খোৎবা
-
১৭০
لَمَا عَزَمَ عَلى لِقأِ ألْقَوْم بِصِفِّينَ
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّقْفِ الْمَرْفُوعِ، وَالْجَوِّ الْمَكْفُوفِ، الَّذِي جَعَلْتَهُ مَغِيضاً لِلَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَ مَجْرًى لِلشَّمْسِ وَالْقَمَرِ، وَ مُخْتَلَفا لِلنُّجُومِ السَّيَّارَةِ؛ وَ جَعَلْتَ سُكَّانَهُ سِبْطا مِنْ مَلاَئِكَتِكَ، لاَ يَسْأَمُونَ مِنْ عِبَادَتِكَ. وَ رَبَّ هَذِهِ الْأَرْضِ الَّتِي جَعَلْتَهَا قَرَارا لِلْأَنَامِ، وَ مَدْرَجاً لِلْهَوَامِّ وَالْأَنْعَامِ، وَ مَا لاَ يُحْصَى مِمَّا يُرَى وَ مَا لاَ يُرَى؛ وَ رَبَّ الْجِبَالِ الرَّوَاسِي الَّتِي جَعَلْتَهَا لِلْأَرْضِ أَوْتَاداً، وَ لِلْخَلْقِ اعْتِمَاداً. إِنْ أَظْهَرْتَنَا عَلَى عَدُوِّنَا فَجَنِّبْنَا الْبَغْيَ وَ سَدِّدْنَا لِلْحَقِّ؛ وَ إِنْ أَظْهَرْتَهُمْ عَلَيْنَا فَارْزُقْنَا الشَّهَادَةَ، وَاعْصِمْنَا مِنَ الْفِتْنَةِ.
أَيْنَ الْمَانِعُ لِلذِّمَارِ، وَالْغَائِرُ عِنْدَ نُزُولِ الْحَقَائِقِ مِنْ أَهْلِ الْحِفَاظِ! الْعَارُ وَرَأَكُمْ وَالْجَنَّةُ أَمَامَكُمْ!
সিফফিনে শত্রুর মুখোমুখি যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রদত্ত খোৎবা
হে আল্লাহ ,আকাশ ও নভোমণ্ডলের তুমিই রক্ষক। তুমি ওদেরকে দিবা ও রাত্রির আশ্রয়স্থল করেছো। তুমিই সূর্য ও চন্দ্রের জন্য কক্ষপথ এবং ঘূর্ণায়মান নক্ষত্ররাজীর চলার পথ তৈরি করেছো এবং ওটা জনাকীর্ণ করার জন্য ফেরেশতা সৃষ্টি করেছো যারা তোমার ইবাদতে কখনো ক্লান্ত হয় না। হে এ পৃথিবীর রক্ষক ,তুমি পৃথিবীকে মানুষের আবাসস্থল করেছো এবং পোকা - মাকড় ,পশু - পাখী ,দৃশ্যমান ও অদৃশ্য অগণন সৃষ্টির বিচরণ ক্ষেত্র করেছো। হে পর্বতমালার ধারক ,তুমিই পর্বতমালাকে পৃথিবীর জন্য পেরেক ও মানুষের জন্য অবলম্বনের উপায় স্বরূপ করেছে। যদি তুমি আমাদেরকে শক্রর ওপর বিজয়ী কর। তবে আমাদেরকে সীমালঙ্ঘন থেকে রক্ষা করো এবং সত্যের সরল পথে প্রতিষ্ঠিত রেখো। আর যদি শক্রকে আমাদের ওপর বিজয়ী কর তবে আমাদেরকে শহীদ হিসাবে গ্রহণ করো এবং ফেতনা থেকে আমাদের রক্ষা করো ।
কোথায় সেসব লোক যারা সম্মান রক্ষা করে এবং কোথায় সেসব আত্ম - সম্মানী লোক যারা সম্মানী লোককে বিপদে সাহায্য করে ? তোমাদের পিছনে লজ্জা আর সম্মুখে জান্নাত রয়েছে।
খোৎবা-১৭১
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي لاَ تُوَارِي عَنْهُ سَمَأٌ سَمَأً، وَ لاَ أَرْضٌ أَرْضاً.
وَ قَدْ قَالَ لِى قَائِلٌ: إِنَّكَ عَلَى هَذَا الْأَمْرِ يَا ابْنَ أَبِي طَالِبٍ لَحَرِيصٌ. فَقُلْتُ: بَلْ أَنْتُمْ وَاللَّهِ لَأَحْرَصُ وَ أَبْعَدُ، وَ أَنَا أَخَصُّ وَ أَقْرَبُ، وَ إِنَّمَا طَلَبْتُ حَقّا لِي وَ أَنْتُمْ تَحُولُونَ بَيْنِي وَ بَيْنَهُ، وَ تَضْرِبُونَ وَجْهِي دُونَهُ. فَلَمَّا قَرَّعْتُهُ بِالْحُجَّةِ فِي الْمَلاَ الْحَاضِرِينَ هَبَّ كَأَنَّهُ بُهِتَ لاَ يَدْرِي مَا يُجِيبُنِي بِهِ!
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَعْدِيكَ عَلَى قُرَيْشٍ وَ مَنْ أَعَانَهُمْ! فَإِنَّهُمْ قَطَعُوا رَحِمِي، وَ صَغَّرُوا عَظِيمَ مَنْزِلَتِيَ، وَ أَجْمَعُوا عَلَى مُنَازَعَتِي أَمْرا هُوَلِي. ثُمَّ قَالُوا: أَلاَ إِنَّ فِي الْحَقِّ أَنْ تَأْخُذَهُ، وَ فِي الْحَقِّ أَنْ تَتْرُكَهُ.
فَخَرَجُوا يَجُرُّونَ حُرْمَةَ رَسُولِ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
كَمَا تُجَرُّ الْأَمَةُ عِنْدَ شِرَائِهَا، مُتَوَجِّهِينَ بِهَا إِلَى الْبَصْرَةِ، فَحَبَسَا نِسَأَهُمَا فِي بُيُوتِهِمَا وَ أَبْرَزَا حَبِيسَ رَسُولِ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
لَهُمَا وَ لِغَيْرِهِمَا. فِي جَيْشٍ مَا مِنْهُمْ رَجُلٌ إِلا وَ قَدْ أَعْطَانِي الطَّاعَةَ، وَ سَمَحَ لِي بِالْبَيْعَةِ طَائِعاً غَيْرَ مُكْرَهٍ، فَقَدِمُوا عَلَى عَامِلِي بِهَا وَ خُزَّانِ بَيْتِ مَالِ الْمُسْلِمِينَ وَ غَيْرِهِمْ مِنْ أَهْلِهَا فَقَتَلُوا طَائِفَةً صَبْراً، وَ طَائِفَةً غَدْرا. فَوَاللَّهِ لَوْ لَمْ يُصِيبُوا مِنَ الْمُسْلِمِينَ إِلا رَجُلاً وَاحِداً مُعْتَمِدِينَ لِقَتْلِهِ، بِلاَ جُرْمٍ جَرَّهُ لَحَلَّ لِي قَتْلُ ذَلِكَ الْجَيْشِ كُلِّهِ، إِذْ حَضَرُوهُ فَلَمْ يُنْكِرُوا وَ لَمْ يَدْفَعُوا عَنْهُ بِلِسَانٍ وَ لاَ بِيَدٍ. دَعْ مَا أَنَّهُمْ قَدْ قَتَلُوا مِنَ الْمُسْلِمِينَ مِثْلَ الْعِدَّةِ الَّتِي دَخَلُوا بِهَا عَلَيْهِمْ!
উমরের মৃত্যুর পর গঠিত পরামর্শক পর্ষদ ও জামালের যুদ্ধের লোকদের সম্পর্কে
প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর যার দৃষ্টি থেকে একটা আকাশ অন্যটিকে এবং একটা পৃথিবী অন্যটিকে গোপন করে রাখতে পারে না ।
কেউ একজন আমাকে বললো ,“
হে আবি তালিবের পুত্র ,তুমি খেলাফতের জন্য লোভাতুর
হয়ে পড়েছো। ” আমি তাকে বললামঃ আল্লাহর কসম ,তুমিই বরং অনেক দূরবর্তী (অনধিকারী) হওয়া সত্ত্বেও অধিক লোভাতুর । অপরপক্ষে ,আমি এর সুযোগ্য ও নিকটবর্তী (অধিকারী) । আমি আমার অধিকার হিসাবে খেলাফত দাবি করেছি। অপরপক্ষে ,আমার ও খেলাফতের মধ্যে তোমরা অবৈধ হস্তক্ষেপ করছো এবং আমার মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে দিচ্ছো । যখন আমি উপস্থিত জনতার সম্মুখে যুক্তি দ্বারা তার কানে আঘাত করলাম তখন সে চমকে উঠলো এবং কী জবাব দেবে তা খুঁজে না পেয়ে যেন হতবুদ্ধি হয়ে গেল ।
হে আল্লাহ কুরাইশ ও তাদের সাহায্যকারীদের বিরুদ্ধে আমি তোমার সাহায্য প্রার্থনা করি। তারা আমার আত্মীয়তার অধিকার অস্বীকার করেছে ,আমার মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে এবং খেলাফতের ব্যাপারে আমার বিরোধিতার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। অথচ খেলাফত আমার অধিকার । তারপর তারা আমাকে বললো ,“
জেনে রাখো ,তোমার খেলাফত পাওয়া অথবা তা পরিত্যাগ করা - দু - ই ন্যায়সঙ্গত
। ”
তারা (তালহা ,জুবায়ের ও তাদের সমর্থকগণ) আল্লাহর রাসূলের স্ত্রীকে এমনভাবে হেঁচড়িয়ে বের করে এনেছিল যেন কোন ক্রীতদাসীকে বিক্রির জন্য নেয়া হচ্ছিলো। তারা তাকে বসরা নিয়ে গিয়েছিল যেখানে ওদুটোর (তালহা ও জুবায়ের) স্ত্রীরা ঘরের মধ্যে ছিল ,কিন্তু আল্লাহর রাসূলের স্ত্রীকে তাদের ও সৈন্যদের মাঝে প্রকাশ্যভাবে নিয়ে এলো। অথচ এদের মধ্যে একজন লোকও ছিল না যারা স্বেচ্ছায় ও বিনা বাধ্যবাধকতায় আমার হাতে বায়াত গ্রহণ করেনি। বসরায় এসে তারা আমার গভর্ণর ,কোষাধ্যক্ষ ও অন্যান্য অধিবাসীকে আমার বিরোধিতা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। তারা কতেক লোককে আটক করে এবং কতেক লোককে বিশ্বাসঘাতকতা করে হত্যা করেছিল। আল্লাহর কসম ,যদি তারা বিনা দোষে ইচ্ছাকৃতভাবে একজন মুসলিমকেও হত্যা করে থাকে তবে তাদের সকল সৈন্যকে হত্যা করা আমার জন্য বৈধ হবে। কারণ ,তারা বিনা দোষে হত্যায় উপস্থিত ছিল কিন্তু দ্বীমত পোষণ করেনি এবং মুখে অথবা হাতে কোন প্রকার বাধার সৃষ্টি করেনি। বিনা দোষে মুসলিমগণকে হত্যা করার জন্য যে সংখ্যক লোক এগিয়ে এসেছিল তাদের কথা বলাই বাহুল্য।
_________________
খোৎবা -
১৭২
خصائص القائد الاسلامی
أَمِينُ وَحْيِهِ، وَ خَاتَمُ رُسُلِهِ، وَ بَشِيرُ رَحْمَتِهِ، وَ نَذِيرُ نِقْمَتِهِ.
أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ أَحَقَّ النَّاسِ بِهذَا الْأَمْرِ أَقْوَاهُمْ عَلَيْهِ، وَ أَعْلَمُهُمْ بِأَمْرِ اللَّهِ فِيهِ. فَإِنْ شَغَبَ شاغِبٌ اسْتُعْتِبَ فَإِنْ أَبَى قُوتِلَ. وَ لَعَمْرِي لَئِنْ كانَتِ الْإِمَامَةُ لا تَنْعَقِدُ حَتَّى تَحْضُرَها عَامَّةُ النَّاسِ فَما إِلَى ذلِكَ سَبِيلٌ، وَ لَكِنْ أَهْلُها يَحْكُمُونَ عَلَى مَنْ غابَ عَنْها، ثُمَّ لَيْسَ لِلشَّاهِدِ أَنْ يَرْجِعَ، وَ لا لِلْغائِبِ أَنْ يَخْتارَ. أَلا وَ إِنِّي أُقاتِلُ رَجُلَيْنِ: رَجُلاً ادَّعَى مَا لَيْسَ لَهُ، وَ آخَرَ مَنَعَ الَّذِي عَلَيْهِ. أُوصِيكُمْ عِبادَ اللَّهِ بِتَقْوَى اللَّهِ، فَإِنَّها خَيْرُ ما تَواصَى الْعِبَادُ بِهِ، وَ خَيْرُ عَواقِبِ الْأُمُورِ عِنْدَ اللَّهِ. وَ قَدْ فُتِحَ بابُ الْحَرْبِ بَيْنَكُمْ وَ بَيْنَ أَهْلِ الْقِبْلَةِ، وَ لا يَحْمِلُ هَذَا الْعَلَمَ إِلا أَهْلُ الْبَصَرِ وَالصَّبْرِ وَالْعِلْمِ بِمَواضِعِ الْحَقِّ، فَامْضُوا لِما تُؤْمَرُونَ بِهِ، وَقِفُوا عِنْدَ، مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ، وَ لا تَعْجَلُوا فِي أَمْرٍ حَتَّى تَتَبَيَّنُوا، فإِنَّ لَنا مَعَ كُلِّ أَمْرٍ تُنْكِرُونَهُ غِيَراً.
التحذیر من غدر الدنیا
أَلا وَ إِنَّ هذِهِ الدُّنْيَا الَّتِي أَصْبَحْتُمْ تَتَمَنَّوْنَها وَ تَرْغَبُونَ فِيهَا، وَ أَصْبَحَتْ تُغْضِبُكُمْ وَ تُرْضِيكُمْ، لَيْسَتْ بِدارِكُمْ وَ لا مَنْزِلِكُمُ الَّذِي خُلِقْتُمْ لَهُ، وَ لا الَّذِي دُعِيتُمْ إِلَيْهِ. أَلا وَ إِنَّهَا لَيْسَتْ بِباقِيَةٍ لَكُمْ، وَ لا تَبْقَوْنَ عَلَيْها، وَ هِيَ وَ إِنْ غَرَّتْكُمْ مِنْهَا فَقَدْ حَذَّرَتْكُمْ شَرَّها. فَدَعُوا غُرُورَها لِتَحْذِيرِها، وَ أَطْماعَها لِتَخْوِيفِها، وَ سابِقُوا فِيها إِلَى الدَّارِ الَّتِي دُعِيتُمْ إِلَيْها وَانْصَرِفُوا بِقُلُوبِكُمْ عَنْها. وَ لا يَخِنَّنَّ أَحَدُكُمْ خَنِينَ الْأَمَةِ عَلى ما زُوِيَ عَنْهُ مِنْها، وَاسْتَتِمُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ بِالصَّبْرِ عَلَى طاعَةِ اللَّهِ، وَالْمُحافَظَةِ عَلَى مَا اسْتَحْفَظَكُمْ مِنْ كِتابِهِ.
أَلا وَ إِنَّهُ لا يَضُرُّكُمْ تَضْيِيعُ شَيْءٍ مِنْ دُنْياكُمْ بَعْدَ حِفْظِكُمْ قائِمَةَ دِينِكُمْ. أَلا وَ إِنَّهُ لا يَنْفَعُكُمْ بَعْدَ تَضْيِيعِ دِينِكُمْ شَيْءٌ حافَظْتُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَمْرِ دُنْياكُمْ. أَخَذَ اللَّهُ بِقُلُوبِنا وَ قُلُوبِكُمْ إِلَى الْحَقِّ، وَ أَلْهَمَنا وَ إِيَّاكُمُ الصَّبْرَ!.
খেলাফতের যোগ্যতা দুনিয়ার আচরণ সম্পর্কে
খেলাফতেরা যোগ্যতা সম্পর্কে
রাসূল (সা.) ছিলেন আল্লাহর প্রত্যাদেশের আমানতদার ,খাতামুল আম্বিয়া ,আল্লাহুর রহমতের সুসংবাদ প্রদানকারী এবং তাঁর কঠোর শাস্তি সম্বন্ধে সতর্ককারী।
হে জনমণ্ডলী ,খেলাফতের ব্যাপারে সে ব্যক্তি সব চাইতে উপযুক্ত যে তা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে সক্ষম এবং যে এ বিষয়ে আল্লাহর আদেশ - নিষেধ উত্তমরূপে জ্ঞাত আছে। যদি কোন ফেতনা সৃষ্টিকারী ফেতনা সৃষ্টি করে তাকে তওবা করতে বলতে হবে। যদি সে তওবা করতে অস্বীকার করে তবে প্রয়োজনে তার সাথে যুদ্ধ করতে হবে। আমার জীবনের শপথ
যদি ইমামতের (নেতৃত্বের) প্রশ্নে সকল লোক উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হয়ে থাকে। তবে এমন ঘটনা (ইমাম নিয়োগ) ঘটেনি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ,যারা সেই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছিল তারা অনুপস্থিতগণের ওপর তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিল। এমন অবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছিল যে ,যারা উপস্থিত ছিল তাদের ভিন্নমত পোষণ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের অন্য কাউকে মনোনীত করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জেনে রাখো ,আমি দুব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো - তাদের একজন হলো সেব্যক্তি যে এমন কিছু দাবি করে যা তার নয় এবং অপর ব্যক্তি হলো সে যে তার নিজের দায়িত্বকে উপেক্ষা করে ।
হে আল্লাহর বান্দাগণ ,আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি। আল্লাহকে ভয় করার জন্য ,কারণ পরস্পরের প্রতি এটাই সর্বোৎকৃষ্ট উপদেশ এবং আল্লাহর দরবারে সবকিছু থেকে এটাই উত্তম। তোমাদের ও অন্যান্য মুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ বাধানোর জন্য দরজা খুলে দেয়া হয়েছে এবং এ ঝাণ্ডা এমন এক ব্যক্তি বহন করবে। যিনি দৃষ্টিমান ,ধৈর্যশীল ও ন্যায়পরায়ণতার অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞানবান। সুতরাং তোমাদেরকে যা বলা হয়েছে সেদিকে এগিয়ে যাওয়া এবং যা কিছু থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে তা প্রতিহত করা তোমাদের উচিত। কোন ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না যে পর্যন্ত না তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে পার। কারণ তোমরা যা অপছন্দ কর তা পরিবর্তন করার অধিকার আমাদের রয়েছে।
দুনিয়ার প্রতারণা সম্পর্কে সতর্কবাণী
জেনে রাখো ,এ দুনিয়াকে তোমরা প্রবলভাবে কামনা কর এবং একে পেতে তোমরা দারুণভাবে লালায়িত যা তোমাদেরকে কখনো ক্রুদ্ধ করে ,কখনো আনন্দ দান করে। অথচ এটা তোমাদের স্থায়ী আবাসস্থল নয় এবং যে স্থানে থাকার জন্য তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে এটা সে স্থলও নয় এবং এর প্রতি তোমাদেরকে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। মনে রেখো ,দুনিয়া তোমাদের চিরস্থায়ী সঙ্গী হবে না এবং তোমরাও একে নিয়ে চিরদিন বেঁচে থাকবে না। এ দুনিয়ার কোন কিছুর আকর্ষণ যদি তোমাদেরকে প্রভাবিত করে তবে তার কুফলও তোমাদেরকে সতর্ক করে। তোমাদের সকলের উচিত। এর আকর্ষণ পরিহার করে সতর্কাদেশ গ্রহণ করা এবং এর প্রভাব পরিহার করে আতঙ্ক গ্রহণ করা। যতক্ষণ এখানে থাকো দুনিয়া হতে হৃদয়কে ফিরিয়ে রেখো এবং সেই ঘরের দিকে এগিয়ে যাও যার প্রতি তোমাদেরকে আহবান করা হয়েছে। ক্রীতদাসী কোন কিছু হতে বঞ্চিত হলে যেভাবে ক্রন্দন করে সেভাবে (দুনিয়ার জন্য) ক্রন্দন করা তোমাদের উচিত নয়। ধৈর্যসহকারে আল্লাহর অনুগত হয়ে এবং তাঁর কিতাবের হেফাজত করে (যা তিনি বলেছেন) তাঁর পরিপূর্ণ নেয়ামত যাচনা কর।
জেনে রাখো ,এ দুনিয়ার কোন কিছু হারিয়ে গেলে তোমাদের কোন ক্ষতি হবে না। যদি তোমরা দ্বীনের নীতিমালার হেফাজত কর। আরো জেনে রাখো ,তোমাদের দ্বীনি হারিয়ে গেলে দুনিয়ার কোন কিছুই তোমাদের উপকারে আসবে না। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের হৃদয়কে ন্যায়মুখী করুন এবং আমাদেরকে ও তোমাদেরকে ধৈর্যধারণ করার তৌফিক দিন ।
____________________
খোৎবা -
১৭৩
فِي مَعْنى طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللّهِ
قَدْ كُنْتُ وَ ما أُهَدَّدُ بِالْحَرْبِ، وَ لا أُرَهَّبُ بِالضَّرْبِ؛ وَ أَنَا عَلَى ما قَدْ وَعَدَنِي رَبِّي مِنَ النَّصْرِ، وَاللَّهِ مَا اسْتَعْجَلَ مُتَجَرِّداً لِلطَّلَبِ بِدَمِ عُثْمَانَ إِلا خَوْفا مِنْ أَنْ يُطالَبَ بِدَمِهِ، لِأَنَّهُ مَظِنَّتُهُ، وَ لَمْ يَكُنْ فِي الْقَوْمِ أَحْرَصُ عَلَيْهِ مِنْهُ، فَأَرادَ أَنْ يُغالِطَ بِمَا أَجْلَبَ فِيهِ لِيَلْتَبِسَ الْأَمْرُ وَ يَقَعَ الشَّكُّ، وَ وَاللَّهِ ما صَنَعَ فِي أَمْرِ عُثْمَانَ واحِدَةً مِنْ ثَلاَثٍ: لَئِنْ كانَ ابْنُ عَفَّانَ ظالِماً كَما كانَ يَزْعُمُ لَقَدْ كَانَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يُوازِرَ قاتِلِيهِ، أو يُنابِذَ ناصِرِيهِ. وَ لَئِنْ كانَ مَظْلُوما لَقَدْ كانَ يَنْبَغِي لَهُأَنْ يَكُونَ مِنَ الْمُنَهْنِهِينَ عَنْهُ، وَالْمُعَذِّرِينَ فِيهِ. وَ لَئِنْ كانَ فِي شَكِّ مِنَ الْخَصْلَتَيْنِ لَقَدْ كانَ يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَعْتَزِلَهُ وَ يَرْكُدَ جَانِباً، وَ يَدَعَ النَّاسَ مَعَهُ، فَما فَعَلَ واحِدَةً مِنَ الثَّلاَثِ، وَ جأَ بِأَمْرٍ لَمْ يُعْرَفْ بابُهُ، وَ لَمْ تَسْلَمْ مَعاذِيرُهُ.
তালহা ইবনে উবায়দিল্লাহ সম্পর্কে
আমিরুল মোমেনিন যখন সংবাদ পেলেন যে ,তালহা ও জুবায়ের তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বসরা অভিমুখে যাত্রা করেছে তখন তিনি তালহা ইবনে উবায়দিল্লাহ সম্পর্কে বলেনঃ
আমি কখনো যুদ্ধের জন্য ভীত হইনি বা ন্যায়ের স্বার্থে আঘাত করতে ভয় পাইনি। কারণ আমার প্রতি আল্লাহর সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আমি সন্তুষ্ট। আল্লাহর কসম ,তালহা তাড়াহুড়া করে উসমানের রক্তের বদলা নেয়ার ধুয়া তুলে তরবারি উন্মুক্ত করেছে। এ ভয়ে যে ,পাছে উসমানের রক্তের দায় - দায়িত্ব তার ঘাড়ে পড়ে। কারণ এ ব্যাপারে তার সম্বন্ধে জনগণের ধারণা ও প্রকৃত অবস্থা হলো উসমানকে হত্যা করার জন্য তালহা সবচাইতে বেশি উদ্বীগ্ন ছিল। সুতরাং সে সৈন্য সংগ্রহ করে তার দায় - দায়িত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সংশয় ও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে এবং বিষয়টিতে তালগোল পাকিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। আল্লাহর কসম ,উসমান সম্বন্ধে তিনটি পথের কোনটিতেই সে কাজ করেনি। প্রথমতঃ তালহার বিশ্বাস অনুযায়ী ইবনে আফফান (উসমান) । যদি অন্যায় করে থাকে। তবে তালহার জন্য প্রয়োজনীয় হলো তাদের সমর্থন করা যারা উসমানকে হত্যা করেছে অথবা উসমানের সমর্থকদের থেকে দূরে সরে থাকা । দ্বিতীয়তঃ যদি উসমান জুলুমের শিকার হয়ে থাকে তাহলে তালহা তাদের মধ্যে ছিল যারা উসমানকে আক্রমণের সময় দূরে সরে ছিল অথবা নানা প্রকার ওজর উত্থাপন করেছিল। তৃতীয়তঃ যদি এ দুটি বিকল্পে তালহার কোন সংশয় থাকতো তাহলে তালহার অবশ্য কর্তব্য ছিল উসমানকে পরিত্যাগ করা ও একদিকে সরে পড়া। কিন্তু সে এ তিনটি পথের কোনটি অবলম্বন করেনি। বরং এমন একটা জিনিস নিয়ে এসেছে যাতে কোন মঙ্গল নেই এবং তার কোন ওজর গ্রহণযোগ্য নয় ।
খোৎবা -
১৭৪
تفریح الغافلین
أَيُّهَا النَّاسُ غَيْرُالْمَغْفُولِ عَنْهُمْ، وَالتَّارِكُونَ والْمَأْخُوذُ مِنْهُمْ. ما لِي أَراكُمْ عَنِ اللَّهِ ذاهِبِينَ، وَ إِلى غَيْرِهِ راغِبِينَ! كَأَنَّكُمْ نَعَمٌ أَراحَ بِها سائِمٌ إِلى مَرْعًى وَبِيِّ، وَ مَشْرَبٍ دَوِيِّ. وَ إِنَّما هِيَ كَالْمَعْلُوفَةِ لِلْمُدَى، لا تَعْرِفُ ماذا يُرادُ بِها! إِذا أُحْسِنَ إِلَيْها، تَحْسَبُ يَوْمَها دَهْرَها، وَ شِبَعَها أَمْرَهَا.
علوم الإمام علیعليهالسلام
الواسعة
وَاللَّهِ لَوْ شِئْتُ أَنْ أُخْبِرَ كُلَّ رَجُلٍ مِنْكُمْ بِمَخْرَجِهِ، وَ مَوْلِجِهِ وَ جَمِيعِ شَأْنِهِ لَفَعَلْتُ، وَ لَكِنْ أَخافُ أَنْ تَكْفُرُوا فِيَّ بِرَسُولِ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
. أَلا وَ إِنِّي مُفْضِيهِ إِلَى الْخَاصَّةِ مِمَّنْ يُؤْمَنُ ذلِكَ مِنْهُ. وَالَّذِي بَعَثَهُ بِالْحَقِّ، وَاصْطَفاهُ عَلَى الْخَلْقِ، ما أَنْطِقُ إِلا صادِقاً، وَقَدْ عَهِدَ إِلَيَّ بِذلِكَ كُلِّهِ، وَ بِمَهْلَكِ مَنْ يَهْلِكُ، وَ مَنْجى مَنْ يَنْجُو، وَ مَآلِ هَذا الْأَمْرِ. وَ ما أَبْقَى شَيْئا يَمُرُّ عَلَى رَأْسِي إِلا أَفْرَغَهُ فِي أُذُنِي، وَ أَفْضَى بِهِ إِلَيَّ.
أَيُّهَا النَّاسُ، إِنِّي، وَاللَّهِ، ما أَحُثُّكُمْ عَلَى طاعَةٍ إِلا وَ أَسْبِقُكُمْ إِلَيْهَا، وَ لا أَنْهاكُمْ عَنْ مَعْصِيَةٍ إِلا وَ أَتَناهَى قَبْلَكُمْ عَنْها.
গাফেলদের প্রতি সতর্কবাণী ও তার নিজের জ্ঞানের গভীরতা সম্পর্কে
গাফেলদের পরিচয়
হে জনমণ্ডলী ,তোমরা আল্লাহর প্রতি গাফেল হলেও আল্লাহ কখনো তোমাদের প্রতি গাফেল নন। মনে রেখো ,তোমাদের মধ্যে যারা আমলে সালেহা থেকে দূরে সরে থাকে তারা ধৃত হবে। এটা কত দুঃখজনক যে ,তোমরা আল্লাহ থেকে সরে যাচ্ছ এবং অন্য কিছুতে উৎসাহী হয়ে পড়ছো। তোমরা সেসব উটের মতো যাদেরকে তাদের রাখাল মড়ক - লগা চারণ - ভূমি ও খরাপীড়িত শুষ্ক এলাকার দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যায়। তারা সেসব পশুর মতো যাদেরকে ভালোভাবে খাওয়ানো হয়। জবাই করার জন্য ,কিন্তু সেই পশু জানে না কি উদ্দেশ্যে ভালোভাবে খাওয়ানো হচ্ছে। তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে তারা মনে করে এভাবে তাদের সারাজীবন যাবে এবং পেটভরে খাওয়া পাওয়াই তাদের লক্ষ্য।
ইমাম আলীর জ্ঞানের গভীরতা সম্পর্কে
আল্লাহর কসম ,যদি আমি ইচ্ছা করি ,আমি বলে দিতে পারি তোমরা কে কোথা থেকে এসেছো ,কোথায় যাবে এবং তোমাদের সকল কর্মকান্ডের খবর। কিন্তু আমার ভয় হয় এমন করলে পাছে তোমরা আল্লাহর রাসূলকে (সা.) পরিত্যাগ করে আমাকে গ্রহণ করা। নিশ্চয়ই ,আমি এসব বিষয় বাছা - বাছা দু একজনকে জ্ঞাপন করবো যাদের ক্ষেত্রে সে ভয় নেই। সেই আল্লাহর কসম ,যিনি রাসূলকে (সা.) সত্য সহকারে সমগ্র সৃষ্টির ওপর বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত করে প্রেরণ করেছেন ,আমি সত্য ছাড়া কোন কথা বলি না। তিনি (রাসূল) আমাকে এসব জ্ঞান অবহিত করেছেন এবং এমনকি যারা মরে যায় তাদের প্রত্যেকের মৃত্যু সম্বন্ধে ,যাদেরকে মুক্তি প্রদান করা হয় তাদের প্রত্যেকের মুক্তি সম্বন্ধে এবং খেলাফতের পরিণতি সম্বন্ধেও তিনি আমাকে অবহিত করেছেন। আমার মাথার মধ্য দিয়ে যেতে পারে এমন কোন কিছু তিনি আমার কানে না দিয়ে ও আমাকে না বলে রাখেন নি
।
হে জনমণ্ডলী ,আল্লাহর কসম ,আমি নিজে পালন করার পূর্বে কখনো কোন বিষয় পালনের জন্য তোমাদেরকে অনুপ্রাণিত করি না এবং নিজে বিরত থাকার পূর্বে কোন বিষয়ে তোমাদেরকে বিরত থাকতে বলি না ।
__________________
খোৎবা -
১৭৫
وجوب إتّباع الاوامر الإلیهة
انْتَفِعُوا بِبَيانِ اللَّهِ، وَاتَّعِظُوا بِمَواعِظِ اللَّهِ، وَاقْبَلُوا نَصِيحَةَ اللَّهِ. فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ أَعْذَرَ إِلَيْكُمْ بِالْجَلِيَّةِ، وَ أَخَذَ عَلَيْكُمُ الْحُجَّةَ، وَ بَيَّنَ لَكُمْ مَحابَّهُ مِنَ الْأَعْمالِ وَ مَكارِهَهُ مِنْها لِتَتَّبِعُوا هَذِهِ وَ تَجْتَنِبُوا هَذِهِ، فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
كانَ يَقُولُ: «إِنَّ الْجَنَّةَ حُفَّتْ بِالْمَكارِهِ، وَ إِنَّ النَّارَ حُفَّتْ بِالشَّهَواتِ.» وَاعْلَمُوا أَنَّهُ ما مِنْ طاعَةِ اللَّهِ شَيْءٌ إِلا يَأْتِي فِي كُرْهٍ، وَ ما مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ شَيْءٌ إِلا يَأْتِي فِي شَهْوَةٍ، فَرَحِمَ اللَّهُ رَجُلا نَزَعَ عَنْ شَهْوَتِهِ، وَ قَمَعَ هَوى نَفْسِهِ، فَإِنَّ هَذِهِ النَّفْسَ أَبْعَدُ شَيْءٍ مَنْزِعا، وَ إِنَّهَا لا تَزالُ تَنْزِعُ إِلَى مَعْصِيَةٍ فِي هَوىً. وَاعْلَمُوا عِبادَ اللَّهِ أَنَّ الْمُؤْمِنَ لا يُمْسِي وَ لا يُصْبِحُ إِلا وَ نَفْسُهُ ظَنُونٌ عِنْدَهُ، فَلا يَزالُ زارِيا عَلَيْهَا، وَ مُسْتَزِيدا لَها. فَكُونُوا كَالسَّابِقِينَ قَبْلَكُمْ وَالْماضِينَ أَمامَكُمْ، قَوَّضُوا مِنَ الدُّنْيا تَقْوِيضَ الرَّاحِلِ، وَ طَوَوْها طَيَّ الْمَنازِلِ.
هدایة القرآن
وَاعْلَمُوا أَنَّ هَذا الْقُرْآنَ هُوَ النَّاصِحُ الَّذِي لا يَغُشُّ وَالْهادِي الَّذِي لا يُضِلُّ، وَالْمُحَدِّثُ الَّذِي لا يَكْذِبُ، وَ ما جالَسَ هَذا الْقُرْآنَ أَحَدٌ إِلا قامَ عَنْهُ بِزِيادَةٍ أَوْ نُقْصانٍ: زِيادَةٍ فِي هُدىً، وَ نُقْصَانٍ مِنْ عَمىً. وَاعْلَمُوا أَنَّهُ لَيْسَ عَلى أَحَدٍ بَعْدَ الْقُرْآنِ مِنْ فاقَةٍ، وَ لا لِأَحَدٍ قَبْلَ الْقُرْآنِ مِنْ غِنىً، فاسْتَشْفُوهُ مِنْ أَدْوائِكُمْ، وَاسْتَعِينُوا بِهِ عَلَى لَأَوَائِكُمْ، فَإِنَّ فِيهِ شِفأً مِنْ أَكْبَرِ الدَّاءِ: وَ هُوَ الْكُفْرُ وَالنِّفاقُ وَالْغَيُّ وَالضَّلالُ، فَاسْأَلُوا اللَّهَ بِهِ، وَ تَوَجَّهُوا إِلَيْهِ بِحُبِّهِ، وَ لا تَسْأَلُوا بِهِ خَلْقَهُ، إِنَّهُ ما تَوَجَّهَ الْعِبادُ إِلَى اللَّهِ تَعالى بِمِثْلِهِ. وَاعْلَمُوا أَنَّهُ شافِعٌ مُشَفَّعٌ، وَ قائِلٌ مُصَدَّقٌ، وَ أَنَّهُ مَنْ شَفَعَ لَهُ الْقُرْآنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شُفِّعَ فِيهِ، وَ مَنْ مَحَلَ بِهِ الْقُرْآنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صُدِّقَ عَلَيْهِ، فَإِنَّهُ يُنادِي مُنادٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ:«أَلا إِنَّ كُلَّ حارِثٍ مُبْتَلى فِي حَرْثِهِ وَ عاقِبَةِ عَمَلِهِ غَيْرَ حَرَثَةِ الْقُرْآنِ
». فَكُونُوا مِنْ حَرَثَتِهِ وَ أَتْباعِهِ، وَاسْتَدِلُّوهُ عَلَى رَبِّكُمْ وَاسْتَنْصِحُوهُ عَلَى أَنْفُسِكُمْ، وَاتَّهِمُوا عَلَيْهِ آرَأَكُمْ، وَاسْتَغِشُّوا فِيهِ أَهْوَأَكُمْ.
الحث علی العمل و المداومة علیه
الْعَمَلَ الْعَمَلَ، ثُمَّ النِّهايَةَ النِّهَايَةَ، وَالاسْتِقامَةَ الاِسْتِقامَةَ، ثُمَّ الصَّبْرَ الصَّبْرَ، وَالْوَرَعَ الْوَرَعَ!«إِنَّ لَكُمْ نِهايَةً فانْتَهُوا إِلَى نِهايَتِكُمْ»
، وَ إِنَّ لَكُمْ عَلَماً فَاهْتَدُوا بِعَلَمِكُمْ، وَ إِنَّ لِلْإِسْلامِ غَايَةً فَانْتَهُوا إِلَى غايَتِهِ. وَاخْرُجُوا إِلَى اللَّهِ مِمَّا افْتَرَضَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَقِّهِ، وَ بَيَّنَ لَكُمْ مِنْ وَظائِفِهِ. أَنَا شاهِدٌ لَكُمْ وَحَجِيجٌ يَوْمَ الْقِيامَةِ عَنْكُمْ. أَلا وَ إِنَّ الْقَدَرَ السَّابِقَ قَدْ وَقَعَ وَالْقَضَأَ الْماضِيَ قَدْ تَوَرَّدَ؛ وَ إِنِّي مُتَكَلِّمٌ بِعِدَةِ اللَّهِ وَ حُجَّتِهِ، قالَ اللَّهُ تَعَالَى:(
إِنَّ الَّذِينَ قالُوا رَبُّنَا اللّهُ ثُمَّ اسْتَقامُوا تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ الْمَلائِكَةُ أَن لا تَخافُوا وَ لا تَحْزَنُوا وَ أَبْشِرُوا بِالْجَنَّةِ الَّتِي كُنْتُمْ تُوعَدُونَ
)
، وَ قَدْ قُلْتُمْ:«رَبُّنَا اللَّهُ»
، فَاسْتَقِيمُوا عَلَى كِتابِهِ وَ عَلَى مِنْهاجِ أَمْرِهِ وَ عَلَى الطَّرِيقَةِ الصَّالِحَةِ مِنْ عِبادَتِهِ، ثُمَّ لا تَمْرُقُوا مِنْها، وَ لا تَبْتَدِعُوا فِيها، وَ لا تُخالِفُوا عَنْها، فَإِنَّ أَهْلَ الْمُرُوقِ مُنْقَطَعٌ بِهِمْ عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيامَةِ.
ضرورة السیطرة علی اللّسان
ثُمَّ إِيَّاكُمْ وَ تَهْزِيعَ الْأَخْلاقِ وَ تَصْرِيفَها، وَاجْعَلُوا اللِّسانَ وَاحِداً، وَلْيَخْزُنِ الرَّجُلُ لِسانَهُ، فَإِنَّ هَذَا اللِّسانَ جَمُوحٌ بِصاحِبِهِ. وَاللَّهِ ما أَرَى عَبْدا يَتَّقِي تَقْوى تَنْفَعُهُ حَتَّى يَخْزُنَ لِسانَهُ. وَ إِنَّ لِسانَ الْمُؤْمِنِ مِنْ وَرأِ قَلْبِهِ، وَ إِنَّ قَلْبَ الْمُنافِقِ مِنْ وَرأِ لِسانِهِ. لِأَنَّ الْمُؤْمِنَ إِذا أَرادَ أَنْ يَتَكَلَّمَ بِكَلامٍ تَدَبَّرَهُ فِي نَفْسِهِ، فَإِنْ كانَ خَيْرا أَبْدَاهُ، وَ إِنْ كانَ شَرّا واراهُ، وَ إِنَّ الْمُنافِقَ يَتَكَلَّمُ بِما أَتَى عَلى لِسانِهِ، لا يَدْرِي ماذا لَهُ وَ ماذا عَلَيْهِ، وَ قَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
:«لا يَسْتَقِيمُ إِيمَانُ عَبْدٍ حَتَّى يَسْتَقِيمَ قَلْبُهُ، وَ لا يَسْتَقِيمُ قَلْبُهُ حَتَّى يَسْتَقِيمَ لِسَانُهُ»
فَمَنِ اسْتَطاعَ مِنْكُمْ أَنْ يَلْقَى اللَّهَ سُبْحانَهُ وَ هُوَ نَقِيُّ الرَّاحَةِ مِنْ دِمأِ الْمُسْلِمِينَ وَ أَمْوالِهِمْ، سَلِيمُ اللِّسانِ مِنْ أَعْراضِهِمْ فَلْيَفْعَلْ.
اجتناب البدع
وَاعْلَمُوا عِبادَ اللَّهِ أَنَّ الْمُؤْمِنَ يَسْتَحِلُّ الْعامَ ما اسْتَحَلَّ عَاما أَوَّلَ، وَ يُحَرِّمُ الْعامَ ما حَرَّمَ عَاما أَوَّلَ؛ وَ أَنَّ ما أَحْدَثَ النَّاسُ لا يُحِلُّ لَكُمْ شَيْئاً مِمَّا حُرِّمَ عَلَيْكُمْ، وَ لَكِنَّ الْحَلالَ مَا أَحَلَّ اللَّهُ، وَالْحَرامَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ، فَقَدْ جَرَّبْتُمُ الْأُمُورَ وَ ضَرَّسْتُمُوها، وَ وُعِظْتُمْ بِمَنْ كانَ قَبْلَكُمْ، وَ ضُرِبَتِ الْأَمْثالُ لَكُمْ، وَ دُعِيتُمْ إِلَى الْأَمْرِ الْواضِحِ؛ فَلا يَصَمُّ عَنْ ذلِكَ إِلا أَصَمُّ، وَ لا يَعْمَى عَنْهُ إِلا أَعْمَى. وَ مَنْ لَمْ يَنْفَعْهُ اللَّهُ بِالْبَلأِ وَالتَّجارِبِ لَمْ يَنْتَفِعْ بِشَى ءٍ مِنَ الْعِظَةِ وَ أَتاهُ التَّقْصِيرُ مِنْ أَمامِهِ حَتَّى يَعْرِفَ ما أَنْكَرَ، وَ يُنْكِرَ ما عَرَفَ. فَإِنَّ النَّاسَ رَجُلانِ: مُتَّبِعٌ شِرْعَةً، وَ مُبْتَدِعٌ بِدْعَةً، لَيْسَ مَعَهُ مِنَ اللَّهِ بُرْهَانُ سُنَّةٍ، وَ لا ضِيَأُ حُجَّةٍ.
خصائص القرآن
وَ إِنَّ اللَّهَسُبْحانَهُ
لَمْ يَعِظْ أَحَدا بِمِثْلِ هذا الْقُرْآنِ، فَإِنَّهُ«حَبْلُ اللَّهِ الْمَتِينُ»
، وَ سَبَبُهُ الْأَمِينُ، وَ فِيهِ رَبِيعُ الْقَلْبِ، وَ يَنابِيعُ الْعِلْمِ، وَ ما لِلْقَلْبِ جِلأٌ غَيْرُهُ، مَعَ أَنَّهُ قَدْ ذَهَبَ الْمُتَذَكِّرُونَ، وَ بَقِيَ النَّاسُونَ وَالْمُتَناسُونَ، فَإِذا رَأَيْتُمْ خَيْرا فَأَعِينُوا عَلَيْهِ، وَ إِذا رَأَيْتُمْ شَرّا فَاذْهَبُوا عَنْهُ، فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
كَانَ يَقُولُ:«يا ابْنَ آدَمَ اعْمَلِ الْخَيْرَ، وَدَعِ الشَّرَّ، فَإِذا أَنْتَ جَوادٌ قاصِدٌ»
.
أنواع الظلم
أَلا وَإِنَّ الظُّلْمَ ثَلاثَةٌ: فَظُلْمٌ لا يُغْفَرُ(یترک)
، وَ ظُلْمٌ لا يُتْرَكُ، وَ ظُلْمٌ مَغْفُورٌ لا يُطْلَبُ. فَأَمَّا الظُّلْمُ الَّذِي لا يُغْفَرُ فالشِّرْكُ بِاللَّهِ، قالَ اللَّهُتعالی
:(
إِنَّ اللّهَ لا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ
)
. وَ أَمَّا الظُّلْمُ الَّذِي يُغْفَرُ فَظُلْمُ الْعَبْدِ نَفْسَهُ عِنْدَ بَعْضِ الْهَناتِ. وَ أَمَّا الظُّلْمُ الَّذِي لا يُتْرَكُ فَظُلْمُ الْعِبادِ بَعْضِهِمْ بَعْضا. الْقِصاصُ هُناكَ شَدِيدٌ، لَيْسَ هُوَ جَرْحا بِاْلمُدَى، وَ لا ضَرْبا بِالسِّياطِ، وَ لَكِنَّهُ ما يُسْتَصْغَرُ ذلِكَ مَعَهُ، فَإِيَّاكُمْ وَالتَّلَوُّنَ فِي دِينِ اللَّهِ، فَإِنَّ جَماعَةً فِيما تَكْرَهُونَ مِنَالْحَقِّ خَيْرٌ مِنْ فُرْقَةٍ فِيما تُحِبُّونَ مِنَ الْباطِلِ، وَ إِنَّ اللَّهَ سُبْحانَهُ لَمْ يُعْطِ أَحَدا بِفُرْقَةٍ خَيْرا مِمَّنْ مَضَى وَ لا مِمَّنْ بَقِيَ.
يا أَيُّهَا النَّاسُ، طُوبَى لِمَنْ شَغَلَهُ عَيْبُهُ عَنْ عُيُوبِ النَّاسِ، وَ طُوبَى لِمَنْ لَزِمَ بَيْتَهُ، وَ أَكَلَ قُوتَهُ، وَاشْتَغَلَ بِطاعَةِ رَبِّهِ، وَ بَكى عَلَى خَطِيئَتِهِ، فَكانَ مِنْ نَفْسِهِ فِي شُغُلٍ، وَالنَّاسُ مِنْهُ فِي راحَةٍ.
ধর্মোপদেশ , পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব ,
বিদআত পরিত্যাগ এবং অত্যাচারের প্রকারভেদ সম্পর্কে
আল্লাহর নির্দেশ পালনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে
হে আল্লাহর বান্দাগণ ,তোমরা মহিমান্বিত আল্লাহর বাণী থেকে উপকৃত হবার পথ অনুসন্ধান কর। আল্লাহর সতর্কাদেশাবলী মান্য কর এবং তার উপদেশাবলী গ্রাহ্য করে চলো। কারণ তিনি সুস্পষ্টভাবে হেদায়েতের পথ নির্দেশ করে দিয়ে তোমাদের জন্য কোন ওজর উত্থাপনের সুযোগ রাখেননি। যেসকল কর্মকাণ্ড তিনি পছন্দ করেন এবং যা তিনি ঘৃণা করেন তা বিস্তারিত ও স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে তোমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। কাজেই তোমরা অন্য সকল পথ পরিহার করে শুধুমাত্র তাঁর পছন্দনীয় পথেই চলো। আল্লাহর রাসূল বলতেন ,“
অপ্রিয় বস্তু সামগ্রী জান্নাতকে পরিবেষ্টন করে আছে ,অপরপক্ষে কামনাবাসনা জাহান্নামকে ঘিরে আছে। ”
জেনে রাখো ,আল্লাহর আনুগত্য বাহ্যিকভাবে নিরানন্দময় এবং আল্লাহর অবাধ্যতা বাহ্যিকভাবে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য। তার ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় ,যে কামনা - বাসনা থেকে নিজেকে সম্বরণ করতে পেরেছে এবং তার হৃদয়ের ক্ষুধার (আকাঙ্খার) মূলোৎপাটন করতে পেরেছে। কারণ হৃদয়ের দূরদর্শী লক্ষ্য রয়েছে এবং এটা কামনা - বাসনার মাধ্যমে অবাধ্যতার দিকে ধাবিত হয়।
তোমরা আরো জেনে রাখো ,হে আল্লাহর বান্দাগণ ,একজন মোমিনের উচিত সকাল - সন্ধ্যায় তার হৃদয়কে অবিশ্বাস করা । হৃদয়ের দোষ - ত্রুটির জন্য নিন্দাবাদ করা তার উচিত এবং আমলে সালেহায় প্রবৃত্ত হবার জন্য হৃদয়কে সর্বদা শাসনে রাখা উচিত। যারা তোমাদের পূর্বে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে তাদের মতো আচরণ করা তোমাদের উচিত এবং তোমাদের সামনে যেসব নজির রয়েছে সেরূপ আচরণ করা তোমাদের উচিত। তারা পথিকের মতো এ পৃথিবী ত্যাগ করে চলে গেছে এবং দূরত্ব যেমন ঢাকা পড়ে যায়। এরাও তেমন ঢাকা পড়ে গেছে।
পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে
জেনে রাখো ,এ কুরআন এমন উপদেশদাতা যে কখনো প্রতারণা করে না ,এমন নেতা যে কখনো বিপথগামী করে না এবং এমন বর্ণনাকারী যে কখনো মিথ্যা কথা বলে না। যে কুরআন নিয়ে বসে সে উঠে যেতে দুটো জিনিস পেয়ে থাকে - একটা হলো হেদায়েত এবং অপরটা হলো আধ্যাত্মিক অন্ধত্ব বিমোচন। আরো জেনে রাখো ,কুরআন থেকে হেদায়েত প্রাপ্তির পর কারো কোন কিছুর প্রয়োজন হবে না ,আবার কুরআনের হেদায়েত প্রাপ্তির পূর্বে কেউ অভাবমুক্ত হয় না। সুতরাং তোমাদের অসুস্থতার জন্য কুরআন থেকে চিকিৎসা অন্বেষণ কর এবং বিপদে ও দুঃখ - দুর্দশায় এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কর। কুরআনে কঠিনতম রোগের চিকিৎসা রয়েছে ,যেমন - কুফরি ,মোনাফেকি ,বিদ্রোহ ও গোমরাহি। এর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর এবং এর প্রতি ভালোবাসা সঞ্চার করে আল্লাহর দিকে মুখ ফিরাও । এর মাধ্যমে মানুষকে কিছু জিজ্ঞেস করো না। মহিমান্বিত আল্লাহর প্রতি মুখ ফেরাবার জন্য কুরআনের মতো আর কিছু নেই।
জেনে রাখো ,কুরআন হলো মধ্যস্থতাকারী এবং এর মধ্যস্থতা গৃহীত হবে। এটা পরীক্ষিত সত্য বক্তা। কারণ বিচার দিনে কুরআন যার জন্যই মধ্যস্থতা করবে তার জন্য এর মধ্যস্থতা গৃহীত হবে। বিচার দিনে কুরআন যার জন্য খারাপ বলবে তার অবস্থা দুঃখজনক হবে। বিচার দিনে একজন নকিব ঘোষণা করবে ,সাবধান ,কুরআন বপনকারী ব্যতীত সকল বপনকারী বিপদগ্রস্থ। সুতরাং কুরআন বপনকারী ও এর অনুসরণকারী হওয়া তোমাদের একান্ত উচিত। আল্লাহর দিকে পথ নির্দেশক হিসাবে কুরআনকে গ্রহণ করা। তোমাদের নিজেদের জন্যই এর উপদেশ অনুসন্ধান কর। এর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন অভিমতে আস্থা স্থাপন করো না এবং কুরআনের ব্যাপারে তোমাদের কামনা - বাসনাকে ছলনা মনে করো ।
ভাল কাজের প্রতি উৎসাহ
আমল কর! আমল কর। তারপর পরিণতির দিকে লক্ষ্য কর ;লক্ষ্য কর এবং দৃঢ় থাক ;আমলে দৃঢ় থাক। তারপর ধৈর্যধারণ কর ;ধৈর্য এবং তাকওয়া কর ;তাকওয়া । তোমাদের একটা উদ্দেশ্য আছে। সেই উদ্দেশ্যের দিকে অগ্রসর হও । তোমাদের একটা নিদর্শন আছে। সেই নিদর্শন থেকে হেদায়েত গ্রহণ কর। ইসলামের একটা উদ্দেশ্য আছে। এর উদ্দেশ্যের দিকে অগ্রসর হও । আল্লাহর হক আদায় কর এবং যা তিনি আদেশ করেছেন তা পালন করে তার দিকে অগ্রসর হও । তোমাদের ওপর তার দাবি তিনি স্পষ্ট করে বিবৃত করেছেন। আমি তোমাদের সাক্ষী এবং বিচার দিনে তোমাদের পক্ষে ওজর উত্থাপন করে ওকালতি করবো ।
সাবধান!! যা পূর্ব - নির্ধারিত ছিল তা ঘটেছে এবং ভাগ্যলিপিতে যা ছিল তা স্ফুরিত হয়েছে। আল্লাহর প্রতিজ্ঞা ও ওয়াদার ভিত্তিতে আমি তোমাদের সাথে কথা বলছি। মহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ
নিশ্চয়ই যারা বলে আল্লাহ আমাদের রব ,তারপর তাতে স্থির থাকে ,তাদের ওপর ফেরেশতা নাজেল হয় এবং বলে (রব হতে বলা হয়)“
ভীত হয়ো না ,আক্ষেপ করো না। এবং জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ কর যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ” (কুরআন - ৪১:৩)
তোমরা বলেছো ,“
আল্লাহ আমাদের রব। ” এখন তাঁর কিতাবের প্রতি ,তার নির্দেশিত পথের প্রতি এবং তার ইবাদতের প্রতি সুদৃঢ় থাকো। তারপর কখনো এপথ থেকে সরে যেয়ো না ;এতে কোন বিদআতের উদ্ভাবন করো না এবং এর কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। কারণ এ পথ থেকে যারা সরে যায় তারা বিচার দিনে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হবে।
জিহ্বা নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব
সাবধান ,তোমাদের আচার - আচরণকে ধ্বংস ও পরিবর্তন থেকে রক্ষা করার জন্য এক কথায় থেকো। সর্বদা জিহবাকে নিয়ন্ত্রণে রেখো। কারণ জিহবা দুর্দমনীয়। আল্লাহর কসম ,আল্লাহকে ভয় করে কোন লোক উপকৃত হতে পারে না যে পর্যন্ত না সে জিহবাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। নিশ্চয়ই ,মোমিনের জিহবা তার হৃদয়ের পিছনে ;আর মোনাফিকের হৃদয় তার জিহবার পিছনে। কারণ মোমিন যখন কিছু বলতে চায় তখন সে তা মনে মনে চিন্তা - ভাবনা করে বলে। যদি তার মনে হয় কোন কিছু ভালো তখন সে তা প্রকাশ করে ;আর যদি মনে করে খারাপ তখন তা গোপন রাখে - প্রকাশ করে না। অপরপক্ষে ,মোনাফিকের মুখে যা আসে তা - ই বলে ফেলে। কোনটা তার পক্ষে ও কোনটা বিপক্ষে এটা সে চিন্তাও করে না |
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেনঃ
হৃদয় সুদৃঢ় না হওয়া পর্যন্ত কারো ইমান দৃঢ় হয় না এবং জিহ্বা সুদৃঢ় না হওয়া পর্যন্ত কারো হৃদয় দৃঢ় হয় না । সুতরাং তোমাদের মধ্যে কেউ যদি মুসলিমদের রক্ত ও সম্পদ দ্বারা হাত কলঙ্কিত না করে এবং তার জিহবা থেকে তাদেরকে নিরাপদ রেখে আল্লাহর সাক্ষাত লাভের ব্যবস্থা করতে পারে তবে সে যেন তা করে ।
বিদআত পরিহার করা প্রসঙ্গে
হে আল্লাহর বান্দাগণ জেনে রাখো ,একজন মোমিন গত বছর যেটাকে হালাল মনে করেছে ,এ বছরও সেটাকে হালাল মনে করবে এবং গত বছর যেটাকে হারাম মনে করেছে ,এবছরও সেটাকে হারাম মনে করবে। নিশ্চয়ই ,মানুষের উদ্ভাবিত বিদআত হালাল করা যাবে না যা হারাম বলে ঘোষিত হয়েছে। বরং হালাল হলো তা যা আল্লাহ হালাল করেছেন এবং হারাম হলো তা যা আল্লাহ হারাম করেছেন। হালাল বিষয়গুলো তোমাদের দ্বারা পরীক্ষিত হয়েছে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীগণ এসব বিষয় তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। তারা তোমাদেরকে বিবিধ উপমা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং সুস্পষ্ট বিষয়ের দিকে তোমাদেরকে আহবান করেছেন। শুধুমাত্র বধিরগণ এসব শুনতে পায়নি এবং অন্ধগণ দেখতে পায়নি।
আল্লাহ যাকে পরীক্ষা ও উপমা থেকে উপকারিতা প্রদান করেন না সে উপদেশ থেকেও উপকার পায় না। সে সর্বদা ক্ষতির সম্মুখীন হবে ,তাতে সে মন্দকে অনুমোদন করবে এবং ভালোকে অননুমোদন করবে। মানুষ দু ’ শ্রেণির - শরিয়তের অনুসারী এবং বিদা 'তের অনুসারী যাদেরকে আল্লাহ সুন্নাহ বা কোন ওজরের আলোকে সনদ প্রদান করেননি ।
পবিত্র কোরআনের বৈশিষ্ট্য
মহিমান্বিত আল্লাহ এ কুরআনের দিক নির্দেশনা কারো সাথে পরামর্শ করে ঠিক করেননি। কাজেই এটা আল্লাহর সুদৃঢ় রশি ও তাঁর বিশ্বস্ত পথ। এতে রয়েছে হৃদয়ের প্রস্ফুটন ও জ্ঞানের ঝরনাধারা। হৃদয়ের জন্য কুরআন ব্যতীত অন্য কোন দ্যুতি নেই যদিও যারা এটা স্মরণ করতো তারা পরলোকগত এবং যারা এটা ভুলে গেছে বা ভুলে যাবার ভান করছে তারা বেঁচে আছে। যদি তোমরা ভালো কিছু দেখ। তবে তাকে সমর্থন করো এবং মন্দ কিছু দেখলে তা এড়িয়ে চলো। কারণ আল্লাহর রাসূল বলতেন ,“
হে আদম সন্তানগণ ,ভালো কাজ কর এবং পাপ এড়িয়ে চল ;এতে তোমরা সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। ”
অত্যাচারের প্রকারভেদ সম্পর্কে
জেনে রাখো ,অন্যায় - অবিচার তিন প্রকারের - এক. যে অন্যায় - অবিচারের কোন ক্ষমা নেই ;দুই. যে অন্যায় - অবিচার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হওয়া থেকে নিস্তার নেই ;তিন. যে অন্যায় - অবিচার বিনা জিজ্ঞাসায় ক্ষমা করা হবে। আল্লাহর দ্বৈততা বা শিরক করার অন্যায় কখনো ক্ষমা করা হবে না। আল্লাহ বলেছেন ,“
আল্লাহ তাঁর শরিক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না ” (কুরআন - ৪ : ৪৮ ও ১১৬) । মানুষ মানুষের প্রতি যে অপরাধ করে তা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করা ছাড়া কাউকে ছাড়া হবে না এবং মানুষ নিজের প্রতি যেসব ক্ষুদ্র পাপ করে তা জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই ক্ষমা করা হবে। যে সকল অপরাধ সম্পর্কে মানুষ জিজ্ঞাসিত হবে তার শাস্তি বড়ই কঠোর। এ শাস্তি ছুরিকাঘাত বা বেত্রাঘাত নয়। এটা এতই কঠোর যে বেত্রাঘাত বা ছুরিকাঘাত এর কাছে নিতান্ত তুচ্ছ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তন এড়িয়ে চলো এবং সত্য ও ন্যায় বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হও যদিও এটা তোমাদের পছন্দনীয় নয় এবং অন্যায়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়া তোমাদের অধিক পছন্দনীয়। নিশ্চয়ই ,মহিমান্বিত আল্লাহ ,জীবিত বা মৃত কাউকেই সত্য বিষয়ে অনৈক্যের জন্য কোন কল্যাণ প্রদান করেন না ।
হে জনমণ্ডলী ,সেব্যক্তি সৌভাগ্যশালী যে নিজের দোষ - ত্রুটির কথা সর্বদা চিন্তা করে - অন্যের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ানো থেকে নিজেকে বিরত রাখে। সেব্যক্তিও আশীর্বাদপুষ্ট যে নিজের ঘরে আবদ্ধ থাকে ,নিজের খাবার খায় ,আল্লাহর আনুগত্যে নিজকে নিমগ্ন রাখে এবং নিজের পাপের জন্য ক্রন্দন করে। এসব লোক নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং মানুষ তার থেকে নিরাপদ থাকে।