খোৎবা-১৭
في صفة من يتصدى للحكم بين الأمة وليس لذلك بأهل
إنَّ أَبْغَضَ الْخَلَائِقِ إِلَى اللَّه رَجُلَانِ - رَجُلٌ وَكَلَه اللَّه إِلَى نَفْسِه فَهُوَ جَائِرٌ عَنْ قَصْدِ السَّبِيلِ مَشْغُوفٌ بِكَلَامِ بِدْعَةٍ ودُعَاءِ ضَلَالَةٍ - فَهُوَ فِتْنَةٌ لِمَنِ افْتَتَنَ بِه ضَالٌّ عَنْ هَدْيِ مَنْ كَانَ قَبْلَه - مُضِلٌّ لِمَنِ اقْتَدَى بِه فِي حَيَاتِه وبَعْدَ وَفَاتِه - حَمَّالٌ خَطَايَا غَيْرِه رَهْنٌ بِخَطِيئَتِه.
ورَجُلٌ قَمَشَ جَهْلًا مُوضِعٌ فِي جُهَّالِ الأُمَّةِ عَادٍ فِي أَغْبَاشِ الْفِتْنَةِ عَمٍ بِمَا فِي عَقْدِ الْهُدْنَةِ قَدْ سَمَّاه أَشْبَاه النَّاسِ عَالِماً ولَيْسَ بِه - بَكَّرَ فَاسْتَكْثَرَ مِنْ جَمْعٍ مَا قَلَّ مِنْه خَيْرٌ مِمَّا كَثُرَ - حَتَّى إِذَا ارْتَوَى مِنْ مَاءٍ آجِنٍ واكْتَثَرَ مِنْ غَيْرِ طَائِلٍ.
جَلَسَ بَيْنَ النَّاسِ قَاضِياً ضَامِناً لِتَخْلِيصِ مَا الْتَبَسَ عَلَى غَيْرِه فَإِنْ نَزَلَتْ بِه إِحْدَى الْمُبْهَمَاتِ - هَيَّأَ لَهَا حَشْواً رَثًّا مِنْ رَأْيِه ثُمَّ قَطَعَ بِه - فَهُوَ مِنْ لَبْسِ الشُّبُهَاتِ فِي مِثْلِ نَسْجِ الْعَنْكَبُوتِ - لَا يَدْرِي أَصَابَ أَمْ أَخْطَأَ - فَإِنْ أَصَابَ خَافَ أَنْ يَكُونَ قَدْ أَخْطَأَ - وإِنْ أَخْطَأَ رَجَا أَنْ يَكُونَ قَدْ أَصَابَ - جَاهِلٌ خَبَّاطُ جَهَالَاتٍ عَاشٍ رَكَّابُ عَشَوَاتٍ لَمْ يَعَضَّ عَلَى الْعِلْمِ بِضِرْسٍ قَاطِعٍ - يَذْرُو الرِّوَايَاتِ ذَرْوَ الرِّيحِ الْهَشِيمَ لَا مَلِيٌّ.
واللَّه بِإِصْدَارِ مَا وَرَدَ عَلَيْه - ولَا أَهْلٌ لِمَا قُرِّظَ بِه لَا يَحْسَبُ الْعِلْمَ فِي شَيْءٍ مِمَّا أَنْكَرَه - ولَا يَرَى أَنَّ مِنْ وَرَاءِ مَا بَلَغَ مَذْهَباً لِغَيْرِه - وإِنْ أَظْلَمَ عَلَيْه أَمْرٌ اكْتَتَمَ بِه لِمَا يَعْلَمُ مِنْ جَهْلِ نَفْسِه - تَصْرُخُ مِنْ جَوْرِ قَضَائِه الدِّمَاءُ - وتَعَجُّ مِنْه الْمَوَارِيثُ إِلَى اللَّه أَشْكُو - مِنْ مَعْشَرٍ يَعِيشُونَ جُهَّالًا ويَمُوتُونَ ضُلَّالًا - لَيْسَ فِيهِمْ سِلْعَةٌ أَبْوَرُ مِنَ الْكِتَابِ إِذَا تُلِيَ حَقَّ تِلَاوَتِه - ولَا سِلْعَةٌ أَنْفَقُ بَيْعاً - ولَا أَغْلَى ثَمَناً مِنَ الْكِتَابِ إِذَا حُرِّفَ عَنْ مَوَاضِعِه - ولَا عِنْدَهُمْ أَنْكَرُ مِنَ الْمَعْرُوفِ ولَا أَعْرَفُ مِنَ الْمُنْكَرِ!
অযোগ্য ব্যক্তি
কর্তৃক
মানুষের
মধ্যে
ন্যায়ের
বিধান
প্রয়োগ
সম্পর্কে
মানুষের মধ্যে দুব্যক্তিকে
আল্লাহ অতিশয় ঘৃণা করেন। এদের একজন হলো সে যে আত্মস্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত থাকে। সে ব্যক্তি সত্যপথ থেকে সরে চলে এবং মিথ্যা কোন কিছু উদ্ভাবন করে তা বলে বেড়াতে আনন্দ পায়। সে ব্যক্তি মানুষকে ভুল পথের দিকে আমন্ত্রণ জানায়। যারা তার প্রতি অনুরক্ত হয় তাদের জন্য সে অত্যন্ত ক্ষতিকর। সে নিজেই তার পূর্ববর্তীগণের নির্দেশিত পথ থেকে সরে গিয়ে বিপথে পরিচালিত। কাজেই সে জীবদ্দশায় তার অনুসারীদের গোমরাহির দিকে পরিচালিত করে এবং মৃত্যুর পর নিজের ও অনুসারীদের পাপের বোঝা বহন করে।
অপর ব্যক্তি সে যাকে মূর্খতা ও অজ্ঞতা ঘিরে আছে। সে অজ্ঞদের মাঝেই চলাফেরা করে এবং সে অমঙ্গল বিষয়ে জ্ঞানহীন ও শান্তিপূর্ণ অবস্থার সুবিধা সম্পর্কে অন্ধ। সাধারণ মানুষ তাকে পণ্ডিত মনে করে কিন্তু আসলে সে তা নয়। সে অতি প্রত্যুষে এমন কিছু সংগ্রহে করতে বেরিয়ে পড়ে যার প্রাচুর্য থেকে স্বল্পতা অনেক ভাল। সে দূষিত পানি দ্বারা তৃষ্ণা নিবারণ করে এবং যা অর্জন করে তা অর্থহীন।
জনগণের কাছে যা বিভ্রান্তিকর বলে মনে হয় তার সমাধান দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে সে বিচারকের আসনে বসে। যদি কোন দ্ব্যর্থক সমস্যা তার সামনে তুলে ধরা হয় তবে সে তার মনগড়া খোড়া যুক্তি দাঁড় করিয়ে তার ভিত্তিতে রায় প্রদান করে। এভাবে সে ন্যায় - অন্যায় ও সত্য - মিথ্যা না বুঝে মাকড়সার জালের মতো সন্দেহ ও ভ্রান্তির জালে জড়িয়ে পড়ে। যখন সে সঠিক কাজ করে তখন সে ভয় করে পাছে ভুল হয়ে গেল কিনা। আবার যখন সে ভুল করে তখন মনে করে সে ঠিকই করেছে। সে জাহেল ,অজ্ঞতার মাঝেই ধ্বংস খুঁজে বেড়াচ্ছে এবং সে এমন বাহনের সওয়ার যা লক্ষ্যহীনভাবে অন্ধকারে চলছে। মজবুত দাঁত দ্বারা সে কখনো জ্ঞানকে আঁকড়ে ধরে নি। সে হাদিসকে এমন বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে দেয় যেন বাতাস শুকনো পাতাকে ছড়িয়ে ফেলে।
আল্লাহর কসম ,যেসব সমস্যা তার কাছে আসে সেগুলোর সমাধান দেয়ার মতো যোগ্যতা তার নেই এবং যে মর্যাদাকর অবস্থানে তাকে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে তার উপযুক্ত সে নয়। যা সে জানে না তা জানা দরকার বলেও সে মনে করে না। এ কথা সে অনুভব করতে পারে না যে ,যা তার নাগালের বাইরে তা অন্যের নাগালের মধ্যে থাকতে পারে। যে বিষয় তার কাছে অস্পষ্ট মনে হয় সে বিষয়ে সে নিশ্চুপ থাকে কারণ সে নিজের অজ্ঞতা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল । হারানো জীবনগুলো তার অন্যায় রায়ের বিরুদ্ধে চিৎকার দিচ্ছে এবং সম্পদরাজী (যা অন্যায়ভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে) তার বিরুদ্ধে অসন্তোষ ভরে বিড়বিড় করছে।
যে সব লোক জীবনে অজ্ঞ ও মৃত্যুতে বিপথগামী তাদের বিরুদ্ধে আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি। তাদের কাছে কুরআন অপেক্ষা মূল্যহীন আর কিছু নেই - কুরআনের আয়াত যথাস্থান থেকে সরিয়ে ফেলা অপেক্ষা মূল্যবান কিছু নেই - ধার্মিকতা অপেক্ষা খারাপ কিছু নেই - পাপ অপেক্ষা সুনীতিসম্পন্ন কিছু নেই।
___________________
খোৎবা- ১৮
في ذم اختلاف العلماء في الفتيا
تَرِدُ عَلَى أَحَدِهِمُ الْقَضِيَّةُ فِي حُكْمٍ مِنَ الأَحْكَامِ - فَيَحْكُمُ فِيهَا بِرَأْيِه - ثُمَّ تَرِدُ تِلْكَ الْقَضِيَّةُ بِعَيْنِهَا عَلَى غَيْرِه - فَيَحْكُمُ فِيهَا بِخِلَافِ قَوْلِه - ثُمَّ يَجْتَمِعُ الْقُضَاةُ بِذَلِكَ عِنْدَ الإِمَامِ الَّذِي اسْتَقْضَاهُمْ فَيُصَوِّبُ آرَاءَهُمْ جَمِيعاً وإِلَهُهُمْ وَاحِدٌ - ونَبِيُّهُمْ وَاحِدٌ وكِتَابُهُمْ وَاحِدٌ! أَفَأَمَرَهُمُ اللَّه سُبْحَانَه بِالِاخْتِلَافِ فَأَطَاعُوه - أَمْ نَهَاهُمْ عَنْه فَعَصَوْه!
الحكم للقرآن أَمْ أَنْزَلَ اللَّه سُبْحَانَه دِيناً نَاقِصاً - فَاسْتَعَانَ بِهِمْ عَلَى إِتْمَامِه - أَمْ كَانُوا شُرَكَاءَ لَه فَلَهُمْ أَنْ يَقُولُوا وعَلَيْه أَنْ يَرْضَى - أَمْ أَنْزَلَ اللَّه سُبْحَانَه دِيناً تَامّاً - فَقَصَّرَ الرَّسُولُصلىاللهعليهوآله
عَنْ تَبْلِيغِه وأَدَائِه - واللَّه سُبْحَانَه يَقُولُ:(
ما فَرَّطْنا فِي الْكِتابِ مِنْ شَيْءٍ
)
- وفِيه تِبْيَانٌ لِكُلِّ شَيْءٍ - وذَكَرَ أَنَّ الْكِتَابَ يُصَدِّقُ بَعْضُه بَعْضاً - وأَنَّه لَا اخْتِلَافَ فِيه - فَقَالَ سُبْحَانَه:(
ولَوْ كانَ مِنْ عِنْدِ غَيْرِ الله - لَوَجَدُوا فِيه اخْتِلافاً كَثِيراً
)
- وإِنَّ الْقُرْآنَ ظَاهِرُه أَنِيقٌ وبَاطِنُه عَمِيقٌ - لَا تَفْنَى عَجَائِبُه ولَا تَنْقَضِي غَرَائِبُه - ولَا تُكْشَفُ الظُّلُمَاتُ إِلَّا بِه.
ফেকাহবিদগণের মধ্যে
আমর্যাদাকর
মতদ্বৈধতা
সম্পর্কে
তাদের কোন একজনের কাছে যখন একটা সমস্যা উপস্থাপন করা হয় তখন সে অনুমান ভিত্তিক রায় প্রদান করে। একই সমস্যা যখন তাদের অন্য একজনের কাছে উপস্থাপন করা হয় তখন সে আগের জনের রায়ের বিপরীত সিদ্ধান্ত প্রদান করে। এ বিচারকদ্বয় যখন তাদের পরস্পরবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধান বিচারকের কাছে যায় (যিনি প্রথমোক্তগণকে নিয়োগ করেছিলেন) তখন তিনি উভয়ের সিদ্ধান্তকেই সমর্থন ও অনুমোদন করেন। অথচ তাদের সকলের আল্লাহ এক ,রাসূল এক ও পবিত্র গ্রন্থ এক ।
তাদের এহেন মতো পার্থক্যের কারণ কী ? এটা কী এ জন্য যে ,আল্লাহ তাদেরকে মতদ্বৈধতা করতে নির্দেশ দিয়েছেন আর তারা তা পালন করছে ? অথবা তিনি মতদ্বৈধতা করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তারা তাঁর অবাধ্যতা করছে ? অথবা আল্লাহ একটা অসম্পূর্ণ দ্বীন পাঠিয়েছেন এবং এখন তা সম্পূর্ণ করতে তাদের সহায়তা চান ? অথবা এসব বিষয়ে তারা কি আল্লাহর অংশীদার যে ,ভিন্ন ভিন্ন মত তুলে ধরা তাদের কর্তব্য আর তা সমর্থন করা আল্লাহর কর্তব্য ? অথবা এটা কি এমন যে ,মহিমান্বিত আল্লাহ পরিপূর্ণ দ্বীন প্রেরণ করেছেন। কিন্তু রাসূল (সা.) তা পরিপূর্ণভাবে মানুষের নিকট পৌছে দিতে পারেননি ? বস্তুত মহামহিম আল্লাহ বলেনঃ
আমরা এ কিতাবে কোন কিছুই বাদ দেই নি (কুরআন - ৬:৩৮) । আল্লাহ আরো বলেন যে ,কুরআনে প্রত্যেক বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে এবং কুরআনের এক অংশ অন্য অংশকে সত্যায়ন করে এবং কুরআনে কোন এখতেলাপ (অপসারণ) নেই। আল্লাহ্ বলেনঃ
এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছ থেকে এ কিতাব এলে তারা নিশ্চয়ই এতে অনেক গরমিল দেখতে পেতো (কুরআন - ৪ :৮২) ।
নিশ্চয়ই কুরআনের বাহ্যিক দিক বিস্ময়কর এবং এর অভ্যন্তর দিক গভীর অর্থবোধক। কুরআনের বিস্ময় কখনো হারিয়ে যাবে না এবং এর রহস্য কখনো বিলুপ্ত হবে না। কুরআনের জটিল বিষয়গুলো কুরআন (কুরআনিক জ্ঞান) ব্যতীত কেউ সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারবে না।
____________________
খোৎবা- ১৯
قاله للأشعث بن قيس وهو على منبر الكوفة يخطب، فمضى في بعض كلامه شيء اعترضه الأشعث فيه، فقال: يا أمير المؤمنين، هذه عليك لا لك، فخفضعليهالسلام
إليه بصره ثم قال:
مَا يُدْرِيكَ مَا عَلَيَّ مِمَّا لِي - عَلَيْكَ لَعْنَةُ اللَّه ولَعْنَةُ اللَّاعِنِينَ - حَائِكٌ ابْنُ حَائِكٍ مُنَافِقٌ ابْنُ كَافِرٍ - واللَّه لَقَدْ أَسَرَكَ الْكُفْرُ مَرَّةً والإِسْلَامُ أُخْرَى - فَمَا فَدَاكَ مِنْ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا مَالُكَ ولَا حَسَبُكَ - وإِنَّ امْرَأً دَلَّ عَلَى قَوْمِه السَّيْفَ - وسَاقَ إِلَيْهِمُ الْحَتْفَ - لَحَرِيٌّ أَنْ يَمْقُتَه الأَقْرَبُ ولَا يَأْمَنَه الأَبْعَدُ!
قال السيد الشريف - يريدعليهالسلام
أنه أسر في الكفر مرة وفي الإسلام مرة -. وأما قولهعليهالسلام
دل على قومه السيف - فأراد به حديثا - كان للأشعث مع خالد بن الوليد باليمامة - غر فيه قومه ومكر بهم - حتى أوقع بهم خالد - وكان قومه بعد ذلك يسمونه عرف النار - وهو اسم للغادر عندهم.
কুফার মসজিদের মিম্বার থেকে আমিরুল মোমেনিন খোৎবা প্রদান করছিলেন। এমন সময় আশআছ । ইবনে কায়েস
বাধা দিয়ে বললো ,“
হে ,আমিরুল মোমেনিন ,এ কথা আপনার অনুকূলে নয় ,বরং আপনার বিরুদ্ধে যাবে ।”
আমিরুল মোমেনিন রাগত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বললেনঃ
তুমি কী করে জান কোন বিষয় আমার অনুকূলে আর কোনটি আমার প্রতিকূলে। আল্লাহ ও অভিশাপকারীদের অভিশাপ তোমার ওপর। তুমি তাতির পুত্র তাতি। তুমি একজন মোশরেকের পুত্র এবং নিজেও একজন মোনাফিক। তুমি মোশরেক থাকাকালে একবার এবং ইসলাম গ্রহণের পর আরেকবার গ্রেফতার হয়েছিলে ; তোমার সম্পদ ও জন্ম পরিচয় তোমাকে রক্ষা করতে পারেনি । যে ব্যক্তি নিজের লোকজনকে তরবারির নিচে ঠেলে দিয়ে তাদের মৃত্যু ও ধ্বংসের ফন্দি আঁটে সে নিকটবর্তীগণের ঘৃণা আর দূরবর্তীজনের অবিশ্বাসেরই যোগ্য।
__________________
খোৎবা- ২০
فَإِنَّكُمْ لَوْ قَدْ عَايَنْتُمْ مَا قَدْ عَايَنَ مَنْ مَاتَ مِنْكُمْ - لَجَزِعْتُمْ ووَهِلْتُمْ وسَمِعْتُمْ وأَطَعْتُمْ - ولَكِنْ مَحْجُوبٌ عَنْكُمْ مَا قَدْ عَايَنُوا - وقَرِيبٌ مَا يُطْرَحُ الْحِجَابُ - ولَقَدْ بُصِّرْتُمْ إِنْ أَبْصَرْتُمْ وأُسْمِعْتُمْ إِنْ سَمِعْتُمْ - وهُدِيتُمْ إِنِ اهْتَدَيْتُمْ - وبِحَقٍّ أَقُولُ لَكُمْ لَقَدْ جَاهَرَتْكُمُ الْعِبَرُ وزُجِرْتُمْ بِمَا فِيه مُزْدَجَرٌ - ومَا يُبَلِّغُ عَنِ اللَّه بَعْدَ رُسُلِ السَّمَاءِ إِلَّا الْبَشَرُ.
মৃত্যু ও
তার
শিক্ষা
যারা তোমাদের পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছে তারা যা দেখেছে তা যদি তোমরা দেখতে পেতে তাহলে তোমরা বিচলিত ও অস্থির হয়ে পড়তে এবং তখন তোমরা কর্ণপাত করতে ও মান্য করতে। কিন্তু মৃতরা যা দেখেছে তা তোমাদের নিকট রহস্যাবৃত করা হয়েছে। সহসাই এ রহস্যের পর্দা উন্মোচন করা হবে। তোমাদেরকে সবকিছু দেখানো হয়েছে যদি তোমরা দেখে থাক ,সবকিছু শুনানো হয়েছে। যদি তোমরা শুনে থাক এবং হেদায়েতের পথ দেখানো হয়েছে। যদি তোমরা হেদায়েত গ্রহণ করা। আমি তোমাদের সঙ্গে যেসব কথা বলেছি তা সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। বহু রকম নির্দেশমূলক দৃষ্টান্ত দিয়ে তোমাদের উচ্চস্বরে ডাকা হয়েছে এবং পরিপূর্ণ সাবধান বাণীর মাধ্যমে সাবধান করা হয়েছে। স্বগীয় বার্তাবাহকের (জিব্রাইল) পর শুধুমাত্র মানুষই আল্লাহর বার্তা পৌছে দিতে পারে। (সুতরাং আমি যা পৌছে দিচ্ছি তা আল্লাহর কাছ থেকেই প্রাপ্ত) ।
খোৎবা- ২১
وهي كلمة جامعة للعظة والحكمة
فَإِنَّ الْغَايَةَ أَمَامَكُمْ وإِنَّ وَرَاءَكُمُ السَّاعَةَ تَحْدُوكُمْ تَخَفَّفُوا تَلْحَقُوا فَإِنَّمَا يُنْتَظَرُ بِأَوَّلِكُمْ آخِرُكُمْ.
দুনিয়াতে নিজকে
হালকা
রাখার
উপদেশ
নিশ্চয়ই ,তোমার লক্ষ্যবস্তু (পুরস্কার অথবা শাস্তি) তোমার সম্মুখে। তোমার পেছনে কেয়ামতের মুহুর্ত (মৃত্যু) যা তোমাকে দ্রুত অনুসরণ করে চলছে। নিজকে হালকা রাখো (পাপভার থেকে) তাহলে সামিল হতে পারবে (অগ্রবর্তীগণের সাথে) । তোমার পূর্ববর্তীরা তোমার জন্য প্রতীক্ষা রত আছে।
খোৎবা- ২২
حين بلغه خبر الناكثين ببيعته
وفيها يذم عملهم ويلزمهم دم عثمان ويتهددهم بالحرب
أَلَا وإِنَّ الشَّيْطَانَ قَدْ ذَمَّرَ حِزْبَه واسْتَجْلَبَ جَلَبَه لِيَعُودَ الْجَوْرُ إِلَى أَوْطَانِه ويَرْجِعَ الْبَاطِلُ إِلَى نِصَابِه واللَّه مَا أَنْكَرُوا عَلَيَّ مُنْكَراً - ولَا جَعَلُوا بَيْنِي وبَيْنَهُمْ نَصِفاً.
وإِنَّهُمْ لَيَطْلُبُونَ حَقّاً هُمْ تَرَكُوه ودَماً هُمْ سَفَكُوه - فَلَئِنْ كُنْتُ شَرِيكَهُمْ فِيه فَإِنَّ لَهُمْ لَنَصِيبَهُمْ مِنْه - ولَئِنْ كَانُوا وَلُوه دُونِي فَمَا التَّبِعَةُ إِلَّا عِنْدَهُمْ - وإِنَّ أَعْظَمَ حُجَّتِهِمْ لَعَلَى أَنْفُسِهِمْ - يَرْتَضِعُونَ أُمّاً قَدْ فَطَمَتْ ويُحْيُونَ بِدْعَةً قَدْ أُمِيتَتْ - يَا خَيْبَةَ الدَّاعِي مَنْ دَعَا وإِلَامَ أُجِيبَ - وإِنِّي لَرَاضٍ بِحُجَّةِ اللَّه عَلَيْهِمْ وعِلْمِه فِيهِمْ.
فَإِنْ أَبَوْا أَعْطَيْتُهُمْ حَدَّ السَّيْفِ - وكَفَى بِه شَافِياً مِنَ الْبَاطِلِ ونَاصِراً لِلْحَقِّ - ومِنَ الْعَجَبِ بَعْثُهُمْ إِلَيَّ أَنْ أَبْرُزَ لِلطِّعَانِ وأَنْ أَصْبِرَ لِلْجِلَادِ - هَبِلَتْهُمُ الْهَبُولُ لَقَدْ كُنْتُ ومَا أُهَدَّدُ بِالْحَرْبِ ولَا أُرْهَبُ بِالضَّرْبِ - وإِنِّي لَعَلَى يَقِينٍ مِنْ رَبِّي وغَيْرِ شُبْهَةٍ مِنْ دِينِي.
উসমানের হত্যার
জন্য
যারা
তাকে
দোষী
করেছিল
তাদের
সম্বন্ধে
সাবধান! শয়তান তার সেনাবাহিনী সংগ্রহ করেনিশ্চয়ই তাদের প্ররোচিত ও সুসজ্জিত করতে আরম্ভ করেছে যেন অত্যাচার শেষ সীমায় পৌছায় এবং বিভ্রান্তি আসন গেড়ে বসতে পারে। আল্লাহর কসম ,তারা আমার ওপর যে দোষ আরোপ করছে তা সঠিক নয় এবং আমার ও তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করছে না।
তারা আমার কাছে একটা অধিকার দাবি করছে যা তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা আমার কাছে এমন একটা রক্তপণ চাচ্ছে যা তারা নিজেরাই ঘটিয়েছে
। আমি যদি সে রক্তপাতে তাদের অংশীদার হতাম। তাহলেও তাতে তাদের অংশ রয়েছে। কিন্তু তারা আমাকে ছাড়াই সে রক্তপাত ঘটিয়েছে। কাজেই তার ফলাফলও তাদের ভুগতে হবে। আমার বিরুদ্ধে সব চাইতে জোরালো যে যুক্তি তারা দাঁড় করিয়েছে প্রকৃত অর্থে তা তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে যায়। তারা এমন মায়ের স্তন চুষছে যার দুধ আগেই শুকিয়ে গেছে এবং এমন বানোয়াট বিষয়কে জীবন দান করতে চায় যা আগেই মরে গেছে। কত হতাশাব্যঞ্জক যুদ্ধের জন্য তাদের এ চ্যালেঞ্জ ? কে এই চ্যালেঞ্জার এবং কিসের জন্য সে সাড়া দিচ্ছে ? আমি খুশি এ জন্য যে ,তাদের সম্মুখে সকল যুক্তি নিঃশেষ করা হয়েছে এবং তাদের সম্বন্ধে আল্লাহ সবকিছু অবগত আছেন। (আমার নির্দোষ হবার যুক্তি মানতে) । যদি তারা অস্বীকৃতি জানায় তবে আমার তরবারি উন্মুক্ত রইল যা ভুলের চিকিৎসক ও ন্যায়ের সমর্থক হিসেবে যথেষ্ট।
এটা বিস্ময়কর যে ,বর্শা - যুদ্ধের জন্য এগিয়ে যেতে এবং তরবারি - যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে তারা আমাকে খবর পাঠিয়েছে। শোক প্রকাশকারী রমণীকুল তাদের জন্য ক্রন্দন করুক! আমি কি কখনো এমন ছিলাম যে ,যুদ্ধকে ভয় করেছি বা সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়েছি। আল্লাহ চিরকাল আমার সহায় এবং আমার ইমানে কোন প্রকার সংশয় নেই।
___________________
খোৎবা -
২৩
وتشتمل على تهذيب الفقراء بالزهد وتأديب الأغنياء بالشفقة
أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ الأَمْرَ يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ إِلَى الأَرْضِ - كَقَطَرَاتِ الْمَطَرِ إِلَى كُلِّ نَفْسٍ بِمَا قُسِمَ لَهَا - مِنْ زِيَادَةٍ أَوْ نُقْصَانٍ - فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ لأَخِيه غَفِيرَةً فِي أَهْلٍ أَوْ مَالٍ أَوْ نَفْسٍ - فَلَا تَكُونَنَّ لَه فِتْنَةً - فَإِنَّ الْمَرْءَ الْمُسْلِمَ مَا لَمْ يَغْشَ دَنَاءَةً تَظْهَرُ - فَيَخْشَعُ لَهَا إِذَا ذُكِرَتْ ويُغْرَى بِهَا لِئَامُ النَّاسِ - كَانَ كَالْفَالِجِ الْيَاسِرِ الَّذِي يَنْتَظِرُ أَوَّلَ فَوْزَةٍ - مِنْ قِدَاحِه تُوجِبُ لَه الْمَغْنَمَ ويُرْفَعُ بِهَا عَنْه الْمَغْرَمُ - وكَذَلِكَ الْمَرْءُ الْمُسْلِمُ الْبَرِيءُ مِنَ الْخِيَانَةِ - يَنْتَظِرُ مِنَ اللَّه إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ - إِمَّا دَاعِيَ اللَّه فَمَا عِنْدَ اللَّه خَيْرٌ لَه - وإِمَّا رِزْقَ اللَّه فَإِذَا هُوَ ذُو أَهْلٍ ومَالٍ - ومَعَه دِينُه وحَسَبُه - وإِنَّ الْمَالَ والْبَنِينَ حَرْثُ الدُّنْيَا - والْعَمَلَ الصَّالِحَ حَرْثُ الآخِرَةِ - وقَدْ يَجْمَعُهُمَا اللَّه تَعَالَى لأَقْوَامٍ - فَاحْذَرُوا مِنَ اللَّه مَا حَذَّرَكُمْ مِنْ نَفْسِه - واخْشَوْه خَشْيَةً لَيْسَتْ بِتَعْذِيرٍ واعْمَلُوا فِي غَيْرِ رِيَاءٍ ولَا سُمْعَةٍ - فَإِنَّه مَنْ يَعْمَلْ لِغَيْرِ اللَّه يَكِلْه اللَّه لِمَنْ عَمِلَ لَه - نَسْأَلُ اللَّه مَنَازِلَ الشُّهَدَاءِ ومُعَايَشَةَ السُّعَدَاءِ - ومُرَافَقَةَ الأَنْبِيَاءِ.
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّه لَا يَسْتَغْنِي الرَّجُلُ - وإِنْ كَانَ ذَا مَالٍ عَنْ - عِتْرَتِه ودِفَاعِهِمْ عَنْه بِأَيْدِيهِمْ وأَلْسِنَتِهِمْ - وهُمْ أَعْظَمُ النَّاسِ حَيْطَةً مِنْ وَرَائِه وأَلَمُّهُمْ لِشَعَثِه وأَعْطَفُهُمْ عَلَيْه عِنْدَ نَازِلَةٍ إِذَا نَزَلَتْ بِه - ولِسَانُ الصِّدْقِ يَجْعَلُه اللَّه لِلْمَرْءِ فِي النَّاسِ - خَيْرٌ لَه مِنَ الْمَالِ يَرِثُه غَيْرُه.
ومنها أَلَا لَا يَعْدِلَنَّ أَحَدُكُمْ عَنِ الْقَرَابَةِ يَرَى بِهَا الْخَصَاصَةَ أَنْ يَسُدَّهَا بِالَّذِي لَا يَزِيدُه إِنْ أَمْسَكَه - ولَا يَنْقُصُه إِنْ أَهْلَكَه ومَنْ يَقْبِضْ يَدَه عَنْ عَشِيرَتِه - فَإِنَّمَا تُقْبَضُ مِنْه عَنْهُمْ يَدٌ وَاحِدَةٌ - وتُقْبَضُ مِنْهُمْ عَنْه أَيْدٍ كَثِيرَةٌ - ومَنْ تَلِنْ حَاشِيَتُه يَسْتَدِمْ مِنْ قَوْمِه الْمَوَدَّةَ.
ঈর্ষা পরিহার
করে
চলা
এবং
আত্মীয়
-
স্বজনের
সাথে
ভাল
ব্যবহার
করা
সম্বন্ধে
নিশ্চয়ই ,আল্লাহর আদেশাবলী আকাশ থেকে বৃষ্টিবিন্দুর মতে পৃথিবীতে নেমে আসে। এতে পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য - লিপি অনুযায়ী কারো জন্য বেশি কারো জন্য কম রহমত ও নেয়ামত আসে। সুতরাং যদি কেউ তার ভাইয়ের সন্তান - সন্ততি ও সম্পদের প্রাচুর্য আসতে দেখে ,তবে তার হতাশাগ্রস্ত বা উদ্বীগ্ন হবার কিছু নেই। এমনকি নিজের সন্তান - সন্ততি ও সম্পদের প্রাচুর্যের জন্য গর্ববোধ করার কিছু নেই। নিচ লোকেরাই এসব নিয়ে আত্ম - অহম বোধ করে। সম্পদের প্রাচুর্য দেখলে যতদিন পর্যন্ত একজন মুসলিম (লজ্জায়) চক্ষুবন্ধ না করবে ততদিন পর্যন্ত সে একজন জুয়াড়ি সদৃশ ; যে প্রথমবারের তীর নিক্ষেপেই লাভবান হয়ে পূর্বের লোকসান পুষিয়ে নেয়ার আশা পোষণ করে।
একইভাবে যে মুসলিম খেয়ানত মুক্ত সে দুটো ভাল জিনিসের একটা আশা করতে পারে। জিনিস দুটো হলো - (এক) আল্লাহর আহবান এবং সেক্ষেত্রে আল্লাহর কাছ থেকে যা কিছু আসে তাই তার জন্য সর্বোত্তম ধরে নেয়া ; (দুই) আল্লাহর রেজেক। তার সন্তান - সন্ততি ও বিষয় - সম্পদ যতই থাকুক না কেন তার ইমান ও সম্মান তার সাথেই থাকবে। নিশ্চয়ই ,সন্তান - সন্ততি ও ঐশ্বর্য ইহজগতের চাষাবাদ এবং আমলে সালেহা পরকালের চাষাবাদ। কখনো কখনো মহিমান্বিত আল্লাহ এর উভয়ই কোন কোন কওমিকে একত্রে দান করে থাকেন ।
যেসব বিষয়ে আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন সেসব বিষয়ে সাবধান থেকো এবং আল্লাহকে ভয় কর। কারণ এ বিষয়ে কোন ওজর কার্যকর হবে না। বে - রিয়া (লোক দেখানোর জন্য নয়) আমল কর: বাহবা শোনার জন্য করো না। কোন মানুষ যদি গায়রুল্লাহর আমল করে তবে যার উদ্দেশ্যে সে আমল করেছে তার কাছে আল্লাহ্ তাকে ন্যস্ত করেন। আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি আমাদেরকে শহিদের মর্যাদা ,পরহেযগারগণের সাথে জীবন যাপন ও রাসূলগণের বন্ধুত্ব প্রদান করেন।
হে জনমণ্ডলী ,কেউ তার আপনজনের সহায়তা ব্যতীত চলতে পারে না (যদি সে ঐশ্বর্যবানও হয়) । তাদের সহায়তা হস্ত দ্বারা অথবা মুখের কথায়ও হতে পারে। শুধুমাত্র আপনজনই পিছন থেকে সমর্থনকারী এবং আপদে - বিপদে পক্ষ বিস্তার করে রক্ষাকারী। দুঃখ - দুর্দশায় নিপতিত হলে আপনজনই সদয় দৃষ্টিতে তাকায়। কোন মানুষের মঙ্গলময় স্মৃতি ,যা মানুষের মাঝেই আল্লাহ সংরক্ষণ করে রাখেন ,যেকোন ঐশ্বর্য থেকে উত্তম।
মনে রেখো ,তোমরা যদি তোমাদের আপনজনকে অভাবগ্রস্ত অবস্থায় অথবা উপোস করতে দেখ তাহলে তাদের সাহায্য করা থেকে একথা ভেবে বিরত থেকো না যে ,তুমি সাহায্য না করলে তাদের অভাব বেড়ে যাবে না অথবা তোমার সাহায্যে তাদের দুঃখ - দুর্দশা সামান্যই লাঘব হবে। যারা আপনজনকে সাহায্য করা থেকে হাত গুটিয়ে রাখে তারা প্রয়োজনের সময় অনেক হাত গুটানো দেখতে পাবে। যে কেউ মিষ্টি স্বভাবের হবে তার প্রতি জনগণের শ্রদ্ধা - ভালবাসা চিরস্থায়ী হয়ে থাকে।
খোৎবা- ২৪
وهي كلمة جامعة له، فيها تسويغ قتال المخالف، والدعوة إلى طاعة اللَّه، والترقي فيها لضمان الفوز
ولَعَمْرِي مَا عَلَيَّ مِنْ قِتَالِ مَنْ خَالَفَ الْحَقَّ وخَابَطَ الْغَيَّ مِنْ إِدْهَانٍ ولَا إِيهَانٍ فَاتَّقُوا اللَّه عِبَادَ اللَّه وفِرُّوا إِلَى اللَّه مِنَ اللَّه - وامْضُوا فِي الَّذِي نَهَجَه لَكُمْ وقُومُوا بِمَا عَصَبَه بِكُمْ فَعَلِيٌّ ضَامِنٌ لِفَلْجِكُمْ آجِلًا إِنْ لَمْ تُمْنَحُوه عَاجِلًا.
জনগণকে জিহাদের জন্য
প্রেরণাদান
আমার জীবনের কসম ,যারা ন্যায়ের বিরোধিতা করে অথবা বিপথে হাতড়িয়ে বেড়ায় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমার কোন শিথিলতা নেই এবং তাদের প্রতি আমার সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধও নেই। হে আল্লাহর বান্দাগণ ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ; তাঁর রোষে পতিত হওয়া থেকে দূরে থাক এবং তাঁর করুণা যাচনা কর। তিনি তোমাদের জন্য যে সকল নির্দেশ দিয়েছেন সে পথে চল এবং যা তোমাদের আদেশ করেছেন তাতে দৃঢ়ভাবে অবস্থান কর। যদি তোমরা সেভাবে চল তবে এ আলী তোমাদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিচ্ছে ; হতে পারে ইহজগতে তোমরা তা নাও পেতে পার ,কিন্তু পরকালের চিরস্থায়ী সুখ অবধারিত ।
খোৎবা- ২৫
وقد تواترت عليه الأخبار باستيلاء أصحاب معاوية على البلاد وقدم عليه عاملاه على اليمن وهما عبيد الله بن عباس وسعيد بن نمران لما غلب عليهما بسر بن أبي أرطاة فقامعليهالسلام
على المنبر ضجرا بتثاقل أصحابه عن الجهاد ومخالفتهم له في الرأي فقال:
مَا هِيَ إِلَّا الْكُوفَةُ أَقْبِضُهَا وأَبْسُطُهَا إِنْ لَمْ تَكُونِي إِلَّا أَنْتِ تَهُبُّ أَعَاصِيرُكِ فَقَبَّحَكِ اللَّه! وتَمَثَّلَ بِقَوْلِ الشَّاعِرِ
لَعَمْرُ أَبِيكَ الْخَيْرِ يَا عَمْرُو إِنَّنِي عَلَى وَضَرٍ مِنْ ذَا الإِنَاءِ قَلِيلِ ثُمَّ قَالَعليهالسلام
أُنْبِئْتُ بُسْراً قَدِ اطَّلَعَ الْيَمَنَ وإِنِّي واللَّه لأَظُنُّ أَنَّ هَؤُلَاءِ الْقَوْمَ سَيُدَالُونَ مِنْكُمْ بِاجْتِمَاعِهِمْ عَلَى بَاطِلِهِمْ وتَفَرُّقِكُمْ عَنْ حَقِّكُمْ - وبِمَعْصِيَتِكُمْ إِمَامَكُمْ فِي الْحَقِّ وطَاعَتِهِمْ إِمَامَهُمْ فِي الْبَاطِلِ - وبِأَدَائِهِمُ الأَمَانَةَ إِلَى صَاحِبِهِمْ وخِيَانَتِكُمْ - وبِصَلَاحِهِمْ فِي بِلَادِهِمْ وفَسَادِكُمْ - فَلَوِ ائْتَمَنْتُ أَحَدَكُمْ عَلَى قَعْبٍ لَخَشِيتُ أَنْ يَذْهَبَ بِعِلَاقَتِه اللَّهُمَّ إِنِّي قَدْ مَلِلْتُهُمْ ومَلُّونِي وسَئِمْتُهُمْ وسَئِمُونِي - فَأَبْدِلْنِي بِهِمْ خَيْراً مِنْهُمْ وأَبْدِلْهُمْ بِي شَرّاً مِنِّي - اللَّهُمَّ مِثْ قُلُوبَهُمْ كَمَا يُمَاثُ الْمِلْحُ فِي الْمَاءِ - أَمَا واللَّه لَوَدِدْتُ أَنَّ لِي بِكُمْ أَلْفَ فَارِسٍ - مِنْ بَنِي فِرَاسِ بْنِ غَنْمٍ.
هُنَالِكَ لَوْ دَعَوْتَ أَتَاكَ مِنْهُمْ
|
|
فَوَارِسُ مِثْلُ أَرْمِيَةِ الْحَمِيمِ
|
যখন আমিরুল মোমেনিন উত্তরোত্তর সংবাদ পেতে লাগলেন যে ,মুয়াবিয়ার জনগণ একের পর এক শহর
দখল করেনিচ্ছে এবং ইয়েমেন থেকে তার অফিসার উবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও সাঈদ ইবনে নিমরান মুয়াবিয়ার লোক বুসর ইবনে আরতাঁতের নিকট পরাজিত হয়ে পিছু হটে এসেছে ,তখন আমিরুল মোমেনিন। তাঁর লোকদের জিহাদে বিমুখতা ও তার সাথে মতদ্বৈধতার কারণে বিচলিত হলেন । তিনি মিম্বারে উঠে। এ খোৎবা প্রদান করেন।
কুফা ব্যতীত আমার জন্য আর কিছুই রইল না। যা আমি সংকীর্ণ ও প্রশস্ত করতে পারি। (হে কুফা) তোর দশা যদি এ রকমই হয় যে ,তোর ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বইতেই থাকবে তবে আল্লাহ তোকে ধ্বংস করুক। তাৎপর তিনি একটা কবিতার দুটি পংক্তি আবৃত্তি করলেনঃ
হে আমর ! তোমার পরম পিতার দোহাই ,এ পাত্র থেকে আমি সামান্য একটুখানি চর্বি পেয়েছি ,যা পাত্র খালি করার পর পাত্রের গায়ে লেগেছিল ।
আমি জানতে পারলাম যে ,বুসর ইয়েমেন দখল করেনিয়েছে। আল্লাহর কসম ,এসব লোক সম্পর্কে আমি চিন্তা করে দেখেছি এরা সহসাই সারা দেশ কেড়ে নিয়ে যাবে। কারণ তারা বাতিলের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকেও একতাবদ্ধ। অথচ তোমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকেও ঐক্যবদ্ধ নও - তোমরা দ্বীধাবিভক্ত। ন্যায়ের পথে থাকা সত্ত্বেও তোমরা তোমাদের ইমামকে অমান্য কর। আর বাতিল পথে থাকা সত্ত্বেও তারা তাদের নেতাকে মান্য করে। তারা তাদের নেতার প্রতি সম্পূর্ণরূপে আস্থাবান ; আর তোমরা তোমাদের ইমামের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কর। তাদের শহরে তারা কল্যাণকর কাজ করে ; আর তোমরা তোমাদের শহরে অকল্যাণকর কাজ কর। যদি আমি তোমাদের একটা কাঠের গামলার দায়িত্বও দেই ,আমার মনে হয় ,তোমরা তার হাতল নিয়ে পালিয়ে যাবে।
হে আমার আল্লাহ ,তারা আমার প্রতি নিদারুণভাবে বিরক্ত ; আমিও তাদের প্রতি বিরক্ত। তারা আমাকে নিয়ে ক্লান্ত ; আমিও তাদের নিয়ে ক্লান্ত। তাদের চেয়ে ভালো কোন জনগোষ্ঠী আমাকে দিন এবং আমার চেয়ে মন্দ কোন নেতা তাদেরকে দিন। হে আল্লাহ ,তাদের হৃদয়কে বিগলিত করুন ,যেভাবে বিগলিত হয় লবন পানিতে। হায়! আল্লাহ ,যদি আমি এদের পরিবর্তে বনি ফিরাস ইবনে ঘানম - এর এক হাজার অশ্বারোহীও পেতাম। কবি বলেছিলেন ;
যদি তুমি তাদের আহবান কর
অশ্বারোহীগণ ধেয়ে আসবে
গ্রীষ্মের মেঘমালার মত।
____________________
খোৎবা- ২৬
وفيها يصف العرب قبل البعثة ثم يصف حاله قبل البيعة له العرب قبل البعثة
إِنَّ اللَّه بَعَثَ مُحَمَّداًصلىاللهعليهوآله
نَذِيراً لِلْعَالَمِينَ - وأَمِيناً عَلَى التَّنْزِيلِ - وأَنْتُمْ مَعْشَرَ الْعَرَبِ عَلَى شَرِّ دِينٍ وفِي شَرِّ دَارٍ - مُنِيخُونَ بَيْنَ حِجَارَةٍ خُشْنٍ وحَيَّاتٍ صُمٍّ تَشْرَبُونَ الْكَدِرَ وتَأْكُلُونَ الْجَشِبَ وتَسْفِكُونَ دِمَاءَكُمْ وتَقْطَعُونَ أَرْحَامَكُمْ - الأَصْنَامُ فِيكُمْ مَنْصُوبَةٌ والآثَامُ بِكُمْ مَعْصُوبَةٌ
ومنها صفته قبل البيعة له فَنَظَرْتُ فَإِذَا لَيْسَ لِي مُعِينٌ إِلَّا أَهْلُ بَيْتِي - فَضَنِنْتُ بِهِمْ عَنِ الْمَوْتِ - وأَغْضَيْتُ عَلَى الْقَذَى وشَرِبْتُ عَلَى الشَّجَا وصَبَرْتُ عَلَى أَخْذِ الْكَظَمِوعَلَى أَمَرَّ مِنْ طَعْمِ الْعَلْقَمِ.
ومنها: ولَمْ يُبَايِعْ حَتَّى شَرَطَ أَنْ يُؤْتِيَه عَلَى الْبَيْعَةِ ثَمَناً - فَلَا ظَفِرَتْ يَدُ الْبَائِعِ وخَزِيَتْ أَمَانَةُ الْمُبْتَاعِ فَخُذُوا لِلْحَرْبِ أُهْبَتَهَا وأَعِدُّوا لَهَا عُدَّتَهَا - فَقَدْ شَبَّ لَظَاهَا وعَلَا سَنَاهَا واسْتَشْعِرُوا الصَّبْرَ فَإِنَّه أَدْعَى إِلَى النَّصْرِ.
নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে আরবের অবস্থা সম্বন্ধে
আল্লাহ মুহাম্মদকে (সা.) জগতের সকল পাপের বিরুদ্ধে সতর্ককারী এবং তাঁর সকল প্রত্যাদেশের আমানতদার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। সে সময়ে তোমরা (আরবের লোকেরা) একটা কদর্য ধর্মের অনুসারী ছিলে এবং তোমরা কদর্য পাথর (মূর্তি) ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন বিশ্বাসঘাতকদের মাঝে বাস করতে। তোমরা নোংরা পানি (মদ) পান করতে এবং অপবিত্র খাবার খেতে। তোমরা একে অপরের রক্তপাত ঘটাতে এবং আত্মীয়তার বন্ধনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে না । তোমরা সকলে প্রতিমা পূজা করতে এবং সর্বদা পাপে ডুবে থাকতে ।
রাসূলের ইনতিকালের পর আমি লক্ষ্য করে দেখলাম আমার পরিবার পরিজন ছাড়া আমার আর কোন সমর্থক নেই ,তাই আমার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে বিরত রইলাম। পরিস্থিতি আমার চোখে ধুলিকণার মত বিধা সত্ত্বেও আমি আমার চোখ বন্ধ রাখলাম ,গলার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা সত্ত্বেও আমি পান করলাম ,আমার শ্বাস - প্রশ্বাসে বিঘ্ন হওয়া এবং তিক্ত খাদ্য পাওয়া সত্ত্বেও আমি ধৈর্য ধারণ করলাম।
মুয়াবিয়া যথেষ্ট মূল্য
দিয়ে আমর ইবনে আ 'সের বায়াত আদায় করেছে। এহেন বায়াত ক্রেতার হাত কৃতকার্য নাও হতে পারে এবং বিক্রেতাগণের চুক্তি অসম্মানজনকও হতে পারে। এখন তোমরা যুদ্ধের জন্য অস্ত্র ধারণ কর এবং নিজেদের সাজ - সরঞ্জামের ব্যবস্থা কর। যুদ্ধের শিখা অনেক উচুতে উঠেছে এবং তার ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজকে ধৈর্যের পোষাক পরাও কারণ ধৈর্য জয় অপেক্ষা উত্তম।
____________________
খোৎবা- ২৭
وفيها يذكر فضل الجهاد، ويستنهض الناس، ويذكر علمه بالحرب
أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ الْجِهَادَ بَابٌ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ - فَتَحَه اللَّه لِخَاصَّةِ أَوْلِيَائِه وهُوَ لِبَاسُ التَّقْوَى - ودِرْعُ اللَّه الْحَصِينَةُ وجُنَّتُه الْوَثِيقَةُ - فَمَنْ تَرَكَه رَغْبَةً عَنْه أَلْبَسَه اللَّه ثَوْبَ الذُّلِّ وشَمِلَه الْبَلَاءُ - ودُيِّثَ بِالصَّغَارِ والْقَمَاءَةِ وضُرِبَ عَلَى قَلْبِه بِالإِسْهَابِ وأُدِيلَ الْحَقُّ مِنْه بِتَضْيِيعِ الْجِهَادِ - وسِيمَ الْخَسْفَ ومُنِعَ النَّصَفَ
أَلَا وإِنِّي قَدْ دَعَوْتُكُمْ إِلَى قِتَالِ هَؤُلَاءِ الْقَوْمِ - لَيْلًا ونَهَاراً وسِرّاً وإِعْلَاناً - وقُلْتُ لَكُمُ اغْزُوهُمْ قَبْلَ أَنْ يَغْزُوكُمْ - فَوَاللَّه مَا غُزِيَ قَوْمٌ قَطُّ فِي عُقْرِ دَارِهِمْ إِلَّا ذَلُّوا - فَتَوَاكَلْتُمْ وتَخَاذَلْتُمْ - حَتَّى شُنَّتْ عَلَيْكُمُ الْغَارَاتُ ومُلِكَتْ عَلَيْكُمُ الأَوْطَانُ - وهَذَا أَخُو غَامِدٍ [و] قَدْ وَرَدَتْ خَيْلُه الأَنْبَارَ وقَدْ قَتَلَ حَسَّانَ بْنَ حَسَّانَ الْبَكْرِيَّ - وأَزَالَ خَيْلَكُمْ عَنْ مَسَالِحِهَا ولَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّ الرَّجُلَ مِنْهُمْ كَانَ يَدْخُلُ - عَلَى الْمَرْأَةِ الْمُسْلِمَةِ والأُخْرَى الْمُعَاهِدَةِ فَيَنْتَزِعُ حِجْلَهَا وقُلُبَهَا
وقَلَائِدَهَا ورُعُثَهَا مَا تَمْتَنِعُ مِنْه إِلَّا بِالِاسْتِرْجَاعِ والِاسْتِرْحَامِ ثُمَّ انْصَرَفُوا وَافِرِينَ مَا نَالَ رَجُلًا مِنْهُمْ كَلْمٌ ولَا أُرِيقَ لَهُمْ دَمٌ - فَلَوْ أَنَّ امْرَأً مُسْلِماً مَاتَ مِنْ بَعْدِ هَذَا أَسَفاً - مَا كَانَ بِه مَلُوماً بَلْ كَانَ بِه عِنْدِي جَدِيراً - فَيَا عَجَباً عَجَباً واللَّه يُمِيتُ الْقَلْبَ ويَجْلِبُ الْهَمَّ - مِنَ اجْتِمَاعِ هَؤُلَاءِ الْقَوْمِ عَلَى بَاطِلِهِمْ - وتَفَرُّقِكُمْ عَنْ حَقِّكُمْ - فَقُبْحاً لَكُمْ وتَرَحاً حِينَ صِرْتُمْ غَرَضاً يُرْمَى - يُغَارُ عَلَيْكُمْ ولَا تُغِيرُونَ - وتُغْزَوْنَ ولَا تَغْزُونَ ويُعْصَى اللَّه وتَرْضَوْنَ - فَإِذَا أَمَرْتُكُمْ بِالسَّيْرِ إِلَيْهِمْ فِي أَيَّامِ الْحَرِّ - قُلْتُمْ هَذِه حَمَارَّةُ الْقَيْظِ أَمْهِلْنَا يُسَبَّخْ عَنَّا الْحَرُّ وإِذَا أَمَرْتُكُمْ بِالسَّيْرِ إِلَيْهِمْ فِي الشِّتَاءِ - قُلْتُمْ هَذِه صَبَارَّةُ الْقُرِّ أَمْهِلْنَا يَنْسَلِخْ عَنَّا الْبَرْدُ - كُلُّ هَذَا فِرَاراً مِنَ الْحَرِّ والْقُرِّ - فَإِذَا كُنْتُمْ مِنَ الْحَرِّ والْقُرِّ تَفِرُّونَ - فَأَنْتُمْ واللَّه مِنَ السَّيْفِ أَفَرُّ!
يَا أَشْبَاه الرِّجَالِ ولَا رِجَالَ - حُلُومُ الأَطْفَالِ وعُقُولُ رَبَّاتِ الْحِجَالِ لَوَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أَرَكُمْ ولَمْ أَعْرِفْكُمْ مَعْرِفَةً - واللَّه جَرَّتْ نَدَماً وأَعْقَبَتْ سَدَماً قَاتَلَكُمُ اللَّه لَقَدْ مَلأْتُمْ قَلْبِي قَيْحاً وشَحَنْتُمْ صَدْرِي غَيْظاً - وجَرَّعْتُمُونِي نُغَبَ التَّهْمَامِ أَنْفَاساً وأَفْسَدْتُمْ عَلَيَّ رَأْيِي بِالْعِصْيَانِ والْخِذْلَانِ - حَتَّى لَقَدْ قَالَتْ قُرَيْشٌ إِنَّ ابْنَ أَبِي
طَالِبٍ رَجُلٌ شُجَاعٌ - ولَكِنْ لَا عِلْمَ لَه بِالْحَرْبِ.
لِلَّه أَبُوهُمْ - وهَلْ أَحَدٌ مِنْهُمْ أَشَدُّ لَهَا مِرَاساً وأَقْدَمُ فِيهَا مَقَاماً مِنِّي - لَقَدْ نَهَضْتُ فِيهَا ومَا بَلَغْتُ الْعِشْرِينَ - وهَا أَنَا ذَا قَدْ ذَرَّفْتُ عَلَى السِّتِّينَ ولَكِنْ لَا رَأْيَ لِمَنْ لَا يُطَاعُ!
জনগণকে জিহাদে
উদ্বুদ্ধকরণ
নিশ্চয়ই ,জিহাদ বেহেশতের দ্বারসমূহের একটা যা আল্লাহ তাঁর বিশেষ বন্ধুদের জন্য খুলে রেখেছেন। জিহাদ হচ্ছে তাকওয়ার পোষাক এবং আল্লাহর নিরাপত্তামূলক বর্ম ও বিশ্বস্ত ঢাল। কেউ জিহাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলে আল্লাহ তাকে অসম্মানের পোষাকে আবৃত করেন এবং বালামুসিবতের কাপড় পরিয়ে দেন। তখন নিদারুণ অপমান ও ঘৃণা তার সঙ্গী হয়ে পড়ে এবং তার হৃদয়কে (অজ্ঞতার) পর্দাবৃত করে দেয়া হয়। জিহাদের প্রতি বিমুখতার কারণে তার কাছ থেকে মহাসত্য অপসারণ করা হয়। ফলে সে কলঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং সে ন্যায় - বিচার থেকে বঞ্চিত হয়।
সাবধান ,এসব লোকের বিরুদ্ধে দিনে - রাতে ,গোপনে - প্রকাশ্যে সংগ্রাম করার জন্য আমি তোমাদের দৃঢ়কণ্ঠে আহবান করেছিলাম। তোমরা আক্রান্ত হবার পূর্বেই আক্রমণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। কারণ আল্লাহর কসম ,যারা নিজেদের ঘরের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে তারা দারুণভাবে অমর্যাদাকর অবস্থায় পড়েছে। তোমরা নিজের দায়িত্ব অন্যের দিকে ঠেলে দিয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত একে অপরকে অপদস্থ করছো। তোমাদের নগরীসমূহ শত্রুরা দখল করেনিয়েছে। বনি ঘামিদের
অশ্বারোহীগণ আল - আনবারে পৌঁছে গেছে এবং তারা হাসান ইবনে হাসান বকরীকে হত্যা করেছে। তোমাদের অশ্বারোহীদের তারা দূর্গ থেকে বিতাড়িত করেছে।
আমি জানতে পেরেছি তারা মুসলিম রমণী ও ইসলামের নিরাপত্তাধীন রমণীদের ইজ্জত হরণ করেছে এবং হাত ,পা ,গলা ও কান থেকে অলঙ্কারাদি ছিনিয়ে নিয়েছে। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন (২ : ১৫৬)–
কুরআনের এ আয়াত উচ্চারণ করা ছাড়া রমণীকুল কোন কিছুই করতে পারেনি। নিজেদের কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি ব্যতিরেকে তারা ধন - সম্পদ নিয়ে চলে গেছে। এ ঘটনার কারণে কোন মুসলিম যদি শোকে মরে যায় তাহলে তাকে দোষ দেয়া যাবে না ; বরং আমার কাছে তার মৃত্যু ওজর হয়ে থাকবে।
কী আশ্চর্য! কী আশ্চর্য! আল্লাহর কসম ,অন্যায় সাধনের জন্য তাদের একতা আর ন্যায়ের পথে তোমাদের অনৈক্য দেখে আমার হৃদয় ব্যথাতুর হয়ে পড়ে। শোক আর দুর্দশা তোমাদেরকে ঘিরে ধরেছে ,তোমরা এমন নিশানা হয়ে গেছ যেখানে তীর নিক্ষেপ করা যায় ,তোমরা নিহত হচ্ছে অথচ হত্যা করনা । তোমরা আক্রান্ত হচ্ছো অথচ আক্রমণ করনা। আল্লাহকে অমান্য করা হচ্ছে অথচ তোমরা তাতে রাজি হয়ে রয়েছো। যখন আমি গ্রীষ্কালে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদে এগিয়ে যেতে বলি তখন তোমরা বল এখন আবহাওয়া গরম - উত্তাপ প্রশমিত হওয়া পর্যন্ত সময় দিন। যখন আমি শীতকালে যাত্রা করতে বলি তখন তোমরা বল এখন খুব ঠান্ডা - শীত যাওয়া পর্যন্ত সময় দিন। এভাবে শীত - গ্রীষ্ম এড়ানোর চেষ্টা ওজর মাত্র। আল্লাহর কসম ,ঠাণ্ডা আর গরম থেকে তোমরা যেভাবে পালিয়ে যাচ্ছো ,তরবারি (যুদ্ধ) থেকে তোমরা আরো অধিক পালিয়ে যাবে।
ওহে ,তোমরা মনুষ্যরূপী ,আসলে মানুষ নও ,তোমাদের বুদ্ধিমত্তা শিশুর মতো এবং তোমাদের জ্ঞানের পরিধি পর্দার অন্তরালে আবদ্ধ নারীর মতো (যারা বর্হিজগতের কোন খোজ রাখে না) । তোমাদের সঙ্গে আমার দেখা না হলে বা তোমাদেরকে আমি না চিনলে কতই না ভালো হতো। আল্লাহর কসম তোমদের সাথে পরিচিতি আমার কাছে লজ্জা আর অনুশোচনার কারণ হয়ে রইলো। আল্লাহ তোমাদের সাথে যুদ্ধ করুন! তোমরা আমার হৃদয়কে দুঃখ ভারাক্রান্ত করেছো এবং আমার বক্ষে রোষের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছো। তোমরা আমাকে একের পর এক দুঃখের শরাব পান করিয়েছো। তোমরা আমার অবাধ্য হয়ে আমার সকল উপদেশ অমান্য করেছো এবং এমন এক অবস্থার সৃষ্টি করেছো যাতে কুরাইশগন বলাবলি করছে যে ,আবি তালিবের পুত্র বীর বটে কিন্তু যুদ্ধ কৌশল জানেনা। তাদের উপর আল্লাহর আশীর্বাদ ! যুদ্ধক্ষেত্রে আমার চেয়ে অধিক ক্ষিপ্র আর অভিজ্ঞ তাদের কেউ আছে কি ? জিহাদের ময়দানে আমার চেয়ে পুরাতন কোন ব্যক্তি আছে কি ? বিশ বছর বয়স না হতেই আমি অস্ত্র ধারণ করেছি। আজ ষাটত্তোর বয়সেও একই রকম শৌর্য নিয়ে আছি ; কিন্তু যাকে মান্য করা হয়না তার অভিমতের মুল্য কি ?
____________________
খোৎবা- ২৮
أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ الدُّنْيَا أَدْبَرَتْ وآذَنَتْ بِوَدَاعٍ - وإِنَّ الآخِرَةَ قَدْ أَقْبَلَتْ وأَشْرَفَتْ بِاطِّلَاعٍ أَلَا وإِنَّ الْيَوْمَ الْمِضْمَارَ وغَداً السِّبَاقَ - والسَّبَقَةُ الْجَنَّةُ والْغَايَةُ النَّارُ - أَفَلَا تَائِبٌ مِنْ خَطِيئَتِه قَبْلَ مَنِيَّتِه أَلَا عَامِلٌ لِنَفْسِه قَبْلَ يَوْمِ بُؤْسِه أَلَا وإِنَّكُمْ فِي أَيَّامِ أَمَلٍ مِنْ وَرَائِه أَجَلٌ - فَمَنْ عَمِلَ فِي أَيَّامِ أَمَلِه قَبْلَ حُضُورِ أَجَلِه - فَقَدْ نَفَعَه عَمَلُه ولَمْ يَضْرُرْه أَجَلُه - ومَنْ قَصَّرَ فِي أَيَّامِ أَمَلِه قَبْلَ حُضُورِ أَجَلِه - فَقَدْ خَسِرَ عَمَلُه وضَرَّه أَجَلُه - أَلَا فَاعْمَلُوا فِي الرَّغْبَةِ كَمَا تَعْمَلُونَ فِي الرَّهْبَةِ أَلَا وإِنِّي لَمْ أَرَ كَالْجَنَّةِ نَامَ طَالِبُهَا ولَا كَالنَّارِ نَامَ هَارِبُهَا - أَلَا وإِنَّه مَنْ لَا يَنْفَعُه الْحَقُّ يَضُرُّه الْبَاطِلُ - ومَنْ لَا يَسْتَقِيمُ بِه الْهُدَى يَجُرُّ بِه الضَّلَالُ إِلَى الرَّدَى - أَلَا وإِنَّكُمْ قَدْ أُمِرْتُمْ بِالظَّعْنِ ودُلِلْتُمْ عَلَى الزَّادِ - وإِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ اثْنَتَانِ اتِّبَاعُ الْهَوَى وطُولُ الأَمَلِ - فَتَزَوَّدُوا فِي الدُّنْيَا مِنَ الدُّنْيَا - مَا تَحْرُزُونَ بِه أَنْفُسَكُمْ غَداً.
ইহজগতের
ক্ষণস্থায়ীত্ব
ও
পরকালের
গুরুত্ব
সম্পর্কে
নিশ্চয়ই ,ইহকাল পিছন ফিরে তার প্রস্থান ঘোষণা করছে এবং পরকাল অগ্রসরমান হয়ে তার উপস্থিতির জানান দিচ্ছে। মনে রাখবে ,আজই পরকালের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার দিন এবং আগামীকাল যাত্রা করতে হবে। যারা আল্লাহর পথে অগ্রসর হয় তাদের স্থান বেহেশত ,আর যারা পিছনে পড়ে থাকে তাদের স্থান হলো দোযখ । এমন কেউ কি নেই যে মৃত্যুর পূর্বে তওবা করে ? এমন কেউ কি নেই যে কিয়ামতের পূর্বে কল্যাণকর কর্মসাধন করে ?
সাবধান ,তোমরা হয়তো আশায় বুক বেঁধে দিন গুনছো কিন্তু তোমাদের আশার পিছনে মৃত্যুদূত দন্ডায়মান। যে ব্যক্তি আশায় কালক্ষেপণ না করে মৃত্যুর পূর্বেই আমল করে তার আমল উপকারে আসে এবং মৃত্যু তার ক্ষতি সাধন করতে পারে না। আবার যে ব্যক্তি মৃত্যুর আগমনের পূর্বে আমল করতে ব্যর্থ হয় ,মৃত্যু তার জন্য ক্ষতিকর এবং তার লোকসানের অন্ত নেই। সাবধান ,মহা - আতঙ্কের সময় যেমন আমল কর ,সুখের সময়েও ঠিক তেমন আমল করো। নিশ্চয়ই ,কোন বেহেশত কামনাকারী ও দোযখের ভয়ে আতঙ্কগ্রস্থকে আমি ঘুমিয়ে থাকতে দেখি নি। মনে রেখো ,হক যার উপকারে আসেনি ,বাতিলের ভোগান্তি সে পোহাবে এবং হেদায়েত যাকে দৃঢ় রাখতে পারেনি ,গোমরাহি তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে।
সাবধান ,(সত্যের পথে থাকার জন্য) দৃঢ়ভাবে তোমাদেরকে আদেশ দেয়া হয়েছে এবং কিভাবে তোমরা যাত্রাপথের রসদ সংগ্রহ করবে। সে পথ সুস্পষ্ট করে দেখানো হয়েছে। আমার ভীষণ ভয় হচ্ছে তোমরা তোমাদের কামনা - বাসনা সম্প্রসারিত করে তার অনুবর্তী হয়ে পড় কিনা। ইহকালেই রসদ সংগ্রহ কর যা তোমাদেরকে পরকালে রক্ষা করবে ।
খোৎবা- ২৯
أَيُّهَا النَّاسُ الْمُجْتَمِعَةُ أَبْدَانُهُمْ - الْمُخْتَلِفَةُ أَهْوَاؤُهُمْ كَلَامُكُمْ يُوهِي الصُّمَّ الصِّلَابَ وفِعْلُكُمْ يُطْمِعُ فِيكُمُ الأَعْدَاءَ – تَقُولُونَ فِي الْمَجَالِسِ كَيْتَ وكَيْتَ فَإِذَا جَاءَ الْقِتَالُ قُلْتُمْ حِيدِي حَيَادِ مَا عَزَّتْ دَعْوَةُ مَنْ دَعَاكُمْ - ولَا اسْتَرَاحَ قَلْبُ مَنْ قَاسَاكُمْ - أَعَالِيلُ بِأَضَالِيلَ وسَأَلْتُمُونِي التَّطْوِيلَ دِفَاعَ ذِي الدَّيْنِ الْمَطُولِ لَا يَمْنَعُ الضَّيْمَ الذَّلِيلُ - ولَا يُدْرَكُ الْحَقُّ إِلَّا بِالْجِدِّ - أَيَّ دَارٍ بَعْدَ دَارِكُمْ تَمْنَعُونَ - ومَعَ أَيِّ إِمَامٍ بَعْدِي تُقَاتِلُونَ - الْمَغْرُورُ واللَّه مَنْ غَرَرْتُمُوه - ومَنْ فَازَ بِكُمْ فَقَدْ فَازَ واللَّه بِالسَّهْمِ الأَخْيَبِ ومَنْ رَمَى بِكُمْ فَقَدْ رَمَى بِأَفْوَقَ نَاصِلٍ أَصْبَحْتُ واللَّه لَا أُصَدِّقُ قَوْلَكُمْ - ولَا أَطْمَعُ فِي نَصْرِكُمْ - ولَا أُوعِدُ الْعَدُوَّ بِكُمْ - مَا بَالُكُمْ مَا دَوَاؤُكُمْ مَا طِبُّكُمْ - الْقَوْمُ رِجَالٌ أَمْثَالُكُمْ - أَقَوْلًا بِغَيْرِ عِلْمٍ - وغَفْلةً مِنْ غَيْرِ وَرَعٍ - وطَمَعاً فِي غَيْرِ حَقٍّ!؟
জিহাদের সময়
যারা
মিথ্যা
ওজর
দেখিয়েছিল
তাদের
সম্বন্ধে
হে লোকসকল ,তোমরা শারীরিকভাবে ঐক্য দেখালেও তোমাদের মন - মানস ও কামনা বিবিধমুখি । তোমাদের কথায় কঠিন পাথর গলে যায় এবং তোমাদের কার্যকলাপ দেখে শত্রুপক্ষ প্রলুব্ধ হয়। তোমরা বসে বসে বাগাড়ম্বর কর ,এটা করবে ,ওটা করবে ; অথচ যুদ্ধ আরম্ভ হলেই নিরাপদ দূরত্বে শটকে পড়। কেউ সাহায্যের জন্য আহবান করলে তোমরা কর্ণপাত কর না । তোমাদের সাথে কঠোর আচরণ করেও কোন লাভ হয় না। তোমরা এমন সব ভ্রান্ত ওজর দাঁড় করাও যেন খাতক তার ঋণ পরিশোধ করতে চায় না। অপদস্ত লোক কখনো নির্যাতন প্রতিহত করতে পারে না। কঠোর প্রচেষ্টা ছাড়া সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠিত করা যায় না। এ ঘর ছাড়া আর কোনটি তোমরা রক্ষা করবে ? আমার পরে কোন ইমামের নেতৃত্বে তোমরা যুদ্ধ করবে ?
আল্লাহর কসম ,তোমরা আমাকে প্রতারণা করতে গিয়ে নিজেরাই প্রতারিত হচ্ছো এবং সেও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হবে যে যুদ্ধক্ষেত্রে অকেজো তীর কুড়িয়ে জড়ো করে। তোমরা হলে শত্রুর উপর নিক্ষিপ্ত ভাঙ্গা তীরের মতো। আল্লাহর কসম ,বর্তমানে আমার অবস্থা এমন হয়েছে যে ,আমি না। পারি তোমাদের অভিমত গ্রহণ করতে ,না পারি তোমাদের সাহায্য বা সমর্থনের আশা করতে ,আর না পারি তোমাদেরকে নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে। তোমাদের হয়েছেটা কী ,শুনি ? তোমরা কি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে ? তোমাদের রোগ নিরাময়ের উপায় কী ? বিরুদ্ধপক্ষও তোমাদের মতোই মানুষ কিন্তু বৈশিষ্ট্যে তারা তোমাদের চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতির। তোমরা কি কাজের চেয়ে কথাই বেশি বলতে থাকবে ? পরহেজগারি ছেড়ে গাফেল হয়ে থাকবে ? তোমরা কি (ন্যায়ের পথে) কাজ না করার প্রতি আসক্ত হয়েই থাকবে ?
____________________
খোৎবা- ৩০
لَوْ أَمَرْتُ بِه لَكُنْتُ قَاتِلًا - أَوْ نَهَيْتُ عَنْه لَكُنْتُ نَاصِراً - غَيْرَ أَنَّ مَنْ نَصَرَه لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقُولَ خَذَلَه مَنْ أَنَا خَيْرٌ مِنْه - ومَنْ خَذَلَه لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقُولَ نَصَرَه مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنِّي - وأَنَا جَامِعٌ لَكُمْ أَمْرَه اسْتَأْثَرَ فَأَسَاءَ الأَثَرَةَ وجَزِعْتُمْ فَأَسَأْتُمُ الْجَزَعَ ولِلَّه حُكْمٌ وَاقِعٌ فِي الْمُسْتَأْثِرِ والْجَازِعِ.
উসমানের
হত্যার
প্রকৃত
ঘটনা
প্রকাশ
করে
আমিরুল
মোমেনিন
বলেনঃ
আমি যদি তাকে হত্যা করার আদেশ দিয়ে থাকি তা হলে আমিই হত্যাকারী। আর আমি যদি হত্যাকান্ডে অন্যদের বাধা দিয়ে থাকি তবে আমি তার সাহায্যকারী ছিলাম। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে ,যে ব্যক্তি তাকে সাহায্য করেছে। সে এখন আর বলতে পারে না যে ,সে ওই ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম যে তাকে পরিত্যাগ করে চলে গিয়েছিল। আবার যে তাকে পরিত্যাগ করেছিল সেও বলতে পারে না যে ,সে তার সাহায্যকারী অপেক্ষা উত্তম। আমি তার বিষয়াবলী তোমাদের কাছে খুলে বলছি। সে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে এবং সম্পদ আত্মসাৎ করেছে। এ কাজগুলো সে অত্যন্ত ন্যাক্কার জনক ভাবে করেছিল। তোমরা তার এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করেছো । কিন্তু তাতে অনেক বাড়াবাড়ি করে ফেলেছো। সম্পদ আত্মসাৎকারী ও প্রতিবাদীদের মধ্যে যা ঘটেছে তার প্রকৃত সত্য আল্লাহই জানেন।
____________________
খোৎবা
-
৩১
لما أنفذ عبد الله بن عباس - إلى الزبير يستفيئه إلى طاعته قبل حرب الجمل
لَا تَلْقَيَنَّ طَلْحَةَ - فَإِنَّكَ إِنْ تَلْقَه تَجِدْه كَالثَّوْرِ عَاقِصاً قَرْنَه يَرْكَبُ الصَّعْبَ ويَقُولُ هُوَ الذَّلُولُ - ولَكِنِ الْقَ الزُّبَيْرَ فَإِنَّه أَلْيَنُ عَرِيكَةً فَقُلْ لَه يَقُولُ لَكَ ابْنُ خَالِكَ - عَرَفْتَنِي بِالْحِجَازِ وأَنْكَرْتَنِي بِالْعِرَاقِ - فَمَا عَدَا مِمَّا بَدَا.
জামালের যুদ্ধের প্রাক্কালে আমিরুল মোমেনিন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসকে জুবায়ের ইবনে আওয়ামের নিকট প্রেরণ করেছিলেন যেন আনুগত্যে ফিরে আসার জন্য জুবায়েরকে সে উপদেশ দেয়। আবদুল্লাহকে তখন বলেছিলেনঃ
তালহা ইবনে উবায়দিল্লাহর সঙ্গে দেখা করো না। যদি তুমি দেখা কর তবে দেখবে সে একটা অবাধ্য ষাড়ের মত ,যার শিং বাকা হয়ে কানের দিকে চলে এসেছে। সে ভয়ানক অবাধ্য বাহনে আরোহন করে এবং বলে এটাকে পোষ মানানো হয়েছে। তুমি জুবায়েরের সাথে দেখা করো ,কারণ সে তুলনামূলকভাবে কোমল মেজাজের। তাকে বলো যে ,তোমার মামাত ভাই বলেন ,“
হিজাজে তুমি আমাকে চিনেছিলে বা গ্রহণ করেছিলে ,কিন্তু ইরাকে তুমি আমাকে চেন না। তুমি আগে যা দেখিয়েছিলে কিসে তোমাকে তা থেকে বিরত করেছে।”
খোৎবা -
৩২
وفيها يصف زمانه بالجور، ويقسم الناس فيه خمسة أصناف، ثم يزهد في الدنيا
أَيُّهَا النَّاسُ - إِنَّا قَدْ أَصْبَحْنَا فِي دَهْرٍ عَنُودٍ وزَمَنٍ - كَنُودٍ يُعَدُّ فِيه الْمُحْسِنُ مُسِيئاً - ويَزْدَادُ الظَّالِمُ فِيه عُتُوّاً - لَا نَنْتَفِعُ بِمَا عَلِمْنَا ولَا نَسْأَلُ عَمَّا جَهِلْنَا - ولَا نَتَخَوَّفُ قَارِعَةً حَتَّى تَحُلَّ بِنَا.
والنَّاسُ عَلَى أَرْبَعَةِ أَصْنَافٍ - مِنْهُمْ مَنْ لَا يَمْنَعُه الْفَسَادَ فِي الأَرْضِ - إِلَّا مَهَانَةُ نَفْسِه وكَلَالَةُ حَدِّه ونَضِيضُ وَفْرِه ومِنْهُمْ الْمُصْلِتُ لِسَيْفِه والْمُعْلِنُ بِشَرِّه - والْمُجْلِبُ بِخَيْلِه ورَجِلِه قَدْ أَشْرَطَ نَفْسَه وأَوْبَقَ دِينَه لِحُطَامٍ يَنْتَهِزُه أَوْ مِقْنَبٍ يَقُودُه أَوْ مِنْبَرٍ يَفْرَعُه - ولَبِئْسَ الْمَتْجَرُ أَنْ تَرَى الدُّنْيَا لِنَفْسِكَ ثَمَناً - ومِمَّا لَكَ عِنْدَ اللَّه عِوَضاً - ومِنْهُمْ مَنْ يَطْلُبُ الدُّنْيَا بِعَمَلِ الآخِرَةِ - ولَا يَطْلُبُ الآخِرَةَ بِعَمَلِ الدُّنْيَا - قَدْ طَامَنَ مِنْ شَخْصِه - وقَارَبَ مِنْ خَطْوِه وشَمَّرَ مِنْ ثَوْبِه - وزَخْرَفَ مِنْ نَفْسِه لِلأَمَانَةِ - واتَّخَذَ سِتْرَ اللَّه ذَرِيعَةً إِلَى الْمَعْصِيَةِ - ومِنْهُمْ مَنْ أَبْعَدَه عَنْ طَلَبِ الْمُلْكِ ضُئُولَةُ نَفْسِه وانْقِطَاعُ سَبَبِه فَقَصَرَتْه الْحَالُ عَلَى حَالِه - فَتَحَلَّى بِاسْمِ الْقَنَاعَةِ - وتَزَيَّنَ بِلِبَاسِ أَهْلِ الزَّهَادَةِ - ولَيْسَ مِنْ ذَلِكَ فِي مَرَاحٍ ولَا مَغْدًى
وبَقِيَ رِجَالٌ غَضَّ أَبْصَارَهُمْ ذِكْرُ الْمَرْجِعِ - وأَرَاقَ دُمُوعَهُمْ خَوْفُ الْمَحْشَرِ - فَهُمْ بَيْنَ شَرِيدٍ نَادٍّ وخَائِفٍ مَقْمُوعٍ وسَاكِتٍ مَكْعُومٍ ودَاعٍ مُخْلِصٍ وثَكْلَانَ مُوجَعٍ - قَدْ أَخْمَلَتْهُمُ التَّقِيَّةُ وشَمِلَتْهُمُ الذِّلَّةُ - فَهُمْ فِي بَحْرٍ أُجَاجٍ أَفْوَاهُهُمْ ضَامِزَةٌ وقُلُوبُهُمْ قَرِحَةٌ قَدْ وَعَظُوا حَتَّى مَلُّوا وقُهِرُوا حَتَّى ذَلُّوا وقُتِلُوا حَتَّى قَلُّوا.
فَلْتَكُنِ الدُّنْيَا فِي أَعْيُنِكُمْ - أَصْغَرَ مِنْ حُثَالَةِ الْقَرَظِ وقُرَاضَةِ الْجَلَمِ واتَّعِظُوا بِمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ - قَبْلَ أَنْ يَتَّعِظَ بِكُمْ مَنْ بَعْدَكُمْ - وارْفُضُوهَا ذَمِيمَةً - فَإِنَّهَا قَدْ رَفَضَتْ مَنْ كَانَ أَشْغَفَ بِهَا مِنْكُمْ.
দুনিয়ার অবমূল্যায়ন ও মানুষের প্রকারভেদ সম্বন্ধে
হে লোকসকল ,আমরা এমন একটা বিভ্রান্তিকর ও অপ্রশংসনীয় সময়ে দিন কাটিয়ে যাচ্ছি। যখন ধার্মিকগণকে দুশ্চরিত্র মনে করা হয় এবং অত্যাচারী সীমালঙ্ঘন করে চলে। আমরা যা জানি তার দ্বারা যথাযথভাবে উপকৃত হই না ,আর যা জানি না সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে চাই না। বালা মুসিবত আপতিত হবার পূর্বে আমরা দুর্যোগকে ভয় করি না।
মানুষ চার শ্রেণির হয়ে থাকে। প্রথম শ্রেণি হচ্ছে তারা - যারা সম্পদের অভাবে ,উপায় - উপকরণের অভাবে ও সমাজে নিম্ন অবস্থানের (ক্ষমতার অভাবে) কারণে ফ্যাসাদ - বিবাদ সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকে।
দ্বীতীয় শ্রেণি হচ্ছে তারা - যারা তরবারি উন্মুক্ত করে প্রকাশ্যে অন্যায় অবিচার করে এবং পদাতিক ও অশ্বারোহী সৈন্য সংগ্রহ করে এবং সম্পদ আহরণ ,ক্ষমতা দখল ও মিম্বারে আরোহণের জন্য নিজের দ্বীনকে বরবাদ করে। আল্লাহর কাছে যা রয়েছে তার পরিবর্তে দুনিয়া ক্রয় করা কতই না নিকৃষ্ট লেনদেন ।
তৃতীয় শ্রেণি হচ্ছে তারা - যারা পরকালের জন্য আমলের মাধ্যমে দুনিয়া অন্বেষণ করে (অর্থাৎ পার্থিব সুযোগ লাভের জন্য ধর্ম - কর্ম করে) । এরা ইহকালের ক্রিয়াকর্মের মাধ্যমে পরকালের মঙ্গল অন্বেষণ করে না। এরা নিজেদের দেহকে শান্ত - শিষ্ট রাখে ,ধীর পদক্ষেপে চলাফেরা করে ,বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য পোশাক - পরিচ্ছদে দেহকে সাজিয়ে রাখে এবং পাপ করার উপায় হিসেবে এমন অবস্থা দেখায় যেন সে আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত (অর্থাৎ প্রকাশ্যে সাধু সেজে সৎ ব্যক্তির ছদ্মবেশে পাপে লিপ্ত থাকে) ।
চতুর্থ শ্রেণি হচ্ছে তারা - যারা দুর্বলতা ও উপায় - উপকরণের অভাবে রাজত্ব চাওয়া থেকে পিছিয়ে রয়েছে। এতে তাদের অবস্থান হীন হয়ে রয়েছে ,আর তারা এ অবস্থাকে তৃপ্তি নাম দিয়েছে। তারা পরহেজগার ব্যক্তিদের আলখেল্লা পরিধান করে যদিও পরহেজাগারের গুণাবলীর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই।
এরপরও কিছু লোক থেকে যায় যারা ফেরত যাওয়াকে স্মরণ করে দৃষ্টি আনত রাখে এবং কেয়ামতের ভীতি তাদের চোখকে অশ্রুসিক্ত রাখে। তাদের কতেক লোক সমাজ থেকে ভয়ে সরে পড়েছে ও অদৃশ্য হয়ে রয়েছে ,কতেক ভয়ে বিহ্বল ও দমিত ,কতেক নিশ্চুপ যেন জন্তুর মুখবন্ধ মুখে আটা ,কতেক এখলাছের সাথে মানুষকে সত্যের দিকে আহবান করে এবং কতেক শোকাভিভূত ও দুঃখদুদর্শাগ্রস্ত। আত্মগোপনতা এদেরকে নামবিহীন করে দিয়েছে এবং সমাজে এদের কোন কদর নেই। সুতরাং তারা তিক্ত পানিতে বাস করে। তাদের মুখ বন্ধ এবং হৃদয় ভগ্ন ও ক্ষত বিক্ষত। তারা ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত মানুষকে নছিহত করেছে। তারা অপমানিত না হওয়া পর্যন্ত অত্যাচারিত হয়েছে এবং সংখ্যায় নগণ্য না হওয়া পর্যন্ত নিহত হয়েছে।
দুনিয়া তোমাদের চোখে বাবলা গাছের বাকল অথবা পশমের কর্তিত টুকরা অপেক্ষা মূল্যহীন হওয়া উচিত। তোমাদের পরবর্তীগণ তোমাদের কাছ থেকে উপদেশ গ্রহণ করার আগে তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীগণ থেকে উপদেশ গ্রহণ কর এবং দুনিয়াকে নিকৃষ্ট মনে করে তা থেকে দূরে থাকো। মনে রেখো ,দুনিয়ার সাথে যারা তোমাদের চেয়েও অধিক বন্ধুত্ব করেছে ,দুনিয়া তাদের সাথেও সম্পর্ক ছেদ করেছে।