নাহজ আল-বালাঘা

নাহজ আল-বালাঘা0%

নাহজ আল-বালাঘা লেখক:
: জেহাদুল ইসলাম
প্রকাশক: র‌্যামন পাবলিশার্স
বিভাগ: হযরত আলী (আ.)

নাহজ আল-বালাঘা

লেখক: আশ-শরীফ আর-রাজী
: জেহাদুল ইসলাম
প্রকাশক: র‌্যামন পাবলিশার্স
বিভাগ:

ভিজিট: 119470
ডাউনলোড: 7233

নাহজ আল-বালাঘা
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 48 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 119470 / ডাউনলোড: 7233
সাইজ সাইজ সাইজ
নাহজ আল-বালাঘা

নাহজ আল-বালাঘা

লেখক:
প্রকাশক: র‌্যামন পাবলিশার্স
বাংলা

রাসূলের (সা.) ‘জ্ঞান নগরীর দ্বার’ আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব ছিলেন তত্ত্বজ্ঞানী, দার্শনিক, সুলেখক ও বাগ্মী। আলঙ্কারিক শাস্ত্রে তার পান্ডিত্য ও নৈপুন্য অসাধারণ। তিনি নবুওয়াতী জ্ঞান ভান্ডার হতে সরাসরি জ্ঞান আহরণ করেন এবং সাহাবাদের মধ্যে তিনি শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী পন্ডিত ছিলেন। এতে কারো দ্বিমত নেই। আরবী কাব্যে ও সাহিত্যে তার অনন্যসাধারণ অবদান ছিল। খেলাফত পরিচালনা কালে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ভাষণ (খোৎবা) দিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকার প্রশাসকগণকে প্রশাসনিক বিষয়ে উপদেশ ও নির্দেশ দিয়ে পত্র লিখেছিলেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে মানুষের অনেক প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাব দিয়েছিলেন। তার এসব বাণী কেউকেউ লিখে রেখেছিল, কেউ কেউ মনে রেখেছিল, আবার কেউ কেউ তাদের লিখিত পুস্তকে উদ্ধৃত করেছিল। মোটকথা তার অমূল্য বাণীসমূহ মানুষের কাছে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় ছিল।

আশ-শরীফ আর-রাজী আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিবের ভাষণসমূহ (খোৎবা), পত্রাবলী, নির্দেশাবলী ও উক্তিসমূহ সংগ্রহ করে “নাহজ আল-বালঘা” নামক গ্রন্থটি সঙ্কলন করেন।

নাহজ আল - বালাঘা

মূলঃ আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব

সঙ্কলনঃ আশ - শরীফ আর - রাজী

ইংরেজী অনুবাদঃ সৈয়দ আলী রেজা

বাংলা অনুবাদ

জেহাদুল ইসলাম

র‌্যামন পাবলিশার্স

ঢাকা

নাহজ আল - বালাঘা

মূলঃ আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব

সঙ্কলনঃ আশ - শরীফ আর - রাজী

ইংরেজী অনুবাদঃ সৈয়দ আলী রেজা

বাংলা অনুবাদঃ জেহাদুল ইসলাম

আরবী সংযোজনঃ এম এফ বারী

র‌্যামন পাবলিশার্স

ঢাকা

এই বইটি আল হাসানাইন (আ.) ওয়েব সাইট কর্তৃক আপলোড করা হয়েছে ।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

অনুবাদকের নিবেদন

আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) ৬০০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ রজব অর্থাৎ ২৩ হিজরী - পূর্ব সনের ১৩ রজব শুক্রবার জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি রাসূলের (সা.) চাচা আবু তালিবের পুত্র। রাসূল (সা.) দাদা আবদুল মুত্তালিব মৃত্যু বরণ করার পর তার শৈশব ও কৈশরে চাচা আবি তালিব তাকে অতি যত্নে লালন - পালন করেছিলেন। হযরত খাদিজাকে (রা.) বিয়ে করার পর হতে রাসূলের (সা.) আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য এসেছিল। এসময় আরবে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার কারণে আবি তালিবের সংসারের অসচ্ছলতার কথা বিবেচনা করে রাসূল (সা.) শিশু আলীকে তার সংসারে এনে পরম যত্নে লালন - পালন করতে লাগলেন। এমনিতেই জন্মের পর হতে আলীর (আ.) প্রতি রাসূলের (সা.) অগাধ ভালবাসা ছিল। এখন নিজের সংসারে এনে তিনি আলীকে নিজের মনমত করে গড়ে তুলতে লাগলেন। ফলে আলী (আ.) রাসূলের (সা.) আচার , আচরণ ও আখলাক রপ্ত করে এক সুমহান চরিত্রের অধিকারী হয়েছেন। তিনি ছিলেন রেসালত প্রকাশ - পূর্ব সময় হতে রাসূলের (সা.) সার্বক্ষণিক সহচর। তাই তিনি দাবী করে বলেছেন হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় আমি ও খাদিজা ব্যতীত আর কোন সাহাবা রাসূলকে (সা.) দেখেনি ” । রেসালাত প্রকাশের সাথে সাথেই তিনি রাসূলের বক্তব্যে ইমান এনে তাকে আল্লাহর রাসূল বলে স্বীকার করেন। কালক্রমে তিনি একজন মহাবীর হিসাবে শুধুমাত্র তাবুকের যুদ্ধ ব্যতীত রাসূলের (সা.) জীবদ্দশায় ইসলামের সকল যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন এবং বিরোধী বাহিনীর বীরগণকে পরাভূত করে ইসলামের ঝান্ডা সমুন্নত রেখেছিলেন । সাহাবাদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচাইতে জ্ঞানী। তাই রাসূল (সা.) বলেছিলেন , আমি জ্ঞানের নগরী এবং আলী তার দরজা্। ” তিনি আরবী ব্যাকরণ শাস্ত্রের প্রবর্তক এবং ইসলামে সর্বপ্রথম লেখক হিসাবে গণ্য । তার পুস্তকের নাম কিতাবে আলী ” ও জামেয়া ” । এতে তিনি সমগ্র দুনিয়ায় যে সব ঘটনা সংঘটিত হবে তার বিবরণ দিয়োছিলেন (দৈনিক ইনকিলাব , ১২জুন , ১৯৯৩) ।

১১ হিজরী সনে রাসূলের (সা.) তিরোধানের পর হযরত আবু বকর (রা.) মুসলিম জাহানের খলিফা মনোনীত হন। তার মৃত্যুর পর ১৩ হিজরী সনে হযরত ওমর (রা.) খলিফা মনোনীত হন। ৩৫ হিজরী সনের ১৮ জিলহজ্জ উসমানকে (রা.) নিহত হবার পর ২১ জিলহজ্জ জনগণের চাপের মুখে আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) খেলাফতের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি ৪ বছর ৯ মাস খেলাফত পরিচালনা করেছিলেন। এসময়ে তিনি কখনো নির্বিঘ্নভাবে খেলাফতের দায়িত্ব পারন করতে পারেননি। প্রথমেই তালহা ও জুবায়েরের বিদ্রোহ , তৎপর মুয়াবিয়ার বিদ্রোহ ও খারিজীদের বিদ্রোহের কারণে জামালের যুদ্ধ , সিফফিনের যুদ্ধ ও নাহরাওয়ানের যুদ্ধসহ আরে অনেক যুদ্ধে তাকে জড়িয়ে পড়তে হয়েছিল। তদুপরি তার কঠোর নৈতিক মূল্যবোধের করণে অনেক সুবিধাবাদী লোক তার বিপক্ষে চলে যায়। এতে তিনি অসুবিধার সম্মুখীন হলেও কোরআন ও সুন্নাহর বিধান সমুন্নত রাখার ব্যাপারে কখনো কোন প্রকার আপোষ করেননি। ফলে ৪০ হিজরী সনের ১৯ রমজান কুফার মসজিদে ফজর সালাতের সময় গুপ্তঘাতকের মরণাঘাতে আহত হয়ে ২১ রমজান ৬৩ বছর বয়সে শহীদ হন।

রাসূলের (সা.) জ্ঞান নগরীর দ্বার ’ আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব ছিলেন তত্ত্বজ্ঞানী , দার্শনিক , সুলেখক ও বাগ্মী। আলঙ্কারিক শাস্ত্রে তার পান্ডিত্য ও নৈপুন্য অসাধারণ। তিনি নবুওয়াতী জ্ঞান ভান্ডার হতে সরাসরি জ্ঞান আহরণ করেন এবং সাহাবাদের মধ্যে তিনি শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী পন্ডিত ছিলেন। এতে কারো দ্বিমত নেই। আরবী কাব্যে ও সাহিত্যে তার অনন্যসাধারণ অবদান ছিল। খেলাফত পরিচালনা কালে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ভাষণ (খোৎবা) দিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকার প্রশাসকগণকে প্রশাসনিক বিষয়ে উপদেশ ও নির্দেশ দিয়ে পত্র লিখেছিলেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে মানুষের অনেক প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাব দিয়েছিলেন। তার এসব বাণী কেউকেউ লিখে রেখেছিল , কেউ কেউ মনে রেখেছিল , আবার কেউ কেউ তাদের লিখিত পুস্তকে উদ্ধৃত করেছিল। মোটকথা তার অমূল্য বাণীসমূহ মানুষের কাছে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় ছিল।

আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিবের অনন্যসাধারণ অবদান সম্পর্কে আশ - শরীফ আর - রাজীর পূর্বে কেউ গবেষণা করেছেন বলে জানা যায় না। তার পূর্ণ নাম আস - সাঈদ আবুল হাসান আলী ইবনে হুসাইন আর - রাজী আল - মুসাভী। তিনি ৩৫৯ হিজরী সনে বাগদাদে জন্ম গহণ করেছিলেন। তিনি আব্বাসীয় খলিফা বাহাউদ্দৌলা বুইয়া - এর যুগ পেয়েছিলেন্। তার উপাধি ছিল নাকিবুল আশরাফ আত - তালেবিন্ ” । তিনি আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিবের ভাষণসমূহ (খোৎবা) , পত্রাবলী , নির্দেশাবলী ও উক্তিসমূহ সংগ্রহ করে নাহজ আল - বালঘা ” এবং কবিতাসমূহ সংগ্রহ করে দিওয়ানে আলী ” নামক দু ’ টি গ্রন্থ সঙ্কলন করেন। এ গ্রন্থদ্বয় অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয়। শরীফ রাজী কর্তৃক সঙ্কলিত নাহজ আল - বালাঘা ” - এর বহু টীকা ও ভাষ্যগ্রন্থ রচিত হয়েছে। এসব ভাষ্য গ্রন্থের মধ্যে ইবনে আবিল হাদীদ ও মেইছাম আল - বাহরাণীর ভাষ্য গ্রন্থদ্বয় প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। নাহজ আল - বালাঘা ” গ্রন্থটি উর্দু , ফারসী ও ইংরেজী ভাষাসহ আরো অন্যান্য ভাষায় অনুদিত হয়েছে। আল্লামা শরীফ রাজী ৪০০ হিজরী সনে উক্ত গ্রন্থটি সঙ্কলন সমাপ্ত করেন এবং ৪০৬ হিজরী সনের ৫ মহররম তিনি বাগদাদে ইন্তেকাল (দৈনিক ইনকিলাব , ৭ জুলাই , ১৯৯২) ।

নাহজ আল - বালাঘা ” গ্রন্থটি ইংরেজী ভাষায় প্রকাশ করেছেWorld Organisation for Islamic Services, Tehran (WOFIS) .ইংরেজী অনুবাদ ৩ খণ্ডে সমাপ্ত করা হয়েছে। ইংরেজী অনুবাদ পড়ে আমি এতবেশী আকৃষ্ট হয়েছি যে , হেদায়েতের এ মহান বাণীসমূহ বাংলা ভাষাভাষী ভাই - বোনদের হাতে পৌছানোর জন্য মনোস্থির করে এর বাংলা অনুবাদ করা আরম্ভ করলাম । চাকুরী জীবনের ব্যস্ত সময়ের ফাকে এ কাজটি ব্রত হিসাবে গ্রহণ করে প্রায় দু ’ বছরে সম্পূর্ণ অনুবাদ সম্পন্ন করলাম। এতে রয়েছে ২৩৯টি ভাষণ (খোৎবা) , ৭৯টি পত্র ও নির্দেশনামা এবং ৪৮৯টি উক্তি। অতঃপর আমি নাহজ আল - বালাঘা ” - এর আরবী ও ফারসীVersion সংগ্রহ করে কতিপয় আরবী জানা ব্যক্তির সাথে অধিকাংশ ভাষণ আরবিতে পড়ে আমার বাংলা অনুবাদ মিলিয়ে তার সঠিকতা নিরূপন করেছি। এতে প্রায় এক বছর সময় লেগে গেছে।

“ নাহজ আল - বালাঘা ” গ্রন্থটি ইংরেজীতে তিন খণ্ড হলেও আমি বাংলা অনুবাদ এক খণ্ডে প্রকাশ করেছি এবং ভাষণ (খোৎবা) , পত্রাবলী ও উক্তিসমূহের জন্য তিনটি অধ্যায় করেছি। আমি গ্রন্থটির আক্ষরিক অনুবাদ করেছি একটি বাক্যও বাদ দেইনি ; এমনকি প্রচ্ছদও অবিকল রেখেছি প্রায় প্রতিটি ভাষণ ও পত্রের শেষে যে টিকা রয়েছে তাWOFIS - এর টিকা। আমি শুধুমাত্র অনুবাদ করেছি । সহৃদয় পাঠকদের মধ্যে কেউ যদি তার অভিমত ও ব্যাখ্যা প্রেরণ করেন তবে পরবর্তী সংস্করণের টীকায় তার নামে তা ছাপা হবে ।

আমি আগেই বলেছি আমি গ্রন্থখানাword by word অনুবাদ করতে চেষ্টা করেছি কিন্তু গ্রন্থখানার নামের পরিবর্তন করিনি । নাহজ আল - বালাঘা ” অর্থ বাগ্মীতার ঝর্ণাধারা হওয়া সত্ত্বেও গ্রন্থখানার নামকরণ অবিকল রেখেছি ।

আমি ভাষাবিদ নই। ভাষার ওপর তেমন দখল নেই। তবুও এ দুরূহ কাজটি সমাপ্ত করেছি। গ্রন্থখানার প্রুফ আমি নিজেই দেখেছি । কাজেই কিছু ভুল - ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে , সেজন্য ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

কর্ম জীবনের ব্যস্ততার মাঝে এ দুরূহ কাজটি সম্পন্ন করতে আমার স্ত্রী মমতাজ বেগম আমাকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছেন । সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করতে চাইনা। হেদাযেতের বাণীপূর্ণ এ গ্রন্থখানা পড়ে যদি মুসলিম ভাই - বোনগণ একটুখানি সত্য , সঠিক ও হেদায়েতের পথ দেখতে পান তবেই আমার এ কঠোর শ্রম সার্থক হবে এবং যেন এর বিনিময়ে মহিমান্বিত আল্লাহ আমার পিতা - মাতা , আমার স্ত্রী ও আমাকে তার সান্নিধ্য দান করেন - এটাই আমার একমাত্র কামনা।

জেহাদুল ইসলাম

প্রথম অধ্যায়

আমিরুল মোমেনিনের খোৎবাসমূহ