নাহজ আল-বালাঘা

নাহজ আল-বালাঘা0%

নাহজ আল-বালাঘা লেখক:
: জেহাদুল ইসলাম
প্রকাশক: র‌্যামন পাবলিশার্স
বিভাগ: হযরত আলী (আ.)

নাহজ আল-বালাঘা

লেখক: আশ-শরীফ আর-রাজী
: জেহাদুল ইসলাম
প্রকাশক: র‌্যামন পাবলিশার্স
বিভাগ:

ভিজিট: 126217
ডাউনলোড: 8027

নাহজ আল-বালাঘা
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 48 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 126217 / ডাউনলোড: 8027
সাইজ সাইজ সাইজ
নাহজ আল-বালাঘা

নাহজ আল-বালাঘা

লেখক:
প্রকাশক: র‌্যামন পাবলিশার্স
বাংলা

রাসূলের (সা.) ‘জ্ঞান নগরীর দ্বার’ আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব ছিলেন তত্ত্বজ্ঞানী, দার্শনিক, সুলেখক ও বাগ্মী। আলঙ্কারিক শাস্ত্রে তার পান্ডিত্য ও নৈপুন্য অসাধারণ। তিনি নবুওয়াতী জ্ঞান ভান্ডার হতে সরাসরি জ্ঞান আহরণ করেন এবং সাহাবাদের মধ্যে তিনি শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী পন্ডিত ছিলেন। এতে কারো দ্বিমত নেই। আরবী কাব্যে ও সাহিত্যে তার অনন্যসাধারণ অবদান ছিল। খেলাফত পরিচালনা কালে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ভাষণ (খোৎবা) দিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকার প্রশাসকগণকে প্রশাসনিক বিষয়ে উপদেশ ও নির্দেশ দিয়ে পত্র লিখেছিলেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে মানুষের অনেক প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাব দিয়েছিলেন। তার এসব বাণী কেউকেউ লিখে রেখেছিল, কেউ কেউ মনে রেখেছিল, আবার কেউ কেউ তাদের লিখিত পুস্তকে উদ্ধৃত করেছিল। মোটকথা তার অমূল্য বাণীসমূহ মানুষের কাছে ছড়ানো ছিটানো অবস্থায় ছিল।

আশ-শরীফ আর-রাজী আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিবের ভাষণসমূহ (খোৎবা), পত্রাবলী, নির্দেশাবলী ও উক্তিসমূহ সংগ্রহ করে “নাহজ আল-বালঘা” নামক গ্রন্থটি সঙ্কলন করেন।

খোৎবা - ১০৯

ثمرات الدین

إِنَّ أَفْضَلَ مَا تَوَسَّلَ بِهِ الْمُتَوَسِّلُونَ إِلَى اللَّهِسُبْحَانَهُ وَ تَعَالَى ، الْإِيمَانُ بِهِ وَ بِرَسُولِهِ، وَالْجِهَادُ فِي سَبِيلِهِ فَإِنَّهُ ذِرْوَةُ الْإِسْلاَمِ؛ وَ كَلِمَةُ الْإِخْلاَصِ فَإِنَّهَا الْفِطْرَةُ؛ وَ إِقَامُ الصَّلاَةِ فَإِنَّهَا الْمِلَّةُ؛ وَ إِيتَأُ الزَّكَاةِ فَإِنَّهَا فَرِيضَةٌ وَاجِبَةٌ؛ وَصَوْمُ شَهْرِ رَمَضَانَ فَإِنَّهُ جُنَّةٌ مِنَ الْعِقَابِ؛ وَ حَجُّ الْبَيْتِ وَ اعْتِمَارُهُ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَيَرْحَضَانِ الذَّنْبَ. وَ صِلَةُ الرَّحِمِ فَإِنَّهَا مَثْرَاةٌ فِي الْمَالِ، وَ مَنْسَأَةٌ فِي الْأَجَلِ؛ وَ صَدَقَةُ السِّرِّ فَإِنَّهَا تُكَفِّرُ الْخَطِيئَةَ؛ وَ صَدَقَةُ الْعَلاَنِيَةِ فَإِنَّهَا تَدْفَعُ مِيتَةَ السُّوءِ، وَ صَنَائِعُ الْمَعْرُوفِ فَإِنَّهَا تَقِي مَصَارِعَ الْهَوَانِ. أَفِيضُوا فِي ذِكْرِ اللَّهِ فَإِنَّهُ أَحْسَنُ الذِّكْرِ، وَارْغَبُوا فِيمَا وَعَدَ الْمُتَّقِينَ فَإِنَّ وَعْدَهُ أَصْدَقُ الْوَعْدِ، وَاقْتَدُوا بِهَدْيِ نَبِيِّكُمْ فَإِنَّهُ أَفْضَلُ الْهَدْيِ، وَاسْتَنُّوا بِسُنَّتِهِ فَإِنَّهَا أَهْدَى السُّنَنِ.

قیمة القرآن

وَ تَعَلَّمُوا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ أَحْسَنُ الْحَدِيثِ، وَ تَفَقَّهُوا فِيهِ فَإِنَّهُ رَبِيعُ الْقُلُوبِ، وَ اسْتَشْفُوا بِنُورِهِ فَإِنَّهُ شِفَأُ الصُّدُورِ، وَ أَحْسِنُوا تِلاَوَتَهُ فَإِنَّهُ أَنْفَعُ الْقَصَصِ. فَاِنَّ الْعَالِمَ الْعَامِلَ بِغَيْرِ عِلْمِهِ كَالْجَاهِلِ الْحَائِرِ الَّذِي لاَ يَسْتَفِيقُ مِنْ جَهْلِهِ؛ بَلِ الْحُجَّةُ عَلَيْهِ أَعْظَمُ، وَالْحَسْرَةُ لَهُ أَلْزَمُ، وَ هُوَ عِنْدَ اللَّهِ أَلْوَمُ.

ইসলাম , পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ সম্পর্কে

ইসলাম সম্পর্কে

প্রশংসিত ও মহিমান্বিত আল্লাহর সান্নিধ্য সন্ধানকারীরা যে প্রকৃষ্ট উপায়ে তাঁর সান্নিধ্য অনুসন্ধান করে তা হলো - আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রগাঢ় ইমান ও আল্লাহর পথে জিহাদ কারণ তা ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া ;কালিমাতুল ইখলাছে বিশ্বাস কারণ তা ইসলামের ফেতরাত ;সালাত - কায়েম কারণ তা সমাজ ,জাকাত প্রদান কারণ তা বাধ্যতামূলক দায়িত্ব ,রমজান মাসে সিয়াম সাধনা কারণ তা শাস্তির বিরুদ্ধে ঢাল ,হজ্ব ও উমরাহ পালন কারণ তা দারিদ্রতা মুছে ফেলে ও পাপ ধুয়ে ফেলে ,আত্মীয় - স্বজনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কারণ তা সম্পদ ও জীবনের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে ,গোপন - দান কারণ তা ক্রটি বিচ্যুতি ঢেকে দেয় ,প্রকাশ্য - দান কারণ তা সায়াত (শঙ্কাকুল মৃত্যু) থেকে রক্ষা করে এবং সুযোগ - সুবিধা সকলের মধ্যে বন্টন কারণ তা আমর্যাদাকর অবস্থা থেকে রক্ষা করে। আল্লাহর জেকেরে এগিয়ে যাও কারণ এটাই সর্বোত্তম জেকের এবং ধার্মিকদের প্রতি তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার আশা পোষণ কর কারণ তাঁর প্রতিশ্রুতি সর্বাপেক্ষা সত্য। রাসূলের (সা.) পথ অনুসরণ কর কারণ তা সকল আচরণবিধি অপেক্ষা সঠিক।

পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ সম্পর্কে

কুরআন শিক্ষা করো কারণ এটা সুন্দরতম ধর্মোপদেশ এবং কুরআনকে বিশদভাবে বুঝতে চেষ্টা কর কারণ এটা সর্বোত্তমভাবে হৃদয়কে প্রস্ফুটিত করে। সুন্দরভাবে কুরআন তেলাওয়াত কর কারণ এটা অতি সুন্দর বর্ণনা। নিশ্চয়ই ,একজন বিজ্ঞ লোক তার জ্ঞানানুসারে আমল না করলে সে মস্তিষ্কহীন অজ্ঞের সামিল হয় ,সে তার অজ্ঞতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পায় না। জ্ঞানীগণের ওপর আল্লাহর ওজর বেশি ;তাদের দায়িত্বও বেশি এবং আল্লাহর সম্মুখে তারাই বেশি দোষারোপযোগ্য।

খোৎবা - ১১০

التحذیر عن حب الدنیا

أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أُحَذِّرُكُمُ الدُّنْيا، فَإِنَّها حُلْوَةٌ خَضِرَةٌ، حُفَّتْ بِالشَّهَوَاتِ، وَ تَحَبَّبَتْ بِالْعَاجِلَةِ، وَ رَاقَتْ بِالْقَلِيلِ، وَ تَحَلَّتْ بِالْآمَالِ، وَ تَزَيَّنَتْ بِالْغُرُورِ، لا تَدُومُ حَبْرَتُها، وَ لا تُؤْمَنُ فَجْعَتُهَا.

حقیقة الدنیا

غَرَّارَةٌ ضَرَّارَةٌ، حَائِلَةٌ، زَائِلَةٌ، نَافِدَةٌ، بَائِدَةٌ، أَكَّالَةٌ، غَوَّالَةٌ، لا تَعْدُو إِذا تَناهَتْ إِلى أُمْنِيَّةِ أَهْلِ الرَّغْبَةِ فِيها؛ وَالرِّضَأِ بِهَا أَنْ تَكُونَ كَما قَالَ اللَّهُ تَعَالَىسبحانه :( كَمأٍ أَنْزَلْناهُ مِنَ السَّمأِ فَاخْتَلَطَ بِهِ نَباتُ الْأَرْضِ فَأَصْبَحَ هَشِيما تَذْرُوهُ الرِّياحُ، وَ كانَ اللّهُ عَلى كُلِّ شَيْءٍ مُقْتَدِرا .) لَمْ يَكُنِ امْرُؤٌ مِنْها فِي حَبْرَةٍ إلا أَعْقَبَتْهُ بَعْدَها عَبْرَةً؛ وَ لَمْ يَلْقَ مِنْ سَرَّائِها بَطْنا إلا مَنَحَتْهُ مِنْ ضَرَّائِهَا ظَهْرا، وَ لَمْ تَطُلَّهُ فِيها دِيمَةُ رَخَأٍ إلا هَتَنَتْ عَلَيْهِ مُزْنَةُ بَلاَءٍ، وَ حَرِيُّ إذا أَصْبَحَتْ لَهُ مُنْتَصِرَةً أَنْ تُمْسِيَ لَهُ مُتَنَكِّرَةً، وَ إ نْ جَانِبٌ مِنْهَا اعْذَوْذَبَ وَاحْلَوْلَى أَمَرَّ مِنْهَا جَانِبٌ فَأَوْبَى.لا يَنالُ امْرُؤٌ مِنْ غَضارَتِهَا رَغَبا إلا أَرْهَقَتْهُ مِنْ نَوائِبِها تَعَبا، وَ لا يُمْسِي مِنْهَا فِي جَناحِ أَمْنٍ، إلا أَصْبَحَ عَلَى قَوادِمِ خَوْفٍ، غَرَّارَةٌ، غُرُورٌ مَا فِيهَا، فَانِيَةٌ فانٍ مَنْ عَلَيْها.

لاَ خَيْرَ فِي شَيْءٍ مِنْ أَزْوَادِها إلا التَّقْوَى. مَنْ أَقَلَّ مِنْهَا اسْتَكْثَرَ مِمَّا يُؤْمِنُهُ! وَ مَنِ اسْتَكْثَرَ مِنْهَا اسْتَكْثَرَ مِمَّا يُوبِقُهُ، وَزالَ عَمَّا قَلِيلٍ عَنْهُ.كَمْ مِنْ وَاثِقٍ بِها قَدْ فَجَعَتْهُ، وَ ذِي طُمَأْنِينَةٍ إِلَيْهَا قَدْ صَرَعَتْهُ، وَ ذِي أُبَّهَةٍ قَدْ جَعَلَتْهُ حَقِيرا، وَ ذِي نَخْوَةٍ قَدْ رَدَّتْهُ ذَلِيلاً! سُلْطانُها دُوَّلٌ، وَ عَيْشُها رَنِقٌ، وَ عَذْبُها أُجَاجٌ، وَ حُلْوُها صَبِرٌ، وَ غِذاؤُها سِمامٌ، وَ أَسْبابُها رِمَامٌ! حَيُّها بِعَرَضِ مَوْتٍ، وَ صَحِيحُها بِعَرَضِ سُقْمٍ، مُلْكُها مَسْلُوبٌ، وَ عَزِيزُها مَغْلُوبٌ، وَ مَوْفُورُها مَنْكُوبٌ، وَ جَارُها مَحْرُوبٌ.

أَلَسْتُمْ فِي مَساكِنِ مَنْ كانَ قَبْلَكُمْ أَطْوَلَ أَعْماراً، وَ أَبْقَى آثَاراً، وَأَبْعَدَ آمالاً، وَ أَعَدَّ عَدِيداً، وَ أَكْثَفَ جُنُوداً، تَعَبَّدُوا لِلدُّنْيا أَيَّ تَعَبُّدٍ، وَ آثَرُوها أَيَّ إِيْثَارٍ، ثُمَّ ظَعَنُوا عَنْها بِغَيْرِ زادٍ مُبَلِّغٍ، وَ لا ظَهْرٍ قَاطِعٍ؟! فَهَلْ بَلَغَكُمْ أَنَّ الدُّنْيا سَخَتْ لَهُمْ نَفْسا بِفِدْيَةٍ، أَوْ أَعانَتْهُمْ بِمَعُونَةٍ، أَوْ أَحْسَنَتْ لَهُمْ صُحْبَةً؟ بَلْ أَرْهَقَتْهُمْ بِالْفَوادِحِ، وَ أَوْهَقَتْهُمْ بِالْقَوَارِعِ، وَضَعْضَعَتْهُمْ بِالنَّوائِبِ، وَ عَفَّرَتْهُمْ لِلْمَناخِرِ، وَوَطِئَتْهُمْ بِالْمَناسِمِ، وَ أَعانَتْ عَلَيْهِمْ رَيْبَ الْمَنُونِ، فَقَدْ رَأَيْتُمْ تَنَكُّرَها لِمَنْ دانَ لَها، وَآثَرَها وَ أَخْلَدَ إِلَيْها حِينَ ظَعَنُوا عَنْها لِفِراقِ الْأَبَدِ، وَ هَلْ زَوَّدَتْهُمْ إِلا السَّغَبَ، أَوْ أَحَلَّتْهُمْ إِلا الضَّنْكَ، أَوْ نَوَّرَتْ لَهُمْ إِلا الظُّلْمَةَ، أَوْ أَعْقَبَتْهُمْ إِلا النَّدَامَةَ!

أَفَهَذِهِ تُؤْثِرُونَ، أَمْ إِلَيْها تَطْمَئِنُّونَ، أَمْ عَلَيْها تَحْرِصُونَ؟ فَبِئْسَتِ الدَّارُ لِمَنْ لَمْ يَتَّهِمْها وَ لَمْ يَكُنْ فِيها عَلَى وَجَلٍ مِنْها، فَاعْلَمُوا - وَ أَنْتُمْ تَعْلَمُونَ - بِأَنَّكُمْ تَارِكُوهَا وَ ظَاعِنُونَ عَنْها، وَاتَّعِظُوا فِيها بِالَّذِينَ قَالُوا:( مَنْ أَشَدُّ مِنّا قُوَّةً ) حُمِلُوا إلى قُبُورِهِمْ فَلا يُدْعَوْنَ رُكْبَانا، وَ أُنْزِلُوا الْأَجْداثَ فَلا يُدْعَوْنَ ضِيفَانا، وَجُعِلَ لَهُمْ مِنَ الصَّفِيحِ أَجْنَانٌ، وَ مِنَ التُّرَابِ أَكْفَانٌ، وَ مِنَ الرُّفاتِ جِيرَانٌ، فَهُمْ جِيرَةٌ لا يُجِيبُونَ دَاعِياً، وَ لا يَمْنَعُونَ ضَيْماً، وَ لاَ يُبَالُونَ مَنْدَبَةً؛ إنْ جِيدُوا لَمْ يَفْرَحُوا، وَ إنْ قُحِطُوا لَمْ يَقْنَطُوا، جَمِيعٌ وَ هُمْ آحَادٌ، وَ جِيرَةٌ وَ هُمْ أَبْعَادٌ. مُتَدانُونَ لا يَتَزاوَرُونَ، وَ قَرِيبُونَ لا يَتَقارَبُونَ. حُلَمَأُ قَدْ ذَهَبَتْ أَضْغانُهُمْ، وَجُهَلاَءُ قَدْ ماتَتْ أَحْقادُهُمْ، لا يُخْشَى فَجْعُهُمْ، وَ لا يُرْجَى دَفْعُهُمْ، اسْتَبْدَلُوا بِظَهْرِ الْأَرْضِ بَطْنا، وَ بِالسَّعَةِ ضِيقاً، وَ بِالْأَهْلِ غُرْبَةً، وَ بِالنُّورِ ظُلْمَةً، فَجَأُوها كَما فارَقُوها حُفَاةً عُرَاةً، قَدْ ظَعَنُوا عَنْها بِأَعْمالِهِمْ إِلَى الْحَيَاةِ الدَّائِمَةِ، وَ الدَّارِ الْباقِيَةِ، كَما قالَسُبْحانَهُ وَ تَعَالَى :( كَما بَدَأْنا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ، وَعْدا عَلَيْنا، إِنّا كُنّا فاعِلِينَ ) .

দুনিয়াপ্রীতি সম্পর্কে সতর্কোপদেশ

নিশ্চয়ই ,আমি তোমাদেরকে দুনিয়া সম্পর্কে ভয় দেখিয়েছি। কারণ এটা মধুর ও মনোরম ,লোভ লালসায় ভরপুর এবং আশু ভোগ - বিলাসের জন্য এটা খুবই পছন্দনীয়। এটা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তু দ্বারা বিস্ময়ের উদ্রেক করে। এটা মিথ্যা আশায় অলঙ্কৃত এবং প্রবঞ্চনা ও ছলনায় সজ্জিত। এর আনন্দ - উপভোগ স্থায়ী নয় এবং এর যন্ত্রণাও এড়ানো যায় না।

দুনিয়া সম্পর্কে

দুনিয়া ছলনাময়ী ,ক্ষতিকর ,পরিবর্তনশীল ,নশ্বর ,ধ্বংসনীয় ,সর্বগ্রাসী ও বিনাশী। দুনিয়া যখন তাদের আকাঙ্খার চরমে পৌছে যারা এর দিকে ঝুকে পড়ে ও সুখ অনুভব করে তাদের অবস্থা এমন হয় যা মহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ

এটা পানির ন্যায় যা আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করি ,তাই পৃথিবীর বৃক্ষাদি উদগত হয় ,তারপর বিশুষ্কতা ও বিচূর্ণতার সময় আসে যখন বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায় । আল্লাহ সব বস্তুর ওপর ক্ষমতাশীল (কুরআন - ১৮:৪৫)

যে ব্যক্তি দুনিয়া থেকে আনন্দ উপভোগ করে একদিন তার চোখে অশ্রু আসবে এবং যে ব্যক্তি দুনিয়া থেকে আরাম - আয়েশ লাভ করে একদিন তার জীবনে অভাব - অনটন ও দুর্য়োগ নেমে আসবে। কেউ আরামের হালকা বৃষ্টি পেলে দুর্দশার প্রবল বৃষ্টি তার ওপর পতিত হবে। এ দুনিয়ার স্বভাব এমনই যে ,সকাল বেলায় যাকে সমর্থন করে বিকেল বেলায় তাকে আর চেনেনা। যদি এর একদিক মধুর ও মনোরম হয় তবে অন্যদিক কটু ও বেদনাদায়ক।

দুনিয়ার চাকচিক্য থেকে কেউ উপভোগ্য সংগ্রহ করলে তাকে এর দুর্যোগের দুর্দশাও মোকাবেলা করতে হয়। যে ব্যক্তি নিরাপত্তার পাখাতলে সন্ধ্যাবেলা অতিবাহিত করবে। সকাল বেলায় সে আতঙ্কের পাখার অগ্রভাগের পালকের নিচে থাকবে। দুনিয়া ছলনাময়ী এবং এতে যা কিছু আছে সবই ছলনামাত্র। এটা নশ্বর এবং এতে যা কিছু আছে সবই লয়প্রাপ্ত হবে। এর ভাণ্ডারে কল্যাণকর কোন রসদ নেই একমাত্র তাকওয়া ছাড়া। যে দুনিয়া থেকে স্বল্পমাত্রায় গ্রহণ করে সে অনেক কিছু সঞ্চয় করে যা (পরকালে) তাকে নিরাপত্তা প্রদান করবে এবং যে এটা থেকে প্রভূত পরিমাণ গ্রহণ করে সে মূলত তাই গ্রহণ করলো যা তাকে ধ্বংস করবে। তার সংগ্রহসমূহ ছেড়ে সে অচিরেই প্রস্থান করবে। কতলোক দুনিয়ার ওপর নির্ভর করেছিলো কিন্তু দুনিয়া তাদেরকে দুঃখ - দুর্দশায় নিপতিত করেছিলো ,কতলোক এতে শান্তি অনুভব করেছিলো ,ফলে তাদের অধঃপতন হয়েছিল ;কতলোক (দুনিয়ার সংগ্রহ দ্বারা) মর্যাদাকর অবস্থায় ছিল। কিন্তু তা তাদের হীনাবস্থায় ফেলেছে এবং কতলোক (দুনিয়ার সংগ্রহের জন্য) গর্বিত ছিল কিন্তু তা তাদেরকে অসম্মানজনক অবস্থায় ফেলেছিলো।

দুনিয়ার কর্তৃত্ব পরিবর্তনশীল এর জীবন নোংরা। এর মধুর পানিও কটু স্বাদযুক্ত। এর মধুরতা গন্ধরসের মত। এর খাদ্য দ্রব্য বিষযুক্ত। এর উপকরণাদি দুর্বল। এতে বেঁচে থাকা মৃত্যুতুল্য ;এতে স্বাস্থ্যবানও রুগ্নতুল্য। এর রাজত্ব কেড়ে নেয়া হবে। এর শক্তিধরগণ পরাজিত হবে এবং ধনবানগণ দুর্ভাগ্য দ্বারা আক্রান্ত হবে। এর প্রতিবেশীরা লুটেরা হবে।

তোমরা কি তোমাদের পূর্ববর্তীদের ঘরে বসবাস কর না ? তারা তোমাদের চেয়ে দীর্ঘজীবি ছিল ,তোমাদের চেয়ে বেশি অনুসন্ধানী ছিল ,তোমাদের চেয়ে বেশি আকাঙ্খী ছিল ,তোমাদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি ছিল এবং তাদের বিশাল সৈন্যবাহিনী ছিল। তোমরা কি দেখনি কিভাবে তারা (দুনিয়ার প্রতি) নিজেদেরকে আসক্ত করেছিলো এবং কিভাবে তারা (দুনিয়াকে) সব কিছুর উর্দ্ধে মনে করতো ? এরপর সব কিছু পরিত্যাগ করে তাদের চলে যেতে হয়েছিল এবং আখিরাতের পথ অতিক্রম করার জন্য তাদের না ছিল কোন রসদ ,না ছিল কোন বাহন।

তোমরা কি এ সংবাদ পাওনি যে ,তাদের জন্য যে কোন মুক্তিপণ দিতে দুনিয়া উদার ছিল অথবা যে কোন সমর্থন বা উত্তম সঙ্গী দিতে চেয়েছিল ? কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। বরং দুনিয়া তাদের বিপদাপন্ন করেছে ,দুর্যোগে এনে তাদেরকে অসাড় করে দিয়েছে ,আকস্মিক বিপর্যয় দ্বারা তাদের নিগৃহীত করেছে ,তাদের ধাক্কা মেরে উপুড় করে ফেলে দিয়েছে ,খুরের নিচে দলিত মথিত করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে সময়ের উত্থান - পতনের সহায়তা করেছে। তোমরা নিশ্চয়ই তাদের প্রতি দুনিয়ার অদ্ভুত আচরণ লক্ষ্য করেছ যারা এর কাছে গিয়েছিলো ,অর্জন করেছিলো ,উপযোজন করেছিলো এবং চিরতরে এটা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলো। দুনিয়া কি তাদেরকে ক্ষুধা - তৃষ্ণা ছাড়া অন্য কোন রসদ দিয়েছিলো ? এটা কি তাদেরকে সংকীর্ণ স্থান ছাড়া অন্যকোন বাসস্থান দিয়েছিলো ? এটা কি তাদেরকে অন্ধকার ছাড়া আলো এবং অনুশোচনা ছাড়া অন্য কিছু দিতে পেরেছিলো ? এটাই কি সেটা নয় যা তোমরা বেশি বেশি পেতে চাও ,যাতে তোমরা সন্তুষ্ট থাকো এবং যার প্রতি তোমরা লোভাতুর থাক ? কত নিকৃষ্ট এ আবাসস্থল যা তারা অনুমান করতে পারেনি এবং ওটা থেকে তাদের ভয়ের উদ্রেক হয়নি ?

মনে রেখো ,দুনিয়াকে পরিত্যাগ করে তোমাদেরকে চলে যেতেই হবে। তোমরা তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা যারা বলতো আমাদের চেয়ে শক্তিশালী আর কে আছে ” (কুরআন - ৪১ : ১৫) । তাদেরকেও কবরে নেয়া হয়েছিল কিন্তু সওয়ার হিসাবে নয়। তাদেরকে কবরে থাকতে দেয়া হয়েছিল কিন্তু মেহমান হিসাবে নয়। তাদের কবর মাটিতেই হয়েছিল। তাদের কাফন কাপড়েরই ছিল। পুরাতন হাড় তাদের প্রতিবেশী হয়েছিল। এটা এমন প্রতিবেশী যা আহবানে সাড়া দেয় না ,বিপদে সাহায্য করে না এবং কাদলে ফিরেও তাকায় না।

বৃষ্টি হলে তারা (কবরবাসী) আনন্দ অনুভব করে না এবং দুর্ভিক্ষে তারা হতাশ হয় না। তারা একত্রিত কিন্তু একে অপর থেকে আলাদা। তাঁরা একে অপরের নিকটবর্তী কিন্তু কেউ কাউকে দেখে না। তারা একে অপরের সাথে সাক্ষাত করে না। তারা সহীষ্ণু এবং কারো প্রতি কোন ঘৃণাবোধ নেই। তারা অজ্ঞ এবং তাদের দ্বারা কারো ক্ষতির সম্ভাবনা মরে গেছে। তাদের কাছ থেকে বিপদের কোন আশঙ্কা নেই এবং বিপদে তারা সাহায্য করতে পারবে এমন আশাও নেই। তারা পৃথিবীর পিঠকে (উপরিভাগ) পেটের (অভ্যন্তরভাগ) সাথে ,বিশালতাকে সংকীর্ণতার সাথে ,পরিজনকে (বেষ্টিত অবস্থা) একাকীত্বের সাথে এবং অন্ধকারকে আলোর সাথে বিনিময় করে নিয়েছে। তারা যেভাবে এ পৃথিবীতে এসেছিল সেভাবেই খালি পায়ে ও নিরাবরণ শরীরে চলে গেছে। তারা তাদের স্থায়ী জীবন ও আবাসে শুধুমাত্র তাদের আমল নিয়ে গেছে। আল্লাহ বলেনঃ

যেভাবে আমরা প্রথমে সৃষ্টি করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব ; (এটা এমন) এক ওয়াদা যা পূর্ণ করার দায়িত্ব আমাদের ,অবশ্যই আমরা তা করবো (কুরআন - ২১:১০৪) |

খোৎবা - ১১১

عجز الانسان عن إدراک الملائکة

هَلْ تُحِسُّ بِهِ إِذَا دَخَلَ مَنْزِلاً؟ أَمْ هَلْ تَراهُ إذا تَوَفَّى أَحَداً؟ بَلْ كَيْفَ يَتَوَفَّى الْجَنِينَ فِي بَطْنِ أُمِّهِ؟ أَيَلِجُ عَلَيْهِ مِنْ بَعْضِ جَوارِحِها؟ أَمْ الرُّوحُ أَجابَتْهُ بِإ ذْنِ رَبِّها؟ أَمْ هُوَ ساكِنٌ مَعَهُ فِي أَحْشَائِها كَيْفَ يَصِفُ إِلَهَهُ مَنْ يَعْجَزُ عَنْ صِفَةِ مَخْلُوقٍ مِثْلِهِ؟!

মৃত্যুদূতকে অনুভব করতে অক্ষমতা সম্পর্কে

আজরাইল যখন কোন ঘরে প্রবেশ করে তোমরা কি টের পাও ? যখন সে কারো রুহ নিয়ে চলে যায় তোমরা কি তাকে দেখতে পাও ? মায়ের গর্ভাশয়ের মধ্যে অবস্থিত ভ্রণের প্রাণবায়ু কী করে সে নিয়ে যায় ? সে কি (মায়ের) শরীরের কোন অংশ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে একে বের করে আনে ? না কি ,আল্লাহর অনুমতিক্রমে তার ডাকে রুহ সাড়া দেয় ? অথবা সে কি ভ্রণের সাথে মায়ের ভেতরেই থাকে ? যে ব্যক্তি এভাবে একটি বান্দার বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দিতে অক্ষম সে কী করে আল্লাহর বর্ণনা দেবে ?

খোৎবা - ১১২

التحذیر من حب الدنيا

وَ أُحَذِّرُكُمُ الدُّنْيَا فَإِنَّها مَنْزِلُ قُلْعَةٍ، وَ لَيْسَتْ بِدارِ نُجْعَةٍ، قَدْ تَزَيَّنَتْ بِغُرُورِها، وَ غَرَّتْ بِزِينَتِهَا، دارٌ هانَتْ عَلَى رَبِّها، فَخَلَطَ حَلالَها بِحَرامِها، وَ خَيْرَها بِشَرِّها، وَ حَيَاتَها بِمَوْتِها، وَ حُلْوَها بِمُرِّهَا، لَمْ يُصْفِها اللَّهُ تَعالَى لِأَوْلِيائِهِ، وَ لَمْ يَضِنَّ بِها عَلَى أَعْدائِهِ، خَيْرُها زَهِيدٌ، وَ شَرُّها عَتِيدٌ، وَ جَمْعُها يَنْفَدُ، وَ مُلْكُها يُسْلَبُ، وَ عامِرُها، يَخْرَبُ. فَما خَيْرُ دارٍ تُنْقَضُ نَقْضَ الْبِنأِ وَ عُمُرٍ يَفْنَى فِيهَا فَنَأَ الزَّادِ، وَ مُدَّةٍ تَنْقَطِعُ انْقِطَاعَ السَّيْرِ!

مواجهة الدنیا

اجْعَلُوا ما افْتَرَضَ اللَّهُ عَلَيْكُمْ مِنْ طَلَبِكُمْ، وَاسْأَلُوهُ مِنْ أَدَأِ حَقِّهِ ما سَأَلَكُمْ، وَ أَسْمِعُوا دَعْوَةَ الْمَوْتِ آذانَكُمْ قَبْلَ أَنْ يُدْعَى بِكُمْ. إِنَّ الزَّاهِدِينَ فِي الدُّنْيا تَبْكِي قُلُوبُهُمْ وَإِنْ ضَحِكُوا، وَ يَشْتَدُّ حُزْنُهُمْ وَ إِنْ فَرِحُوا، وَ يَكْثُرُ مَقْتُهُمْ أَنْفُسَهُمْ وَ إنِ اغْتَبَطُوا بِمَا رُزِقُوا.

قَدْ غابَ عَنْ قُلُوبِكُمْ ذِكْرُ الْآجالِ، وَ حَضَرَتْكُمْ كَوَاذِبُ الْآمالِ، فَصارَتِ الدُّنْيَا أَمْلَكَ بِكُمْ مِنَ الْآخِرَةِ، وَ الْعَاجِلَةُ أَذْهَبَ بِكُمْ مِنَ الْآجِلَةِ، وَ إِنَّما أَنْتُمْ إِخْوانٌ عَلَى دِينِ اللَّهِ، ما فَرَّقَ بَيْنَكُمْ إ لا خُبْثُ السَّرائِرِ وَ سُوءُ الضَّمائِرِ، فَلاتَوازَرُونَ، وَ لا تَناصَحُونَ، وَ لا تَباذَلُونَ، وَ لا تَوَادُّونَ. ما بالُكُمْ تَفْرَحُونَ بِالْيَسِيرِ مِنَ الدُّنْيَا تُدْرِكُونَهُ، وَ لا يَحْزُنُكُمُ الْكَثِيرُ مِنَ الْآخِرَةِ تُحْرَمُونَهُ؟ وَ يُقْلِقُكُمُ الْيَسِيرُ مِنَ الدُّنْيا يَفُوتُكُمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ ذَلِكَ فِي وُجُوهِكُمْ وَ قِلَّةِ صَبْرِكُمْ عَمّا زُوِيَ مِنْها عَنْكُمْ كَأَنَّها دَارُ مُقَامِكُمْ، وَ كَأَنَّ مَتاعَها باقٍ عَلَيْكُمْ وَ ما يَمْنَعُ أَحَدَكُمْ أَنْ يَسْتَقْبِلَ أَخاهُ بِما يَخَافُ مِنْ عَيْبِهِ إ لا مَخافَةُ أَنْ يَسْتَقْبِلَهُ بِمِثْلِهِ. قَدْ تَصافَيْتُمْ عَلَى رَفْضِ الْآجِلِ، وَ حُبِّ الْعَاجِلِ، وَ صارَ دِينُ أَحَدِكُمْ لُعْقَةً عَلَى لِسانِهِ، صَنِيعَ مَنْ قَدْ فَرَغَ مِنْ عَمَلِهِ، وَ أَحْرَزَ رِضَى سَيِّدِهِ.

দুনিয়াপ্রীতি সম্পর্কে সতর্কোপদেশ

এ দুনিয়া সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে সতর্ক করি কারণ এটা টলমলে আবাসস্থল। এটা জাবনার জন্য ঘর নয়। দুনিয়া ছলনা দ্বারা নিজেকে সুসজ্জিত করেছে এবং এ সাজ - সজ্জা দ্বারাই এটা প্রবঞ্চনা করে। এ টা এমন এক ঘর যা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিম্নমানের। সুতরাং তিনি এতে হালালের সাথে হারামের ,ভালোর সাথে মন্দের ,জীবনের সাথে মৃত্যুর এবং মধুরতার সাথে তিক্ততার সংমিশ্রণ করেছেন। আল্লাহ দুনিয়ার ভালোগুলো তার প্রেমিকদের জন্য অকাতরে দেননি এবং তাঁর শত্রুদের জন্য তাতে কার্পণ্যও করেননি । দুনিয়ার ভালোগুলো কষ্টে লভ্য। এর মন্দগুলো হাতের কাছে - সহজলভ্য। এর সঞ্চয় ক্রমশ কমে যাবে । এর কর্তৃত্ব কেড়ে নেয়া হবে। এর অধিবাসী নিঃসঙ্গ হয়ে পড়বে। যে ঘর পতনোন্মুখ তাতে কি শুভ নিহিত থাকতে পারে ? রসদ ফুরিয়ে গেলে যে বয়স নিঃশেষ হয় তাতে কি মঙ্গল নিহিত থাকতে পারে ? অথবা যে সময় ভ্রমণের মতো অতিক্রান্ত হয়ে যায় তাতে কি কল্যাণ থাকতে পারে ?

দুনিয়ার সাথে আচরণ পদ্ধতি

তোমাদের চাহিদার মধ্যে সেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে নাও যা আল্লাহ্ তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করেছেন। তিনি তোমাদেরকে যা করতে বলেছেন তা পরিপূর্ণ করার জন্য তার কাছেই প্রার্থনা কর। মৃত্যু দ্বারা আমন্ত্রিত হবার পূর্বেই মৃত্যুর ডাক শোনার জন্য তোমাদের কানকে প্রস্তুত কর। নিশ্চয়ই ,এ দুনিয়াতে সংযমীগণের হৃদয় ক্রন্দনরত থাকে। যদিও ( বাহ্যিকভাবে দেখা যায় ) তারা হাসে এবং তারা শোকাভিভূত থাকে। যদিও তাদেরকে আনন্দিত মনে হয়। তাদের আত্ম - ঘৃণা অত্যধিক যদিও যে জীবনোপকরণ তাদেরকে ম ঞ্জুর করা হয়েছে তার জন্য তারা হিংসার পাত্র। যখন মিথ্যা আশা তোমাদের মনে জাগে তখন তোমাদের হৃদয় থেকে মৃত্যুর স্মরণ তিরোহিত হয়। সুতরাং পরকাল অপেক্ষা ইহকাল তোমাদের ওপর অধিক প্রভুত্ব করছে এবং আশু ফলাফল ( লাভ ) তোমাদেরকে দূরবর্তী লাভ ( পরকাল ) থেকে সরিয়ে দিয়েছে । আল্লাহর দ্বীনে তোমরা ভ্রাতা। নোংরা স্বভাব ও মন্দ মানসিকতা তোমাদেরকে আলাদা করে রেখেছে। ফলত তোমরা একে অপরের বোঝা বহন করনা ,একে অপরকে উপদেশ দাওনা ,একে অপরের জন্য ব্যয় করনা এবং একে অপরকে ভালোবাস না।

তোমাদের এ কী অবস্থা ? এ দুনিয়া থেকে যা কিছু সামান্য সংগ্রহ করেছ তাতেই তোমরা সন্তোষ অনুভব কর অথচ পরকালের অনেক কিছু থেকে তোমরা বঞ্চিত হয়েও শোকাতুর হও না। দুনিয়ার সামান্য কিছু হারালে তোমরা এত বেদনাতুর হও যা তোমাদের মুখেই প্রতিভাত হয় ( মুখ মলিন হয় ) ;এত অধৈর্য হয়ে পড় যে ,মনে হয় দুনিয়া তোমাদের স্থায়ী আবাস এবং দুনিয়ার সম্পদ চিরদিন তোমাদের সঙ্গে থাকবে। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি নিজের ত্রুটি - বিচূতির জন্য ভীত সে তা তার সাথীর কাছে প্রকাশ করতে কোন কিছুই তাকে বাধা দেয় না। সে শুধুমাত্র ভয় করে যে ,তার সাথীও অনুরূপ ত্রুটিবিচ্যুতি প্রকাশ করবে কিনা। পরকালকে ত্যাগ করে ইহকালকে ভালোবাসার জন্য তোমরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছো । তোমাদের দ্বীন কেবলমাত্র জিহবার লেহনে পরিণত হয়েছে। এটা সে ব্যক্তির কাজের মতো যে কাজ সম্পন্ন করেছে এবং তার মনিবের সন্তুষ্টি অর্জন করেছে।

খোৎবা - ১১৩

حمد الله و الشهادة بالتّوحید

الْحَمْدُ لِلَّهِ الْواصِلِ الْحَمْدَ بِالنِّعَمِ، وَ النِّعَمَ بِالشُّكْرِ. نَحْمَدُهُ عَلى آلائِهِ، كَما نَحْمَدُهُ عَلى بَلاَئِهِ. وَ نَسْتَعِينُهُ عَلى هَذِهِ النُّفُوسِ الْبِطأِ عَما أُمِرَتْ بِهِ، السِّرَعِ إِلَى ما نُهِيَتْ عَنْهُ. وَ نَسْتَغْفِرُهُ ممّا أَحاطَ بِهِ عِلْمُهُ، وَ أَحْصاهُ كِتابُهُ، عِلْمٌ غَيْرُ قاصِرٍ، وَ كِتابٌ غَيْرُ مُغادِرٍ، وَ نُؤْمِنُ بِهِ إِيمانَ مَنْ عَايَنَ الْغُيُوبَ، وَ وَقَفَ عَلَى الْمَوْعُودِ، إِيمَانا نَفَى إِخْلاَصُهُ الشِّرْكَ، وَ يَقِينُهُ الشَّكَّ، وَ نَشْهَدُ أَنْ لا إلهَ إلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ، وَ أَنَّ مُحَمَّداصلى‌الله‌عليه‌وآله‌وسلم عَبْدُهُ وَ رَسُولُهُ، شَهادَتَيْنِ تُصْعِدانِ الْقَوْلَ، وَ تَرْفَعانِ الْعَمَلَ. لا يَخِفُّ مِيزانٌ تُوضَعانِ فِيهِ، وَ لا يَثْقُلُ مِيزَانٌ تُرْفَعانِ مِنْهُ.

الوصیة بالتقوی

أُوصِيكُمْ عِبَادَ اللَّهِ بِتَقْوَى اللَّهِ الَّتِي هِيَ الزّادُ، وَ بِها الْمَعَاذُ، زادٌ مُبْلِغٌ، وَ مَعَاذٌ مُنْجِحٌ، دَعا إِلَيْها أَسْمَعُ دَاعٍ، وَ وَعاها خَيْرُ واعٍ، فَأَسْمَعَ دَاعِيها، وَ فازَ واعِيها. عِبادَ اللَّهِ إِنَّ تَقْوَى اللَّهِ حَمَتْ أَوْلِيَأَ اللَّهِ مَحارِمَهُ، وَ أَلْزَمَتْ قُلُوبَهُمْ مَخافَتَهُ حَتَّى أَسْهَرَتْ لَيَالِيَهُمْ، وَ أَظْمَأَتْ هَواجِرَهُمْ، فَأَخَذُوا الرَّاحَةَ بِالنَّصَبِ، وَ الرِّيَّ بِالظَّمَإِ، وَ اسْتَقْرَبُوا الْأَجَلَ، فَبادَرُوا الْعَمَلَ، وَ كَذَّبُوا الْأَمَلَ، فَلاَحَظُوا الْأَجَلَ.

ثُمَّ إِنَّ الدُّنْيا دارُ فَنأٍ وَ عنأءٍ، غِيَرٍ وَ عِبَرٍ، فَمِنَ الْفَنَأِ أَنَّ الدَّهْرَ مُوتِرٌ قَوْسَهُ، لا تُخْطِئُ سِهامُهُ، وَ لا تُؤْسَى جِرَاحُهُ، يَرْمِي الْحَيَّ بِالْمَوْتِ، وَ الصَّحِيحَ بِالسَّقَمِ وَ النَّاجِيَ بِالْعَطَبِ، آكِلٌ لاَ يَشْبَعُ، وَ شارِبٌ لا يَنْقَعُ، وَ مِنَ الْعَنأِ أَنَّ الْمَرْءَ يَجْمَعُ ما لا يَأْكُلُ، وَ يَبْنِي مَا لاَ يَسْكُنُ، ثُمَّ يَخْرُجُ إ لَى اللَّهِ تَعالى لا مالاً حَمَلَ، وَ لا بِنَأً نَقَلَ! وَ مِنْ غِيَرِها أَنَّكَ تَرَى الْمَرْحُومَ مَغْبُوطا، وَ الْمَغْبُوطَ مَرْحُوما، لَيْسَ ذَلِكَ إ لا نَعِيما زَلَّ، وَ بُؤْساً نَزَلَ وَ مِنْ عِبَرِها أَنَّ الْمَرْءَ يُشْرِفُ عَلَى أَمَلِهِ، فَيَقْتَطِعُهُ حُضُورُ أَجَلِهِ، فَلا أَمَلٌ يُدْرَكُ، وَ لا مُؤَمَّلٌ يُتْرَكُ، فَسُبْحانَ اللَّهِ ما أَعَزَّ سُرُورَها، وَ أَظْمَأَ رِيَّها، وَ أَضْحى فَيْئَها، لا جَأٍ يُرَدُّ، وَ لا مَاضٍ يَرْتَدُّ، فَسُبْحَانَ اللَّهِ، ما أَقْرَبَ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ لِلَحاقِهِ بِهِ، وَ أَبْعَدَ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ لاِنْقِطَاعِهِ عَنْهُ!

إِنَّهُ لَيْسَ شَيْءٌ بِشَرٍّ مِنَ الشَّرِّ إِلا عِقَابُهُ، وَ لَيْسَ شَيْءٌ بِخَيْرٍ مِنَ الْخَيْرِ إِلا ثَوَابُهُ، وَ كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الدُّنْيا سَماعُهُ أَعْظَمُ مِنْ عِيانِهِ، وَ كُلُّ شَيْءٍ مِنَ الْآخِرَةِ عِيانُهُ أَعْظَمُ مِنْ سَماعِهِ. فَلْيَكْفِكُمْ مِنَ الْعِيانِ السَّمَاعُ، وَ مِنَ الْغَيْبِ الْخَبَرُ، وَ اعْلَمُوا أَنَّ ما نَقَصَ مِنَ الدُّنْيَا وَ زادَ فِي الْآخِرَةِ خَيْرٌ مِمَّا نَقَصَ مِنَ الْآخِرَةِ وَ زادَ فِي الدُّنْيا، فَكَمْ مِنْ مَنْقُوصٍ رابِحٍ، وَ مَزِيدٍ خاسِرٍ! إِنَّ الَّذِي أُمِرْتُمْ بِهِ

أَوْسَعُ مِنَ اَلَّذِي نُهِيتُمْ عَنْهُ. وَ مَا أُحِلَّ لَكُمْ أَكْثَرُ مِمَّا حُرِّمَ عَلَيْكُمْ. فَذَرُوا مَا قَلَّ لِمَا كَثُرَ، وَ مَا ضَاقَ لِمَا اِتَّسَعَ. قَدْ تَكَفَّلَ لَكُمْ بِالرِّزْقِ وَ أُمِرْتُمْ بِالْعَمَلِ؛ فَلاَ يَكُونَنَّ اَلْمَضْمُونُ لَكُمْ طَلَبُهُ أَوْلَى بِكُمْ مِنَ اَلْمَفْرُوضِ عَلَيْكُمْ عَمَلُهُ، مَعَ أَنَّهُ وَ اَللَّهِ لَقَدِ اِعْتَرَضَ اَلشَّكُّ، وَ دَخِلَ اَلْيَقِينُ، حَتَّى كَأَنَّ اَلَّذِي ضُمِنَ لَكُمْ قَدْ فُرِضَ عَلَيْكُمْ، وَ كَأَنَّ اَلَّذِي قَدْ فُرِضَ عَلَيْكُمْ قَدْ وُضِعَ عَنْكُمْ. فَبَادِرُوا اَلْعَمَلَ، وَ خَافُوا بَغْتَةَ اَلْأَجَلِ، فَإِنَّهُ لاَ يُرْجَى مِنْ رَجْعَةِ اَلْعُمُرِ مَا يُرْجَى مِنْ رَجْعَةِ اَلرِّزْقِ. مَا فَاتَ اَلْيَوْمَ مِنَ اَلرِّزْقِ رُجِيَ غَداً زِيَادَتُهُ، وَ مَا فَاتَ أَمْسِ مِنَ اَلْعُمُرِ لَمْ يُرْجَ اَلْيَوْمَ رَجْعَتُهُ. اَلرَّجَاءُ مَعَ اَلْجَائِي، وَ اَلْيَأْسُ مَعَ اَلْمَاضِي. فَ‍( اِتَّقُوا اَللّهَ حَقَّ تُقاتِهِ وَ لا تَمُوتُنَّ إِلاّ وَ أَنْتُمْ مُسْلِمُونَ ) .

সংযম , আল্লাহর ভয় ও পরকালের রসদ সম্পর্কে

প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর যিনি নেয়ামতকে প্রশংসার অনুবর্তী করেছেন এবং কৃতজ্ঞতাকে নেয়ামতের অনুবর্তী করেছেন। আমরা তার প্রশংসা করি ,তার নেয়ামত ও পরীক্ষার জন্য। আমরা তার সাহায্য প্রার্থনা করি সেসব হৃদয়ের বিরুদ্ধে যারা তার আদেশ পালনে বিলম্ব করে এবং তিনি যা নিষিদ্ধ করেছেন তার দিকে দ্রুত এগিয়ে যায়। আমরা তার ক্ষমা ভিক্ষা করি তা থেকে যা তার জ্ঞান ঢেকে রাখে। অথচ তার দলিল জ্ঞান সংরক্ষণ করে যাতে কোন কিছু বাদ পড়ে না। আমরা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি সেই ব্যক্তির বিশ্বাসের মতো যে অজানাকে দেখেছে ও প্রতিশ্রুত পুরস্কার অর্জন করেছে ;যার বিশ্বাসের পবিত্রতা আল্লাহর অংশীদারিত্বের বিশ্বাস থেকে তাকে দূরে রেখেছে এবং যার দৃঢ় প্রত্যয় সকল সংশয় দূরীভূত করেছে।

আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে ,আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি এক ,তার কোন অংশীদার নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসূল। এ দুটো ঘোষণা মনুষের কথা ও আমলকে সমুচ্চ করে। যে মিজানে (পাল্লায়) এ দুটো ঘোষণা রাখা হবে তা কখনো হালকা হবে না ,আবার যে মিজান থেকে এ দুটো সরিয়ে নেয়া হবে তা কখনো ভারী হবে না।

তাকওয়ার নির্দেশ

হে আল্লাহর বান্দাগণ ,আমি তোমাদের উপদেশ দিচ্ছি। আল্লাহকে ভয় করার জন্য যা তোমাদের পরকালের রসদ এবং এটা নিয়েই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। এ রসদ তোমাদেরকে গন্তব্যস্থানে পৌছে দেবে এবং তোমাদের প্রত্যাবর্তন সফল হবে। সে - ই সর্বোত্তম যে মানুষকে এর দিকে আহবান করে শোনাতে সক্ষম হয়েছে এবং সর্বোত্তম শ্রোতা এটা শুনেছে। সুতরাং আহ্বানকারী ঘোষণা করেছে এবং শ্রোতা শুনেছে ও সংরক্ষণ করেছে।

হে আল্লাহর বান্দাগণ ,নিশ্চয়ই আল্লাহর ভয় আল্লাহর প্রেমিককে হারাম জিনিস থেকে রক্ষা করেছে এবং তাঁর ভয় তাদের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ,যে কারণে তারা রাত্রি কাটায় বিনিদ্র অবস্থায় ও দিবস কাটায় তৃষ্ণায়। সুতরাং তারা বিপদের মাধ্যমেই আরাম ও তৃষ্ণার মাধ্যমেই সুমিষ্ট পানি লাভ করে। তারা মৃত্যুকে অতি নিকটে মনে করে এবং সে কারণে উত্তম আমলের দিকে দ্রুত এগিয়ে যায়। তারা তাদের কামনা - বাসনাকে বাতিল করে দিয়েছে এবং সে জন্য মৃত্যুকে তাদের দৃষ্টিতে রাখে।

এ দুনিয়া ধ্বংসের ,দুর্ভোগের ,পরিবর্তনের ও শিক্ষার ক্ষেত্র। ধ্বংসের এজন্য যে ,সময়ের ধনুক প্রস্তুত আছে ,তার তীর কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না ;তার ক্ষত শুকায় না ;তা মৃত্যু দ্বারা জীবিতকে ,পীড়া দ্বারা স্বাস্থ্যবানকে ,দুর্দশা দ্বারা নিরাপদকে আক্রমণ করে। দুনিয়া এমন এক ভক্ষক যে কখনো তৃপ্ত হয় না এবং এমন পানকারী যার তৃষ্ণ: কখনো নিবারিত হয় না। দুর্ভোগের এজন্য যে ,একজন মানুষ যতটুকু সংগ্রহ করে ততটুকু সে খায় না এবং যা নির্মাণ করে তাতে সে বসবাস না করেই আল্লাহর কাছে চলে যায় অথচ সে তার সম্পদ ও ইমারত সেখানে স্থানান্তর করতে পারে না।

পরিবর্তন এজন্য যে ,এখানে একজন শোচনীয় অবস্থার লোকও ঈর্ষার পাত্র হয়ে যায় ,আবার একজন ঈর্ষার পাত্রও শোচনীয় অবস্থায় পড়ে। এটা এ কারণে যে ,তার সম্পদ চলে গেছে এবং তার দুর্ভাগ্য এসে পড়েছে। শিক্ষার এজন্য যে ,একজন লোক তার কামনা - বাসনার দ্বারপ্রান্তে পৌছানোর সঙ্গে সঙ্গ মৃত্যু হাজির হয়ে দুনিয়া থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় ;তখন তার কামনার বস্তুও অর্জিত হয় না এবং তাকেও ছেড়ে দেয়া হয় না। হায় আল্লাহ ,দুনিয়ার আনন্দ কত ছলনাময়ী ,এর পানীয় কত তৃষ্ণা উদ্দীপক এবং এর ছায়া কত রৌদ্রোজ্জ্বল। যে হাজির হয় (মৃত্যু) তাকে ফেরত দেয়া যায় না এবং যে চলে যায় সে ফিরে আসে না। হায় আল্লাহ ,জীবিতগণ মৃতদের কতই না নিকটবর্তী ,কারণ জীবিতরা অতি শীঘ্রই মৃতদের সাথে সাক্ষাত করবে এবং মৃতরা জীবিতদের থেকে কতই না দূরে কারণ তারা জীবিতদেরকে ছেড়ে চলে গেছে।

নিশ্চয়ই ,পাপের শাস্তি ব্যতীত পাপ অপেক্ষা কদর্য আর কিছু নেই এবং কল্যাণের পুরষ্কার ব্যতীত কল্যাণ অপেক্ষা উত্তম কিছু নেই। ইহকালে যা কিছু শ্রুত হয় তা দৃষ্ট বস্তু অপেক্ষা ভালো এবং পরকালে যা কিছু দৃষ্ট হয় তা শ্রুত বস্তু অপেক্ষা ভালো। সুতরাং তোমরা দেখা অপেক্ষা শ্রুতি দ্বারা এবং অজানা বিষয়ের সংবাদ দ্বারা নিজেদেরকে তুষ্ট করতে পার। জেনে রাখো ,যে বস্তু দুনিয়াতে স্বল্প অথচ পরকালে অধিক তা সেই বস্তু অপেক্ষা উত্তম যা দুনিয়াতে অধিক অথচ পরকালে স্বল্প। এমন অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে স্বল্পতা লাভজনক এবং আধিক্য লোকসানদায়ক ।

নিশ্চয়ই ,তোমাদেরকে যে কাজ করতে আদেশ দেয়া হয়েছে তা নিষিদ্ধ কাজ থেকে প্রশস্ত এবং তোমাদের জন্য যা হালাল করা হয়েছে তা হারাম অপেক্ষা অধিক । কাজেই যা কম তা ত্যাগ কর এবং যা বেশি তা কর ,যা সীমিত তা ত্যাগ কর এবং যা বিশাল তা কর। আল্লাহ তোমাদের জীবিকার নিশ্চয়তা দিয়েছেন এবং আমল করার জন্য আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং যে বিষয়ে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে তা লাভের চেষ্টা কখনো সে বিষয়ের ওপর অগ্রাধিকার পেতে পারে না যা সম্পাদন করতে আদেশ দেয়া হয়েছে।

কিন্তু আল্লাহর কসম ,অধিকাংশ ক্ষেত্রে অবস্থা এমন হয়েছে যে ,সংশয় অভিভূত করে ফেলেছে ও নিশ্চয়তা চূর্ণ - বিচূর্ণ করা হয়েছে এবং মনে হয় ,যে বিষয়ে তোমাদেরকে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে তা তোমাদের কাছে বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে আর যা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা যেন তোমাদের কাছ থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। সুতরাং আমলে সালেহার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাও এবং মৃত্যুর আকস্মিকতাকে ভয় কর ;কারণ জীবিকা ফিরে পাওয়া যেভাবে আশা করতে পার ,বয়স ফিরে পাওয়াকে সেভাবে আশা করতে পার না। জীবিকা থেকে আজ যা হারিয়ে যায় আগামীকাল বর্ধিত আকারে তা পেতে পার কিন্তু গতকাল বয়স থেকে যা হারিয়েছ আজ আর তার প্রত্যাসন আশা করা যায় না। যা আসবে শুধু তার জন্যই আশা ,যা চলে গেছে তার জন্য শুধু হতাশা। সুতরাং , আল্লাহকে ভয় কর ,যেভাবে ভয় করা কর্তব্য এবং মুসলিম না হওয়া পর্যন্ত তোমরা মরো না। ” (কুরআন - ৩ : ১০২)

খোৎবা - ১১৪

الدعاء لنزول الغیث

اَللَّهُمَّ قَدِ اِنْصَاحَتْ جِبَالُنَا (حبالنا)، وَ اِغْبَرَّتْ أَرْضُنَا، وَ هَامَتْ دَوَابُّنَا، وَ تَحَيَّرَتْ فِي مَرَابِضِهَا، وَ عَجَّتْ عَجِيجَ اَلثَّكَالَى عَلَى أَوْلاَدِهَا، وَ مَلَّتِ اَلتَّرَدُّدَ فِي مَرَاتِعِهَا، وَ اَلْحَنِينَ إِلَى مَوَارِدِهَا(و الحقن) ! اَللَّهُمَّ فَارْحَمْ أَنِينَ اَلْآنَّةِ، وَ حَنِينَ اَلْحَانَّةِ! اَللَّهُمَّ فَارْحَمْ حَيْرَتَهَا فِي مَذَاهِبِهَا، وَ أَنِينَهَا فِي مَوَالِجِهَا ! اَللَّهُمَّ خَرَجْنَا إِلَيْكَ حِينَ اِعْتَكَرَتْ عَلَيْنَا حَدَابِيرُ اَلسِّنِينَ، وَ أَخْلَفَتْنَا مَخَايِلُ اَلْجُودِ؛ فَكُنْتَ اَلرَّجَاءَ لِلْمُبْتَئِسِ، وَ اَلْبَلاَغَ لِلْمُلْتَمِسِ. نَدْعُوكَ حِينَ قَنَطَ اَلْأَنَامُ، وَ مُنِعَ اَلْغَمَامُ، وَ هَلَكَ اَلسَّوَامُ، أَلاَّ تُؤَاخِذَنَا بِأَعْمَالِنَا، وَ لاَ تَأْخُذَنَا بِذُنُوبِنَا. وَ اُنْشُرْ عَلَيْنَا رَحْمَتَكَ بِالسَّحَابِ اَلْمُنْبَعِقِ، وَ اَلرَّبِيعِ اَلْمُغْدِقِ، وَ اَلنَّبَاتِ اَلْمُونِقِ سَحّاً وَابِلاً، تُحْيِي بِهِ مَا قَدْ مَاتَ، وَ تَرُدُّ بِهِ مَا قَدْ فَاتَ. اَللَّهُمَّ سُقْيَا مِنْكَ مُحْيِيَةً مُرْوِيَةً، تَامَّةً عَامَّةً، طَيِّبَةً مُبَارَكَةً، هَنِيئَةً مَرِيعَةً، زَاكِياً نَبْتُهَا، ثَامِراً فَرْعُهَا، نَاضِراً وَرَقُهَا، تُنْعِشُ بِهَا اَلضَّعِيفَ مِنْ عِبَادِكَ، وَ تُحْيِي بِهَا اَلْمَيِّتَ مِنْ بِلاَدِكَ! اَللَّهُمَّ سُقْيَا مِنْكَ تُعْشِبُ بِهَا نِجَادُنَا، وَ تَجْرِي بِهَا وِهَادُنَا، وَ يُخْصِبُ بِهَا جَنَابُنَا، وَ تُقْبِلُ بِهَا ثِمَارُنَا، وَ تَعِيشُ بِهَا مَوَاشِينَا، وَ تَنْدَى بِهَا أَقَاصِينَا، وَ تَسْتَعِينُ بِهَا ضَوَاحِينَا؛ مِنْ بَرَكَاتِكَ اَلْوَاسِعَةِ، وَ عَطَايَاكَ اَلْجَزِيلَةِ، عَلَى بَرِيَّتِكَ اَلْمُرْمِلَةِ، وَ وَحْشِكَ اَلْمُهْمَلَةِ. وَ أَنْزِلْ عَلَيْنَا سَمَاءً مُخْضِلَةً، مِدْرَاراً هَاطِلَةً(باطلة) ، يُدَافِعُ اَلْوَدْقُ مِنْهَا اَلْوَدْقَ، وَ يَحْفِزُ اَلْقَطْرُ مِنْهَا اَلْقَطْرَ، غَيْرَ خُلَّبٍ بَرْقُهَا، وَ لاَ جَهَامٍ عَارِضُهَا، وَ لاَ قَزَعٍ رَبَابُهَا، وَ لاَ شَفَّانٍ ذِهَابُهَا، حَتَّى يُخْصِبَ لِإِمْرَاعِهَا اَلْمُجْدِبُونَ، وَ يَحْيَا بِبَرَكَتِهَا اَلْمُسْنِتُونَ، فَإِنَّكَ تُنْزِلُ اَلْغَيْثَ مِنْ بَعْدِ مَا قَنَطُوا وَ تَنْشُرُ رَحْمَتَكَ وَ أَنْتَ اَلْوَلِيُّ اَلْحَمِيدُ.

বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা

হে আমার আল্লাহ ,আজ আমাদের পর্বতগুলো শুকিয়ে গেছে এবং আমাদের মাটি ধুলাময় হয়ে গেছে। আমাদের গবাদি পশু তৃষ্ণার্তা এবং তাদের বেষ্টনীর মধ্যে হতাশাগ্রস্থ হয়ে আছে। ওরা সন্তান হারা মায়ের মতো আর্তনাদ করছে। ওরা চারণভূমিতে যেতে ক্লান্তি অনুভব করছে এবং ওরা প্রস্রবণের দিকে যেতে উদগ্রীব। হে আমার আল্লাহ ,ওদের আর্তনাদ ও আকুল আকাঙ্খার প্রতি দয়া কর ।

হে আমার আল্লাহ ,ওদের হতাশার প্রতি দয়া কর। হে আমার আল্লাহ ,আমরা তোমার কাছে এসেছি। যখন অনেক বছরের খরা কৃশ - উটপালের মত আমাদের ওপর ভিড় করেছে এবং যখন বৃষ্টির মেঘ আমাদেরকে পরিত্যাগ করেছে। তুমিই আক্রান্তের আশা - ভরসা এবং তুমিই যাচনাকারীর সাহায্যদাতা। আমরা তোমাকে এমন এক সময়ে ডাকছি। যখন মানুষ সকল আশা হারিয়ে ফেলেছে ,আকাশে মেঘ নেই এবং গবাদি পশু মরছে। আমাদের কাজের জন্য আমাদেরকে পাকড়াও করো না ,আমাদের পাপের জন্য আমাদেরকে ফাঁদে ফেলে ধরো না এবং বৃষ্টির মেঘের মাধ্যমে আমাদের ওপর তোমার রহমত বর্ষণ করা যাতে ফলবান বৃক্ষের ফুল বিকশিত হয় ,বিস্ময় - বিহবল করে তোলে এমন উদ্ভিদ গজায় ,বিশুষ্ক প্রান্তর প্রাণ ফিরে পায় ও যা হারিয়ে গেছে তা ফিরে আসে ।

হে আমার আল্লাহ ,তোমার কাছ থেকে আমাদের বৃষ্টি দাও যা হবে প্রাণদায়ক ,সন্তুষ্টিদায়ক ,ব্যাপক ,চতুর্দিকে ছড়ানো ,পরিশুদ্ধ ,সুখদায়ক ,পর্যাপ্ত ও প্রাণসঞ্চারক। (এমন বৃষ্টি প্রদান কর) যেন বৃক্ষ - লতাদি ,তৃণ - গুলাদি ও শস্য ক্ষেত সমৃদ্ধ হয় ,গাছের শাখা ফলপূর্ণ হয় এবং পাতা সবুজ হয়। তোমার বান্দাদের মধ্যে দুর্বলকে তুমি বৃষ্টি দ্বারা পুষ্ট কর এবং মৃত নগরসমূহে প্রাণের সঞ্চার করা।

হে আমার আল্লাহ ,তোমার কাছ থেকে আমাদেরকে বৃষ্টি দাও যাতে আমাদের উচু ভূমি সবুজ শাকসবজিতে ঢেকে যায় ,স্রোত প্রবাহ পায় ,আমাদের মাঠ সবুজ ঘাসে ভরে যায় ,আমাদের ফল সতেজ হয়ে ওঠে ,আমাদের গবাদি - পশু বৃদ্ধি পায় ,আমাদের সুদূর প্রসারিত প্রান্তর জল - বিধৌত হয় এবং আমাদের শুষ্ক এলাকা উপকৃত হয়। তোমার দুর্দশাগ্রস্থ পৃথিবী ও প্রাণীকুলকে তোমার অগণিত অনুদান ও সীমাহীন নেয়ামত দ্বারা রক্ষা কর। আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ কর যা হবে নিষিক্ত ,নিরবচ্ছিন্ন ও ভারী এবং তা এমনভাবে বর্ষণ কর যেন এক পশিলা আরেক পশিলার সাথে সংঘর্ষ করে এবং এক ফোটা অন্য ফোটাকে ধাক্কা দেয়। আকাশে চমকানো বিজলি যেন প্রবঞ্চক না হয় ,বৃষ্টিহীনতার ধৃষ্টতা না দেখায় ,সাদা মেঘ যেন ছড়িয়ে না পড়ে ,বৃষ্টি যেন হালকা না হয় ,দুর্ভিক্ষ - পীড়িতরা প্রচুর শাক - সবজি দ্বারা বাঁচতে পারে এবং খরা - পীড়িত এলাকায় পরম সুখ ও প্রাণের সঞ্চার হয়। নিশ্চয়ই ,মানুষ হতাশ হবার পর তুমি বৃষ্টি বর্ষণ কর এবং তোমার রহমত ছড়িয়ে দাও যেহেতু তুমিই অভিভাবক ও প্রশংসিত।

খোৎবা - ১১৫

خصائص النبیصلى‌الله‌عليه‌وآله‌وسلم

أَرْسَلَهُ دَاعِيا إِلَى الْحَقِّ، وَ شَاهِدا عَلَى الْخَلْقِ، فَبَلَّغَ رِسالاتِ رَبِّهِ غَيْرَ و انٍ وَ لا مُقَصِّرٍ، وَ جاهَدَ فِي اللَّهِ أَعْدأَهُ غَيْرَ واهِنٍ وَ لا مُعَذِّرٍ. إِمامُ مَنِ اتَّقَى، وَ بَصَرُ مَنِ اهْتَدَى.

نصیحة الأحبة

مِنْها : وَ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ مِمَّا طُوِيَ عَنْكُمْ غَيْبُهُ إذن لَخَرَجْتُمْ إِلَى الصُّعُداتِ، تَبْكُونَ عَلى أَعْمَالِكُمْ، وَ تَلْتَدِمُونَ عَلى أَنْفُسِكُمْ، وَ لَتَرَكْتُمْ أَمْوالَكُمْ لا حَارِسَ لَها، وَ لا خَالِفَ عَلَيْها، وَ لَهَمَّتْ كُلَّ امْرِئٍ مِنْكُمْ نَفْسُهُ، لا يَلْتَفِتُ إلى غَيْرِها، وَ لَكِنَّكُمْ نَسِيتُمْ ما ذُكِّرْتُمْ، وَ أَمِنْتُمْ مَا حُذِّرْتُمْ، فَتاهَ عَنْكُمْ رَأْيُكُمْ وَ تَشَتَّتَ عَلَيْكُمْ أَمْرُكُمْ.

صفات الشهداء من أصحابه

لَوَدِدْتُ أَنَّ اللَّهَ فَرَّقَ بَيْنِي وَ بَيْنَكُمْ، وَ أَلْحَقَنِي بِمَنْ هُوَ أَحَقُّ بِي مِنْكُمْ. قَوْمٌ وَ اللَّهِ مَيامِينُ الرَّأْيِ، مَراجِيحُ الْحِلْمِ، مَقاوِيلُ بِالْحَقِّ، مَتارِيكُ لِلْبَغْيِ، مَضَوْا قُدُما عَلَى الطَّرِيقَةِ، وَ أَوْجَفُوا عَلَى الْمَحَجَّةِ، فَظَفِرُوا بِالْعُقْبَى الدَّائِمَةِ، وَ الْكَرامَةِ الْبارِدَةِ.

الأخبار عن وحشیة الحجاج بن یوسف

أَما وَ اللَّهِ لَيُسَلَّطَنَّ عَلَيْكُمْ غُلامُ ثَقِيفٍ الذَّيّالُ الْمَيّالُ، يَأْكُلُ خَضِرَتَكُمْ، وَ يُذِيبُ شَحْمَتَكُمْ، إِيهٍ أَبا وَذَحَةَ!(الْوَذَحةُ الْخنْفَسأءُ. وَ هذَا الْقَولُ يُومِىُ بِهِ إلَى الْحَجَاجِ، وَ لَهُ مَعَ الْوَذَحِة حَدِيثْ لَيْسَ هذا مَوْضِعَ ذِكْرِهِ) .

নবীর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে

আল্লাহ রাসূলকে (সা.) সত্যের দিকে আহবায়ক এবং বান্দার সাক্ষী হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন। রাসূল (সা.) আল্লাহর বাণী কোন প্রকার অলসতা ও ত্রুটি - বিচূতি ছাড়া মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন এবং তিনি কোন প্রকার অবসন্নতা ও ওজর ছাড়া আল্লাহর জন্য তাঁর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। তাকওয়ায় তিনি ছিলেন সকলের অগ্রণী এবং যারা হেদায়েত লাভ করেছিল তাদের সকলের চেয়ে তার প্রত্যক্ষকরণ ক্ষমতা ছিল অধিক ।

তার নিজের লোকদের সম্পর্কে অনুযোগ

গুপ্ত বিষয় সম্পর্কে আমি যা জানি ,যা তোমাদের কাছে আবরিত (গোপন) রাখা হয়েছে তা যদি তোমরা জানতে পারতে তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের কর্মকাণ্ডের জন্য প্রকাশ্যে ক্রন্দন করতে এবং শোকে নিজের শরীরে আঘাত করতে। এমনকি কোন পাহারা ও বিকল্প ছাড়াই তোমাদের সম্পদ পরিত্যাগ করতে। তখন তোমরা প্রত্যেকেই অন্যের প্রতি মনোযোগ ছেড়ে নিজের প্রতি যত্নশীল হতে। কিন্তু যা তোমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছিল তোমরা তা ভুলে গেছ এবং যে বিষয়ে তোমাদের সতর্ক করা হয়েছিল তা থেকে তোমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করেছিলে । ফলে তোমাদের ধ্যান - ধারণা বিপথে চলে গেছে এবং তোমাদের কর্মকাণ্ড বিশৃঙ্খল হয়ে গেছে।

তার সঙ্গীসাথীদের মধ্যে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সম্পর্কে

আমি ইচ্ছা পোষণ করি আল্লাহ যেন আমার ও তোমাদের মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করেন এবং আমাকে এমন লোক দেন যাদের আমার সাথে থাকার অধিকার তোমাদের চেয়ে বেশি আছে। আল্লাহর কসম ,তারা হবে এমন যারা সুখদায়ক ধ্যান - ধারণার ,সুগভীর প্রজ্ঞাবান ও সত্য ভাষণকারী লোক। তারা বিদ্রোহ থেকে দূরে থাকে। তারা আল্লাহর পথে দৃঢ় পদ এবং সহজ সরল পথে চলে। ফলে তারা পরকালের অনন্ত জীবনে সুখ ও সম্মান অর্জন করে।

হাজ্জাজ ইবনে ইউছুফ সম্পর্কে সতর্কবাণী

সাবধান!! আল্লাহর কসম ,বনি ছাকিফ এর হেলে দুলে চলন ভঙ্গির একটা লম্বা ছোকরাকে তোমাদের কর্তৃত্ব দেয়া হবে। সে তোমাদের গাছপালা খেয়ে ফেলবে এবং তোমাদের শরীরের চর্বি গলিয়ে ফেলবে। সুতরাং হে আবা ওয়াজাহাহ ’ ,এখানেই শেষ করলাম।

____________________

১। এখানে যে লোকটির কথা বলা হয়েছে সে হলো হাজ্জাজ ইবনে ইউছুফ আছ - ছাকাফি । আল ওয়াজাহাহ ’ অর্থ হলো আল - খুনফুসা ’ যার বাংলা অর্থ হলো গুবরে পোকা। একদিন নামাজ পড়ার সময় একটি গুবরে - পোকা হাজাজের দিকে এগিয়ে আসে। সে হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে গেলে পোকাটি তার হাতে কামড় দেয়। এতে তার হাত ফুলে যায় এবং শেষ পর্যন্ত এতে সে মারা যায়। ইবনে আবিল হাদীদ লিখেছেন আল ওয়াজাহাহ্ ' অর্থ হলো পশুর লেজে লেগে থাকা বিষ্ঠা। হাজ্জাজের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করার জন্যই তাকে এ নামে সম্বোধন করা হয়েছে।

খোৎবা - ১১৬

توبیخ البخلاء

فَلا أَمْوالَ بَذَلْتُمُوها لِلَّذِي رَزَقَها، وَ لا أَنْفُسَ خاطَرْتُمْ بِها لِلَّذِي خَلَقَها. تَكْرُمُونَ بِاللَّهِ عَلَى عِبادِهِ، وَ لا تُكْرِمُونَ اللَّهَ فِي عِبَادِهِ! فاعْتَبِرُوا بِنُزُولِكُمْ مَنازِلَ مَنْ كانَ قَبْلَكُمْ، وَ انْقِطاعِكُمْ عَنْ أَوْصَلِ(اصل - اهل) إِخْوانِكُمْ!

কৃপণদের প্রতি তিরস্কার

যিনি তোমাদের সম্পদ দিয়েছেন তোমরা তাঁর উদ্দেশ্যে তা ব্যয় কর না এবং যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন তার জন্য তোমরা জীবনের ঝুকি গ্রহণ কর না। তোমরা আল্লাহর মাধ্যমে তার বান্দাদের নিকট সম্মানিত কিন্তু আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে তোমরাই আল্লাহকে সম্মান কর না। তোমরা তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর যারা তোমাদের পূর্ববর্তী এবং যাদের স্থান তোমরা দখল করে আছো । তোমাদের নিকটতম ভ্রাতাদের প্রস্থান থেকেও শিক্ষা গ্রহণ করো ।