কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত

কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত0%

কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত লেখক:
প্রকাশক: আল হোসেইনী প্রকাশনী
বিভাগ: ইমাম হোসাইন (আ.)

কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত

লেখক: সাইয়েদ ইবনে তাউস
প্রকাশক: আল হোসেইনী প্রকাশনী
বিভাগ:

ভিজিট: 18737
ডাউনলোড: 3026

কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 17 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 18737 / ডাউনলোড: 3026
সাইজ সাইজ সাইজ
কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত

কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর শাহাদত

লেখক:
প্রকাশক: আল হোসেইনী প্রকাশনী
বাংলা

“কারবালা ও হযরত ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শাহাদত” সাইয়্যেদুশ শুহাদা হযরত হোসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর জীবন চরিত সম্পর্কে রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ ‘লোহুফ’-এর বাংলা অনুবাদ। সাইয়েদ ইবনে তাউস নামক একজন প্রসিদ্ধ মনিষী গ্রন্থটি আরবীতে রচনা করেন। বলা যায় যে, এটি হচ্ছে এ সম্পর্কিত একটি পূর্ণাঙ্গ, নির্ভরযোগ্য ও একই সাথে সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ। কলেবরে ছোট হলেও প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এতে সন্নিবেশিত হয়েছে। একটি অনুবাদ গোষ্ঠি কর্তৃক বইটি ফার্সি থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

আশুরার ঘটনাবলী , শহীদানের শাহাদতের দৃশ্যপট ইমাম পরিবারের তাবু লুটপাট

ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ ইমাম হোসাইনের (আ.) বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের উস্কানী দেয় । তাদেরকে সত্যের পথ থেকে ফিরিয়ে নেয়। তার সেনাবাহিনী এ ডাকে সাড়া দেয়। ওমর বিন সা দকে পরকালীন জীবন , তুচ্ছ পার্থিব স্বার্থের বিনিময়ে খরিদ করে তাকে সেনা অধিনায়ক নিযুক্ত করে। ওমর এ প্রস্তাব গ্রহণ করে চার হাজার অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে ইমাম হোসাইন (আ.) এর সাথে যুদ্ধের জন্য কুফা থেকে যাত্রা করে। ইবনে যিয়াদ একের পর এক সেনাদল পাঠাতে থাকে। ছয়ই মুহাররম রাত পর্যন্ত ইবনে সা দের সেনাবাহিনীর সংখ্যা দাড়ায় বিশ হাজার। এ বাহিনী হযরত হোসাইন (আ.)এর গতিরোধ করে ইমাম বাহিনীর পানি বন্ধ করে দেয়।

কারবালায় ইমাম হোসাইন (আ.) এর প্রথম ভাষণ

(কারবালার ময়দানে তৃষ্ণার্ত ইমাম বাহিনী এক দিকে-অপর দিকে ওমর বিন সা দের বিশাল বাহিনী। এ অবস্থায় শত্রু সৈন্যদের উদ্দেশ্যে ইমাম তার তরবারীর উপর ভর দিয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠে প্রথম যে ভাষণ প্রদান করেন তা নিম্নরূপ।)

أُنْشُدُكُمُ اللّه هلْ تعْرفُوننى ؟ قالُوا: أللّهُمّ نعمْ، أنْت ابْنُ رسُول اللّه وسبْطه

খোদার কসম দিয়ে বলছি , তোমরা আমাকে চেন ? তারা বললঃ হ্যাঁ , আপনি আওলাদে রাসূল এবং তারই নাতি। খোদার শপথ করে বলছি , তোমারা কি জানো আমার নানা ছিলেন রাসূলে খোদা (সা.) । তারা জবাব দেয় , হ্যাঁ খোদার কসম দিয়ে বলছি , আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি। তোমরা কি জানো আমার পিতা আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) । তারা বলল জ্বি , হ্যাঁ , আল্লাহর শপথ। আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি তোমরা কি জানো আমার মা জননী ফাতেমা যাহরা (আ.) ছিলেন মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.) এর কন্যা । সবাই বলল- খোদার কসম করেই বলছি তাই ঠিক। আল্লাহর শপথ করে বলছি তোমরা কি জানো আমার নানী ছিলেন খাদিজা বিনতে খোওয়াইলিদ (রা.) যিনি ছিলেন ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম মহিলা। তারা জবাবে বলল-হ্যাঁ খোদার শপথ তাই ঠিক। ইমাম হোসাইন (আ.) বললেন আল্লাহর শপথ করে বলো-তোমরা কি জানো সাইয়্যেদুশ শোহাদা হামজা (রা.) ছিলেন আমার পিতার চাচা ? তারা বললঃ হ্যাঁ , আল্লাহর শপথ। হযরত বললেন-আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি তোমরা কি জান জাফর তাইয়ার (রা.) ছিলেন আমার চাচা ? তারা বললঃ জ্বি হ্যাঁ , আল্লাহর কসম আমরা জানি। ইমাম বললেন , আল্লাহর শপথ করে বলছি-তোমরা কি জানো রাসূল (সা.) এর তরবারী মোবারক আমার হাতে রয়েছে তারা জবাবে বলল-হ্যাঁ আমরা জানি। হযরত (আ.) আবারো আল্লাহর শপথ করে বললেন-তোমরা কি জান আমার মাথার এ পাগড়ীটি মহানবী (সা.) এর পাগড়ী ? তারা বলল , জ্বি হ্যাঁ , আমরা তা জানি। ইমাম (আ.)আবার আল্লাহর শপথ নিয়ে বললেন-তোমাদের কি জানা আছে আলী (আ.) প্রথম ব্যক্তি যিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং জ্ঞান ও ধৈর্যের ক্ষেত্রে অনন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন-তিনি ছিলেন নারী-পুরুষ সকলের মওলা(অভিভাবক) । তারা বললঃ জ্বি হ্যাঁ আমার জানি। ইমাম বলিষ্ঠ কণ্ঠে বললেন , আল্লাহর শপথ-

قال فبم تسْتحلُّون دمى

তাহলে আমার রক্ত কি করে তোমরা হালাল মনে করছ ? অথচ আমার পিতা হাউজে কাউসারের পানি পান করাবেন। কিয়ামত দিবসে লিওয়াউল হামদ (হামদের পতাকা) তার হাতেই থাকবে। তারা জবাব দিল-তুমি যা কিছু বলেছ আমরা সবই জানি কিন্তু-

ونحْنُ غيْرُ تارك يك حتّى تذُوق الْموْت عطْشانا !!!

পিপাসায় প্রাণ ওষ্ঠগত হওয়া পর্যন্ত আমরা তোমাকে ছাড়বনা।

হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর ভাষণ সমাপ্ত হচ্ছিল।তার কন্যাগণ ও বোন হযরত জয়নাব (আ.) ভাষণ শুনছিলেন আর বুকে হাত মেরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন। তাদের কান্না ছির হৃদয় বিদারক। ইমাম (আ.) তার ভাই আব্বাস এবং ছেলে আলীকে তাদের কাছে পাঠিয়ে বললেন-মহিলাদেরকে সান্তনা দাও কেননা আমার জীবনের শপথ করে বলছি- এরপর ইবনে যিয়াদই কাদবে।

বর্ণনাকারী বলেন , ওমর বিন সা দের নামে লেখা আব্দুল্লাহ বিন যিয়াদের পত্র পৌছে গেল । ঐ পত্রে তাকে উস্কানি দিয়ে বলা হয় দ্রুত যেন যুদ্ধ শুরু করা হয়। এ কাজে বিলম্ব না হয়। এ পত্র পাওয়া মাত্রই অশ্বারোহী সেনাদল ইমাম হোসাইন (আ.) এর তাবুর দিকে অগ্রসর হয়।

আব্বাস (রা.) নিরাপদঃ

শিমার তাবুর কাছে এসে চিৎকার দিয়ে বলে উঠেاین بنو اختی কোথায় আমার ভাগ্নেরা ? কোথায় আমার ভাগ্নে আবদুল্লাহ , জাফর , আব্বাস ও উসমান ? হোসাইন (আ.) বললেনঃ শিমার ফাসেক হলেও তোমরা তার কথার জবাব দাও যেহেতু সে তোমাদের মামা। আব্বাস ও তার ভাই জবাব দিলেন-কি বলতে চাও ? শিমার বললঃ হে আমার ভাগ্নেরা তোমরা নিরাপদ। তোমাদের ভাই হোসাইনের সাথে নিজেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিওনা । আমীরুল মো ’ মেনীন ইয়াজিদের আনুগত্য কর ।

আব্বাস (আ.) বললেন-তোমর ধ্বংস হোক , আল্লাহর দুশমন। আমাদের জন্য কি মন্দ ও লজ্জাকর নিরাপত্তার কথা বলছ ?

أتأْمُرْنا أنْ نتْرُك أخانا وسيّدنا الْحُسيْن بْن فاطمة وندْخُل فى طاعة اللُّعن أ أوْلاد اللُّعن أ

আমাদেরকে ফাতেমা (আ.) এর সন্তান হোসাইন (আ.) এর সহযোগিতা ছেড়ে অভিশপ্তের সন্তান অভিশপ্তের আনুগত্য করতে বলছ ?

এ জবাব শুনে শিমার তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠে তার সেনাবাহিনীর কাছে পিরে যায়।

ইবনে যিয়াদের বাহিনীর পক্ষ হতে অতি দ্রুত যুদ্ধ শুরুর তোড়জোড় এবং ইমামের ভাষণে তাদের মধ্যে কোনরূপ প্রতিক্রিয়া না হওয়ায়-হযরত আব্বাস (রা.) কে ইমাম (আ.) বললেন-যদি পারো আজকে তাদেরকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখ। আজ রাতে নামাযের মধ্যেই কাটাবো। আল্লাহই ভাল জানেন আমি নামায পড়া ও কুরআন তিলাওয়াতকে কতই না ভাণবাসি । আব্বাস (রা.) এসে তাদেরকে যুদ্ধ না করার অনুরোধ জানালো । ওমর বিন সা দ চুপ তাকল। মনে হচ্ছিল সে যুদ্ধ বিলম্বিত করতে আগ্রহী ছিল না।

আমর বিন হাজ্জাজ যুবাইদী বলল , খোদার কসম আমাদের প্রতিপক্ষ যদি তুর্কী বা দায়লমী হতো আর তারা এ দরখাস্ত করলে আমরা অবশ্যই গ্রহণ করতাম । অথচ এরা হচ্ছে আল্লাহর রাসূল (সা.) এর আওলাদ । কি করে তদের প্রস্তাব নাকচ করতে পারি ? অবশেষে এ প্রস্তাব গৃহীত হয়ে যুদ্ধ বিলম্বিত হয়।

ইমাম হোসাইন (আ.)মাটিতে বসে পড়েন হটাৎ তার ঘুম এসে যায়। কিছুক্ষণ পরই ঘুম থেকে জেগে উঠেন । হযরত যয়নব (রা.) কে লক্ষ করে বলেন-প্রিয় বোনটি আমার! নানা রাসূলে খোদা (সা.) , পিতা আলী (আ.) , মা ফাতেমা (সা.আ.) ও ভাই হাসান (আ.) কে স্বপ্নে দেখেছি। আমাকে বলেছেনঃ হে হোসাইন! অতিশীঘ্রই আমাদের সাতে মিলিত হবে। ’ কোন কোন বর্ণনা মতে তারা বলেছিল- হে হোসাইন। (আ.) আগামীকালই আমাদের সাথে মিলিত হবে। ” যয়নব (আ.) এ কথা শুনে মাথায় হাত চাপড়াতে চাপড়াতে চিৎকার দিয়ে কেদে উঠলেন। হোসাইন (আ.) বললেন , চিৎকার দিওনা , এমন কাজ করো না যাতে জনগণ আমার দুর্নাম করে ।

রাত এসে গেল। জীবনের সর্বশেষ রাত্রিতে হোসাইন (আ.) তার সাথী-সঙ্গীদের সমবেত করে মহান আল্লাহর প্রশংসার পর বললেনঃ

أمّا بعْدُ، فإنّى لا أعْلمُ أصْحابا أصْلح منْكُمْ، ولا أهْل بيْتٍ أفْضل منْ أهْل بيْتى ، فجزاكُمُ اللّهُ عنّى جميعا خيْرا، وهذا اللّيْلُ قدْ غشيكُمْ فاتّخذُوهُ جملا، ولْي أخُذْ كُلُّ رجُلٍ منْكُمْ بيد رجُلٍ منْ أهْل بيْتى ، وتفرّقُوا فى سواد هذا اللّيْلُ وذرُونى وهؤُل أ الْقوْم، فإنّهُمْ لا يُريدُون غيْرى

আমি আমার সাথী-সঙ্গীদের চেয়ে কোন সাথীকে অধিক নেককার এবং আমার আহলে বাইতের (আ.) চেয়ে কোন পরিবারকে অধিক উত্তম মনে করি না। মহান আল্লাহ তোমাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। এখন রাত , অন্ধকার সবকিছু ছেয়ে ফেলেছে। তোমরা এ রাতের অন্ধকারকে পথিকের উটের মতো মূল্য দাও। তোমরা সবাই আমার আহলে বাইতের এক একজনকে নিয়ে রাতের আধারে পালিয়ে যাও । আমাকে শত্রু সেনাদের সামনে থাকতে দাও , কেননা তারা একমাত্র আমাকেই চায় ।

নাসেখুত তাওয়ারিখ গ্রন্থে ইমাম হোসাইন (আ.) এর বক্তব্যের বর্ণনা নিম্নরূপ।

ইমাম হোসাইন (আ.) তার বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন- আমি তোমাদের নিকট হতে বাইয়াত (আনুগত্যের শপথ) তুলে নিলাম । তোমার নিজের পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাও। ” এরপর আহলে বাইত (আ.) এর উদ্দেশ্যে বলেন- তোমাদেরকেও যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছি। এ বিশাল বাহিনীর মোকাবিলায় যুদ্ধ করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। কেনন্ প্রতিপক্ষ সংখ্যা ও সাজসরঞ্জামের দিক থেকে তোমাদের তুলনায় অনেক বেশী। তদের এ সেনাপরিচালনাও আমাকে হত্যা করা ছাড়া আর কিছুই নয়। তোমরা আমাকে এ সেনাবাহিনীর সামনে আবস্থান নিতে দাও। আল্লাহই সর্বাবস্থায় আমায় সাহায্য করবেন। তার রহমতের দৃষ্টি আমার উপর থেকে উঠিয়ে নেবেন না । যেমন আমার পূত পবিত্র পূর্ব পুরুষগণ থেকে তার দৃষ্টি তুলে নেননি। এ ভাষণের পর ইমাম বাহিনীর অনেকেই চলে যান। তবে তার আত্মীয়-স্বজনরা তার সাথেই থেকে যান। এক মনীষী এ প্রসঙ্গে কবিতার ভাষায় বলেন-

گفت ای گروه هرکه ندارد هوای ما

سرگیرد و یرون رود از کربلای ما

ناداده تن بجواری و نا کرده ترک سر

هرگز نیافت راه بدولت سرای ما

برگردد آنکه با هوس کشور است

سرنا ورد با فسر شاهی گدای ما

این عرضه نیست جلوهگه روبه و گراز

شیرافکن است بادیه ابتلای ما

ما پروریم دشمن در خون کشیم دوت

أ کس ر وقوف نیست بچون و چرای ما

মুরুজুজ্জাহাব গ্রন্থের মতেঃ এ ভাষণের পর হোসাইন (আ.) এর বাহিনীর ১১শ লোকের মধ্যে তার পরিবারের ৭২ জন ছাড়া সবাই রাতের অন্ধকারে ইমামকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। হোসাইন (আ.) এর ভাই , সন্তান ও আবদুল্লাহ জাফরের সন্তানরা বলে উঠে-

ولم نفْعلُ ذلك لنبْقى بعْدك! لا أرانا اللّهُ ذلك أبدا

কেন আপনাকে ছেড়ে চলে যাব এটা কি আমাদের বেচে থাকার জন্য ? মহান আল্লাহ আমাদের জন্য কখনও এমন দিন যেন না দেন।

এ বক্তব্য প্রথমে উপস্থাপন করেন আব্বাস বিন আলী (আ.)এরপর আহলে বাইতের (আ.) সবাই তার কথায় সমর্থন দেন।

এপর হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) মুসলিম বিন আকিলের সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলেন-মুসলিমের শাহাদত তোমাদের জন্য যথেষ্ট হয়েছে। আমি তোমাদের চলে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছি।

অন্য বর্ণনা মতে ইমামের ভাষণ শুনার পর আহলে বাইত সমস্বরে বলতে লাগল-

হে আওলাদে রাসূল , মানুষ আমাদের কি বলবে ? আর আমরা জনগণকে জবাবই বা কি দেব ? আমরা কি বলব আমাদের নেতা আমাদের বুযুর্গ এবং মহানবীর সন্তান (আ.)কে একা ফেরে এসেছি ? তার সাহায্যার্থে দুশমনের দিকে একটি তীরও নিক্ষেপ করিনি।বর্শা কাজে লাগাইনি , তরবারী চালাইনি ? খোদার কসম আপনাকে ছেড়ে যাব না। নিজের জীবন দিয়ে হলেও আপনার প্রতিরক্ষা করব , প্রয়োজনে আল্লাহর রাস্তায় আপনার সাথে শাহাদতের শরবত পান করব। আপনার শাহাদতের পর আমাদের বেছে থাকাকে আল্লাহ অকল্যাণজনক করুক।

এরপর মুসলিম বিন আজুসা দাঁড়ায়ে বললঃ হে আল্লাহর নবীর আওরাদ! দুশমনের এ বিশাল বেষ্টনীর মধ্যে আপনাকে ফেলে রেখে আমরা চলে যাব ? খোদার কসম এ কাজ আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহ আপনার পর আমাদের জীবন নছীব না করুন।আমরা যুদ্ধ করব আপনার দুশমননের বুকে বর্শা ভেঙ্গে যাওয়া পর্যন্ত তরবারী চালাবো তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়বো । যদি কোন অস্ত্র না থাকে পাথর নিয়ে তাদের প্রতিহত করব। প্রয়োজনে জীবন বিলিয়ে দেব।তবুও আপনাকে ছেড়ে যাব না।

সাইদ বিন আব্দুল্লাহ হানাফী বললোঃ হে মহানবীর আওলাদ (আ.)! খোদার শপথ করে বলছি আপনাকে একা রেখে আমরা যাব না। আমরা আল্লাহর দরবারে প্রমাণ করব আপনার সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (সা.) এর অসিয়ত রক্ষা করেছি। আপনার পথে যদি নিহত হই এরপর জীবিত হই এরপর জীবন্ত দগ্ধ হই আর তা যদি সত্তরবারও হয় আপনাকে ছেড়ে যাব না। আপনার মৃত্যুর আগেই নিজের মৃত্যুকে দেখতে চাই। আপনার পথে জীবন না বিলিয়ে কিভাবে থাকতে পারি ? অথচ মৃত্যু তো জীবনে একবারই আসে। এ মৃত্যুর পরই চিরন্তন সম্মান ও সৌভাগ্য লাভ করবো।

এরপর যুহাইর বিন কেইন দাড়িয়ে বলল খোদার শপথ। হে মহানবীর আওলাদ (আ.) আপনি আপনার পরিবার পরিজনকে আল্লাহ জীবন্ত রাখার পরিবর্তে প্রয়োজনে হাজারবার নিহত হওয়া আবার জীবন্ত হওয়াকে আমি অধিক পছন্দ করি। ইমাম (আ.) এর সহযোগী একদল সমস্বরে বলে উঠে-

আমাদের জীবন আপনার জন্য উৎসর্গিত। আমার আমাদের জীবনের সবকিছুর বিনিময়ে আপনার প্রতিরক্ষা করব , এ পথে জীবন দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করব।

ঐ রাতেই মুহাম্মদ বিন বশির হাজরামীর কাছে এ সংবাদ পৌছে যে , তার ছেলে সেই সীমান্তে বন্দী হয়েছে। মুহাম্মদ বিন বশির বললেন-তার ব্যাপার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিচ্ছি। আমার জীবনের শপথ আমার ছেলে বন্দী থাকুক এবং তারপরও আমি জীবিত থাকি এটা আমি মোটেই পচন্দ করি না। ইমাম হোসাইন (আ.) তার কথা শুনছিলেন। বললেন- আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুন। আমি তোমার উপর থেকে আমার বাইয়াত তুলে নিচ্ছি। তুমি তোমার সন্তানের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ নাও। ” জবাবে মুহাম্মদ বললঃ আপনাকে ছেড়ে গেলে হিংস্রপ্রাণী আমাকে জীবিত অবস্থায় টুকরা টুকরা করে খেয়ে ফেলুক। ইমাম (আ.) বললেন- এ ইয়ামেনী জামাগুলো তোমার ছেলেকে দাও যাতে তার ভাইয়ের মুক্তির জন্য কাজে লাগাতে পারে। এরপর এক হাজার দিনার মূল্যের পাঁচটি জামা তাকে দান করলেন।

বর্ণনাকারী বলেছেন-

ঐ রাতটি ইমাম (আ.) ও তার সঙ্গীদের মুনাজাত ও আহাজারীতে কাটে। একদল রুকু অপর দল সিজদা বা অন্যান্য ইবাদতে গোটা রাত কাটিয়ে দেয়। ঐ রাতে ওমর বিন সাদের বাহিনীর বত্রিশ জন ইমাম হোসাইন (আ.) এর সৈন্যদলে যোগ দেয়। অধিক নামায আদায় ও পূর্ণতার বিভিন্ন গুণে হযরত হোসাইন (আ.) এর চরিত্রই ছিল অনন্য । ইবনে আবদুল বার রচিত ইকদুল ফরিদ গ্রন্থের ৪র্থ খণ্ডের বর্ণনামতে , আলী বিন হোসাইন (আ.)কে জিজ্ঞেস করা হয় আপনার পিতার সন্তান এত কম কেন ? তিনি বলেন-একটি সন্তানও বিস্ময়কর ব্যাপার। কেননা রাত দিনে তিনি হাজার রাকাআত নামায আদায় করতেন। এতে করে তার স্ত্রীর সাথে সময় কাটানোর ফুরসত ছিল না।

আশুরার দিন ভোরে ইমাম হোসাইন (আ.) তাবিুর ভিতরের অংশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দিলেন। আতর গোলাব ছিটালেন । বর্ণিত হয়েছে যে , বারির বিন খোজাইর হামাদানী এবং আবদুর রহমান বিন আবদে রাব্বিহী ইমাম হোসাইন (আ.) তাবু থেকে বের হবার পর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য তাবুর পশ্চাতে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় বারির আব্দুর রহমানের সাথে হাসি ঠাট্টা শুরু করে।আব্দুর রহমান বলল ,হে বারির তুমি হাসছো অথচ এখন হাসার বা হাস্যকর কথা বলার সময় নয়।

বারির বললঃ আমার সম্প্রদায়ের সবাই জানে আমি যৌবনে ও বার্ধক্যে কখনও অনর্থক কথা বলা পছন্দ করিনি। তবে শহীদ হতে যাচ্ছি এ আনন্দে আজকে এ হাস্যকর কথা বলছি। খোদার শপথ এ বাহিনীর মোকাবিলায় তরবারী চালানো এবং কিছুসময় তাদের সাথে যুদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই বাকী নেই। এরপরই তো বেহেশতী হুরের সান্নিধ্য পাব।

আশুরার দিন ভোরে

ওমর বিন সাদের অশ্বারোহী বাহিনী অগ্রসর হল। ইমাম হোসাইন (আ.) বারির বিন খুজাইরকে তাদের কাছে পাঠালেন। বারির তাদেরকে উপদেশ দিলেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন। কিন্তু তারা বিন্দু মাত্র কর্ণপাত করেনি। এসব নছিহত তাদের মনে কোন প্রভাব ফেলেনি। এরপর ইমাম হোসাইন (আ.) তার উটে মতান্তরে অশ্বে আরোহণ করে ওমর বিন সাদের বাহিনীর সামনে দাঁড়ালেন। তাদেরকে গভীর মনযোগ দিয়ে তার কথা শোনার আহবান জানালেন। তারা নিরবে শুনতে লাগলো। ইমাম হোসাইন (আ.) অত্যন্ত উচ্চাঙ্গের শব্দ ও বাক্য প্রয়োগ করে মহান আল্লাহর প্রমংসা এবং মুহাম্মদ (সা.) ফেরেশতাকুল ও সকল নবীদের উপর দরুদ পড়ার পর বললেন-

تبّا لكُمُ أيّتُها الْجماعةُ وترْحا حين إسْتصْرخْتُمُونا والهين ف أصْرخْناكُمْ مُوجفين سللْتُمْ عليْنا سيْفا لنا فى ايمانكُمْ وحششْتُمْ عليْنا نارا إقْتدحْناها على عدُوّنا وعدُوّكُمْ ف أصْبحْتُمْ أُلبّاً لاعْدائكُمْ على أوْليائكُمْ

হে জনগোষ্ঠী! তোমাদের এজন্য ধ্বংস হোক যে , তোমরা জটিল পরিস্থিতিতে আমার সাহায্য চেয়েছো। আমি তোমাদের সাহায্যের জন্য ছুটে এসেছি।কিন্তু যে তরবারী আমার সাহায্যে পরিচালনার শপথ তোমরা নিয়েছিলে আজ আমাকে হত্যার জন্য সে তরবারী হাতে নিয়েছো। তোমরা যে আগুন আমাকে জ্বালানোর জন্য প্রজ্বলিত করছো আমি চেয়েছিলাম এ আগুন দিয়ে আমার ও তোমাদের দুশমনদেরকে জ্বালিয়ে দেবো। আজ তোমরা সবাই নিজের বন্ধুকে হত্যা আর দুশমনদের সাহায্যে ছুটে এসেছ। অথচ তারা তোমাদের মাঝে ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেনি। তাদের সহযোগীতার ফলে তোমাদের আনন্দ বা অনুগ্রহ পাওয়ার কোন আশা নেই। তোমাদের জন্য আফসোস। কেন তোমরা ফেতনার আগুন জ্বালানোর জন্য পঙ্গপালের মত ঝাপিয়ে পড়েছ। পতঙ্গের মত পাগল হয়ে নিজেদেরকে আগুন নিক্ষেপ করছে।

হে সত্য বিরোধীরা , হে অমুসলিমের দল , হে কুরআনকে প্রত্যাখ্যানকারীরা , হে কথা বিকৃতিকারী , হে অপরাধীর দল , ওহে শয়তানের কুমন্ত্রণায় পতিত গোষ্ঠী , হে মহানবী (সা.) এর শরীয়ত ও সুন্নতকে স্তব্ধকারী আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত দল , এ অপবিত্র জনগোষ্ঠীকে সহযোগীতা করে আমাদের সহযোগীতা থেকে হাত গুটিয়েছো ? হ্যাঁ , আল্লাহর শপথ তোমাদের চরিত্রে প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র পূর্ব থেকেই ছিল। তোমাদের মূল ও শাখা-প্রশাখা এ প্রতারণায় সমানভাবে জড়িত হয়ে পড়েছে। এ কুচিন্তা তোমাদের মাঝে বলিষ্ঠভাবে স্থান পেয়েছে। তোমরা সবচেয়ে নাপাক ফল যা নিজের দর্শককে কষ্ট দেয়। স্বল্প আহার যা ডাকাতরাই গিলে খেতে পারে।

ألا وإنّ الدّعيّ ابْن الّدعي قدْ ركز بيْن اثْنتيْن: بيْن السّلّة والذّلة وهيْهات منّا الذّلّةُ ي أبى اللّهُ لنا ذلك ورسُولُهُ والْمُؤْمنُون

জেনে রাখ ,জারজের ছেরে জারজ (ইবনে যিয়াদ) আমাকে দু বস্তুর এখতিয়ার দিয়েছে। নাঙ্গা তরবারী হাতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবো না হয় অপমানের পোষাক-পরিধান করে ইয়াজিদের বাইয়াত মেনে নেবো। তবে অপমান আমাদের থেকে বহু দূরে। আল্লাহ তার রাসূল মুমিনগণ এবং পবিত্র ঘরে লালিত সন্তানরা ব্যক্তিত্বের অধিকারী ও বীরত্বের প্রতীকগণ কখনও অপমানকে মেনে নেবে না। তারা ইজ্জতের উপর আঘাত হেনে এ ধরনের লোকদের আনুগত্য করার চেয়ে মৃত্যুকে শ্রেয় মনে করে। জেনে রাখ যদিও আমার সঙ্গী কম তবুও আমি তোমাদের সাথে যুদ্ধ করব। ভাষণশেষে ফরওয়া বিন মুসাইক মুরাদীর কবিতার কয়েকটি লাইন উদ্বৃত করলেন লাইন ক ’ টি ছিল-

فإنْ نهْزمْ فهزّامُون قدْما

وإنْ نُغْلبْ فغيْرُ مُغلّبينا

وما إنْ طبُّنا جُبْنٌ ولكنْ

منايانا ودوْلة آخرينا

إذا ما الْموْتُ رفّع عنْ أُناسٍ

كلاكلهُ أناخ بآخرينا

فأفْنى ذلكُمْ سروات قوْمى

كما أفْنى الْقُرُون الاْوّلينا

فلوْ خلْد الْمُلُوكُ إذا خُلدْنا

ولوْ بقي الْكرامُ إذاً بقينا

فقُلْ للشّامتين بنا: أفيقُوا

سيلْقى الشّامتُون كما لقينا

আমরা যদি বিজয়ী হই আর দুশমন বিজিত হয় তাতে আশ্চর্যের কিছুই নেই। কেননা আমরা সবসময় বিজয়ী ছিলাম। যদি পরাভূত বা নিহত হই আমাদের নিজেদের কারণে হব না এবং ভয়ভীতির পথে নিহত হব ন। বরং আমাদের মৃত্যুর সময় এসে গেছে এবং যুগের আবর্তনে বিজয়ের পালা অন্যের ভাগে পড়েছে। যদি মৃত্যুদূত এই জনগোষ্ঠীর দরজা থেকে সরে যায় তবে অন্য গোষ্ঠীকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে।

আমাদের সম্প্রদায়ের বুজর্গগণ তোমাদের হাতে ঐরুপ মৃত্যুবরণ করেছে যেরূপ যুগ যুগ ধরে মানুষ মৃত্যুর হাতে বলি হয়েচে। রাজা-বাদশাহরা যদি এ জগতে চিরস্থায়ী হতো আমরাও চিরস্থায়ী হতাম। যদি মহান ব্যক্তিগণ এ দুনিয়ায় বেচে থাকতেন আমরাও বেচে থাকতাম।

যারা আমাদের ভৎসনা করছে তাদেরকে বলে দাও নিজেকে নিয়ে চিন্তা করো , অযথা ভৎসনা করো না। কেননা আমরা যে মৃত্যুর সম্মুখিন হয়েছি ভৎসনাকারীরাও একই মৃত্যুর সম্মুখিন হবে।

এ কবিতার চরণগুলো আবৃত্তির পর বললেন-আল্লাহর কসম আমার মৃত্যুর পর তোমরা বেশীদিন বাচতে পারবে না। তোমাদের জীবন কোন সওয়ারীতে আরোহণ এবং নেমে পড়ার অধিক সময় স্থায়ী হবে না। সময় যাতাকলের মত তোমার মাথার উপর চক্কর দিচ্ছে। আর তোমরা যাতাকলের মধ্যেপড়া গমের মত পিষে যাচ্ছ। আমার পিতা আলী (আ.) রাসূলে খোদা (সা.) থেকে যা শুনেছেন তাই তোমাদের সামনে ব্যক্ত করেছি।

فاجمعوا امرکم و شرکائکم ثم لا یکون امرکم علیکم غمّة ثم اقضوا الی و لا تنظرون ان توکلت علی الله ربی و ربکم

এখন তোমরা তোমাদের মতামত ঠিক করো , বন্ধুদের সাথে মিলিত হও , পরামর্শ করো যাতে তোমাদের কাছে বিষয়টি অস্পষ্ট না থাকে। এরপর আমাকে হত্যার জন্য পদক্ষেপ নিও আমাকে সময় দিও না , আমি আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করেছি যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা । সৃষ্টির সকল কাজের ক্ষমতা তারই হাতে।আর আমার পরওয়ারদিগার সর্বদা সঠিকভাবে অনড় অটল রয়েছেন।

এ ভাষণের পর ইমাম শত্রুপক্ষকে ভৎসনা করে বললেন-হে খোদা , তোমার রহমতের বারি এদের জন্য বন্ধ করে দাও। বছরের পর বছর এমন দুর্ভিক্ষ দাও , হযরত ইউসুফ (আ.) এর সময়কার মত দুর্ভিক্ষ দাও। সাকাফী গোলামকে তাদের উপর আধিপত্য দাও যাতে মৃত্যুর তিক্ত স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করাতে পারে।কেননা এরা আমার সাথে মিথ্যা বলেছে , প্রতারণা করেছে।

গোলঅম সাকাফী বলতে সম্ভবতঃ হাজ্জাজ বিন ইউসুফকে বুঝিয়েছেন। তিনি ছিলেন সাকাফী গোত্রের লোক। আল্লামা মাজলিসী ও মুহাদ্দেস কোমীর মতে সাকাফী গোলাম বলতে মোখতার বিন আবি উবাইদা সাকাফীকে বুঝানো হয়েছে। – অনুবাদক।

তুমিই আমার পরওয়ারদিগার আমি তোমারই উপর তাওয়াক্কুল করেছি তোমারই দিকে মনোনিবেশ করেছি সবাই তোমারই দিকে ফিরে যাবে।

এরপর ঘোড়ার পিঠ থেকে নামলেন এবং রাসূলে খোদার মোরতাজা নামক ঘোড়াটি চাইলেন এবং নিজের সাথীদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করলেন।

হযরত ইমাম বাকের (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে , হোসাইন (আ.)এর সাথীদের মধ্যে ৪৫জন ছিলেন অশ্বারোহী আর একশো জন ছিলেন পদাতিক। অন্যান্য বর্ণনাতেও এ সংখ্যার সমর্থন পাওয়া যায়।