কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ

কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ0%

কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ লেখক:
প্রকাশক: -
বিভাগ: ধর্ম এবং মাযহাব

কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ

লেখক: মোহাম্মাদ নাজির হোসাইন
প্রকাশক: -
বিভাগ:

ভিজিট: 26463
ডাউনলোড: 3686

কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 11 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 26463 / ডাউনলোড: 3686
সাইজ সাইজ সাইজ
কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ

কোরআন ও হাদীসের আলোকে আহলে বাইত (আঃ)-ই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তাƒ

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

উন্মুক্ত চিন্তা-ƒচতনা, নির্মোহ মন-মানসিকতা, জ্ঞানগর্ভ যুক্তি, মাযহাবগত আকীদার অন্ধবিশ্বাস ও পক্ষপাতহীন দৃষ্টিভঙ্গি মুক্ত মানসিকতা নিয়ে, বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্য„ম গ্রন্থটি অধ্যয়নের অনুরোধ করা গেল। আশা রাখছি যা “সিরা„তে মুস্তাকি„মের” পথ অনুসন্ধা„নে সহায়তা কর„বে। আমার এ গ্রন্থ সত্যাকাঙ্ক্ষী ন্যায়পরায়ন ব্যক্তির হা„ত সমর্পিত „হোক আল্লাহ রাব্বুল আলামী„নের নিকট এ প্রার্থনাই করছি।

আহলে বাইত (আঃ)-এর ভালোবাসা ও অনুসরণ ,সাতটি কঠিন স্থানে কাজে আসবে

আবদুল্লাহ বিন মাসুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন হযরত রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে , আমার আহলে বাইতের ভালোবাসা অনুসরণ , সাতটি কঠিন স্থানে কাজে আসবে ও সহায়ক হবে। (১) মৃত্যুর সময় (যখন রূহ কবজ করা হবে) , (২) কবরে (কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে) , (৩) কিয়ামত বা হাশরে (কেউ কাউকে চিনবে না , ইয়া নাফসি) , (৪) আমলের (কৃতকর্মের) হিসাব নিকাশের সময় , (৫) আমলের পরীক্ষার সময় , (৬) যখন আমল ওজন করা হবে , (৭) পুলসিরাত অতিক্রম করার সময় ।সূত্রঃ - কাওকাবে দুরির ফি ফাযায় েলে আলী , পৃঃ - ২১৯ , সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ ; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী - আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ - ৫৬৫

হযরত ফাতেমা (আঃ) জান্নাতের সকল মহিলাদের নেত্রী ও ইমাম হাসান-হোসাইন (আঃ) সমস্ত জান্নাতি যুবকদের সরদার

হযরত আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত , হযরত রাসুল (সাঃ) বলেছেন , হাসান-হোসাইন জান্নাতি যুবকদের নতা। (একই হাদীস , হযরত আলী , হযরত ওমর , আবদুল্লাহ্ বিন ওমর , ও আবু হুরাইরা থেকেও বণির্ত হয়েছে) হযরত হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত , হযরত রাসূল (সাঃ) বলেন , একটি ফেরেশতা যিনি ইতিপূর্বে পৃথিবীতে কখনো আসেননি। তিনি আল্লাহর নিকট অনুমতি চাইলেন যে তিনি যেন আমাকে সালাম দিতে পারেন এবং আমাকে সুসংবাদ দিতে পারেন যে , ফাতেমা (আঃ) জান্নাতের মহিলাদের নেত্রী এবং হাসান-হোসাইন জান্নাতের সকল যুবকদের নেতা ” ।সূত্রঃ- সহীহ তিরমিযী , খঃ-৬ , হাঃ-৩৭৬৮ (ইঃ ফাঃ) ; সহীহ্ তিরমিযী (সকল খণ্ড একত্রে) , পৃঃ-১০৮১ , হাঃ-৩৭৩০ , ( তাজ কোং) ; মেশকাত শরীফ , খঃ-১১ , হাঃ-৫৯০৩ , ( এমদাদীয়া) ; তিরমিযী আল জামউস সুন্নাহ , খঃ-৫ , পৃঃ-৬৫৬ , হাঃ-৩৭৬৮ ; নাসায়ী আস সুনানুল কুবরা , খঃ-৫ , পৃঃ-৫০ , হাঃ-৮১৬৯ ; ইবনে হিববান-আস সহীহ্ , খঃ-১৫ , পৃঃ-৪১২ , হাঃ-৬৯৫৯ ; আহম্মদ ইবনে হান্বাল আল মুসনাদ , খঃ-৩ , পৃঃ-৩ , হাঃ-১১০১২ ।

আহলে বাইত (আঃ)-এর অত্যাচারীদের উপর জান্নাত হারাম

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন যে , আল্লাহ ঐ ব্যক্তিদের উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন , যারা আমার আহলে বাইতের উপর অত্যাচার করে বা তাঁদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ করবে বা তাঁদের সাথে যুদ্ধ করবে। অথবা তাদেরকে লুণ্ঠন করবে বা তাদেরকে মন্দ বলবে ” ।সূত্রঃ- ওবায়দুল্লাহ অমৃতসরীর আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ-৪১৮ ; ইবনে হাজার মাক্কীর সাওয়ায়েকুল মোহরিকা , পৃঃ-১০৫ ; আল্লামা আলী হামদানী শাফেয়ীর মোয়াদ্দাতুল কুরবা , পৃঃ-১১৮।

আহলে বাইত (আঃ)-এর শক্র মুনাফিক

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত হযরত রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন , যারা আহলে বাইতের সাথে বিদ্বেষ রাখে তারা তো কপট (মুনাফিক) । ”

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে , হযরত রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে , আমার আহলে বাইত-কে তারাই ভালোবাসবে অনুসরণ করবে যারা মোমিন আর তারাই শক্রতা ও ঘৃণা করবে , যারা মুনাফিক। ”সূত্র :- আহমাদ ইবনে হান্বাল , ফাযায়িলুস সাহাবা , খঃ - , পৃঃ - ৬৬১ , হাঃ - ১১২৬ ; মুহিব্বে , তাবারী , আর রিয়াজুন নাদরাহ , খঃ - , পৃঃ - ৩৬২ ; মুহিব্বে তাবারী , যাখায়েরুল উকবা , পৃঃ - ৫১ ; সূয়ুতী আদ দুররুল মানসুর , খঃ - , পৃঃ - ৩৪৯ ; ইবনে আবি শায়বাহ , আল মুসান্নাফ , খঃ - , পৃঃ - ৩৭২ , হাঃ - ৩২১১৬ ; এহইয়াউল মাইয়াত - আল্লামা জালাল উদ্দিন সূয়ুতী , পৃঃ - ; আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ - ৫৭৯

আহলে বাইত (আঃ)-গণই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তা

রাসুল (সাঃ)-এর প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবুজার আল গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন , আমি রাসূল (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি , আমার আহলে বাইত এর সদস্যগণ {আলী , ফাতেমা , হাসান ও হোসাইন (আঃ) }। আমার উম্মতের জন্য তেমনি নাজাতে র তরী , যেমনি আল্লাহর নবী নুহ (আঃ)-এর তরী মহাপ্রলয়ের সময় তার জাতির জন্য আশ্রয় ও নাজাতে র তরী ছিল। অর্থাৎ যারাই হযরত নুহ (আঃ)-এর তরীতে উঠেছিল তারাই মহাপ্রলয় থেকে নাজাত পেয়েছিল (হযরত নূহের ছেলে তরীতে উঠেনি আল্লাহ্ তাকেও ক্ষমা করেন নি) তেমনি এই উম্মতের যারা আমার আহলে বাইতকে অনুসরণ করবে তারাই নাজাত পাবে এবং যারা অনুসরণ করবে না তারা সুষ্পষ্ট পথভ্রষ্ট (জাহান্নামী) হবে ” ।সূত্রঃ- মেশকাত শরিফ , খঃ-১১ , হাঃ-৫৯২৩ ; কাশফুল মাহজুব , পৃঃ-৭০ , ( দাতাগঞ্জ বকস) ; মাসিক মদীনা (সপ্টম্বর ২০০০) পৃঃ-৬ ; পীরের মর্যাদা ও ভুমিকা , পৃঃ-১১৪ , ( মুহাঃ মুখলেসুর রহমান এডভোকেট) ; জ্ঞানধারা , পৃঃ-১০৬ , ( মুখলেসুর রহমান) ; আস সাওয়ায়েকুল মুহরিকা (ইবনে হাজার হায়সামী) , পৃঃ-২৩৪ ; তাফসীরে কাবির , খঃ-২৭ , পৃঃ-১৬৭ ; মুসনাদে হাম্বাল , খঃ-২ , পৃঃ-৭৮৬ ; কানযুল উম্মাল , খঃ-৬ , পৃঃ-২৫৬ ; মানাকেবে ইবনে মাগজিলি , পৃঃ-১৩২ ; মুস্তাদরাকে হাকেম , খঃ-৩ , পৃঃ-১৫১ , খঃ-২ , পৃঃ-৩৪৩ , কেফায়াতুত তালেব , পৃঃ , ২৩৩ , আরবাইন নাবহানী , পৃঃ , ২১৬ , তারিখে খোলাফা , পৃঃ , ৩০৭ ; যাখায়েরুল উকবা , পৃঃ-২০ ; সাওয়ায়েকুল মুহরিকা , পৃঃ-১৫০ (ইবনে হাজার মাকিক) ; ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত , পৃঃ-৩৭০ , ৩০৮ ; মুয়াদ্দাতুল কুরবা , পৃঃ-৩৮ , ১১১ ; নুরুল আবসার , পৃঃ-১১৪ ; আল তাবরানি , খঃ-৩ , পৃঃ-৩৭-৩৮ ; হিলিয়াতুল আউলিয়া , খঃ-৪ , পৃঃ-৩০৬ ; আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ-৫৫৯ (উর্দ্দু) ; Al-Hakim recorded the tradition in his book 'al-Mustadrak' vol-২ , p-৩৪৩ and declared it as Sahih according to the condition of Muslim;

Imam Jalaluddin Suyuti in his book 'Al-Jame al-Saghir' vol-২ , p-৫৩৩ , declared it as

Hasan; Imam Al-Sakhawi in his book 'Al-Baldanyat' p-১৮৬ , declared it as Hasan;

আহলে বাইত (আঃ)-এর (আনুগত্যপূর্ণ) ভালোবাসা , নবীজির ভালোবাসা , নবীজির ভালোবাসা , আল্লাহর ভালোবাসা।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত , হযরত রাসূল (সাঃ) বলেছেন , তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস কেননা মহান আল্লাহ তাঁর নেয়ামত হতে তোমাদিগকে রিজিক প্রদান করেছেন। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে ভালোবাস (রাসূলকে) । আর আমার ভালোবাসা পেতে হলে আমার আহলে বাইতকে (আনুগত্যপূর্ণ) ভালোবাস ” ।সূত্রঃ- সহীহ্ তিরমিযি , ( সকল খণ্ড একত্রে) , পৃঃ-১০৮৫ , হাঃ-৩৭৫১ , ( তাজ কোং) ; সহীহ তিরমিযি , খঃ-৬ , হাঃ-৩৭২৮ , ( ইঃ সঃ) ; মেশকাত শরীফ , খঃ-১১ , পৃঃ-১৮৮ , হাঃ- ৫৯২২ , ( এমদাদিয়া লাইঃ) ; শেইখ সুলাইমান কান্দুযী-ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত , পৃঃ-৩১৭ , ( উর্দ্দু) ; কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী , পৃঃ-২০০ , সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ ; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ-৫৭৯।

কিয়ামতের দিন , আহলে বাইত (আঃ) ও তাঁদের আশেকরা আল্লাহর আরশের নিচে একই স্থানে থাকবেন

হযরত আলী (আঃ) হতে বর্ণিত , হযরত রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেন , আমি , আলী , ফাতেমা , হাসান ও হোসাইন এবং আমাদের সকল আশেকরা একই স্থানে একত্রিত হবে। কিয়ামতের দিন আমাদের পানাহারও একত্রে হবে , মানুষের বিচারের ফয়সালা হওয়া পর্যন্ত। ”সূত্রঃ-তাবরানী , আল মু জামুল কবির , খঃ-৩ , পৃঃ-৪১ , হাঃ-২৬২৩ ; হায়সামী , মাজমাউয যাওয়ায়েদ , খঃ-৯ , পৃঃ-১৬৯ ; আহমাদ ইবনে হাম্বাল , আল মুসনাদ , খঃ-১ , পৃঃ-১০১ ; বাযযার , আল মুসনাদ , খঃ-৩ , পৃঃ-২৯ , হাঃ-৭৭৯ ; শায়বানী আস সুন্নাহ্ , খঃ-২ , পৃঃ-৫৯৮ , হাঃ-১৩২২ ; ইবনে আসীর উসদুল গাবা , খঃ-৭ , পৃঃ-২২০ ; ইবনে আসাকির তারিখে দামেশ্ক , খঃ-১৩ , পৃঃ-২২৭।

অতএব যদি নাজাত পেতে চাই , তবে আহলে বাইত (আঃ)-দের আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসতে হবে। আল্লাহ্ ও নবীর হুকুম , আহলে বাইত (আঃ)-কে অনুসরণ করতে হবে , যদি অনুসরণ না করি , তবে নিজেকে নাজাত প্রাপ্ত বলে দাবি করা যাবে না এবং যদি আল্লাহ ও নবীর হুকুম না মানি , তবে কোথায় যেতে হবে ?

কালামে পাক আল-কোরআনে এরশাদ হচ্ছে : তারা কি একথা জানেনি যে , যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন সেথায় সে অনন্তকাল থাকবে ? এটা বিষম লাঞ্ছনা। ” (সূরা-তওবা , আয়াত-৬৩)

যারা আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয় , আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়া ও আখরাতে লানত (অভিসম্পাত) করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তত করে রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি ” । (সূরা-আহযাব , আয়াত-৫৭)

বলে দিন : সমান নয় পবিত্র ও অপবিত্র , যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে। সুতরাং ভয় কর আল্লাহকে , হে জ্ঞানবানরা! যেন তোমরা সফলকাম হও ” । (সূরা-মায়দা-আয়াত-১০০)

তবে যিনি সত্যের পথ নির্দেশ করেন তিনি আনুগত্যের অধিক হকদার না যাকে পথ না দেখাইলে পথ পায় না স ? তাই তোমাদের কি হলো ? তোমরা কিভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর ” । (সূরা-ইউনুস , আয়াত-৩৫)

আপনার রব ’ -এর কসম! তারা কখনো মোমিন হতে পারবে না। যতক্ষণ না তারা নিজেদের ঝগড়া-বিবাদে আপনাকে বিচারক না মানবে। শুধু এই নয় বরং যা আপনি ফয়সালা করেন তাতে মনে কোন দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে নেয় ” । (সূরা-নিসা , আয়াত-৬৫)

যারা মনোযোগ দিয়ে কথা শোনে অতঃপর যা উত্তম তার অনুসরণ করে এরাই তারা যাদের আল্লাহ্ হেদায়েত করেছেন তারাই বুদ্ধিমান ” । (সূরা-যুমার , আয়াত-১৮)

আর যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করে তারাই হবে জাহান্নামী , সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে ” । (সূরা-বাকারা , আয়াত-৩৯)

কোন মোমিন মোমেনার এই অধিকার নাই যে , আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যখন কোন কাজের হুকুম দেয় , যে এ ব্যাপারে ভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং কেহ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের হুকুম অমান্য করলে সে তো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে ” । (সূরা-আহযাব , আয়াত-৩৬)

অভিশপ্ত হোক মিথ্যাচারীরা , যারা ভুলের মধ্যে উদাসীন রয়েছে । (সূরা-যারিয়াত , আয়াত-১০-১১)

তারাই প্রকৃত মুমিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করে না... । ” (সূরা-হুজরাত , আয়াত-১৫)

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত ঠিক তমনিভাবে ভয় করতে থাক এবং অবশ্যই প্রকৃত মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। ” (সূরা-আলে ইমরান , আয়াত-১০২)

আমি যেসব স্পষ্ট নিদর্শন এবং হেদায়েত মানুষের জন্য নাযিল করেছি , কিতাব তা বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও যারা তা গোপন করে তাদেরকে আল্লাহ অভিসম্পাত দেন এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীরাও তাদেরকে অভিসম্পাত দেয়। ” (সূরা-বাকারা , আয়াত-১৫৯)

তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জেনে শুনে সত্যকে গোপন করো না। ” (সূরা-বাকারা , আয়াত-৪২)

হে মুমিনগণ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূল-এর আনুগত্য কর এবং তোমরা তোমাদের কর্মফল বিনষ্ট করো না। ” (সূরা-মুহাম্মদ , আয়াত-৩৩)

কেহ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য হলে এবং তাঁর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করলে তিনি তাকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন , আর সেথাই সে স্থায়ী হবে তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। ” (সূরা-নিসা , আয়াত-১৪)

একটু ভেবে দেখার প্রয়াজন নয় কি ? নবী করিম (সাঃ)-কে মানবেন , অথচ নবী করিম (সাঃ)-এর হুকুম মানবেন না , এটা কি রকম আনুগত্য করা হলো ? মহানবী (সাঃ) নির্দেশ করেছেন , আহলে বাইতকে অনুসরণ কর। কিন্তু আমরা আহলে বাইত (আঃ)-কে অনুসরণ করতে নারাজ , এর কারণ কি ?

যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে (নির্দেশ) অমান্য করবে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের অগ্নি সেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। ” (সূরা-জ্বীন , আয়াত-২৩)

রাসূল (সাঃ) আল্লাহর হুকুমে আমাদের আহলে বাইত (আঃ)-কে অনুসরণ করতে বলেছেন , যদি না করি তাহলে নবীর অনুসারী বলে দাবী করা উচিৎ হবে না। কারণঃ- এরশাদ হচ্ছে , রাসূল তোমাদেরকে যা কিছু প্রদান করেন তা গ্রহণ কর আর যা থেকে তোমাদেরকে বিরত থাকতে বলেন তা হতে বিরত থাক এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর আল্লাহ্ তো শাস্তিদানে কঠোর। (সূরা-হাশর , আয়াত-৭)

আল্লাহ্ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট ও সীমালঙ্ঘনকারীদের আনুগত্য করতে নিষেধ করেছেন , যেমন: সীমালঙ্ঘনকারীদের আনুগত্য করো না। ” (সূরা-শূআরা , আয়াত-১৫১)

“ যারা আগ পথভ্রষ্ট ছিল ও অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না। (সূরা-মায়দা , আয়াত-৭৭)

এত দলিল প্রমাণ দেখার পরও অনেককে এমন পাওয়া যায় , যারা আহলে বাইত (আঃ)-কে মুখে মানেন , বলেন যে , হ্যাঁ আহলে বাইত (আঃ) -কে মানতে হবে , না মানলে চলবে না। কিন্তু যখন মহানবী (সাঃ)-এর নির্দেশ , আহলে বাইতকে অনুসরণ করার কথা বলা হয় , তখন তারা বলেন , অনুসরণ তো তাদেরই করবো , যার উপর আমাদের বাপ-দাদাগণকে পেয়েছি!!!

এরশাদ হচ্ছে , আর যখন তাদেরকে বলা হয় তোমরা তাঁর অনুসরণ কর যা আল্লাহ্ নাযিল করেছেন। তখন তারা বলে বরং আমরা তো তার অনুসরণ করবো যার উপর আমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছি। যদিও শয়তান তাদেরকে জাহান্নামর দিকে ডাকতে থাকে তবুও কি ? (সূরা-লোকমান , আয়াত-২১)

আরো এরশাদ হচ্ছে , আর যখন কেউ তাদেরকে বলে আল্লাহর প্রেরিত নির্দেশ অনুযায়ী চল , তখন তারা বলে , বরং আমরা ঐ পথেই চলবো যাতে আমাদের বাপ-দাদাগণকে পেয়েছি , যদিও তাদের বাপ-দাদারা কোন জ্ঞানই রাখতো না এবং হেদায়েত প্রাপ্তও ছিল না। (তবওু ) ? (সূরা-বাকারা , আয়াত-১৭০)

লোকেরা বলে যে , আমরা ঈমান এনেছি , আপনি বলে দিন যে তোমরা ঈমান তো আননি বরং তোমরা বল আমরা আত্মসমর্পণ করেছি কারণ ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। ” (সূরা-হুজরাত , আয়াত-১৪)

রাসূল (সাঃ) পূর্বই সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছেন , যারা আহলে বাইত (আঃ)-গণকে অনুসরণ করবে না , তাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করবে না। তাই সত্যিকারের ঈমানদার ও মুমিন হতে হলে , আমাদের আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ)-এর মনোনীত আহলে বাইত (আঃ)-দের অনুসরণ করতে হবে। তবেই সত্যিকারের ঈমানদার বলে দাবী করা যাবে ” ।

কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে বর্তমানে আহলে বাইতের চর্চা নেই বললেই চলে অল্প সংখ্যক ব্যতীত। আর যারা আহলে বাইতের চর্চা করেন না , তারা মূলত রাজা-বাদশাদের রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী অথচ ইসলামে গণতন্ত্র ও রাজতন্ত্রের কোন স্থান নই। ” এবং রাজা-বাদশাদের স্বভাব সম্পর্কে এরশাদ হচ্ছে:

রাজা-বাদশারা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন তারা সে জনপদকে বিনাশ করে দেয় এবং সেখানকার সম্মানিত অধিবাসীদের অপদস্ত করে এবং এরাও এরূপই করবে । ” (সূরা-নামল , আয়াত-৩৪)

আরো এরশাদ হচ্ছে , আর আপনি যদি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথা মেনে চলেন , তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা তো কেবল ধারণার অনুসরণ করে এবং মনগড়া কথা বলে ” । (সূরা-আনআম আয়াত-১১৬)

এরশাদ হচ্ছে , তাদের যখন বলা হয় আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে এবং রাসূলের দিকে এসো তখন মুনাফিকদেরকে আপনি আপনার নিকট হতে মুখ একেবারেই ফিরিয়ে নিতে দেখবেন ” । (সূরা-নিসা , আয়াত-৬১)

বল , তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমাকে (রাসূলকে) ভালোবাস আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। ” (সূরা-আলে ইমরান , আয়াত-৩১)

যেদিন তাদের চেহারা দোযখের আগুনের মধ্যে উলট -পালট করা হবে। সেদিন তারা বলবে হায়! আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম রাসূলের আনুগত্য করতাম তারা আরো বলবে , হে আমাদের রব আমরা তো আনুগত্য করেছিলাম আমাদের (নির্বাচিত) নেতাদের এবং আমাদের (নির্বাচিত) প্রধানদের। অতএব তারাই আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিলো । ” (সূরা-আহযাব , আয়াত-৬৬-৬৭)

মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন , যে ব্যক্তি দুনিয়াতে যাকে ভালোবাসবে বা অনুসরণ করবে তার সাথে তার হাশর হবে ” ।সূত্রঃ-সহীহ্ মুসলিম , খঃ-৭ , হাঃ-৬৪৭০ , ( , ফাঃ) ; সহীহ্ তিরমীজি , ( সকল খণ্ড একত্রে) পৃঃ-৭২৮ , হাঃ-২৩৪০ (তাজ কোং) ।

হযরত রাসূল (সাঃ) বলেন , (শেষ বিচারের দিবসে) আমার শাফায়াত হবে মুসলিম উন্মাহর মধ্যে তাদের জন্য যারা আমার আহলে বাইতকে (অনুসরণ) মহব্বত করবে ” ।সূত্রঃ- খতীব বাগদাদী , তারিখ বাগদাদ , খঃ -২ , পৃঃ-১৪৬ ; হিন্দী , কানযুল উন্মাল , খঃ-৬ , পৃঃ-২১৭ ; সূয়ুতি ইয়াহইয়া আল মাইয়্যিত , পৃঃ-৩৭ ; আরজাহুল মাতালেব , পৃঃ-৫৬৬ , ৫৮১ (উর্দ্দু)।

হযরত রাসূল (সাঃ) ইমাম হাসান- হোসাইনের হাত ধরে বললেন , যে ব্যক্তি আমাকে এবং এই দু জনকে (হাসান-হোসাইন)-কে ভালোবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা-মাতাকে (আলী ও ফাতেমা) কে ভালোবাসবে সে কিয়ামত দিবসে আমার সাথেই থাকবে ” ।সূত্রঃ- জামে আত তিরমিযী , খঃ-৬ , পৃঃ-৩৩১ , হাঃ-৩৬৭০ , ( ইঃ , সঃ) ; তিরমিযী , আল-জামেউস সহীহ্ , খঃ-৫ , পৃঃ-৬৪১ , হাঃ-৩৭৩৩ ; আহমদ ইবনে হাম্বাল , আল মুসনাদ , খঃ-১ , পৃঃ-৭৭ , হাঃ-৫৭৬ ; আহম্মদ ইবনে হাম্বাল-ফাযায়িলুস সাহাবা , খঃ-২ , পৃঃ-৬৯৩ , হাঃ-১১৮৫ ; তাবরানী-আল মু জামুল কবির , খঃ-৩ , পৃঃ-৫০ , হাঃ-২৬৫৪।

পাঠকদের বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন ? তাহলে আমরা রাসূল (সাঃ)-এর রক্তে-মাংসের গড়া , জান্নাতের সরদারদের আহলে বাইত (আঃ)-গণকে ছেড়ে অন্যদেরকে কেন অনুসরণ করবো ?

আর যারা চক্ষু , কর্ণ ও অন্তরকে কাজে লাগায় না তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন।

আমি সৃষ্টি করেছি , দোযেখের জন্য বহু জ্বীন ও মানুষকে । তাদের অন্তর(বিবেক) রয়েছে তা দ্বারা তার (সত্য) বিবেচনা করে না , তাদের চোখ রয়েছে তার দ্বারা তারা (সত্য) দেখে না , তাদের কান রয়েছে তার দ্বারা (সত্য) শ্রবণ করে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত , বরং তাদের চেয়েও নি কৃষ্টতম ” । (সূরা-আরাফ , আয়াত-১৭৯)

কোরআনে মানুষকে বাস্তবধর্মী হবার এবং সত্যের অনুসরণ করার দাওয়াত দেয়া হচ্ছে। এই ব্যাপারে বার বার উপদেশ ও নসীহত প্রদান করছে , এবং বিভিন্ন বর্ণনা ও উদাহরণের মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ প্রদান করছে , যাতে তাদের মধ্যে সত্যের অন্বেষণ ও অনুসরণের ক্ষমতাকে সতেজ রাখে , কিন্তু অতি দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে , মহান আল্লাহ পাক এরশাদ করেন: তাদের অধিকাংশই অনুমানের অনুসরণ করে চলে। সত্যের ব্যাপারে অনুমান কোন কাজেই আসে না ’ । সূরা-ইউনুস , আয়াত-৩৬।

মহান আল্লাহ্ পাক এরশাদ করেন , সত্য ত্যাগ করার পর বিভ্রান্তি ব্যতীত আর কি থাকতে পারে । সূরা-ইউনুস , আয়াত-৩২

আরো এরশাদ হচ্ছে- কসম যুগের , অবশ্যই (সকল) মানুষ রয়েছে ভীষণ ক্ষতির মধ্যে , কিন্তু তারা নয় , যারা ঈমানদার ও সৎকর্মপরায়ণ এবং পরস্পরকে সত্যের (হকের) উপদেশ দেয় ও ধৈর্য্যের উপদশ দেয় ” । (সূরা-আসর , আয়াত-১-৩)

আরো এরশাদ হচ্ছে- আর আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং পরস্পরে ঝগড়া-বিবাদ করো না। অন্যথায় তোমাদের মধ্যে দুর্বলতার সৃষ্টি হবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তি খতম হয়ে যাবে। ধৈর্য্য সহকারে সব কাজ আঞ্জাম দিবে। নিশ্চয় আল্লাহ্ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। ” (সূরা আনফাল , আয়াত-৪৬)

আরো এরশাদ হচ্ছে- আর তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করেছে তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমান আসার পরও। তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। ” (সূরা আলে ইমরান , আয়াত-১০৫)