আল হাসানাইন (আ.)

ইমাম হোসাইন (আ.) -এর মাযারের ইতিহাস

0 বিভিন্ন মতামত 00.0 / 5

কারবালা অন্য যে কোন শহর থেকে স্বতন্ত্র। এর নাম সকল মুসলমানের স্মৃতিতে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। বিশ্ববাসী এ নাম স্মরণ করে নিদারুণ দুঃখ ও ব্যাথা নিয়ে। কারণ, তারা শহীদদের সর্দার ইমাম হোসাইন (আ.) -এর ইতিহাস ও ইসলামের জন্য তার আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে ।

কারবালায় দর্শনার্থীদের স্রোত কখনও বন্ধ হয়নি। উমাইয়্যা ও আব্বাসী খলিফারা হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) -এর মাযার নির্মাণে বার বার বাধা দেয়া সত্বেও এক সময় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইমামের মাযার নির্মাণে সফল হয়।

বর্তমানে কারবালা প্রত্যক্ষ করছে এক নতুন বিপদ। ইমাম হোসাইন (আ.) ও তার সাথীদের মাযার আজ ধ্বংস ও অবহেলার শিকার। দর্শনার্থীদের সেখানে পৌছতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

দু’টি প্রধান রাস্তা দর্শনার্থীদের কারবালা নিয়ে যায়। একটি হচ্ছে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ থেকে মসুল-এর ভেতর দিয়ে এবং আরেকটি হচ্ছে ধর্মীয় নগরী নাজাফ থেকে ।

কারবালা পৌছার পর দর্শনার্থীর মনোযোগ আকর্ষণ করবে মাযারের মহিমান্বিত মিনার ও গম্বুজগুলো।

দর্শনার্থীরা শহরের প্রবেশ মুখে এসে দাড়াতেই দেখতে পাবে একটি সীমানা প্রাচীর যা কাচের কারুকাজ সম্বলিত কাঠের দরজাগুলোকে ঘিরে আছে। কেউ যখন এর কোনো একদরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে নিজেকে একটি প্রাঙ্গণে দেখতে পাবে যার চারদিকে রয়েছে ছোটছোট কক্ষ।

পবিত্র কবরস্থানটি প্রাঙ্গণের মাঝখানে অবস্থিত; যার চতুর্দিকে রয়েছে স্বর্ণের তৈরী অত্যন্ত সুন্দর আলোকোজ্জ্বল জানালাসমূহ যা সত্যিই দেখার মতো।

কারবালার আদি ইতিহাস ও এর অর্থ

‘কারবালা’ শব্দটির উৎস নিয়ে গবেষকদের মধ্যে বিভিন্ন অভিমত রয়েছে। কেউ বলছেন ‘কারবালা ’শব্দটি ‘কারবালাতো’ ভাষার সাথে সম্পর্কিত। আবার কেউ ‘কারবালা’ শব্দের অর্থ এর বানান ও ভাষা পর্যালোচনা করে উপস্থাপন করেছেন । তারা উপসংহারে পৌছেছেন যে, আরবি ‘কার্বাবেল’ থেকে এর উৎপত্তি যা প্রাচীন ব্যবিলনীয় কয়েকটি গ্রামের সমষ্টি-যার মধ্যে ছিলো নিনেভা, আল-গাদীরিয়া, কারবেলা, আল-নাওয়াউইস এবং আল হীর; শেষোক্ত গ্রামটি বর্তমানে ‘আল-হাইর’ নামে পরিচিত যেখানে ইমাম হোসাইন (আ.) -এর মাযার অবস্থিত।

গবেষক ইয়াকুত আল-হামাভী বলেছেন যে, ‘কারবালা’ শব্দটির বেশ কয়েকটি অর্থ হতে পারে। এর একটি হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে ইমাম হোসাইন (আ.) –কে শহীদ করা হয় যা নরম মাটি ‘আল-কারবালাত’ দিয়ে তৈরী।

অন্যান্য লেখকগণ এ নামকে মরুভূমিকে রক্তাক্তকারী ভয়াবহ ঘটনার সাথে যুক্ত দেখেছেন। আর তাই বলা হচ্ছে, ‘কারবালা’ শব্দটি দু’টি আরবি শব্দের সমষ্টি, একটি হচ্ছে ‘কারব’ যার অর্থ হচ্ছে শোক দুঃখ এবং ‘বালা’ যার অর্থ দুর্দশা। এ সম্পর্কের কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। কারণ, ইমাম হোসাইন (আ.) সেখানে আসার অনেক আগ থেকেই জায়গাটি ‘কারবালা’ হিসাবে পরিচিত ছিলো।

শাহাদাত ও জনপ্রিয়তা

কারবালা প্রথমে একটি বসতিহীন জায়গা ছিলো এবং সেখানে নির্মিত কোনো কিছু ছিলো না যদিও যথেষ্ট পানি ও উর্বর জমি ছিল ।

৬১ হিজরীর ১০ মুহররম ইমাম হোসাইন (আ.) -এর শাহাদাতের পর এর নিকটে বসবাসকারী গোত্রগুলো এবং দূরের মানুষ ইমামের পবিত্র কবর যিয়ারতের জন্য এখানে আসতে থাকে। এদের মধ্যে অনেকেই এখানে থেকে যায় এবং অনেকে আত্মীয়-স্বজনদের অনুরোধ করে যেন তারা তাদের মৃত্যুর পর তাদেরকে কারবালায় দাফন করে ।

আব্বাসী শাসক হারুনুর রশীদ ও মুতাওয়াক্কিল প্রমুখ একের পর এক এ এলাকার উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। তারপরও জায়গাটি শহরে পরিণত হয়েছে।

ইমাম হোসাইন (আ.) -এর কবর যিয়ারতের পুরস্কার

হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) -এর কবর যিয়ারতে বিরাট আত্মিক কল্যাণ রয়েছে । নবী করীম (সা.) তার নাতি ইমাম হোসাইন (আ.) সম্পর্কে বলেছেন, ‘হোসাইন আমা থেকে এবং আমি হোসাইন থেকে ।’ বেশ কিছু বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, ইমাম হোসাইন (আ.) -এর কবর যিয়ারত করলে পৃথিবীর এবং মৃত্যুর পরের দুঃখ কষ্ট থেকে মানুষ মুক্তি লাভ করে । তাই পৃথিবীর সব জায়গা থেকে মুসলমানরা সারা বছর ইমাম হোসাইন (আ.) -এর মাযার যিয়ারতের জন্য কারবালা আগমন করে, বিশেষ করে মুহররমের প্রথম দশ দিন এবং ২০ সফর তার শাহাদাতের চল্লিশতম দিনে।

ইরাকীদের একটি সাধারণ ঐতিহ্য হচ্ছে মুহররমে নাজাফ থেকে কারবালায় হেটে আসা যা তাদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সাথে মজবুত বন্ধনেরই প্রতিফলন - যার জন্য ইমাম হোসাইন (আ.) সংগ্রাম এবং শাহাদাত বরণ করেছেন ।

ইমাম হোসাইন (আ.) -এর রওযা

ঐতিহাসিক ইবনে কুলুওয়াইহ উল্লেখ করেছেন , যারা ইমাম হোসাইনকে কবর দিয়েছিল তারা তার কবরের ওপর চিহ্নসহ একটি আকর্ষণীয় ও মজবুত ভবন তৈরী করেছিলো। আরো উচু ও বড় ভবন তৈরী শুরু হয় প্রথম আব্বাসী খলীফা আবুল আব্বাস আস-সাফফার শাসনামলে। কিন্তু হারুনুর রশীদ ইমামের কবর যিযারতের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

খলিফা মামুনের সময় ইমামের কবরের ওপর রওযা নির্মাণ হয় এবং ২৩৬ হিজরী পর্যন্ত চলে। এরপর মুতাওয়াক্কিলের নির্দেশে ইমামের কবর ধ্বংস করা হয় এবং কবর খুড়ে এর গর্তকে পানি দিয়ে ভরে দেওয়া হয়। তারপর মুতাওয়াক্কিলের পুত্র তার উত্তরাধিকারী হিসাবে ক্ষমতা লাভ করে জনগণকে কবর যিয়ারতের অনুমতি দিলে তখন থেকেই কবর এলাকায় নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পায়।

অন্যদিকে ঐতিহাসিক ইবনে আছীর বলেছেন যে, ৩৭১ হিজরীতে আযদুদ দাওলা আলে বুইয়া বিশাল আকারের নির্মাণ কাজের জন্য প্রথম এর ভিত্তি স্থাপন করেন এবং স্থানটিকে উদারভাবে সজ্জিত করেন। তিনি মাযার প্রাঙ্গণকে ঘিরে বাড়িঘর ও মার্কেট নির্মাণ করেন এবং কারবালোকে দেয়াল উচু দিয়ে ঘিরে দেন যা এটিকে একটি দুর্গে পরিণত করে ।

৪০৭ হিজরীতে অলঙ্করণের কাঠের ওপরে দু’টি জ্বলন্ত মোমবাতি পড়ে যাবার কারণে মাযারা প্রাঙ্গণে আগুন ধরে যায়। মন্ত্রী হাসান ইবনে ফযল এ ক্ষতিগ্রস্থ অংশটি পুনঃনির্মাণ করেন।

ইতিহাসে বেশ কয়েকজন শাসকের নাম উল্লেখ রয়েছে যারা মাযার প্রাঙ্গণটি প্রশস্তকরণ, সৌন্দর্যবর্ধন এবং প্রাঙ্গণটিকে ভালো অবস্থায় রাখার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইরানের কাজার বংশীয় বাদশাহ ফাতহ আলী শাহ যিনি ১২৫০ হিজরীতে দু’টি গম্বুজ নির্মাণের আদেশ দেন; একটি ইমাম হোসাইন (আ.) ও অপরটি তার ভাই আবুল ফযল আব্বাসের কবরের ওপর । প্রথম গম্বুজটি ২৭ মিটার উচু এবং পুরোপুরি স্বর্ণ দিয়ে ঢাকা। নিচে ১২টি জানালা এটাকে ঘিরে আছে,ভেতরের দিকে যার একটি অপরটি থেকে ১.২৫ মিটার দূরে এবং বাইরে ১.৩ মিটার দূরে।

মাযারটির দৈর্ঘ্য ৭৫ মিটার এবং প্রস্থে ৫৯ মিটার। এর রয়েছে ১০টি দরজা ও ৬৫ কক্ষ (আইভান), যা ভেতর ও বাইরে চমৎকারভাবে সজ্জিত। এগুলো শ্রেণীকক্ষ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

ইমামের পবিত্র কবরের ওপর সৌধে রয়েছে বেশ কয়েকটি দরজা। সবচেয়ে বিখ্যাতটির নাম হচ্ছে ‘আল-ক্বিবলা’, অপর নাম ‘বাবুয যাহাব’ (স্বর্ণদ্বার) । এর ভেতরে ডান দিকে হাবীব ইবনে মাযাহের আল-আসাদীর কবর রয়েছে । হাবীব শিশুকাল থেকেই ইমাম হোসাইন (আ.) -এর একজন সাথী ছিলেন । তিনি কারবালায় শাহাদাতের উচ্চ মর্যাদা লাভকারীদের একজন ।

হযরত আব্বাস (আ.) -এর কবর

আবুল ফযল আব্বাস (আ.) ছিলেন ইমাম হোসাইন (আ.) -এর সৎ ভাই। তিনি কারবালার রণাঙ্গনে ইমামের পতাকাবাহী ছিলেন । তিনি তার সাহসিকতা ও আনুগত্যের জন্য বিখ্যাত, যেমন ছিলেন তার পিতা শেরে খোদা হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) ।

হযরত আব্বাসের কবর ইমাম হোসাইন (আ.) -এর কবরের মতোই বিশেষ যত্ন লাভ করেছে। ১০৩২ হিজরীতে শাহ তাহমাসেব তার কবরের গম্বুজটির সৌন্দর্য বর্ধনের আদেশ দেন। তিনি কবরের সমাধিগাত্রে একটি জানালা নির্মাণ করেন এবং প্রাঙ্গণটিকে সুবিন্যস্ত করেন। এ ধরনের আরো কিছু কাজ অন্যান্য শাসকরাও করেছেন ।

কারবালা ইমাম হোসাইন (আ.) ও তার ভাইয়ের কবরই শুধু বক্ষে ধারণ করেনি, ধারণ করেছে কারবালার ৭২ শহীদের সকলেরই কবর । তাদের একটি গণকবরে দাফন করা হয় যা মাটি দিয়ে পূর্ণ করে সমতল পর্যায়ে আনা হয়। এ গণকবরটি ইমাম হোসাইন (আ.) -এর পায়ের কাছে অবস্থিত। ইমাম হোসাইন (আ.) -এর পাশেই রয়েছে তার দুই ছেলে আলী আকবর ও ছ’মাসের শিশু আলী আসগারের কবর ।

ইমাম হোসাইন (আ.) -এর মাযার উন্নয়নের ধারাবাহিক ইতিহাস

৬১ হিজরী ০১ আগস্ট ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে : ইমাম হোসাইন (আ.) -কে এ পবিত্র স্থানে সমাহিত করা হয়।

৬৫ হিজরীর ১৮ আগস্ট ৬৮৪ খ্রিস্টাব্দে : মুখতার ইবনে আবু উবাইদা সাকাফী ইমামের কবরের চারদিকে একটি দেয়াল নির্মাণ করেন। তা দেখতে ছিল মসজিদের মতো এবং কবরের ওপরে একটি গম্বুজ তৈরী করা হয়। এতে প্রবেশের দু’টি পথ ছিলো।

১৩২ হিজরী ১২ আগস্ট ৭৪৯ খ্রিস্টাব্দে : এ মসজিদের আংশিক ছাদ তৈরী করা হয় এবং প্রথম আব্বাসী খলীফা আল আব্বাস আস-সাফফার শাসনামলে আরো দু’টি প্রবেশপথ তৈরী করা হয়।

১৪০ হিজরী ৩১ মার্চ ৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে : খলিফা মানসুরের শাসনামলে এর ছাদ ধ্বংস করা হয়।

১৫৮ হিজরী ১১ নভেম্বর ৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে : খলিফা মাহদীর শাসনামলে ছাদ পুনরায় নির্মাণ করা হয়।

১৭১ হিজরী ২২ জুন ৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে : হারুনুর রশীদের শাসনামলে গম্বুজ ও ছাদটি ধ্বংস করা হয়।

১৯৩ হিজরী ২৫ অক্টেবর ৮০৮ খ্রিস্টাব্দে : আমিনের শাসনামলে ভবনটি পুনঃনির্মাণ করা হয়।

২৩৬ হিজরী ১৫ জুলাই ৮৫০ খ্রিস্টাব্দে : মুতাওয়াক্কিলের আদেশে ভবনটি ধ্বংস করে ফেলা হয় এবং সেখানকার জমিতে চাষাবাদের আদেশ দেয়া হয়।

২৪৭ হিজরী ১৭ মার্চ ৮৬১ খ্রিস্টাব্দে : মুনতাসির কবরের ওপর একটি ছাদ নির্মাণ করেন এবং যিয়ারতকারীদের জন্য চিহ্ন হিসাবে এর কাছে একটি লোহার স্তম্ভ নির্মাণ করেন।

২৭৩ হিজরী ৮ জুন ৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে : ছাদটি আবার ধ্বংস করে ফেলা হয়।

২৮০ হিজরী ২৩ মার্চ ৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে : আলাভীদের প্রতিনিধি এর মাঝখানে একটি গম্বুজ নির্মাণ করেন এবং দু’পাশে দু’টি ছাদসহ আরো দু’টি প্রবেশপথসমেত একটি দেয়াল তৈরী করেন।

৩০৭ হিজরী ১৯ আগষ্ট ৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে : ‘আযদ ইবনে বুইয়া গম্বুজটি ও সীমানা প্রাচীর পুনঃনির্মাণ করেন এবং সমাধির চারদিকে একটি সেগুন কাঠের ঘর তৈরী করে দেন। তিনি মাযারের চারদিকে ঘর তৈরী করেন এবং শহরের সীমানা প্রাচীর তৈরী করেন। একই সময়ে ইমরান ইবনে শাহীন রওযার পাশে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।

৪০৭ হিজরী ১০ জুন ১০১৬ খ্রিস্টাব্দে : স্থাপনাগুলো আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। প্রধানমন্ত্রী হাসান ইবনে ফযল সেগুলো পুনঃনির্মাণ করেন।

৬২০ হিজরী ৪ ফেব্রুয়ারী ১২২৩ খ্রিস্টাব্দে : নাসির লেদীনিল্লাহ রওযার আবরণসমূহ পুনঃনির্মাণ করেন।

৭৫৭ হিজরী ১৮ সেপ্টেম্বর ১৩৬৫ খ্রিস্টাব্দে : সুলতান ওয়াইস ইবনে হাসান জালাইবী গম্বুজটিকে নতুন আকার দান করেন এবং সীমানা প্রাচীরকে আরো উচু করেন।

৭৮০ হিজরী ২৪ ফেব্রুয়ারী ১৩৮৪ খ্রিস্টাব্দে : আহমাদ ইবনে ওয়াইস দু’টি স্বর্ণে ঢাকা মিনার নির্মাণ করেন এবং প্রাঙ্গণকে আরো বড় করেন।

১০৩২ হিজরী ৫ নভেম্বর ১৬২২ খ্রিস্টাব্দে : শাহ আব্বাস সাফাভী কবরের চারদিকে তামা ও ব্রোঞ্জের রেলিং তৈরী করেন এবং গম্বুজকে টাইল্স দিয়ে সজ্জিত করেন।

১০৪৮ হিজরী ১৫ মে ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে : সুলতান চতুর্থ মুরাদ রওযা মোবারক যিয়ারত করেন এবং গম্বুজকে সাদা রং করেন।

১১৫৫ হিজরী ৮ মার্চ ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে : নাদির শাহ রওযা মোবারক যিয়ারতে যান এবং এই ভবনের সৌন্দর্য বর্ধন করেন। তিনি মাযারের কোষাগারে মূল্যবান উপহার জমা দেন।

১২১১ হিজরী ৭ জুলাই ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে : শাহ অগা মোহাম্মদ খান কাজার মাযারের গম্বুজটি সোনা দিয়ে ঢেকে দেন।

১২১৬ হিজরী ১৪ মে ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে : ওয়াহাবীরা কারবালা আক্রমণ করে মাযারের রেলিং ও হলকক্ষ নষ্ট করে দেয় এবং মাযার লুট করে ।

১২৩২ হিজরী ২১ নভেম্বর ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে : ফাতহ আলী শাহ কাজার মাযারের রেলিং মেরামত করেন এবং তা রূপা দিয়ে ঢেকে দেন। তিনি হলকক্ষের কেন্দ্রও সোনা দিয়ে ঢেকে দেন এবং ওয়াহাবী লুটেরাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ অংশগুলো মেরামত করেন।

১২৮৩ হিজরী ১৬ মে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে : নাসিরুদ্দীন শাহ কাজার মাযারের প্রাঙ্গণে বড় করেন।

১৩৫৮ হিজরী ২১ ফেব্রুয়ারী ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে : ড. সাইয়্যেদ তাহের সাইফুদ্দীন ‘দাউদী বোহরা’ সম্প্রদায়ের ৫১তম দা’ঈউল-মুতলাক এক সেট রূপার রেলিং উপহার দেন যা রওযায় স্থাপন করা হয়।

১৩৬০ হিজরী ২৯ জানুয়ারী ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে : ডা. সাইয়্যেদ তাহের সাইফুদ্দীন পশ্চিমের মিনারটি পুনঃনির্মাণ করেন।

১৩৬৭ হিজরী ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে : কারবালার প্রশাসক সাইয়্যেদ আবদুর রাসূল খালাসী মাযারকে ঘিরে একটি রাস্তা নির্মাণ এবং মাযার প্রাঙ্গণকে আরো প্রশস্ত করার জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে মাযারের নিকটবর্তী বাড়িগুলো কিনে নেন।

আল্লাহ তা’আলার নিকট আমাদে প্রার্থনা তিনি যেন আমাদের সৎ প্রচেষ্টাগুলো দীর্ঘস্থায়ী করেন এবং আমাদের তার দয়া ও হেফাজত লাভের তাওফীক দান করেন। তিনি তো শানেন এবং জবাবও দেন।

(সূত্র: ইন্টারনেট) অনুবাদ :মুহাম্মদ ইরফানুল হক

আপনার মতামত

মন্তব্য নেই
*
*

আল হাসানাইন (আ.)