সত্য কাহিনী সম্ভার

সত্য কাহিনী সম্ভার11%

সত্য কাহিনী সম্ভার লেখক:
: মাওলানা আলী আক্কাস
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: চরিত্র গঠনমূলক বই

সত্য কাহিনী সম্ভার
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 79 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 46805 / ডাউনলোড: 5948
সাইজ সাইজ সাইজ
সত্য কাহিনী সম্ভার

সত্য কাহিনী সম্ভার

লেখক:
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

এ বইটি তার বিষয়ের সর্বপ্রথম ও অনন্য অবতারণা হোক অথবা না হোক , এর জন্য প্রাপ্য ফুলের মামলার যোগ্য পাত্র আমি নই , অর্থাৎ যদি এ বইটি কাহিনী রচনার জগতে কোন গুরুত্বপূর্ণ নতুন অবতারণার দাবিদার হয় তাহলে তার গোড়াপত্তনকারী আমি নই। বরং প্রকাশনা ও প্রচারণার একটি প্রতিষ্ঠানে দেশের বিজ্ঞ বিজ্ঞ বিজ্ঞানী-গুণী কতিপয় ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি সম্পাদনা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ অধমও সে বোর্ডের একজন সদস্য। দেশের খ্যাতনামা লেখক ও বিজ্ঞতম ব্যক্তিত্ব সমৃদ্ধ সে বোর্ডের এক বৈঠকে প্রস্তাব রাখা হলো যে , এমন একটি গ্রন্থ রচিত হওয়া উচিত যার মধ্যে চারিত্রিক সুন্দর ও গুণাবলী কাহিনী আকারে উপস্থাপিত থাকবে। আর সে কাহিনীগুলো লেখকের নিজের মস্তিষ্ক থেকে আবিস্কৃত বা নিজের খেয়াল মোতাবেক তৈরি হবে না। বরং তার ভিত্তিমূল ও উৎস হবে হাদীস , বাস্তব জীবন ও ইতিহাসের গ্রন্থরাজি। এর সংকলনের উদ্দেশ্য থাকবে মুসলিম সমাজকে শিক্ষা দান এবং যুব সমাজকে হেদায়েতের পথ প্রদর্শন ও পরিচালনা করা।


1

2

3

৭৪

ধারাশায়ীকে পদাঘাত

আব্দুল মালেক ইবনে মারওয়ান তার একুশ বছরের জুলুম-নির্যাতনের শাসন চালাবার পর দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়। তার মৃত্যুর পর তারই পুত্র ওয়ালিদ ক্ষমতা লাভ করে। ক্ষমতার চাবি-কাঠি হাতে নিয়ে ওয়ালিদ সিদ্ধান্ত নিল যে , জনসাধারণের মধ্যে বিদ্যমান অসন্তোষ এবং শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ নিরসনের জন্য সে লোকদের সাথে কিছুটা নম্র আচরণ ও সদ্ব্যবহারের নীতি অবলম্বন করবে। বিশেষভাবে সে মদীনাবাসীদের সাথে অত্যন্ত ভালো আচরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। এর কারণ হলো এই যে , এখনো সে মোকাদ্দাস ও পবিত্র শহরে রাসূলের অসংখ্য সাহাবী , ফকিহ ও মুহাদ্দিস বর্তমান রয়েছেন । এছাড়াও এ শহরটি বিশেষ পবিত্রতার কারণে মর্যাদার অধিকারী। সুতরাং সে মদীনার শাসনকর্তার পদ থেকে হিশাম ইবনে ইসমাঈল মাখযুনীকে সরিয়ে দিল। কেননা তার অত্যাচার-নিপীড়নে সেখানকার লোকেরা ছিল জর্জরিত। প্রত্যেক মানুষ অন্তরের মধ্যে এ কামনা রাখতো যে , আল্লাহ যেন এ জালিমকে ধ্বংস করে দেন। এখানে স্মরণ রাখতে হবে যে , হিশাম ছিল ওয়ালিদের নানা।

হিশাম ইবনে ইসমাঈল মদীনাবাসীদের প্রতি নির্মম অবিচার চালায়। সীমাহীন জুলুম-অত্যাচার করে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যেব সকল মদীনাবাসী নিকট ছিলেন একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তিনি হিশামের বাইআত করতে অস্বীকার করেছিলেন। এ কারণে হিশাম তাকে ৬০টি চাবুকের দণ্ড দিয়ে ছিল। শুধু এখানেই শেষ নয় , বরং চাবুকাঘাত করার পর তাকে একটি মোটা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে মদীনার বাইরে এক মরুভূমিতে ফেলে দিয়েছিল। হযরত আলী (আঃ) এর অনুসারীদের সাথে , বিশেষত আলী ইবনুল হোসাইন তথা ইমাম যয়নুল আবেদীন (আঃ) এর সাথে অমানবিক নিপীড়ন আর নির্যাতনের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

যা হোক ওয়ালিদ মদীনার গভর্নরের পদ থেকে হিশামকে অপসারণ করে তদস্থলে তার চাচাতো ভাই ওমর ইবনে আব্দুল আযীযকে নিয়োগ করে। লোকেরা ওমর ইবনে আব্দুল আযীযের সত্যবাদিতা ও ন্যায়পরায়ণতার জন্য আকৃষ্ট হয়েছিল। তিনি গভর্নরের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে নির্দেশ জারী করলেন যে , হিশামকে গ্রেফতার করে মারওয়ান ইবনে হাকামের বাড়ির সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। আর জনসাধারণের মধ্যে ঘোষণা করে দিতে হবে যে , যার যার সাথে হিশাম ক্ষমতায় থাকাকালীন জুলুম অবিচার করেছিল , সে সমস্ত লোকেরা এসে এখন তার থেকে প্রতিশোধ নিতে পারবে। সুতরাং লোকেরা দলে দলে এসে হিশামকে গালিগালাজ ও অভিশাপের বৃষ্টি বর্ষণ করতে থাকলো।

কিন্তু হিশাম নিজেই ইমাম যয়নুল আবেদীন ও তার অনুসারীদের সম্পর্কে শংকিত ছিল। কেননা সে ইমাম ও তার সাথীদের প্রতি সবচেয়ে বেশী জুলুম চালিয়েছিল এবং নবী বংশের সাথে সর্বাধিক অন্যায় অপরাধ করেছিল। সে জানতো যে তাদের প্রতি নির্বিচারে জুলুমের প্রতিশোধ মৃত্যুর চেয়ে কম কিছু হবে না। এদিকে ইমাম তাঁর সঙ্গী-সাথীদেরকে ডেকে বললেন , ধরাশায়ীকে পদাঘাত করা আমাদের নীতি নয়। আমরা দুশমনদের দুর্বলতার সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তাদের থেকে প্রতিশোধ নেই না। বরং আমাদের চরিত্র হলো যে , আমরা অসহায় লোকদের প্রতি যথা সম্ভব সদয় থাকি। ইমাম (আঃ) যখন তার সাথীদেরকে সাথে নিয়ে হিশামের কাছে যাচ্ছিলেন তখন তাদেরকে দেখে হিশামের চেহারার রং বিবর্ণ হয়ে গেল। সে ভাবলো যে , সে সময় খুব বেশী দূরে নয় যে , তাকে মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নিতে হবে। কিন্তু তার চিন্তার বিপরীতে ইমাম তার কাছে পৌঁছে উচ্চস্বরে বললেন , সালামুন আলাইকুম। অতঃপর তার সাথে করমর্দন করে বললেন , তোমার যথা সম্ভব সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

এ ঘটনার পর মদীনাবাসীরা হিশামের প্রতি অভিসম্পাত বর্ষণ করা থেকে বিরত হলো।৮৬

৭৫

অচেনা পুরুষ

এক অসহায় রমণী কাঁধে পানির মশক ঝুলিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথে একজন অচেনা পুরুষ সে অসহায় মহিলার কাছ থেকে মশকটি নিয়ে নিজের কাঁধে ঝুলিয়ে মহিলার সাথে সাথে চলতে লাগলেন। মহিলার ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাদের মায়ের আগমনের অপেক্ষা করছিল। এ মাছুম ছেলে-মেয়েরা দেখতে পেলো যে , একজন অচেনা-অজানা লোক তাদের মায়ের সাথে তাদের বাড়ির দিকে আসছেন। আর পানির মশকটি তার স্কন্ধে। বাড়িতে এসে অপরিচিত লোকটি পানির মশক মাটিতে রেখে মহিলাকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করলেন , আপনার অবস্থা দেখে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারা যায় যে , আপনার ঘরে কোনো পুরুষ লোক নেই। কিন্তু বলুন তো , আপনি এভাবে অসহায় হলেন কিভাবে ?

জবাবে মহিলা বললেন , আমার স্বামী ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা। আলী ইবনে আবী তালিব তাকে ইসলামী বাহিনীর সাথে যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। যুদ্ধে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এখন এ ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ছাড়া জগতে আর আমার কেউ নেই ?

অচেনা লোকটি আর কোনো কথা বললেন না , বরং মাথা ঝুকিয়ে ঘরের বাইরে চলে গেলেন। কিন্তু তিনি এরপর শুধু এ অসহায় স্ত্রী লোকটি ও তার কচি কচি শিশু সন্তানের কথাই ভাবতে থাকলেন। রাতে তার নিদ্রা হলো না। সকালে তিনি একটি থলিতে কিছু গোশত , আটা , খুরমা ও আরো কিছু খাদ্যদ্রব্য নিলেন এবং সে অসহায় রমণীর বাড়িতে গেলেন। দরজায় দাঁড়িয়ে আওয়াজ দিলেন। মহিলা ভেতর থেকে জিজ্ঞাসা করলেন , কে আপনি ?

আগন্তুক জবাব দিলেন , আমি খোদার সে বান্দা , যে কাল আপনার পানির মশক এনে দিয়েছিলাম। আজ আমি আপনার ছেলে-মেয়েদের জন্য কিছু খাদ্য-খাবার নিয়ে এসেছি।

মহিলা ভেতর থেকে বললেন , হে আল্লাহর বান্দা! আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। আমার ও আলী ইবনে আবী তালিবের মধ্যে আল্লাহই ফয়সালা করবেন।

অতঃপর দরজা খুলে দিলেন। অচেনা লোকটি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলেন। খাদ্য সামগ্রীগুলো মহিলাকে দিয়ে বললেন , আমার মন চাচ্ছে যে , কিছু সওয়াবের কাজ করবো। অতএব , আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে আমি নিজে আটা খামির করে রুটি বানিয়ে দেবো অথবা আমি ছেলে-মেয়েদের দেখাশোনা করি আর আপনি আটা খামির করে রুটি বানিয়ে নিন।

মহিলা বললেন , আচ্ছা ঠিক আছে আমিই আটা খামির করে রুটি তৈরি করছি আর আপনি ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করুন।

তারপর ভদ্র মহিলা আটা খামির করে রুটি তৈরিতে ব্যস্ত হলেন। আর অপরিচিত লোকটি থলে থেকে খুরমা বের করে নিজের হাতে এ ছেলেমেয়েদেরকে খুরমা খাওয়াতে লাগলেন। নিজের হাতে বাচ্চাদেরকে খুরমা খাওয়াবার সময় তিনি তাদেরকে বার বার এ কথাটাই বলতে থাকলেন , হে আমার প্রিয় সন্তানরা! আলী ইবনে আবী তালিবকে মাফ করে দাও। যদিও তিনি তোমাদের ব্যাপারে কার্পণ্য করেছেন।

এতোক্ষণে আটা খামির হয়ে গেছে। সে মহিলা ডেকে বললেন , হে আল্লাহর বান্দা! আটা খামির করা হয়ে গেছে। এবার তন্দুর জ্বালিয়ে দিন।

অচেনা লোকটি সাথে সাথে উঠে গিয়ে তন্দুরে আগুন ধরালেন। আগুনের ভাপ তন্দুর থেকে বের হতে লাগলো। লোকটি নিজের চেহারাকে আগুনের কাছে নিয়ে নিজে নিজে এভাবে বলতে লাগলেন , আগুনের তাপের স্বাদ আস্বাদন করো। একজন বিধবা রমণী ও ইয়াতিম বাচ্চাদের খোঁজ খবর নেবার ব্যাপারে কার্পণ্য করার এটাই শাস্তি।

তিনি যখন এ কাজে ব্যস্ততখনি প্রতিবেশী এক মহিলা এ বাড়িতে এলো এবং ঘরে ঢুকেই এ অপরিচিত লোকটিকে চিনতে পারলো। তারপরে সে বিধবা মহিলাকে বললো , ধিক তোমার প্রতি! তুমি কি এ লোকটিকে চেনো না ? তাকে দিয়ে এভাবে কাজ করিয়ে নিচ্ছো ? তিনি হলেন আমীরুল মু মিনীন হযরত আলী ইবনে আবী তালিব।

অসহায় বিধবা মহিলাটি হযরত আলী (আঃ) এর সামনে এসে বলতে লাগলেন , আমি আমার এ কাজের জন্য আপনার নিকট খুবই লজ্জিত। আমি আপনার নিকট ক্ষমা চাইছি।

আলী (আঃ) বললেন , না! আমিই বরং আপনার নিকট ক্ষমা চাচ্ছি। কেননা আমি আপনার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে কার্পণ্য করেছি।৮৭

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোরআনের অলৌকিকতা

অবতরণিকা

চৌদ্দশত বছর পূর্বে আল্লাহ তা আলা মানবজাতির পথচালিকা স্বরূপ কোরআন প্রেরণ করেছিলেন। এ স্বর্গীয় গ্রন্থখানা দৃঢ়ভাবে সমর্থন আর অনুসরণ করে মানবজাতি যেন সঠিক পথে পরিচালিত হয় এ আহ্বান করেছিলেন তিনি। নাযিল হওয়ার দিন থেকে শুরু করে শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত এ স্বর্গীয় আর সর্বশেষ বই খানা মানবজাতির জন্য একমাত্র পথচালিকা হিসেবে থেকে যাবে।

পবিত্র কোরআনের অসমকক্ষ আর অতুলনীয় রচনাশৈলী এবং এর মাঝে বিদ্যমান প্রকৃষ্ট , গভীর ও বিস্তৃত জ্ঞানই সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে যে এটি মহান আল্লাহ্ তাআলার বাণী। এ ছাড়াও কোরআনের এমন বহু অলৌকিক বৈশিষ্ট্যাবলী রয়েছে যেগুলো প্রমাণ করে যে এটি পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলারই নাযিলকৃত গ্রন্থ । এ সমস্ত গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্যাদির একটি হলো-অনেকগুলো বৈজ্ঞানিক যথার্থতা বা সত্যতা আজ থেকে ১৪০০ বছর আগেই কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছিল -যেগুলো কিনা আমরা সেদিন বিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তিমালা দিয়ে আবিষ্কার বা সন্ধান করতে সক্ষম হয়েছি।

অবশ্যই কোরআন কোন বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ নয়। কিন্তু এরপরও বিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু বিষয়াদি এ গ্রন্থটিতে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত রূপে ও সারগর্ভ হিসেবে বর্ণিত রয়েছে-যেগুলো বিংশ শতাব্দীর টেকনোলজী বা প্রযুক্তির মাধ্যমে কেবল সেদিন মানব জাতির সমক্ষে উন্মোচিত হয়েছে। কোরআন যখন নাযিল হয় , সে সময় এ বিষয়গুলো ছিল অজানা , এটি আরো প্রমাণ করে যে কোরআন আল্লাহর বাণী।

কোরআনে বর্ণিত বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়াদি বুঝতে হলে আমাদের নজর দিতে হবে সে বিষয়টিতে যে কোরআন যখন নাযিল হয় বিজ্ঞান তখন কোন স্তরে ছিল।

সপ্তম শতাব্দীতে যখন কোরআন নাযিল হয় , সে সময়কার আরব সমাজে বৈজ্ঞানিক বিষয়াদিতে বহুবিধ কুসংস্কার আর ভিত্তিহীন বিশ্বাস প্রচলিত ছিল। মহাবিশ্ব আর প্রকৃতি পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করার মত কলাকৌশল বিদ্যমান না থাকায় সে সময়কার আদি আরব সমাজের মানুষ তাদের পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত উপাখ্যান সমূহে বিশ্বাস করত। এরই একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যায় যে , পৃথিবীর উপরিস্থিত আকাশই ধারণ করে আছে পর্বতসমূহকে। তাদের বিশ্বাস ছিল যে , পৃথিবী সমতল (গোলাকার নয়) ; আর পৃথিবীর-দু প্রান্তে রয়েছে উঁচু , উঁচু পর্বতমালা , ধারণা করা হত যে পর্বতমালাসমূহ স্তম্ভের ন্যায় পৃথিবীর উপরিস্থিত খিলান আকৃতির আকাশকে ধারণ করে আছে।

তবে যাই হোক কোরআন নাযিল হওয়ায় আরব সমাজের এসব কুসংস্কার দূরীভূত হয়ে যায়। সূরা রাদের দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে : তিনিই আল্লাহ যিনি কোন প্রকার অবলম্বন বা স্তম্ভের সাহায্য ছাড়াই আকাশসমূহকে সমুন্নত রেখেছেন । পর্বতমালা বিদ্যমান থাকার ফলেই গগনমন্ডল উপরে স্থির থাকতে পারছে - এরূপ বিশ্বাস উক্ত আয়াত দ্বারাই মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায়। কোরআনে সেই সময়ে অন্যান্য বহু বিষয়াদি সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী প্রকাশিত হয়েছিল যখন তা কারো পক্ষেই জানতে পারার কথা নয়। সে সময় মানুষ জ্যোতির্বিদ্যা , পদার্থবিদ্যা , কিংবা জীববিদ্যা বিষয়ে খুবই অল্প জ্ঞান রাখত। ঠিক তেমনি এক সময়ে মহাবিশ্বের সৃষ্টি , মানব সৃষ্টি , বায়ু মন্ডলের গঠন আর যে সুক্ষ্ম ভারসাম্য পৃথিবীর বুকে জীবের বা প্রাণের টিকে থাকা সম্ভব করে আছে - এ ধরণের বহু বিষয়াদির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী কোরআনে প্রকাশিত হয়েছে।

এখন চলুন আমরা কোরআনে প্রকাশিত বিজ্ঞান সংক্রান্ত কিছু অলৌকিক বিষয়াদির দিকে দৃষ্টিপাত করি।

মহাবিশ্ব সৃষ্টি

নিম্নের আয়াতটিতে বিশ্বব্রহ্মান্ডের উৎপত্তির কথা বর্ণিত রয়েছে :

তিনিই আদি স্রষ্টা আসমান ও জমিনের। ( কোরআন , ৬ : ১০১ )

পবিত্র কোরআনে প্রদত্ত এ তথ্যটি সমসাময়িক বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যাবলীর সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সংগতিপূর্ণ । আজ জ্যোতির্বিদ্যা যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌছেছে তা হলো-বস্তু আর সময়ের-পরিধিসহ গোটা মহাবিশ্ব অস্তিত্ত্বে এসেছে বিরাট এক বিস্ফোরণের মাধ্যমে-যা কিনা খুব তড়িৎ গতিতে ঘটেছিল। মহাবিস্ফোরণ (Big Bang ) নামের এই ঘটনাটি একটিমাত্র ক্ষুদ্র বিন্দুর বিস্ফোরণের ফলে মহাবিশ্ব অস্তিত্বহীন অবস্থা থেকে অস্তিত্ত্বে এসেছে। বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি আর কিভাবে তা অস্তিত্ত্বে এসেছে-এ ব্যাপারে আধুনিক বিজ্ঞান পরিষদ একই মত পোষণ করে যে-মহাবিস্ফোরণই মহাবিশ্বের উৎপত্তি আর অস্তিত্ত্বের একমাত্র যৌক্তিক আর গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা প্রদান করে।

মহাবিস্ফোরণের পূর্বে পদার্থ বা বস্তু বলে কিছূ ছিলনা। এমনি এক অস্তিত্বহীন বা শূণ্যাবস্থা , যেথায় বিদ্যমান ছিল না কোন পদার্থ , না কোন শক্তি , এমনকি সময়ের অস্তিত্ত্ব ছিলনা-যা কেবল অধিবিদ্যামূলক (Metaphysically ) কিংবা বিমূর্ত আলোচনায় বর্ণনা করা যায় তেমনি একটি অবস্থা থেকে পদার্থ , শক্তি আর সময়ের সৃষ্টি হয়েছে। এই যে বিষয়টি আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের মাধ্যমে কেবলি সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে-তাই ১৪০০ বছর আগে কোরআন মানবজাতির উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেছিল।

১৯৯২ সালে নাসা( NASA) Cobe Space স্যাটেলাইট পাঠায় যার সংবেদনশীল সেন্সরগুলো মহাবিস্ফোরণের ঘটনামূলক অবশিষ্টাংশ বা ছিটেফোটা ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এই আবিষ্কার মহাবিস্ফোরণের প্রমাণ বহন করে , যা কিনা মহাবিশ্ব যে শূণ্যাবস্থা থেকে সৃষ্ট হয়েছে তারই বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

মহাবিশ্বের প্রসারণ

১৪০০ বছর পূর্বে যখন জ্যোতির্বিদ্যা ছিল তখনও আদিম অবস্থায় , তখনই আল্লাহ্ তাআলা কর্তৃক নাযিলকৃত কোরআনে বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রসারণের বিষয়টি এমনভাবে বর্ণিত হয় :

আর আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আসমানকে সৃষ্টি করেছি আর আমি অবশ্যই নিয়মিতভাবে তা প্রসারিত করছি। ( কোরআন , ৫১ : ৪৭ )

এই আয়াতটিতে উক্ত“Heavens” শব্দটি দিয়ে কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় মহাশূণ্য আর বিশ্বব্রহ্মান্ডকে নির্দেশ করা হয়েছে। এখানে শব্দটি একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অন্য কথায় মহাবিশ্বের প্রসারণের ব্যাপারটি কোরআনে প্রকাশ হয়েছে। আর এটাই সেই পরম সিদ্ধান্ত বা কথা যেখানে বিজ্ঞান আজ পৌছেছে।

বিংশ শতাব্দীর উষালগ্ন পর্যন্ত বিজ্ঞান জগতে এই একটিমাত্র ধারণা প্রচলিত ছিল যে , মহাবিশ্বের রয়েছে একটি স্থির বা অপরিবর্তনীয় প্রকৃতি বা অবস্থা এবং অননন্তকাল -ধরেই এর অস্তিত্ব রয়েছে। অর্থাৎ এর কোন শুরু নেই , পরিবর্তনও নেই। যাই হোক প্রকৃতপক্ষেই মহাবিশ্বেরও যে একটি সূচনা বা আরম্ভ ছিল আর এটি ক্রমাগতই প্রসারিত হচ্ছে-আধুনিক প্রযুক্তিসমূহ দ্বারা গবেষণা , পর্যবেক্ষণ আর গণনা চালিয়ে এ তথ্যটি পাওয়া গেছে।

বিংশ শতাব্দীর গোঁড়ার দিকে রাশিয়ান পদার্থবিদAlexander Friedmann এবং বেলজিয়ামের মহাবিশ্ববিষয়ক বিজ্ঞানীGeorges Lemaitre থিওরী দিয়ে বা তত্ত্বগতভাবে গণনা করে দেখেন যে বিশ্বব্রহ্মান্ড বিরামহীনভাবে নিয়তই গতিশীল রয়েছে আর এটি প্রসারিতও হচ্ছে।

১৯২৯ সালে পর্যবেক্ষণমূলক ডাটার মাধ্যমেও এ বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আমেরিকান জ্যোতির্বিদEdwin Hubble একটি টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন যে নক্ষত্রপুঞ্জ আর গ্যালক্সিগুলো পরস্পর থেকে ক্রমাগতই দূরে সরে যাচ্ছে । বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে সবকিছু পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে , এতেই প্রমাণিত হয় যে এই মহাবিশ্ব নিয়ত প্রসারিত মহাবিশ্ব ।

মহাবিস্ফোরণের মুহূর্ত থেকেই বিশ্বব্রহ্মান্ড এক বিশাল বেগে ক্রমাগত প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীগণ মহাবিশ্বের এই প্রসারণকে বাতাসে ফোলানো একটি বেলুনের পৃষ্ঠের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

মহাবিশ্ব যে প্রতিনিয়ত প্রসারিত হচ্ছে - এটির সত্যতা পরবর্তী বছরসমূহের পর্যবেক্ষণ দ্বারা প্রমাণিত হয়। অথচ এই বিষয়টি পবিত্র কোরআনে যে সময়টিতে ব্যাখ্যা করা হয় তখন তা কেউ জানতো না। কেননা কোরআন আল্লাহর বাণী , যিনি সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টিকর্তা ও শাসনকর্তা।

আকাশ ও পৃথিবীর বিভক্তি ও পৃথকীকরন

গগনমন্ডলীর সৃষ্টি প্রসঙ্গে আরেকটি আয়াতে নিম্নের উক্তিটি করা হয়েছে :

অবিশ্বাসীরা কি ইহা লক্ষ্য করে নাই যে আকাশ ও পৃথিবী ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল ( সংযুক্ত অবস্থায় ছিল ) , তারপর আমি উভয়কে আলাদা করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু আমি সৃষ্টি করলাম পানি থেকে। তবুও কি তারা ঈমান আনবে না ? (কোরআন , ২১ : ৩০)

আরবী অভিধানে রাত্ক্ব (RATQ ) শব্দটি অনূদিত হয়েছে সেলাইকৃত , বুননকৃত শব্দে যার অর্থ একটি অপরটির সঙ্গে সংযুক্ত বা সংমিশ্রিত হয়ে একাকার অবস্থায় ছিল । ভিন্ন ভিন্ন দুটি বস্তু মিলে একটি অখণ্ড বস্তু তৈরী করে - এটি উল্লেখ করতেই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। আমি সেলাই খুলে বিযুক্ত করেছি -এই শব্দ সমষ্টি আরবীতে একটি ক্রিয়াপদ ফাতাক্ব্ (fataqa ) দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এই শব্দটি এটাই সূচিত করে যে , কোন কিছু রাতক্ব অবস্থায় পূর্বে ছিল , এখন সেটি ছিঁড়ে গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন আলাদা জিনিষ অস্তিত্ত্বে এসেছে। মাটি ভেদ করে একটি বীজ থেকে অংকুর বের হওয়ার কাজেও এই ক্রিয়াপদটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

চলুন আমরা হৃদয়ে এ ধারণাটি পোষণ করে আয়াতটির উপর আরেকবার দৃষ্টিপাত করি। এ আয়াতটি অনুসারে প্রথমে পৃথিবী আর গগনমন্ডল সংযুক্ত অবস্থায় রাতক্ব হিসেবে ছিল। এদের একটি অপরটি থেকে বের হয়ে আলাদা হয়েছে (ফাতাক্বা হয়েছে)। আগ্রহের সঙ্গে আমরা যখন মহাবিস্ফোরণের (Big Bang ) প্রথম মুহূর্তগুলো স্মরণ করে দেখি , তবে আমরা দেখতে পাই যে , মহাবিশ্বের সমস্ত বস্তু বা পদার্থ একটি মাত্র বিন্দুতে বিদ্যমান ছিল। অন্যকথায় গগনমন্ডলী ও পৃথিবী - যখন তখনো সৃষ্টি - হয়নি তখন রাতক্ব অবস্থায় ছিল । প্রচন্ড বা ভয়ংকরভাবে বিন্দুটি বিস্ফোরিত হয় - যারই ফলে বিদ্যমান সমস্ত বস্তুগুলো - ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় ( ফাতাক্বাতে ) ; আর এ প্রক্রিয়াতেই সৃষ্ট হয়েছে সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ড।

বৈজ্ঞানিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যাবলীর সঙ্গে আয়াতটির অভিব্যক্তিগুলো তুলনা করে আমরা দেখতে পাই যে , এরা পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে নিখুঁতভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যথেষ্ট কৌতুহলের ব্যাপার এটি যে বিংশ শতাব্দীর আগে এই তথ্যগুলো পাওয়া যায়নি।

কক্ষপথরাজি

পবিত্র কোরআনে যখনই চন্দ্র আর সূর্যের কথা বলা হয়েছে তখনই অত্যন্ত গুরুত্বের সহিত উল্লেখ করা হয়েছে যে , চন্দ্র আর সূর্য দুটিই নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান অবস্থায় রয়েছে।

আর তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং চন্দ্র ও সূর্য। সবাই নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণ করে। (কোরআন , ২১ : ৩৩)-

সূর্য যে স্থির অবস্থায় নেই বরং একটি সুনির্দিষ্ট কক্ষপথে বিচরণ করছে এ বিষয়টি আরেকটি আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে : আর সূর্য স্বীয় গন্তব্য স্থানের দিকে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী , সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। (কোরআন , ৩৬ : ৩৮)

এই যে বিষয়সমূহ কোরআনের মাধ্যমে আমরা অবগত হয়েছি সেগুলো আমাদের যুগে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ দ্বারা উদঘাটিত হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানে অভিজ্ঞজনদের গণনানুসারে সূর্যSolar Apex নামক একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘন্টায় ৭২০ ,০০০ কিলোমিটার বেগেVega নামক একটি নক্ষত্রের দিকে গতিশীল বা ভ্রমণরত রয়েছে। এর অর্থ এই দাড়ায় যে , সূর্য প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৭ ,২৮০ ,০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে থাকে। সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের মাধ্যাকর্ষণজনিত সিস্টেমের আওতায় অন্তর্ভূক্ত অন্যান্য গ্রহ , নক্ষত্রগুলোও একই দূরত্ব অতিক্রম করে। অধিকন্তু বিশ্বব্রহ্মান্ডের সমস্ত নক্ষত্রপুঞ্জ ঠিক অনুরূপভাবে পরিকল্পিত গতিতে চলনশীল রয়েছে।

ঠিক এর মতোই গোটা বিশ্বব্রহ্মান্ড যে একই ধরণের পথ আর কক্ষপথে পরিপূর্ণ তা নিম্নরূপে কোরআনে বর্ণিত রয়েছে :

কসম বহু পথ আর কক্ষপথ বিশিষ্ট আসমানের। (কোরআন , ৫১ : ৭)

মহাবিশ্বে প্রায় ২০০ বিলিয়ন গ্যালাক্সি রয়েছে , যাদের প্রতিটি ২০০ বিলিয়ন নক্ষত্রপুঞ্জ নিয়ে গঠিত। বেশীর ভাগ নক্ষত্রের রয়েছে গ্রহ আর গ্রহের রয়েছে উপগ্রহ। গগনমন্ডলের সমস্ত বস্তুগুলোই সঠিকভাবে গণনাকৃত কক্ষপথসমূহে ঘুর্ণায়মানরত রয়েছে। মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে এদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে পরস্পরের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য ও সঠিক বিন্যাস রেখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়াও বহু ধুমকেতু রয়েছে যারা তাদের জন্য নির্দিষ্ট কক্ষপথে বিচরণ করে।

মহাবিশ্বের কক্ষপথরাজি কেবলি এই গগনমন্ডলীর গ্রহ -নক্ষত্রের জন্য নয়। গ্যালাক্সিগুলোও সঠিকভাবে গণনাকৃত পরিকল্পিত কক্ষপথসমূহে বিশাল বেগে বিচরণ করে। এই বিচরণের সময় মহাকাশের কোন বস্তু একটি আরেকটির পথে চলে যায়না কিংবা সংঘর্ষে লিপ্ত হয় না।

এটা সুনিশ্চিত যে , কোরআন নাযিল হওয়ার কালে এখনকার মতো টেলিস্কোপ আবিষ্কৃত হয়নি , ছিলনা পর্যবেক্ষণের জন্য উন্নত প্রযুক্তি যার সাহায্যে এখন মহাশূণ্যের মিলিয়ন মিলিয়ন জায়গা পর্যবেক্ষণ করা যায় , ছিলনা পদার্থবিদ্যা বা জ্যোতির্বিদ্যার আধুনিক জ্ঞান ভান্ডার। কোরআনে যেমন বলা হয়েছে যে মহাশূণ্য পথ আর কক্ষপথসমূহে পরিপূর্ণ - যদিও তখনকার সময় তা নির্ণয় করা সম্ভব ছিল না। অথচ কোরআনে বেশ স্পষ্টভাবে বিষয়টি বর্ণিত রয়েছে - কেননা এই কোরআন মহাপরাক্রমশালী , মহাজ্ঞানী আল্লাহ তাআলার বাণী।


6

7

8

9

10

11

12

13

14

15

16

17

18