খোৎবা- ৪৮
عند المسير إلى الشام
الْحَمْدُ لِلَّه كُلَّمَا وَقَبَ لَيْلٌ وغَسَقَ، والْحَمْدُ لِلَّه كُلَّمَا لَاحَ نَجْمٌ وخَفَقَ والْحَمْدُ لِلَّه غَيْرَ مَفْقُودِ الإِنْعَامِ ولَا مُكَافَإِ الإِفْضَالِ.
أَمَّا بَعْدُ فَقَدْ بَعَثْتُ مُقَدِّمَتِي وأَمَرْتُهُمْ بِلُزُومِ هَذَا الْمِلْطَاطِ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرِي - وقَدْ رَأَيْتُ أَنْ أَقْطَعَ هَذِه النُّطْفَةَ إِلَى شِرْذِمَةٍ مِنْكُمْ - مُوَطِّنِينَ أَكْنَافَ دِجْلَةَ - فَأُنْهِضَهُمْ مَعَكُمْ إِلَى عَدُوِّكُمْ - وأَجْعَلَهُمْ مِنْ أَمْدَادِ الْقُوَّةِ لَكُمْ.
সিরিয়া অভিমুখে
যাত্রার
প্রাক্কালে
আমিরুল
মোমেনিন
বলেনঃ
প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর ,যখন অন্ধকার নেমে আসে ও রাত্রি প্রসারিত হয়। প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর ,যখন তারকারাজী উদয় ও অস্তমিত হয়। প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর ,যার রহমত থেকে কেউ বঞ্চিত হয় না এবং যার নেয়ামতের প্রতিদান দেয়া কখনো সম্ভব নয় ।
আমি আমার অগ্রবাহনী
পাঠিয়ে দিয়েছি এবং তাদের আদেশ করেছি যেন নদীর এ তীরে ক্যাম্প করে অবস্থান করে যে পর্যন্ত না আমার পুনরাদেশ পায়। আমার অভিপ্রায় হলো - দজলার (টাইগ্রিস) ওপারে যে এলাকায় লোকবসতি কম সে এলাকা দিয়ে অতিক্রম করবো এবং সেসব লোকদের তোমাদের সাথে শত্রুর দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলে তারা তোমাদের সহায়ক বাহিনী হিসাবে কাজে লাগবে ।
____________________
খোৎবা- ৪৯
وفيه جملة من صفات الربوبية والعلم الإلهي
الْحَمْدُ لِلَّه الَّذِي بَطَنَ خَفِيَّاتِ الأَمُوُرِ - ودَلَّتْ عَلَيْه أَعْلَامُ الظُّهُورِ - وامْتَنَعَ عَلَى عَيْنِ الْبَصِيرِ - فَلَا عَيْنُ مَنْ لَمْ يَرَه تُنْكِرُه - ولَا قَلْبُ مَنْ أَثْبَتَه يُبْصِرُه - سَبَقَ فِي الْعُلُوِّ فَلَا شَيْءَ أَعْلَى مِنْه - وقَرُبَ فِي
الدُّنُوِّ فَلَا شَيْءَ أَقْرَبُ مِنْه - فَلَا اسْتِعْلَاؤُه بَاعَدَه عَنْ شَيْءٍ مِنْ خَلْقِه - ولَا قُرْبُه سَاوَاهُمْ فِي الْمَكَانِ بِه - لَمْ يُطْلِعِ الْعُقُولَ عَلَى تَحْدِيدِ صِفَتِه - ولَمْ يَحْجُبْهَا عَنْ وَاجِبِ مَعْرِفَتِه - فَهُوَ الَّذِي تَشْهَدُ لَه أَعْلَامُ الْوُجُودِ - عَلَى إِقْرَارِ قَلْبِ ذِي الْجُحُودِ - تَعَالَى اللَّه عَمَّا يَقُولُه الْمُشَبِّهُونَ بِه - والْجَاحِدُونَ لَه عُلُوّاً كَبِيراً!
আল্লাহর মহত্ত্ব
ও
শ্রেষ্ঠত্ব
সম্পর্কে
প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর , যিনি সকল গুপ্ত বিষয় অবগত আছেন এবং সকল প্রকাশ্য বস্তু তাঁর অস্তিত্ব প্রমাণ করে। দর্শকের চক্ষু দ্বারা তাঁকে দর্শন করা যায় না , কিন্তু দর্শন করা যায় না বলে তাকে অস্বীকারও করা যায় না । যে হৃদয় তাঁর অস্তিত্ব প্রমাণ করে , সে হৃদয়ও তার সীমারেখা নির্ধারণ করতে পারে না। মহত্ত্বে তিনি এত উচু যে , কোন কিছুই তার চেয়ে মহান হতে পারে না। নৈকট্যে তিনি এত নিকটে যে , কোন কিছুই তাঁর চেয়ে নিকটতম হতে পারে না। কিন্তু তাঁর মহত্ত্ব তাকে সৃষ্টির কোন কিছু থেকে দূরত্বে রাখে না ; আবার তাঁর নৈকট্য সৃষ্টির কোন কিছুকেই তাঁর সমপর্যায়ে আনে না। মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও জ্ঞান তাঁর গুণাবলী প্রকাশে অক্ষম। এতদসত্ত্বেও তাঁর সম্পর্কে অত্যাবশ্যকীয় জ্ঞানার্জনে তিনি বাধার সৃষ্টি করেন নি। সুতরাং তিনি যে অস্তিত্ববান সকল বস্তু (আয়াত) এ সাক্ষ্য বহন করে। যে মন তাকে স্বীকার করে না , সেও তাঁকে বিশ্বাস করে। যারা তাঁকে বস্তুর সদৃশতায় বর্ণনা করে অথবা তাকে অস্বীকার করে আল্লাহ তাদের বর্ণনার অনেক উর্দ্ধে।
খোৎবা- ৫০
إِنَّمَا بَدْءُ وُقُوعِ الْفِتَنِ أَهْوَاءٌ تُتَّبَعُ وأَحْكَامٌ تُبْتَدَعُ - يُخَالَفُ فِيهَا كِتَابُ اللَّه - ويَتَوَلَّى عَلَيْهَا رِجَالٌ رِجَالًا عَلَى غَيْرِ دِينِ اللَّه - فَلَوْ أَنَّ الْبَاطِلَ خَلَصَ مِنْ مِزَاجِ الْحَقِّ - لَمْ يَخْفَ عَلَى الْمُرْتَادِينَ ولَوْ أَنَّ الْحَقَّ خَلَصَ مِنْ لَبْسِ الْبَاطِلِ - انْقَطَعَتْ عَنْه أَلْسُنُ الْمُعَانِدِينَ - ولَكِنْ يُؤْخَذُ مِنْ هَذَا ضِغْثٌ ومِنْ هَذَا ضِغْثٌ فَيُمْزَجَانِ - فَهُنَالِكَ يَسْتَوْلِي الشَّيْطَانُ عَلَى أَوْلِيَائِه - ويَنْجُو(
الَّذِينَ سَبَقَتْ لَهُمْ
)
مِنَ اللَّه(
الْحُسْنى
)
.
ন্যায় ও
অন্যায়ের
অপমিশ্রণ
সম্পর্কে
ফেতনা - ফ্যাসাদ সংঘটিত হবার ভিত্তি হলো সেসব কামনা - বাসনা যা অনুসরণ করা হয় এবং সেসব আদেশ যা নব্য প্রবর্তিত । এ দুটোই আল্লাহর কেতাবের বিপরীত। আল্লাহর দ্বীনের বিপরীত হওয়া সত্ত্বেও মানুষ একে অপরকে এ দু ’ টোতে সহযোগিতা করে। অন্যায় যদি নিরেট অন্যায় এবং অমিশ্রিত থাকে তবুও যারা এর অন্বেষণকারী তাদের কাছে গোপন থাকে না (অর্থাৎ তারা তা আকড়ে ধরে) । আর ন্যায় যদি অন্যায়ের অপমিশ্রণ থেকে খাটিও থাকে তবুও ন্যায়ের প্রতি যাদের অবজ্ঞা রয়েছে তারা নিশ্চুপ হয়ে থাকে (অর্থাৎ ন্যায়কে গ্রহণ করে না) । যা করা হয় তা হলো - এটা থেকে কিছু ওটা থেকে কিছু নিয়ে দুটোর সংমিশ্রণ করা। এ পর্যায়ে শয়তান তার বন্ধুদের শক্তিশালী করে তোলে এবং শুধুমাত্র তারাই রক্ষা পায় যাদের জন্য পূর্ব থেকেই আল্লাহ মঙ্গল নির্ধারণ করে রেখেছেন।
খোৎবা- ৫১
لماغلبأصحابمعاويةأصحابهعليهالسلام
- علىشريعة الفراتبصفينومنعوهمالماء
قَدِ اسْتَطْعَمُوكُمُ الْقِتَالَ فَأَقِرُّوا عَلَى مَذَلَّةٍ وتَأْخِيرِ مَحَلَّةٍ - أَوْ رَوُّوا السُّيُوفَ مِنَ الدِّمَاءِ تَرْوَوْا مِنَ الْمَاءِ - فَالْمَوْتُ فِي حَيَاتِكُمْ مَقْهُورِينَ،- والْحَيَاةُ فِي مَوْتِكُمْ قَاهِرِينَ - أَلَا وإِنَّ مُعَاوِيَةَ قَادَ لُمَةً مِنَ الْغُوَاةِ - وعَمَّسَ عَلَيْهِمُ الْخَبَرَ - حَتَّى جَعَلُوا نُحُورَهُمْ أَغْرَاضَ الْمَنِيَّةِ.
সিফফিনে যখন মুয়াবিয়ার লোকেরা আমিরুল মোমেনিনের লোকদের পরাভূত করে ইউফ্রেটিস নদীর তীর দখল করে নেয় এবং তাদের পানি বন্ধ করে দেয় তখন আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
তারা
তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে চায়। সুতরাং হয় তোমরা কলঙ্কমর ও হীন অবস্থায় থাকো ,না হয় তোমাদের তরবারিকে রক্ত পান করাও এবং পানি দ্বারা তোমাদের তৃষ্ণা নিবারণ কর । প্রকৃত মৃত্যু পরাভব জীবনে এবং প্রকৃত জীবন অন্যকে পরাভূত করায় বা বিজয় লাভ করায়। সাবধান ,মুয়াবিয়া বিদ্রোহীদের একটা ছোট দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং সত্য ঘটনা থেকে কৌশলে তাদেরকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। ফলে তারা তাদের বক্ষকে মৃত্যুর লক্ষ্যস্থলে পরিণত করেছে।
____________________
খোৎবা- ৫২
وهيفيالتزهيدفيالدنياوثواباللهللزاهدونعماللهعلىالخالق
أَلَا وإِنَّ الدُّنْيَا قَدْ تَصَرَّمَتْ وآذَنَتْ بِانْقِضَاءٍ - وتَنَكَّرَ مَعْرُوفُهَا وأَدْبَرَتْ حَذَّاءَ فَهِيَ تَحْفِزُ بِالْفَنَاءِ سُكَّانَهَا - وتَحْدُو بِالْمَوْتِ جِيرَانَهَا - وقَدْ أَمَرَّ فِيهَا مَا كَانَ حُلْواً وكَدِرَ مِنْهَا مَا كَانَ صَفْواً - فَلَمْ يَبْقَ مِنْهَا إِلَّا سَمَلَةٌ كَسَمَلَةِ الإِدَاوَةِ أَوْ جُرْعَةٌ كَجُرْعَةِ الْمَقْلَةِ لَوْ تَمَزَّزَهَا الصَّدْيَانُ لَمْ يَنْقَعْ فَأَزْمِعُوا عِبَادَ اللَّه - الرَّحِيلَ عَنْ هَذِه الدَّارِ الْمَقْدُورِ عَلَى أَهْلِهَا الزَّوَالُ - ولَا يَغْلِبَنَّكُمْ فِيهَا الأَمَلُ - ولَا يَطُولَنَّ عَلَيْكُمْ فِيهَا الأَمَدُ.
فَوَاللَّه لَوْ حَنَنْتُمْ حَنِينَ الْوُلَّه الْعِجَالِودَعَوْتُمْ بِهَدِيلِ الْحَمَامِ وجَأَرْتُمْ جُؤَارَ مُتَبَتِّلِي الرُّهْبَانِ - وخَرَجْتُمْ إِلَى اللَّه مِنَ الأَمْوَالِ والأَوْلَادِ - الْتِمَاسَ الْقُرْبَةِ إِلَيْه فِي ارْتِفَاعِ دَرَجَةٍ عِنْدَه - أَوْ غُفْرَانِ سَيِّئَةٍ أَحْصَتْهَا كُتُبُه - وحَفِظَتْهَا رُسُلُه لَكَانَ قَلِيلًا فِيمَا أَرْجُو لَكُمْ مِنْ ثَوَابِه - وأَخَافُ عَلَيْكُمْ مِنْ عِقَابِه.
وتَاللَّه لَوِ انْمَاثَتْ قُلُوبُكُمُ انْمِيَاثاً وسَالَتْ عُيُونُكُمْ مِنْ رَغْبَةٍ إِلَيْه أَوْ رَهْبَةٍ مِنْه دَماً - ثُمَّ عُمِّرْتُمْ فِي الدُّنْيَا - مَا الدُّنْيَا بَاقِيَةٌ مَا جَزَتْ أَعْمَالُكُمْ عَنْكُمْ - ولَوْ لَمْ تُبْقُوا شَيْئاً مِنْ جُهْدِكُمْ - أَنْعُمَه عَلَيْكُمُ الْعِظَامَ - وهُدَاه إِيَّاكُمْ لِلإِيمَانِ.
فيذكرىيومالنحروصفةالأضحية
ومِنْ تَمَامِ الأُضْحِيَّةِ اسْتِشْرَافُ أُذُنِهَا وسَلَامَةُ عَيْنِهَا - فَإِذَا سَلِمَتِ الأُذُنُ والْعَيْنُ سَلِمَتِ الأُضْحِيَّةُ وتَمَّتْ - ولَوْ كَانَتْ عَضْبَاءَ الْقَرْنِ تَجُرُّ رِجْلَهَا إِلَى الْمَنْسَكِ
পরকালের পুরস্কার
ও
শাস্তি
সম্পর্কে
সাবধান ,দুনিয়া নিজেকে গুটিয়ে আনছে এবং প্রস্থান ঘোষণা করছে। এর পরিচিত বস্তুনিচয় অপরিচিত হয়ে গেছে এবং এটা দ্রুতবেগে পশ্চাতে সরে যাচ্ছে। দুনিয়া তার অধিবাসীদের ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং এর প্রতিবেশীদের মৃত্যুর দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধুর জিনিসগুলোকে (ভোগ - বিলাস) তিক্ত করে দিয়েছে এবং স্বচ্ছ জিনিসগুলো মলিন হয়ে গেছে। ফলে যা অবশিষ্ট রয়েছে তা পাত্রের গায়ে লেগে থাকা পানির মতো অথবা পরিমাণে এক কুলি পানি। যদি তৃষ্ণার্তা ব্যক্তি এটুকু পান করে তবে তার তৃষ্ণা নিবারণ হয় না। হে আল্লাহর বান্দাগণ ,এ দুনিয়া পরিত্যাগের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও ,কারণ দুনিয়াবাসীদের ধ্বংস অবধারিত। সাবধান ,মনের কামনা - বাসনা ও লালসা যেন তোমাদেরকে বশীভূত না করে এবং তোমরা মনে করো না যে এখানে তোমরা চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
আল্লাহর কসম ,যদি তোমরা শাবকহারা উস্ট্রির মতো কাদো ,কবুতরের মতো কৃজন করো ,অনুরক্ত নির্জনবাসীর (দরবেশ) মতো আওয়াজ করো এবং আল্লাহর নৈকট্য ও বাকা প্রাপ্তির জন্য তোমাদের সন্তান - সন্ততি ও সম্পদ পরিত্যাগ করে আল্লাহর দিকে মুখ ফেরাও তবুও তাঁর পুরষ্কারের তুলনায় তা কিছুই নয় ,যা আমি তোমাদের জন্য প্রত্যাশা করি অথবা তাঁর শাস্তির তুলনায় কিছুই নয় ,যা আমি তোমাদের জন্য আশঙ্কা করি।
আল্লাহর কসম ,যদি তোমাদের হৃদয় সম্পূর্ণরূপে বিগলিত হতো ,তাঁকে পাবার আশায় অথবা তাঁর ভয়ে তোমাদের চোখ দিয়ে রক্তাশ্রু বের হতো এবং যদি পৃথিবী বিলীন হওয়া পর্যন্ত তোমাদেরকে বেঁচে থাকতে দেয়া হতো। তবুও তোমাদের আমল তার রহমতের এক কণার সমতুল্য হবে না এবং তোমাদেরকে ইমানের পথে পরিচালনার প্রতিদান হবে না।
এ খোৎবায় কুরবানির পশুর গুণাগুণ সম্পর্কে বলেনঃ কুরবানির সম্পূর্ণ উপযোগী পশুর জন্য অত্যাবশ্যক হলো - এর কানগুলো ওপরের দিকে খাড়া হতে হবে এবং চোখগুলো সুস্থ (ভালো) হতে হবে। যদি চোখ আর কান সুস্থ হয় তবেই কুরবানির পশু অটুট ও যথার্থ বলে ধরা যায় ; হোক না। এর শিং ভাঙ্গা অথবা পা হেঁচড়ে হেঁচড়ে (খুঁড়িয়ে) সেটা কুরবানির জায়গায় যায় ।
খোৎবা- ৫৩
و من کلام له علیه السلام فى ذکر البیعة
فَتَدَاکُّوا عَلَیَّ تَدَاکَّ الْإِبِلِ الْهِیمِ یَوْمَ وِرْدِهَا قَدْ أَرْسَلَهَا رَاعِیهَا وَ خُلِعَتْ مَثَانِیهَا حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُمْ قَاتِلِیَّ أَوْ بَعْضَهُمْ قَاتِلُ بَعْضٍ لَدَیَّ وَ قَدْ قَلَّبْتُ هَذَا الْأَمْرَ بَطْنَهُ وَ ظَهْرَهُ (حَتَّى مَنَعَنِی النَّوْمَ) فَمَا وَجَدْتُنِی یَسَعُنِی إِلَّا قِتَالُهُمْ أَوِ الْجُحُودُ بِمَا جَاءَ بِهِ مُحَمَّدٌ- صلى الله علیه واله- فَکَانَتْ مُعَالَجَةُ الْقِتَالِ أَهْوَنَ عَلَیَّ مِنْ مُعَالَجَةِ الْعِقَابِ وَ مَوْتَاتُ الدُّنْیَا أَهْوَنَ عَلَیَّ مِنْ مَوْتَاتِ الْآخِرَةِ.
আমিরুল
মোমেনিনের
বায়াত
গ্রহণ
সম্পর্কে
তারা এত প্রচণ্ড বেগে আমার দিকে ধাবিত হয়েছিল যে ,মনে হলো যেন তৃষ্ণার্তা উটের পাল ছাড়া পেয়ে একে অপরের ওপর পড়ে পানীয় পানির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমার মনে হয়েছিল-
হয় ওরা আমাকে হত্যা করবে ,না হয় একে অপরকে আমার সামনে হত্যা করবে। আমি ব্যাপারটি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে এত বেশি চিন্তা করেছিলাম যে ,আমার ঘুমের ব্যাঘাত হয়েছিল। কিন্তু হয় তাদের সাথে যুদ্ধ ,না হয় মুহাম্মদ (সা.) যা এনেছিলেন তা পরিত্যাগ করা ছাড়া আর কোন পথ দেখতে পেলাম না। আমি বিবেচনা করে দেখলাম যে ,আল্লাহর শাস্তি অপেক্ষা যুদ্ধ করা আমার জন্য সহজ এবং ইহকালের দুঃখ - কষ্ট পরকালের দুঃখ - কষ্ট অপেক্ষা সহজ।
খোৎবা -
৫৪
وقداستبطأأصحابهإذنهلهمفيالقتالبصفين
أَمَّا قَوْلُكُمْ أَكُلَّ ذَلِكَ كَرَاهِيَةَ الْمَوْتِ - فَوَاللَّه مَا أُبَالِي - دَخَلْتُ إِلَى الْمَوْتِ أَوْ خَرَجَ الْمَوْتُ إِلَيَّ - وأَمَّا قَوْلُكُمْ شَكَّاً فِي أَهْلِ الشَّامِ - فَوَاللَّه مَا دَفَعْتُ الْحَرْبَ يَوْماً - إِلَّا وأَنَا أَطْمَعُ أَنْ تَلْحَقَ بِي طَائِفَةٌ فَتَهْتَدِيَ بِي - وتَعْشُوَ إِلَى ضَوْئِي - وذَلِكَ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَقْتُلَهَا عَلَى ضَلَالِهَا - وإِنْ كَانَتْ تَبُوءُ بِآثَامِهَا.
সিফফিনের যুদ্ধ আরম্ভ করার অনুমতি প্রদানে বিলম্বের কারণে লোকজনের অধৈর্যের প্রেক্ষিতে প্রদত্ত খোৎবা
সিফফিনে যুদ্ধ আরম্ভ করার অনুমতি দিতে আমিরুল মোমেনিন বিলম্ব করায় তার লোকজন অধৈর্য হয়ে পড়লে তিনি বলেনঃ বেশ ,যদি তোমরা মনে কর এ বিলম্ব এজন্য যে ,আমি মৃত্যুবরণ করতে অনিচ্ছুক ,তবে আল্লাহর কসম ,আমি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি নাকি মৃত্যু আমার দিকে তেড়ে আসছে। এ বিষয়টি আমি থোড়াই পরোয়া করি। যদি তোমরা ধারণা কর যে ,এ বিলম্বের কারণ সিরিয়দের সম্পর্কে আমার সংশয় ,তবে আল্লাহর কসম ,জেনে রাখো ,আমি এ কারণে বিলম্ব করেছিলাম ,যদি আরো কোন দল আমার সাথে যোগদান করে ,যদি আমার মাধ্যমে ওরা পথের দিশা পায় এবং যদি তাদের দুর্বল চোখে আমার আলো দেখতে পায়। বিভ্রান্তিতে নিপতিত অবস্থায় হত্যা করা থেকে আলোর পথে আসার সুযোগ দেয়া আমার কাছে অধিক প্রিয় । এরপর ওরা ওদের নিজেদের পাপের ভার বহন করতে থাকবে ।
খোৎবা -
৫৫
الانتصار فی القتال
ولَقَدْ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهصلىاللهعليهوآله
- نَقْتُلُ آبَاءَنَا وأَبْنَاءَنَا وإِخْوَانَنَا وأَعْمَامَنَا - مَا يَزِيدُنَا ذَلِكَ إِلَّا إِيمَاناً وتَسْلِيماً - ومُضِيّاً عَلَى اللَّقَمِ وصَبْراً عَلَى مَضَضِ الأَلَمِ وجِدّاً فِي جِهَادِ الْعَدُوِّ - ولَقَدْ كَانَ الرَّجُلُ مِنَّا والآخَرُ مِنْ عَدُوِّنَا - يَتَصَاوَلَانِ تَصَاوُلَ الْفَحْلَيْنِ يَتَخَالَسَانِ أَنْفُسَهُمَا أَيُّهُمَا يَسْقِي صَاحِبَه كَأْسَ الْمَنُونِ - فَمَرَّةً لَنَا مِنْ عَدُوِّنَا ومَرَّةً لِعَدُوِّنَا مِنَّا - فَلَمَّا رَأَى اللَّه صِدْقَنَا أَنْزَلَ بِعَدُوِّنَا الْكَبْتَ وأَنْزَلَ عَلَيْنَا النَّصْرَ - حَتَّى اسْتَقَرَّ الإِسْلَامُ مُلْقِياً جِرَانَه ومُتَبَوِّئاً أَوْطَانَه - ولَعَمْرِي لَوْ كُنَّا نَأْتِي مَا أَتَيْتُمْ - مَا قَامَ لِلدِّينِ عَمُودٌ ولَا اخْضَرَّ لِلإِيمَانِ عُودٌ - وايْمُ اللَّه لَتَحْتَلِبُنَّهَا دَماً ولَتُتْبِعُنَّهَا نَدَماً!
যুদ্ধক্ষেত্রে অটলতা সম্পর্কে
যুদ্ধক্ষেত্রে আটলতা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূলের (সা.) সাথে থাকাকালে আমরা আমাদের পিতা - মাতা ,পুত্র ,ভ্রাতা ও চাচাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতাম এবং এ দৃঢ়তা বহাল ছিল আমাদের ইমানে ,আনুগত্যে ,সত্য পথ অনুসরণে ,দুঃখযন্ত্রণা সহ্য করাতে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে। আমাদের পক্ষ থেকে একজন এবং শত্রুর পক্ষ থেকে একজন একে অপরের ওপর ষাড়ের মতো ঝাপিয়ে পড়তো - লক্ষ্য শুধু কে কাকে হত্যা করতে পারে। কখনো আমাদের লোক প্রতিপক্ষকে আবার কখনো শক্র আমাদের লোককে অতিক্রম করতো ।
আল্লাহ যখন আমাদের সততা ও সত্যের প্রতি আটলতা দেখলেন তখন তিনি আমাদের প্রতি তার সাহায্য প্রেরণ করে আমাদের শত্রুকে পরাজয়ের কলঙ্কে কলঙ্কিত করেছিলেন ,যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল ,যেমন করে উট মাটিতে ঘাড় এলিয়ে দিয়ে বিশ্রাম গ্রহণ করে। আমার জীবনের কসম ,আমরা যদি তোমাদের মতো আচরণ করতাম। তবে দ্বীনের স্তম্ভ দাড় করানো যেত না এবং ইমানের বৃক্ষেও পাতা গজাতো না। আল্লাহর কসম ,তোমরা এখন দুধের পরিবর্তে আমাদের রক্ত দোহন করবে এবং পরিণামে তোমরা লজ্জিত হবে”
।
____________________
খোৎবা -
৫৬
أَمَّا إِنَّه سَيَظْهَرُ عَلَيْكُمْ بَعْدِي رَجُلٌ رَحْبُ الْبُلْعُومِ مُنْدَحِقُ الْبَطْنِ يَأْكُلُ مَا يَجِدُ ويَطْلُبُ مَا لَا يَجِدُ - فَاقْتُلُوه ولَنْ تَقْتُلُوه - أَلَا وإِنَّه سَيَأْمُرُكُمْ بِسَبِّي والْبَرَاءَةِ مِنِّي - فَأَمَّا السَّبُّ فَسُبُّونِي فَإِنَّه لِي زَكَاةٌ ولَكُمْ نَجَاةٌ - وأَمَّا الْبَرَاءَةُ فَلَا تَتَبَرَّءُوا مِنِّي - فَإِنِّي وُلِدْتُ عَلَى الْفِطْرَةِ وسَبَقْتُ إِلَى الإِيمَانِ والْهِجْرَةِ.
মুয়াবিয়া সম্পর্কে আমিরুল মোমেনিন তার অনুচরদের বলেছিলেনঃ
আমার অব্যবহিত পরেই এমন এক লোক তোমাদের ওপর আপতিত হবে যার মুখ - গহবর প্রশস্ত এবং পেট বিশালাকার । সে যা পাবে তা - ই গলাধঃকরণ করবে এবং যা পাবে না। তার জন্য উদগ্র বাসনা পোষণ করবে। তাকে হত্যা করা তোমাদের উচিত হবে কিন্তু আমি জানি ,তাকে তোমরা হত্যা করবে না । আমাকে গালিগালাজ করতে এবং আমার আদর্শ পরিত্যাগ করতে সে তোমাদের আদেশ দেবে। গালিগালাজ সম্বন্ধে ,আমি বলবো ,তোমরা আমাকে গালিগালাজ করো ,কারণ তা আমার জন্য হবে মর্যাদাকর আর তোমাদের জন্য হবে তার অত্যাচার থেকে মুক্তির পথ। আমার আদর্শ ত্যাগ বিষয়ে বলবো - আমার আদর্শ ত্যাগ করা তোমাদের উচিত হবে না। কারণ আমি ইসলামের ফিতরাতে জন্ম গ্রহণ করেছি এবং ইসলাম গ্রহণ ও হিজরতে সর্বাগ্রণী ছিলাম ” ।
____________________
খোৎবা -
৫৭
كلم به الخوارج
أَصَابَكُمْ حَاصِبٌ ولَا بَقِيَ مِنْكُمْ آثِرٌ أَبَعْدَ إِيمَانِي بِاللَّه، وجِهَادِي مَعَ رَسُولِ اللَّهصلىاللهعليهوآله
- أَشْهَدُ عَلَى نَفْسِي بِالْكُفْرِ - لَالْكُفْرِ)
قَدْ ضَلَلْتُ إِذاً وما أَنَا مِنَ الْمُهْتَدِينَ
(
- فَأُوبُوا شَرَّ مَآبٍ وارْجِعُوا عَلَى أَثَرِ الأَعْقَابِ أَمَا إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِي ذُلاًّ شَامِلًا وسَيْفاً قَاطِعاً - وأَثَرَةً يَتَّخِذُهَا الظَّالِمُونَ فِيكُمْ سُنَّةً.
খারিজিদের উদ্দেশ্যে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
ঝড়
তোমাদের
অতর্কিতে
অভিভূত
করতে
পারে
যখন
তোমাদের
খোচা
দেয়ার
(
সংস্কারের
জন্য
)
মতো
কেউ
থাকবে
না।
ইমানে
প্রতিষ্ঠিত
হয়ে
এবং
রাসূলের
সাথী
হয়ে
যুদ্ধ
করেও
কি
আমি
আমার
ধর্মত্যাগের
সাক্ষী
হব
?
“
সে
ক্ষেত্রে
আমি
বিপথগামী
হব
এবং
সৎপথ
প্রাপ্তদিগের
অন্তর্ভুক্ত
থাকব
না।
”
(
কুরআন
,
৬
:
৫৬
)
।
সুতরাং
তোমরা
তোমাদের
পাপের
স্থানসমূহে
ফিরে
যেতে
পার
এবং
তোমাদের
পদাঙ্কও
তোমরা
ফিরে
পাবে।
সাবধান
,
নিশ্চয়ই
আমার
পরে
তোমরা
নিদারুণ
অসম্মান
ও
ধারালো
তরবারিতে
বিপর্যপ্ত
হবে
এবং
অত্যাচারী
কর্তৃক
গৃহীত
হাদিস
তোমাদের
প্রতি
মানদণ্ড
হিসাবে
ব্যবহৃত
হবে
।
____________________
খোৎবা -
৫৮
لما عزم على حرب الخوارج - وقيل له: إن القوم عبروا جسر النهروان! مَصَارِعُهُمْ دُونَ النُّطْفَةِ - واللَّه لَا يُفْلِتُ مِنْهُمْ عَشَرَةٌ ولَا يَهْلِكُ مِنْكُمْ عَشَرَةٌ.
আমিরুল মোমেনিন যখন খারিজিদের সাথে যুদ্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তখন তাকে অবহিত করা হলো যে ,খারিজিরা নাহরাওয়ান সেতু পার হয়ে ওপারে চলে গেছে। তখন তিনি বললেনঃ
নদীর ওপার তাদের পতন স্থল। আল্লাহর কসম ,তাদের দশ জনও বাঁচতে পারবে না ,অপরদিকে তোমাদের দশ জনও শহীদ হবে না”
।
____________________
খোৎবা -
৫৯
لما قتل الخوارج فقيل له يا أمير المؤمنين هلك القوم بأجمعهم كَلَّا واللَّه إِنَّهُمْ نُطَفٌ فِي أَصْلَابِ الرِّجَالِ وقَرَارَاتِ النِّسَاءِ، كُلَّمَا نَجَمَ مِنْهُمْ قَرْنٌ قُطِعَ - حَتَّى يَكُونَ آخِرُهُمْ لُصُوصاً سَلَّابِينَ.
যখন আমিরুল মোমেনিনকে জানানো হলো যে ,খারিজিরা সকলেই নিহত হয়েছে তিনি বললেনঃ
আল্লাহর কসম ,তারা এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি । তারা এখনো পুরুষের ঔরসে ও নারীর গর্ভাশয়ে রয়েছে। যখনই তাদের মধ্য থেকে কোন নেতা গজিয়ে উঠবে তখনই তাকে কেটে ফেলা হবে যে পর্যন্ত না তাদের শেষ জন চোর ও ডাকাত হয়ে যায়”
।
____________________
খোৎবা -
৬০
لَا تُقَاتِلُوا الْخَوَارِجَ بَعْدِي - فَلَيْسَ مَنْ طَلَبَ الْحَقَّ فَأَخْطَأَه - كَمَنْ طَلَبَ الْبَاطِلَ فَأَدْرَكَه. قال الشريف - يعني معاوية وأصحابه.
খারিজিদের সম্পর্কে
আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ আমার পরে খারিজিদের সাথে যুদ্ধ
করো না ,কারণ যে ন্যায় অনুসন্ধান করে কিন্তু তা খুঁজে পায় না। সে ওই ব্যক্তির মতো নয় যে অন্যায় অনুসন্ধান করে এবং তা খুঁজে পায়।
____________________
খোৎবা -
৬১
لما خوف من الغيلة
وإِنَّ عَلَيَّ مِنَ اللَّه جُنَّةً حَصِينَةً - فَإِذَا جَاءَ يَوْمِي انْفَرَجَتْ عَنِّي وأَسْلَمَتْنِي - فَحِينَئِذٍ لَا يَطِيشُ السَّهْمُ ولَا يَبْرَأُ الْكَلْمُ
প্রতারক কর্তৃক নিহত হবার বিষয়ে সতর্ক করা হলে আমিরুল মোমেনিনের প্রদত্ত খোৎবা তিনি বলেনঃ
নিশ্চয়ই ,আল্লাহর একটা শক্ত ঢাল আমার ওপর রয়েছে। যখন আমার দিন ঘনিয়ে আসবে তখন সে ঢাল সরিয়ে নেয়া হবে এবং আমাকে মৃত্যুর হাতে সঁপে দেয়া হবে। সে সময় কোন তীরই লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে না এবং কোন আঘাতের ক্ষত নিরাময় হবে না।
খোৎবা -
৬২
يحذر من فتنة الدنيا
أَلَا إِنَّ الدُّنْيَا دَارٌ لَا يُسْلَمُ مِنْهَا إِلَّا فِيهَا - ولَا يُنْجَى بِشَيْءٍ كَانَ لَهَا - ابْتُلِيَ النَّاسُ بِهَا فِتْنَةً - فَمَا أَخَذُوه مِنْهَا لَهَا أُخْرِجُوا مِنْه وحُوسِبُوا عَلَيْه - ومَا أَخَذُوه مِنْهَا لِغَيْرِهَا قَدِمُوا عَلَيْه وأَقَامُوا فِيه - فَإِنَّهَا عِنْدَ ذَوِي الْعُقُولِ كَفَيْءِ الظِّلِّ - بَيْنَا تَرَاه سَابِغاً حَتَّى قَلَصَ وزَائِداً حَتَّى نَقَصَ.
দুনিয়ার ক্ষণস্থায়িত্ব সম্পর্কে
সাবধান ,দুনিয়া এমন এক স্থান যা থেকে শুধু জীবিত থাকাকালীন সময়ে প্রতিরক্ষা আশা করা যায়। শুধুমাত্র দুনিয়ার জন্য আমল করে মুক্তি লাভ করা যায় না। বিপদাপদের মধ্যে দিয়েই দুনিয়াতে মানুষকে পরীক্ষা করা হয়। এখানে যারা জাগতিক ভোগ - বিলাসে কাটিয়েছে মৃত্যুই তা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করবে এবং এ সম্পর্কে তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। উত্তম আমল দ্বারা পরকালের জন্য যা কিছু অর্জন করবে ,সেখানে তারা তা পাবে এবং উপভোগ করবে। বুদ্ধিমানের জন্য এ দুনিয়া ছায়ার মতো - যা এ মুহুর্তে বৃদ্ধি পেয়ে ছড়িয়ে পড়ে আবার পর মুহুর্তেই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে।
খোৎবা -
৬৩
في المبادرة إلى صالح الأعمال
فَاتَّقُوا اللَّه عِبَادَ اللَّه وبَادِرُوا آجَالَكُمْ بِأَعْمَالِكُمْ وابْتَاعُوا مَا يَبْقَى لَكُمْ بِمَا يَزُولُ عَنْكُمْ وتَرَحَّلُوا فَقَدْ جُدَّ بِكُمْ واسْتَعِدُّوا لِلْمَوْتِ فَقَدْ أَظَلَّكُمْ وكُونُوا قَوْماً صِيحَ بِهِمْ فَانْتَبَهُوا - وعَلِمُوا أَنَّ الدُّنْيَا لَيْسَتْ لَهُمْ بِدَارٍ فَاسْتَبْدَلُوا –
فَإِنَّ اللَّه سُبْحَانَه لَمْ يَخْلُقْكُمْ عَبَثاً ولَمْ يَتْرُكْكُمْ سُدًى ومَا بَيْنَ أَحَدِكُمْ وبَيْنَ الْجَنَّةِ أَوِ النَّارِ - إِلَّا الْمَوْتُ أَنْ يَنْزِلَ بِه - وإِنَّ غَايَةً تَنْقُصُهَا اللَّحْظَةُ وتَهْدِمُهَا السَّاعَةُ - لَجَدِيرَةٌ بِقِصَرِ الْمُدَّةِ - وإِنَّ غَائِباً يَحْدُوه الْجَدِيدَانِ - اللَّيْلُ والنَّهَارُ لَحَرِيٌّ بِسُرْعَةِ الأَوْبَةِ وإِنَّ قَادِماً يَقْدُمُ بِالْفَوْزِ أَوِ الشِّقْوَةِ - لَمُسْتَحِقٌّ لأَفْضَلِ الْعُدَّةِ - فَتَزَوَّدُوا فِي الدُّنْيَا مِنَ الدُّنْيَا - مَا تَحْرُزُونَ بِه أَنْفُسَكُمْ غَداً
فَاتَّقَى عَبْدٌ رَبَّه نَصَحَ نَفْسَه وقَدَّمَ تَوْبَتَه وغَلَبَ شَهْوَتَه - فَإِنَّ أَجَلَه مَسْتُورٌ عَنْه وأَمَلَه خَادِعٌ لَه - والشَّيْطَانُ مُوَكَّلٌ بِه يُزَيِّنُ لَه الْمَعْصِيَةَ لِيَرْكَبَهَا - ويُمَنِّيه التَّوْبَةَ لِيُسَوِّفَهَا إِذَا هَجَمَتْ مَنِيَّتُه عَلَيْه أَغْفَلَ مَا يَكُونُ عَنْهَا - فَيَا لَهَا حَسْرَةً عَلَى كُلِّ ذِي غَفْلَةٍ أَنْ يَكُونَ عُمُرُه عَلَيْه حُجَّةً - وأَنْ تُؤَدِّيَه أَيَّامُه إِلَى الشِّقْوَةِ - نَسْأَلُ اللَّه سُبْحَانَه - أَنْ يَجْعَلَنَا وإِيَّاكُمْ مِمَّنْ لَا تُبْطِرُه نِعْمَةٌ ولَا تُقَصِّرُ بِه عَنْ طَاعَةِ رَبِّه غَايَةٌ - ولَا تَحُلُّ بِه بَعْدَ الْمَوْتِ نَدَامَةٌ ولَا كَآبَةٌ.
দুনিয়ার ক্ষয় ও ধ্বংস সম্পর্কে
হে আল্লাহর বান্দাগণ ,আল্লাহকে ভয় কর এবং মৃত্যুর আগেই সৎ আমলে নিজেকে নিয়োজিত কর। পার্থিব সম্পদ তথা দুনিয়ার ভোগ - বিলাসের বিনিময়ে অনন্তকালীন আনন্দ ক্রয় কর। অনন্ত যাত্রার জন্য প্রস্তুত হও ,কারণ তোমরা সেদিকে তাড়িত হচ্ছো এবং মৃত্যুর জন্য নিজেকে প্রস্তুত কর ,কারণ মৃত্যু তোমাদের মাথার ওপর ঘুরছে। এমন লোক হও যারা আহ্বান মাত্রই জেগে উঠে ,যারা জানে এ দুনিয়া তাদের আবাসস্থল নয় এবং যারা এ দুনিয়াকে পরকালের সঙ্গে বদল করে নিয়েছে।
নিশ্চয়ই ,আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিনা উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেননি এবং অকেজোভাবে তোমাদেরকে ফেলেও রাখেন নি। তোমাদের এবং বেহেশত অথবা দোযখের মধ্যবর্তী মৃত্যু ব্যতীত আর কিছুই নেই যা তোমাদের ওপর আপতিত হবেই। প্রতিটি মুহুর্ত জীবন থেকে খসে গিয়ে জীবনকে খর্ব করছে এবং প্রতিটি মুহুর্ত এভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে খাট হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করতে হবে। মৃত্যু নামক গুপ্ত ঘটনা দিবারাত্র তোমাদের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে। মৃত্যুপথের অভিযাত্রীকে সর্বোত্তম রসদ সংগ্রহ করতে হবে। সুতরাং এ দুনিয়াতে থাকাকালেই এমন রসদ সংগ্রহ কর যা দিয়ে আগামীকাল নিজেকে রক্ষা করতে পারবে ।
সুতরাং প্রত্যেকের উচিত আল্লাহকে ভয় করা ,নিজেকে সতর্ক করা ,তওবা করা ,কামনা - বাসনাকে প্রতিহত করা ;কারণ মৃত্যু তোমাদের কাছে গুপ্ত ,কামনা - বাসনা তোমাদেরকে প্রতারিত করে এবং শয়তান তোমাদের পিছে লেগে আছে। শয়তান পাপকে মনোমুগ্ধকর করে উপস্থাপন করে এবং তওবা করতে বিলম্ব ঘটানোর জন্য এমন বেখবর বানিয়ে দেয় যে ,অসতর্ক অবস্থায় তওবার পূর্বেই মৃত্যু এসে পড়ে। দুঃখ হয় সেসব গাফেলের জন্য যাদের জীবনই তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হয়ে দাঁড়াবে এবং তাদের দিনগুলো (গাফলতিতে অতিবাহিত) তাদেরকে শাস্তির দিকে নিয়ে যাবে।
আমরা মহিমান্বিত আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি ,তিনি যেন আমাদেরকে এবং তোমাদেরকে সেসব লোকের মতো করেন যাদেরকে নিয়ামত বিপথগামী করে না ,যাদেরকে কোন কিছুই আল্লাহর আনুগত্য থেকে বিরত করতে পারে না এবং যারামৃত্যুর পর লজ্জা ও দুঃখে নিপতিত হয় না।
খোৎবা -
৬৪
وفيها مباحث لطيفة من العلم الإلهي
الْحَمْدُ لِلَّه الَّذِي لَمْ تَسْبِقْ لَه حَالٌ حَالًا - فَيَكُونَ أَوَّلًا قَبْلَ أَنْ يَكُونَ آخِراً - ويَكُونَ ظَاهِراً قَبْلَ أَنْ يَكُونَ بَاطِناً - كُلُّ مُسَمًّى بِالْوَحْدَةِ غَيْرَه قَلِيلٌ - وكُلُّ عَزِيزٍ غَيْرَه ذَلِيلٌ وكُلُّ قَوِيٍّ غَيْرَه ضَعِيفٌ - وكُلُّ مَالِكٍ غَيْرَه مَمْلُوكٌ وكُلُّ عَالِمٍ غَيْرَه مُتَعَلِّمٌ - وكُلُّ قَادِرٍ غَيْرَه يَقْدِرُ ويَعْجَزُ - وكُلُّ سَمِيعٍ غَيْرَه يَصَمُّ عَنْ لَطِيفِ الأَصْوَاتِ - ويُصِمُّه كَبِيرُهَا ويَذْهَبُ عَنْه مَا بَعُدَ مِنْهَا - وكُلُّ بَصِيرٍ غَيْرَه يَعْمَى عَنْ خَفِيِّ الأَلْوَانِ ولَطِيفِ الأَجْسَامِ - وكُلُّ ظَاهِرٍ غَيْرَه بَاطِنٌ وكُلُّ بَاطِنٍ غَيْرَه غَيْرُ ظَاهِرٍ - لَمْ يَخْلُقْ مَا خَلَقَه لِتَشْدِيدِ سُلْطَانٍ - ولَا تَخَوُّفٍ مِنْ عَوَاقِبِ زَمَانٍ - ولَا اسْتِعَانَةٍ عَلَى نِدٍّ مُثَاوِرٍ ولَا شَرِيكٍ مُكَاثِرٍ ولَا ضِدٍّ مُنَافِرٍ ولَكِنْ خَلَائِقُ مَرْبُوبُونَ وعِبَادٌ دَاخِرُونَلَمْ يَحْلُلْ فِي الأَشْيَاءِ فَيُقَالَ هُوَ كَائِنٌ - ولَمْ يَنْأَ عَنْهَا فَيُقَالَ هُوَ مِنْهَا بَائِنٌ لَمْ يَؤُدْه خَلْقُ مَا ابْتَدَأَ - ولَا تَدْبِيرُ مَا ذَرَأَ ولَا وَقَفَ بِه عَجْزٌ عَمَّا خَلَقَ - ولَا وَلَجَتْ عَلَيْه شُبْهَةٌ فِيمَا قَضَى وقَدَّرَ - بَلْ قَضَاءٌ مُتْقَنٌ وعِلْمٌ مُحْكَمٌ - وأَمْرٌ مُبْرَمٌ الْمَأْمُولُ مَعَ النِّقَمِ - الْمَرْهُوبُ مَعَ النِّعَمِ!
আল্লাহর গুণরাজী সম্পর্কে
প্রতিষ্ঠিত প্রশংসা আল্লাহর ,যার এক অবস্থা অন্যটির শর্ত নয় ,যাতে তিনি শেষ হবার পূর্বেই প্রথম হতে পারেন অথবা গুপ্ত হবার পূর্বেই সপ্রকাশ হতে পারেন। তিনি ব্যতীত যাকেই‘
এক ’ (একাকী) বলা হয় ,তাকেই ক্ষুদ্রতার জন্য তা বলা হয় এবং তিনি ব্যতীত যে কোন সম্মানিত ব্যক্তিই নগণ্য। তিনি ব্যতীত যে কোন ক্ষমতাবান ব্যক্তিই দুর্বল। তিনি ব্যতীত প্রত্যেক মনিবই দাসানুদাস। তিনি ব্যতীত প্রত্যেক জ্ঞানীই জ্ঞানানুসন্ধানী। তিনি ব্যতীত সকল নিয়ন্ত্রকই নিয়ন্ত্রিত। তিনি ব্যতীত সকল শ্রবণকারীই বধির ,কারণ হালকা স্বর সে শুনতে পায় না ,আবার উচ্চৈঃস্বর তাকে বধির করে দেয়। এবং দূরবর্তী স্বরও তার কানে পৌছে না। তিনি ব্যতীত সকল দৃষ্টিমান ব্যক্তিই অন্ধ ,কারণ সে গুপ্ত রং ও সূক্ষ্ম জিনিস দেখতে পায় না। তিনি ব্যতীত প্রতিটি সপ্রকাশ জিনিসই গুপ্ত ,কিন্তু তিনি ব্যতীত কোন গুপ্ত জিনিস প্রকাশ পেতে অসমর্থ। তিনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা তাঁর কর্তৃত্ব শক্তিশালী করার জন্য বা সময়ের পরিণতির ভয়ে করেননি। কোন শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বীর আক্রমণে সাহায্য পাবার আশায় অথবা কোন দাম্ভিক অংশীদার বা কোন ঘৃণ্য শত্রুর বিরোধিতা ঠেকানোর জন্যও তিনি কোন কিছু সৃষ্টি করেননি। অপরদিকে সৃষ্টির সব কিছুকেই তিনি প্রতিপালন করেন এবং সকল সৃষ্টিই তাঁর দাসানুদাস। তিনি কোন কিছুর সাথেই যুক্তনন (বস্তুমোহ নিরপেক্ষ) যাতে বলা যেতে পারে তিনি অমুক বস্তুতে রয়েছেন ,আবার কোন কিছু থেকে তিনি বিযুক্ত নন। যাতে বলা যেতে পারে অমুক বস্তু থেকে তিনি আলাদা। তিনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা নিয়ন্ত্রণে বা পরিচালনা করতে কখনো ক্লান্তি বোধ করেন না। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তাতে কোন অক্ষমতা বা ত্রুটি তাকে স্পর্শ করেনি। তার কোন নির্দেশে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোন প্রকার সংশয় তাকে স্পর্শ করেনি। তাঁর রায় সুনিশ্চিত ,তাঁর জ্ঞান পরিপূর্ণ এবং তাঁর শাসন অদম্য। দুঃখ - দূর্দশা তাঁর সহায়তা যাচনা করা হয় ,আবার ঐশ্বর্য আপ্লুত অবস্থায়ও তাঁকে ভয় করা হয়।
খোৎবা -
৬৫
قاله لِأَصحابه فِى بِعْضِ أَيام صفِّينَ:
مَعَاشِرَ الْمُسْلِمِينَ
: اسْتَشْعِرُوا الْخَشْيَةَ، وَ تَجَلْبَبُوا السَّكِينَةَ، وَ عَضُّوا عَلَى النَّوَاجِذِ، فَإِنَّهُ أَنْبَى لِلسُّيُوفِ عَنِ الْهَامِ وَ أَكْمِلُوا اللاَّمَةَ، وَ قَلْقِلُوا السُّيُوفَ فِي أَغْمَادِهَا قَبْلَ سَلِّهَا وَ الْحَظُوا الْخَزْرَ، وَ اطْعُنُوا الشَّزْرَ، وَ نَافِحُوا بِالظُّبَا، وَ صِلُوا السُّيُوفَ بِالْخُطَا، وَ اعْلَمُوا أَنَّكُمْ بِعَيْنِ اللَّهِ، وَ مَعَ ابْنِ عَمِّ رَسُولِ اللَّهِ فَعَاوِدُوا الْكَرَّ، وَ اسْتَحْيُوا مِنَ الْفَرِّ، فَإِنَّهُ عَارٌ فِي الْأَعْقَابِ، وَ نَارٌ يَوْمَ الْحِسَابِ وَ طِيبُوا عَنْ أَنْفُسِكُمْ نَفْسا وَ امْشُوا إِلَى الْمَوْتِ مَشْيا سُجُحاً، وَ عَلَيْكُمْ بِهَذَا السَّوَادِ الْأَعْظَمِ، وَ الرِّوَاقِ الْمُطَنَّبِ، فَاضْرِبُوا ثَبَجَهُ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ كَامِنٌ فِي كِسْرِهِ، وَ قَدْ قَدَّمَ لِلْوَثْبَةِ يَداً، وَ أَخَّرَ لِلنُّكُوصِ رِجْلاً. فَصَمْداً صَمْداً! حَتَّى يَنْجَلِيَ لَكُمْ عَمُودُ الْحَقِّ(
وَ أَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ وَ اللّهُ مَعَكُمْ وَ لَنْ يَتِرَكُمْ أَعْمالَكُمْ
)
.
সিফফিনের যুদ্ধের সময় আমিরুল মোমেনিন তার সহচরদেরকে বলেনঃ
হে মুসলিম জনতা !! আল্লাহর ভয়কে তোমাদের জীবনের রুটিনে পরিণত কর। নিজেকে মানসিক প্রশান্তিতে রেখো এবং দাঁতে দাঁত চেপে ধর ,কারণ এতে তোমাদের মাথার ওপর থেকে তরবারি দূরে সরে যাবে। তোমাদের বর্ম পরিধান কর এবং তরবারি বের করার আগে খাপের মধ্যে নেড়ে নাও । শত্রুর ওপর চোখ রেখো। তোমাদের বর্শা উভয় দিকে ব্যবহার করো এবং তরবারি দ্বারা শক্রকে আঘাত হানো। মনে রেখো ,তোমরা আল্লাহর সম্মুখে এবং রাসূলের চাচাতো ভাই - এর সাথী হয়ে লড়ছো। বারংবার আক্রমণ কর এবং পিছু হটার লজ্জাকর অবস্থার কথা অনুভব কর ;কারণ এটা পরবর্তী বংশধরদের জন্য লজ্জা ও শেষ বিচারের দিনে শাস্তির কারণ। স্বেচ্ছায় তোমাদের জীবন আল্লাহকে দাও এবং নির্দ্বিধায় মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাও। ওই সুসজ্জিত তাঁবু ও এর চারপাশের জটলার প্রতি সতর্ক হও এবং জটলার মধ্যভাগে যেখানে দামামা বাজছে সেখানে তোমাদের আক্রমণের লক্ষ্যস্থল স্থির কর ,কারণ সেখানে শয়তান বসে আছে। সে তোমাদেরকে আক্রমণ করার জন্য তার হাত প্রসারিত করেছে এবং পালিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে পা পিছনে রেখেছে। তোমরা ধৈর্য ধারণ করা যে পর্যন্ত না সত্যের আলো প্রতিভাত হয় ।
সুতরাং তোমরা মনোবল হারিয়ো না এবং সন্ধির প্রস্তাব করো না । তোমরাই প্রবল ;আল্লাহ তোমাদের সঙ্গে আছেন ,তিনি তোমাদের কর্মফল কখনো ক্ষুন্ন করবেন না। (কুরআন - ৪৭ :৩৫)
খোৎবা -
৬৬
قَالُوا: لَمَّا انْتَهَتْ إِلَى أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَعليهالسلام
أَنْبَأُ السَّقِيفَةِ بَعْدَ وَفَاةِ رَسُولِ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
، قَالَعليهالسلام
: مَا قَالَتِ الْأَنْصَارُ؟ قَالُوا: قَالَتْ: مِنَّا أَمِيرٌ وَ مِنْكُمْ أَمِيرٌ؛ قَالَعليهالسلام
:
فَهَلَّا احْتَجَجْتُمْ عَلَيْهِمْ بِأَنَّ رَسُولَ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
وَصَّى بِأَنْ يُحْسَنَ إِلَى مُحْسِنِهِمْ، وَ يُتَجَاوَزَ عَنْ مُسِيئِهِمْ؟قَالُوا وَ مَا فِي هَذَا مِنَ الْحُجَّةِ عَلَيْهِمْ؟،
فَقَالَ
عليهالسلام
: لَوْ كَانَ الْإِمَامَةُ(الامارة)
فِيهِمْ لَمْ تَكُنِ الْوَصِيَّةُ بِهِمْثُمَّ قَالَ
:عليهالسلام
فَمَا ذَا قَالَتْ قُرَيْشٌ؟قَالُوا احْتَجَّتْ بِأَنَّهَا شَجَرَةُ الرَّسُولِ
صلىاللهعليهوآلهوسلم
، فَقلَاَعليهالسلام
: احْتَجُّوا بِالشَّجَرَةِ، وَ أَضَاعُوا الثَّمَرَةَ.
সকিফা - ই - সাঈদার ঘটনা প্রবাহ শুনে প্রদত্ত খোৎবা
রাসূলের (সা.) ইনতিকালের অব্যবহিত পরে বনি সাঈদাহর সকিফাহ
- এ সংঘটিত ঘটনা প্রবাহের সংবাদ আমিরুল মোমেনিনকে অবহিত করা হলে তিনি জানতে চেয়েছিলেন যে ,আনসারগণ কী বলেছিল ? লোকেরা বললো যে ,তারা দাবি করেছিল। একজন প্রধান তাদের মধ্য থেকে এবং আরেকজন প্রধান অন্যদের মধ্য থেকে নিয়োগ করতে । তখন আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
তোমরা কেন রাসূলের অছিয়ত সম্পর্কে বললে না যে ,আনসারদের মধ্যে যারা ভালো লোক তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার করবে ;আর যারা মন্দলোক তাদেরকে সব সময় ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে।
লোকেরা বললোঃ রাসূলের এ অছিয়তের মধ্যে তাদের দাবির বিরুদ্ধে কী আছে ?
আমিরুল মোমেনিন বললেনঃ“
যদি নেতৃত্ব তাদের জন্য হতো তবে তাদের অনুকূলে কোন অছিয়ত থাকার প্রয়োজন ছিল না। ” তৎপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন ,“
কুরাইশগণ কী জবাব দিল”
?
লোকেরা বললোঃ তারা যুক্তি দেখালো যে ,তারা রাসূলের সাজারার (বংশধর) অন্তর্ভুক্ত। আমিরুল মোমেনিন বললেনঃ তারা সাজোরার যুক্তি দেখিয়েছে অথচ এর ফল বিনষ্ট করে ফেলেছে।
____________________
খোৎবা -
৬৭
لَما قُلّد مُحَمّد بْنَ أبي بَكْرِ مصر فملكت عَليه وَ قتل
وَ قَدْ أَرَدْتُ تَوْلِيَةَ مِصْرَ هاشِمَ بْنَ عُتْبَةَ؛ وَ لَوْ وَلَّيْتُهُ إِيَّاهَا لَمَّا خَلَّى لَهُمُ الْعَرْصَةَ وَ لاَ أَنْهَزَهُمُ الْفُرْصَةَ بِلاَ ذَمِّ لِمُحَمَّدِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ، فَلَقَدْ كَانَ إِلَيَّ حَبِيباً، وَ كَانَ لِي رَبِيباً.
মিশরের গভর্ণর মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর
ক্ষমতাচ্যুৎ হয়ে নিহত হবার খবর পেয়ে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
হাশিম ইবনে উতবাহকে মিশরে প্রেরণ করার জন্য আমি মনস্থ করেছিলাম। যদি আমি তাই করতাম। তবে সে বিরোধীদের জন্য যুদ্ধের ময়দান খালি করে দিত না এবং তাদেরকে কোন সুযোগ দিত না। (তাকে ধরে ফেলার) । এ উক্তি আমি মুহাম্মদের মানহানি করার জন্য করিনি। যেহেতু আমি তাকে ভালোবাসি এবং আমি তাকে লালন - পালন করেছি।
___________________
খোৎবা -
৬৮
كَمْ أُدَارِيكُمْ كَمَا تُدَارَى الْبِكَارُ الْعَمِدَةُ، وَ الثِّيَابُ الْمُتَدَاعِيَةُ! كُلَّمَا حِيصَتْ مِنْ جَانِبٍ تَهَتَّكَتْ مِنْ آخَرَ. كُلَّمَا أَطَلَّ عَلَيْكُمْ مَنْسِرٌ مِنْ مَنَاسِرِ أَهْلِ الشَّامِ أَغْلَقَ كُلُّ رَجُلٍ مِنْكُمْ بَابَهُ، وَ انْجَحَرَ انْجِحَارَ الضَّبَّةِ فِي جُحْرِهَا، وَ الضَّبُعِ فِي وِجَارِهَا. الذَّلِيلُ وَ اللَّهِ مَنْ نَصَرْتُمُوهُ! وَ مَنْ رُمِيَ بِكُمْ فَقَدْ رُمِيَ بِأَفْوَقَ نَاصِلٍ. إِنَّكُمْ وَ اللَّهِ لَكَثِيرٌ فِي الْبَاحَاتِ، قَلِيلٌ تَحْتَ الرَّايَاتِ، وَ إِنِّي لَعَالِمٌ بِمَا يُصْلِحُكُمْ، وَ يُقِيمُ أَوَدَكُمْ، وَ لَكِنِّي لاَ أَرَى إِصْلاَحَكُمْ بِإِفْسَادِ(فسادی)
نَفْسِي. أَضْرَعَ اللَّهُ خُدُودَكُمْ، وَ أَتْعَسَ جُدُودَكُمْ! لاَ تَعْرِفُونَ الْحَقَّ كَمَعْرِفَتِكُمُ الْبَاطِلَ، وَ لاَ تُبْطِلُونَ الْبَاطِلَ كَإِبْطَالِكُمُ الْحَقَّ!.
অনুচরদের অসতর্ক আচরণ সম্পর্কে উপদেশ দিয়ে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
আর কতকাল আমি তোমাদের ইচ্ছা ও অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে চলবো। আমি তোমাদের ইচ্ছার সঙ্গে সেভাবেই খাপ খাইয়ে নিয়েছি যেভাবে মানুষ ফাঁপা কুঁজ সম্পন্ন উট অথবা এদিক সেলাই করলে ওদিক বেরিয়ে পড়ে এমন ছেড়া কাপড়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়। যখন সিরিয়ার একটা ছোট বাহিনী এমনভাবে লুকিয়ে পড়েছিলে যেন গিরগিটি অথবা ব্যাজার তার গর্তে লুকিয়ে পড়েছে। আল্লাহর কসম ,তোমাদের মতো মানুষকে সমর্থন করলে অপদস্থ হওয়া অনিবার্য এবং তোমাদের সমর্থন নিয়ে তীর ছোড়া মানেই হলো মাথা ও লেজ ভাঙ্গা তীর নিক্ষেপ করা। আল্লাহর কসম ,ঘরের আঙ্গিনায় তোমরা সংখ্যায় অনেক কিন্তু ব্যানারের তলে তোমরা মুষ্টিমেয় কয়েকজন। নিশ্চয়ই ,আমি জানি কিসে তোমাদের আচরণের উন্নতি হবে এবং কী করে তোমাদের বক্রতা সোজা করতে হবে। কিন্তু আমি নিজেকে বরবাদ করে তোমাদের উন্নতি বিধান করবো না। আল্লাহ তোমাদেরকে অসম্মানিত ও ধ্বংস করতে পারেন। তোমরা অন্যায়কে যতটুকু বোঝ ,ন্যায়কে ততটুকু বোঝা না এবং ন্যায়কে ধ্বংস করার জন্য যতটুকু প্রবৃত্ত হও ,অন্যায়কে ধ্বংস করার জন্য ততটুকু হও না।
খোৎবা -
৬৯
مَلَكَتْنِي عَيْنِي وَ أَنَا جَالِسٌ فَسَنَحَ لِي رَسُولُ اللَّهِصلىاللهعليهوآلهوسلم
، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا ذَا لَقِيتُ مِنْ أُمَّتِكَ مِنَ الْأَوَدِ وَ اللَّدَدِ؟ فَقَالَ:«ادْعُ عَلَيْهِمْ»
فَقُلْتُ: أَبْدَلَنِي اللَّهُ بِهِمْ خَيْرا لي مِنْهُمْ، وَ أَبْدَلَهُمْ بِي شَرّا لَهُمْ مِنِّي.وَ يَعْني بالا ود الاعوجاج وَ باللدد الخَصام وَ هَذا مَن أَفْصَح الْكَلامِ
.
প্রাণনাশক আঘাতের দিন ভোরে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
আমি বসেছিলাম। হঠাৎ নিদ্রাচ্ছন্ন হলাম। আমি দেখলাম আল্লাহর রাসূল (সা.) আমার সম্মুখে উপস্থিত । আমি বললাম ,“
হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের বক্রতা ও শত্রুতা আমি আর কত সহ্য করবো ?”
আল্লাহর রাসূল বললেন ,“
তাদের আশুভের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর। ” আমি বললাম ,“
আমার জন্য তাদের চেয়ে আরো ভালো লোক এবং তাদের জন্য আমার পরিবর্তে অনেক খারাপ লোক আল্লাহ দিতে পারেন। ”
খোৎবা -
৭০
أَمّا بَعْدُ يَا أَهْلَ الْعِرَاقِ، فَإِنَّما أَنْتُمْ كَالْمَرْأَةِ الْحَامِلِ، حَمَلَتْ فَلَمَّا أَتَمَّتْ أَمْلَصَتْ وَ ماتَ قَيِّمُها، وَ طالَ تَأَيُّمُها، وَ وَرِثَها أَبْعَدُها. أَمَا وَ اللَّهِ مَا أَتَيْتُكُمُ اخْتِيَاراً؛ وَ لَكِنْ جِئْتُ إِلَيْكُمْ (أتیکم) سَوْقاً. وَ لَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّكُمْ تَقُولُونَ: عَلِيُّ يَكْذِبُ، قَاتَلَكُمُ اللَّهُ تعالی! فَعَلَى مَنْ أَكْذِبُ؟ أَ عَلَى اللَّهِ؟ فَأَنَا أَوَّلُ مَنْ آمَنَ بِهِ! أَمْ عَلَى نَبِيِّهِ؟ فَأَنَا أَوَّلُ مَنْ صَدَّقَهُ! كَلَّا وَ اللَّهِ لَكِنَّهَا لَهْجَةٌ غِبْتُمْ عَنْهَا، وَ لَمْ تَكُونُوا مِنْ أَهْلِها. وَيْلُ أُمِّهِ وَيْلُمَّهِ كَيْلاً بِغَيْرِ ثَمَنٍ! لَوْ كَانَ لَهُ وِعَأٌ(
وَ لَتَعْلَمُنَّ نَبَأَهُ بَعْدَ حِينٍ
)
ইরাকের জনগণকে ভর্ৎসনা
ওহে ইরাকের জনগণ
! তোমরা হলে সেই গর্ভবতী মহিলার মত যে গর্ভসময় পূর্তির পর একটা মৃত সন্তান প্রসব করে এবং তার স্বামীও মারা যায় এবং তার বৈধব্য দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে ,ফলে দূরবর্তী আত্মীয় - স্বজন তার উত্তরাধিকারী হয়। আল্লাহর কসম ,আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তোমাদের কাছে আসিনি। অবস্থার প্রেক্ষিতে আমি আসতে বাধ্য হয়েছি। আমি জানতে পেরেছি যে ,তোমরা বল আলী মিথ্যা কথা বলে। আল্লাহ্ তোমাদেরকে ধ্বংস করুন। কার বিরুদ্ধে আমি মিথ্যা বলি ? আল্লাহর বিরুদ্ধে ? কিন্তু তাঁর প্রতি ইমান আনাতে আমিই তো প্রথম। তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে ? কিন্তু আমিই তো প্রথম যে তাকে বিশ্বাস করে। কখনো নয় ;আল্লাহর কসম ,আমি যা বলেছি তা সম্পূর্ণ সঠিক। তোমরা সে সময় উপস্থিত ছিলেনা - থাকলেও সে কথা বোঝার যোগ্য লোক তোমরা নও । তোমাদের ওপর অভিশাপ ! আমি বিনামূল্যে আমার সুশোভন বক্তব্য তোমাদের দিয়ে যাচ্ছি। আহা! এটা ধারণ করার মত পাত্র যদি থাকতো ।
“ কিয়াৎকাল পরে তোমরা এটা অবশ্যই বুঝতে পারবে । ” (কুরআন - ৩৮:৮৮)
___________________
খোৎবা -
৭১
اللَّهُمَّ داحِيَ الْمَدْحُوَّاتِ، وَ داعِمَ الْمَسْمُوكَاتِ، وَ جَابِلَ الْقُلُوبِ عَلَى فِطْرَتِهَا: شَقِيِّها وَ سَعِيدِهَا. اجْعَلْ شَرَائِفَ صَلَوَاتِكَ وَ نَوَامِيَ بَرَكَاتِكَ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَ رَسُولِكَ، الْخَاتِمِ لِمَا سَبَقَ، وَ الْفَاتِحِ لِمَا انْغَلَقَ، وَ الْمُعْلِنِ الْحَقَّ بِالْحَقِّ، وَ الدَّافِعِ جَيْشَاتِ الْأَبَاطِيلِ، وَ الدَّامِغِ صَوْلاتِ الْأَضَالِيلِ، كَمَا حُمِّلَ فَاضْطَلَعَ، قَائِما بِأَمْرِكَ، مُسْتَوْفِزا فِي مَرْضَاتِكَ، غَيْرَ نَاكِلٍ عَنْ قُدُمٍ، وَ لا وَاهٍ فِي عَزْمٍ، وَاعِيا لِوَحْيِكَ، حَافِظا لِعَهْدِكَ، مَاضِيا عَلَى نَفَاذِ أَمْرِكَ، حَتَّى أَوْرَى قَبَسَ الْقَابِسِ، وَ أَضَأَ الطَّرِيقَ لِلْخَابِطِ، وَ هُدِيَتْ بِهِ الْقُلُوبُ بَعْدَ خَوْضَاتِ الْفِتَنِ وَ الْآثَامِ، وَ أَقامَ بِمُوضِحاتِ الْأَعْلاَمِ، وَ نَيِّرَاتِ الْأَحْكَامِ، فَهُوَ أَمِينُكَ الْمَأْمُونُ، وَ خَازِنُ عِلْمِكَ الْمَخْزُونِ، وَ شَهِيدُكَ يَوْمَ الدِّينِ، وَ بَعِيثُكَ بِالْحَقِّ، وَ رَسُولُكَ إلَى الْخَلْقِ.
اللَّهُمَّ افْسَحْ لَهُ مَفْسَحا فِي ظِلِّكَ، وَ اجْزِهِ مُضَاعَفاتِ الْخَيْرِ مِنْ فَضْلِكَ، اللَّهُمَّ أَعْلِ عَلَى بِنأِ الْبانِينَ بِنَأَهُ، وَ أَكْرِمْ لَدَيْكَ مَنْزِلَتَهُ، وَ أَتْمِمْ لَهُ نُورَهُ، وَ اجْزِهِ مِنِ ابْتِعَاثِكَ لَهُ مَقْبُولَ الشَّهَادَةِ، مَرْضِيَّ الْمَقَالَةِ، ذا مَنْطِقٍ عَدْلٍ، وَ خُطْبَةٍ فَصْلٍ، اللَّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنا وَ بَيْنَهُ فِي بَرْدِ الْعَيْشِ وَ قَرارِ النِّعْمَةِ، وَ مُنَى الشَّهَوَاتِ، وَ أَهْوَأِ اللَّذَّاتِ، وَ رَخَأِ الدَّعَةِ، وَ مُنْتَهَى الطُّمَأْنِينَةِ وَ تُحَفِ الْكَرَامَةِ.
রাসূলের (সা.) ওপর সালাম পেশ করার পদ্ধতি সম্পর্কে
রাসূলের ওপর কিভাবে সালাম পেশ করতে হয় সে সম্পর্কে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
হে আল্লাহ ,তুমি পৃথিবীর উপরিভাগকে বিস্তৃতকারী এবং আকাশ মণ্ডলের সুনির্দিষ্ট রক্ষক। তুমি ভালো ও মন্দ স্বভাব সম্পন্ন হৃদয় সৃষ্টিকারী। মুহাম্মদের (সা.) প্রতি তোমার পছন্দের সেরা সালাম ও বরকত বর্ষণ করো। তিনি তোমার বান্দা ও রাসূল। তিনি সর্বশেষ নবী । যা নিরুদ্ধ ছিল তিনি তা উন্মুক্ত করেছেন। তিনি সত্যের ঘোষণাকারী। তিনি অন্যায়ের সৈন্যকে পর্যুদস্তকারী এবং বিভ্রান্তির আক্রমণ ধ্বংসকারী। যেহেতু তুমি রেসালতের মহান দায়িত্বের বোঝা তাঁর স্কন্ধে দিয়েছে। সেহেতু তিনি তোমার আদেশের ওপর দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থেকে সে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। তিনি তোমার ইচ্ছার প্রতি অগ্রসরমান ছিলেন। এতে তাঁর কোন পদক্ষেপে সংকোচন ছিল না এবং তাঁর দৃঢ় সংকল্পে কোন দুর্বলতা ছিল না। তোমার অহি শ্রবণে ও তোমার ওয়াদা সংরক্ষণে তিনি কার্পণ্য করেননি। তোমার আদেশ তিনি ছড়িয়ে দিয়ে অনুসন্ধানকারীদের জন্য আলো জ্বলিয়ে দিয়েছিলেন এবং যারা অন্ধকারে হাতড়ে চলছিলো তাদেরকে আলোর সন্ধান দিয়েছিলেন।
যে হৃদয়সমূহ ফেতনা - ফ্যাসাদে লিপ্ত ছিল তারা তার মাধ্যমে হেদায়েত প্রাপ্ত হয়েছিল। তিনি সুস্পষ্ট পথের নিদর্শন ও সমুজ্জ্বল নির্দেশাবলী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি তোমার বিশ্বস্ত আমানতদার এবং তোমার জ্ঞান ভাণ্ডারের খাজেন (খাজাঞ্চি) । শেষ বিচারের দিনে তিনি তোমার সাক্ষী। তিনি তোমার সত্যের দূত এবং মানুষের নিকট তোমার বার্তাবাহক। হে আল্লাহ ,তোমার ছায়াতলে তার জন্য বিশাল স্থান নির্ধারণ কর এবং তোমার অগণনীয় রহমত তাকে প্রদান কর।
হে আল্লাহ ,তাঁর নির্মাণকে (মিশন বা আদর্শ) সকল নির্মাণের ওপর উচ্চতা প্রদান করো ,তোমার নিকট তাঁর মর্যাদাকে সমুচ্চ করো ,তাঁর নূরকে পরিপূর্ণতা প্রদান করো এবং তাঁর আলোকে তুমি উদ্ভাসিত রাখে। তোমার রেসালতের দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পালনের জন্য তাঁর সাক্ষ্যই গ্রহণ করো এবং তাঁর বক্তব্য পছন্দনীয় করো ,কারণ তাঁর বক্তব্য ন্যায়ভিত্তিক ও তাঁর বিচার সুস্পষ্ট। হে আল্লাহ ,আমাদেরকে ও তাঁকে জীবনের আনন্দে ,নেয়ামতের বহাল অবস্থায় ,আকাঙ্খার পরিতৃপ্তিতে ,আনন্দ উপভোগে ,জীবন ধারণের আরামে ,মনের শান্তিতে ও সম্মানের অনুদানে একত্রে রেখো।
খোৎবা -
৭২
أُخِذَ مَرْوَانُ بْنُ الْحَكَمِ أَسِيرا يَوْمَ الْجَمَلِ فَاسْتَشْفَعَ الْحَسَنَ وَ الْحُسَيْنَعليهماالسلام
إلَى أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَعليهالسلام
فَكَلَّمَاهُ فِيهِ، فَخَلَّى سَبِيلَهُ، فَقالا لَهُ: يُبَايِعُكَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ فَقالَعليهالسلام
:
أَوَلَمْ يُبايِعْنِي بَعْدَ قَتْلِ عُثْمَانَ؟ لا حَاجَةَ لِي فِي بَيْعَتِهِ! إِنَّهَا كَفُّ يَهُودِيَّةٌ لَوْ بَايَعَنِي بِيَدِهِ لَغَدَرَ بِسَبَّتِهِ، أَما إ نَّ لَهُ إِمْرَةً كَلَعْقَةِ الْكَلْبِ أَنْفَهُ. وَ هُوَ أَبُو الْأَكْبُشِ الْأَرْبَعَةِ، وَ سَتَلْقَى الْأُمَّةُ مِنْهُ وَ مِنْ وَلَدِهِ يَوْماً أَحْمَرَ!
হাসান ও হোসাইন যুদ্ধ - বন্দী মারওয়ান ইবনে হাকামের জন্য সুপারিশ করায় প্রদত্ত খোৎবা
মারওয়ান ইবনে হাকাম জামালের যুদ্ধে বন্দী হয়ে হাসান ও হোসাইনকে অনুনয় বিনয় করে অনুরোধ করেছিল যেন তারা আমিরুল মোমেনিনের কাছে তার অনুকূলে সুপারিশ করেন। তাদের সুপারিশের কারণেই আমিরুল মোমেনিন মারওয়ানকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। সুপারিশকালে মহান ভ্রাতৃদ্বয় বলেন ,“ হে আমিরুল মোমেনিন ,সে আপনার বায়াত গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করে ।”
তখন আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
উসমানের হত্যার পর সে কি আমার বায়াত গ্রহণ করেনি ? এখন আর তার বায়াতের কোন প্রয়োজন আমার নেই ,কারণ তার হাত হলো ইহুদির হাত। যদি সে আমার হাত ধরেও বায়াত গ্রহণ করে। তবুও সে কিছুক্ষণ পরে তা ভঙ্গ করবে। সে একদিন ক্ষমতা পাবে তবে ততক্ষণ টিকে থাকবে যতক্ষণ কুকুর নিজের নাক চাটে (স্বল্পক্ষণের জন্য) । সে চারটি ভেড়ার পিতা হবে (তারাও শাসন করবে) । সে এবং তার পুত্রদের দ্বারা জনগণ লাল দিবস (দুঃখ - কষ্ট) পোহাবে ” ।
____________________