খোৎবা -
১১৭
الثناء علی المحسنین
أَنْتُمُ الْأَنْصَارُ عَلَى الْحَقِّ، وَ الْإِخْوانُ فِي الدِّينِ، وَ الْجُنَنُ يَوْمَ الْبَأْسِ، وَ الْبِطانَةُ دُونَ النَّاسِ، بِكُمْ أَضْرِبُ الْمُدْبِرَ، وَ أَرْجُو طاعَةَ الْمُقْبِلِ، فَأَعِينُونِي بِمُناصَحَةٍ خَلِيَّةٍ مِنَ الْغِشِّ، سَلِيمَةٍ مِنَ الرَّيْبِ، فَوَاللَّهِ إِنِّي لَأوْلَى النَّاسِ بِالنَّاسِ.
বিশ্বস্ত সাথীদের প্রশংসা
তোমরা সত্যের (হক) সমর্থক এবং ইমানি ভাই। তোমরা দুঃখের দিনের ঢাল এবং অন্য লোকদের মধ্যে আমার আমানত। তোমাদের সমর্থনেই আমি (সত্য পথ হতে) পলাতকদের আঘাত করি এবং যারা সামনের দিকে এগিয়ে আসে তাদের আনুগত্য পাওয়ার আশা করি। সুতরাং আমার প্রতি এমন সমর্থন প্রসারিত কর যা হবে প্রবঞ্চনা ও সন্দেহমুক্ত। আল্লাহর কসম ,মানুষের জন্য আমিই অন্য সকলের চেয়ে বেশি বরণীয়।
খোৎবা -
১১৮
وَ قَدْ جَمَعَ النَاسَ وَ حَضَّهُمْ عَلَى الْجِهادِ فَسَكَتُوا مَلِياً فَقَالَعليهالسلام
: ما بالُكُمْ أَمُخْرَسُونَ أَنْتُمْ؟ فَقَالَ قَوْمٌ مِنْهُمْ: يا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، إِنْ سِرْتَ سِرْنا مَعَكَ.
فَقالَ
عليهالسلام
:
ما بالُكُمْ! لا سُدِّدْتُمْ لِرُشْدٍ، وَ لا هُدِيتُمْ لِقَصْدٍ! أَفِي مِثْلِ هَذَا يَنْبَغِي لِي أَنْ أَخْرُجَ؟ وَ إِنَّما يَخْرُجُ فِي مِثْلِ هذا رَجُلٌ مِمَّنْ أَرْضاهُ مِنْ شُجْعانِكُمْ وَ ذَوِي بَأْسِكُمْ.
وَ لا يَنْبَغِي لِي أَنْ أَدَعَ الْجُنْدَ وَ الْمِصْرَ وَ بَيْتَ الْمَالِ وَ جِبايَةَ الْأَرْضِ وَ الْقَضأَ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ وَ النَّظَرَ فِي حُقُوقِ الْمُطالِبِينَ، ثُمَّ أَخْرُجَ فِي كَتِيبَةٍ أَتْبَعُ أُخْرى، أَتَقَلْقَلُ تَقَلْقُلَ الْقِدْحِ فِي الْجَفِيرِ الْفارِغِ، وَ إِنَّمَا أَنَا قُطْبُ الرَّحى تَدُورُ عَلَيَّ وَ أَنَا بِمَكانِي، فَإِذا فارَقْتُهُ اسْتَحارَ مَدارُها، وَ اضْطَرَبَ ثِفالُها. هذا - لَعَمْرُ اللَّهِ - الرَّأْيُ السُّوءُ، وَ اللَّهِ لَوْ لا رَجَائِي الشَّهادَةَ عِنْدَ لِقائِىَ الْعَدُوَّ - وَ لَوْ قَدْ حُمَّ لِي لِقَاؤُهُ - لَقَرَّبْتُ رِكابِي، ثُمَّ شَخَصْتُ عَنْكُمْ، فَلا أَطْلُبُكُمْ ما اخْتَلَفَ جَنُوبٌ وَ شَمالٌ طَعّانِينَ عَيّابِينَ حَيّادِينَ رَوّاغِينَ. إِنَّهُ لا غَنأَ فِي كَثْرَةِ عَدَدِكُمْ مَعَ قِلَّةِ اجْتِماعِ قُلُوبِكُمْ. لَقَدْ حَمَلْتُكُمْ عَلَى الطَّرِيقِ الْواضِحِ الَّتِي لا يَهْلِكُ عَلَيْها إ لاّ هالِكٌ، مَنِ اسْتَقامَ فَإِلَى الْجَنَّةِ، وَ مَنْ زَلَّ فَإِلَى النّارِ!
জিহাদের আহবানে অনুচরদের নিশ্চুপতার কারণে প্রদত্ত খোৎবা
আমিরুল মোমেনিন লোকবল সংগ্রহ করে তাদেরকে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করলেন কিন্তু তারা দীর্ঘদিন নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলো। তখন তিনি বললেন ,“
তোমাদের কী হয়েছে ? তোমরা কি বোবা হয়ে গেলে ?”
একদল প্রত্যুত্তরে বললো ,“
হে আমিরুল মোমেনিন ,যদি আপনি যান তবে আমরাও আপনার সাথে যাবো । ” এতে আমিরুল মোমেনিন বললেনঃ
তোমাদের কী হয়েছে ? তোমরা সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পার না এবং সঠিক পথ দেখতে পাওনা। বিদ্যমান অবস্থায় আমি কি যেতে পারি ? বস্তৃতঃ এ সময় আমি তোমাদের মধ্য থেকে একজন সাহসী ও নির্ভিক ব্যক্তিকে মনোনীত করে তোমাদের সঙ্গে প্রেরণ করবো। সৈন্যবাহিনী ,নগরী ,বায়তুল মাল ,জমির খাজনা - এসব অরক্ষিত অবস্থায় ত্যাগ করে আমার যাওয়া শোভা পায় না। তাছাড়া মুসলিমদের মধ্যে ন্যায়বিচার বিধান করা ,জনগণের দাবি - দাওয়া দেখাশোনা করা ,এদিক সেদিক একের পর এক বাহিনী প্রেরণ করা - এসব ছেড়ে আমার যাওয়া শোভনীয় হয় না।
আমি আটা - কলের মধ্য - শলাকা। আমি নিজের অবস্থানে থাকলে চাক্কি আমাকে কেন্দ্র করে ঘুরবে। যখনই আমি সরে যাব অমনি ঘুর্ণনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে এবং নিচের পাথরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আল্লাহর কসম ,(তোমরা যা বলেছ) এটা একটা মন্দ উপদেশ। আল্লাহর কসম ,শত্রুর মোকাবেলায় যদি আমি শাহাদাতের আশা পোষণ না করতাম এবং তার সাথে আমার মোকাবেলা যদি পূর্বনির্ধারিত না হতো তবে আমি আমার বাহনে চড়ে তোমাদের কাছ থেকে বেরিয়ে পড়তাম এবং উত্তর ও দক্ষিণ আলাদা না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের সাহায্য চাইতাম না।
তোমাদের সংখ্যাধিক্য দ্বারা কোন লাভ নেই ,কারণ তোমাদের হৃদয়ে ঐক্যের অভাব। আমি তোমাদেরকে স্বচ্ছ পথেই রেখেছি যেখানে তোমাদের কেউ ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে না ,কেবলমাত্র যে নিজেকে ধ্বংস করে সে ছাড়া। যে ব্যক্তি এ পথে লেগে থাকবে সে বেহেশত লাভ করবে এবং যে এ পথ থেকে সরে যাবে সে দোযখে যাবে।
খোৎবা -
১১৯
خصائص اهل البیتعليهالسلام
تَاللَّهِ لَقَدْ عُلِّمْتُ تَبْليغَ الرِّسالاتِ، وَ إِتْمامَ الْعِداتِ، وَ تَمامَ الْكَلِماتِ وَ عِنْدَنا أَهْلَ الْبَيْتِ أَبْوابُ الْحِكَمِ وَ ضِيَأُ الْأَمْرِ. أَلا وَ إِنَّ شَرائِعَ الدِّينِ وَاحِدَةٌ، وَ سُبُلَهُ قاصِدَةٌ، مَنْ أَخَذَ بِها لَحِقَ وَ غَنِمَ، وَ مَنْ وَقَفَ عَنْها ضَلَّ وَ نَدِمَ. اعْمَلُوا لِيَوْمٍ تُذْخَرُ لَهُ الذَّخَائِرُ، وَ تُبْلى فِيهِ السَّرائِرُ، وَ مَنْ لا يَنْفَعُهُ حَاضِرُ لُبِّهِ فَعازِبُهُ عَنْهُ أَعْجَزُ، وَ غائِبُهُ أَعْوَزُ، وَ اتَّقُوا نارا حَرُّها شَدِيدٌ وَ قَعْرُها بَعِيدٌ، وَ حِلْيَتُها حَدِيدٌ، وَ شَرابُها صَدِيدٌ. أَلا وَ إِنَّ اللِّسانَ الصّالِحَ يَجْعَلُهُ اللَّهُ تَعالى لِلْمَرْءِ فِي النَّاسِ خَيْرٌ لَهُ مِنَ الْمالِ يُورِثُهُ مَنْ لا يَحْمَدُهُ.
আহলে বাইতের মহত্ত্ব সম্পর্কে
আল্লাহর কসম ,(আল্লাহর) বাণীবাহন ,প্রতিশ্রুতি পূরণ ও সম্পূর্ণ অভিব্যক্তি সম্বন্ধে আমার জ্ঞান আছে। আমরা আহলে বাইতগণ জ্ঞানের দরজা ও শাসনের আলো। সাবধান ,দ্বীনের পথ একটা এবং এর রাজপথ সোজা। যে তাদেরকে অনুসরণ করে সে লক্ষ্য অর্জন করে ও উদ্দেশ্য হাসিল করে এবং যে তাদের কাছ থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকলো সে পথভ্রষ্ট হলো ও অনুশোচনা করলো।
সেই দিনের জন্য আমল কর যেদিনের জন্য রসদ সঞ্চিত করতে হয় এবং যেদিন (প্রত্যেকের) নিয়্যত পরীক্ষিত হবে। যদি কোন লোকের নিজের বুদ্ধিমত্তা তাকে সাহায্য না করে তবে অন্য লোকের বুদ্ধি তার কোন উপকারে আসে না এবং যারা তার কাছ থেকে দূরে তারা অধিকতর অকার্যকর। আগুনকে ভয় কর যার শিখা ভয়ঙ্কর ,যার গর্ত গভীর ,যার পোষাক লোহা এবং যার পানীয় রক্তমাখা পুঁজি। সাবধান ,মহিমান্বিত আল্লাহ কোন লোকের সুনাম মানুষের মাঝে রেখে দেন যা সম্পদ অপেক্ষা অধিকতর ভালো কারণ যারা সম্পদের উত্তরাধিকারী হয় তারা তার প্রশংসা করে না।
খোৎবা -
১২০
وَ قَدْ قامَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحابِهِ فَقالَ: نَهَيْتَنا عَنِ الْحُكُومَةِ ثُمَّ أَمَرْتَنا بِها، فَلَمْ نَدْرِ أَيُّ الْأَمْرَيْنِ أَرْشَدُ؟ فَصَفَقَ ع إِحْدَى يَدَيْهِ عَلَى الْأُخْرَى. ثُمَّ قَالَ:
أسباب القبول بالتحکیم
هَذَا جَزأُ مَنْ تَرَكَ الْعُقْدَةَ! أَما وَ اللَّهِ لَوْ أَنّي حِينَ أَمَرْتُكُمْ بِما أَمَرْتُكُمْ بِهِ حَمَلْتُكُمْ عَلَى الْمَكْرُوهِ الَّذِي يَجْعَلُ اللَّهُ فِيهِ خَيْراً. فَإِنِ اسْتَقَمْتُمْ هَدَيْتُكُمْ، وَ إن اعْوَجَجْتُمْ قَوَّمْتُكُمْ، وَ إنْ أَبَيْتُمْ تَدارَكْتُكُمْ لَكانَتِ الْوُثْقَى، وَ لكِنْ بِمَنْ وَ إلى مَنْ أُرِيدُ أَنْ أُداوِي بِكُمْ وَ أَنْتُمْ دائِي؟ كَناقِشِ الشَّوْكَةِ بِالشَّوْكَةِ وَ هُوَ يَعْلَمُ أَنَّ ضَلْعَها مَعَها! اللَّهُمَّ قَدْ مَلَّتْ أَطِبّأُ هَذا الدَّأِ الدَّوِيِّ، وَ كَلَّتِ النَّزْعَةُ بِأَشْطانِ الرَّكِيِّ!
صفات الشهداء من أصحابه
أَيْنَ الْقَوْمُ الَّذِينَ دُعُوا إ لَى الْإِسْلاَمِ فَقَبِلُوهُ، وَ قَرَءُوا الْقُرْآنَ فَأَحْكَمُوهُ، وَ هِيجُوا إ لَى الْجِهَادِ فَوَلِهُوا الِّقَاحِ إ لَى أَوْلادِها، وَ سَلَبُوا السُّيُوفَ أَغْمادَها، وَ أَخَذُوا بِأَطْرافِ الْأَرْضِ زَحْفا زَحْفا وَ صَفّا صَفّا؟ بَعْضٌ هَلَكَ وَ بَعْضٌ نَجا، لا يُبَشَّرُونَ بِالْأَحْيأِ، وَ لا يُعَزَّونَ عَنِ الْمَوْتَى.
مُرْهُ الْعُيُونِ مِنَ الْبُكأِ، خُمْصُ الْبُطُونِ مِنَ الصِّيَامِ، ذُبُلُ الشِّفاهِ مِنَ الدُّعَأِ، صُفْرُ الْأَلْوانِ مِنَ السَّهَرِ، عَلَى وُجُوهِهِمْ غَبَرَةُ الْخاشِعِينَ، أُولئِكَ إِخْوانِىَ الذَّاهِبُونَ، فَحَقَّ لَنا أَنْ نَظْمَأَ إِلَيْهِمْ، وَ نَعَضَّ الْأَيْدِىَ عَلَى فِرَاقِهِمْ.
التحذیر من خدع الشیطان
إِنَّ الشَّيْطانَ يُسَنِّى لَكُمْ طُرُقَهُ، وَ يُرِيدُ أَنْ يَحُلَّ دِينَكُمْ عُقْدَةً عُقْدَةً، وَ يُعْطِيَكُمْ بِالْجَماعَةِ الْفُرْقَةَ، وَ بِالْفُرْقَةِ الْفِتْنَةَ، فَاصْدِفُوا عَنْ نَزَغاتِهِ وَ نَفَثاتِهِ، وَ اقْبَلُوا النَّصِيحَةَ مِمَّنْ أَهْداها إِلَيْكُمْ وَ اعْقِلُوها عَلَى أَنْفُسِكُمْ
আমিরুল মোমেনিনের অনুচরদের মধ্যে একজন দাঁড়িয়ে বললো ,“
হে আমিরুল মোমেনিন ,আপনি প্রথমে সালিশীতে আমাদের বারণ করেছিলেন এবং পরে তার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। আমরা জানি না এ দুটোর কোনটি বেশি সঠিক। ” এতে আমিরুল মোমেনিন এক হাত দিয়ে অপর হাতের ওপর থাপ্পড় মেরে বললেনঃ
কুফাবাসীদের পরাজয়ের কারণ
যে ব্যক্তি অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এটাই তার পুরস্কার। আল্লাহর কসম ,যখন আমি সালিশী মান্য না করার জন্য তোমাদের আদেশ দিয়েছিলাম তখন আমি তোমাদেরকে একটা অবাঞ্চিত বিষয়ের (যুদ্ধ) দিকে পরিচালিত করছিলাম যাতে আল্লাহ মঙ্গল নিহিত রেখেছিলেন। যদি তোমরা দৃঢ় - সংকল্প চিত্তের হতে আমি তোমাদেরকে পরিচালিত করতে পারতাম ;যদি তোমরা বেঁকে যেতে আমি তোমাদেরকে সোজা করতে পারতাম এবং যদি তোমরা অস্বীকার করতে আমি তোমাদেরকে সংশোধন করতাম। এটাই ছিল সব চাইতে সুনিশ্চিত পথ। কিন্তু কার সাথে ও কাকে সে পথের কথা বলবো। আমি তোমাদের কাছে আমার চিকিৎসা চেয়েছিলাম। কিন্তু তোমরা আমার রোগ হয়ে গিয়েছিলে। (অবস্থা এমন করেছিলে যে) কাঁটা দিয়ে কাটা তুলতে গিয়ে উৎপাটক জানতে পারলো যে ,তার হাতের কাঁটাটি ভেঙ্গে ভেতরে রয়ে গেছে। হায় আল্লাহ! চিকিৎসকরা এ ঘাতক রোগে হতাশ হয়ে গেল এবং পানি উত্তোলনকারীরা এ কুপের দড়িতে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লো।
শহীদ সঙ্গীদের সম্পর্কে
কোথায় তারা যারা ইসলামের প্রতি আমন্ত্রিত হয়েছিল এবং তা গ্রহণ করেছিল ? তারা কুরআন তেলওয়াত করতো এবং তদানুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতো। তারা যুদ্ধের প্রতি উদ্বুদ্ধ ছিল এবং উষ্ট্রি যেভাবে তার শাবকের দিকে ধাবিত হয় তারাও সেভাবে জিহাদের দিকে ধাবিত হতো। তারা তাদের তরবারি কোষ থেকে বের করে দলে দলে সারিবদ্ধভাবে জিহাদের জন্য বেরিয়ে পড়তো। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করতো ,কেউ কেউ গাজি হয়ে ফিরে আসতো। না তারা গাজি হবার সুখবরে আনন্দিত হতো ,আর না তারা মৃত সম্পর্কে সান্তুনা পেতো। কাঁদতে কাঁদতে তাদের চোখ সাদা হয়ে গিয়েছিল। রোজা রাখতে রাখতে তাদের পেট কৃশ হয়ে গিয়েছিল। অত্যধিক নামাজের কারণে তাদের ঠোঁট শুকিয়ে গিয়েছিল। রাত্রি জাগরণের কারণে তাদের বর্ণ পান্ডুর হয়ে গিয়েছিল। তাদের মুখে খোদা - ভীতির চিহ্ন ছিল। এরাই ছিল আমার সাথী যারা গত হয়ে গেছে।
শয়তানের ধোকা সম্পর্কে সতর্কবাণী
নিশ্চয়ই ,শয়তান তার পথকে তোমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছে এবং দ্বীনের বন্ধন একটার পর একটা খুলে ফেলতে চায় যাতে তোমাদের মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ সৃষ্টি হয়। তার কুমন্ত্রণা ও জাদুমন্ত্র থেকে নিজেদের দূরে রাখ এবং কেউ সদুপদেশ দিলে তা গ্রহণ করে মনে রেখো।
খোৎবা -
১২১
قالَهُ لِلْخَوارِجِ، وَ قَدْ خَرَجَ إِلَى مُعَسْكَرِهِمْ وَ هُمْ مُقِيمُونَ عَلَى إِنْكَارِ الْحُكُومَةِ، فَقَالَعليهالسلام
:
أَكُلُّكُمْ شَهِدَ مَعَنا صِفِّينَ؟فَقَالُوا: مِنَّا مَنْ شَهِدَ وَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَشْهَدْ. قَالَ
: فَامْتَازُوا فِرْقَتَيْنِ، فَلْيَكُنْ مَنْ شَهِدَ صِفِّينَ فِرْقَةً، وَ مَنْ لَمْ يَشْهَدْها فِرْقَةً، حَتَّى أُكَلِّمَ كُلًّا مِنْكُمْ بِكَلامِهِ.وَ نادَى النَّاسَ فَقَالَ
: أَمْسِكُوا عَنِ الْكَلامِ وَ أَنْصِتُوا لِقَوْلِي، وَ أَقْبِلُوا بِأَفْئِدَتِكُمْ إِلَيَّ، فَمَنْ نَشَدْنَاهُ شَهادَةً فَلْيَقُلْ بِعِلْمِهِ فِيهَا.
سیاسیة رفع المصاحف الماکرة
أَلَمْ تَقُولُوا عِنْدَ رَفْعِهِمُ الْمَصاحِفَ حِيلَةً وَ غِيلَةً وَ مَكْرا وَ خَدِيعَةً: إِخْوانُنا وَ أَهْلُ دَعْوَتِنَا اسْتَقالُونا،وَ اسْتَراحُوا إ لَى كِتَابِ اللَّهِ سُبْحَانَهُ، فَالرَّأْيُ الْقَبُولُ مِنْهُمْ، وَ التَّنْفِيسُ عَنْهُمْ؟
. فَقُلْتُ لَكُمْ: هذا أَمْرٌ ظَاهِرُهُ إِيمانٌ وَ باطِنُهُ عُدْوانٌ، وَ أَوَّلُهُ رَحْمَةٌ، وَ آخِرُهُ نَدَامَةٌ، فَأَقِيمُوا عَلى شَأْنِكُمْ، وَ الْزَمُوا طَرِيقَتَكُمْ، وَ عَضُّوا عَلَى الْجِهادِ بَنَواجِذِكُمْ، وَ لا تَلْتَفِتُوا إلى نَاعِقٍ نَعَقَ: إنْ أُجِيبَ أَضَلَّ وَ، إِنْ تُرِكَ ذَلَّ. وَ قَدْ كَانَتْ هذِهِ الْفَعْلَةُ. وَ قَدْ رَأَيْتُكُمْ أَعْطَيْتُمُوها. وَ اللَّهِ لَئِنْ أَبَيْتُها ما وَجَبَتْ عَلَيَّ فَرِيضَتُها، وَ لا حَمَّلَنِي اللَّهُ ذَنْبَها، وَ وَاللَّهِ إِنْ جِئْتُها إِنِّي لَلْمُحِقُّ الَّذِي يُتَّبَعُ، وَ إِنَّ الْكِتابَ لَمَعِي ما فارَقْتُهُ مُذْ صَحِبْتُهُ.
صفات المجاهدین من اصحاب النبیصلىاللهعليهوآلهوسلم
فَلَقَدْ كُنّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
وَ إنَّ الْقَتْلَ لَيَدُورُ بَيْنَ الْآبأِ وَ الْأَبْنَأِ وَ الْإِخْوانِ وَ الْقَراباتِ، فَما نَزْدادُ عَلَى كُلِّ مُصِيبَةٍ وَ شِدَّةٍ إلا إِيمانا، وَ مُضِيّا عَلَى الْحَقِّ، وَ تَسْلِيما لِلْأَمْرِ، وَ صَبْرا عَلَى مَضَضِ الْجِرَاحِ.
علل مقاتلة اهل الشام
وَ لَكِنَّا إِنَّما أَصْبَحْنا نُقاتِلُ إِخْوَانَنا فِي الْإِسْلاَمِ عَلَى مَا دَخَلَ فِيهِ مِنَ الزَّيْغِ وَ الاعْوِجَاجِ وَ الشُّبْهَةِ وَ التَّأْوِيلِ، فَإ ذا طَمِعْنا فِي خَصْلَةٍ يَلُمُّ اللَّهُ بِها شَعَثَنا وَ نَتَدانَى بِها إِلَى الْبَقِيَّةِ فِيما بَيْنَنا، رَغِبْنا فِيها، وَ أَمْسَكْنا عَمّا سِواها.
যখন খারিজিরা সালিশী প্রত্যাখ্যানের জন্য অনড় অবস্থান গ্রহণ করলো তখন আমিরুল মোমেনিন তাদের ক্যাম্পের কাছে গিয়ে তাদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ
তোমরা সবাই কি সিফফিনে আমাদের সঙ্গে ছিলে ? প্রত্যুত্তরে তারা বললো যে ,কেউ কেউ ছিল ,কেউ কেউ ছিল না। আমিরুল মোমেনিন বললেন ,তাহলে তোমরা দুভাগে বিভক্ত হও । যারা সিফফিনে ছিলে তারা এক দিকে যাও । আর যারা সিফফিনে ছিলে না তারা একদিকে যাও যাতে আমি প্রত্যেক দলকে যথোচিতভাবে সম্বোধন করতে পারি। তারপর তিনি উচ্চৈঃস্বরে বললেন ,কথা বলা বন্ধ করা এবং আমি যা বলি শোন । তোমাদের হৃদয়কে আমার দিকে ফেরাও । যাকে আমি সাক্ষ্য দিতে বলি সে তার জানা মত সাক্ষ্য দেবে ।
কোরআনকে বর্ষার অগ্রভাগে তুলে ধরার রাজনীতি
প্রবঞ্চনা ,কৌশল ,শঠতা ও প্রতারণা হিসাবে যখন তারা কুরআনকে তুলে ধরল তখন কি তোমরা বলনি“
তারা আমাদের ভাই এবং ইসলাম গ্রহণে আমাদের সাথী । তারা চায় যুদ্ধ বন্ধ করে মহিমান্বিত আল্লাহর কেতাবের আশ্রয় গ্রহণ করতে । আমাদের অভিমত হলো তাদের সাথে একমত হয়ে তাদের অসুবিধা শেষ করে দেয়া।”
তখন আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম ,“
এ কাজের বহির্ভাগ ইমান মনে হলেও এর অভ্যন্তরে শক্রতা রয়েছে। এর শুরু ধার্মিকতা মনে হলেও এর শেষ হবে অনুশোচনা। কাজেই তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে দৃঢ় থাক এবং তোমাদের পথে দৃপ্তপদে দৃঢ় - সংকল্প থাক। তোমরা দাঁতে দাঁত চেপে ধরে জিহাদে প্রবৃত্ত থাক। চিৎকারকারীর ( মুয়াবিয়া ) চিৎকারে কর্ণপাত করো না। যদি তার চিৎকারের জবাব দাও তবে সে তোমাদের বিপথে পরিচালিত করবে আর জবাব না দিলে সে অপমানিত হবে।”
কিন্তু যখন সালিশী করা হলো ,তখন আমি দেখলাম ,তোমরা তা মেনে নিয়েছো । আল্লাহর কসম ,যদি আমি অস্বীকার করতাম তাহলে তা আমার জন্য বাধ্যতামূলক হতো না এবং আল্লাহ তার পাপ আমার ওপর চাপিয়ে দিতেন না। আল্লাহর কসম ,আমি তা গ্রহণ করেছি ;আমিই ন্যায়সঙ্গত ব্যক্তি যাকে অনুসরণ করা উচিত ,কারণ কুরআন আমার সাথে। কুরআনকে সাথী করে নেয়ার পর থেকে আমি কখনো তা পরিত্যাগ করিনি ।
নবীর (সা.) মুজাহিদ সাহাবীদের সম্পর্কে
আমরা রাসূলের ( সা .) সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলাম ,সেখানে আমাদের হাতে যারা নিহত হয়েছিল তারা ছিল আমাদের পিতা ,ভ্রাতা ,পুত্র ও আত্মীয় - স্বজন। তাসত্ত্বেও সকল দুঃখ - কষ্ট ও অভাব - অনটন আমাদের ইমানকে বৃদ্ধি করেছে ,সত্যপথে আমাদেরকে দৃঢ় করেছে ,আল্লাহর আদেশের প্রতি অনুগত করেছে এবং ক্ষতস্থানের ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।
সিরিয়দের সাথে যুদ্ধের কারণ
আমাদের এখন যুদ্ধ করতে হবে ইসলামি ভাইদের সাথে কারণ ইসলামে গোমরাহি ,বক্রতা ,সংশয় ও অপব্যাখ্যার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। যাহোক ,যদি আমরা কোন পথ দেখি যার সাহায্যে আল্লাহ আমাদেরকে এ বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে একত্রিত করেন এবং যার দ্বারা আমরা একে অপরের কাছে আসতে পারি এবং আমাদের মধ্যে যেসব বিষয়ে উভয়ের মিল আছে তা গ্রহণ করে অন্য সব কিছু পরিত্যাগ করতে পারি।
খোৎবা -
১২২
قالَهُ لا صْحابِهِ فِي ساعَةِ الْحَرْبِ بصفین
وَ أَيُّ امْرِئٍ مِنْكُمْ أَحَسَّ مِنْ نَفْسِهِ رَباطَةَ جَأْشٍ عِنْدَ اللِّقَأِ، وَ رَأَى مِنْ أَحَدٍ مِنْ إِخْوانِهِ فَشَلاً، فَلْيَذُبَّ عَنْ أَخِيهِ بِفَضْلِ نَجْدَتِهِ الَّتِي فُضِّلَ بِها عَلَيْهِ، كَما يَذُبُّ عَنْ نَفْسِهِ، فَلَوْ شَأَ اللَّهُ لَجَعَلَهُ مِثْلَهُ. إنَّ الْمَوْتَ طَالِبٌ حَثِيثٌ، لا يَفُوتُهُ الْمُقِيمُ، وَ لا يُعْجِزُهُ الْهَارِبُ. إنَّ أَكْرَمَ الْمَوْتِ الْقَتْلُ! وَالَّذِي نَفْسُ ابْنِ أَبِي طَالِبٍ بِيَدِهِ لَأَلْفُ ضَرْبَةٍ بِالسَّيْفِ أَهْوَنُ عَلَيَّ مِنْ مِيتَةٍ عَلَى الْفِراشِ فِي غَيْرِ طَاعَةِ اللَّهِ!
وَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَيْكُمْ تَكِشُّونَ كَشِيشَ الضِّبَابِ: لا تَأْخُذُونَ حَقّا، وَ لا تَمْنَعُونَ ضَيْما، قَدْ خُلِّيتُمْ وَالطَّرِيقَ، فالنَّجاةُ لِلْمُقْتَحِمِ، وَالْهَلَكَةُ لِلْمُتَلَوِّمِ.
সিফফিনের যুদ্ধে অনুচরদের প্রতি উপদেশ
তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সংঘর্ষ চলাকালে হৃদয়ে সাহসিকতা বোধ কর এবং তোমাদের কোন সাথী যদি শত্রু পরিবেষ্টিত হয়ে হতাশ হয়ে পড়ে তাহলে তাকে তৎক্ষণাৎ শত্রুমুক্ত করা উচিত। এক্ষেত্রে সাথীকে রক্ষা করার জন্য এমনভাবে শক্রকে প্রতিহত করতে হবে যেভাবে কেউ নিজের বেলায় করে ,কারণ তোমার সাথীর চেয়ে যে বলিষ্ঠতা তোমাকে দেয়া হয়েছে আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমার সাথীকেও তা দিতে পারতেন। নিশ্চয়ই ,মৃত্যু দ্রুত অনুসন্ধানকারী। না কোন দৃপ্ত পদ এটা থেকে রক্ষা পেতে পারে ,আর না কোন দৌড়বিদ এটা থেকে পালিয়ে যেতে পারে। নিহত হওয়া সর্বোত্তম মৃত্যু। যে এক হাজার আঘাত আমার কাছে সহজতর কারণ বিছানায় পড়ে থেকে মৃত্যু আল্লাহর আনুগত্যের (জিহাদ) নয়।
আমি দেখতে পাচ্ছি। তোমরা যেন গিরগিটির মতো টিকটিক স্বরে শব্দ করছো । তোমরা নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠিত করতে চাওনা এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষা করনা। তোমাদেরকে মুক্তভাবে পথে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। যে যুদ্ধের দিকে দৌড়ে যায় সে মুক্তি পায় ,আর যে ইতস্তত করে পিছনে পড়ে থাকে সে ধ্বংস হয়।
খোৎবা -
১২৩
فِي حَثِّ أَصْحابِهِ عَلَى الْقِتالِ
فَقَدِّمُوا الدَّارِعَ، وَ أَخِّرُوا الْحاسِرَ، وَ عَضُّوا عَلَى الْأَضْراسِ فَإِنَّهُ أَنْبى لِلسُّيُوفِ عَنِ الْهامِ، وَالْتَوُوا فِي أَطْرافِ الرِّماحِ فَإِنَّهُ أَمْوَرُ لِلْأَسِنَّةِ، وَغُضُّوا الْأَبْصارَ فَإِنَّهُ أَرْبَطُ لِلْجَأْشِ، وَ أَسْكَنُ لِلْقُلُوبِ؛ وَ أَمِيتُوا الْأَصْواتَ فَإِنَّهُ أَطْرَدُ لِلْفَشَلِ. وَ رايَتَكُمْ فَلا تُمِيلُوها، وَ لا تُخِلُّوها، وَ لا تَجْعَلُوها إِلا بِأَيْدِي شُجْعانِكُمْ، وَ الْمانِعِينَ الذِّمارَ مِنْكُمْ، فَإِنَّ الصّابِرِينَ عَلَى نُزُولِ الْحَقائِقِ هُمُ الَّذِينَ يَحُفُّونَ بِرَاياتِهِمْ، وَيَكْتَنِفُونَها: حِفَافَيْها وَ وَرَأَها وَ أَمَامَها، لا يَتَأَخَّرُونَ عَنْها فَيُسْلِمُوها، وَ لا يَتَقَدَّمُونَ عَلَيْها فَيُفْرِدُوها. أَجْزَأَ امْرُؤٌ قِرْنَهُ، وَ آسى أَخَاهُ بِنَفْسِهِ، وَ لَمْ يَكِلْ قِرْنَهُ إِلَى أَخِيهِ فَيَجْتَمِعَ عَلَيْهِ قِرْنُهُ وَ قِرْنُ أَخِيهِ.
وَ ايْمُ اللَّهِ لَئِنْ فَرَرْتُمْ مِنْ سَيْفِ الْعاجِلَةِ لا تَسْلَمُوا مِنْ سَيْفِ الْآخِرَةِ، وَ أَنْتُمْ لَهامِيمُ الْعَرَبِ، وَ السَّنامُ الْأَعْظَمُ. إنَّ فِي الْفِرارِ مَوْجِدَةَ اللَّهِ، وَالذُّلَّ اللازِمَ، وَالْعارَ الْباقِيَ، وَ إنَّ الْفارَّ لَغَيْرُ مَزِيدٍ فِي عُمُرِهِ، وَ لا مَحْجُوزٍ بَيْنَهُ وَ بَيْنَ يَوْمِهِ. مَنْ رائِحٌ إلى اللَّهِ كَالظَّمْآنِ يَرِدُ الْمَأَ؟ الجَنَّةُ تَحْتَ أَطْرافِ الْعَوالِى، الْيَوْمَ تُبْلَى الْأَخْبَارُ، وَاللَّهِ لَأَنا أَشْوَقُ إلى لِقائِهِمْ مِنْهُمْ إلى دِيارِهِمْ. اللَّهُمَّ فَإنْ رَدُّوا الْحَقَّ فَافْضُضْ جَماعَتَهُمْ، وَشَتِّتْ كَلِمَتَهُمْ، وَ أَبْسِلْهُمْ بِخَطاياهُمْ.
إِنَّهُمْ لَنْ يَزُولُوا عَنْ مَواقِفِهِمْ دُونَ طَعْنٍ دِراكٍ، يَخْرُجُ مِنْهُ النَّسِيمُ وَ ضَرْبٍ يَفْلِقُ الْهامَ، وَ يُطِيحُ الْعِظامَ، وَ يُنْدِرُ السَّواعِدَ وَالْأَقْدامَ، وَ حَتَّى يُرْمَوا بِالْمَناسِرِ تَتْبَعُهَا الْمَناسِرُ، وَ يُرْجَمُوا بِالْكَتائِبِ تَقْفُوها الْحَلائِبُ، وَ حَتَّى يُجَرَّ بِبِلادِهِمُ الْخَمِيسُ يَتْلُوهُ الْخَمِيسُ وَ حَتَّى تَدْعَقَ الْخُيُولُ فِى نَواحِرِ أَرْضِهِمْ، وَ بِأَعْنانِ مَسارِبِهِمْ وَ مَسارِحِهِمْ.
অনুচরগণকে যুদ্ধে
উদ্বুদ্ধকরণ
বর্মাচ্ছদিত লোকদের সামনে রেখো এবং বর্মবিহীনদেরকে পিছনে রেখো। তোমরা দাতে দাত চেপে ধরো ,কারণ এতে তরবারি মাথার খুলির ওপর পড়বে না। যে দিকে (শত্রুর) বর্শাধারী সেদিকে‘
ডজ ’ (হঠাৎ সরে পড়া) দিয়ো ,কারণ তাতে বর্শার ফলার দিক পরিবর্তিত হয়ে যাবে। চোখ বন্ধ করো কারণ এতে আত্মশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং হৃদয়ে শান্তি আসে। গলার স্বর বন্ধ করো কারণ এতে সাহসহীনতা দূর হয়।
তোমাদের ঝাণ্ডা কখনো বাকা করো না এবং ঝাণ্ডা কখনো ফেলে যেয়ো না। সাহসী ও মর্যাদা রক্ষক ছাড়া অন্য কারো কাছে ঝাণ্ডা দিয়ে না ,কারণ বিপদ ঘটলে তারাই শুধু সহ্য করতে পারে ;তারা ঝাণ্ডাকে চর্তুদিক থেকে ঘিরে রাখে এবং সম্মুখ ও পিছন উভয় দিকে তা চক্রাকার করে রাখে। তারা ঝাণ্ডা থেকে আলাদা হয় না পাছে তা শত্রুর হাতে চলে যায়। তারা ঝাণ্ডা ছেড়ে এগিয়ে যায় না পাছে তা একা পড়ে যায়। প্রত্যেকে তার বিপক্ষের মোকাবেলা করবে এবং নিজের জীবন দিয়ে হলেও সাথীকে সাহায্য করবে। বিপক্ষকে তোমার সাথী মোকাবেলা করবে মনে করে কখনো ছেড়ে দিও না। এতে তোমার বিপক্ষ তোমার সাথীর বিপক্ষের সাথে যোগ দেবে।
আল্লাহর কসম ,তোমরা আজকের তারবারি থেকে পালিয়ে গেলেও পরকালের তরবারি থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে না। তোমরা আরবদের মধ্যে অগ্রণী এবং অঙ্গ - সৌষ্ঠবেও তোমরা উন্নত। নিশ্চয়ই ,জিহাদ থেকে পলায়নে রয়েছে আল্লাহর রোষ ,চিরস্থায়ী অসম্মান ও লজ্জা । নিশ্চয়ই ,একজন পলায়নকারী তার জীবন দীর্ঘায়িত করতে পারে না এবং পলায়নকারী ও তার মৃত্যুর মধ্যে কোন কিছুই হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কে আছে এমন যে আল্লাহর দিকে ছুটে যায়। যেমন করে তৃষ্ণার্ত পানির দিকে যায় ? বর্শার ফলার নিচে বেহেশত রয়েছে। আজ শৌর্যের সুখ্যাতি পরীক্ষিত হবে।
আল্লাহর কসম ,তারা তাদের ঘরে ফেরার জন্য যতটুকু উৎসুক আমি তাদেরকে যুদ্ধে দেখার জন্য ততোধিক উৎসুক। হে আমার আল্লাহ ,যদি তারা সত্য পরিত্যাগ করে তবে তাদের দল ছত্রভঙ্গ করো ,তাদের মধ্যে মতদ্বৈধতা সৃষ্টি করো এবং তাদের পাপের কারণে তাদেরকে ধ্বংস করো।
তারা তাদের মনোভাব পরিবর্তন করবে না যে পর্যন্ত না বর্শার আঘাতে তাদের শরীর এমনভাবে বিদীর্ণ হয় যাতে এদিক থেকে সেদিক বাতাস পার হয়ে যায় ,তরবারির আঘাতে তাদের মাথার খুলি কেটে যায় ,হাড় ভাঙ্গে ও হাত - পা বিছিন্ন হয়। তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে না যে পর্যন্ত না তারা একের পর এক বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত হয় ,তাদের শহরসমূহ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয় এবং ঘোড়ার পদাঘাতে তাদের চারণভূমি ও ভূমির শেষ সীমা পর্যন্ত দলিত ও বিনষ্ট হয়।
____________________
খোৎবা -
১২৪
إنّا لَمْ نُحَكِّمِ الرِّجالَ، وَ إِنَّما حَكَّمْنا الْقُرْآنَ، هذَا الْقُرْآنُ إِنَّما هُوَ خَطُّ مَسْطُورٌبَيْنَ الدَّفَّتَيْنِ، لا يَنْطِقُ بِلِسانٍ، وَ لا بُدَّ لَهُ مِنْ تَرْجُمانٍ، وَ إِنَّما يَنْطِقُ عَنْهُ الرِّجَالُ، وَ لَمّا دَعانَا الْقَوْمُ إلَى أَنْ نُحَكِّمَ بَيْنَنَا الْقُرْآنَ لَمْ نَكُنِ الْفَرِيقَ الْمُتَوَلِّيَ عَنْ كِتابِ اللَّهِ سُبْحَانَهُ وَ تَعَالَى، وَ قَدْ قالَ اللَّهُسُبْحَانَهُ
:(
فَإنْ تَنازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ
فَرُدُّوهُ إلَى اللّهِ وَالرَّسُولِ
)
فَرَدُّهُ إلَى اللَّهِ أَنْ نَحْكُمَ بِكِتابِهِ، وَرَدُّهُ إلَى الرَّسُولِ أَنْ نَأْخُذَ بِسُنَّتِهِ؛ فَإذا حُكِمَ بِالصِّدْقِ فِي كِتابِ اللَّهِ فَنَحْنُ أَحَقُّ النّاسِ بِهِ، وَ إنْ حُكِمَ بِسُنَّةِ رَسُولِ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
فَنَحْنُ أَحَقُّ النَّاسِ وَ أَوْلاهُمْ بِهِ. وَ أَمّا قَوْلُكُمْ: لِمَ جَعَلْتَ بَيْنَكَ وَ بَيْنَهُمْ أَجَلاً فِي التَّحْكِيمِ؟ فَإِنَّما فَعَلْتُ ذلِكَ لِيَتَبَيَّنَ الْجاهِلُ، وَ يَتَثَبَّتَ الْعالِمُ، وَ لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يُصْلِحَ فِي هَذِهِ الْهُدْنَةِ أَمْرَ هَذِهِ الْأُمَّةِ، وَ لا تُؤْخَذَ بِأَكْظامِها، فَتَعْجَلَ عَنْ تَبَيُّنِ الْحَقِّ، وَ تَنْقادَ لِأَوَّلِ الْغَيِّ.
إنَّ أَفْضَلَ النَّاسِ عِنْدَ اللَّهِ مَنْ كانَ الْعَمَلُ بِالْحَقِّ أَحَبَّ إلَيْهِ وَ إنْ نَقَصَهُ وَ كَرَثَهُ مِنَ الْبَاطِلِ وَ إنْ جَرَّ إِلَيْهِ فَائِدَةً وَزَادَهُ، فَأَيْنَ يُتاهُ بِكُمْ، وَ مِنْ أَيْنَ أُتِيتُمْ؟ اسْتَعِدُّوا لِلْمَسِيرِ إلى قَوْمٍ حَيارى عَنِ الْحَقِّ لا يُبْصِرُونَهُ، وَ مُوزَعِينَ بِالْجَوْرِ لا يَعْدِلُونَ بِهِ، جُفاةٍ عَنِ الْكِتابِ، نُكُبٍ عَنِ الطَّرِيقِ.
ما أَنْتُمْ بِوَثِيقَةٍ يُعْلَقُ بِها، وَ لا زَوافِرِ عِزِّ يُعْتَصَمُ إِلَيْها. لَبِئْسَ حُشّاشُ نارِ الْحَرْبِ أَنْتُمْ! أُفِّ لَكُمْ! لَقَدْ لَقِيتُ مِنْكُمْ بَرْحاً، وَ يَوْماً أُنادِيكُمْ، وَ يَوْماً أُناجِيكُمْ، فَلا أَحْرارُ صِدْقٍ عِنْدَ النِّدأِ وَ لا إِخْوَانُ ثِقَةٍ عِنْدَ النَّجأِ!.
খারিজিগণ এবং সালিশী সম্পর্কে তাদের অভিমত
সালিশ হিসাবে আমরা কোন মানুষের নাম বলিনি - আমরা কুরআনের নাম বলেছিলাম। কুরআন একটি গ্রন্থ যা দুটি মলাটে ঢাকা এবং এটা কথা বলতে পারে না। সুতরাং এর একজন ব্যাখ্যাকারী অত্যাবশ্যক। মানুষই শুধু কুরআনের ব্যাখ্যাকারী হতে পারে। যখন সেসব লোক কুরআনকে সালিশ মান্য করার জন্য আমাদেরকে আহবান করেছে তখন আমরা আল্লাহর কিতাব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারিনা। কারণ আল্লাহ বলেনঃ
কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটলে তা আল্লাহ ও রাসূলের কাছে উপস্থাপন কর (কুরআন - ৪:৫৯) ।
আল্লাহর কাছে উপস্থাপনের অর্থ হলো কুরআন অনুসারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং রাসূলের কাছে উপস্থাপনের অর্থ হলো তার সুন্নাহ অনুসরণ করা। সুতরাং সালিশী যদি সত্যিকার অর্থে আল্লাহর কিতাব (কুরআন) অনুযায়ী করা হতো তাহলে খেলাফতের জন্য আমরাই সব চাইতে ন্যায়সঙ্গত হতাম ;আর যদি রাসূলের সুন্নাহ অনুযায়ী করা হতো তাহলে সকলের চেয়ে আমরাই অধিকার প্রাপ্ত হতাম।
আমি কেন আমার ও তাদের মধ্যে সালিশ সাব্যস্ত করতে কিছু সময় অতিক্রম করেছিলাম তা তোমরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছো। আমি এটা করেছিলাম এ জন্য যে ,অজ্ঞ ব্যক্তি যেন সত্য সন্ধান করতে পারে এবং যে ব্যাক্তি জানে সে যেন আরো দৃঢ়ভাবে সত্য আঁকড়ে ধরতে পারে। সম্ভবতঃ এ শান্তির ফলে আল্লাহ এসব লোকের অবস্থা উন্নত করতে পারেন এবং তারা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ধৃত হবে না এবং পূর্বের মতো সত্যের নিদর্শনের সম্মুখে বিদ্রোহী হবে না। নিশ্চয়ই ,আল্লাহর কাছে সে ব্যক্তি সব চাইতে উত্তম যে ন্যায় অনুসারে আমল করতে বেশি ভালোবাসে যদিও এটা তার দুঃখ - দুর্দশা ও শোকের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং অন্যায় তার সুযোগ - সুবিধা ও উন্নতি সাধন করলেও সে তা পরিহার করে।
সুতরাং কোথায় তোমরা বিভ্রান্ত হচ্ছো এবং কোথা থেকে তোমাদের এ অবস্থায় টেনে আনা হয়েছে ? যারা সত্য ও ন্যায় পথ থেকে সরে গেছে তাদের দিকে কুচকাওয়াজ করে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত হও এবং এটা ভেবো না যে ,যারা অন্যায় কর্মে জড়িয়ে গেছে তাদেরকে পরিশুদ্ধ করা যায় না। তারা আল্লাহর কিতাব থেকে অনেক দূরে সরে গেছে এবং সত্য পথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তোমরা এমন বিশ্বাসযোগ্য নও যে ,তোমাদের ওপর নির্ভর করা যায় এবং এমন সম্মানীয় নও যে ,তোমাদেরকে মান্য করা যায়। তোমরা যুদ্ধের ইন্ধন যোগাতে ওস্তাদ। তোমাদের ওপর লানত! তোমাদের নিয়ে আমার উদ্বীগ্নতার শেষ নেই। কখনো আমি তোমাদেরকে জিহাদে আহবান করি এবং কখনো আমি তোমাদেরকে বিশ্বাস করে কথা বলি। আহ্বানের সময় তোমরা সত্যিকার অর্থে মুক্ত মানুষ নও এবং বিশ্বাস করে কথা বলার জন্য তোমরা বিশ্বস্ত ভ্রাতাও নও।
খোৎবা -
১২৫
لَمَّا عُوتِبَ عَلى التَّسوِيَةَ في الْعَطأِ
أَتَأْمُرُونِّي أَنْ أَطْلُبَ النَّصْرَ بِالْجَوْرِ فِيمَنْ وُلِّيتُ عَلَيْهِ! وَ اللَّهِ لاَ أَطُورُ بِهِ مَا سَمَرَ سَمِيرٌ، وَ أَمَّ نَجْمٌ فِي السَّمَأِ نَجْما، وَ لَوْ كَانَ الْمالُ لِي لَسَوَّيْتُ بَيْنَهُمْ، فَكَيْفَ وَ إِنَّمَا الْمَالُ مَالُ اللَّهِ! أَلا وَ إِنَّ إِعْطأَ الْمالِ فِي غَيْرِ حَقِّهِ تَبْذِيرٌ وَ إِسْرافٌ، وَ هُوَ يَرْفَعُ صاحِبَهُ فِي الدُّنْيا، وَ يَضَعُهُ فِي الْآخِرَةِ، وَ يُكْرِمُهُ فِي النّاسِ، وَ يُهِينُهُ عِنْد اللَّهِ، وَ لَمْ يَضَع امْرُؤٌ مالَهُ فِي غَيْرِ حَقِّهِ وَ لا عِنْدَ غَيْرِ أَهْلِهِ إِلا حَرَمَهُ اللَّهُ شُكْرَهُمْ، وَ كانَ لِغَيْرِهِ وُدُّهُمْ، فَإ نْ زَلَّتْ بِهِ النَّعْلُ يَوْما فَاحْتاجَ إلى مَعُونَتِهِمْ، فَشَرُّ خلیل(خَدِينٍ)
وَ أَلْأَمُ خَدِینٍ
বায়তুল মালের সুষম বন্টনের জন্য যখন আমিরুল মোমেনিনের কুৎসা রটানো হলো তখন তিনি বললেনঃ
তোমরা কি মনে কর যে ,যাদের কর্তৃত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে তাদেরকে অত্যাচার করে আমি সমর্থন আদায় করবো ? আল্লাহর কসম ,যতদিন পৃথিবী টিকে থাকবে এবং আকাশের নক্ষত্র একটা অপরটাকে অনুসরণ করবে ততদিন আমি এমন কাজ করবো না। এমন কি এটা যদি আমার নিজের সম্পদও হতো। তবুও আমি তা তাদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করে দিতাম ! সেক্ষেত্রে আল্লাহর সম্পদ কেন সমভাবে বণ্টন করবো না ? সাবধান ,যার সম্পদ পাবার অধিকার নেই তাকে তা দেয়া অপচয়ের সামিল। এহেন কাজ করে ইহকালে বাহবা পাওয়া গেলেও পরকালে অপদস্থ ও হীন হতে হয়। এহেন কাজ মানুষের কাছে সম্মানের কারণ হলেও আল্লাহর কাছে অমর্যাদাপূর্ণ । কোন ব্যক্তি যদি তার সম্পদ এমন লোকদের দেয় যারা তা পাবার উপযুক্ত নয় বা তা পেতে যাদের কোন অধিকার নেই ,আল্লাহ তাকে তাদের কৃতজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত করেন এবং তাদের ভালোবাসাও অন্য লোকের জন্য হয়ে থাকে। তারপর যদি সে কখনো বিপদে পড়ে এবং তার সাহায্যের প্রয়োজন হয় তখন তারা মন্দতর সাথী ও জঘন্য বন্ধু হিসাবে প্রমাণিত হবে।
খোৎবা -
১২৬
قال لِلْخَوارِجِ أَيْضا
فَإنْ أَبَيْتُمْ إلا أَنْ تَزْعُمُوا أَنِّي أَخْطَأْتُ وَضَلَلْتُ فَلِمَ تُضَلِّلُونَ عَامَّةَ أُمَّةِ مُحَمَّدٍصلىاللهعليهوآلهوسلم
، بِضَلالِي، وَ تَأْخُذُونَهُمْ بِخَطائِي، وَ تُكَفِّرُونَهُمْ بِذُنُوبِي! سُيُوفُكُمْ عَلى عَواتِقِكُمْ تَضَعُونَها مَواضِعَ الْبُرْءِ وَالسُّقْمِ، وَ تَخْلِطُونَ مَنْ أَذْنَبَ بِمَنْ لَمْ يُذْنِبْ وَ قَدْ عَلِمْتُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
رَجَمَ الزّانِيَ الْمُحْصَنَ، ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهِ، ثُمَّ وَرَّثَهُ أَهْلَهُ؛ وَ قَتَلَ الْقاتِلَ وَ وَرَّثَ مِيراثَهُ أَهْلَهُ. وَ قَطَعَ السّارِقَ وَ جَلَدَ الزّانِيَ غَيْرَ الْمُحْصَنِ، ثُمَّ قَسَمَ عَلَيْهِما مِنَ الْفَيْءِ، وَ نَكَحَا الْمُسْلِماتِ. فَأَخَذَهُمْ رَسُولُ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
بِذُنُوبِهِمْ، وَ أَقامَ حَقَّ اللَّهِ فِيهِمْ، وَ لَمْ يَمْنَعْهُمْ سَهْمَهُمْ مِنَ الْإِسْلامِ، وَ لَمْ يُخْرِجْ أَسْمأَهُمْ مِنْ بَيْنِ أَهْلِهِ.ثُمَّ أَنْتُمْ شِرَارُ النَّاسِ وَ مَنْ رَمى بِهِ الشَّيْطَانُ مَرامِيَهُ، وَ ضَرَبَ بِهِ تِيهَهُ!
وَ سَيَهْلِكُ فِيَّ صِنْفَانِ: مُحِبُّ مُفْرِطٌ يَذْهَبُ بِهِ الْحُبُّ إِلى غَيْرِ الْحَقِّ، وَ مُبْغِضٌ مُفْرِطٌ يَذْهَبُ بِهِ الْبُغْضُ إِلى غَيْرِ الْحَقِّ، وَ خَيْرُ النَّاسِ فِيَّ حَالاً النَّمَطُ الْأَوْسَطُ، فَالْزَمُوهُ، وَالْزَمُوا السَّوادَ الْأَعْظَمَ، فَإِنَّ يَدَ اللَّهِ مَعَ الْجَماعَةِ، وَ إِيَّاكُمْ وَالْفُرْقَةَ، فَإِنَّ الشَّاذَّ مِنَ النَّاسِ لِلشَّيْطَانِ، كَما أَنَّ الشَّاذَّ مِنَ الْغَنَمِ لِلذِّئْبِ. أَلا مَنْ دَعا إِلى هذَا الشِّعارِ فَاقْتُلُوهُ وَ لَوْ كانَ تَحْتَ عِمامَتِي هَذِهِ.
وَ إِنَّما حُكِّمَ الْحَكَمانِ لِيُحْيِيا ما أَحْيَا الْقُرْآنُ، وَ يُمِيتا ما أَماتَ الْقُرْآنُ، وَ إِحْياؤُهُ الاجْتِماعُ عَلَيْهِ، وَ إِماتَتُهُ الافْتِرَاقُ عَنْهُ. فإِن جَرَّنَا الْقُرْآنُ إِلَيْهِمُ اتَّبَعْنَاهُمْ، وَ إِنْ جَرَّهُمْ إِلَيْنَا اتَّبَعُونا، فَلَمْ آتِ. لا أَبا لَكُمْ بُجْراً، وَ لا خَتَلْتُكُمْ عَنْ أَمْرِكُمْ، وَ لا لَبَّسْتُهُ عَلَيْكُمْ، إِنَّمَا اجْتَمَعَ رَأْيُ مَلَئِكُمْ عَلَى اخْتِيارِ رَجُلَيْنِ، أَخَذْنا عَلَيْهِما أَنْ لا يَتَعَدَّيَا الْقُرْآنَ فَتاها عَنْهُ، وَ تَرَكَا الْحَقَّ وَ هُما يُبْصِرانِهِ، وَ كانَ الْجَوْرُ هَوَاهُما فَمَضَيا عَلَيْهِ وَ قَدْ سَبَقَ اسْتِثْناؤُنا عَلَيْهِما فِي الْحُكُومَةِ بِالْعَدْلِ وَ الصَّمْدِ لِلْحَقِّ سُوءَ رَأْيِهِما، وَ جَوْرَ حُكْمِهِما.
খরিজিদের সম্পর্কে
আমি বিপথগামী হয়ে গেছি বা বিভ্রান্ত হয়ে গেছি - এসব কথা বলা যদি তোমরা বন্ধ না কর তবে কেন তোমরা মনে কর না যে ,নবী মুহাম্মদের (সা.) অনুসারীদের মধ্যে সাধারণ লোকেরা আমার মতো পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে ? আমার যেসব কাজকে তোমরা বিভ্রান্তি বল কেন তাদের সেসব কাজকে বিভ্রান্তি বল না ? আমার যেসব কাজকে পাপ বল কেন সেসব কাজের জন্য তাদেরকে অবিশ্বাসী বল না ? তোমরা তোমাদের তরবারি কাধের ওপর রেখেছে এবং ন্যায় - অন্যায় বিচার বিবেচনা ছাড়াই যথেচ্ছ তা ব্যবহার করছ। পাপী ও নিম্পাপের মধ্যে তোমরা তালগোল পাকিয়ে ফেলেছ। দেখ ,রাসূল (সা.) বিবাহিত ব্যভিচারীকে পাথর মেরে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন ,তারপর তিনি তার জানাজায় হাজির হয়েছিলেন এবং তার পরবর্তীগণকে তার উত্তরাধিকারের অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি খুনিকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরবর্তীগণকে তার উত্তরাধিকারের অনুমতি দিয়েছিলেন। তিনি চোরের হাত ব্যবচ্ছেদ করে দিয়েছিলেন এবং অবিবাহিত ব্যভিচারীকে বেত্রাঘাত করেছিলেন ,কিন্তু বায়তুল মাল থেকে তাদের হিস্যা প্রদান করেছিলেন ও তারা মুসলিম রমণী বিয়ে করেছিল। এভাবে রাসূল (সা.) তাদের পাপের জন্য তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলেন ,আবার তাদের বিষয়ে আল্লাহর আদেশও মান্য করেছিলেন। না তিনি ইসলাম কর্তৃক প্রদত্ত অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করেছেন না তিনি ইসলামের অনুসারীদের তালিকা থেকে তাদের নাম কেটে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই ,তোমরা সর্বাপেক্ষা খারাপ লোক এবং তোমরা হলে সেসব লোক যাদেরকে শয়তান তার পথে রেখেছে এবং তার বেরিয়ে আসার পথবিহীন রাজ্যে নিক্ষেপ করেছে।
আমার বিষয়ে দুপ্রকার লোক ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। প্রথমতঃ যে আমাকে অত্যধিক ভালোবাসে এবং এ ভালোবাসা তাকে ন্যায়পরায়ণতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। দ্বিতীয়তঃ যে আমাকে অত্যধিক ঘৃণা করে এবং সে ঘৃণা তাকে ন্যায়পরায়ণতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। আমার বিষয়ে সে ব্যক্তি সর্বোত্তম যে মধ্যপন্থাবলম্বী। সুতরাং তার সাথে থেকো এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের সাথে থেকো কারণ আল্লাহর হাত (প্রতিরক্ষার) ঐক্য রক্ষার ওপর। বিভেদ সম্পর্কে তোমরা সাবধান থেকো কারণ দল থেকে বিচ্ছিন্ন একজন লোক সহজেই শয়তানের শিকারে পরিণত হয়। যেমন করে পাল থেকে বিচ্ছিন্ন ভেড়া নেকড়ের শিকার হয়। সাবধান ,এ পথের দিকে যে আহবান করে তাকে হত্যা কর ;যদি সে আমার পাগড়ীর নিচেও থেকে থাকে।
নিশ্চয়ই সালিসীদ্বয় নিয়োগ করা হয়েছিলো এ জন্য যে ,কুরআন যা বঁচিয়ে রাখতে বলে তা বঁচিয়ে রাখার জন্য এবং কুরআন যা ধ্বংস করতে বলে তা ধ্বংস করার জন্য। বঁচিয়ে রাখা অর্থ হলো কুরআন - সমর্থিত বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ,আর ধ্বংস মানে হলো কুরআন - অসমর্থিত বিষয়ে বিভেদ হওয়া। কুরআন যদি আমাদেরকে তাদের দিকে পরিচালিত করে তাহলে আমরা তাদেরকে অনুসরণ করবো এবং কুরআন যদি তাদেরকে আমাদের দিকে পরিচালিত করে তাহলে তারা আমাদেরকে অনুসরণ করবে। তোমাদের পিতা না থাকুক (তোমাদের ওপর লানত) ,আমি তোমাদের কোন দুর্ভাগ্য ঘটাইনি ;আমি তোমাদেরকে কোন বিষয়ে প্রতারণা করিনি ;আমি কোন বিষয়ে দ্বিধা - দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করিনি। তোমাদের নিজেদের দল সর্বসম্মতিক্রমে এ দুজন লোকের বিষয়ে সুপারিশ করেছিলো। আমরা তাদেরকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেছিলাম যেন তারা কুরআনের ব্যতিক্রম না করে। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছিলো এবং ন্যায় পরিত্যাগ করেছিলো। অথচ তারা উভয়েই কুরআন সম্পর্কে অবগত। তারা তাদের প্রবৃত্তির তাড়নায় এহেন অন্যায় কাজ করেছিলো এবং তারা কুরআনের বিধান পদদলিত করেছিলো। সালিশের পূর্বে আমরা তাদেরকে শর্ত দিয়েছিলাম যে তারা সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে ন্যায়বিচার করবে কিন্তু তার তা করেনি।
খোৎবা -
১২৭
الإخبار عن حوادث المستقبلیة بالبصرة
يا أَحْنَفُ، كَأَنِّي بِهِ وَ قَدْ سارَ بِالْجَيْشِ الَّذِي لا يَكُونُ لَهُ غُبارٌ وَ لا لَجَبٌ، وَ لا قَعْقَعَةُ لُجُمٍ، وَ لا حَمْحَمَةُ خَيْلٍ، يُثِيرُونَ الْأَرْضَ بِأَقْدَامِهِمْ كَأَنَّها أَقْدامُ النَّعَامِ.
قال الشريف: يُومِىُ بِذلِكَ إ لى صاحِبِ الزَّنْجِ،
ثُمَّ قَالَ
عليهالسلام
: وَيْلٌ لِسِكَكِكُمُ الْعامِرَةِ، وَ الدُّورِ الْمُزَخْرَفَةِ الَّتِي لَها أَجْنِحَةٌ كَأَجْنِحَةِ النُّسُورِ، وَ خَراطِيمُ كَخَراطِيمِ الْفِيَلَةِ مِنْ أُولَئِكَ الَّذِينَ لا يُنْدَبُ قَتِيلُهُمْ، وَ لا يُفْقَدُ غَائِبُهُمْ، أَنَا كابُّ الدُّنْيا لِوَجْهِها، وَ قادِرُها بِقَدْرِها، وَ نَاظِرُها بِعَيْنِها.
كَأَنِّي أَراهُمْ قَوْماً«كَأَنَّ وُجُوهَهُمُ الْمَجانُّ الْمُطَرَّقَةُ»
، يَلْبَسُونَ السَّرَقَ وَ الدِّيباجَ، وَ يَعْتَقِبُونَ الْخَيْلَ الْعِتاقَ، وَ يَكُونُ هُناكَ اسْتِحْرارُ قَتْلٍ حَتَّى يَمْشِيَ الْمَجْرُوحُ عَلَى الْمَقْتُولِ، وَ يَكُونَ الْمُفْلِتُ أَقَلَّ مِنَ الْمَأْسُورِ!
فَقالَ لَهُ بَعْضُ أَصْحَابِهِ: لَقَدْ أُعْطِيتَ يا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ عِلْمَ الْغَيْبِ! فَضَحِكَ ع، وَ قالَ لِلرَّجُلِ وَ كانَ كَلْبِيّا:
يا أَخا كَلْبٍ، لَيْسَ هُوَ بِعِلْمِ غَيْبٍ وَ إِنَّما هُوَ تَعَلُّمٌ مِنْ ذِي عِلْمٍ. وَ إِنَّما عِلْمُ الْغَيْبِ عِلْمُ السّاعَةِ، وَ ما عَدَّدَهُ اللَّهُ سُبْحانَهُ بِقَوْلِهِ: «إِنَّ اللّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السّاعَةِ، وَ يُنَزِّلُ الْغَيْثُ، وَ يَعْلَمُ ما فِى الاْرْحامِ، وَ لاتَدْرى نَفْسٌ ماذا تَكْسِبُ غَداً، وَ ما تَدْرى نَفْسٌ بِاَىِّ اَرْض تَموتُ...
». فَيَعْلَمُ الله سُبْحَانَهُ مَا فِي الْأَرْحَامِ مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثى، وَ قَبِيحٍ أَوْ جَمِيلٍ، وَ سَخِيِّ أَوْ بَخِيلٍ، وَ شَقِيِّ أَوْ سَعِيدٍ، وَ مَنْ يَكُونُ فِي النّارِ حَطَبا، أَوْ فِي الْجِنانِ لِلنَّبِيِّينَ مُرافِقاً. فَهذا عِلْمُ الْغَيْبِ الَّذِي لاَ يَعْلَمُهُ أَحَدٌ إِلا اللَّهُ. وَ ما سِوى ذلِكَ فَعِلْمٌ عَلَّمَهُ اللَّهُ نَبِيَّهُ فَعَلَّمَنِيهِ، وَ دَعا لِي بِأَنْ يَعِيَهُ صَدْرِي، وَ تَضْطَمَّ عَلَيْهِ جَوانِحِي.
বসরায় সংঘটিত গুরত্বপূর্ণ ঘটনাবলী সম্পর্কে
হে আহনাফ ,আমি যেন দেখতে পাচ্ছি ,সে একদল সৈন্যসহ এগিয়ে আসছে এবং তাতে কোন ধুলি উড়ছে না ,কোন শব্দ হচ্ছে না ,লাগামের মর্মর ধ্বনি হচ্ছে না বা ঘোড়ার হ্রেষারব হচ্ছে না। তারা মাটিকে পদদলিত করছে ,পাগুলো যেন উট পাখীর পা।
শরীফ রাজী বলেনঃ আমিরুল মোমেনিন সাহিবুজ জানাজ
অর্থাৎ নিগ্রো নেতার প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বললেনঃ
বসরার বসতিপূর্ণ রাস্তার লোকসকল এবং শকুনের পাখার মতো পক্ষযুক্ত ও হাতির শুড়যুক্ত সুসজ্জিত বাড়ীর লোক সকল ,তোমাদের ওপর লানত। তারা এমন লোক যাদের মধ্য থেকে কেউ নিহত হলে তার জন্য শোক করার কেউ নেই অথবা কেউ হারিয়ে গেলে তাকে খোজার কেউ নেই। আমি দুনিয়াকে তার মুখের ওপর উল্টিয়ে দিয়েছি (উপুড় করে ফেলা) ,সর্বনিম্ন মূল্যে তাকে মূল্যায়ন করি এবং এমন চোখে তার দিকে তাকাই যা তার উপযুক্ত।
আমি এমন লোককে
দেখি যাদের মুখমণ্ডল বর্মের অমসৃণ চামড়ার মত । তারা সিল্ক ও পশমি পোষাক পরিধান করে এবং সুন্দর সুন্দর ঘোড়ায় চড়ে। তারা এমন হত্যাযজ্ঞ ও রক্তপাত ঘটাবে যে ,আহতরা লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবে এবং বন্দী অপেক্ষা পলাতকের সংখ্যা কম হবে।
আমিরুল মোমেনিনের একজন সাথী (বনি কালবের একজন লোক) বললো ,“
হে আমিরুল মোমেনিন ,আপনি আমাদেরকে গুপ্ত বিষয়ের জ্ঞান দান করেছেন। ” এ কথা শুনে আমিরুল মোমেনিন হেসে উঠে বললেনঃ
হে কালবের ভ্রাতা ,এটা ইলমুল গায়েব (গুপ্ত জ্ঞান) নয় ;এসব বিষয় তার কাছ থেকে অর্জন করেছি যিনি (রাসূল) এ বিষয় জানতেন। ইলমুল গায়েব অর্থ হলো বিচার দিনের জ্ঞান এবং নিম্নের আয়াতের আওতায় যেসব বিষয় আল্লাহ গুপ্ত রেখেছেনঃ
কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে ,তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনি জানেন যা জরায়ুতে আছে । কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে । (কুরআন - ৩১:৩৪) |
সুতরাং গর্ভাশয়ে যা আছে - পুরুষ কী নারী ,সুন্দর কী কুৎসিত ,দয়ালু কী কৃপণ ,দুর্বৃত্ত কী ধার্মিক ,দোযখের জ্বালানি কী বেহেশতে রাসূলের অনুচর। এসব কিছু শুধু আল্লাহই জ্ঞাত আছেন। এটাই ইলমুল গায়েব যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। এসব ছাড়া যে জ্ঞান আল্লাহ তাঁর রাসূলকে দান করেছিলেন তা তিনি আমাকে দান করেছেন এবং আমার জন্য দোয়া করে বলেছেন যে ,আমার বক্ষে যেন তা থাকে ও আমার পাজরা যেন তা ধারণ করতে পারে।
____________________
খোৎবা -
১২৮
عِبادَ اللَّهِ، إِنَّكُمْ -وَ ما تَأْمُلُونَ مِنْ هَذِهِ الدُّنْيا
- أَثْوِيأُ مُؤَجَّلُونَ، وَ مَدِينُونَ مُقْتَضَوْنَ، أَجَلٌ مَنْقُوصٌ: وَ عَمَلٌ مَحْفُوظٌ، فَرُبَّ دَائِبٍ مُضَيَّعٌ، وَرُبَّ كادِحٍ خَاسِرٌ. وَ قَدْ أَصْبَحْتُمْ فِي زَمَنٍ لا يَزْدادُ الْخَيْرُ فِيهِ إِلا إِدْباراً، وَلاالشَّرُّ فِيهِ إِلا إِقْبالاً، وَلاالشَّيْطَانُ فِي هَلاكِ النَّاسِ إلا طَمَعا؛ فَهذا أَوانٌ قَوِيَتْ عُدَّتُهُ، وَ عَمَّتْ مَكِيدَتُهُ، وَ أَمْكَنَتْ فَرِيسَتُهُ. اضْرِبْ بِطَرْفِكَ حَيْثُ شِئْتَ مِنَ النَّاسِ، فَهَلْ تُبْصِرُ إِلاّ فَقِيراً يُكابِدُ فَقْراً، أَوْ غَنِيّا بَدَّلَ نِعْمَةَ اللَّهِ كُفْراً، أَوْ بَخِيلاً اتَّخَذَ الْبُخْلَ بِحَقِّ اللَّهِ وَفْرا، أَوْ مُتَمَرِّداً كَأَنَّ بِأُذُنِهِ عَنْ سَمْعِ الْمَواعِظِ وَقْرا!
أَيْنَ خِيارُكُمْ وَ صُلَحاؤُكُمْ! وَ أَيْنَ أَحْرارُكُمْ وَ سُمَحاؤُكُمْ! وَ أَيْنَ الْمُتَوَرِّعُونَ في مَكاسِبِهِمْ، وَالْمُتَنَزِّهُونَ فِي مَذاهِبِهِمْ! أَلَيْسَ قَدْ ظَعَنُوا جَمِيعا عَنْ هَذِهِ الدُّنْيَا الدَّنِيَّةِ، وَالْعاجِلَةِ الْمُنَغِّصَةِ! وَ هَلْ خُلِقْتُمْ إِلاّ فِي حُثالَةٍ لا تَلْتَقِي إلا بِذَمِّهِمُ الشَّفَتانِ اسْتِصْغارا لِقَدْرِهِمْ، وَ ذَهابا عَنْ ذِكْرِهِمْ!
فَإِنّا لِلّهِ وَ إِنّا إِلَيْهِ راجِعُونَ
ظَهَرَ الْفَسادُ، فَلا مُنْكِرٌ مُغَيِّرٌ، وَ لا زاجِرٌ مُزْدَجِرٌ. أَفَبِهذا تُرِيدُونَ أَنْ تُجاوِرُوا اللَّهَ فِي دارِ قُدْسِهِ، وَ تَكُونُوا أَعَزَّ أَوْلِيائِهِ عِنْدَهُ؟ هَيْهاتَ! لا يُخْدَعُ اللَّهُ عَنْ جَنَّتِهِ، وَ لا تُنالُ مَرْضاتُهُ إِلا بِطاعَتِهِ. لَعَنَ اللَّهُ الْآمِرِينَ بِالْمَعْرُوفِ التّارِكِينَ لَهُ، وَالنّاهِينَ عَنِ الْمُنْكَرِ الْعامِلِينَ بِهِ.
দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ীত্ব ও এর মানুষের অবস্থা সম্পর্কে
হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা এবং এ দুনিয়া থেকে তোমরা যা কিছু কামনা কর তা সবই নির্ধারিত সময়ের অতিথি মাত্র এবং ঋণদাতার মতো যে শুধু ঋণ পরিশোধের জন্য আহবান করে। তোমাদের জীবনকাল ক্রমশ কমে আসছে আর তোমাদের আমলের রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে। অনেক উদ্যমী লোক সময়ের অপচয় করছে এবং যারা সচেষ্ট তাদের অনেকেই ক্ষতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। তোমরা এমন এক সময় আছো যখন সৎগুণাবলী ও ধার্মিকতার অবক্ষয় হচ্ছে ,পাপ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং মানুষের ধ্বংসের জন্য শয়তান অত্যাগ্রহী হয়ে পড়ছে। বর্তমান সময়ে শয়তানের সরঞ্জাম শক্তিশালী ,তার ফাঁদ সুবিস্তৃত এবং তার শিকার ধরা সহজসাধ্য হয়ে পড়েছে। যেদিকে ইচ্ছা মানুষের দিকে তাকাও ,দেখতে পাবে হয় দারিদ্র - নিষ্পেষিত দরিদ্র লোক ,না হয় ধনীলোক যারা আল্লাহর নেয়ামত ভোগ করা সত্ত্বেও তাকে উপেক্ষা করছে ,না হয় কৃপণ লোক ,যে আল্লাহর প্রতি দায়িত্ব পদদলিত করে সম্পদ বৃদ্ধি করছে ,না হয় অবাধ্য লোক ,যে সকল প্রকার উপদেশ থেকে কানকে রুদ্ধ রাখছে।
কোথায় তোমাদের কল্যাণকামী লোকসকল ;কোথায় তোমাদের ন্যায়বানগণ ? কোথায় তোমাদের আদর্শবাদী ও দয়াদ্রাচিত্ত লোকসকল ? কোথায় তোমাদের সেসব লোক যারা ব্যবসায়ে প্রতারণা করে না এবং তাদের আচরণে তারা পরিশুদ্ধ। তারা সবাই কি এ অমর্যাদাকর ,ক্ষণস্থায়ী ও বিপদজনক দুনিয়া থেকে প্রস্থান করেনি ? তোমাদেরকে কি সেসব লোকের মধ্যে রেখে যায়নি যারা নিচ - নোংরা - যারা এত নিচ যে ,তাদের কথা মুখে আনা যায় না - যাদের নিচতার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে ঠোঁট নড়ে না। আমরাতো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবেই তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী (কুরআন - ২:১৫৬)
ফেতনা ছড়িয়ে পড়েছে এর বিরোধিতা বা গতিরোধ করার মত কাউকে দেখছিনা এর প্রতি বিরাগ সৃষ্টিকারী বা বিরতকারী কাউকে তো দেখছিনা । এসব গুণাবলী নিয়েই কি তোমরা আল্লাহর পবিত্র সান্নিধ্য কামনা কর ও তার একনিষ্ঠ প্রেমিক হতে চাও ? আফসোস! আল্লাহকে তার বেহেশতে সম্পর্কে ছলান করা যায়না এবং তার আনুগত্য ব্যতিরেকে তার রহমত লাভ করা যায় না। তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ যারা অন্যকে ভাল উপদেশ দেয় কিন্তু নিজে তা করে না এবং যারা অন্যকে বাধা দেয় কিন্তু নিজে পাপে লিপ্ত।