদা বাহ্যিক খেলাফতের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না , বরং খেলাফতের পদটি স্বয়ং আলীর (আ.) দায়িত্বভারের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। অর্থাৎ যখনই তিনি ব্যতীত অন্য কেউ এই পদে আসীন হয়েছেন তখনই এই পদ বা আসনটির অধঃপতন ঘটেছে। আর শুধুমাত্র তখনই তা প্রকৃত মর্যাদায় পৌছেছে যখন আলী (আ.) তার উপর সমাসীন হয়েছেন। বর্ণিত হয়েছেঃ

যখন আমিরুল মু মিনীন আলী (আ.) কুফা শহরে প্রবেশ করলেন , তখন এক ব্যক্তি সামনে এসে বললঃ আল্লাহর কসম হে আমিরুল মু মিনীন! খেলাফতই আপনার মাধ্যমে সুশোভিত ও সৌন্দর্যমন্ডিত হয়েছে , এমন নয় যে আপনি ঐ খেলাফতের মাধ্যমে। আপনার কারণেই এই পদটি মর্যাদার উচ্চ স্তরে পৌছেছে , এমন নয় যে আপনি ঐ পদের কারণে উচ্চস্তরে পৌছেছেন। খেলাফতই আপনার মুখাপেক্ষী হয়েছিল না আপনি তার পতি।90

আহমাদ ইবনে হাম্বালের পুত্র আব্দুল্লাহ বলেছেনঃ একদিন আমার পিতার নিকট বসেছিলাম। কুফার অধিবাসী একদল লোক প্রবেশ করলো ও খলিফাদের খেলাফত সম্পর্কে আলোচনা করলো ; কিন্তু আলীর খেলাফত সম্পর্কে কথা-বার্তা একটু দীর্ঘায়িত হল। আমার পিতা মাথা উচু করে বললেনঃ তোমরা আর কত আলী ও তার খেলাফত (শাসনকর্তৃত্ব) সম্পর্কে আলোচনা করতে চাও! খেলাফত আলীকে সুশোভিত করেনি বরং আলীই খেলাফতকে সৌন্দ্রর্য্য দান করেছেন।91

1. ইয়াওমদুদার র হাদীস (প্রথম দাওয়াতের হাদীস)

রাসূল (সা.)-এর খেলাফত ও ইসলামী রাষ্ট্রের নেতৃত্বের বিষয়টি এমন কোন বিষয় ছিল না যে , রাসূল (সা.) তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এটাকে (খেলাফত) অব্যক্ত রাখবেন আর ইসলামী সমাজের দায়িত্ব-কর্তব্যকে ঐ ক্ষেত্রে স্পষ্ট করবেন না। রাসূল (সা.) যেদিন তার রেসালাতের দায়িত্বকে প্রকাশ্যে ঘোষণার নির্দেশ পেয়েছেন , সেদিনই তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন স্বীয় স্থলাভিষিক্তকেও পরিচয় করিয়ে দেওয়ার।

পবিত্র কোরআনের এই আয়াত-

) و َأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ(

অর্থাৎ তোমার নিকটাত্মীয়গণকে সতর্ক করে দাও (সূরা আশ শুয়ারা)

যখন তিনি নবূয়্যতী দায়িত্ব গ্রহণের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করলেন , আলীকে ডাকলেন ও বললেনঃ আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমি আমার নিকটাত্মীয়দেরকে ইসলামের দাওয়াত দিই। তুমি কিছু খাবার তৈরী কর ও কিছু দুধ সংগ্রহ কর এবং আব্দুল মোত্তালিবের সন্তান্তানদেরকে দাওয়াত দাও যাতে আমি আমার দায়িত্বটি পালন করতে পারি। হযরত আলী (আ.) বলেছেনঃ আমি আব্দুল মোত্তালিব বংশের প্রায় চল্লিশজন গণ্য-মান্য ব্যক্তিকে দাওয়াত করলাম ও যে খাবার তৈরী করেছিলাম সেটা সামনে রাখলাম। তারা সে খাবার খেল এবং দুধ পান করল ; কিন্তু খাবার ও দুধ ঠিক পূর্বের পরিমাণেই অবশিষ্ট রয়ে গেল। যখন রাসূল (সা.) তাদের সাথে কথা বলতে চাইলেন , আবু লাহাব বললঃ মুহাম্মদ তোমাদেরকে যাদু করেছে , একথা বলে অনুষ্ঠান ভেঙ্গে দিল। পরের দিন তিনি আবার নির্দেশ দিলেন তাদেরকে দাওয়াত দেওয়ার জন্যে এবং খাবার ও দুধ প্রস্তুত করার জন্যে। তাদের খাদ্য গ্রহণ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই রাসূল (সা.) মুখ খুললেন ও বললেনঃ হে আব্দুল মোত্তালিবের সন্তানগন! আল্লাহর কসম ; এই আরবে আমি এমন কোন যুবককে দেখি নি যে , স্বীয় গোত্রের জন্য আমি যা এনেছি তার চেয়ে উত্তম কিছু নিয়ে এসেছে। আমি তোমাদের জন্য ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ নিয়ে এসেছি এবং আমার আল্লাহ বলেছেন যেন আমি তোমাদেরকে সেই পথে আহবান করি। তোমাদের মাঝে কে আছে যে , এই কাজের জন্য আমাকে সাহায্য করবে। আমি (আলী) সে সময় উপস্থিতদের মধ্যে সবার চেয়ে কম বয়সী (তরুন) ছিলাম বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনাকে সাহায্য করব। তিনি আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এ আমার ভাই , ওসী (দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি) ও খলিফা বা স্থলাভিষিক্ত তার কথা শোন ও তার আনুগত কর। তখন অনুষ্ঠানের সকলেরই উঠে দাড়ালো ও হাসতে হাসতে আবু তালিবকে বললঃ তোমাকে নির্দেশ দিচ্ছে যে , তুমি তোমার ছেলে আলীর আনুগত কর। 92

অপর এক বর্ণনা মতে রাসূল (সা.) তিনবার এই প্রস্তাব পুনরাবৃত্তি করেছিলেন। কিন্তু প্রত্যেকবার আলী (আ.) ব্যতীত অন্য কেউ তার প্রস্তাবে সম্মতি জানায় নি।93

2. মানযিলাত র হাদীস (পদ মর্যাদার হাদীস)

অপর একটি হাদীস যেটা আলীর (আ.) খেলাফতের পক্ষে প্রমাণ বহন করে তা হচ্ছে মানযিলাতের হাদীস (পদ মর্যাদার হাদীস)। রাসূল (সা.)-এর বর্ণিত হাদীসসমূহের মধ্যে মানযিলাতের হাদীস হচ্ছে রাসূল (সা.)-এর থেকে বর্ণিত প্রসিদ্ধতম হাদীসসমূহের অন্যতম এবং অনেক সাহাবীই এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।94 ইবনে আসাকির তার তারিখে দামেশক শীর্ষক গ্রন্থে 32 জন সাহাবী থেকে এ হাদীসটি সূত্র সহকারে বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাধারা এবং পারিপার্শ্বিক প্রমাণসমূহ থেকে বোঝা যায় এই পবিত্র বাণীটি রাসূল (সা.) বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে কয়েকবার ব্যক্ত করেছেন , কিন্তু প্রসিদ্ধতম স্থান হল তাবুকের যুদ্ধের সময়।

তাবুকের যুদ্ধের সময় রাসূল (সা.) স্বয়ং সৈন্যদের নেতৃত্বের দায়িত্বভার কাধে নিয়ে মদীনা হতে বের হলেন ও আলীকে মদীনায় তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে রাখলেন। এটিই একমাত্র যুদ্ধ ছিল যে যুদ্ধে আলী (আ.) রাসূলের (সা.) সাথে ছিলেন না , আর সে কারণেই তার জন্য মদীনায় থাকাটা একটু কঠিন হচ্ছিল। রাসূল (সা.) রণাঙ্গনের পথে যাত্রা শুরু করলেন। সৈন্যদল যখন যাত্রা শুরু করেছে ঠিক তখনই তিনি (আলী) রাসূল (সা.)-এর নিকট গিয়ে বললেনঃ আমাকে আপনি এই শিশু আর নারীদের সাথে মদীনায় রেখে যাচ্ছেন ?

তখন রাসূল (সা.) তার উত্তরে বললেনঃ

اما ترضی أن تکون منی بمنزلة هارون من موسی الا انه لا نبی بعدی

আমা তারজা আন তাকুনা মিন্নি বি মানযিলাতি হারুনা মিন মুসা ইল্লা আন্নাহু লা নাবীয়্যা বা দী। 95

অর্থাৎ তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে , আমার সাথে তোমার সম্পর্ক ঠিক তেমন যেমনটি মুসার সাথে হারুনের ছিল ? শুধু এতটুকু পার্থক্য যে আমার পরে আর নবী আসবে না। পবিত্র কোরআনে এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে হযরত মুসার (আ.) সাথে হযরত হারুনের (আ.) সম্পর্ক ছিল পাচঁ দিক থেকেঃ 1. ভাই , 2. নবুয়্যতের অংশীদার , 3. উজীর ও সাথী , 4. সাহায্যকারী ,96 5. খলিফা ও স্থলাভিষিক্ত।97

সুতরাং হযরত আলীও (আ.) রাসূল (সা.)-এর সাথে এই পাচটি সম্পর্কের অধিকারী: কারণ তাকে ভাই হিসেবে নির্ধারণ করার পর বলেছেনঃ ইহকাল ও পরকালে তুমিই আমার ভাই ,98 আল্লাহর বাণী পৌছানোর ক্ষেত্রে তার অংশীদার , যেমন বলেছেনঃ আমি এবং আলী ব্যতীত কেউ যেন আমার বাণী প্রচার না করে99 তার উজীর কারণ , তিনি নিজে বলেছেনঃ আলী আমার উজীর।100 তার সাহায্যকারী যেমনঃ আল্লাহ তাকে আলীর (আ.) দ্বারা সাহায্য করেছেন ,101 ও তার খলিফাঃ কারণ , তিনি স্বয়ং তাকে স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নির্বাচন করেছেন।102

3. উত্তরাধিকারের ও প্রতিনিধিত্বের হাদীস

রাসূল (সা.) বলেছেনঃ

لکل نبی وصیّ و وارث و إنّ علیا وصیی و وارثی

অর্থাৎ প্রত্যেক নবীরই ওসী বা প্রতিনিধি ও উত্তরাধিকারী আছে আমার প্রতিনিধি ও উত্তরাধিকারী হল আলী।103

আরো বলেনঃ

أنّا نبی هذه الامة و علی وصیی فی عترتی و اهل بیتی و أمتی من بعدی

অর্থাৎ আমি এই উম্মতের (জাতির) নবী আর আলী হচ্ছে আমার পরে আমার পরিবারের ও উম্মতের মধ্যে আমার ওসী বা প্রতিনিধি।104

তিনি বলেনঃ

علی أخی و وزیری و وارثی و وصیی و خلیفتی فی أمتی

অর্থাৎ আমার উম্মতের মধ্যে আলীই আমার ভাই , আমার সহযোগি উজীর , উত্তরাধিকারী , প্রতিনিধি ও আমার খলিফা।105

এই হাদীসসমূহে ওসী (প্রতিনিধি) ও উত্তরাধিকারী এ দু টি শিরোনামকে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ঐ দু টির প্রতকেটিই আমিরুল মু মিনীন আলীর (আ.) খেলাফতকেই প্রমাণ করে।

ওসী বা প্রতিনিধি

ওসী বা প্রতিনিধি তাকেই বলা হয় যিনি সমস্ত দায়-দায়িত্বের ক্ষেত্রে অসিয়তকারীর অনুরূপ অর্থাৎ যা কিছুর উপর অসিয়তকারীর অধিকার ও ক্ষমতা ছিল ওসীর বা প্রতিনিধিরও তার সবকিছুর উপর অধিকার ও ক্ষমতা রয়েছে এবং তা ব্যবহার করতে পারবেন ; শুধুমাত্র ঐ ক্ষেত্র ছাড়া যে ক্ষেত্রে তিনি নির্দিষ্টভাবে তাকে অসিয়ত করবেন যে , এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত তার ব্যবহারের অধিকার আছে।

এই হাদীসে রাসূল (সা.) আলীকে (আ.) অসিয়তের ক্ষেত্রে দায়িত্বকে সীমিত করেন নি বরং তাকে নিঃশর্তভাবে ওসী বা প্রতিনিধি নিয়োগ করেছেন ; অর্থাৎ তিনি রাসূল (সা.)-এর সকল কাজের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন। অন্যভাবে বলা যায় , রাসূল (সা.)-এর অধীনে যা কিছু আছে তার সবকিছুতে আলীর (আ.) অধিকার আছে আর এটাই হচ্ছে খেলাফতের প্রকৃত অর্থ।

উত্তরাধিকারী

উত্তরাধিকারী শব্দটি শুনে প্রথম যে চিত্রটি মাথায় আসে তা হচ্ছে- উত্তরাধিকারী ব্যক্তি , উত্তরাধিকারী মনোনীতকারীর সমস্ত সম্পত্তির মালিক হয় ; কিন্তু আলী (আ.) শরীয়তের দৃষ্টিতে রাসূল (সা.)-এর সম্পদের উত্তরাধিকারী ছিলেন না। কেননা , ইমামিয়া ফিকাহ্ শাস্ত্রের আইন অনুযায়ী মৃতের যখন কোন সন্তান থাকে , তখন অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন সম্পদের উত্তরাধিকারী হয় না (সন্তানগণ সম্পদের প্রথম পর্যায়ের উত্তরাধিকারী , তারপর অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন) আর আমরা জানি যে , রাসূল (সা.) তার জীবদ্দশায় সন্তান রেখে গিয়েছিলেন। ফাতিমা জাহরা (সালাঃ) তার (রাসূলের) ইন্তেকালের পরেও কমপক্ষে 75 দিন জীবিত ছিলেন , তাছাড়াও রাসূল (সা.)-এর সহধর্মিনীগণ , যারা সম্পদের এক অষ্টাংশের অধিকারীনি ছিলেন , তারা সকলেরই জীবিত ছিলেন। যদি এ বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করি তবুও আলী (আ.) রাসূল (সা.)-এর চাচাতো ভাই আর চাচাতো ভাই তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে উত্তরাধিকার পায় এবং আমরা জানি রাসূল (সা.)-এর চাচা আব্বাস তার (সা.) মৃত্যুর পরও জীবিত ছিলেন আর চাচা হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের উত্তরাধিকারী বা ওয়ারিশ।

কিন্তু আহলে সুন্নাতের ফিকাহশাস্ত্র অনুযায়ী , স্ত্রীগণকে তাদের অংশ (1/8) দেওয়ার পর সম্পদকে দুইভাগে ভাগ করা হয়ে থাকেঃ সে অনুযায়ী তার এক অংশ পাবে হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.) যিনি রাসূল (সা.)-এর একমাত্র কন্যা ছিলেন। অপর অংশটি যেটা তার অংশের বাইরে , সেটা তার (সা.) চাচা আব্বাসের দিকে বর্তায়। সুতরাং , আমিরুল মু মিনীন হযরত আলী (আ.) কোনভাবেই রাসূল (সা.)-এর সম্পদের উত্তরাধিকারী হতে পারেন না। অপরদিকে যেহেতু রাসূল (সা.) সরাসরি তাকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছেন , তাই অবশ্যই এই হাদীসে এরস বা উত্তরাধিকারের বিষয়টি সম্পদ ভিন্ন অন্যকিছুকে বুঝায়। স্বাভাবিকভাবেই এই হাদীসে উত্তরাধিকারের বিষয়টি রাসূল (সা.)-এর আধ্যাত্মিক ও সামাজিক মর্যাদার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং আলী (আ.) রাসূল (সা.)-এর জ্ঞান ও সুন্নাতের উত্তরাধিকারী আর সেই দলিলের ভিত্তিতেই তিনি তার (সা.) খলিফা বা প্রতিনিধি।

রাসূল (সা.) আলীকে (আ.) বলেছেনঃ তুমি আমার ভাই ও উত্তরাধিকারী । আলী (আ.) বলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার কাছ থেকে উত্তরাধিকারী হিসেবে কি পাব ? রাসূল (সা.) বললেনঃ ঐ সকল জিনিস যা আমার পূর্ববর্তী নবীগণ উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেছেন। জিজ্ঞেস করলেনঃ তারাঁ কি জিনিস উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেছেন ? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কিতাব ও নবীদের সুন্নাত। 106 আমিরুল মু মিনীন আলী (আ.) নিজেও বলেছেনঃ আমি রাসূল (সা.)-এর জ্ঞানের উত্তরাধিকারী।107

4. মু মিনদের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে আলী

রাসূল (সা.) যখনই এমন কোন ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করতেন যে , আলীর (আ.) সাথে যে কারণেই হোক দ্বন্দ সৃষ্টি করেছে বা যদি কেউ মূর্খতার বশে আলী (আ.) সম্পর্কে কেউ রাসূল (সা.)-এর নিকট অভিযোগ করতো , তিনি তাদেরকে বলতেনঃ

ما تریدون من علی إنّ علیا منّی و أنا منه و هو ولیّ کل مؤمن بعدی

অর্থাৎ আলীর সম্পর্কে তোমরা কি বলতে চাও সে আমা হতে আর আমি তার থেকে। আমার পরে আলীই প্রত্যেক মু মিনের ওয়ালী বা পৃষ্ঠপোষক (অভিভাবক)।108

যদিও বাক্যে ব্যবহৃত ওয়ালী শব্দটির অনেকগুলো আভিধানিক অর্থ রয়েছে , তারপরেও এই হাদীসে নেতা , পৃষ্ঠপোষক বা অভিভাবক ব্যতীত অন্য কোন অর্থে ব্যবহার হয়নি ; এই হাদীসে আমার পরে শব্দটিই উক্ত মতকে স্বীকৃতি প্রদান করে। কারণ , যদি ওয়ালী শব্দের উদ্দেশ্য বন্ধুত্ব , বন্ধু , সাথী , প্রতিবেশী , একই শপথ গ্রহণকারী , এ ধরনের অর্থই হত তাহলে রাসূল (সা.)-এর পরে যে সময়ের প্রতি বিশেষ ইঙ্গিত করা হয়েছে তার দরকার ছিল না , কারণ তার (সা.) জীবদ্দশায়ই তিনি (আলী) ঐরূপ ছিলেন।

5. রাসূল (সা.)-এর বাণীতে আলীর (আ.) পৃষ্ঠপোষকতা বা অভিভাবকত্বকে মেনে নেওয়ার সুফলের কথা

যখনই সাহাবীগণ রাসূল (সা.)-এর পরে তার খলিফা বা প্রতিনিধি ও ইসলামী রাষ্ট্র নেতা সম্পর্কে তার (সা.) সাথে কথা বলতেন , তখনই তিনি (কোন কোন হাদীস অনুযায়ী দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন) আলীর (আ.) পৃষ্ঠপোষকতা বা অভিভাবকত্ব মেনে নেওয়ার সুফল সম্পর্কে বক্তব্য দিতেন।

তিনি বলতেনঃ

ان و لیتموها علیا وجدتموه هادیا مهدیا یسلک بکم علی الطریق المستقیم

অর্থাৎ যদি খেলাফতকে আলীর হাতে তুলে দাও , তাহলে দেখবে যে , হেদায়াত প্রাপ্ত ও হেদায়াতকারী হিসাবে সে তোমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালনা করছে।109

اما والذی نفسی بیده لئن اطاعوه لیدخلن الجنه اجمعین اکتعین

অর্থাৎ তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ আছে! যারা আলীর আনুগত্য করবে তারা সকলেই বেহেশতে প্রবেশ করবে।110

ان تستخلفوا علیا و لا اراکم فاعلین تجدوه هادیا مهدیا یحملکم علی المحجه البیضا

অর্থাৎ যদি তোমরা আলীকে খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে মেনে নাও , তাহলে (আমার মনে হয় না তোমরা এমনটি করবে) দেখবে যে , সে সঠিক পথপ্রাপ্ত ও পথপ্রদর্শক , যে তোমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে।111

6. আলী (আ.)-এর নির্ধারিত খেলাফত

ইতিপূর্বেও গাদীরের হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছি যে , আলীকে পরিচয় করানোর বিষয়টি আল্লাহর নির্দেশেই হয়েছিল ; এখন এমন একটি হাদীস তুলে ধরব যা ঐ বিষয়টির সত্যতা প্রমাণ করবে।

রাসূল (সা.) হতে বর্ণিত আছে যে , শবে মেরাজে (ঊর্ধ্বগমনের রাতে) যখন আমি নৈকট্যের প্রান্ত সীমাতে পৌছালাম ও আল্লাহর সম্মুখে দণ্ডায়মান হলাম , তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মদ! আমি জবাব দিলামঃ লাব্বাইক (আমি হাজির)। তিনি বললেনঃ আপনি কি আমার বান্দাদেরকে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে , তাদের মধ্যে কে সবচেয়ে বেশী আমার অনুগত ?

আমি বললামঃ হে আল্লাহ তাদের মধ্যে আলীই সবচেয়ে বেশী অনুগত।

তিনি বললেনঃ আপনি সত্যই বলেছেন হে মুহাম্মদ! আপনি কি স্বীয় খলিফা বা প্রতিনিধি নির্ধারণ করেছেন যে আপনার পরে আপনার দায়িত্বগুলি পালন করবে ও আমার বান্দাদেরকে যারা কোরআন সম্পর্কে জানে না তাদেরকে শিক্ষা দিবে ?

আমি বললামঃ হে আল্লাহ! আপনি নিজেই আমার জন্য প্রতিনিধি নির্ধারণ করে দিন ।

বললেনঃ আমি আলীকে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে নির্ধারণ করলাম ; তাকে আপনি স্বীয় প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করুন।112

একইভাবে তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ প্রত্যেক জাতির জন্য নবী নির্বাচন করেছেন ও প্রত্যেক নবীর জন্য নির্ধারণ করেছেন তার প্রতিনিধি। আমি হলাম এই জাতির নবী আর আলী হচ্ছে আমার ভারপ্রাপ্ত বা ওসী।113

তৃতীয় অধ্যায়